-
তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেনতাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
-
-
২০, ২১. (ক) হোরেব পর্বতে গুহার প্রবেশদ্বারে এলিয় যা দেখেছিলেন, তা বর্ণনা করুন। (খ) যিহোবা তাকে যে-শক্তি দেখিয়েছিলেন, তা থেকে এলিয় কী শিখেছিলেন?
২০ যিহোবা কীভাবে এলিয়ের ভয় ও উদ্বেগের প্রতি সাড়া দিয়েছিলেন? সেই স্বর্গদূত তাকে গুহার প্রবেশদ্বারে দাঁড়াতে বলেছিলেন। কী ঘটতে চলেছে, তা না জেনেই তিনি তার কথা শুনেছিলেন। এক প্রবল ঝোড়ো বাতাস বয়ে গিয়েছিল! এর ফলে নিশ্চয়ই কানে তালা লাগার মতো প্রচণ্ড শব্দ হয়েছিল কারণ এটা এত শক্তিশালী ছিল যে, তা পর্বতমালা ও শৈলকে বিদীর্ণ করেছিল। কল্পনা করুন যে, ঝোড়ো বাতাসে তার ভারী ও সাধারণ লোমশ জামাটা প্রায় খুলে যাচ্ছে আর তিনি সেটা ধরে রাখার সঙ্গে সঙ্গে নিজের চোখ ঢাকার চেষ্টা করছেন। এরপর তিনি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলেন না কারণ মাটি কাঁপতে শুরু করেছিল, সেই অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছিল! এগুলো কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই, ভয়াবহ আগুন বয়ে গিয়েছিল এবং প্রচণ্ড তাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য তিনি গুহার মধ্যে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।—১ রাজা. ১৯:১১, ১২.
যিহোবা এলিয়কে সান্ত্বনা ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য তাঁর বিস্ময়কর শক্তি ব্যবহার করেছিলেন
২১ প্রতিটা ক্ষেত্রেই, বিবরণ আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, প্রাকৃতিক শক্তির সেই বিস্ময়কর প্রদর্শনের মধ্যে যিহোবা অবস্থিতি করছিলেন না। এলিয় জানতেন যে, যিহোবা পৌরাণিক কাহিনির কোনো প্রাকৃতিক শক্তির দেবতা ছিলেন না, যেমনটা ছিল বাল দেবতা, যাকে তার ভ্রান্ত উপাসকরা এমন দেবতা হিসেবে উপাসনা করত, যিনি “মেঘে চড়ে আসেন” বা বৃষ্টি নিয়ে আসেন। প্রকৃতিতে যে-সমস্ত বিস্ময়কর শক্তি দেখতে পাওয়া যায়, যিহোবা হলেন সেগুলোর প্রকৃত উৎস, কিন্তু তিনি যা-কিছু সৃষ্টি করেছেন, সেগুলো থেকে তিনি আরও মহান। এমনকী স্বর্গ বা মহাকাশও তাঁকে ধারণ করতে পারে না! (১ রাজা. ৮:২৭) এই সমস্তকিছুই এলিয়কে কীভাবে সাহায্য করেছিল? তার ভয়ের বিষয়টা স্মরণ করুন। অপ্রতিরোধ্য শক্তি যাঁর হাতের মুঠোয় এমন একজন ঈশ্বর যিহোবা তার পক্ষে থাকায়, এলিয়ের আহাব ও ঈষেবলকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই ছিল না!—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৮:৬.
২২. (ক) কীভাবে ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ এলিয়কে পুনরায় আশ্বস্ত করেছিল যে, তিনি অযোগ্য নন? (খ) সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ উৎস সম্ভবত কে ছিলেন? (পাদটীকা দেখুন।)
২২ আগুন নিভে যাওয়ার পর, সবকিছু শান্ত হয়ে গিয়েছিল এবং এলিয় “ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র এক স্বর” শুনেছিলেন। এই স্বর আবারও এলিয়কে মনের কথা বলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল এবং তিনি তা-ই করেছিলেন, দ্বিতীয় বার তার উদ্বেগগুলো সম্বন্ধে বলেছিলেন।a সম্ভবত এটা তাকে আরও স্বস্তি দিয়েছিল। কিন্তু, সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বর’ পরে তাকে যা বলেছিল, তা থেকে এলিয় নিঃসন্দেহে আরও সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন। যিহোবা এলিয়কে পুনরায় আশ্বস্ত করেছিলেন যে, তিনি অযোগ্য নন। কীভাবে? ইস্রায়েলে বাল উপাসনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিষয়ে ঈশ্বর তাঁর ভবিষ্যৎ উদ্দেশ্য সম্বন্ধে অনেক কিছু প্রকাশ করেছিলেন। স্পষ্টতই, এলিয়ের কাজ ব্যর্থ হয়ে যায়নি কারণ ঈশ্বরের উদ্দেশ্য অপ্রতিরোধ্যভাবে সামনের দিকে এগিয়ে চলছিল। এ ছাড়া, যিহোবা যেহেতু তাকে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দিয়ে আবার তার কাজে ফেরত পাঠিয়েছিলেন, তাই তখনও সেই উদ্দেশ্যে এলিয়ের ভূমিকা ছিল।—১ রাজা. ১৯:১২-১৭.
-
-
তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেনতাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
-
-
a সেই ‘ঈষৎ শব্দকারী ক্ষুদ্র স্বরের’ উৎস হয়তো সেই একই স্বর্গদূত, যিনি ১ রাজাবলি ১৯:৯ পদে উল্লেখিত “সদাপ্রভুর বাক্য” প্রদান করেছিলেন। ১৫ পদ “সদাপ্রভু” সম্বন্ধে উল্লেখ করে, যাঁকে সেই স্বর্গদূত প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। আমরা হয়তো সেই স্বর্গদূতের বিষয়ে স্মরণ করতে পারি, যাঁকে যিহোবা প্রান্তরে ইস্রায়েলীয়দেরকে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য ব্যবহার করেছিলেন এবং যাঁর বিষয়ে ঈশ্বর বলেছিলেন: “তাঁহার অন্তরে আমার নাম রহিয়াছে।” (যাত্রা. ২৩:২১) অবশ্য, এই বিষয়ে আমরা একেবারে নিশ্চিত করে বলতে পারি না, তবে এটা লক্ষণীয় যে, তাঁর মনুষ্যপূর্ব অস্তিত্বে যিশু যিহোবার দাসদের জন্য “বাক্য” অর্থাৎ বিশেষ মুখপাত্র হিসেবে সেবা করেছিলেন।—যোহন ১:১.
-