ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৭ ১০/১ পৃষ্ঠা ৪-৮
  • ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যিহোবাকে জানুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যিহোবাকে জানুন
  • ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা আর মোশি ‘সম্মুখাসম্মুখি হইয়া আলাপ করিতেন’
  • যিহোবা—এলিয়ের পরিচিত ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর
  • পবিত্র আত্মার দ্বারা পৌলের নির্দেশপ্রাপ্তি
  • নাস্তিকতা যিহোবার ব্যক্তিগত আগ্রহের পক্ষে বাধাস্বরূপ নয়
  • “মূর্খ” এবং ঈশ্বর
  • আমাদের ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরের কাছ থেকে সতর্কবাণী
  • তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি এলিয়ের মত বিশ্বস্ত হবেন?
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তিনি তার ঈশ্বরের কাছ থেকে সান্ত্বনা লাভ করেছিলেন
    তাদের বিশ্বাস অনুকরণ করুন
  • তোমার কি কখনো নিজেকে একা বলে মনে হয় এবং ভয় লাগে?
    আপনার সন্তানকে শিক্ষা দিন
আরও দেখুন
১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৭ ১০/১ পৃষ্ঠা ৪-৮

ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যিহোবাকে জানুন

ঈশ্বর সম্বন্ধে হিন্দু ধারণার সাথে অন্যান্য ধর্মীয় ব্যবস্থাগুলির তুলনা করে ভারতের ডা: রাধাকৃষ্ণন উল্লেখ করেন: “ইব্রীয়দের ঈশ্বর ভিন্ন প্রকৃতির। তিনি ব্যক্তিত্ববান ও ইতিহাসে সক্রিয় এবং এই গতিশীল জগতের পরিবর্তন ও সম্ভাব্যতার প্রতি আগ্রহী। তিনি এমন এক সত্ত্বা যিনি আমাদের সাথে ভাববিনিময় করেন।”

বাইবেলে ঈশ্বরের ইব্রীয় নাম হল יהוה, যেটি সাধারণভাবে “যিহোবা” হিসাবে অনুবাদিত হয়েছে। তিনি উৎকর্ষাদিতে অন্যান্য দেবদেবীদের ছাপিয়ে যান। আমরা তাঁর সম্বন্ধে কী জানি? বাইবেলের সময়ে তিনি মানুষের সঙ্গে কিরকম ব্যবহার করেছিলেন?

যিহোবা আর মোশি ‘সম্মুখাসম্মুখি হইয়া আলাপ করিতেন’

যিহোবা ও তাঁর দাস মোশির মধ্যে ‘সম্মুখাসম্মুখি হইয়া আলাপ করার’ মত ঘনিষ্ঠতা ছিল এমনকি যদিও আক্ষরিকভাবে মোশি যিহোবাকে দেখতে পাননি। (দ্বিতীয় বিবরণ ৩৪:১০; যাত্রাপুস্তক ৩৩:২০) তার যুবক বয়সে, মোশির হৃদয় ইস্রায়েলীয়দের সাথে ছিল যারা সেই সময়ে মিশরে ক্রীতদাস ছিল। তিনি “ঈশ্বরের প্রজাবৃন্দের সঙ্গে দুঃখভোগ মনোনীত” করে ফরৌণের গৃহের এক সদস্য হিসাবে জীবনযাপন করাকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। (ইব্রীয় ১১:২৫) ফলে, যিহোবা মোশিকে বিশেষ সুযোগগুলি দিয়েছিলেন।

ফরৌণের গৃহের এক সদস্য হিসাবে, “মোশি মিস্রীয়দের সমস্ত বিদ্যায় শিক্ষিত হইলেন।” (প্রেরিত ৭:২২) কিন্তু ইস্রায়েল জাতিকে পরিচালনা দিতে তার নম্রতা, ধৈর্য ও মৃদুতা প্রভৃতি গুণাবলিও উৎপন্ন করার প্রয়োজন হয়েছিল। মিদিয়নে তার ৪০ বছর মেষপালকের জীবন অতিবাহিত করার সময় তিনি এটি করেছিলেন। (যাত্রাপুস্তক ২:১৫-২২; গণনাপুস্তক ১২:৩) যিহোবা, যদিও অদৃশ্য ছিলেন, মোশির কাছে তিনি নিজেকে ও তাঁর উদ্দেশ্য সম্বন্ধে প্রকাশ করেছিলেন আর ঈশ্বর স্বর্গদূতেদের মাধ্যমে দশ আজ্ঞা তার কাছে ন্যস্ত করেছিলেন। (যাত্রাপুস্তক ৩:১-১০; ১৯:৩–২০:২০; প্রেরিত ৭:৫৩; ইব্রীয় ১১:২৭) বাইবেল আমাদের বলে যে “মনুষ্য যেমন মিত্রের সহিত আলাপ করে, তদ্রূপ সদাপ্রভু মোশির সহিত সম্মুখাসম্মুখি হইয়া আলাপ করিতেন।” (যাত্রাপুস্তক ৩৩:১১) সত্যই যিহোবা স্বয়ং বলেছিলেন: “তাহার সহিত আমি সম্মুখাসম্মুখি হইয়া কথা কহি।” তার অদৃশ্য অথচ ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরের সাথে মোশি কতই না এক মূল্যবান ব্যক্তিগত সম্পর্ক উপভোগ করেছিলেন!—গণনাপুস্তক ১২:৮.

ইস্রায়েল জাতির প্রাথমিক ইতিহাস ছাড়াও মোশি এর সমস্ত শাখাসহ ব্যবস্থা অনুশাসন লিপিবদ্ধ করেছিলেন। তার উপর আর একটি অমূল্য সুযোগ ন্যস্ত করা হয়েছিল—যেটি হল আদিপুস্তকটি রচনা করা। পুস্তকটির শেষ অংশটি ছিল সেই ইতিহাস যা তার নিজস্ব পরিবারের লোকেরা যথার্থভাবে জানত আর তাই তুলনামূলকভাবে তা লিপিবদ্ধ করা সহজ হয়েছিল। কিন্তু মানুষের সবচাইতে প্রারম্ভিক ইতিহাস সম্বন্ধে মোশি কোথা থেকে বিস্তারিত বিবরণ পেয়েছিলেন? সম্ভবত মোশি উৎস উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করার জন্য তার পূর্বপুরুষদের দ্বারা সংরক্ষিত প্রাচীন লিখিত দলিলগুলি পেয়েছিলেন। অপরপক্ষে, তিনি বিস্তারিত তথ্য মৌখিক সঞ্চার অথবা সরাসরিভাবে যিহোবার কাছ থেকে আসা ঐশিক প্রকাশের মাধ্যমেও পেয়ে থাকবেন। এই ক্ষেত্রে, সমস্ত যুগের শ্রদ্ধাপরায়ণ ব্যক্তিরা বহু পূর্ব থেকেই সেই ব্যক্তিগত সম্পর্ককে স্বীকার করে এসেছেন যা মোশি তার ঈশ্বরের সাথে উপভোগ করেছিলেন।

যিহোবা—এলিয়ের পরিচিত ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর

ভাববাদী এলিয়ও যিহোবাকে এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর হিসাবে জানতেন। এলিয় শুদ্ধ উপাসনার প্রতি উদ্যোগী ছিলেন আর কনানীয় দেবতাদের মধ্যে প্রধান দেবতা বালের উপাসকদের কাছ থেকে প্রচণ্ড ঘৃণা ও বিরোধিতার লক্ষ্যবস্তু হওয়া সত্ত্বেও তিনি যিহোবার সেবা করেছিলেন।—১ রাজাবলি ১৮:১৭-৪০.

ইস্রায়েলের রাজা আহাব এবং তার স্ত্রী ঈষেবল এলিয়কে হত্যা করার সুযোগ খুঁজেছিল। জীবন হারানোর ভয়ে এলিয় লবণ সমুদ্রের পশ্চিমে বের শেবায় পলায়ন করেছিলেন। সেখানে তিনি প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছিলেন এবং মৃত্যু কামনা করে প্রার্থনা করেছিলেন। (১ রাজাবলি ১৯:১-৪) যিহোবা কি এলিয়কে পরিত্যাগ করেছিলেন? তিনি কি তাঁর বিশ্বস্ত দাসের প্রতি আর আগ্রহী ছিলেন না? এলিয় হয়ত সেইরকমই ভেবেছিলেন কিন্তু তিনি কতই না ভুল ছিলেন! পরবর্তী সময়ে, যিহোবা শান্তভাবে তার সাথে কথা বলেছিলেন, এটি জিজ্ঞাসা করে: “এলিয়, তুমি এখানে কি করিতেছ?” অতিপ্রাকৃত শক্তির এক নাটকীয় প্রদর্শনের পর “তাঁহার প্রতি এই বাণী হইল, এলিয়, তুমি এখানে কি করিতেছ?” যিহোবা তাঁর নির্ভরযোগ্য দাসকে উৎসাহিত করার জন্য এলিয়ের প্রতি স্পষ্টভাবে এই ব্যক্তিগত আগ্রহ প্রদর্শন করেছিলেন। ঈশ্বরের কাছে তার জন্য আরও অনেক কাজ ছিল আর এলিয় উৎসাহের সাথে সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন! এলিয় তার ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যিহোবার নাম পবিত্রীকৃত করে বিশ্বস্ততার সাথে তার কার্যভার সম্পন্ন করেছিলেন।—১ রাজাবলি ১৯:৯-১৮.

ইস্রায়েল জাতিকে তাঁর প্রত্যাখ্যান করার পর যিহোবা আর পৃথিবীতে তাঁর দাসেদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলেননি। এর অর্থ এই নয় যে তাদের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত আগ্রহ হ্রাস পেয়েছিল। তাঁর পবিত্র আত্মার মাধ্যমে তিনি তখনও তাদের তাঁর সেবায় পরিচালিত ও শক্তিশালী করে চলেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, প্রেরিত পৌলের কথা বিবেচনা করুন যিনি পূর্বে শৌল নামে পরিচিত ছিলেন।

পবিত্র আত্মার দ্বারা পৌলের নির্দেশপ্রাপ্তি

কিলিকিয়ার বিশিষ্ট নগর তার্ষ থেকে শৌল এসেছিলেন। তার পিতামাতা ছিলেন ইব্রীয় কিন্তু তিনি এক রোমীয় নাগরিক হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যাইহোক, ফরীশীদের কঠোর বিশ্বাস অনুযায়ী শৌল প্রতিপালিত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে, যিরূশালেমে, ব্যবস্থার এক বিশিষ্ট শিক্ষক “গমলীয়েলের চরণে” শিক্ষিত হওয়ার সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন।—প্রেরিত ২২:৩, ২৬-২৮.

যিহূদী পরম্পরার প্রতি শৌলের বিভ্রান্তিমূলক উদ্যোগের জন্য তিনি যীশু খ্রীষ্টের অনুগামীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত এক বিদ্বেষপূর্ণ অভিযানের অংশী হয়েছিলেন। তিনি এমনকি প্রথম খ্রীষ্টীয় শহীদ স্টিফেনের হত্যাকে সমর্থন করেছিলেন। (প্রেরিত ৭:৫৮-৬০; ৮:১, ৩) পরবর্তী সময়ে তিনি স্বীকার করেছিলেন যে যদিও তিনি পূর্বে এক ধর্মনিন্দক এবং তাড়নাকারী ও দুর্বিনীত ব্যক্তি ছিলেন, ‘[তিনি] দয়া পাইয়াছিলেন, কেননা না বুঝিয়া অবিশ্বাসের বশে [তিনি] সেই সকল কর্ম্ম করিয়াছিলেন।’—১ তীমথিয় ১:১৩.

শৌল ঈশ্বরকে সেবা করার জন্য এক অকৃত্রিম আকাঙ্ক্ষা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। দম্মেশকের পথে শৌলের পরিবর্তনের পরে যিহোবা অসাধারণভাবে তাকে ব্যবহার করেছিলেন। এক প্রাথমিক খ্রীষ্টীয় শিষ্য অননীয় তাকে সাহায্য করার জন্য পুনরুত্থিত যীশুর দ্বারা নির্দেশিত হয়েছিলেন। তারপর পৌল (রোমীয় নাম যার দ্বারা শৌল খ্রীষ্টান হিসাবে পরিচিত হয়েছিলেন) ইউরোপের অংশবিশেষ এবং এশিয়া মাইনরব্যাপী এক দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ পরিচর্যা সম্পন্ন করার জন্য যিহোবার পবিত্র আত্মা দ্বারা পরিচালিত হয়েছিলেন।—প্রেরিত ১৩:২-৫; ১৬:৯, ১০.

পবিত্র আত্মার সমরূপ পরিচালনা আজকেও কি দেখা যায়? হ্যাঁ, যায়।

নাস্তিকতা যিহোবার ব্যক্তিগত আগ্রহের পক্ষে বাধাস্বরূপ নয়

যোষেফ এফ. রাদারফোর্ড ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির দ্বিতীয় সভাপতি ছিলেন। এক বাইবেল ছাত্র হিসাবে তিনি ১৯০৬ সালে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন—যে আখ্যায় যিহোবার সাক্ষীরা সেই সময় পরিচিত ছিল—পরের বছর তিনি সোসাইটির আইনসংক্রান্ত পরামর্শদাতা হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন এবং ১৯১৭ সালের জানুয়ারি মাসে এর সভাপতি হয়েছিলেন। তবুও, একসময় এই যুবক আইনবিদ্‌ নাস্তিক ছিলেন। কিভাবে তিনি যিহোবার এক অত্যুৎসাহী খ্রীষ্টীয় সেবকে পরিণত হয়েছিলেন?

১৯১৩ সালের জুলাই মাসে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ম্যসাচুসেটস, স্প্রিংফিল্ডে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক বাইবেল ছাত্র সংঘ সম্মেলনে রাদারফোর্ড সভাপতি হিসাবে কাজ করেছিলেন। স্থানীয় সংবাদপত্র দ্যা হোমস্টেড এর এক সংবাদদাতা রাদারফোর্ডের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন এবং সেই বিবরণ সম্মেলনের মুখ্য বিষয়ের বিবৃতি পত্রে পুনর্মুদ্রিত করা হয়েছিল।

রাদারফোর্ড ব্যাখ্যা করেছিলেন যে যখন তিনি বিবাহ করার জন্য স্থির করেছিলেন তখন তার ধর্মীয় বিশ্বাস ব্যাপ্টিস্ট সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল কিন্তু তার ভাবি স্ত্রী ছিলেন প্রেসবিটারিয়ান সম্প্রদায়ভুক্ত। যখন রাদারফোর্ডের পাস্টর বলেছিলেন যে “তার স্ত্রী নরকে যাবে যেহেতু তিনি অবগাহণ নেননি আর তিনি নিজে সরাসরি স্বর্গে যাবেন কারণ তার বাপ্তিস্ম হয়েছে তখন তার যুক্তিপূর্ণ মন বিদ্রোহ করেছিল আর তিনি এক নাস্তিকে পরিণত হয়েছিলেন।”

এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরে বিশ্বাস গড়ে তোলার জন্য রাদারফোর্ডকে অনেক বছর মনোযোগপূর্ণ গবেষণায় অতিবাহিত করতে হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন যে তিনি এই সূত্র থেকে যুক্তি করেছিলেন যে “যা কিছু মনকে সন্তুষ্ট করতে পারে না তার হৃদয়কে পরিতৃপ্ত করার কোন অধিকার নেই।” খ্রীষ্টানদের “অবশ্যই নিশ্চিত হতে হবে যে, যে শাস্ত্র তারা বিশ্বাস করে সেগুলি সত্য,” রাদারফোর্ড এই কথাগুলি যুক্ত করে আরও ব্যাখ্যা করেছিলেন: “তাদের অবশ্যই সেই ভিত্তি সম্বন্ধে জানা উচিত যার উপর তারা দাঁড়িয়ে আছে।”—২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭ পদ দেখুন।

হ্যাঁ, এমনকি আজকেও একজন নাস্তিক অথবা এক অজ্ঞেয়বাদীর পক্ষে শাস্ত্রাবলী অন্বেষণ করা, বিশ্বাস গড়ে তোলা ও যিহোবা ঈশ্বরের সাথে এক দৃঢ় ব্যক্তিগত সম্পর্ক বিকশিত করা সম্ভব। জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে ওয়াচ টাওয়ার প্রকাশনার এই সহায়কটি দ্বারা এক মনোযোগপূর্ণ বাইবেল অধ্যয়নের পর এক যুবক ব্যক্তি স্বীকার করেন: “যখন আমি এই অধ্যয়ন শুরু করেছিলাম তখন আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করতাম না কিন্তু এখন আমি দেখতে পেয়েছি বাইবেলের জ্ঞান আমার সম্পূর্ণ চিন্তাধারাকে পরিবর্তিত করেছে। আমি যিহোবাকে জানতে ও তাঁর উপর আস্থা রাখতে শুরু করেছি।”

“মূর্খ” এবং ঈশ্বর

বাইবেলের এক অভিধান (ইংরাজি) নামক বইয়ে, ডা: জেমস হেস্টিংস বলেন, ‘পুরাতন নিয়মের [ইব্রীয় শাস্ত্রাবলী] কোন লেখকের, ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করা বা সে বিষয়ে তর্ক করার কথা মনে আসেনি। সাধারণভাবে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করা অথবা তা প্রমাণ করার জন্য তর্ক করার বিষয়টি প্রাচীন জগতের প্রবণতা অনুযায়ী ছিল না। এই বিশ্বাস মানুষের জন্য স্বাভাবিক ছিল আর সমস্ত লোকেদের কাছে সার্বজনীন ছিল।’ অবশ্যই এর অর্থ এই নয় যে সেই সময়ের সমস্ত মানুষ ঈশ্বর ভয়শীল ছিল। একেবারেই তা নয়। গীতসংহিতা ১৪:১ এবং ৫৩:১ উভয় পদই উল্লেখ করে “মূঢ়” অথবা যেমন কিং জেমস ভারসন বলে “মূর্খ” মনে মনে বলে থাকে যে “ঈশ্বর নেই।”

এই মূর্খ কিধরনের ব্যক্তি, যে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে? সে বুদ্ধিগতভাবে অজ্ঞ নয়। বরঞ্চ, ইব্রীয় শব্দ নাভাল এক নৈতিক অভাবের প্রতি নির্দেশ করে। অধ্যাপক এস. আর. ড্রাইভার প্যারালাল সেলটারে লেখা তার টীকায় বলেন যে ত্রুটিটি হচ্ছে “যুক্তির দুর্বলতা নয় কিন্তু নৈতিক ও ধর্মীয় অচেতনতা, অনুভূতি অথবা উপলব্ধির এক দুর্জেয় অভাব।”

গীতরচক সেই নৈতিক অধঃপতন সম্বন্ধে বর্ণনা করে চলেন যা এইধরনের এক মনোভাবের ফল: “তাহারা নষ্ট, তাহারা ঘৃণার্হ কর্ম্ম করিয়াছে; সৎকর্ম্ম করে এমন কেহই নাই।” (গীতসংহিতা ১৪:১) ডা: হেস্টিংস এর সারসংক্ষেপ করেন: “জগতে ঈশ্বর এবং শাস্তির এই অনুপস্থিতির উপর ভরসা করে মানুষ কলুষিত হয়ে পড়েছে ও তারা জঘন্য কাজগুলি করে থাকে।” তারা প্রকাশ্যভাবে অধার্মিক নীতিগুলিকে গ্রহণ করেছে ও এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরকে অগ্রাহ্য করেছে যার কাছে নিকাশ দেওয়ার জন্য তারা ইচ্ছুক নয়। প্রায় ৩০০০ হাজার বছর আগে যখন গীতরচক তার বাক্যগুলি লিখেছিলেন, ঠিক তখনকার মত আজও এই চিন্তাধারা ততখানিই মূর্খতাপূর্ণ এবং অর্থহীন।

আমাদের ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরের কাছ থেকে সতর্কবাণী

আসুন এখন আমরা আমাদের প্রারম্ভিক প্রবন্ধে যে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল সেখানে ফিরে যাই। কেন এক বৃহৎ সংখ্যক লোক আজকের জগতে পরিব্যাপ্ত দুঃখকষ্টকে এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরের সাথে সমন্বয়যুক্ত করতে অসমর্থ হয়?

বাইবেল মানুষের দ্বারা লিখিত তথ্যকে অন্তর্ভুক্ত করে যারা “পবিত্র আত্মা দ্বারা চালিত হইয়া ঈশ্বর হইতে যাহা পাইয়াছেন, তাহাই বলিয়াছেন।” (২ পিতর ১:২১) একমাত্র এটিই আমাদের কাছে ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যিহোবাকে প্রকাশ করে। এটি আমাদের এক মন্দ ব্যক্তিত্ব সম্পর্কেও সতর্ক করে, যে মানুষের কাছে অদৃশ্য ও যে মানুষের চিন্তাধারাকে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত করার ক্ষেত্রে শক্তিশালী—শয়তান দিয়াবল। যুক্তিপূর্ণভাবে যদি আমাদের এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বরে বিশ্বাস না থাকে তাহলে কিভাবে আমরা বিশ্বাস করতে পারি যে একজন ব্যক্তিত্ববান দিয়াবল অথবা শয়তানও অস্তিত্বশীল?

অনুপ্রাণিত হয়ে প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “যাহাকে দিয়াবল [অপবাদক] এবং শয়তান [বিপক্ষ] বলা যায়, সে সমস্ত নরলোকের ভ্রান্তি জন্মায়।” (প্রকাশিত বাক্য ১২:৯) পরে যোহন বলেছিলেন: “আমরা জানি যে, আমরা ঈশ্বর হইতে; আর সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” (১ যোহন ৫:১৯) এই উক্তি যীশুর বাক্যগুলিকে প্রতিফলিত করে যে বাক্যগুলি যোহন স্বয়ং তার সুসমাচারে নথিবদ্ধ করেছিলেন: “জগতের অধিপতি আসিতেছে, আর আমাতে তাহার কিছুই নাই।”—যোহন ১৪:৩০.

লোকেরা এখন যা বিশ্বাস করে তার তুলনায় এই শাস্ত্রীয় শিক্ষা কতই না ভিন্ন! “শয়তান সম্বন্ধে কথা বলা আজ স্পষ্টভাবে অনাধুনিকতা। আমাদের সন্দেহবাদী ও বৈজ্ঞানিক যুগ শয়তানকে অবসর দিয়েছে,” দ্যা ক্যাথলিক হেরাল্ড বলে। তবুও যীশু, যারা তাকে হত্যা করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিল, জোরের সাথে সেই লোকেদের বলেছিলেন: “তোমরা আপনাদের পিতা দিয়াবলের, এবং তোমাদের পিতার অভিলাষ সকল পালন করাই তোমাদের ইচ্ছা।”—যোহন ৮:৪৪.

শয়তানের শক্তি সম্বন্ধে বাইবেলের ব্যাখ্যা যুক্তিপূর্ণ। এটি স্পষ্ট করে যে কেন অধিকাংশ লোকেরা শান্তি ও একতায় জীবনযাপন করতে আকাঙ্ক্ষী হওয়া সত্ত্বেও জগৎ ঘৃণা, যুদ্ধ এবং প্রচণ্ড দৌরাত্ম্যের দ্বারা সংক্রামিত যার প্রমাণ ডানলেনের ঘটনায় পাওয়া যায় (৩ ও ৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে)। এছাড়াও শয়তানই কেবল একমাত্র শত্রু নয় যার সাথে আমাদের অবশ্যই লড়াই করতে হবে। বাইবেল দিয়াবলদের অথবা মন্দ দূতেদের সম্বন্ধে অতিরিক্ত সতর্কবাণী দিয়ে থাকে—মন্দ আত্মিক প্রাণীরা যারা বহু পূর্বে মানবজাতিকে বিপথগামী ও অপব্যবহার করতে শয়তানের সাথে যোগ দিয়েছিল। (যিহূদা ৬) যীশু খ্রীষ্ট অনেকবার এই আত্মিক শক্তিদের সম্মুখীন হয়েছিলেন আর তিনি তাদের জয় করতেও সক্ষম হয়েছিলেন।—মথি ১২:২২-২৪; লূক ৯:৩৭-৪৩.

সত্য ঈশ্বর যিহোবা এই পৃথিবীর দুষ্টতা পরিষ্কার করার জন্য সংকল্পবদ্ধ আর পরিশেষে তিনি শয়তান ও তার মন্দ দূতেদের কার্যকলাপকে দূর করবেন। যিহোবা সম্বন্ধে আমাদের জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে আমরা তার প্রতিজ্ঞাগুলির প্রতি দৃঢ়বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে পারি। তিনি বলেন: “আমার পূর্ব্বে কোন ঈশ্বর নির্ম্মিত হয় নাই, এবং আমার পরেও হইবে না। আমি, আমিই সদাপ্রভু; আমি ভিন্ন আর ত্রাণকর্ত্তা নাই।” সত্যই তাদের সকলের কাছে যিহোবা এক ব্যক্তিত্ববান ঈশ্বর যারা তাকে জানে, তাঁর উপাসনা ও সেবা করে। আমাদের পরিত্রাণের জন্য আমরা তাঁর দিকে, একমাত্র তাঁর দিকেই দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে পারি।—যিশাইয় ৪৩:১০, ১১.

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

অষ্টাদশ শতাব্দীর খোদিত প্রস্তর যেটি অনুপ্রেরণার অধীনে মোশির লেখা আদিপুস্তক ১:১ পদ সম্বন্ধে বর্ণনা করে

[সজন্যে]

From The Holy Bible by J. Baskett, Oxford

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

যীশু খ্রীষ্ট অনেকবার মন্দ দূতেদেরকে পরাভূত করেছিলেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার