ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w17 মে পৃষ্ঠা ১৩-১৬
  • বধির হওয়া সত্ত্বেও অন্যদের শিক্ষা দেওয়া থেকে আমি বিরত হইনি

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বধির হওয়া সত্ত্বেও অন্যদের শিক্ষা দেওয়া থেকে আমি বিরত হইনি
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • বাইবেলের সত্য শেখা
  • সত্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া
  • যিহোবা আমার যত্ন নিয়েছেন
  • ‘সদাপ্রভু তাহাদের প্রতি আপন মুখ উজ্জ্বল করিয়াছেন’
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার বধির ভাইবোনদের মূল্যবান বলে গণ্য করুন!
    ২০০৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার এলাকায় বধির লোকেদের খুঁজে বের করার জন্য সজাগ থাকুন
    ২০০১ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • “আমি দেখলাম ঠিকই, কিন্তু বুঝতে পারলাম না”
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
w17 মে পৃষ্ঠা ১৩-১৬

জীবনকাহিনি

বধির হওয়া সত্ত্বেও অন্যদের শিক্ষা দেওয়া থেকে আমি বিরত হইনি

বলেছেন ওয়াল্টার মার্কিন

আমি ১৯৪১ সালে ১২ বছর বয়সে বাপ্তিস্ম নিই। কিন্তু, সত্যি বলতে কী, ১৯৪৬ সালের আগে পর্যন্ত আমি বাইবেলের সত্য ভালোভাবে বুঝতে পারিনি। কেন এমনটা হয়েছিল? আসুন, আমি আপনাদের আমার গল্পটা বলি।

ওয়াল্টার মার্কিন

উনিশ-শো দশের দশকে আমার বাবা-মা জর্জিয়ার টিবলিসি থেকে কানাডায় চলে আসেন এবং পশ্চিম কানাডার সাসকেচুয়ানে পেলির কাছাকাছি বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে একটা ছোট্ট খামারবাড়িতে স্থায়ীভাবে বাস করতে শুরু করেন। ১৯২৮ সালে আমার জন্ম হয় আর ছয় ভাই-বোনের মধ্যে আমি হলাম সবচেয়ে ছোটো। আমার জন্মের ছয় মাস আগেই বাবা মারা যান এবং একেবারে শিশু থাকতেই মা মারা যান। আর এর পর পরই আমার সবচেয়ে বড়ো দিদি লুসি মাত্র ১৭ বছর বয়সে মারা যান। এরপর আমার মামা, নিক আমার ও আমার ভাই-বোনদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেন।

আমি যখন সবে হাঁটতে শিখেছি, তখন একদিন আমার পরিবারের লোকেরা লক্ষ করে যে, আমি খামারে একটা ঘোড়ার লেজ ধরে টানছি। সেই ঘোড়া আমাকে লাথি মারতে পারে, এই ভয়ে তারা চিৎকার করে আমাকে থামতে বলে—কিন্তু আমি কোনো প্রতিক্রিয়াই দেখাই না। তারা পিছন থেকে চিৎকার করছিল আর আমি তাদের আওয়াজ শুনতে পাইনি। ভালো যে, আমার কোনো ক্ষতি হয়নি, কিন্তু সেই দিন প্রথম আমার পরিবারের লোকেরা বুঝতে পারে যে, আমি বধির।

পরিবারের একজন পরিচিত ব্যক্তি আমাকে অন্যান্য বধির ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে পড়াশোনা করানোর বিষয়ে পরামর্শ দেন আর তাই আমার মামা আমাকে সাসকেচুয়ানের সাসকেটুনে অবস্থিত বধিরদের একটা স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। আমাকে বাড়ি থেকে কয়েক ঘণ্টা দূরে অবস্থিত একটা জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় আর যেহেতু তখন আমার বয়স মাত্র পাঁচ বছর, তাই আমি বেশ আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। আমি কেবল ছুটির দিনগুলোতে এবং গরমের ছুটির সময় বাড়িতে আসতে পারতাম। একসময় আমি সাংকেতিক ভাষা শিখে যাই এবং অন্যান্য ছেলে-মেয়ের সঙ্গে খেলাধুলা করা উপভোগ করতে শুরু করি।

বাইবেলের সত্য শেখা

১৯৩৯ সালে আমার দিদি ম্যারিয়নের সঙ্গে বিল ড্যানিইলচুক নামে এক ব্যক্তির বিয়ে হয় আর তারা আমার ও আমার আরেক দিদি ফ্রান্সিসের দেখাশোনা করার দায়িত্ব নেন। আমাদের পরিবারের মধ্যে তাদেরই প্রথম যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। গরমের ছুটিতে আমি যখন বাড়িতে আসতাম, তখন তারা তাদের সাধ্যমতো আমাকে বাইবেল থেকে তারা যা শিখছিলেন, সেগুলো জানানোর চেষ্টা করতেন। সত্যি বলতে কী, যেহেতু তারা সাংকেতিক ভাষা জানতেন না, তাই তাদের সঙ্গে ভাববিনিময় করা সহজ ছিল না। কিন্তু, তারা বাইবেলের শিক্ষার প্রতি আমার আন্তরিক ভালোবাসা লক্ষ করেন। আমি বুঝতে পারি, তাদের কাজের সঙ্গে বাইবেলের শিক্ষার মিল রয়েছে আর তাই তারা যখন প্রচারে যেতেন, তখন আমিও তাদের সঙ্গে যেতাম। খুব শীঘ্রই আমি বাপ্তিস্ম নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করি আর ১৯৪১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আমার দাদাবাবু বিল আমাকে একটা স্টিলের ড্রামে বাপ্তিস্ম দেন, যেটা কুয়ো থেকে জল তুলে পূর্ণ করা হয়েছিল। সেই জল প্রচণ্ড ঠাণ্ডা ছিল!

১৯৪৬ সালে ওহাইওর ক্লিভল্যাড অনুষ্ঠত এক সমলনে বধির ব্যক্তিদের একটা দলের সগ ওয়াল্টার মার্কিন

১৯৪৬ সালে ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বধির ব্যক্তিদের একটা দলের সঙ্গে

১৯৪৬ সালে গরমের ছুটিতে আমি যখন বাড়িতে আসি, তখন আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর ক্লিভল্যান্ডে অনুষ্ঠিত একটা সম্মেলনে যোগ দিই। সম্মেলনের প্রথম দিন আমার দিদিরা পালা করে লিখে লিখে আমাকে কার্যক্রম বোঝার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। কিন্তু, দ্বিতীয় দিন আমি যখন বধিরদের একটা দল এবং তাদের জন্য সাংকেতিক ভাষার একজন অনুবাদককে দেখতে পাই, তখন আমি রোমাঞ্চিত হয়ে যাই। অবশেষে আমি কার্যক্রম উপভোগ করতে শুরু করি। আর এটা অনেক আনন্দের বিষয় যে, শেষপর্যন্ত আমি সত্যিই বাইবেলের শিক্ষা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি!

সত্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া

সেইসময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সবেমাত্র শেষ হয়েছিল এবং লোকেদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী মনোভাব খুব দৃঢ় ছিল। সম্মেলনের শেষে আমি এই দৃঢ়সংকল্প নিয়ে ফিরে আসি যে, স্কুলে আমি আমার বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করব। তাই, আমি পতাকা অভিবাদন করা এবং জাতীয় সংগীতে অংশ নেওয়া বন্ধ করে দিই। এ ছাড়া, আমি বিভিন্ন ছুটির দিন উদ্‌যাপন করা এবং বাধ্যতামূলক গির্জার কার্যক্রমে অংশ নেওয়াও বন্ধ করে দিই। কিন্তু, স্কুল কর্তৃপক্ষ এতে অসন্তুষ্ট হয় এবং আমাকে ভয় দেখিয়ে ও মিথ্যা বলে আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করানোর চেষ্টা করে। এই সমস্ত কিছু আমার সহছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে, কিন্তু এটা আমাকে অন্যদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। কয়েক জন সহছাত্র-ছাত্রী, যেমন ল্যারি অ্যান্ড্রোসফ্‌, নরম্যান ডিট্রিক ও ইমিল শ্নাইডার পরবর্তী সময়ে সত্য গ্রহণ করে এবং তারা এখনও অনুগতভাবে যিহোবার সেবা করে চলেছে।

আমি যখন অন্যান্য শহরে যাই, তখন সবসময় আমার লক্ষ্য থাকে, বধির লোকেদের কাছে সাক্ষ্য দেওয়া। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মন্ট্রিলে বধিরদের একটা ক্লাবে আমি এডি ট্যাগার নামে এক যুবকের কাছে সাক্ষ্য দিই, যিনি খারাপ ছেলেদের একটা দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। গত বছর মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত, তিনি কুইবেকের লাভালের একটা সাংকেতিক ভাষার মণ্ডলীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ ছাড়া, খয়ান আর্দেনাজ নামে এক যুবকের সঙ্গেও আমার সাক্ষাৎ হয়, যিনি বাইবেলের বার্তার সত্যতা যাচাই করার জন্য বিরয়ার লোকেদের মতো অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে গবেষণা করতেন। (প্রেরিত ১৭:১০, ১১) তিনিও সত্য গ্রহণ করেন এবং মৃত্যুর আগে পর্যন্ত অন্টারিওর অটোয়ায় বিশ্বস্তভাবে একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করেন।

ওয়াল্টার মার্কিন ১৯৫০-এর দশকের শুরুর দিকে রাতায় সাক্ষ্যদান করছন

১৯৫০-এর দশকের শুরুর দিকে রাস্তায় সাক্ষ্যদান করছি

১৯৫০ সালে আমি ভ্যানকুভারে চলে যাই। যদিও বধির লোকেদের কাছে সাক্ষ্য দিতে আমার ভালো লাগত কিন্তু ক্রিস স্পাইসার নামে একজন মহিলার কাছে রাস্তায় সাক্ষ্যদান করার অভিজ্ঞতা আমি কখনোই ভুলব না, যিনি বধির ছিলেন না। তিনি পত্রিকার গ্রাহক হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং আমাকে তার স্বামী গ্যারির সঙ্গে দেখা করতে বলেন। তাই, আমি তাদের বাড়িতে যাই এবং আমরা লিখে লিখে দীর্ঘসময় ধরে আলোচনা করি। এরপর তাদের সঙ্গে আমার আর কোনো সাক্ষাৎ হয় না। কিন্তু, কয়েক বছর পর অন্টারিওর টরোন্টোতে একটা সম্মেলনে ভিড়ের মধ্যে তারা যখন আমাকে দেখতে পায়, তখন তাদের দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। গ্যারি সেই দিনই বাপ্তিস্ম নিতে যাচ্ছিলেন। সেই চমৎকার অভিজ্ঞতা আমাকে ক্রমাগত প্রচার করার গুরুত্ব সম্বন্ধে স্মরণ করিয়ে দেয় কারণ আমরা জানি না, কোথায় ও কখন একজন ব্যক্তির হৃদয়ে সত্যের বীজ বৃদ্ধি পাবে।

এরপর, আমি সাসকেটুনে ফিরে আসি। সেখানে জিন ও জোন রথেনবার্গার নামে দুই জন যমজ বধির মেয়ের মায়ের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয় এবং তিনি আমাকে তার মেয়েদের বাইবেল অধ্যয়ন করানোর কথা বলেন। আমি আগে যে-স্কুলে পড়তাম, তারা দু-জন সেই একই স্কুলে পড়তেন। তারা যা শিখছিলেন, অল্পদিনের মধ্যেই তা তাদের সহপাঠীদের কাছে জানাতে শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে, তাদের ক্লাসের পাঁচ জন যিহোবার সাক্ষি হয়ে ওঠে। তাদের মধ্যে একজন ছিল, ইউনিস কলিন। আমি যখন সেই স্কুলের শেষ বছরে ছিলাম, তখনই ইউনিসের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয়। সেইসময় সে আমাকে একটা লজেন্স খেতে দেয় এবং আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায়। পরবর্তী সময়ে, সে আমার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে—আমি তাকে বিয়ে করি!

১৯৬০ ও ১৯৮৯ সালে ওয়াল্টার ও ইউনিস মার্কিন

১৯৬০ ও ১৯৮৯ সালে ইউনিসের সঙ্গে

ইউনিসের মা যখন জানতে পারেন যে, ইউনিস বাইবেল অধ্যয়ন করছে, তখন তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে দিয়ে ইউনিসকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, যেন সে বাইবেল অধ্যয়ন না করে। প্রধান শিক্ষক এমনকী ইউনিসের কাছ থেকে তার অধ্যয়ন সহায়কগুলো জোর করে নিয়ে নেন। কিন্তু, ইউনিস যিহোবাকে প্রথমে রাখার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল। সে যখন বাপ্তিস্ম নিতে চায়, তখন তার বাবা-মা তাকে বলেন, “তুমি যদি যিহোবার সাক্ষি হও, তা হলে তুমি আর এই বাড়িতে থাকতে পারবে না!” ১৭ বছর বয়সে ইউনিস বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় আর স্থানীয় এক সাক্ষি পরিবার সদয়ভাবে তাকে তাদের বাড়িতে আশ্রয় দেন। সে অধ্যয়ন চালিয়ে যায় এবং একসময় বাপ্তিস্ম নেয়। ১৯৬০ সালে আমরা বিয়ে করি, কিন্তু তার বাবা-মা আমাদের বিয়েতে আসেননি। তবে, বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা আমাদের বিশ্বাস দেখে ও সেইসঙ্গে আমরা যেভাবে আমাদের সন্তানদের মানুষ করে তুলেছিলাম, তা দেখে আমাদের সম্মান করতে শুরু করেন।

যিহোবা আমার যত্ন নিয়েছেন

লডন বেথেলে নিক ও ডেবোরা মার্কিন

আমার ছেলে নিকোলাস ও তার স্ত্রী ডেবোরা লন্ডন বেথেলে সেবা করছে

যদিও আমরা বধির, কিন্তু আমাদের সাত ছেলেই শুনতে পায়। তাদের মানুষ করে তোলা আমাদের জন্য এক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। কিন্তু, আমরা তাদের সাংকেতিক ভাষা শেখানোর চেষ্টা করেছি, যাতে আমরা তাদের সঙ্গে ভালোভাবে ভাববিনিময় করতে পারি এবং তাদের সত্য সম্বন্ধে শিক্ষা দিতে পারি। এই ক্ষেত্রে মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা আমাদের অনেক সাহায্য করেছে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন ভাই একবার আমাদের একটা নোট লিখে জানান যে, আমাদের এক ছেলে কিংডম হলে খারাপ শব্দ ব্যবহার করছে। এর ফলে, আমরা সঙ্গেসঙ্গে পদক্ষেপ নিতে সমর্থ হই। আমার চার ছেলে জেমস্‌, জেরি, নিকোলাস ও স্টিভেন তাদের পরিবার নিয়ে বিশ্বস্তভাবে যিহোবার সেবা করছে। তারা চার জনই প্রাচীন হিসেবে সেবা করছে। এ ছাড়া, নিকোলাস ও তার স্ত্রী ডেবোরা ব্রিটেনের শাখা অফিসে সাংকেতিক ভাষার অনুবাদে সাহায্য করছে এবং স্টিভেন ও তার স্ত্রী শ্যানন যুক্তরাষ্ট্রের শাখা অফিসে সাংকেতিক ভাষার অনুবাদ দলের সঙ্গে কাজ করছে।

আমার ছেলে জেমস্‌, জেরি ও স্টিভেন তাদের স্ত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন উপায়ে সাংকেতিক ভাষার প্রচার কাজকে সমর্থন করছে

আমাদের ৪০তম বিবাহবার্ষিকীর এক মাস আগে ইউনিস ক্যান্সারের কারণে মারা যায়। সেই কঠিন সময়ের মধ্যেও সে প্রচুর সাহস বজায় রেখেছিল। পুনরুত্থানের প্রতি তার বিশ্বাস তাকে দৃঢ় থাকতে সাহায্য করেছিল। আমি সেই সময়ের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছি, যখন আমি আবার তাকে দেখতে পাব।

ফে ও জেমস্‌ মার্কিন; জেরি ও এভলিন মার্কিন; শ্যানন ও স্টভ মার্কিন

ফে ও জেমস্‌, জেরি ও এভলিন, শ্যানন ও স্টিভেন

২০১২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে পড়ে গিয়ে আমার কোমর ভেঙে যায়। আমি বুঝতে পারি, সাহায্য ছাড়া আমার একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। তাই, আমি আমার এক ছেলে ও তার স্ত্রীর সঙ্গে গিয়ে থাকতে শুরু করি। এখন আমরা ক্যালগারি সাংকেতিক ভাষার মণ্ডলীর সদস্য আর সেখানে আমি একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করছি। সত্যি বলতে কী, এই প্রথম বার আমি সাংকেতিক ভাষার মণ্ডলীতে সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। ভাবতে পারেন! এত বছর ধরে—সেই ১৯৪৬ সাল থেকে—ইংরেজি ভাষার মণ্ডলীতে থাকা সত্ত্বেও, কীভাবে আমি যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছি? যিহোবা পিতৃহীনদের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে তাঁর প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছেন। (গীত. ১০:১৪) আমি তাদের সবার মিলিত প্রচেষ্টার জন্য খুবই কৃতজ্ঞ, যারা অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে আমার জন্য নোট লিখেছে, সাংকেতিক ভাষা শিখেছে এবং যথাসাধ্য প্রচেষ্টা করে আমার জন্য অনুবাদ করেছে।

৭৯ বছর বয়সি ওয়াল্টার মার্কিন অগগামী স্কুলের বই এবং সাংকেতিক ভাষার ডিভিডি হাতে দাঁড়িয়ে আছন

৭৯ বছর বয়সে আমেরিকান সাংকেতিক ভাষার (ASL) অগ্রগামী স্কুলে

এটা ঠিক যে, জীবনে এমন সময়ও এসেছে, যখন আমি হতাশ হয়ে পড়েছি এবং হাল ছেড়ে দিতে চেয়েছি। আর এর কারণ ছিল, আমি লোকেদের কথা বুঝতে পারতাম না অথবা আমার মনে হতো যে, লোকেরা একজন বধির ব্যক্তির কী প্রয়োজন, তা বুঝতে পারে না। কিন্তু, সেই মুহূর্তগুলোতে আমি যিশুর প্রতি বলা পিতরের এই কথাগুলো নিয়ে চিন্তা করতাম: “প্রভু, কাহার কাছে যাইব? আপনার নিকটে অনন্ত জীবনের কথা আছে।” (যোহন ৬:৬৬-৬৮) আমার সময়ের অন্যান্য অনেক বধির ভাই-বোনের মতো আমিও ধৈর্য ধরতে শিখেছি। আমি যিহোবাতে অপেক্ষা করতে এবং তাঁর সংগঠনের উপর নির্ভর করতে শিখেছি আর এটা আমার জন্য কতই-না উপকার নিয়ে এসেছে! এখন আমার নিজের ভাষায় প্রচুর সাহিত্যাদি রয়েছে আর আমি আমেরিকান সাংকেতিক ভাষার (ASL) সভা ও সম্মেলনগুলোতে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করা উপভোগ করতে পারছি। সত্যিই, আমাদের মহান ঈশ্বর যিহোবার সেবায় আমি এক সুখী ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন লাভ করতে পেরেছি।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার