ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g০৪ ৪/৮ পৃষ্ঠা ১৮-২০
  • আতশবাজির প্রতি আকর্ষণ

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আতশবাজির প্রতি আকর্ষণ
  • ২০০৪ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • প্রাচ্যের এক প্রথা
  • প্রদর্শনীর রহস্য
  • এক ধর্মীয় যোগসূত্র
  • পয়সা খরচে কার্পণ্য নেই
২০০৪ সচেতন থাক!
g০৪ ৪/৮ পৃষ্ঠা ১৮-২০

আতশবাজির প্রতি আকর্ষণ

কৃষি মেলা হোক বা অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধন যা-ই হোক না কেন, আতশবাজি সেইসব অনুষ্ঠানের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। আলোকরশ্মির বিচ্ছুরণ যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস, ফ্রান্সের ব্যাসটিল ডে উদ্‌যাপন এবং বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক বড় বড় শহরে নববর্ষের সন্ধ্যায় আকাশকে আলোকিত করে।

কিন্তু, আতশবাজির প্রতি মানুষের এই আকর্ষণ কখন শুরু হয়েছিল? আর এই চোখ-ধাঁধানো প্রদর্শন উদ্ভাবনের সঙ্গে কোন উদ্ভাবনকুশলতা জড়িত?

প্রাচ্যের এক প্রথা

অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তারা একমত যে, চিনের অধিবাসীরা সাধারণ কাল প্রায় দশম শতাব্দীতে আতশবাজি উদ্ভাবন করেছিল, যখন প্রাচ্যের রসায়নবিদরা আবিষ্কার করেছিল যে, সল্টপিটারের (পটাশিয়াম নাইট্রেট) সঙ্গে সালফার ও কাঠকয়লা মেশালে এক বিস্ফোরণযোগ্য যৌগ উৎপন্ন হয়। পাশ্চাত্যের আবিষ্কারকরা, যেমন মার্কো পোলো বা সম্ভবত আরব দেশীয় বণিকরা এই উদ্‌বায়ী পদার্থকে ইউরোপে নিয়ে এসেছিল এবং চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যে, আতশবাজির অপূর্ব প্রদর্শন ইউরোপের দর্শকদের আনন্দ দিয়েছিল।

কিন্তু, যে-বারুদ এত অপূর্ব বিনোদন জুগিয়েছিল, তা ইউরোপীয় ইতিহাসের মোড়ও ঘুরিয়ে দিয়েছিল। সৈন্যরা এই পদার্থ ব্যবহার করেছিল যেটা পরে কামানের বারুদ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে, যা সীসার বুলেট চালিত করার, প্রাসাদের দেওয়াল ভেঙে ফেলার এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে পতিত করার জন্য ব্যবহৃত হতো। “ইউরোপীয় মধ্যযুগ চলাকালে,” এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা বলে, “সামরিক বিস্ফোরক পদার্থগুলোর সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজিও পশ্চিমা দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছিল এবং ইউরোপে বিজয় ও শান্তির উদ্‌যাপনগুলোতে আতশবাজির প্রদর্শনী পরিচালনা করার জন্য সামরিক বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন পড়ত।”

এই মধ্যবর্তী সময়ে, চিনের লোকেরা মনে হয় কামানের বারুদের সম্ভাব্য ধ্বংসাত্মক শক্তিকে তুচ্ছ করেছিল। ১৬ শতাব্দীতে চিনে ইতালীয় এক জেসুইট মিশনারি মাত্তিও রিচি লিখেছিলেন: “চিনের লোকেরা বন্দুক ও কামান ব্যবহারে দক্ষ নয় আর এগুলোর অল্পই তারা কেবলমাত্র যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু, সাধারণ ক্রীড়া-প্রতিযোগিতা এবং উৎসবমুখর দিনগুলোতে আতশবাজি প্রদর্শনের আয়োজন করার জন্য প্রচুর পরিমাণে সল্টপিটার ব্যবহৃত হয়। চিনের লোকেরা এই ধরনের প্রদর্শনীতে প্রচুর আনন্দ লাভ করে . . . আতশবাজি উৎপাদনে তাদের দক্ষতা সত্যিই অসাধারণ।”

প্রদর্শনীর রহস্য

কোনো সন্দেহ নেই যে, প্রাচীনকালের আতশবাজি প্রস্তুতকারকদের দক্ষতা ও সাহস দুটোরই দরকার হতো, যখন তারা একের পর এক বিভিন্ন রকমের প্রদর্শনী দেখাত। তারা আবিষ্কার করেছিল যে, কামানের বারুদের বড় কণাগুলো তুলনামূলকভাবে ধীরে ধীরে পোড়ে, যেখানে মিহি কণাগুলো বিস্ফোরণের আকারে পুড়ে থাকে। বাঁশ বা কাগজের নলের এক দিক সীল দিয়ে বন্ধ করে এবং নিচের অংশে কামানের বারুদ বড় কণাগুলো দিয়ে মোড়কে বাঁধাই করে রকেট সৃষ্টি করা হয়েছিল। কামানের বারুদকে যখন প্রজ্বলিত করা হতো, তখন সম্প্রসারিত গ্যাস দ্রুতগতিতে নলের খোলা প্রান্ত থেকে সামনের দিকে চালিত হয়ে ক্ষেপণাস্ত্রকে সজোরে আকাশে নিক্ষেপ করেছিল। (বর্তমানে নভোচারীদের মহাশূন্যে প্রেরণ করার জন্য এই মৌলিক নীতিটি ব্যবহৃত হয়।) রকেটের ওপরের প্রান্তে কামানের মিহি বারুদ বেঁধে দেওয়া হয়, যাতে সবকিছু ঠিকমতো হলে ক্ষেপণাস্ত্রটা বঙ্কিম পথের চূড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে বিস্ফোরিত হবে।

কয়েক শতাব্দী ধরে আতশবাজি প্রযুক্তিগত দিক থেকে সামান্যই বদলেছে। তবে, কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। প্রাচ্যের লোকেরা সাদা বা সোনালি রংয়ের প্রদর্শন কীভাবে তৈরি করা যায়, সেই সম্বন্ধে জানত। ইতালীয়রা আরও রং যুক্ত করেছিল। ১৯ শতাব্দীর শুরুতে, ইতালীয়রা দেখেছিল যে, তারা যখন কামানের বারুদের মধ্যে পটাশিয়াম ক্লোরেট যোগ করে সেই মিশ্রণটাকে পর্যাপ্ত তাপের প্রভাবে গ্যাসে পরিণত করেছিল, তখন প্রধান বর্ণ ছাড়াও অন্য বর্ণের সামান্য শিখা উৎপন্ন হয়েছিল। আজকে, লাল বর্ণের শিখা উৎপাদনের জন্য স্ট্রনটিয়াম কার্বনেট যৌগ যোগ করা হয়। উজ্জ্বল-সাদা শিখা উৎপন্ন করা হয় টাইটেনিয়াম, আ্যলুমিনিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামের দ্বারা; কপার যৌগগুলোর দ্বারা নীল রং; বেরিয়াম নাইট্রেট দ্বারা সবুজ রং; এবং হলুদ রং উৎপন্ন করা হয় সোডিয়াম অক্সালেট যুক্ত এক মিশ্রণের দ্বারা।

আতশবাজির চমৎকার প্রদর্শনে কমপিউটার আরেক ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। হাত দিয়ে আতশবাজি জ্বালানোর বদলে প্রকৌশলীরা বৈদ্যুতিকভাবে আতশবাজি জ্বালানোর ব্যাপারে কমপিউটারে প্রোগ্রাম করার দ্বারা একেবারে নিখুঁত সময়ে তা করতে পেরেছে, ফলে সেগুলো এক সুরেলা তালে বিস্ফোরিত হতে পারে।

এক ধর্মীয় যোগসূত্র

জেসুইট মিশনারি রিচি যেমন উল্লেখ করেছিলেন যে, আতশবাজি চিনের ধর্মীয় উদ্‌যাপনগুলোরও এক অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। জনপ্রিয় কারিগররা (ইংরেজি) পত্রিকা ব্যাখ্যা করে যে, আতশবাজিগুলো “নববর্ষ এবং অন্যান্য উদ্‌যাপনগুলোর সময় ভূতপ্রেতদের তাড়ানোর জন্য চিনের অধিবাসীদের দ্বারা উদ্ভাবিত হয়েছিল।” হৌওয়ার্ড ভি. হারপার সমস্ত ধর্মের বিশেষ দিন ও রীতিনীতিগুলো (ইংরেজি) তার এই বইয়ে বলেন: “প্রাচীন পৌত্তলিক সময় থেকেই লোকেরা মশাল বহন করেছে এবং তাদের বড় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে আগুন জ্বেলে উৎসব করেছে। উৎসবগুলোতে চমৎকার বর্ণের ও নিজে নিজে আন্দোলিত আতশবাজির বাতি থাকবে, সেটাই তো স্বাভাবিক।”

নামধারী খ্রিস্টানরা আতশবাজিকে গ্রহণ করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, আতশবাজি প্রস্তুতকারীদের জন্য একজন রক্ষক সাধু নিয়োগ করা হয়েছিল। দ্যা কলম্বিয়া এনসাইক্লোপিডিয়া বলে: “কথিত আছে যে, [সাধ্বী বারবারার] বাবা তাকে একটা দুর্গে আটকে রেখেছিলেন এবং একজন খ্রিস্টান হওয়ার কারণে তাকে হত্যা করেছিলেন। বারবারার বাবা বজ্রপাতে মারা গিয়েছিলেন এবং এর মধ্যে ব্যাপক সাদৃশ্যতা দেখিয়ে সাধ্বী বারবারা আগ্নেয়াস্ত্র এবং আতশবাজি প্রস্তুতকারীদের রক্ষক সাধ্বীতে পরিণত হয়েছিলেন।”

পয়সা খরচে কার্পণ্য নেই

ধর্মীয় বা সাধারণ যে-উদ্‌যাপনই হোক না কেন, সাধারণ মানুষ আরও বড় আকারে ও আরও ভাল আতশবাজি প্রদর্শনের জন্য এক অতৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে বলে মনে হয়। ১৬ শতাব্দীতে চিনের একটা আতশবাজির প্রদর্শনের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে রিচি লিখেছিলেন: “আমি যখন নানকিনে ছিলাম, বছরের প্রথম মাস উদ্‌যাপনে আতশবাজির প্রদর্শন দেখেছিলাম, যা তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব এবং আমি হিসাব করে দেখেছিলাম যে, এই উপলক্ষে তারা যে-পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য খরচ করেছিল, তা দিয়ে কয়েক বছর ধরে একটা বড় ধরনের যুদ্ধ চালানো যাবে।” এই প্রদর্শনীর খরচ সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন: “আতশবাজির জন্য খরচ করার বিষয়টা যখন আসে, তখন তারা একটুও কার্পণ্য করে না বলে মনে হয়।”

মধ্যবর্তী শতাব্দীগুলোতে সামান্যই পরিবর্তন এসেছে। ২০০০ সালে, সিডনি হারবার ব্রিজে সংঘটিত কেবলমাত্র একটা অনুষ্ঠানে হারবার তটভূমিতে একত্রিত দশ লক্ষ বা তারও বেশি দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার জন্য ২০ টন আতশবাজি পোড়ানো হয়েছিল। সেই বছরই যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৭,০০,০০,০০০ কিলোগ্রাম আতশবাজির জন্য ৬২.৫ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়েছিল। নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে, অনেক সংস্কৃতি ক্রমাগত আতশবাজির প্রতি আকর্ষণ বোধ করে যাবে এবং তাই এটাও বলা যায় যে: “আতশবাজির জন্য খরচ করার বিষয়টা যখন আসে, তখন তারা একটুও কার্পণ্য করে না বলে মনে হয়।” (g০৪ ২/৮)

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার