আমাদের পরিচর্যা যা সম্পাদন করে
১ ঈশ্বরের বাক্য খ্রিস্টানদের যিহোবার সেবায় এক বিজয়যাত্রায় জয়োল্লাসে এগিয়ে যাচ্ছে বলে বর্ণনা করে। (২ করি. ২:১৪-১৬) ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞান জানানোর সময়, আমাদের ওষ্ঠাধরের ফল উৎসর্গ করা হল যিহোবার কাছে সুগন্ধি ধূপের মতো। কিছু লোক সুসমাচারের সুমিষ্টতার প্রতি আকৃষ্ট হয়; অন্যেরা এটিকে প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু, অধিকাংশ লোকের নেতিবাচক সাড়া দেওয়ার মানে এই নয় যে, আমাদের কাজ ব্যর্থ। আমাদের পরিচর্যা যা সম্পাদন করে, তা বিবেচনা করুন।
২ যিহোবাকে মহিমান্বিত করা: শয়তান তর্ক করে বলে যে, মানুষ স্বার্থপর কারণগুলোর জন্য যিহোবাকে সেবা করে। (ইয়োব ১:৯-১১) খ্রিস্টীয় পরিচর্যা আমাদেরকে দেখানোর সুযোগ করে দেয় যে, ঈশ্বরের প্রতি আমাদের ভক্তি অকৃত্রিম। ব্যক্তিগত কঠিন পরিস্থিতিগুলো এবং সাধারণ লোকেদের উদাসীনতা সত্ত্বেও, অনেক প্রকাশক সবসময় প্রচার ও শিষ্য তৈরি করার আদেশ মেনে চলে। এই ধরনের অনুগত ধৈর্য যিহোবার হৃদয়কে আনন্দিত করে!—হিতো. ২৭:১১.
৩ এ ছাড়া, ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ করার ক্ষেত্রেও আমাদের পরিচর্যা এক ভূমিকা পালন করে থাকে। শয়তানের জগতের আসন্ন ধ্বংসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়ে যিহোবা বলেন: “জাতিগণ জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু।” (যিহি. ৩৯:৭) জাতিগুলোকে তা জানতে হলে, ঈশ্বরের দাসদের ‘প্রত্যক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দের’ কাছে তাঁর নাম ও উদ্দেশ্য ক্রমাগত ঘোষণা করে চলা অত্যাবশ্যক।—প্রকা. ১৪:৬, ৭.
৪ বিচারের ভিত্তি: এ ছাড়া, সুসমাচার প্রচার করা বিচারের এক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে, খ্রিস্ট যিশু “যাহারা ঈশ্বরকে জানে না ও যাহারা আমাদের প্রভু যীশুর সুসমাচারের আজ্ঞাবহ হয় না” তাদের সমুচিত দণ্ড দেবেন। (২ থিষল. ১:৮, ৯) সুসমাচারের প্রতি লোকেরা যেভাবে সাড়া দেবে তার দ্বারা তারা বিচারিত হবে। ঈশ্বরের দাসদের ওপর কী এক গুরু দায়িত্বই না রয়েছে! রক্তের দায় এড়ানোর জন্য আমাদের অবশ্যই জীবন-রক্ষাকারী রাজ্যের বার্তা জানানো থেকে বিরত হলে চলবে না।—প্রেরিত ২০:২৬, ২৭.
৫ আমাদের প্রতিবেশীদেরকে ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করতে সাহায্য করার জন্য আমাদের অবিরত প্রচেষ্টা হল যিহোবার করুণার এক অভিব্যক্তি। (১ তীম. ২:৩, ৪) লোকেদের জীবন অবিরতভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে একথা জেনে, আমরা বার বার তাদের কাছে যাই এবং এখনও সময় রয়েছে বলে তাদের যিহোবার অন্বেষণ করার জন্য জোরালো পরামর্শ দিই। তা করে, আমরা ‘আমাদের ঈশ্বরের কৃপাযুক্ত স্নেহ’ প্রতিফলিত করি, যাঁর ‘কতকগুলি লোক যে বিনষ্ট হয়, এমন বাসনা নাই; বরং সকলে যেন মনপরিবর্ত্তন পর্য্যন্ত পঁহুছিতে পায়, এই তাঁহার বাসনা।’—লূক ১:৭৮; ২ পিতর ৩:৯.
৬ নিজেরা উপকৃত হওয়া: যিহোবার সেবায় ব্যস্ত রাখা আমাদের জন্য এক সুরক্ষা। এটা আমাদেরকে ‘ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের আকাঙ্ক্ষা’ করতে এবং বর্তমান দুষ্ট বিধি ব্যবস্থার দ্বারা কলুষিত হওয়া এড়াতে সাহায্য করে। (২ পিতর ৩:১১-১৪; তীত ২:১১, ১২) সেইজন্য আমরা যেন ‘সুস্থির, নিশ্চল’ হই, ‘প্রভুর কার্য্যে সর্ব্বদা উপচিয়া পড়ি’ এটা জেনে যে, খ্রিস্টীয় পরিচর্যায় আমাদের প্রচেষ্টা নিষ্ফল নয়।—১ করি. ১৫:৫৮.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১. আমাদের পরিচর্যাকে যিহোবা কীভাবে দেখেন আর মানুষ কীভাবে সাড়া দেয়?
২. আমাদের পরিচর্যা আমাদেরকে কী দেখাতে সমর্থ করে?
৩. ঈশ্বরের নাম ও উদ্দেশ্য ক্রমাগত জানিয়ে চলা কেন আমাদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ?
৪. কীভাবে প্রচার কাজ বিচারের এক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে?
৫. ঈশ্বরের করুণা কীভাবে আমাদের পরিচর্যায় প্রতিফলিত হয়?
৬. যিহোবার সেবায় ব্যস্ত রাখা কীভাবে আমাদের উপকৃত করে?