ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯২ ১২/১ পৃষ্ঠা ১৬-২০
  • বিশ্বাসকারীদের পরিত্রাণ করতে যিহোবা “মূর্খতা” ব্যবহার করেন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিশ্বাসকারীদের পরিত্রাণ করতে যিহোবা “মূর্খতা” ব্যবহার করেন
  • ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • জাগতিক জ্ঞানের মৌলিক ত্রুটি
  • রাজ্যের প্রচার—মূর্খতা অথবা উপযোগী?
  • “যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদের কাছে মূর্খতা”
  • ‘জ্ঞানবান্‌ হইবার জন্য মূর্খ হওয়া’
  • প্রকৃত প্রজ্ঞা উচ্চস্বরে ডাকে!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • “আহা! ঈশ্বরের . . . প্রজ্ঞা . . . কেমন অগাধ!”
    যিহোবার নিকটবর্তী হোন
  • “ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়”
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “যে প্রজ্ঞা উপর হইতে আইসে,” তা কি আপনার জীবনে সক্রিয়?
    যিহোবার নিকটবর্তী হোন
আরও দেখুন
১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯২ ১২/১ পৃষ্ঠা ১৬-২০

বিশ্বাসকারীদের পরিত্রাণ করতে যিহোবা “মূর্খতা” ব্যবহার করেন

“কারণ, ঈশ্বরের জ্ঞানক্রমে যখন জগৎ নিজ জ্ঞান দ্বারা ঈশ্বরকে জানিতে পায় নাই, তখন প্রচারের মূর্খতা দ্বারা বিশ্বাসকারীদের পরিত্রাণ করিতে ঈশ্বরের সুবাসনা হইল।”—১ করিন্থীয় ১:২১.

১. কোন অর্থে যিহোবা “মূর্খতা” ব্যবহার করবেন, আর আমরা কিভাবে জানতে পারি যে জগৎ তার জ্ঞানে ঈশ্বরকে জানতে পারেনি?

কী? যিহোবা কি মূর্খতা ব্যবহার করবেন? প্রকৃত-অর্থে নয়! কিন্তু জগতের কাছে যা মূর্খতা মনে হতে পারে তা তিনি ব্যবহার করতে পারেন এবং করেনও। তিনি তা করেন যে লোকেরা তাঁকে জানে ও ভালবাসে, তাদের পরিত্রাণ করতে। জগৎ, তার জ্ঞানের মাধ্যমে ঈশ্বরকে জানতে পারে না। যীশু খ্রীষ্ট তা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যখন প্রার্থনা করার সময় তিনি বলেছিলেন: “ধর্ম্মময় পিতঃ, জগৎ তোমাকে জানে নাই।”—যোহন ১৭:২৫.

২. কিভাবে মনে হতে পারে যে যিহোবার পথসকল ও জগতের পথগুলি সমান্তরালভাবে চলছে, কিন্তু প্রকৃত ঘটনা কী?

২ যীশুর কথাগুলি ইঙ্গিত করে যে যিহোবার পথসকল জগতের পথগুলি থেকে পৃথক। বাহ্যিক-ভাবে মনে হতে পারে যে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ও জগতের উদ্দেশ্য সমান্তরালভাবে চলছে। মনে হতে পারে যে জগতের লক্ষ্যসকলের প্রতি ঈশ্বরের আশীর্বাদ আছে। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেল বলে যে ঈশ্বর একটি ন্যায়পরায়ণ সরকার স্থাপন করবেন যা পৃথিবীতে মানবজাতির জন্য সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধিশালী জীবন নিয়ে আসবে। (যিশাইয় ৯:৬, ৭; মথি ৬:১০) একইভাবে, জগৎ একটি তথাকথিত নতুন জগৎ-ব্যবস্থার দ্বারা মানুষকে শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুশাসন দেওয়ার উদ্দেশ্য জাহির করে। কিন্তু ঈশ্বরের উদ্দেশ্যসকল এবং জগতের উদ্দেশ্যগুলি এক নয়। যিহোবার উদ্দেশ্য নিজেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সার্বভৌম রাজা হিসাবে মহিমান্বিত করা। তিনি তা করবেন একটি স্বর্গীয় সরকারের মাধ্যমে যা সমস্ত পার্থিব সরকারকে নিশ্চিহ্ন করবে। (দানিয়েল ২:৪৪; প্রকাশিত বাক্য ৪:১১; ১২:১০) সুতরাং এই জগৎ-ব্যবস্থার কিছুই ঈশ্বরের সাদৃশ্যে নেই। (যোহন ১৮:৩৬; ১ যোহন ২:১৫-১৭) সেইজন্য বাইবেল দুই ধরনের জ্ঞানের কথা বলে—“ঈশ্বরের জ্ঞান” এবং “জগতের জ্ঞান।”—১ করিন্থীয় ১:২০, ২১.

জাগতিক জ্ঞানের মৌলিক ত্রুটি

৩. যদিও জগতের জ্ঞান আকর্ষণীয় মনে হতে পারে, কেন মানুষের প্রতিজ্ঞাত নতুন জগৎ-ব্যবস্থা কখনোই সন্তুষ্টিজনক হবে না?

৩ যারা ঈশ্বরের জ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত নয়, তাদের কাছে জগতের জ্ঞান আকর্ষণীয় মনে হয়। অনেক শব্দাড়ম্বরপূর্ণ দর্শনবাদ আছে যা মনকে অভিভূত করে। হাজার হাজার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে, অনেকে মনে করে মানবজাতির মধ্যে সর্বাপেক্ষা জ্ঞানী ব্যক্তিসকল থেকে শিক্ষা দেওয়া হয়। সুবিশাল গ্রন্থাগারসকল আছে যেগুলি মানব অভিজ্ঞতার বহু শতাব্দীযাবৎ-সঞ্চিত জ্ঞানে পরিপূর্ণ। এ সত্ত্বেও, যাইহোক, যে নতুন জগৎ-ব্যবস্থার কথা জাগতিক নেতারা বলে, তা শুধুমাত্র অসিদ্ধ, পাপ-কলুষিত, মৃত্যুপথগামী মানুষের শাসন হতে পারে। সুতরাং, সেই ব্যবস্থা অসিদ্ধ হবে, অতীতের বহু ভুল পুনরায় ঘটবে এবং মানবজাতির সমস্ত চাহিদা কখনোই পূর্ণ হবে না।—রোমীয় ৩:১০-১২; ৫:১২.

৪. প্রস্তাবিত নতুন জগৎ-ব্যবস্থা কিসের অধীন রয়েছে, আর তার ফল কী?

৪ মানুষের প্রস্তাবিত নতুন জগৎ-ব্যবস্থা শুধুমাত্র মানব দুর্বলতা নয় কিন্তু দুষ্ট আত্মিক প্রাণীদের—হ্যাঁ, শয়তান দিয়াবল ও তার মন্দ আত্মাদের দ্বারাও প্রভাবগ্রস্ত। শয়তান লোকেদের মন অন্ধ করেছে, যাতে তারা খ্রীষ্টের “গৌরবের সুসমাচার”-এ বিশ্বাস না করে। (২ করিন্থীয় ৪:৩, ৪; ইফিষীয় ৬:১২) ফলস্বরূপ, জগৎ একটির পর একটি অশান্তি ভোগ করে চলেছে। ঈশ্বরের সাহায্য ও ঐশিক ইচ্ছার প্রতি সম্মান ব্যতিরেকে সর্বনাশমূলক নিজ শাসনের প্রচেষ্টায় জগৎ নিদারুণ যন্ত্রণা ও ক্ষতি স্বীকার করছে। (যিরমিয় ১০:২৩; যাকোব ৩:১৫, ১৬) সুতরাং, যেমন প্রেরিত পৌল বলেছিলেন, “জগৎ নিজ জ্ঞান দ্বারা ঈশ্বরকে জানিতে পায় নাই।”—১ করিন্থীয় ১:২১.

৫. এই জগতের জ্ঞানের মৌলিক ত্রুটি কী?

৫ এই জগতের জ্ঞানের, যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নতুন জগৎ-ব্যবস্থার পরিকল্পনা, তার মৌলিক ত্রুটি তাহলে কী? তা হল যে বিষয়টি কখনোই সফলভাবে উপেক্ষা করা যায় না জগৎ তা উপেক্ষা করছে—যিহোবা ঈশ্বরের সার্বভৌম রাজপদ। উদ্ধতভাবে সে ঐশ্বরিক সার্বভৌমত্ব মেনে নিতে অস্বীকার করে। ইচ্ছাকৃতভাবে জগৎ তার সমস্ত পরিকল্পনা থেকে যিহোবাকে সরিয়ে রাখে আর নিজের ক্ষমতা ও পদ্ধতির উপর নির্ভর করে। (তুলনা করুন দানিয়েল ৪:৩১-৩৪; যোহন ১৮:৩৭.) বাইবেল পরিষ্কার জানায় “সদাপ্রভুকে ভয় করাই প্রজ্ঞার আরম্ভ।” (হিতোপদেশ ৯:১০; গীতসংহিতা ১১১:১০) তবুও, জগৎ জ্ঞানের এই মৌলিক প্রয়োজনটুকুও শেখেনি। সুতরাং, ঐশ্বরিক সাহায্য ছাড়া, সে কিভাবে সফল হবে?—গীতসংহিতা ১২৭:১.

রাজ্যের প্রচার—মূর্খতা অথবা উপযোগী?

৬, ৭. (ক) যারা ঈশ্বরের জ্ঞানে পরিচালিত হয় তারা কী প্রচার করছে, কিন্তু জগৎ তাদের কিভাবে দেখে? (খ) কার জ্ঞান অনুযায়ী খ্রীষ্টজগতের পাদ্রীরা প্রচার করে ও তার ফল কী হয়?

৬ অপরপক্ষে, যারা ঈশ্বরকে জানে তারা ঐশ্বরিক জ্ঞান প্রদর্শন করে এবং তার দ্বারা পরিচালিত হতে চায়। যেমন যীশু ভাববাণী করেছিলেন, তারা “সর্ব্ব জাতির কাছে . . . রাজ্যের এই সুসমাচার” প্রচার করছে। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) এখন কি এই প্রচার উপযোগী, যখন আমাদের পৃথিবী বিবাদবিসংবাদ, পরিবেশদূষণ, দারিদ্রতা, আর মানুষের দুঃখকষ্টে পরিপূর্ণ? জাগতিক জ্ঞানী ব্যক্তিদের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের এই প্রচার মূর্খতামাত্র, উপযোগিতাহীন বলে মনে হয়। তারা ঈশ্বরের রাজ্যের প্রচারকদের নাছোড়বান্দা সামুদ্রিক প্রাণী বার্নাক্‌লের মত দেখে যারা জাহাজরূপ দেশের ভার বাড়িয়ে আদর্শ রাজনৈতিক সরকার গঠনের অগ্রগতিকে ধীরগতি করে তোলে। এই ক্ষেত্রে তারা খ্রীষ্টজগতের পাদ্রীদের সমর্থন পায়, যারা এই জগতের জ্ঞান অনুযায়ী প্রচার করে আর ঈশ্বরের নতুন জগৎ এবং তাঁর রাজ্য সরকার সম্বন্ধে যা জানা প্রয়োজন তা লোকেদের জানায় না, যদিও তা খ্রীষ্টের প্রধান শিক্ষা-বিষয় ছিল।—মথি ৪:১৭; মার্ক ১:১৪, ১৫.

৭ ইতিহাসজ্ঞ এইচ. জি. ওয়েলস্‌ খ্রীষ্টজগতের পাদ্রীদের এই ব্যর্থতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন: “যীশু যাকে স্বর্গরাজ্য বলতেন সেই শিক্ষার প্রতি তাঁর প্রভূত গুরুত্ব-অর্পণ, এবং অধিকাংশ খ্রীষ্টিয় গির্জাগুলির পদ্ধতি এবং শিক্ষাতে এই রাজ্যের অপেক্ষাকৃত তুচ্ছতা সত্যই লক্ষণীয়।” তবুও, যদি এই বংশের লোকেদের জীবন লাভ করতে হয়, তাহলে আগে তাদের ঈশ্বরের প্রতিষ্ঠিত রাজ্যের বিষয়ে জানতে হবে, আর তা সম্ভব হবে যদি কেউ সেই সম্বন্ধে সুসমাচার প্রচার করে।—রোমীয় ১০:১৪, ১৫.

৮. ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার করা কেন বর্তমানে সবচেয়ে উপযোগী কাজ, কিন্তু কোন্‌ কাজ দীর্ঘস্থায়ী উপকার আনবে না?

৮ সুতরাং, এখন যা করা উচিৎ তার মধ্যে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচার সর্বাধিক উপযোগী বিষয়। কারণ এই রাজ্যের বার্তা একটি প্রকৃত আশা দেয় যা শেষকালে ‘বিষম সময়ে’ মানুষের হৃদয় আনন্দে পূর্ণ করে। (২ তীমথিয় ৩:১-৫; রোমীয় ১২:১২; তীত ২:১৩) এই জগতে যেখানে জীবন অনিশ্চিত এবং সাময়িক, ঈশ্বরের নতুন জগতে জীবন হবে অনন্তকালীন, এই পৃথিবীতেই আনন্দ, প্রাচুর্য এবং শান্তির মধ্যে। (গীতসংহিতা ৩৭:৩, ৪, ১১) যেমন যীশু খ্রীষ্ট বলেন, “মনুষ্য যদি সমুদয় জগৎ লাভ করিয়া আপন প্রাণ হারায়, তবে তাহার কি লাভ হইবে? কিম্বা মনুষ্য আপন প্রাণের পরিবর্ত্তে কি দিবে?” যদি একজন ব্যক্তি ঈশ্বরের নতুন জগতে জীবনের অধিকার হারায়, তাহলে এই জগৎ, যা বয়ে যাচ্ছে, তার কী উপকারে আসবে? এই রকম ব্যক্তির জাগতিক বস্তুসকল বর্তমানে ভোগ করা বৃথা, মূল্যহীন এবং ক্ষণস্থায়ী।—মথি ১৬:২৬; উপদেশক ১:১৪; মার্ক ১০:২৯, ৩০.

৯. (ক) একটি লোক, যাকে যীশুর অনুগামী হতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, সে যখন আরও সময় চায়, যীশু তাকে কী উপদেশ দিয়েছিলেন? (খ) যীশুর উত্তর আমাদের কিভাবে প্রভাবিত করা উচিৎ?

৯ একজন লোক যাকে যীশু তাঁর শিষ্য হওয়ার আমন্ত্রণ জানান, বলেছিল: “অগ্রে আমার পিতার কবর দিয়া আসিতে অনুমতি করুন।” যীশু তাকে কী করতে উপদেশ দিয়েছিলেন? সেই লোকটি যে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ যতক্ষণ না তার পিতামাতা মারা যাচ্ছে ততক্ষণ ফেলে রাখবে, তা জেনে যীশু উত্তর দিয়েছিলেন: “মৃতেরাই আপন আপন মৃতদের কবর দিউক; কিন্তু তুমি গিয়া ঈশ্বরের রাজ্য ঘোষণা কর।” (লূক ৯:৫৯, ৬০) যারা খ্রীষ্টের আজ্ঞাপালন করে জ্ঞানের পরিচয় দেয়, তারা রাজ্যের বার্তা প্রচার করার দায়িত্বভার পূরণ করা উপেক্ষা করতে পারে না। ঐশ্বরিক জ্ঞান তাদের সতর্ক করে দেয় যে এই জগৎ ও তার শাসকগণের ধ্বংস আসন্ন। (১ করিন্থীয় ২:৬; ১ যোহন ২:১৭) ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বের সমর্থনকারীরা জানে যে ঐশ্বরিক হস্তক্ষেপ এবং শাসন হল মানবজাতির একমাত্র সত্য আশা। (সখরিয় ৯:১০) সুতরাং যারা এই জগতের জ্ঞানের অধিকারী তারা যখন ঈশ্বরের রাজ্যে বিশ্বাস করে না ও সেই স্বর্গীয় সরকার চায় না, যারা ঐশ্বরিক জ্ঞানের দ্বারা পরিচালিত তারা এমন কাজ করে যা তাদের সহমানবদের প্রকৃত উপকার করে, যিহোবার প্রতিজ্ঞাত নতুন জগতে অনন্ত জীবনের জন্য তাদের প্রস্তুত করার মাধ্যমে।—যোহন ৩:১৬; ২ পিতর ৩:১৩.

“যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদের কাছে মূর্খতা”

১০. (ক) তার্ষের শৌলের মন পরিবর্তন হওয়ার পরে, তিনি কী কাজ গ্রহণ করেন, ও তার প্রতি কিরূপ দৃষ্টিভঙ্গি রাখেন? (খ) প্রাচীন গ্রীকরা কিসের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল, কিন্তু ঈশ্বর তাদের জ্ঞানকে কিরূপে দেখেন?

১০ তার্ষবাসী শৌল, যিনি যীশু খ্রীষ্টের প্রেরিত পৌল হয়েছিলেন, তিনি এই জীবন-রক্ষক কাজ গ্রহণ করেন। যখন যীশু খ্রীষ্ট শৌলের মন পরিবর্তন করেন, তখন তিনি তাকে একটি মূর্খতার কাজের ভার দিচ্ছিলেন তা ভেবে নেওয়া কি যুক্তিসঙ্গত হবে? পৌল তা মনে করেননি। (ফিলিপীয় ২:১৬) সেই সময়ে গ্রীকদের পৃথিবীর সর্বাধিক বুদ্ধিমান জাতি বলে মনে করা হত। তাদের মহান দার্শনিকদের ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের সম্বন্ধে তারা গর্ব করত। যদিও পৌল গ্রীক ভাষা বলতে পারতেন, তিনি গ্রীক দর্শনবাদ ও শিক্ষা গ্রহণ করেননি। কেন? কারণ এই ধরনের জগতের জ্ঞান ঈশ্বরের কাছে মূর্খতা।a পৌল ঐশ্বরিক জ্ঞানলাভের আকাঙ্ক্ষী ছিলেন, যা তাকে গৃহে গৃহে সুসমাচার প্রচার করতে প্রেরণা দিয়েছিল। সর্বকালের মহান প্রচারক, যীশু খ্রীষ্ট, উদাহরণ স্থাপন করেন ও তাকেও সেই একই কাজ করতে নির্দেশ দেন।—লূক ৪:৪৩; প্রেরিত ২০:২০, ২১; ২৬:১৫-২০; ১ করিন্থীয় ৯:১৬.

১১. মূলত, পৌল তাঁর প্রচার কার্যভার এবং জগতের জ্ঞান সম্বন্ধে কী বলেছিলেন?

১১ পৌল, তাঁর প্রচার করার দায়িত্বভার সম্বন্ধে বলেন: “খ্রীষ্ট আমাকে . . . প্রেরণ করেন . . . সুসমাচার প্রচার করিবার নিমিত্ত; তাহাও বিজ্ঞানের বাক্যে নয়, যেন খ্রীষ্টের যাতনাদণ্ড বিফল না হয়। কারণ সেই যাতনাদণ্ডের [পাপের প্রায়শ্চিত্তমূলক যীশুর বলিদান] কথা, যাহারা বিনাশ পাইতেছে, তাহাদের কাছে মূর্খতা, কিন্তু পরিত্রাণ পাইতেছি যে আমরা, আমাদের কাছে তাহা ঈশ্বরের পরাক্রমস্বরূপ। কারণ লিখিত আছে, “আমি জ্ঞানবান্‌দের জ্ঞান নষ্ট করিব, বিবেচক লোকদের বিবেচনা ব্যর্থ করিব।” জ্ঞানবান্‌ [যেমন দার্শনিক] কোথায়? অধ্যাপক কোথায়? এই যুগের বাদানুবাদকারী কোথায়? ঈশ্বর কি জগতের জ্ঞানকে মূর্খতায় পরিণত করেন নাই? কারণ, ঈশ্বরের জ্ঞানক্রমে যখন জগৎ নিজ জ্ঞান দ্বারা ঈশ্বরকে জানিতে পায় নাই, তখন প্রচারের মূর্খতা দ্বারা বিশ্বাসকারীদের পরিত্রাণ করিতে ঈশ্বরের সুবাসনা হইল।”—১ করিন্থীয় ১:১৭-২১, NW.

১২. যিহোবা যা প্রচার হচ্ছে তার “মূর্খতার” মাধ্যমে কী সাধন করছেন, এবং যারা “উপর হইতে জ্ঞান” চায় তারা কিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

১২ অবিশ্বাস্য মনে হলেও, যাদের জগৎ মূর্খ বলে তাদেরই ঈশ্বর তাঁর প্রচারক হিসাবে ব্যবহার করেন। হ্যাঁ, এই প্রচারকদের পরিচর্য্যার মূর্খতার মাধ্যমে, যারা বিশ্বাস করে ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেন। যিহোবা এমনভাবে পরিস্থিতি দেখাশোনা করেন যাতে এই “মূর্খতার” প্রচারকেরা নিজেদের প্রতি গৌরব আনতে না পারে, এবং অন্য লোকেরা যাদের মাধ্যমে সুসমাচার শুনেছে, তাদেরও যেন গৌরব করতে না পারে। তিনি এই ব্যবস্থা করেছেন “যেন কোন মর্ত্ত্য ঈশ্বরের সাক্ষাতে শ্লাঘা না করে।” (১ করিন্থীয় ১:২৮-৩১; ৩:৬, ৭) সত্য, প্রচারকের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও, যে বার্তা তাকে প্রচার করার দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে তার জন্যই একজন ব্যক্তির পরিত্রাণ সম্ভব হয়, যদি সে তাতে বিশ্বাস করে। যারা “উপর হইতে জ্ঞান” লাভ করতে চায়, তারা সেই প্রচারকের বার্তাকে অবজ্ঞা করবে না, যদিও বা তাকে মূর্খ এবং হীন মনে হয়, উৎপীড়িত হয়, এবং গৃহে গৃহে যায়। বরং, মৃদুশীল ব্যক্তিরা একজন রাজ্যের ঘোষণাকারীকে যিহোবার দ্বারা নিযুক্ত প্রচারক, যিনি ঈশ্বরের নামে আসেন, সেই হিসাবে শ্রদ্ধা করবে। প্রচারক, মুখের কথায় অথবা ছাপানো পৃষ্ঠার মাধ্যমে যে বার্তা নিয়ে আসছে, তার প্রতি তারা অত্যন্ত গুরুত্ব দেবে।—যাকোব ৩:১৭; ১ থিষলনীকীয় ২:১৩.

১৩. (ক) যাতনাদণ্ডে বিদ্ধ খ্রীষ্টের প্রচার করাকে যিহূদী এবং গ্রীকরা কিরূপে দেখত? (খ) কোন্‌ দলগুলি থেকে যীশুর অনুগামী হওয়ার জন্য খুব বেশী জনকে ডাকা হয়নি, এবং কেন?

১৩ ঈশ্বরের পথ সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে, পৌল আরও বলেন: “কেননা যিহূদীরা চিহ্ন চায়, এবং গ্রীকেরা জ্ঞানের অন্বেষণ করে; কিন্তু আমরা ক্রুশে হত খ্রীষ্টকে প্রচার করি; তিনি যিহূদীদের কাছে বিঘ্ন ও পরজাতিদের কাছে মূর্খতাস্বরূপ, কিন্তু যিহূদী ও গ্রীক, আহূত সকলের কাছে খ্রীষ্ট ঈশ্বরেরই পরাক্রম ও ঈশ্বরেরই জ্ঞানস্বরূপ। কেননা ঈশ্বরের যে মূর্খতা, তাহা মনুষ্যদের অপেক্ষা অধিক জ্ঞানযুক্ত, এবং ঈশ্বরের যে দুর্ব্বলতা, তাহা মনুষ্যদের অপেক্ষা অধিক সবল। কারণ, হে ভ্রাতৃগণ, তোমাদের আহ্বান দেখ, যেহেতুক মাংস অনুসারে জ্ঞানবান্‌ অনেক নাই, পরাক্রমী অনেক নাই, উচ্চ পদস্থ অনেক নাই; কিন্তু ঈশ্বর জগতীস্থ মূর্খ বিষয় সকল মনোনীত করিলেন, যেন জ্ঞানবান্‌দিগকে লজ্জা দেন; এবং ঈশ্বর জগতের দুর্ব্বল বিষয় সকল মনোনীত করিলেন, যেন শক্তিমন্ত বিষয় সকলকে লজ্জা দেন।”—১ করিন্থীয় ১:২২-২৭; তুলনা করুন যিশাইয় ৫৫:৮, ৯.

১৪. (ক) পরিচয়পত্র দেখতে চাওয়া হলে, যিহোবার সাক্ষীরা কিসের প্রতি ইঙ্গিত করে? (খ) জগতের জ্ঞান প্রদর্শন করে গ্রীকদের খুশী করতে কেন পৌল অস্বীকার করেন?

১৪ যীশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন, যিহূদীরা স্বর্গ থেকে একটি চিহ্ন দেখতে চেয়েছিল। (মথি ১২:৩৮, ৩৯; ১৬:১) কিন্তু যীশু কোন চিহ্ন দেখাতে অস্বীকার করেন। সেইভাবে, বর্তমানে যিহোবার সাক্ষীরা পরিচয় পত্র হিসাবে কোন চিহ্ন দেখায় না। বরং, তারা সুসমাচার প্রচার করার তাদের দায়িত্বভারের প্রতি ইঙ্গিত করে, যে সম্বন্ধে যিশাইয় ৬১:১, ২; মার্ক ১৩:১০; এবং প্রকাশিত বাক্য ২২:১৭-র মত বাইবেল পদগুলিতে লেখা আছে। প্রাচীনকালের গ্রীকরা এই জগতের বিষয়গুলিতে জ্ঞান ও উচ্চ শিক্ষা খুঁজত। যদিও পৌল এই জগতের জ্ঞান সম্বন্ধে শিক্ষিত ছিলেন, তা জাহির করে গ্রীকদের তিনি খুশী করেননি। (প্রেরিত ২২:৩) তিনি সাধারণ লোকেরা কথোপকথনের জন্য যে গ্রীক ভাষা ব্যবহার করত সেই ভাষায় কথা বলতেন ও লিখতেন, গ্রীক সাহিত্যের উৎকৃষ্ট ভাষায় নয়। করিন্থীয়দের পৌল বলেছিলেন: “হে ভ্রাতৃগণ, আমি যখন তোমাদের নিকটে গিয়াছিলাম, তখন গিয়া বাক্যের কি জ্ঞানের উৎকৃষ্টতা অনুসারে তোমাদিগকে যে ঈশ্বরের সাক্ষ্য জ্ঞাত করিতেছিলাম, তাহা নয়। . . . আমার বাক্য ও আমার প্রচার জ্ঞানের প্ররোচক বাক্যযুক্ত ছিল না, বরং আত্মার ও পরাক্রমের প্রদর্শনযুক্ত ছিল, যেন তোমাদের বিশ্বাস মনুষ্যদের জ্ঞানযুক্ত না হইয়া ঈশ্বরের পরাক্রমযুক্ত হয়।”—১ করিন্থীয় ২:১-৫.

১৫. সুসমাচারের উপহাসকদের পিতর কী মনে করিয়ে দেন, আর বর্তমান দিনের পরিস্থিতি কিভাবে নোহর দিনের সঙ্গে তুলনীয়?

১৫ শেষকালে, ঈশ্বরের আগত নতুন জগতের সুসমাচারের এবং এই জগতের আসন্ন ধ্বংসের প্রতি উপহাসকদের প্রেরিত পিতর মনে করিয়ে দেন যে নোহর দিনের জগৎ “জলে আপ্লাবিত হইয়া নষ্ট হইয়াছিল।” (২ পিতর ৩:৩-৭) মহাপ্লাবনের দ্বারা ধ্বংসের সম্মুখীন হয়ে, নোহ কী করেছিলেন? অনেকে তাঁকে শুধুমাত্র একজন জাহাজ-নির্মাতা হিসাবে দেখে। কিন্তু পিতর বলেন যখন ঈশ্বর পুরাতন জগতের উপরে প্লাবন নিয়ে আসেন, তিনি “আর সাত জনের সহিত ধার্ম্মিকতার প্রচারক নোহকে রক্ষা করিলেন।” (২ পিতর ২:৫) তাদের জাগতিক জ্ঞানে, জলপ্লাবনের পূর্বে বসবাসকারী ব্যক্তিরা নিঃসন্দেহে নোহ যা প্রচার করতেন তার প্রতি অবজ্ঞাপূর্ণ উপহাস করেছিল ও তাঁকে মূর্খ, অবাস্তববাদী, এবং অযৌক্তিক বলেছিল। বর্তমানে, সত্য খ্রীষ্টানরা একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়, যেহেতু যীশু আমাদের বংশকে নোহর দিনের বংশের সাথে তুলনা করেছিলেন। যাইহোক, উপহাসকরা থাকা সত্ত্বেও, রাজ্যের সুসমাচার প্রচার শুধুমাত্র কথাবার্তার চাইতে অনেক বেশী কিছু। নোহর প্রচারের মত, এর অর্থ প্রচারক এবং যারা তার কথা শোনে তাদের জন্য পরিত্রাণ!—মথি ২৪:৩৭-৩৯; ১ তীমথিয় ৪:১৬.

‘জ্ঞানবান্‌ হইবার জন্য মূর্খ হওয়া’

১৬. হরমাগিদোনে এই জগতের জ্ঞানের কী হবে, এবং কারা রক্ষা পেয়ে ঈশ্বরের নতুন জগতে যাবে?

১৬ শীঘ্রই, হরমাগিদোনে, যিহোবা ঈশ্বর সমস্ত “জ্ঞানবান্‌দের জ্ঞান” বিনষ্ট করবেন। কিভাবে তাদের নতুন জগৎ-ব্যবস্থা মানবজাতির জন্য ভাল পরিস্থিতি নিয়ে আসবে বলে যারা ভবিষ্যদ্বাণী করে সেই “বিবেচক লোকদের বিবেচনা” যিহোবা একপাশে সরিয়ে রাখবেন। “সর্ব্বশক্তিমান্‌ ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধার্থে” তিনি এই জগতের সমস্ত কুটযুক্তি, দর্শনবাদ, এবং জ্ঞান ভস্মীভূত করবেন। (১ করিন্থীয় ১:১৯; প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪-১৬) এই জগৎ যাকে মূর্খতা বলে—হ্যাঁ, যিহোবার মহিমাময় রাজ্যের সুসমাচার—তা যারা মেনে চলে একমাত্র তারাই সেই যুদ্ধে রক্ষা পেয়ে ঈশ্বরের নতুন জগতে জীবন লাভ করবে।

১৭. যিহোবার সাক্ষীরা কিভাবে ‘মূর্খ’ হয়েছে, এবং ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারকরা কী করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ?

১৭ যিহোবার সাক্ষীরা, তাঁর আত্মার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে, জগৎ যাকে মূর্খতা বলে তা প্রচার করতে লজ্জিত নয়। জাগতিক-জ্ঞানী হওয়ার চেষ্টা করার পরিবর্তে তারা ‘মূর্খ’ হয়েছে? কিভাবে? রাজ্যের প্রচার কাজ করে যাতে তারা জ্ঞানবান্‌ হয়, যেমন পৌল লিখেছিলেন: “তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যদি আপনাকে এই যুগে জ্ঞানবান্‌ বলিয়া মনে করে, তবে সে জ্ঞানবান্‌ হইবার জন্য মূর্খ হউক।” (১ করিন্থীয় ৩:১৮-২০) যিহোবার সুসমাচার প্রচারকেরা তাদের বার্তার জীবন-রক্ষাকারী মূল্য সম্বন্ধে জানে এবং ক্রমাগত তা প্রচার করে যাবে হরমাগিদোনে এই জগৎ ও তার জ্ঞানের শেষ না হওয়া পর্যন্ত। শীঘ্রই যিহোবা ঈশ্বর নিজের সার্বভৌমত্বকে মহিমান্বিত করবেন এবং যারা যা প্রচার হচ্ছে তার “মূর্খতা” বিশ্বাস করে ও সেই অনুযায়ী কাজ করে তাদের অনন্ত জীবন দান করবেন। (w92 9/15)

[পাদটীকাগুলো]

a প্রাচীন গ্রীসের সমস্ত জ্ঞানী ব্যক্তিদের দর্শনবাদমূলক বাগ্‌বিতণ্ডা এবং অন্বেষণ সত্ত্বেও, তাদের লেখা থেকে দেখা যায় যে আশার কোন প্রকৃত ভিত্তি তারা পায়নি। অধ্যাপক জে. আর. এস্‌ স্টেরেট এবং স্যামূয়েল অ্যাঙ্গাস্‌ উল্লেখ করেন: “কোন সাহিত্যে এত অধিক জীবনের দুঃখকষ্ট সম্বন্ধে মর্মস্পর্শী বিলাপ, ভালবাসার ব্যর্থতা, আশার প্রবঞ্চনা, এবং মৃত্যুর নির্দয়তা সম্বন্ধে লেখা নেই।”—ফাঙ্ক অ্যাণ্ড ওয়াগনেলস্‌ নিউ “স্ট্যাণ্ডার্ড” বাইবেল ডিক্‌শনারী, ১৯৩৬, পৃষ্ঠা ৩১৩.

আপনার উত্তরগুলি কী?

▫ কোন্‌ দুই প্রকারের জ্ঞান আছে?

▫ জগতের জ্ঞানের মৌলিক ত্রুটি কী?

▫ কেন সুসমাচার প্রচার করা সবচেয়ে উপযোগী কাজ?

▫ শীঘ্রই জগতের সমস্ত জ্ঞানের কী হবে?

▫ জগৎ যাকে মূর্খতা বলে তা প্রচার করতে যিহোবার সাক্ষীরা কেন লজ্জিত নয়?

[২০ পৃষ্ঠার চিত্র]

This picture is missing in vernacular.

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার