ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • mwbr17 মে পৃষ্ঠা ১-১১
  • জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
  • জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স (২০১৭)
  • উপশিরোনাম
  • মে ১-৭
  • মে ৮-১৪
  • মে ১৫-২১
  • মে ২২-২৮
  • মে ২৯–জুন ৪
জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স (২০১৭)
mwbr17 মে পৃষ্ঠা ১-১১

জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স

মে ১-৭

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৩২-৩৪

“ইস্রায়েল যে পুনর্স্থাপিত হবে, সেটার এক চিহ্ন”

(যিরমিয় ৩২:৬-৯) যিরমিয় কহিলেন, সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইয়াছিল, ৭ দেখ, তোমার পিতৃব্য শল্লুমের পুত্র হনমেল তোমার নিকটে আসিয়া এই কথা কহিবে, অনাথোতে আমার যে ক্ষেত্র আছে, তাহা তুমি আপনার জন্য ক্রয় কর, কেননা ক্রয় দ্বারা তাহা মুক্ত করিবার অধিকার তোমার আছে। ৮ পরে সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে আমার পিতৃব্যের পুত্র হনমেল রক্ষীদের প্রাঙ্গণে আমার নিকটে আসিয়া আমাকে কহিল, বিনয় করি, বিন্যামীন প্রদেশস্থ অনাথোতে আমার যে ক্ষেত্র আছে, তাহা তুমি ক্রয় কর; কেননা দায়াধিকার তোমার, এবং মুক্ত করিবার অধিকার তোমার; তুমি আপনার জন্য তাহা ক্রয় কর। ৯ তখন আমি বুঝিলাম, ইহা সদাপ্রভুর বাক্য। পরে আমি আপন পিতৃব্যের পুত্র হনমেলের নিকটে অনাথোতে স্থিত সেই ক্ষেত্র ক্রয় করিলাম, ও তাহার মূল্য সপ্তদশ শেকল রৌপ্য তাহাকে তৌল করিয়া দিলাম।

(যিরমিয় ৩২:১৫) কেননা বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, বাটীর, ক্ষেত্রের ও দ্রাক্ষাক্ষেত্রের ক্রয় বিক্রয় এই দেশে আবার চলিবে।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ১০৫ অনু. ২, ইংরেজি

অনাথোৎ

যিরমিয় অনাথোতীয় হওয়া সত্ত্বেও নিজের লোকেদের কাছে একজন ‘অনাদৃত ভাববাদী’ হয়ে উঠেছিলেন, কারণ যিহোবার সত্যের বার্তা ঘোষণা করার কারণে তারা তাকে হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। (যির ১:১; ১১:২১-২৩; ২৯:২৭) ফল স্বরূপ, যিহোবা সেই নগরের বিরুদ্ধে অমঙ্গলের বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন আর সেটা একেবারে সঠিক সময়ে পূর্ণ হয়েছিল, যখন বাবিল সেই দেশ আক্রমণ করেছিল। (যির ১১:২১-২৩) যিরূশালেমের পতন হওয়ার আগে যিরমিয় নিজের আইনি অধিকার ব্যবহার করে অনাথোতে তার কাকাতো ভাইয়ের কাছ থেকে একখণ্ড ভূমি কিনেছিলেন। সেই ঘটনা ছিল এক চিহ্ন, যেটা দেখায় নির্বাসিত ব্যক্তিদের পুনর্স্থাপিত করা হবে। (যির ৩২:৭-৯) সরুব্বাবিলের সঙ্গে প্রথম যে-দলটা নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিল, তাদের মধ্যে ১২৮ জন অনাথোতীয় ছিল; আর অনাথোত ছিল সেই নগরগুলোর মধ্যে একটা, যেখানে পুনরায় বসতিস্থাপন করা হয়েছিল আর এভাবে যিরমিয়ের বলা ভবিষ্যদ্‌বাণী পূর্ণ হয়েছিল।—ইষ্রা ২:২৩; নহি ৭:২৭; ১১:৩২.

(যিরমিয় ৩২:১০-১২) আর আমি ক্রয়পত্রে স্বাক্ষর করিলাম, মুদ্রাঙ্ক করিলাম, ও সাক্ষী রাখিলাম, এবং তাহাকে সেই রৌপ্য নিক্তিতে তৌল করিয়া দিলাম। ১১ পরে বিধি ও নিয়ম সম্বলিত ক্রয়পত্রের দুই কেতা, অর্থাৎ মুদ্রাঙ্কিত এক পত্র ও খোলা এক পত্র লইলাম। ১২ পরে আমার জ্ঞাতি হনমেলের সাক্ষাতে, এবং ক্রয়পত্রে স্বাক্ষরকারী সাক্ষীদের সাক্ষাতে, রক্ষীদের প্রাঙ্গণে উপবিষ্ট সমস্ত যিহূদীর সাক্ষাতে আমি সেই ক্রয়পত্র মহসেয়ের পৌত্র নেরিয়ের পুত্র বারূকের হস্তে সমর্পণ করিলাম।

প্রহরীদুর্গ ০৭ ৩/১৫ ১১ অনু. ৩

যিরমিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

৩২:১০-১৫—একই চুক্তির দুটো পত্র বা দলিল তৈরি করার উদ্দেশ্য কী ছিল? খোলা দলিলটি আলাপ-আলোচনার জন্য ছিল। মুদ্রাঙ্কিত দলিলটি প্রয়োজনে খোলা দলিলের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রমাণ হিসেবে কাজ করত। এমনকী আত্মীয় ও সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে লেনদেনের সময়েও যুক্তিসংগত আইনগত বিষয়গুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে যিরমিয় আমাদের জন্য উদাহরণস্থাপন করেছেন।

(যিরমিয় ৩৩:৭, ৮) আর আমি যিহূদার ও ইস্রায়েলের বন্দি-দশা ফিরাইব, এবং পূর্ব্বকালের ন্যায় পুনর্ব্বার তাহাদিগকে গাঁথিয়া তুলিব। ৮ আর তাহারা যে সকল অপরাধ করিয়া আমার বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে, তাহা হইতে আমি তাহাদিগকে শুচি করিব; এবং তাহারা যে সকল অপরাধ করিয়া আমার বিরুদ্ধে পাপ ও অধর্ম্মাচরণ করিয়াছে, সে সকল আমি ক্ষমা করিব।

যিরমিয় ১৫২ অনু. ২২-২৩, ইংরেজি

“আমাকে জ্ঞাত হওয়া কি তাহাই নয়?”

২২ কেউ যখন বিবেচনাহীন কথাবার্তা এবং কাজের মাধ্যমে আপনাকে অসন্তুষ্ট করে, তখন আপনি কি যিহোবাকে অনুকরণ করবেন? প্রাচীন যিহূদিদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেছিলেন, তিনি যাদের ক্ষমা করেছেন, তাদের তিনি “শুচি” করবেন। (পড়ুন, যিরমিয় ৩৩:৮.) তিনি যে-অর্থে শুচি কিংবা বিশুদ্ধ করতে পারেন, তা হল, একজন অনুতপ্ত ব্যক্তির অপরাধ তিনি পিছনে ফেলে দেন, সেই ব্যক্তিকে তাঁর সেবায় নতুন এক জীবন শুরু করার সুযোগ দেন। এটা ঠিক, ঈশ্বরের কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করা এটা বোঝায় না, সেই ব্যক্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া অসিদ্ধতা থেকে শুচি হয়ে এখন সিদ্ধ ও নিষ্পাপ হয়েছেন। তা সত্ত্বেও, ঈশ্বর লোকেদের শুচি করার বিষয়ে যা বলেছেন, সেখান থেকে আমরা শিক্ষা লাভ করতে পারি। আমরা অন্যের ভুল অথবা আমাদের অসন্তুষ্ট করে এমন বিষয়গুলো পিছনে ফেলে দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করতে পারি, যা রূপক অর্থে সেই ব্যক্তির সম্বন্ধে আমাদের হৃদয়ের মধ্যে যে-দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে, তা শুচি করার সমরূপ। কীভাবে?

২৩ কল্পনা করুন, আপনি আপনার পারিবারিক সম্পত্তি থেকে একটা পাত্র কিংবা ফুলদানি উপহার হিসেবে পেয়েছেন। কিন্তু এটার উপর যদি ধুলোবালি পড়ে কিংবা এটা ময়লা হয়ে যায়, তা হলে আপনি কি সঙ্গেসঙ্গে এটা ফেলে দেবেন? সম্ভবত না। আপনি হয়তো এটাকে সতর্কতার সঙ্গে পরিষ্কার করার, যেকোনো দাগ অথবা ধুলো দূর করার এবং ময়লা পরিষ্কার করার জন্য যথাসাধ্য করবেন। কারণ আপনার চোখে এটা ঠিক ততটাই সুন্দর, ঠিক যেমনটা সূর্যের আলোয় চকচক করার সময় এটাকে সুন্দর দেখায়। একইভাবে, আপনাকে অসন্তুষ্ট করেছেন এমন ভাই অথবা বোনের ব্যাপারে আপনার মনের মধ্যে গেঁথে থাকা যেকোনো বিদ্বেষ বা বিরক্তিকর অনুভূতিগুলো দূর করার জন্য আপনি কঠোর প্রচেষ্টা করতে পারেন। আপনি আঘাত পেয়েছেন এমন কথা কিংবা কাজ নিয়ে বার বার চিন্তা করার প্রবণতার বিরুদ্ধে লড়াই করুন। আপনি যখন এই সমস্ত বিষয় পিছনে ফেলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সফল হবেন, তখন আপনি যাকে ক্ষমা করেছেন, তার সম্বন্ধে আপনার হৃদয়ে থাকা ধারণা এবং স্মৃতিগুলো শুচি করেন। সেই ব্যক্তির প্রতি থাকা নেতিবাচক চিন্তা দূর করার পর আপনি আবারও তার সঙ্গে সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব উপভোগ করতে পারবেন, যেটা হয়তো চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে বলে মনে হয়েছিল।

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

(যিরমিয় ৩৩:১৫) সেই সকল দিনে ও সেই সময়ে আমি দায়ূদের বংশে ধার্ম্মিকতার এক পল্লবকে উৎপন্ন করিব; তিনি দেশে ন্যায়বিচার ও ধার্ম্মিকতার অনুষ্ঠান করিবেন।

যিরমিয় ১৭৩ অনু. ১০, ইংরেজি

আপনি নতুন চুক্তি থেকে উপকার লাভ করতে পারেন

১০ যিনি আসছেন, তাঁকে অর্থাৎ মশীহকে যিরমিয় দায়ূদের ‘পল্লব’ হিসেবে চিত্রিত করেছিলেন। এটা উপযুক্ত। যিরমিয় যখন ভাববাদী হিসেবে সেবা করছিলেন, তখন ইতিমধ্যে দায়ূদের রাজকীয় বংশের বৃক্ষ কেটে ফেলা হয়েছিল। কিন্তু, সেই বৃক্ষের গুঁড়ি মরে যায়নি। পরবর্তী সময়ে, যিশু রাজা দায়ূদের বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁকে “সদাপ্রভু আমাদের ধার্ম্মিকতা” হিসেবে সম্বোধন করা হয়েছিল, যা দেখিয়েছিল এই গুণ ঈশ্বরের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। (পড়ুন, যিরমিয় ২৩:৫, ৬.) যিহোবা তাঁর একমাত্র পুত্রকে এই পৃথিবীতে কষ্টভোগ করতে ও মৃত্যুবরণ করতে দিয়েছিলেন। এরপর, যিহোবা তাঁর ন্যায়বিচারের সঙ্গে মিল রেখে ক্ষমা করার এক ভিত্তি হিসেবে দায়ূদের ‘পল্লবের’ দেওয়া সেই মুক্তির মূল্য প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন। (যির. ৩৩:১৫) এর ফলে, কিছু ব্যক্তিকে “জীবনদায়ক ধার্ম্মিক-গণনা” করার, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে অভিষিক্ত করার এবং এভাবে তাদের নতুন চুক্তির অংশ হওয়ার দ্বার খুলে গিয়েছিল। ধার্মিকতা ঈশ্বরের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটার আরও প্রমাণ হিসেবে, অন্যেরা যারা সেই চুক্তির সঙ্গে সরাসরি অংশী নয়, তারাও সেখান থেকে উপকার লাভ করতে পারে, যা আমরা পরবর্তী সময়ে দেখব।—রোমীয় ৫:১৮.

(যিরমিয় ৩৩:২৩, ২৪) আবার যিরমিয়ের নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইল, ২৪ এই লোকেরা কি বলিয়াছে, তাহা কি তুমি টের পাও নাই? তাহারা বলিয়াছে, সদাপ্রভু যে দুই গোষ্ঠীকে মনোনীত করিয়াছিলেন, তাহাদিগকে অগ্রাহ্য করিয়াছেন; এইরূপে তাহারা আমার প্রজাবৃন্দকে তুচ্ছজ্ঞান করে, তাহাদের সম্মুখে তাহারা আর জাতি বলিয়া গণ্য হয় না।

প্রহরীদুর্গ ০৭ ৩/১৫ ১১ অনু. ৪

যিরমিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো

৩৩:২৩, ২৪—এখানে বলা ‘দুই গোষ্ঠী’ কী? একটা হচ্ছে রাজা দায়ূদের বংশধারায় রাজকীয় গোষ্ঠী এবং অন্যটা হারোণের বংশধরদের যাজকীয় গোষ্ঠী। যিরূশালেম ও যিহোবার মন্দির ধ্বংস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনে হয়েছিল যে, যিহোবা এই দুই গোষ্ঠীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং পৃথিবীতে তাঁর কোনো রাজ্য থাকবে না বা তাঁর উপাসনা পুনরুদ্ধার করা হবে না।

বাইবেল পাঠ

(যিরমিয় ৩২:১-১২) যিহূদা-রাজ সিদিকিয়ের দশম বৎসরে, অর্থাৎ নবূখদ্‌রিৎসরের অষ্টাদশ বৎসরে, সদাপ্রভু হইতে যে বাক্য যিরমিয়ের নিকটে উপস্থিত হইল, তাহার বৃত্তান্ত। ২ সেই সময়ে বাবিল-রাজের সৈন্যসামন্ত যিরূশালেম অবরোধ করিতেছিল, এবং যিরমিয় ভাববাদী যিহূদার রাজবাটীস্থিত রক্ষীদের প্রাঙ্গণে বদ্ধ ছিলেন; ৩ যেহেতু যিহূদা-রাজ সিদিকিয় তাঁহাকে অবরুদ্ধ করিয়াছিলেন, বলিয়াছিলেন, তুমি কেন ভাববাণী বলিয়া কহিতেছ, ‘সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি নগর বাবিল-রাজের হস্তে সমর্পণ করিব, এবং সে ইহা হস্তগত করিবে; ৪ আর যিহূদা-রাজ সিদিকিয় কল্‌দীয়দের হস্ত হইতে পার পাইবে না, কিন্তু বাবিল-রাজের হস্তে নিশ্চয় সমর্পিত হইবে, এবং সম্মুখাসম্মুখি হইয়া তাহার সহিত কথা কহিবে, ও স্বচক্ষে তাহার চক্ষু দেখিবে; ৫ আর সে সিদিকিয়কে বাবিলে লইয়া যাইবে; এবং আমি যে পর্য্যন্ত তাহার তত্ত্বাবধান না করিব, তাবৎ সে সেই স্থানে থাকিবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন; তোমরা কল্‌দীয়দের সহিত সংগ্রাম করিয়াও কৃতকার্য্য হইবে না’? ৬ যিরমিয় কহিলেন, সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইয়াছিল, ৭ দেখ, তোমার পিতৃব্য শল্লুমের পুত্র হনমেল তোমার নিকটে আসিয়া এই কথা কহিবে, অনাথোতে আমার যে ক্ষেত্র আছে, তাহা তুমি আপনার জন্য ক্রয় কর, কেননা ক্রয় দ্বারা তাহা মুক্ত করিবার অধিকার তোমার আছে। ৮ পরে সদাপ্রভুর বাক্যানুসারে আমার পিতৃব্যের পুত্র হনমেল রক্ষীদের প্রাঙ্গণে আমার নিকটে আসিয়া আমাকে কহিল, বিনয় করি, বিন্যামীন প্রদেশস্থ অনাথোতে আমার যে ক্ষেত্র আছে, তাহা তুমি ক্রয় কর; কেননা দায়াধিকার তোমার, এবং মুক্ত করিবার অধিকার তোমার; তুমি আপনার জন্য তাহা ক্রয় কর। ৯ তখন আমি বুঝিলাম, ইহা সদাপ্রভুর বাক্য। পরে আমি আপন পিতৃব্যের পুত্র হনমেলের নিকটে অনাথোতে স্থিত সেই ক্ষেত্র ক্রয় করিলাম, ও তাহার মূল্য সপ্তদশ শেকল রৌপ্য তাহাকে তৌল করিয়া দিলাম। ১০ আর আমি ক্রয়পত্রে স্বাক্ষর করিলাম, মুদ্রাঙ্ক করিলাম, ও সাক্ষী রাখিলাম, এবং তাহাকে সেই রৌপ্য নিক্তিতে তৌল করিয়া দিলাম। ১১ পরে বিধি ও নিয়ম সম্বলিত ক্রয়পত্রের দুই কেতা, অর্থাৎ মুদ্রাঙ্কিত এক পত্র ও খোলা এক পত্র লইলাম। ১২ পরে আমার জ্ঞাতি হনমেলের সাক্ষাতে, এবং ক্রয়পত্রে স্বাক্ষরকারী সাক্ষীদের সাক্ষাতে, রক্ষীদের প্রাঙ্গণে উপবিষ্ট সমস্ত যিহূদীর সাক্ষাতে আমি সেই ক্রয়পত্র মহসেয়ের পৌত্র নেরিয়ের পুত্র বারূকের হস্তে সমর্পণ করিলাম।

মে ৮-১৪

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৩৫-৩৮

“এবদ-মেলক—সাহসী মনোভাব ও দয়া দেখানোর ক্ষেত্রে এক উদাহরণ”

(যিরমিয় ৩৮:৪-৬) তখন অধ্যক্ষগণ রাজাকে কহিলেন, এ ব্যক্তির প্রাণদণ্ড করিতে আজ্ঞা হউক, কেননা এ লোকদের কাছে এই প্রকার কথা বলিয়া এই নগরে অবশিষ্ট যোদ্ধাদের হস্ত ও প্রজা সকলের হস্ত দুর্ব্বল করিতেছে; কারণ এ ব্যক্তি এই জাতির মঙ্গল চেষ্টা করে না, কেবল অমঙ্গল চেষ্টা করে। ৫ সিদিকিয় রাজা কহিলেন, দেখ, সে তোমাদেরই হস্তে আছে; কারণ তোমাদের বিরুদ্ধে রাজার কিছু করিবার সাধ্য নাই। ৬ তখন তাঁহারা যিরমিয়কে ধরিয়া রক্ষীদের প্রাঙ্গণে স্থিত রাজপুত্র মল্কিয়ের কূপমধ্যে ফেলিয়া দিল, রজ্জুতে করিয়া যিরমিয়কে নামাইয়া দিল; সেই কূপে জল ছিল না, কিন্তু পঙ্ক ছিল, এবং যিরমিয় পঙ্কে মগ্নপ্রায় হইলেন।

অন্তর্দৃষ্টি-২ ১২২৮ অনু. ৩, ইংরেজি

সিদিকিয়

অধ্যক্ষরা যখন অবরুদ্ধ লোকেদের মনোবল দুর্বল করার অভিযোগে, যিরমিয়কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন, তখন সিদিকিয় বলেছিলেন: “দেখ, সে তোমাদেরই হস্তে আছে; কারণ তোমাদের বিরুদ্ধে রাজার কিছু করিবার সাধ্য নাই।” আর এই ঘটনা সিদিকিয়কে খুবই দুর্বল একজন শাসক হিসেবে তুলে ধরেছিল। তবে, পরবর্তী সময়ে যিরমিয়কে উদ্ধার করার জন্য সিদিকিয় এবদ-মেলকের অনুরোধ রেখেছিলেন এবং এবদ-মেলককে আজ্ঞা দিয়েছিলেন যেন তিনি এই কাজে সাহায্য করার জন্য ৩০ জন পুরুষকে তার সঙ্গে নিয়ে যান। এরপর, সিদিকিয় যিরমিয়ের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তিনি ভাববাদীকে এই বলে আশ্বস্ত করেছিলেন, তিনি তাকে হত্যা করবেন না আর এমনকী যারা তাকে হত্যা করতে চায়, তাদের হাতে তাকে সমর্পণও করবেন না। কিন্তু সিদিকিয় সেই যিহূদিদের প্রতিহিংসায় ভয় পেয়েছিলেন, যারা কল্‌দীয়দের পক্ষে চলে গিয়েছিল আর তাই, তিনি বাবিল-রাজের প্রধানবর্গের কাছে আত্মসমর্পনের বিষয়ে যিরমিয়ের অনুপ্রাণিত পরামর্শে মনোযোগ দেননি। রাজা যে ভয় পেয়েছেন, তা সেই সময়ে আরও স্পষ্ট হয়েছিল, যখন রাজা যিরমিয়কে তাদের এই একান্ত কথাবার্তা সন্দেহপ্রবণ অধ্যক্ষদের কাছে প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেছিলেন।—যির ৩৮:১-২৮.

(যিরমিয় ৩৮:৭-১০) ইতিমধ্যে রাজবাটীস্থিত এবদ-মেলক নামে এক জন কূশীয় নপুংসক শুনিতে পাইল যে, যিরমিয়কে কূপে ফেলিয়া দেওয়া হইয়াছে; তখন রাজা বিন্যামীনের দ্বারে বসিয়াছিলেন। ৮ এবদ-মেলক রাজবাটী হইতে বাহিরে গিয়া রাজাকে কহিল, ৯ হে আমার প্রভু মহারাজ, এই লোকেরা যিরমিয় ভাববাদীর প্রতি যাহা যাহা করিয়াছে, সমস্তই মন্দ ব্যবহার করিয়াছে; তাঁহাকে কূপে ফেলিয়া দিয়াছে; তিনি সে স্থানে ক্ষুধায় মৃতপ্রায় হইয়াছেন, কেননা নগরে আর রুটী নাই। ১০ তখন রাজা কূশীয় এবদ-মেলককে আজ্ঞা করিলেন, তুমি এই স্থান হইতে ত্রিশ জন পুরুষকে সঙ্গে লইয়া গিয়া যিরমিয় ভাববাদী না মরিতে মরিতে তাঁহাকে কূপ হইতে উত্তোলন কর।

প্রহরীদুর্গ ১২ ৫/১ ৩১ অনু. ২-৩, ইংরেজি

যারা তাঁর সেবা করে, তিনি তাদের সকলের পুরস্কারদাতা

এবদ-মেলক কে ছিলেন? স্পষ্টতই, তিনি যিহূদা রাজ সিদিকিয়ের রাজসভার একজন কর্মকর্তা ছিলেন। এবদ-মেলক যিরমিয়ের সমসাময়িক ছিলেন। ঈশ্বর অবিশ্বস্ত যিহূদার কাছে আসন্ন ধ্বংস সম্বন্ধে সতর্কবার্তা ঘোষণা করার জন্য যিরমিয়কে পাঠিয়েছিলেন। ঈশ্বরভক্তিহীন অধ্যক্ষদের মাঝে থেকেও, এবদ-মেলক ঈশ্বরকে ভয় করতেন এবং যিরমিয়ের প্রতি তার গভীর সম্মান ছিল। এবদ-মেলকের উত্তম গুণাবলি সেই সময়ে পরীক্ষিত হয়েছিল, যখন মন্দ অধ্যক্ষরা যিরমিয়ের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে এসেছিল এবং তাকে হত্যা করার জন্য কর্দমাক্ত কূপে ফেলে দিয়েছিল। (যিরমিয় ৩৮:৪-৬) এবদ-মেলক কী করতে পারতেন?

এবদ-মেলক সাহসের সঙ্গে ও দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, অধ্যক্ষদের কাছ থেকে আসা প্রতিহিংসার ভয় কাটিয়ে উঠেছিলেন। তিনি জনসমক্ষে সিদিকিয়ের সামনে গিয়েছিলেন ও যিরমিয়ের বিরুদ্ধে করা অন্যায় সম্বন্ধে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সম্ভবত তিনি অপরাধীদের দিকে ইঙ্গিত করে রাজাকে বলেছিলেন: ‘এই লোকেরা যিরমিয়ের প্রতি মন্দ ব্যবহার করিয়াছে।’ (যিরমিয় ৩৮:৯) এবদ-মেলক সফল হয়েছিলেন এবং সিদিকিয়ের নির্দেশনায় ৩০ জন পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে যিরমিয়কে উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন।

(যিরমিয় ৩৮:১১-১৩) তখন এবদ-মেলক সেই লোকদিগকে সঙ্গে লইয়া রাজবাটীতে গিয়া ভাণ্ডারের নীচস্থান হইতে কতকগুলি জীর্ণবস্ত্র ও পুরাতন জীর্ণনেকড়া লইয়া রজ্জু দ্বারা কূপে যিরমিয়ের কাছে নামাইয়া দিল। ১২ আর কূশীয় এবদ-মেলক যিরমিয়কে কহিল, এই জীর্ণবস্ত্র ও জীর্ণনেকড়াগুলা আপনার বগলে রজ্জুর নীচে দিউন। ১৩ যিরমিয় তাহা করিলেন। আর উহারা ঐ রজ্জু ধরিয়া টানিয়া কূপ হইতে তাঁহাকে তুলিল; এবং যিরমিয় রক্ষীদের প্রাঙ্গণে থাকিলেন।

প্রহরীদুর্গ ১২ ৫/১ ৩১ অনু. ৪, ইংরেজি

যারা তাঁর সেবা করে, তিনি তাদের সকলের পুরস্কারদাতা

এবদ-মেলক সেই সময়ে আরেকটা চমৎকার গুণ দেখিয়েছিলেন: দয়া। তিনি “কতকগুলি জীর্ণবস্ত্র ও পুরাতন জীর্ণনেকড়া লইয়া রজ্জু দ্বারা . . . যিরমিয়ের কাছে নামাইয়া” দিয়েছিলেন। কেন নরম ছেঁড়া কাপড়? যেন যিরমিয় তার বগলের নীচে সেগুলো রাখতে পারেন এবং কাদার মধ্য থেকে ওঠানোর সময় তার শরীরে যেন কোনো ঘষা না লাগে ও তিনি যেন সহজে উঠে আসতে পারেন।—যিরমিয় ৩৮:১১-১৩.

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

(যিরমিয় ৩৫:১৯) এই জন্য বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, রেখবের পুত্র যিহোনাদবের জন্য আমার সম্মুখে দাঁড়াইবার লোকের অভাব কখনও হইবে না।

অন্তর্দৃষ্টি-২ ৭৫৯, ইংরেজি

রেখবীয়রা

যিহোবা তাদের সম্মানপূর্ণ বাধ্যতা দেখে খুশি হয়েছিলেন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি যিহুদিদের অবাধ্যতার বিপরীতে পার্থিব পিতার প্রতি রেখবীয়দের অটল বাধ্যতা পুরোপুরি আলাদা ছিল। (যির ৩৫:১২-১৬) আশীর্বাদ স্বরূপ, ঈশ্বর রেখবীয়দের উদ্দেশে এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন: “রেখবের পুত্র যিহোনাদবের জন্য আমার সম্মুখে দাঁড়াইবার লোকের অভাব কখনও হইবে না।”—যির ৩৫:১৯.

(যিরমিয় ৩৭:২১) তখন লোকেরা সিদিকিয় রাজার আজ্ঞাতে যিরমিয়কে রক্ষীদের প্রাঙ্গণে রাখিল, এবং যে পর্য্যন্ত নগরের সমস্ত রুটী শেষ না হইল; সে পর্য্যন্ত প্রতিদিন রুটী-ওয়ালাদের পল্লী হইতে এক একখানা রুটী লইয়া তাঁহাকে দেওয়া যাইত। এই প্রকারে যিরমিয় রক্ষীদের প্রাঙ্গণে থাকিলেন।

প্রহরীদুর্গ ৯৮ ১/১৫ ১৮ অনু. ১৬-১৭

ঈশ্বরের সাথে গমনাগমন করে চলুন

১৬ যিহোবা প্রেমের সাথে আমাদের জন্য মশীহ রাজ্যের অধীনে যে স্বস্তি আসবে সেই সম্বন্ধে বলেন। (গীতসংহিতা ৭২:১-৪, ১৬; যিশাইয় ২৫:৭, ৮) এছাড়া তিনি আমাদের অগ্রাধিকারগুলিকে কীভাবে সুবিন্যস্ত করা যায় সেই সম্বন্ধে পরামর্শ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের এখনই জীবনের চাপগুলোর মোকাবিলা করতে সাহায্য করেন। (মথি ৪:৪; ৬:২৫-৩৪) অতীতে তাঁর দাসেদের তিনি কীভাবে সাহায্য করেছিলেন সেই বিবরণের মাধ্যমে যিহোবা আমাদের আশ্বাস দেন। (যিরমিয় ৩৭:২১; যাকোব ৫:১১) তিনি আমাদের এই জ্ঞানের মাধ্যমে শক্তিশালী করেন যে আমাদের উপর যে-বিপর্যয়ই আসুক না কেন, তাঁর নিষ্ঠাবান দাসেদের প্রতি তাঁর প্রেম অটুট থাকে। (রোমীয় ৮:৩৫-৩৯) যারা যিহোবার উপর তাদের আস্থা রাখেন তাদের জন্য তিনি ঘোষণা করেন: “আমি কোন ক্রমে তোমাকে ছাড়িব না, ও কোন ক্রমে তোমাকে ত্যাগ করিব না।”—ইব্রীয় ১৩:৫.

১৭ এই জ্ঞানের মাধ্যমে শক্তিশালী হয়ে সত্য খ্রীষ্টানেরা জাগতিক পথের দিকে ধাবিত হওয়ার পরিবর্তে ঈশ্বরের সাথে গমনাগমন করে চলেন। অনেক দেশে দরিদ্র লোকেদের মধ্যে প্রচলিত একটি সাধারণ জাগতিক ধারণা হল যে, আপনার পরিবারের ভরণপোষণের জন্য, যাদের বেশি আছে তাদের কাছ থেকে জিনিস ছিনিয়ে নেওয়া চুরি নয়। কিন্তু যারা বিশ্বাস দ্বারা চলেন, তারা এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রত্যাখ্যান করেন। তারা সবকিছুর উপরে ঈশ্বরের অনুমোদনকে মূল্য দেন আর তাদের সৎ আচরণের পুরস্কার পাওয়ার জন্য তাঁর দিকে তাকান। (হিতোপদেশ ৩০:৮, ৯; ১ করিন্থীয় ১০:১৩; ইব্রীয় ১৩:১৮) ভারতের একজন বিধবা মহিলা দেখতে পেয়েছিলেন যে তার দক্ষতার উপযোগী কাজ করার ইচ্ছা তাকে মোকাবিলা করতে সাহায্য করেছিল। তার পরিস্থিতির প্রতি বিরক্ত হওয়ার পরিবর্তে তিনি অবগত ছিলেন যে যদি তিনি ঈশ্বরের রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতাকে তার জীবনে প্রথম স্থান দেন যিহোবা তার ও তার ছেলের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু অর্জনে তার প্রচেষ্টাকে আশীর্বাদ করবেন। (মথি ৬:৩৩, ৩৪) পৃথিবীর চতুর্দিকে হাজার হাজার ব্যক্তিরা যে বিপর্যয়ই ভোগ করুন না কেন, তারা প্রদর্শন করেন যে যিহোবাই তাদের আশ্রয় ও দুর্গ। (গীতসংহিতা ৯১:২) আপনার ক্ষেত্রেও কি তা সত্য?

প্রহরীদুর্গ ৯৫ ৮/১ ৫ অনু. ৫-৬

সামনেই উত্তম সময়

পরবর্তীকালে, যখন বাবিলনের রাজা ধর্মভ্রষ্ট যিরূশালেমের উপর আক্রমণ হানে, তখন লোকেদের “পরিমাণপূর্ব্বক ভাবনা সহকারে অন্ন ভোজন” করতে হয়। (যিহিষ্কেল ৪:১৬) পরিস্থিতি এতই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে কিছু নারী তাদের নিজ শিশুসন্তানদের মাংস পর্যন্ত ভক্ষণ করেছিল। (বিলাপ ২:২০) এমনকি যদিও, সেসময়ে ভাববাদী যিরমিয় তার প্রচার কাজের জন্য বন্দী ছিলেন, কিন্তু যিহোবা যত্ন নিয়েছিলেন “যে পর্য্যন্ত নগরের সমস্ত রুটী শেষ না হইল; সে পর্য্যন্ত প্রতিদিন রুটী-ওয়ালাদের পল্লী হইতে এক একখানা রুটী লইয়া [যিরমিয়কে] দেওয়া যাইত।”—যিরমিয় ৩৭:২১.

যখন রুটির যোগান শেষ হয়ে গিয়েছিল, তখন যিহোবা কি যিরমিয়কে ভুলে গিয়েছিলেন? আপাতদৃষ্টিতে নয়, কারণ যখন শহরটি বাবিলনীয়দের কবলে আসে, তখন যিরমিয়কে ‘পাথেয় ও উপঢৌকন দিয়া বিদায় করে’ দেওয়া হয়েছিল।—যিরমিয় ৪০:৫, ৬; এছাড়াও দেখুন গীতসংহিতা ৩৭:২৫.

বাইবেল পাঠ

(যিরমিয় ৩৬:২৭–৩৭:২) যিরমিয়ের মুখে শুনিয়া বারূক যে সকল বাক্য লিখিয়াছিলেন, তৎসম্বলিত পুস্তকখানি রাজা পোড়াইলে পর সদাপ্রভুর এই বাক্য যিরমিয়ের নিকটে উপস্থিত হইল, ২৮ তুমি পুনর্ব্বার আর এক পুস্তক গ্রহণ কর; এবং ঐ প্রথম বাক্য সকল, অর্থাৎ যিহূদা-রাজ যিহোয়াকীম কর্ত্তৃক দগ্ধীভূত সেই প্রথম পুস্তকে যাহা ছিল, সে সমস্ত তন্মধ্যে লিখ। ২৯ আর যিহূদা-রাজ যিহোয়াকীমের বিষয়ে বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি এই পুস্তক পোড়াইয়াছ, বলিয়াছ, তুমি কেন ইহার মধ্যে এই কথা লিখিয়াছ যে, বাবিল-রাজ অবশ্য আসিবেন, ও এই দেশ নষ্ট করিবেন, এবং নরশূন্য ও পশুহীন করিবেন? ৩০ অতএব যিহূদা-রাজ যিহোয়াকীমের বিষয়ে সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দায়ূদের সিংহাসনে উপবেশন করিতে তাহার কেহ থাকিবে না, এবং তাহার শব দিবসে রৌদ্রে ও রাত্রিকালে হিমে নিক্ষিপ্ত হইয়া পতিত থাকিবে। ৩১ আর আমি তাহাকে, তাহার বংশকে ও তাহার দাসগণকে তাহাদের অপরাধের প্রতিফল দিব, আর তাহাদের বিরুদ্ধে এবং যিরূশালেমনিবাসীদের ও যিহূদার লোকদের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অমঙ্গলের কথা বলিলেও তাহারা কর্ণপাত করে নাই, আমি তাহাদের উপরে সেই সমস্ত অমঙ্গল ঘটাইব। ৩২ পরে যিরমিয় আর একখানি পুস্তক লইয়া নেরিয়ের পুত্র বারূক লেখককে দিলেন, তাহাতে যিহূদা-রাজ যিহোয়াকীম যে পুস্তক আগুনে পোড়াইয়াছিলেন, তাহার সমস্ত কথা তিনি পুনর্ব্বার যিরমিয়ের মুখে শুনিয়া লিখিলেন; তদ্ভিন্ন ঐ প্রকার আর আর অনেক কথাও তাহাতে লিখিত হইল।

৩৭ যিহোয়াকীমের পুত্র কনিয়ের পদে যোশিয়ের পুত্র সিদিকিয় রাজা হইয়া রাজত্ব করেন; বাবিল-রাজ নবূখদ্‌রিৎসর তাঁহাকেই যিহূদা দেশের রাজা করিয়াছিলেন। ২ কিন্তু তিনি, তাঁহার দাসগণ ও দেশীয় লোকেরা যিরমিয় ভাববাদী দ্বারা কথিত সদাপ্রভুর বাক্যে কর্ণপাত করিতেন না।

মে ১৫-২১

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৩৯-৪৩

“যিহোবা প্রত্যেককে তার কাজ অনুযায়ী ফল দেবেন”

(যিরমিয় ৩৯:৪-৭) আর যিহূদা-রাজ সিদিকিয় ও সমস্ত যোদ্ধা তাঁহাদিগকে দেখিয়া পলায়ন করিলেন, রাত্রিকালে রাজার উদ্যানের পথে দুই প্রাচীরের মধ্যস্থিত দ্বার দিয়া নগরের বাহিরে গেলেন; আর তিনি অরাবা তলভূমির পথে প্রস্থান করিলেন। ৫ কিন্তু কল্‌দীয়দের সৈন্য তাঁহাদের পশ্চাতে ধবমান হইয়া যিরীহোর সমভূমিতে সিদিকিয় রাজার লাগাল পাইল, ও তাঁহাকে ধরিয়া হমাৎ দেশস্থ রিব্লাতে বাবিল-রাজ নবূখদ্‌রিৎসরের নিকটে আনিল; তাহাতে তিনি তাঁহার দণ্ডবিধান করিলেন। ৬ আর বাবিল-রাজ রিব্লাতে সিদিকিয়ের সাক্ষাতে তাঁহার পুত্রগণকে বধ করিলেন, বাবিল-রাজ যিহূদার সমস্ত অধ্যক্ষকেও বধ করিলেন। ৭ আর তিনি সিদিকিয়ের চক্ষু উৎপাটন করিয়া তাঁহাকে বাবিলে লইয়া যাইবার জন্য পিত্তলের দুই শৃঙ্খলে বদ্ধ করিলেন।

অন্তর্দৃষ্টি-২ ১২২৮ অনু. ৪, ইংরেজি

সিদিকিয়

যিরূশালেমের পতন। অবশেষে (খ্রিস্টপূর্ব ৬০৭ সালে), “সিদিকিয়ের একাদশ বৎসর ... [চতুর্থ] মাসের নবম দিনে” যিরূশালেম নগরের পতন হয়েছিল। রাতের মধ্যেই সিদিকিয় ও সমস্ত যোদ্ধা পালিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যিরীহোর তলভূমিতে তাদের ধরে ফেলা হয়েছিল এবং সিদিকিয়কে রিব্লাতে নবূখদ্‌নিৎসরের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিদিকিয়ের পুত্রদের তার চোখের সামনেই বধ করা হয়েছিল। সেই সময়ে সিদিকিয়ের বয়স ছিল মাত্র ৩২ বছর, তাই তার সন্তানদের বয়স হয়তো খুব একটা বেশি ছিল না। তার পুত্রদের হত্যা করতে দেখার পর, সিদিকিয়ের চোখ উৎপাটন করা হয়েছিল, পিতলের শৃঙ্খলে বদ্ধ করা হয়েছিল এবং বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আর সেখানকার কারাগারে থেকেই তিনি মারা গিয়েছিলেন।—২রাজা ২৫:২-৭; যির ৩৯:২-৭; ৪৪:৩০; ৫২:৬-১১; তুলনা করুন যির ২৪:৮-১০; যিহি ১২:১১-১৬; ২১:২৫-২৭.

(যিরমিয় ৩৯:১৫-১৮) যে সময়ে যিরমিয় রক্ষীদের প্রাঙ্গণে বদ্ধ ছিলেন, তৎকালে তাঁহার নিকটে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হইয়াছিল, ১৬ তুমি যাইয়া কূশীয় এবদ-মেলককে বল, বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা কহেন, দেখ, মঙ্গলের নিমিত্ত নয়, কিন্তু অমঙ্গলের নিমিত্ত আমি এই নগরের উপরে আপন বাক্য সকল সফল করিব, সেই দিন তোমার সাক্ষাতে সে সমস্ত সফল হইবে। ১৭ কিন্তু সেই দিন আমি তোমাকে উদ্ধার করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন, এবং তুমি যে লোকদের হইতে উদ্বিগ্ন হইয়াছ, তাহাদের হস্তে তুমি সমর্পিত হইবে না। ১৮ আমি তোমাকে অবশ্য রক্ষা করিব, তুমি খড়্গে পতিত হইবে না, কিন্তু লুটিত দ্রব্যের ন্যায় তোমার প্রাণলাভ হইবে; কেননা তুমি আমাতে বিশ্বাস করিয়াছ, ইহা সদাপ্রভু কহেন।

প্রহরীদুর্গ ১২ ৫/১ ৩১ অনু. ৫, ইংরেজি

যারা তাঁর সেবা করে, তিনি তাদের পুরস্কারদাতা

যিহোবা এবদ-মেলকের কাজ লক্ষ করেছিলেন। তিনি কি সেটার প্রতি উপলব্ধি দেখিয়েছিলেন? যিরমিয়ের মাধ্যমে ঈশ্বর এবদ-মেলককে বলেছিলেন, যিরূশালেমের ধ্বংস অনিবার্য। একজন পন্ডিতের মতে, এরপর ঈশ্বর এবদ-মেলককে “রক্ষা পাওয়ার বিষয়ে পাঁচগুণ নিশ্চয়তা” প্রদান করেছিলেন। যিহোবা বলেছিলেন: “আমি তোমাকে উদ্ধার করিব, . . . লোকদের . . . হস্তে তুমি সমর্পিত হইবে না। আমি তোমাকে অবশ্য রক্ষা করিব, তুমি খড়্গে পতিত হইবে না, কিন্তু লুটিত দ্রব্যের ন্যায় তোমার প্রাণলাভ হইবে।” কেন যিহোবা এবদ-মেলককে রক্ষা করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন? যিহোবা তাকে বলেছিলেন: “কেননা তুমি আমাতে বিশ্বাস করিয়াছ।” (যিরমিয় ৩৯:১৬-১৮) যিহোবা জানতেন, এবদ-মেলক শুধু যিরমিয়ের প্রতি চিন্তা দেখিয়েই কাজ করেননি বরং যিহোবার প্রতি তার আস্থা ও বিশ্বাস ছিল।

(যিরমিয় ৪০:১-৬) রক্ষক-সেনাপতি নবূষরদন যিরমিয়কে রামা হইতে বিদায় দিলে পর তাঁহার নিকটে সদাপ্রভুর যে বাক্য উপস্থিত হইল, তাহার বৃত্তান্ত। [নবূষরদন] যখন তাঁহাকে গ্রহণ করিলেন, তখন তিনি শৃঙ্খলে বদ্ধ, এবং যিরূশালেমের ও যিহূদার যে সমস্ত লোক নির্ব্বাসার্থে বাবিলে নীত হইতেছিল, তাহাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন। ২ রক্ষক-সেনাপতি যিরমিয়কে গ্রহণ করিয়া কহিলেন, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু এই স্থানের বিষয়ে এই অমঙ্গলের কথা বলিয়াছিলেন; ৩ আর সদাপ্রভু তাহা ঘটাইয়াছেন, যেমন বলিয়াছিলেন, তেমনি করিয়াছেন। তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছ, তাঁহার রবে অবধান কর নাই, এই জন্য তোমাদের প্রতি ইহা ঘটিল। ৪ এখন দেখ, অদ্য আমি তোমার হস্তের শৃঙ্খল হইতে তোমাকে মুক্ত করিলাম; তুমি যদি আমার সহিত বাবিলে যাইতে ইচ্ছা কর, তবে আইস, আমি তোমার প্রতি অনুগ্রহদৃষ্টি রাখিব; আর যদি আমার সহিত বাবিলে যাইতে তোমার ইচ্ছা না হয়, তবে ক্ষান্ত হও; দেখ, সমস্ত দেশ তোমার সম্মুখে আছে; যে স্থানে যাওয়া তোমার উত্তম ও বিহিত বোধ হয়, সেই স্থানে যাও। ৫ তিনি তখনও ফিরিতেছেন না [দেখিয়া কহিলেন], ‘ভাল, তুমি শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়ের কাছে ফিরিয়া যাও, বাবিল-রাজ তাঁহাকেই যিহূদার নগরসমূহের উপরে শাসনকর্ত্তা নিযুক্ত করিয়াছেন, তুমি লোকদের মধ্যে তাঁহার সহিত বাস কর; কিম্বা যে কোন স্থানে যাওয়া তোমার বিহিত বোধ হয়, সেই স্থানে যাও।’ পরে রক্ষক-সেনাপতি তাঁহাকে পাথেয় ও উপঢৌকন দিয়া বিদায় করিলেন। ৬ তাহাতে যিরমিয় মিস্পাতে অহীকামের পুত্র গদলিয়ের নিকটে গিয়া দেশে অবশিষ্ট লোকদের মধ্যে তাঁহার সহিত বাস করিতে লাগিলেন।

অন্তর্দৃষ্টি-২ ৪৮২, ইংরেজি

নবূষরদন

নবূখদ্‌নিৎসরের আদেশে নবূষরদন যিরমিয়কে মুক্ত করে দিয়েছিলেন ও তার সঙ্গে সদয়ভাবে কথা বলেছিলেন, যিরমিয় যা করতে চান, তা তাকে বাছাই করতে দিয়েছিলেন, তার যত্ন নিতে চেয়েছিলেন এবং প্রয়োজনীয় বিষয় জুগিয়ে দিয়েছিলেন। অবশিষ্ট লোকেদের উপর গদলিয়কে শাসনকর্তা নিযুক্ত করার জন্য নবূষরদন বাবিল রাজের মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছিলেন। (২রাজা ২৫:২২; যির ৩৯:১১-১৪; ৪০:১-৭; ৪১:১০) প্রায় পাঁচ বছর পর, খ্রিস্টপূর্ব ৬০২ সালে, নবূষরদন স্পষ্টতই সেই অবশিষ্ট অন্যান্য যিহূদিদের নির্বাসনে নিয়ে গিয়েছিলেন, যারা আশেপাশের এলাকায় পালিয়ে গিয়েছিল।—যির ৫২:৩০.

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

(যিরমিয় ৪২:১-৩) পরে সমস্ত সেনাপতি এবং কারেহের পুত্র যোহানন ও হোশয়িয়ের পুত্র যাসনিয়, আর ক্ষুদ্র ও মহান্‌ সমস্ত লোক নিকটে আসিল, ২ এবং যিরমিয় ভাববাদীকে কহিল, আমাদের এই বিনতি আপনার সাক্ষাতে গ্রাহ্য হউক; আপনি আমাদের নিমিত্ত, অর্থাৎ এই সমস্ত অবশিষ্ট লোকের নিমিত্ত, আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন; কেননা আপনি স্বচক্ষে আমাদিগকে দেখিতেছেন, আমরা অনেকে ছিলাম, এক্ষণে অল্পই অবশিষ্ট আছি। ৩ অতএব কোন্‌ পথ আমাদের গন্তব্য, কি করা আমাদের কর্ত্তব্য, তাহা আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদিগকে জ্ঞাত করুন।

(যিরমিয় ৪৩:২) তখন হোশয়িয়ের পুত্র অসরিয় ও কারেহের পুত্র যোহানন, এবং গর্ব্বিত লোকেরা সকলে যিরমিয়কে কহিল, তুমি মিথ্যা বলিতেছ; মিসরে প্রবাস করিতে যাইও না, এই কথা বলিতে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে পাঠান নাই।

(যিরমিয় ৪৩:৪) এইরূপে কারেহের পুত্র যোহানন এবং সেনাপতিরা সকলে ও সমস্ত লোক যিহূদা দেশে বাস করিরার সম্বন্ধে সদাপ্রভুর রবে অবধান করিল না।

প্রহরীদুর্গ ০৩ ৫/১ ১০ অনু. ১০

আপনি কি জিজ্ঞেস করেন, “যিহোবা কোথায়?”

১০ যিরূশালেম ধ্বংস হয়ে যাওয়ার এবং বাবিলনীয় সেনাবাহিনী বন্দি যিহুদিদের নিয়ে চলে যাওয়ার পর, যোহানন যিহূদার অবশিষ্ট একটি ছোট্ট যিহুদি দলকে মিশরে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি হন। তাদের পরিকল্পনা করা হয়ে গিয়েছিল কিন্তু চলে যাওয়ার আগে তারা যিরমিয়কে তাদের হয়ে প্রার্থনা করতে এবং যিহোবার কাছ থেকে নির্দেশনা চাইতে অনুরোধ করে। কিন্তু, তারা যখন তাদের মনমতো উত্তর পায়নি, তখন তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে যায় এবং কাজ করে। (যিরমিয় ৪১:১৬–৪৩:৭) আপনি কি এই ঘটনাগুলোর মধ্যে শিক্ষাসমূহ দেখতে পান, যেগুলো আপনার উপকার করতে পারে, যাতে আপনি যখন যিহোবার শ্রীমুখের অন্বেষণ করেন, তখন তিনি আপনাকে তাঁর উদ্দেশ পেতে দেবেন?

(যিরমিয় ৪৩:৬, ৭) সেই পুরুষ, স্ত্রী, ও বালকবালিকা সকলকে, এবং রাজকুমারীগণকে, ও যে সকল লোককে, নবূষরদন রক্ষক-সেনাপতি শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়ের কাছে রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহাদিগকে, এবং যিরমিয় ভাববাদীকে ও নেরিয়ের পুত্র বারূককে লইল—এবং মিসর দেশে প্রবেশ করিল; ৭ কারণ তাহারা সদাপ্রভুর রবে অবধান করিল না। তাহারা তফন্‌হেষ পর্য্যন্ত গেল।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৪৬৩ অনু. ৪, ইংরেজি

কালনিরূপণবিদ্যা

রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের নবম বছরে (খ্রিস্টপূর্ব ৬০৯ সালে) যিরূশালেম পুরোপুরি অবরুদ্ধ হয়েছিল এবং তার একাদশতম বছরে (খ্রিস্টপূর্ব ৬০৭ সালে) সেই নগরের পতন হয়েছিল, যে-বছরটা ছিল নবূখদ্‌নিৎসরের রাজত্বের উনিশতম বছর (খ্রিস্টপূর্ব ৬২৫ সালে তিনি রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর গণনা করা হলে)। (২রাজা ২৫:১-৮) সেই বছরের পঞ্চম মাসে (আব মাস যা জুলাই/আগস্ট মাসে পড়ে) সেই নগরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল, প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছিল এবং বেশিরভাগ লোকেদের বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে, “কতকগুলি দীন দরিদ্র লোককে” সেখানে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল আর এই অবস্থা নবূখদ্‌নিৎসরের দ্বারা নিযুক্ত গদলিয়কে হত্যা করার আগে পর্যন্ত ছিল। এরপর তারা মিশরে পালিয়ে গিয়েছিল আর অবশেষে যিহূদা পুরোপুরি জনশূন্য হয়ে পড়েছিল। (২রাজা ২৫:৯-১২, ২২-২৬) এটা ছিল সপ্তম মাস, এথানীম (বা তিসরি মাস যা সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে পড়ে)। তাই, জনশূন্য অবস্থায় পড়ে থাকা ৭০ বছরের গণনা শুরু হয়েছিল প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৬০৭ সালের অক্টোবর মাসের ১ তারিখ থেকে এবং শেষ হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৭ সালে। উল্লেখিত শেষ বছরের সপ্তম মাসে বন্দিত্বে থাকা যিহূদিরা, তাদের দেশ ৭০ বছর জনশূন্য অবস্থায় থাকার পর, যিহূদায় ফিরে এসেছিল।—২বংশা ৩৬:২১-২৩; ইষ্রা ৩:১.

বাইবেল পাঠ

(যিরমিয় ৪০:১১–৪১:৩) আর মোয়াবে, অম্মোন-সন্তানদের মধ্যে ইদোমে ও অন্যান্য দেশে যে সকল যিহূদী ছিল, তাহারা যখন শুনিল যে, বাবিল-রাজ যিহূদার এক অংশ অবশিষ্ট রাখিয়াছেন, এবং শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়কে তাহাদের উপরে নিযুক্ত করিয়াছেন, ১২ তখন সেই যিহূদীরা সকলে যে সমস্ত স্থানে বিতাড়িত হইয়াছিল, সেই সমস্ত স্থান হইতে ফিরিয়া আসিল, যিহূদা দেশে মিস্পাতে গদলিয়ের নিকটে উপস্থিত হইল, এবং অপর্য্যাপ্ত দ্রাক্ষারস ও গ্রীষ্মের ফল সঞ্চয় করিতে লাগিল। ১৩ পরে কারেহের পুত্র যোহানন ও মাঠে অবস্থিত সৈন্যগণের সমস্ত সেনাপতি মিস্পাতে গদলিয়ের নিকটে আসিয়া তাঁহাকে কহিল, ১৪ আপনি কি জানেন, অম্মোন-সন্তানদের রাজা বালীস আপনার প্রাণনাশ করিতে নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েলকে প্রেরণ করিয়াছেন? কিন্তু অহীকামের পুত্র গদলিয় তাহাদের কথায় বিশ্বাস করিলেন না। ১৫ পরে কারেহের পুত্র যোহানন মিস্পাতে গদলিয়কে গোপনে কহিল, যদি আপনার অনুমতি হয়, তবে আমি গিয়া নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েলকে বধ করি, কেহ তাহা জানিতে পারিবে না; সে কেন আপনার প্রাণ নষ্ট করিবে? করিলে আপনার নিকটে সংগৃহীত সমস্ত যিহূদী ছিন্নভিন্ন, এবং যিহূদার অবশিষ্টাংশ বিনষ্ট হইবে। ১৬ কিন্তু অহীকামের পুত্র গদলিয় কারেহের পুত্র যোহাননকে কহিলেন, এ কার্য্য করিও না; কেননা ইশ্মায়েলের বিষয়ে তুমি যাহা বলিতেছ, তাহা মিথ্যা।

৪১ ইলীশামার পৌত্র নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল রাজার প্রধান কর্ম্মচারীদের মধ্যে গণিত রাজবংশীয় ছিল; সপ্তম মাসে সে দশ জন পুরুষকে সঙ্গে লইয়া মিস্পাতে অহীকামের পুত্র গদলিয়ের নিকটে আসিল; আর তাহারা মিস্পাতে একত্র ভোজন করিল। ২ পরে নথনিয়ের পুত্র ইশ্মায়েল ও তাহার ঐ দশ জন সঙ্গী উঠিয়া বাবিল-রাজের নিযুক্ত দেশাধ্যক্ষকে, শাফনের পৌত্র অহীকামের পুত্র গদলিয়কে, খড়্গাঘাতে বধ করিল। ৩ আর মিস্পাতে গদলিয়ের সঙ্গে যে সমস্ত যিহূদী ছিল, এবং যে কল্‌দীয়দিগকে সেখানে পাওয়া গেল, তাহাদিগকে, অর্থাৎ যোদ্ধা সকলকে ইশ্মায়েল বধ করিল।

মে ২২-২৮

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৪৪-৪৮

“‘নিজের জন্য মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা’ করা বন্ধ করুন”

(যিরমিয় ৪৫:২, ৩) হে বারূক, সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার বিষয়ে এই কথা কহেন, ৩ তুমি বলিয়াছ, হায় হায়, ধিক্‌ আমাকে! কেননা সদাপ্রভু আমার ব্যথার উপরে দুঃখ যোগ করিয়াছেন; আমি কোঁকাইতে কোঁকাইতে শ্রান্ত হইয়াছি, কিছুমাত্র বিশ্রাম পাইতেছি না।

যিরমিয় ১০৪-১০৫ অনু. ৪-৬, ইংরেজি

‘নিজের জন্য মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা’ করা এড়িয়ে চলুন

৪ বারূক সম্ভবত তার খ্যাতি ও মর্যাদা নিয়ে চিন্তিত ছিলেন। বারূক যদিও যিরমিয়ের পত্রলেখক হিসেবে কাজ করেছিলেন, কিন্তু, সম্ভবত তিনি যিরমিয়ের কেবল ব্যক্তিগত সচিবই ছিলেন না। যিরমিয় ৩৬:৩২ পদে বারূককে “লেখক” বা সচিব হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ বলে, রাজকীয় কর্মকর্তা হিসেবে হিসবে তার এক উচ্চ পদমর্যাদা ছিল। আসলে, এই একই পদমর্যাদা ‘ইলীশামা লেখকের’ ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয়েছিল, যার নাম যিহূদার অধ্যক্ষদের মধ্যে পাওয়া যায়। এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করে, ইলীশামার সহকর্মী হিসেবে বারূকও “রাজবাটীতে” থাকা “কুঠরীতে” বা সচিবদের খাবার খাওয়ার ঘরে যেতে পারতেন। (যির. ৩৬:১১, ১২, ১৪) তাই বারূক নিশ্চিতভাবেই রাজবাড়ির একজন শিক্ষিত কর্মকর্তা ছিলেন। তার ভাই সরায়, রাজা সিদিকিয়ের সেনানিবেশের অধ্যক্ষ ছিলেন এবং বাবিলে এক গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাওয়ার সময় রাজার সঙ্গে ছিলেন। (পড়ুন, যিরমিয় ৫১:৫৯.) সেনানিবেশের অধ্যক্ষ হিসেবে সরায়, সম্ভবত রাজার ভ্রমণের সময়ে প্রয়োজনীয় বিষয় ও থাকার জায়গা ব্যবস্থা করার দায়িত্বে ছিলেন। এটাও এক উচ্চ পদ ছিল।

৫ আপনি হয়তো বুঝতে পারছেন, একজন ব্যক্তি যিনি উচ্চপদে কাজ করে অভ্যস্থ ছিলেন, তিনি হয়তো যিহূদার বিরুদ্ধে একের পর এক দোষারোপের বার্তা লিখতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। এ ছাড়া, ঈশ্বরের ভাববাদীকে সমর্থন করা হয়তো বারূকের পদমর্যাদা ও চাকরীর জন্য হুমকীস্বরূপ হয়ে উঠেছিল। যিহোবা যা গেঁথে তুলেছেন, তা যদি তিনি ভেঙে ফেলতেন, যেমনটা যিরমিয় ৪৫:৪ পদে আমরা পড়ি, তা হলে এর পরিণতি কী হতো তা একটু ভেবে দেখুন। বারূকের মনে যদি “মহৎ মহৎ বিষয়”—হতে পারে রাজসভায় আরও সম্মান অর্জন করা কিংবা বস্তুগত সমৃদ্ধি—লাভ করার আকাঙ্খা থাকে, তা হলে তা নিষ্ফল বলে প্রমাণিত হতো। বারূক যদি সেই সময়ে ধ্বংসের জন্য নিরূপিত যিহূদি বিধিব্যবস্থায় এক সুরক্ষিত পদমর্যাদা লাভ করার জন্য আকাঙ্খী হতেন, তা হলে তার সেই প্রবণতাকে প্রতিরোধ করার উপযুক্ত কারণ যিহোবার ছিল।

৬ অন্যদিকে, বারূকের “মহৎ মহৎ বিষয়” আকাঙ্খী হওয়ার মধ্যে হয়তো বস্তুগত সমৃদ্ধি লাভ করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। যিহূদার আশাপাশে থাকা জাতিগুলো বস্তুগত ধনসম্পদের উপর অনেক বেশি নির্ভর করত। মোয়াব “আপন কার্য্যে ও আপন ধনকোষে” নির্ভর করত। অম্মোনও তা-ই করত। আর যিরমিয়ের মাধ্যমে যিহোবা বাবিলকে “ধনকোষে ঐশ্বর্য্যশালিনী” হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন। (যির. ৪৮:১, ৭; ৪৯:১, ৪; ৫১:১, ১৩) কিন্তু প্রকৃত বিষয় হল, যিহোবা সেইসমস্ত জাতির নিন্দা করেছিলেন।

(যিরমিয় ৪৫:৪, ৫ক) তুমি তাহাকে এই কথা বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি যাহা গাঁথিয়াছি, তাহা আমি ভাঙ্গিয়া ফেলিব; যাহা রোপণ করিয়াছি, তাহা আমি উৎপাটন করিব; আর এই সমগ্র দেশে উহা করিব। ৫ তবে তুমি কি আপনার জন্য মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা করিবে? সে চেষ্টা করিও না।

যিরমিয় ১০৩ অনু. ২, ইংরেজি

‘নিজের জন্য মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা’ করা এড়িয়ে চলুন

২ “হায় হায়, ধিক্‌ আমাকে!” বারূক অভিযোগ করে বলেছিলেন, “কেননা সদাপ্রভু আমার ব্যথার উপরে দুঃখ যোগ করিয়াছেন; আমি কোঁকাইতে কোঁকাইতে শ্রান্ত হইয়াছি।” আপনিও হয়তো এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছিলেন, যখন আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়ার বিষয়ে বলেছিলেন, হতে পারে জোরে জোরে শব্দ করে অথবা মনে মনে বলেছিলেন। বারূক যেভাবেই বলুক-না কেন, যিহোবা তা শুনছিলেন। মানব হৃদয়ের পরীক্ষক জানতেন, কোন বিষয় নিয়ে বারূক উদ্‌বিগ্ণ রয়েছেন আর তাই যিরমিয়ের মাধ্যমে ঈশ্বর সদয়ভাবে বারূককে সংশোধন করেছিলেন। (পড়ুন, যিরমিয় ৪৫:১-৫.) আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন, কেন বারূক এত উদ্‌বিগ্ণ ছিলেন। এটা কি তার কার্যভারের কারণে না কি যে-পরিস্থিতিতে তাকে কাজ করতে হয়েছিল, সেই পরিস্থিতির কারণে? আসলে এই অনুভূতি তার হৃদয় থেকে আসছিল। লক্ষ করুন, বারূক “মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা” করেছিলেন। সেগুলো কী ছিল? তিনি যদি ঈশ্বরের পরামর্শ ও নির্দেশনার প্রতি কান দেন, তা হলে যিহোবা তাকে কোন আশ্বাস দিয়েছিলেন? আর বারূকের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি?

(যিরমিয় ৪৫:৫খ) কেননা দেখ, আমি সমস্ত মর্ত্ত্যের প্রতি অমঙ্গল ঘটাইব, ইহা সদাপ্রভু কহেন; কিন্তু তুমি যে সকল স্থানে যাইবে, সে সকল স্থানে লুট দ্রব্যের ন্যায় তোমার প্রাণ তোমাকে দিব।

প্রহরীদুর্গ ১৬.০৭ ৮ অনু. ৬

রাজ্যের বিষয়ে চেষ্টা করুন, বস্তুগত বিষয়ে নয়

৬ ভাববাদী যিরমিয়ের সচিব বারূক সম্বন্ধে একটু চিন্তা করে দেখুন। বারূক যখন নিজের জন্য “মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা” করতে শুরু করেছিলেন, তখন যিহোবা তাকে এই বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, শীঘ্রই যিরূশালেম ধ্বংস হবে। কিন্তু তিনি বারূকের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, তিনি তার জীবন রক্ষা করবেন। (যির. ৪৫:১-৫) বারূকের এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা উচিত ছিল না। কারণ যিহোবা সেই সময়ে লোকেদের বস্তুগত বিষয় রক্ষা করেননি। (যির. ২০:৫) বর্তমানে আমরা এমন সময়ে বাস করছি, যখন শয়তানের জগতের ধ্বংস খুব নিকটে। তাই, এখন নিজেদের জন্য আরও বেশি বস্তুগত বিষয় লাভ করার সময় নয়। আর আমাদের এমনটা আশা করা উচিত নয়, আমাদের বস্তুগত বিষয়, তা সেগুলো যত মূল্যবান বলেই মনে হোক না কেন, মহাক্লেশের পরও আমাদের কাছে থাকবে।—হিতো. ১১:৪; মথি ২৪:২১, ২২; লূক ১২:১৫.

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

(যিরমিয় ৪৮:১৩) ইস্রায়েল-কুল আপন বিশ্বাসভূমি বৈথেলের বিষয়ে যেমন লজ্জিত হইয়াছিল, তেমনি মোয়াব কমোশের বিষয়ে লজ্জিত হইবে।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৪৩০, ইংরেজি

কমোশ

ভাববাদী যিরমিয় মোয়াবের অমঙ্গলের বিষয়ে ভবিষ্যদ্‌বাণী করতে গিয়ে বলেছিলেন, এর প্রধান দেবতা কমোশ ও সেইসঙ্গে সেই দেবতার যাজকগণ এবং অধ্যক্ষগণ নির্বাসনে যাবে। ইস্রায়েলের দশ বংশের রাজ্য বাছুর উপাসনার কারণে বৈথেলের বিষয়ে যেমন লজ্জিত হয়েছিল, তেমনি মোয়াবীয়রা তাদের দেবতার অক্ষমতার বিষয়ে লজ্জিত হবে।—যির ৪৮:৭, ১৩, ৪৬.

(যিরমিয় ৪৮:৪২) মোয়াব লুপ্ত হইল, আর জাতি থাকিবে না, কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে বড়াই করিয়াছে।

অন্তর্দৃষ্টি-২ ৪২২ অনু. ২, ইংরেজি

মোয়াব

মোয়াব সম্বন্ধে যে-ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, তা যে পুরোপুরিভাবে পরিপূর্ণ হয়েছে, সেটা উপেক্ষা করা যায় না। শত শত বছর আগে মোয়াবীয়রা এক জাতি হিসেবে লুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। (যির ৪৮:৪২) বর্তমানে, যে-জায়গাগুলো মোয়াবের নবো, হিষ্‌বোন, অরোয়ের, বৈৎ-গামূল এবং বাল্‌-মিয়োন নগর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেগুলো কেবল ধ্বংসের চিহ্ন বহন করছে। অন্যান্য অনেক স্থান সম্বন্ধে এখন আর কিছু জানা যায় না।

বাইবেল পাঠ

(যিরমিয় ৪৭:১-৭) ফরৌণ ঘসা পরাজয় করিবার পূর্ব্বে পলেষ্টীয়দের বিষয়ে যিরমিয় ভাববাদীর নিকটে সদাপ্রভুর যে বাক্য উপস্থিত হইল, তাহার বৃত্তান্ত। ২ সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, উত্তরদিক্‌ হইতে জল উথলিয়া আসিতেছে, তাহা প্লাবনকারী বন্যা হইয়া উঠিবে, দেশ ও তন্মধ্যস্থ সমস্ত বস্তু, নগর ও তন্নিবাসীদিগকে, আপ্লাবিত করিবে, তাহাতে লোকেরা ক্রন্দন করিবে, দেশনিবাসীরা সকলে হাহাকার করিবে। ৩ শত্রুর বলবান অশ্বদের খুরের খটখটানিতে, রথের ঘর্ঘরাণিতে, চক্রের শব্দে পিতারা হস্তের অবশতা প্রযুক্ত আপন আপন বালকদের প্রতিও ফিরিয়া দেখিবে না। ৪ কেননা সমস্ত পলেষ্টীয়কে বিনষ্ট করিবার দিন, সোর ও সীদোনের প্রত্যেক অবশিষ্ট সহকারীকে উচ্ছিন্ন করিবার দিন আসিতেছে; কারণ সদাপ্রভু পলেষ্টীয়দিগকে, কপ্তোরের উপকূলের অবশিষ্ট লোককে, বিনষ্ট করিবেন। ৫ ঘসার মস্তকে টাক পড়িল, অস্কিলোন, তাহাদের তলভূমির অবশিষ্টাংশ, নীরব হইল; তুমি কত কাল আপনার অঙ্গ কাটাকুটি করিবে? ৬ হে সদাপ্রভুর খড়্গ, তুমি আর কত কাল পরে ক্ষান্ত হইবে? তুমি আপন কোষে প্রবেশ কর, শান্ত হও, ক্ষান্ত হও। ৭ উহা কি প্রকারে ক্ষান্ত হইতে পারে? সদাপ্রভু ত উহাকে আজ্ঞা দিয়াছেন; অস্কিলোনের বিরুদ্ধে ও সমুদ্র-বক্ষের বিরুদ্ধে, সেইখানে তিনি তাহাকে নিযুক্ত করিয়াছেন।

মে ২৯–জুন ৪

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিরমিয় ৪৯-৫০

“যিহোবা নম্র ব্যক্তিদের আশীর্বাদ করেন এবং উদ্ধত ব্যক্তিদের শাস্তি দেন”

(যিরমিয় ৫০:৪-৭) সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েল সন্তানগণ আসিবে, তাহারা ও যিহূদা-সন্তানগণ একসঙ্গে আসিবে, রোদন করিতে করিতে চলিয়া আসিবে, ও আপনাদের ঈশ্বর, সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবে। ৫ তাহারা সিয়োনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিবে, সেই দিকে মুখ রাখিবে, বলিবে, চল, তোমরা এমন নিয়ম দ্বারা সদাপ্রভুতে আসক্ত হও, যাহা অনন্তকাল থাকিবে, যাহা কখনও লোকে ভুলিয়া যাইবে না। ৬ আমার প্রজারা হারান মেষ হইয়া পড়িয়াছে, তাহাদের পালকগণ তাহাদিগকে ভ্রান্ত করিয়াছে, নানা পর্ব্বতে পথহারা করিয়া ফেলিয়াছে; উহারা পর্ব্বত হইতে উপপর্ব্বতে গমন করিয়াছে, আপনাদের শয়নস্থান ভুলিয়া গিয়াছে। ৭ যাহারা তাহাদিগকে পাইয়াছে, তাহারা গ্রাস করিয়াছে; তাহাদের বিপক্ষগণ বলিয়াছে, আমাদের দোষ হয় নাই, কারণ উহারা ধর্ম্মনিবাস সদাপ্রভুর, আপনাদের পিতৃপুরুষগণের আশাভূমি সদাপ্রভুর, বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে।

(যিরমিয় ৫০:২৯-৩২) তোমরা বাবিলের বিরুদ্ধে ধনুর্দ্ধারীদিগকে, ধনুকে চাড়াদায়ী সকলকে, আহ্বান কর; চারিদিকে তাহার বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন কর, কাহাকেও রক্ষা পাইতে দিও না; তাহার ক্রিয়ানুযায়ী ফল তাহাকে দেও; সে যাহা যাহা করিয়াছে, তাহার প্রতি তদনুসারে কর; কেননা সে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে, ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধে, দর্প করিয়াছে। ৩০ এই জন্য সেই দিন তাহার যুবকগণ তাহার চকে পতিত হইবে, ও তাহার সমস্ত যোদ্ধা স্তব্ধীকৃত হইবে, ইহা সদাপ্রভু বলেন। ৩১ হে দর্প, প্রভু, বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ, কেননা তোমার সেই দিন উপস্থিত, যে দিন আমি তোমাকে প্রতিফল দিব। ৩২ তখন ঐ দর্প উছোট খাইয়া পড়িবে, কেহ তাহাকে উঠাইবে না; এবং আমি তাহার সকল নগরে আগুন লাগাইয়া দিব, তাহা তাহার চারিদিকের সকলই গ্রাস করিবে।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫৪, ইংরেজি

বিপক্ষ

ঈশ্বরের লোকেরা যখন অবিশ্বস্ত হয়ে পড়েছিল, তখন তিনি তাদের বিপক্ষগণের দ্বারা লুট ও পরাজিত হতে দিয়েছিলেন। (গীত ৮৯:৪২; বিলাপ ১:৫, ৭, ১০, ১৭; ২:১৭; ৪:১২) তবে, শত্রুরা এই বিজয় লাভ করার পর ভুল উপসংহারে এসেছিল, এরজন্য তারা নিজেরা কৃতিত্ব নিচ্ছিল ও নিজেদের দেবতাদের প্রশংসা করছিল কিংবা মনে করেছিল তারা যে-ভাবে যিহোবার লোকেদের সঙ্গে আচরণ করেছে, এর জন্য তাদের কোনো নিকাশ দিতে হবে না। (দ্বিতীয় ৩২:২৭; যির ৫০:৭) তাই যিহোবা এই অহংকারী ও উদ্ধত বিপক্ষগণকে নত করার জন্য বাধ্য হয়েছিলেন (যিশা ১:২৪; ২৬:১১; ৫৯:১৮; নহূম ১:২); আর তিনি তাঁর পবিত্র নামের কারণেই তা করেছিলেন।—যিশা ৬৪:২; যিহি ৩৬:২১-২৪.

(যিরমিয় ৫০:৩৮, ৩৯) তাহার জলাধার সকলের উপরে উত্তাপ রহিয়াছে, সেগুলি শুষ্ক হইবে; কেননা সে ক্ষোদিত প্রতিমার দেশ, ও সেখানকার লোকেরা আপন আপন বিভীষিকাগণের বিষয়ে উন্মত্ত। ৩৯ এই নিমিত্ত সেখানে বন্যপশু ও বৃকগণ বাস করিবে, এবং উষ্ট্রপক্ষী বাসা করিবে; তাহা আর কখনও লোকালয় হইবে না, পুরুষানুক্রমে সে স্থানে বসতি হইবে না।

যিরমিয় ১৬১ অনু. ১৫, ইংরেজি

“যিহোবার মনে যা ছিল, তিনি তা-ই করেছিলেন”

১৫ যিরমিয় মিশর জয়কারীর পতন সম্বন্ধেও ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন আর সেটা ছিল স্বয়ং বাবিল। এটা ঘটবার একশো বছর আগে, যিরমিয় বাবিলের হঠাৎ পতন সম্বন্ধে একেবারে নির্দিষ্টভাবে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন। কীভাবে? ঈশ্বরের ভাববাদী ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন, তার সুরক্ষাকারী সমস্ত জলাধার “শুষ্ক হইবে” ও তার বীরগণ যুদ্ধ করবে না। (যির. ৫০:৩৮; ৫১:৩০) এই ভবিষ্যদ্‌বাণী অক্ষরে অক্ষরে পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন মাদীয় ও পারসিকরা ইউফ্রেটিস নদীর জল ভিন্নমুখী করে দিয়েছিল, এটার মধ্য দিয়ে হেটে পার হয়েছিল এবং বাবিলীয়দের অতর্কিত আক্রমণ করে নগরের মধ্যে প্রবেশ করেছিল। আপনি হয়তো এই ঘোষণাটাও সমান গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করতে চাইবেন, আর তা হল এটা পরিত্যাক্ত জনবসতিহীন হয়ে পরবে। (যির. ৫০:৩৯; ৫১:২৬) অতীতের শক্তিশালী বাবিলের বর্তমান উৎসন্ন অবস্থা, একেবারে সঠিকভাবে ঐশিক ভবিষ্যদ্‌বাণীর পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে প্রমাণ দেয়।

প্রহরীদুর্গ ৯৮ ৪/১ ২০ অনু. ২০

ঈশ্বরের কাছ থেকে একটি পুস্তক

২০ বাবিলকে জনবসতিহীন দেখার জন্য যিশাইয় বেঁচে থাকেননি। কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণীর সত্যতাস্বরূপ, বাবিল পরিশেষে “ঢিবীময়” হয়েছিল। (যিরমিয় ৫১:৩৭) ইব্রীয় পণ্ডিত জেরোমের (সা.কা. চতুর্থ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন) বক্তব্য অনুসারে, তার দিনে বাবিল শিকারের ক্ষেত্র ছিল যেখানে “সকল ধরনের পশু” ঘুরে বেড়াত এবং তা আজ পর্যন্ত জনবসতিহীন রয়েছে। আকর্ষণীয় পর্যটনস্থল হিসাবে বাবিলের পুনর্স্থাপন হয়ত দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে পারে কিন্তু যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বাবিলের ‘পুত্ত্র ও পৌত্ত্র’ চিরদিনের জন্য বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।—যিশাইয় ১৪:২২.

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

(যিরমিয় ৪৯:১, ২) অম্মোন-সন্তানগণের বিষয়। সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ইস্রায়েলের কি পুত্র নাই? তাহার উত্তরাধিকারী কি কেহ নাই? তবে মিল্‌কম কেন গাদের ভূমি অধিকার করে, ও তাহার প্রজারা উহার নগরসমূহে বাস করে? ২ এই জন্য সদাপ্রভু কহেন, দেখ, এমন সময় আসিতেছে, যে সময়ে আমি অম্মোন-সন্তানদের রব্বা [নগরে] যুদ্ধের সিংহনাদ শুনাইব; তখন তাহা ধ্বংসস্থানীয় ঢিবী হইবে, এবং তাহার কন্যাগণ অগ্নিতে দগ্ধ হইবে; তৎকালে ইস্রায়েল আপনার অধিকার-গ্রাসকারীদিগকে অধিকারচ্যুত করিবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৯৪ অনু. ৬, ইংরেজি

অম্মোনীয়

এমনটা মনে করা হয়, তিগ্লৎপিলেষর ৩য় ও তার উত্তরসূরী, ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্যের লোকেদের বিতাড়িত করার পর (২রাজা ১৫:২৯; ১৭:৬), অম্মোনীয়রা গাদ বংশের এলাকা দখল করতে শুরু করেছিল আর এই এলাকার জন্য তারা যিপ্তহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল কিন্তু জয়ী হতে পারেনি। (তুলনা করুন গীত ৮৩:৪-৮) এভাবে, যিরমিয়ের মাধ্যমে বলা যিহোবার ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক বার্তায়, গাদীয়দের অধিকার কেড়ে নেওয়ার কারণে অম্মোনীয়দের তিরস্কার করা হয়েছিল এবং অম্মোনীয়দের ও তাদের দেবতা মালকামের (মিল্কম) উপর আসন্ন এক ধ্বংস সম্বন্ধে ঘোষণা করা হয়েছিল। (যির ৪৯:১-৫) অম্মোনীয়রা আরও কিছু করেছিল, তারা যিহূদা রাজ্যের শেষ বছরে রাজা যিহোয়াকীমের সময়ে, যিহূদাকে নির্যাতন করার জন্য লুটকারী সৈন্যদল প্রেরণ করেছিল।—২ রাজা ২৪:২, ৩.

(যিরমিয় ৪৯:১৭, ১৮) আর ইদোম বিস্ময়ের পাত্র হইবে, যাহারা তাহার নিকট দিয়া গমন করে, সকলে বিস্মিত হইবে, ও তাহার প্রতি উপস্থিত সকল আঘাত প্রযুক্ত শিশ দিবে। ১৮ সদাপ্রভু কহেন, সদোমের, ঘমোরার ও তন্নিকটবর্ত্তী নগরসমূহের উৎপাটনহেতু যেমন হইয়াছিল, তেমনি হইবে, কেহ সেখানে থাকিবে না, কোন মনুষ্য-সন্তান তাহার মধ্যে প্রবাস করিবে না।

যিরমিয় ১৬৩ অনু. ১৮, ইংরেজি

“যিহোবার মনে যা ছিল, তিনি তা-ই করেছিলেন”

১৮ আরও একটা ভবিষ্যদ্‌বাণী সাধারণ কাল প্রথম শতাব্দীতে পরিপূর্ণ হয়েছিল। ঈশ্বর যিরমিয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন, ইদোম সেই জাতিগুলোর মধ্যে থাকবে, যারা বাবিলের আক্রমণের দ্বারা তাড়িত হবে। (যির. ২৫:১৫-১৭, ২১; ২৭:১-৭) কিন্তু ঈশ্বরের সেই বাক্য আরও কিছু বলেছিল। ইদোমের অবস্থা সদোম ও ঘমোরার মতো হবে। এর অর্থ কী, তা আপনি জানেন—আর কখনো সেখানে জনবসতি হবে না, বিলুপ্ত হয়ে যাবে। (যির. ৪৯:৭-১০, ১৭, ১৮) আর ঠিক সেটাই হয়েছিল। ইদোম ও ইদোমীয় নামগুলো এখন কোথায় খুঁজে পাওয়া যেতে পারে বলে আপনি মনে করেন? আধুনিক কোনো মানচিত্রে? না। এই নামগুলো কেবল প্রাচীন বইগুলোতে ও বাইবেলের ইতিহাসে কিংবা সেই মানচিত্রগুলোতে পাওয়া যায়, যেগুলো সেই সময় সম্বন্ধে তুলে ধরে। ফ্লেভিয়াস জোসিফাস বলেন, দ্বিতীয় শতাব্দীতে ইদোমীয়দের জোরপূর্বক যিহূদি ধর্ম গ্রহণ করানো হয়েছিল। এরপর, ৭০ খ্রিস্টাব্দে যিরূশালেমের ধ্বংসের পর, এক স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে তারা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।

যিশাইয়ের ভবিষ্যদ্‌বাণী-২ ৩৫১ অনু. ৬, ইংরেজি

যিহোবা তাঁর নাম মহিমান্বিত করেছেন

৬ তা হলে কেন যিহোবা ইদোমের যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিমুখ হয়েছিলেন? মানব ইতিহাসের শুরু থেকেই ঈশ্বরের চুক্তিবদ্ধ লোকেদের সঙ্গে ইদোমীয়দের শত্রুতা রয়েছে। এই দীর্ঘ সময়ের শত্রুতা তাদের পূর্বপুরুষ এষৌর সময় থেকে শুরু হয়েছিল । (আদিপুস্তক ২৫:২৪-৩৪; গণনাপুস্তক ২০:১৪-২১) যিহূদার প্রতি ইদোমীয়দের ঘৃণা বিশেষভাবে সেই সময়ে আরও বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, যখন যিরূশালেমের ধ্বংসের সময়ে ইদোমীয়রা বাবিলীয় সৈন্যদের উৎসাহিত করেছিল। (গীতসংহিতা ১৩৭:৭) যিহোবা এই ধরনের শত্রুতাকে তাঁর নিজের প্রতি করা এক অপরাধ হিসেবে দেখেছিলেন। তাই, এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, যিহোবা ইদোমের বিরুদ্ধে তাঁর প্রতিশোধের খড়্গ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন!—যিশাইয় ৩৪:৫-১৫; যিরমিয় ৪৯:৭-২২.

বাইবেল পাঠ

(যিরমিয় ৫০:১-১০) সদাপ্রভু যিরমিয় ভাববাদী দ্বারা বাবিলের বিষয়ে, কল্‌দীয়দের দেশের বিষয়ে, যে কথা বলিয়াছিলেন, তাহা এই। ২ তোমরা জাতিগণের মধ্যে জ্ঞাত কর, প্রচার কর, ধ্বজা তুলিয়া ধর; প্রচার কর, গুপ্ত রাখিও না; বল, ‘বাবিল পরহস্তগত হইল, বেল লজ্জিত হইল, মরোদক উদ্বিগ্ন হইল; তাহার প্রতিমা সকল লজ্জিত হইল, পুত্তলি সকল ক্ষুব্ধ হইল।’ ৩ কেননা উত্তরদিক্‌ হইতে এক জাতি তাহার বিরুদ্ধে উঠিয়া আসিল; সে তাহার দেশ ধ্বংস করিবে, তাহার মধ্যে কেহ বাস করিবে না; মনুষ্য ও পশু পলায়ন করিল, চলিয়া গেল। ৪ সদাপ্রভু কহেন, সেই সময়ে ও সেই কালে ইস্রায়েল সন্তানগণ আসিবে, তাহারা ও যিহূদা-সন্তানগণ একসঙ্গে আসিবে, রোদন করিতে করিতে চলিয়া আসিবে, ও আপনাদের ঈশ্বর, সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবে। ৫ তাহারা সিয়োনের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিবে, সেই দিকে মুখ রাখিবে, বলিবে, চল, তোমরা এমন নিয়ম দ্বারা সদাপ্রভুতে আসক্ত হও, যাহা অনন্তকাল থাকিবে, যাহা কখনও লোকে ভুলিয়া যাইবে না। ৬ আমার প্রজারা হারান মেষ হইয়া পড়িয়াছে, তাহাদের পালকগণ তাহাদিগকে ভ্রান্ত করিয়াছে, নানা পর্ব্বতে পথহারা করিয়া ফেলিয়াছে; উহারা পর্ব্বত হইতে উপপর্ব্বতে গমন করিয়াছে, আপনাদের শয়নস্থান ভুলিয়া গিয়াছে। ৭ যাহারা তাহাদিগকে পাইয়াছে, তাহারা গ্রাস করিয়াছে; তাহাদের বিপক্ষগণ বলিয়াছে, আমাদের দোষ হয় নাই, কারণ উহারা ধর্ম্মনিবাস সদাপ্রভুর, আপনাদের পিতৃপুরুষগণের আশাভূমি সদাপ্রভুর, বিরুদ্ধে পাপ করিয়াছে। ৮ তোমরা সত্বর বাবিলের মধ্য হইতে বাহির হইয়া পড়, কল্‌দীয়দের দেশ হইতে নির্গমন কর, এবং পালের অগ্রগামী ছাগের ন্যায় হও। ৯ কেননা দেখ, আমি উত্তরদেশ হইতে মহাজাতি-সমাজ উত্তেজিত করিয়া বাবিলের বিরুদ্ধে গমন করাইব, তাহারা বাবিলের বিরুদ্ধে সৈন্য রচনা করিবে, তাহাতে তাহা পরহস্তগত হইবে; তাহাদের বাণ কৌশলপরায়ণ বীরের ন্যায় হইবে, বিফল হইয়া ফিরিয়া আসিবে না। ১০ কল্‌দিয়া লুটবস্তু হইবে; যে সকল লোক সেই দেশ লুট করিবে, তাহারা তৃপ্ত হইবে, ইহা সদাপ্রভু কহেন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার