সুসমাচার ঘোষণায় ক্ষান্ত নয়
১ প্রাথমিক খ্রীষ্টানেরা তাদের পরিচর্যাকে খুব গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছিল। লূক জানান: “তাঁহারা প্রতিদিন ধর্ম্মধামে ও বাটীতে উপদেশ দিতেন, এবং যীশুই যে খ্রীষ্ট, এই সুসমাচার প্রচার করিতেন, ক্ষান্ত হইতেন না।” (প্রেরিত ৫:৪২) কোন কিছু, এমনকি নির্যাতনও তাদের স্তব্ধ করতে পারেনি! (প্রেরিত ৮:৪) তারা প্রতিদিন অন্যদের কাছে সত্য সম্বন্ধে কথা বলত।
২ আমাদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন: ‘আমি কি সময়ের তৎপরতার অর্থ বুঝি? ক্ষান্ত না হয়ে ক্রমাগতভাবে সুসমাচার ঘোষণা করতে আমি কি ইচ্ছুক?’
৩ ক্ষান্ত না হয়ে প্রচার করার আধুনিক-দিনের উদাহরণগুলি: পোলিও রোগে আক্রান্ত এক বোন, বুকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র থাকার জন্য অবরুদ্ধ ছিলেন। তিনি কিংডম হলে যেতে অথবা কোন অধিবেশনে উপস্থিত হতে সক্ষম ছিলেন না। কিন্তু তিনি প্রগাঢ়ভাবে সুসমাচার ঘোষণায় পরিব্যাপ্ত ছিলেন। তার ৩৭-বছরের অবরুদ্ধকালে, তিনি ১৭ জন লোককে সত্য শিখতে সাহায্য করতে পেরেছিলেন! কিভাবে তিনি এটি করেছিলেন? যদিও ঘরে ঘরে যেতে অসমর্থ ছিলেন, তবুও যারা তার সান্নিধ্যে আসত তাদের কাছে প্রতিদিন রীতিবহির্ভূতভাবে সাক্ষ্যদান করার একটি উপায় তিনি খুঁজে নিয়েছিলেন।
৪ আমাদের বসনিয়ার ভাইয়েদের যুদ্ধ ও বিয়োগব্যথার সাথে মোকাবিলা করতে হয়েছিল। তৎসত্ত্বেও, তারা নিয়মিতভাবে অন্যদের কাছে ক্রমাগত প্রচার করে চলে। সারাজেভোয় প্রকাশকেরা প্রতি মাসে সুসমাচার সম্বন্ধে অন্যদের কাছে গড়ে ২০ ঘন্টা কথা বলেছে এবং তারা প্রত্যেকে গড়ে দুটি করে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করে। তাদের নিদারুন কষ্টকর পরিস্থিতি সত্ত্বেও, তারা ক্ষান্ত না হয়ে প্রচার করে এবং শিক্ষা দিয়ে চলে।
৫ অল্পবয়স্কেরাও পরিচর্যার প্রতি উদ্যোগ প্রকাশ করে। রুয়াণ্ডাতে একটি সাক্ষী পরিবারকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয় যেখানে তাদের হত্যা করার জন্য সৈন্যেরা প্রস্তুত হচ্ছিল। প্রথমে প্রার্থনা করার জন্য পরিবারটি অনুমতি চায়। অনুমতি দেওয়া হয় আর যুবতী কন্যা ডেবোরা, উচ্চৈস্বরে প্রার্থনা করে বলে: “যিহোবা, এই সপ্তাহে বাবা ও আমি পাঁচটি পত্রিকা বিতরণ করেছি। ঐ লোকেদের কাছে আমরা কিভাবে ফিরে যাব যাতে করে তাদের সত্য শিখতে এবং জীবন ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারি?” তার দৃঢ় বিশ্বাস ও পরিচর্যার প্রতি তার প্রেমের জন্য, সমগ্র পরিবারটি নিষ্কৃতি পায়।
৬ আজকের দিনেও, অন্যদের কাছে সাক্ষ্যদানের জন্য সুযোগগুলির প্রতি লক্ষ্য রাখার এবং যারা “অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত হইয়াছিল,” তাদের খুঁজে বার করার প্রয়োজন রয়েছে। (প্রেরিত ১৩:৪৮) স্থানীয় পরিস্থিতির সাথে সঙ্গতি রেখে, মণ্ডলীর প্রাচীনেরা উপযুক্ত সময়ে দলগতভাবে সাক্ষ্যদানের ব্যবস্থা করেন, তা সে সকাল, বিকাল অথবা সন্ধ্যা যাই হোক না কেন। আমাদের রাজ্যের পরিচর্য্যা-র প্রবন্ধগুলি এবং পরিচর্যা সভা, সীমা অধিবেশন এবং জেলা সম্মেলনগুলির অংশবিশেষ সময়োপযোগী পরামর্শগুলি এবং রাজ্যের সাক্ষ্যদানের বিভিন্ন উপায়গুলিতে অংশ নিতে উৎসাহ প্রদান করে থাকে। এছাড়াও, সীমা ও জেলা অধ্যক্ষ প্রকাশকদের রাস্তায় সাক্ষ্যদানে প্রশিক্ষণ দেন, দেখান কিভাবে ব্যবসায়ী এলাকায় কাজ করতে হয় এবং যেখানেই লোকেদের পাওয়া যায় সেখানে সাক্ষ্যদান করার জন্য অন্যান্য উপায়গুলির উল্লেখ করেন। এই সমস্ত কিছুই জোর দেয় সুসমাচার ঘোষণায় ক্ষান্ত নয়!
৭ যীশুর প্রেরিতেরা সাহসের সাথে ঘোষণা করেছিল: “আমরা যাহা দেখিয়াছি ও শুনিয়াছি, তাহা না বলিয়া থাকিতে পারি না।” সকল প্রতিবন্ধকতাগুলি থাকা সত্ত্বেও কিভাবে তারা অধ্যবসায়ী ছিল? তাদেরকে সাহায্য করার জন্য তারা যিহোবার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছিল, যেটি তিনি করেছিলেন আর “তাঁহারা সকলেই পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হইলেন ও সাহসপূর্ব্বক ঈশ্বরের বাক্য বলিতে থাকিলেন।” (প্রেরিত ৪:২০, ২৯, ৩১) প্রত্যেকেই হয়ত পরিচর্যায় উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতাসহ আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয় না, কিন্তু ক্ষান্ত না হয়ে সুসমাচার ঘোষণা করতে সত্যই যদি আমাদের ইচ্ছা থাকে আর যদি আমরা নিয়মিত ভিত্তিতে তা করতে প্রচেষ্টা করি, যিহোবা আমাদের সাহায্য করবেন।