ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
  • যিহোবার অনুস্মারকগুলোকে আপনার চিত্তের হর্ষজনক করে তুলুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার অনুস্মারকগুলোকে আপনার চিত্তের হর্ষজনক করে তুলুন
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রার্থনার মাধ্যমে নির্ভরতা গড়ে তুলুন
  • ঈশ্বরের অনুস্মারকগুলো নিয়ে ধ্যান করুন
  • উপাসনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কাজগুলোর মাধ্যমে নির্ভরতা গড়ে তুলুন
  • যিহোবার অনুস্মারকগুলো নির্ভরযোগ্য
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি যিহোবার সাক্ষ্যকলাপ অতিশয় ভালবাসেন?
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার অনুস্মারকগুলি কি আমাদের আধ্যাত্মিক দিক দিয়ে জাগ্রত করছে?
    ১৯৯৫ আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা
  • সবসময় যিহোবার উপর নির্ভর করুন!
    ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬

যিহোবার অনুস্মারকগুলোকে আপনার চিত্তের হর্ষজনক করে তুলুন

“তোমার সাক্ষ্যকলাপ আমি চিরতরে অধিকার করিয়াছি।”—গীত. ১১৯:১১১.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

যিহোবার অনুস্মারকগুলোতে আনন্দ করার কোন কারণ আমাদের রয়েছে?

কীভাবে আমরা যিহোবার ওপর নির্ভরতা গড়ে তুলতে পারি?

কেন রাজ্যের কাজে ব্যস্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ?

১. (ক) অনুস্মারকের প্রতি মানুষ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং কেন? (খ) কীভাবে অহংকার পরামর্শের প্রতি একজন ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করতে পারে?

নির্দেশনার প্রতি মানুষ বিভিন্ন উপায়ে সাড়া দিয়ে থাকে। কর্তৃত্বে রয়েছে এমন কারো কাছ থেকে প্রাপ্ত কোনো অনুস্মারক হয়তো সদয়ভাবে গ্রহণ করা হয়, অন্যদিকে কোনো সঙ্গীসাথি অথবা নিম্নপদস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শকে হয়তো সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়। কেউ কেউ যখন শাসন বা পরামর্শ লাভ করে, তখন তারা হয়তো দুঃখ পেতে ও হতাশ হয়ে পড়তে এবং অস্বস্তি বোধ করতে পারে। কিন্তু, অন্যেরা হয়তো অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারে, আস্থাশীল হয়ে উঠতে পারে এবং আরও ভালো করতে চায়। এইরকম পার্থক্যের কারণ কী? একটা বিষয় হল অহংকার। সত্যিই, গর্বিত মনোভাব একজন ব্যক্তির বিচারবুদ্ধি দুর্বল করে দিতে পারে আর এতে তিনি পরামর্শ উপেক্ষা করেন এবং মূল্যবান নির্দেশনা থেকে বঞ্চিত হন।—হিতো. ১৬:১৮.

২. কেন সত্য খ্রিস্টানরা ঈশ্বরের বাক্য থেকে প্রাপ্ত উপদেশকে মূল্যবান বলে গণ্য করে?

২ অন্যদিকে, সত্য খ্রিস্টানরা উপকারী পরামর্শকে মূল্যবান বলে গণ্য করে, বিশেষভাবে তা যখন ঈশ্বরের বাক্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়। যিহোবার অনুস্মারকগুলো আমাদেরকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে, বস্তুবাদিতা, যৌন অনৈতিকতা এবং নেশাকর ওষুধ অথবা মদ্যজাতীয় পানীয়ের অপব্যবহারের মতো ফাঁদ এড়িয়ে চলার জন্য শিক্ষা দেয় ও সাহায্য করে। (হিতো. ২০:১; ২ করি. ৭:১; ১ থিষল. ৪:৩-৫; ১ তীম. ৬:৬-১১) এ ছাড়া, আমরা “চিত্তের সুখে” আনন্দ করি, যে-সুখ ঈশ্বরের অনুস্মারকগুলো মেনে চলার মাধ্যমে লাভ করা যায়।—যিশা. ৬৫:১৪.

৩. গীতরচকের কোন মনোভাব অনুকরণ করা আমাদের জন্য উত্তম হবে?

৩ আমাদের স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে মূল্যবান সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য আমাদের অবশ্যই ক্রমাগত নিজেদের জীবনে যিহোবার বিজ্ঞ নির্দেশনা কাজে লাগাতে হবে। এটা কতই-না উত্তম হবে, যদি আমাদের মনোভাব সেই গীতরচকের মতো হয়, যিনি লিখেছিলেন: “তোমার সাক্ষ্যকলাপ আমি চিরতরে অধিকার করিয়াছি, কারণ সে সকল আমার চিত্তের হর্ষজনক”! (গীত. ১১৯:১১১) একইভাবে আমরাও কি যিহোবার আজ্ঞাগুলোতে আনন্দ করি, নাকি মাঝে মাঝে সেগুলোকে দুর্বহ বলে মনে করি? এমনকী যদিও কোনো কোনো সময় কিছু পরামর্শে আমরা বিরক্ত হই, তবুও আমাদের হতাশ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা যিহোবার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজ্ঞার ওপর দৃঢ় নির্ভরতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে পারি! আসুন আমরা তিনটে উপায় বিবেচনা করি।

প্রার্থনার মাধ্যমে নির্ভরতা গড়ে তুলুন

৪. একটা বিষয় কী, যা দায়ূদের জীবনে অবিচল ছিল?

৪ যদিও রাজা দায়ূদের জীবনে অনেক উত্থান-পতন ছিল কিন্তু একটা বিষয় অবিচল ছিল—সৃষ্টিকর্তার ওপর তাঁর পূর্ণ নির্ভরতা। তিনি বলেছিলেন: “সদাপ্রভু, তোমারই দিকে আমি নিজ প্রাণ উত্তোলন করি। হে আমার ঈশ্বর, আমি তোমারই শরণ লইয়াছি।” (গীত. ২৫:১, ২) কী দায়ূদকে তাঁর স্বর্গীয় পিতার শরণ লইতে বা তাঁর ওপর এইরকম নির্ভরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল?

৫, ৬. যিহোবার সঙ্গে দায়ূদের সম্পর্ক সম্বন্ধে ঈশ্বরের বাক্য আমাদের কী বলে?

৫ অনেক লোক কেবল সেই সময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে, যখন তারা চরম দুর্দশার মধ্যে পড়ে। কোনো বন্ধু অথবা আত্মীয় যদি কেবল টাকাপয়সা অথবা ব্যক্তিগত সাহায্যের প্রয়োজন হলেই আপনার সঙ্গে কথা বলে, তাহলে আপনার কেমন লাগবে? এক সময় আপনি হয়তো তার মনোভাব নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করবেন। কিন্তু, দায়ূদ এইরকম ছিলেন না। যিহোবার সঙ্গে তার সম্পর্ক সারাজীবন ধরে—সুসময় এবং দুঃসময়ে—ঈশ্বরের প্রতি তার বিশ্বাস এবং প্রেমকে প্রকাশ করেছিল।—গীত. ৪০:৮.

৬ যিহোবার প্রতি দায়ূদের প্রশংসা এবং ধন্যবাদ বাক্য লক্ষ করুন: “হে সদাপ্রভু, আমাদের প্রভু, সমস্ত পৃথিবীতে তোমার নাম কেমন মহিমান্বিত। তুমি আকাশমণ্ডলের ঊর্দ্ধেও তোমার প্রভা সংস্থাপন করিয়াছ।” (গীত. ৮:১) তার স্বর্গীয় পিতার সঙ্গে দায়ূদের যে-অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল, তা কি আপনি উপলব্ধি করতে পারছেন না? ঈশ্বরের মহত্ত্ব এবং চমৎকারিত্বের প্রতি দায়ূদের উপলব্ধি তাকে “সমস্ত দিন” যিহোবার প্রশংসা করতে অনুপ্রাণিত করেছিল।—গীত. ৩৫:২৮.

৭. প্রার্থনায় ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়ার মাধ্যমে আমরা কীভাবে উপকার লাভ করি?

৭ আমরা যদি যিহোবার ওপর নির্ভরতা গড়ে তুলতে চাই, তাহলে দায়ূদের মতো আমাদেরও নিয়মিতভাবে তাঁর সঙ্গে ভাববিনিময় করতে হবে। বাইবেল বলে: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) প্রার্থনায় ঈশ্বরের নিকটবর্তী হওয়াও একটা গুরুত্বপূর্ণ উপায়, যেটার মাধ্যমে আমরা পবিত্র আত্মা লাভ করতে পারি।—পড়ুন, ১ যোহন ৩:২২.

৮. কেন আমাদের পুনরাবৃত্ত প্রার্থনা করা এড়িয়ে চলা উচিত?

৮ আপনি যখন প্রার্থনা করেন, তখন আপনি কি সাধারণত একই উক্তি পুনরাবৃত্তি করেন কিংবা একই অভিব্যক্তি বার বার ব্যবহার করেন? যদি তা-ই হয়, তাহলে প্রার্থনা করার আগে, আপনি যা বলতে চান, তা নিয়ে চিন্তা করার জন্য কয়েক মিনিট সময় নিন। কোনো বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে দেখা হলে আমরা যদি প্রতি বার একই কথা বলি, তাহলে সেটা কি তার কাছে ভালো লাগবে? তিনি হয়তো আমাদের উপেক্ষা করতে শুরু করবেন। অবশ্যই, যিহোবা কখনো তাঁর কোনো অনুগত দাসের আন্তরিক প্রার্থনা উপেক্ষা করেন না। কিন্তু, তাঁর সঙ্গে ভাববিনিময় করার সময় আমাদের গতানুগতিক বাক্য এড়িয়ে চলা উচিত।

৯, ১০. (ক) আমাদের প্রার্থনাগুলোতে আমরা কী অন্তর্ভুক্ত করতে পারি? (খ) কী আমাদেরকে আন্তরিক প্রার্থনা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে?

৯ স্পষ্টতই, আমরা যদি ঈশ্বরের নিকটবর্তী হতে চাই, তাহলে আমাদের প্রার্থনা আন্তরিকতাহীন হতে পারবে না। আমরা যত বেশি হৃদয় থেকে প্রার্থনা করব, তত বেশি তাঁর নিকটবর্তী হতে এবং তাঁর ওপর নির্ভর করতে পারব। কিন্তু, আমাদের প্রার্থনায় কী কী বলা উচিত? ঈশ্বরের বাক্য উত্তর দেয়: “সর্ব্ববিষয়ে প্রার্থনা ও বিনতি দ্বারা ধন্যবাদ সহকারে তোমাদের যাচ্ঞা সকল ঈশ্বরকে জ্ঞাত কর।” (ফিলি. ৪:৬) প্রকৃত বিষয়টা হল, তাঁর একজন দাস হিসেবে ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে বা আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন যেকোনো কিছুই প্রার্থনার এক উপযুক্ত বিষয়।

১০ সেই বিশ্বস্ত পুরুষ ও নারীদের বাক্যগুলো বিবেচনা করা কার্যকরী, যাদের প্রার্থনা বাইবেলে লিপিবদ্ধ রয়েছে। (১ শমূ. ১:১০, ১১; প্রেরিত ৪:২৪-৩১) গীতসংহিতা বইয়ের মধ্যে আন্তরিক প্রার্থনা এবং যিহোবার উদ্দেশে গানের এক সংগ্রহ রয়েছে। এই প্রার্থনা এবং গানগুলোতে, নিদারুণ যন্ত্রণা থেকে শুরু করে নির্মল আনন্দ পর্যন্ত মানুষের সমস্ত অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। অনুগত ব্যক্তিদের এই ধরনের অভিব্যক্তি বিশ্লেষণ করা আমাদেরকে যিহোবার কাছে অর্থপূর্ণ প্রার্থনা করার ক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে।

ঈশ্বরের অনুস্মারকগুলো নিয়ে ধ্যান করুন

১১. কেন আমাদের ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপদেশ নিয়ে ধ্যান করতে হবে?

১১ দায়ূদ ঘোষণা করেছিলেন: “সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিদ্ধ, প্রাণের স্বাস্থ্যজনক; সদাপ্রভুর সাক্ষ্য বিশ্বসনীয়, অল্পবুদ্ধির জ্ঞানদায়ক।” (গীত. ১৯:৭) হ্যাঁ, এমনকী আমরা যদি অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন বা অনভিজ্ঞ হয়ে থাকি, তাহলে আমরা ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো পালন করার মাধ্যমে জ্ঞানী বা বিজ্ঞ হতে পারি। কিন্তু, কিছু শাস্ত্রীয় উপদেশ থেকে আমরা যদি পূর্ণরূপে উপকার লাভ করতে চাই, তাহলে সেগুলো নিয়ে ধ্যান করা প্রয়োজন। স্কুলে অথবা চাকরির জায়গায় চাপের মধ্যে নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখা, রক্ত সম্বন্ধে ঈশ্বরের মানকে সমর্থন করা, খ্রিস্টীয় নিরপেক্ষতা বজায় রাখা এবং পোশাক-আশাক ও সাজগোজের ব্যাপারে বাইবেলের নীতিগুলো কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে তা বলা যেতে পারে। এই ধরনের বিষয়ে ঈশ্বরের দৃষ্টিভঙ্গি জানা আমাদেরকে সমস্যাগুলোর জন্য প্রস্তুত থাকতে সাহায্য করবে। তাহলে আমরা স্থির করতে পারব যে, এই পরিস্থিতিগুলো দেখা দিলে কী করা উচিত। আগে থেকেই এভাবে চিন্তা করা এবং আগাম প্রস্তুতি আমাদেরকে অনেক মর্মপীড়া থেকে রক্ষা করতে পারে।—হিতো. ১৫:২৮.

১২. কী নিয়ে চিন্তা করা আমাদেরকে ঈশ্বরের অনুস্মারক রক্ষা করার জন্য সাহায্য করতে পারে?

১২ ঈশ্বর যা প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেটা বাস্তবায়িত হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার সময় আমাদের জীবনধারা কি দেখায় যে, আমরা আধ্যাত্মিকভাবে সজাগ আছি? উদাহরণ স্বরূপ, আমরা কি সত্যিই বিশ্বাস করি যে, শীঘ্র মহতী বাবিল ধ্বংস হয়ে যাবে? পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তজীবনের মতো ভাবী আশীর্বাদগুলো কি এখনও আমাদের কাছে সেই সময়ের মতো বাস্তব, যখন আমরা সেগুলো প্রথম শিখেছিলাম? ব্যক্তিগত বিষয়গুলোকে জীবনে প্রাধান্য লাভ করতে দেওয়ার পরিবর্তে আমরা কি পরিচর্যার জন্য আমাদের উদ্যোগ বজায় রেখেছি? পুনরুত্থানের আশা, যিহোবার নামের পবিত্রীকরণ এবং তাঁর সার্বভৌমত্বের সত্যতা প্রতিপাদন সম্বন্ধে কী বলা যায়? এগুলো কি এখনও আমাদের কাছে অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়? এই ধরনের প্রশ্ন নিয়ে ধ্যান করা হয়তো আমাদেরকে গীতরচকের এই কথা অনুযায়ী কাজ করার জন্য সাহায্য করতে পারে যে, ঈশ্বরের অনুস্মারক বা “সাক্ষ্যকলাপ . . . চিরতরে অধিকার” করুন।—গীত. ১১৯:১১১.

১৩. কেন প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের জন্য কিছু বিষয় বোঝা কঠিন ছিল? একটা উদাহরণ দিন।

১৩ বাইবেলে উল্লেখিত কিছু বিষয় হয়তো এখন পুরোপুরি বোঝা যায় না কারণ সেগুলো স্পষ্ট করার ব্যাপারে যিহোবার উপযুক্ত সময় এখনও হয়নি। যিশু বার বার তাঁর প্রেরিতদের বলেছিলেন যে, তাঁকে কষ্টভোগ করতে এবং মৃত্যুবরণ করতে হবে। (পড়ুন, মথি ১২:৪০; ১৬:২১.) কিন্তু, তিনি কী বুঝিয়েছিলেন, সেটা প্রেরিতরা বুঝতে পারেনি। তারা সেই সময় এর অর্থ বুঝতে পেরেছিল, যখন তাঁর মৃত্যু এবং পুনরুত্থানের পর তিনি মানবদেহ ধারণ করে বেশ কয়েক জন শিষ্যের সামনে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং ‘তাঁহাদের বুদ্ধিদ্বার খুলিয়া দিয়াছিলেন, যেন তাঁহারা শাস্ত্র বুঝিতে পারে।’ (লূক ২৪:৪৪-৪৬; প্রেরিত ১:৩) একইভাবে, ৩৩ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিনে খ্রিস্টের অনুসারীদের ওপর পবিত্র আত্মা বর্ষিত না হওয়া পর্যন্ত তারা বুঝতে পারেনি যে, ঈশ্বরের রাজ্যকে স্বর্গে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।—প্রেরিত ১:৬-৮.

১৪. বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, শেষকাল সম্বন্ধে ভুল ধারণা থাকা সত্ত্বেও, অনেক ভাই কোন উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছিল?

১৪ একইভাবে, বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে, সত্য খ্রিস্টানদের মধ্যে ‘শেষ কাল’ সম্বন্ধে বেশ কয়েকটা ভুল প্রত্যাশা ছিল। (২ তীম. ৩:১) উদাহরণ স্বরূপ, ১৯১৪ সালে কেউ কেউ মনে করেছিল যে, তাদেরকে শীঘ্র স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে। তাদের আশা যখন সঙ্গেসঙ্গে পূর্ণ হয়নি, তখন শাস্ত্র সম্বন্ধে পুনরায় আন্তরিকভাবে পরীক্ষা করা এটা বুঝতে সাহায্য করেছিল যে, সামনে এক ব্যাপক প্রচার অভিযানের কাজ বাকি আছে। (মার্ক ১৩:১০) তাই, ১৯২২ সালে জে. এফ. রাদারফোর্ড, যিনি সেই সময় প্রচার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইওর সিডার পয়েন্টে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থিত ব্যক্তিদের বলেছিলেন: “দেখুন, রাজা রাজত্ব করছেন! জনসাধারণ্যে তাঁর সম্বন্ধে ঘোষণা করার জন্য আপনারাই হচ্ছেন তাঁর প্রতিনিধি। তাই, রাজা এবং তাঁর রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করুন, ঘোষণা করুন, ঘোষণা করুন।” সেই সময়ের পর থেকে “রাজ্যের সুসমাচার” সম্বন্ধে ঘোষণা করা আধুনিক দিনের যিহোবার দাসদের এক শনাক্তকারী চিহ্ন হয়ে উঠেছে।—মথি ৪:২৩; ২৪:১৪.

১৫. ঈশ্বর তাঁর লোকেদের সঙ্গে যেভাবে আচরণ করেছেন, সেটা নিয়ে ধ্যান করা থেকে আমরা কীভাবে উপকার লাভ করি?

১৫ অতীতে এবং বর্তমানে যিহোবা যে-অপূর্ব উপায়ে তাঁর লোকেদের সঙ্গে আচরণ করেছেন, তা নিয়ে ধ্যান করার মাধ্যমে আমরা, ভবিষ্যতে তাঁর ইচ্ছা এবং উদ্দেশ্য সম্পাদন করার বিষয়ে তাঁর যে-ক্ষমতা রয়েছে, সেটার ওপর আরও বেশি আস্থা গড়ে তুলতে পারি। একইসঙ্গে, ঈশ্বরের অনুস্মারকগুলো সেইসমস্ত ভবিষ্যদ্‌বাণী আমাদের মনে ও হৃদয়ে স্পষ্ট রাখতে সাহায্য করে, যেগুলো পরিপূর্ণ হওয়া বাকি আছে। আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, এটা আমাদেরকে তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর নির্ভরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

উপাসনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কাজগুলোর মাধ্যমে নির্ভরতা গড়ে তুলুন

১৬. পরিচর্যায় সক্রিয় থাকা কোন আশীর্বাদগুলো নিয়ে আসে?

১৬ আমাদের ঈশ্বর যিহোবা হলেন কর্মশক্তিসম্পন্ন এক ঈশ্বর। “হে যাঃ, তোমার তুল্য বিক্রমী কে?” গীতরচক জিজ্ঞেস করেছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন: “তোমার হস্ত শক্তিমান্‌, তোমার দক্ষিণ হস্ত উচ্চ।” (গীত. ৮৯:৮, ১৩) এর সঙ্গে মিল রেখে, রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যে-প্রচেষ্টা করি, সেটাকে যিহোবা মূল্যবান বলে গণ্য করেন এবং তাতে আশীর্বাদ করেন। তিনি লক্ষ রাখেন যেন তাঁর দাসেরা—নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলে—বসে বসে “আলস্যের খাদ্য” না খায়। (হিতো. ৩১:২৭) আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে অনুকরণ করে আমরাও ঈশতান্ত্রিক কাজগুলোতে ব্যস্ত থাকি। সর্বান্তকরণে ঈশ্বরের সেবা করা ব্যক্তিগতভাবে আমাদের জন্য পরিতৃপ্তিদায়ক আর আমাদের পরিচর্যায় আশীর্বাদ করা যিহোবার জন্য প্রচুর আনন্দ নিয়ে আসে।—পড়ুন, গীতসংহিতা ৬২:১২.

১৭, ১৮. কেন আমরা বলতে পারি যে, বিশ্বাসের কাজগুলো আমাদেরকে যিহোবার পরামর্শের প্রতি নির্ভরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে? একটা উদাহরণ দিন।

১৭ বিশ্বাসের কাজগুলো কীভাবে আমাদেরকে যিহোবার ওপর নির্ভরতা গড়ে তুলতে সাহায্য করে? ইস্রায়েলের প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করার শাস্ত্রীয় বিবরণ বিবেচনা করে দেখুন। যিহোবা যাজকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন, যেন তারা যর্দন নদীর মধ্যে দিয়ে নিয়ম সিন্দুক বহন করে নিয়ে যায়। কিন্তু, লোকেরা যখন নদীর কাছে এগিয়ে যায়, তখন তারা দেখে যে, বসন্তকালীন বৃষ্টির কারণে নদীর জল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ইস্রায়েলীয়রা কী করবে? প্লাবনের জল কমে না যাওয়া পর্যন্ত কি নদীর তীরে শিবির স্থাপন করে কয়েক সপ্তাহ কিংবা তারও বেশি সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? না, তারা যিহোবার ওপর পূর্ণ নির্ভরতা রেখেছিল এবং তাঁর নির্দেশনা পালন করেছিল। ফল কী হয়েছিল? বিবরণ বলে: “সাক্ষ্য-সিন্দুক বহনকারী পুরোহিতেরা যর্দনের কাছে পৌঁছাবার পর যেই তাঁরা জলে পা দিলেন অমনি . . . জলের স্রোত থেমে গেল। . . . যতক্ষণ পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েলীয় যর্দন নদী পার না হল ততক্ষণ পর্যন্ত . . . পুরোহিতেরা যর্দন নদীতে শুকনা মাটির উপর দাঁড়িয়ে রইলেন।” (যিহো. ৩:১২-১৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন) কল্পনা করে দেখুন যে, জলের প্রচণ্ড গতি থেমে যেতে দেখে তারা নিশ্চয়ই কত আনন্দিতই না হয়েছিল! সত্যিই, যিহোবার ওপর ইস্রায়েলীয়দের বিশ্বাস শক্তিশালী হয়েছিল কারণ তারা তাঁর নির্দেশনাগুলোর ওপর নির্ভর করেছিল।

১৮ এটা ঠিক যে, বর্তমানে যিহোবা তাঁর লোকেদের জন্য এইরকম অলৌকিক কাজ করেন না কিন্তু তিনি তাদের বিশ্বাসের কাজের জন্য আশীর্বাদ করেন। ঈশ্বরের সক্রিয় শক্তি তাদেরকে পৃথিবীব্যাপী রাজ্যের বার্তা প্রচার করার দায়িত্ব পালন করার জন্য শক্তি প্রদান করে। আর যিহোবার সর্বপ্রধান সাক্ষি, পুনরুত্থিত খ্রিস্ট যিশু তাঁর শিষ্যদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, তিনি তাদেরকে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে সমর্থন করবেন: “অতএব তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; . . . আমিই যুগান্ত পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।” (মথি ২৮:১৯, ২০) আগে লজ্জা অথবা ভয় পেত এমন অনেক সাক্ষি ব্যক্তিগতভাবে এই প্রমাণ পেয়েছে যে, ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা তাদেরকে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় অপরিচিত লোকেদের সঙ্গে কথা বলার জন্য সাহস প্রদান করেছে।—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:৪৬; ২ করিন্থীয় ৪:৭.a

১৯. আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো সত্ত্বেও, আমাদের কোন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে?

১৯ অসুস্থতা অথবা বার্ধক্যের কারণে কিছু ভাই এবং বোনের হয়তো অনেক শারীরিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু, তারা নিশ্চিত থাকতে পারে যে, “করুণা-সমষ্টির পিতা এবং সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” প্রত্যেক সত্য খ্রিস্টানের পরিস্থিতি বোঝেন। (২ করি. ১:৩) রাজ্যের বিষয়গুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা যে-সমস্ত কাজ করি, সেগুলোকে তিনি মূল্যবান বলে গণ্য করেন। আমাদের সবার মনে রাখতে হবে যে, খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যের ব্যবস্থার ওপর আমাদের বিশ্বাসই মূলত আমাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী বিভিন্ন কাজ করার সময় আমাদের প্রাণ রক্ষা করে।—ইব্রীয় ১০:৩৯.

২০, ২১. কিছু উপায় কী, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা যিহোবার ওপর নির্ভরতা প্রকাশ করতে পারি?

২০ আমাদের উপাসনার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, যতটা সম্ভব পূর্ণরূপে আমাদের সময়, শক্তি এবং বস্তুগত সম্পদ ব্যবহার করা। হ্যাঁ, আমরা সমস্ত হৃদয় দিয়ে ‘সুসমাচার-প্রচারকের কার্য্য করিতে’ চাই। (২ তীম. ৪:৫) সত্যি বলতে কী, তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত কারণ এটা অন্যদেরকে “সত্যের তত্ত্বজ্ঞান” বা সঠিক জ্ঞান লাভ করতে সাহায্য করে। (১ তীম. ২:৪) স্পষ্টতই, যিহোবাকে সম্মান এবং প্রশংসা করা আমাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে ধনবান করে। (হিতো. ১০:২২) আর এটা আমাদেরকে আমাদের সৃষ্টিকর্তার ওপর নির্ভরতার এক অটুট বন্ধন গড়ে তুলতে সাহায্য করে।—রোমীয় ৮:৩৫-৩৯.

২১ আমরা যেমন আলোচনা করেছি যে, বিজ্ঞ নির্দেশনার জন্য যিহোবার ওপর নির্ভর করার বিষয়টা এমনি এমনিই গড়ে ওঠে না; সেই নির্ভরতা গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। তাই, যেকোনোভাবেই হোক প্রার্থনার মাধ্যমে যিহোবার ওপর ভরসা রাখুন। অতীতে যিহোবা তাঁর ইচ্ছা সম্পাদন করার জন্য কীভাবে কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতে কীভাবে করবেন, তা নিয়ে ধ্যান করুন। আর উপাসনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কাজগুলোর মাধ্যমে ক্রমাগত যিহোবার ওপর নির্ভরতা গড়ে তুলুন। সত্যিই, যিহোবার অনুস্মারকগুলো চিরকাল স্থায়ী হবে। আপনিও হতে পারেন!

[পাদটীকা], [পাদটীকাগুলো]

a ২ করিন্থীয় ৪:৭ (বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারসন): “এই ধন মাটির পাত্রে রাখা হয়েছে, আর আমরাই সেই মাটির পাত্র। মাটির পাত্রে তা রাখা হয়েছে যেন লোকে বুঝতে পারে যে, এই অসাধারণ মহাশক্তি আমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসে নি বরং ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে।”

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোশূয়ের দিনের যিহোবার লোকেদের মতো আপনি কি একই নির্ভরতা দেখাবেন? (১৭, ১৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার