ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w14 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
  • ‘অনেক ক্লেশ’ সত্ত্বেও অনুগতভাবে ঈশ্বরের সেবা করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ‘অনেক ক্লেশ’ সত্ত্বেও অনুগতভাবে ঈশ্বরের সেবা করুন
  • ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • লুস্ত্রা নগরে ক্লেশ
  • সরাসরি আক্রমণ
  • পরোক্ষ আক্রমণ
  • ক্লেশের জন্য এখনই প্রস্তুত হোন
  • সৎকর্ম করতে করতে নিরুৎসাহ হবেন না
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা আমাদের সমস্ত ক্লেশের মধ্যে সান্ত্বনা প্রদান করেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • আপনি যা দেখছেন তার বাইরেও দেখার চেষ্টা করুন!
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘তোমরা একে অন্যকে শক্তিশালী’ করে চলো
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
আরও দেখুন
২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w14 ৯/১৫ পৃষ্ঠা ১২-১৬
একজন বোন অনেক রাতে বাইবেল পড়ছন এবং ধ্যান করছন

‘অনেক ক্লেশ’ সত্ত্বেও অনুগতভাবে ঈশ্বরের সেবা করুন

“অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়া আমাদিগকে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে হইবে।”—প্রেরিত ১৪:২২.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • আমাদের ক্লেশের উৎস কে?

  • কীভাবে আমরা তাড়না সহ্য করার এবং নিরুৎসাহিতা কাটিয়ে ওঠার জন্য প্রস্তুত হতে পারি?

  • যারা ক্লেশ সহ্য করে, তাদের জন্য কোন পুরস্কার রয়েছে?

১. কেন ঈশ্বরের দাসেরা “অনেক ক্লেশের” মুখোমুখি হবে?

অনন্তজীবনের উপহার লাভ করার আগে আমাদের যে “অনেক ক্লেশের” মুখোমুখি হতে হবে, এই বিষয়টা কি আমাদের অবাক করে? সম্ভবত না। আমরা যত দীর্ঘসময় ধরেই সত্যে থাকি না কেন, আমরা সকলেই পরীক্ষা ভোগ করি। কেন? একটা কারণ হল আমরা শয়তানের জগতে বাস করছি।—প্রকা. ১২:১২.

২. (ক) সমস্ত মানুষকে প্রভাবিত করে এমন সমস্যাগুলো ছাড়াও খ্রিস্টানদের কোন ক্লেশের মুখোমুখি হতে হয়? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।) (খ) তাড়নার উৎস কে আর আমরা কীভাবে সেটা জানি?

২ সমস্ত অসিদ্ধ মানুষই জীবনে বিভিন্নরকম সমস্যা ভোগ করে। কিন্তু, খ্রিস্টানরা আরও বেশি ক্লেশের মুখোমুখি হয়। (১ করি. ১০:১৩) তারা যে-ধরনের ক্লেশের মুখোমুখি হয়, সেগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে চরম তাড়না, কারণ তারা ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। যিশু তাঁর অনুসারীদের বলেছিলেন: “‘দাস আপন প্রভু হইতে বড় নয়;’ লোকে যখন আমাকে তাড়না করিয়াছে, তখন তোমাদিগকেও তাড়না করিবে।” (যোহন ১৫:২০) এই ধরনের তাড়নার উৎস কে? সেই উৎস হল শয়তান। বাইবেল তাকে ‘গর্জ্জনকারী সিংহ’ হিসেবে বর্ণনা করে, যে ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কাকে “গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে।” (১ পিতর ৫:৮) যিহোবার প্রতি আমাদের নীতিনিষ্ঠা ভেঙে ফেলার জন্য শয়তান যেকোনো কিছু করার চেষ্টা করবে। আসুন আমরা দেখি, প্রেরিত পৌলের প্রতি কী ঘটেছিল।

লুস্ত্রা নগরে ক্লেশ

৩-৫. (ক) লুস্ত্রায় পৌল কোন ক্লেশের মুখোমুখি হয়েছিলেন? (খ) ক্লেশ সম্বন্ধে তার উক্তি কীভাবে অন্যদের শক্তিশালী করার মতো ছিল?

৩ পৌল ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থাকার কারণে অনেক বার তাড়না ভোগ করেছিলেন। (২ করি. ১১:২৩-২৭) একবার, লুস্ত্রা নগরে পৌল এমন একজন ব্যক্তিকে সুস্থ করেছিলেন, যিনি কখনো হাঁটতে পারতেন না। এই অলৌকিক কাজ দেখে লোকেরা পৌল ও বার্ণবাকে দেবতা বলে মনে করেছিল। তখন সেই দু-জনকে জনতার কাছে অনুরোধ করতে হয়েছিল, যেন তারা তাদেরকে উপাসনা না করে! তবে, শীঘ্রই সেখানে যিহুদি ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত হয়েছিল এবং পৌল ও বার্ণবার সম্বন্ধে বাজে কথা বলতে শুরু করেছিল। জনতা তাদের মিথ্যা কথা বিশ্বাস করেছিল। ফল স্বরূপ, তারা পৌলকে ততক্ষণ পর্যন্ত পাথর মারতে থাকে, যতক্ষণ না তারা মনে করে, তিনি মারা গিয়েছেন।—প্রেরিত ১৪:৮-১৯.

৪ দর্বী নগর পরিদর্শন করার পর, পৌল ও বার্ণবা “লুস্ত্রায়, ইকনিয়ে ও আন্তিয়খিয়ায় ফিরিয়া গেলেন; যাইতে যাইতে তাঁহারা শিষ্যদের মন সুস্থির করিলেন, এবং তাহাদিগকে আশ্বাস দিতে লাগিলেন, যেন তাহারা বিশ্বাসে স্থির থাকে, আর কহিলেন, অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়া আমাদিগকে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে হইবে।” (প্রেরিত ১৪:২১, ২২) “অনেক ক্লেশের” মুখোমুখি হওয়ার চিন্তাভাবনাকে উৎসাহজনক বলে মনে হয় না। তাহলে কীভাবে পৌল ও বার্ণবা, আরও ক্লেশের মুখোমুখি হতে হবে এই বিষয়টা বলার মাধ্যমে “শিষ্যদের মন সুস্থির” বা শক্তিশালী ‘করিতে’ পেরেছিলেন?

৫ পৌলের কথার মধ্যেই আমরা সেই উত্তর খুঁজে পাই। পৌল শুধু এভাবে বলেননি: “আমাদের অনেক ক্লেশ সহ্য করতে হবে।” বরং তিনি বলেছিলেন: “অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়া আমাদিগকে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করিতে হইবে।” তাই, পৌল সেই চমৎকার পুরস্কারের ওপর জোর দিয়েছিলেন, যা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে এমন লোকেরা লাভ করবে। এই পুরস্কার কোনো স্বপ্ন নয়। যিশু বলেছিলেন: “যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।”—মথি ১০:২২.

৬. যারা ক্লেশ সহ্য করবে, তারা কোন পুরস্কার লাভ করবে?

৬ আমরা যদি ক্লেশ সহ্য করি, তাহলে আমরা একটা পুরস্কার লাভ করব। অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের জন্য সেই পুরস্কার হচ্ছে, স্বর্গে যিশুর সঙ্গে রাজা হিসেবে এক অমর জীবন। ‘আরও মেষের’ জন্য সেই পুরস্কার হচ্ছে শান্তিপূর্ণ পৃথিবীতে অনন্তজীবন। (যোহন ১০:১৬; ২ পিতর ৩:১৩) তা লাভ করার আগে পর্যন্ত আমরা “অনেক ক্লেশের” মুখোমুখি হব। আসুন, আমরা এখন দু-ধরনের পরীক্ষা সম্বন্ধে আলোচনা করি, যেগুলো হয়তো আমাদের ভোগ করতে হবে।

সরাসরি আক্রমণ

৭. সরাসরি আক্রমণের অন্তর্ভুক্ত কী?

৭ যিশু ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন: “লোকে তোমাদিগকে বিচার-সভায় সমর্পণ করিবে, এবং তোমরা সমাজ-গৃহে প্রহারিত হইবে; আর . . . তোমরা দেশাধ্যক্ষ ও রাজাদের . . . সম্মুখে দাঁড়াইবে।” (মার্ক ১৩:৯) তাই, যিশু আসলে বলেছিলেন, খ্রিস্টানদের মধ্যে কেউ কেউ সরাসরি আক্রমণ যেমন, তাড়নার মুখোমুখি হবে। কখনো কখনো, এই তাড়না হয়তো ধর্মীয় অথবা রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে আসবে। (প্রেরিত ৫:২৭, ২৮) আবারও পৌলের উদাহরণ চিন্তা করে দেখুন। এইরকম তাড়নার সময়ে তিনি কি ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন? একেবারেই না।—পড়ুন, প্রেরিত ২০:২২, ২৩.

৮, ৯. কীভাবে পৌল দেখিয়েছিলেন যে, তিনি তাড়না সহ্য করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ আর আমাদের দিনে কিছু ভাই-বোন কীভাবে সরাসরি আক্রমণ সহ্য করেছে?

৮ পৌল নির্ভীকভাবে শয়তানের সরাসরি আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং বলেছিলেন: “আমি নিজ প্রাণকেও কিছুর মধ্যে গণ্য করি না, আমার পক্ষে মহামূল্য গণ্য করি না, যেন নিরূপিত পথের শেষ পর্য্যন্ত দৌড়িতে পারি, এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহের সুসমাচারের পক্ষে [“পুঙ্খানুপুঙ্খ,” NW] সাক্ষ্য দিবার যে পরিচর্য্যাপদ প্রভু যীশু হইতে পাইয়াছি, তাহা সমাপ্ত করিতে পারি।” (প্রেরিত ২০:২৪) তাড়িত হবেন বলে পৌল ভয় পাননি। এর পরিবর্তে, তিনি সেই তাড়না সহ্য করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন। তার লক্ষ্য ছিল, তাড়নার মধ্যেও “পুঙ্খানুপুঙ্খ সাক্ষ্য” দেওয়া।

৯ বর্তমানে, অনেক ভাই-বোন তাড়নার সময়ে অনুগতভাবে তাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রেখেছে। একটা দেশে, কিছু সাক্ষিকে কোনোরকম বিচার ছাড়াই প্রায় ২০ বছর কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। কেন? কারণ তারা রাজনৈতিক ব্যাপারে জড়িত হয়নি। এমনকী তাদেরকে তাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করার অনুমতিও দেওয়া হয়নি আর কোনো কোনো বন্দিকে মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছিল।

১০. হঠাৎ ক্লেশ আসলে কেন আমাদের ভয় পাওয়া উচিত নয়?

১০ অন্যান্য জায়গায়, আমাদের ভাই-বোনেরা এমন ক্লেশ সহ্য করে, যেগুলো হঠাৎ ঘটে। যদি আপনার প্রতি এমনটা ঘটে, তাহলে ভয় পাবেন না। যোষেফের কথা মনে রাখবেন। হঠাৎ করে, তাকে দাস হিসেবে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, যিহোবা ‘তাঁহার সমস্ত ক্লেশ হইতে তাঁহাকে উদ্ধার করিয়াছিলেন।’ (প্রেরিত ৭:৯, ১০) যিহোবা আপনার জন্য একই বিষয় করতে পারেন। সবসময় মনে রাখবেন, “প্রভু [ঈশ্বর] ভক্তদিগকে পরীক্ষা হইতে উদ্ধার করিতে . . . জানেন।” (২ পিতর ২:৯) তাই, উত্তম কারণেই আপনি যিহোবার ওপর আস্থা রাখতে এবং সাহসের সঙ্গে তাড়না সহ্য করতে পারেন। এই আস্থা বজায় রাখুন, যিহোবা আপনাকে এই মন্দ জগৎ থেকে উদ্ধার করতে এবং অনন্তজীবন দান করতে পারেন।—১ পিতর ৫:৮, ৯.

পরোক্ষ আক্রমণ

১১. পরোক্ষ আক্রমণ ও সরাসরি আক্রমণের মধ্যে পার্থক্য কী?

১১ এ ছাড়া, আমাদের হয়তো পরোক্ষ আক্রমণও সহ্য করতে হয়। পরোক্ষ আক্রমণ ও তাড়নার মতো সরাসরি আক্রমণের মধ্যে পার্থক্য কী? সরাসরি আক্রমণ হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের মতো, যা হঠাৎ করে এসে আপনার ঘরবাড়ি সঙ্গেসঙ্গে ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু, পরোক্ষ আক্রমণ হচ্ছে অনেকটা ঘুণপোকার মতো, যা ধীরে ধীরে আপনার ঘরবাড়ির কাঠ খেয়ে ফেলতে থাকে। ঘুণপোকা কী করেছে, তা আপনি যখন বুঝতে পারেন, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায় কারণ বাড়িটা তখন ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়।

১২. (ক) শয়তানের পরোক্ষ আক্রমণের মধ্যে একটা কী আর কেন এটা অনেক কার্যকরী? (খ) নিরুৎসাহিতার কারণে পৌল কীভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন?

১২ শয়তান যিহোবার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্বকে নষ্ট করতে চায়। সে হয় তাড়নার মতো সরাসরি আক্রমণ ব্যবহার করে, নতুবা নিরুৎসাহিতার মতো পরোক্ষ আক্রমণ ব্যবহার করে, যেটা তার অত্যন্ত কার্যকরী এক হাতিয়ার। কেন? কারণ নিরুৎসাহিতা ঈশ্বরের সঙ্গে আপনার সম্পর্ককে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দিতে পারে। কখনো কখনো, প্রেরিত পৌল নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন। এক বার, তিনি এমনকী নিজেকে একজন “দুর্ভাগ্য মনুষ্য” বলে অভিহিত করেছিলেন। (পড়ুন, রোমীয় ৭:২১-২৪.) কেন পৌলের মতো একজন ব্যক্তি নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন? যিহোবার সঙ্গে তো তার এক উত্তম সম্পর্ক ছিল আর সম্ভবত তিনি পরিচালকগোষ্ঠীর একজন সদস্য ছিলেন। তা সত্ত্বেও, পৌল নিজের অসিদ্ধতার কারণে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি যা সঠিক, সেটা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু সবসময় তা করা সহজ ছিল না। আপনার যদি এইরকম অনুভূতি থাকে, তাহলে আপনি এটা জেনে সান্ত্বনা লাভ করতে পারেন, পৌলও একইরকম লড়াই করেছিলেন।

১৩, ১৪. (ক) কেন ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কেউ কেউ নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে? (খ) আমাদের বিশ্বাস নষ্ট হোক, তা কে দেখতে চায় এবং কেন?

১৩ কখনো কখনো, অনেক ভাই ও বোন নিরুৎসাহিত বোধ করে, উদ্‌বিগ্ন হয় আর সম্ভবত নিজেদের অযোগ্য বলেও মনে করে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন উদ্যোগী অগ্রগামী বোন বলেন: “নিজের একটা ভুলের কথা আমার বার বার মনে আসে আর প্রতি বারই আগের চেয়ে আরও বেশি খারাপ লাগে। আমি যা করেছি সব ভুল ছিল, এই বিষয়টা যখন আমি চিন্তা করি, তখন মনে হয় যেন আর কেউই, এমনকী যিহোবাও, কোনো দিন আমাকে ভালোবাসতে পারবেন না।”

১৪ সবেমাত্র উল্লেখিত বোনের মতো, যিহোবার উদ্যোগী কিছু দাস কেন নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে? অনেক কারণ থাকতে পারে। হতে পারে, তারা নিজেদের সম্বন্ধে অথবা নিজেদের পরিস্থিতি সম্বন্ধে খারাপ চিন্তা করে। (হিতো. ১৫:১৫) অন্যদের হয়তো এমন স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে নেতিবাচক চিন্তা থাকে, যা তাদের আবেগঅনুভূতিকে প্রভাবিত করে। এইরকম নেতিবাচক অনুভূতি আসার পিছনে কারণ যা-ই হোক না কেন, আমাদের মধ্যে এইরকম অনুভূতি আসুক, সেটা কে চায়, সেই বিষয়ে মনে রাখুন। কে চায় যেন আমরা অনেক নিরুৎসাহিত হয়ে যিহোবার সেবা করায় হাল ছেড়ে দিই? অবশ্যই শয়তান তা চায়। তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে আর সে চায়, আপনিও এমনটা মনে করেন যেন আপনার কোনো আশা নেই। (প্রকা. ২০:১০) শয়তান আমাদেরকে উদ্‌বিগ্ন করতে এবং আমাদের উদ্যোগকে দুর্বল করে দিতে চায়। সে সরাসরি অথবা পরোক্ষ, যে-ধরনের আক্রমণই ব্যবহার করুক না কেন, তার লক্ষ্য হচ্ছে, আমরা যেন ঈশ্বরের সেবা করা বন্ধ করে দিই। ঈশ্বরের লোকেরা একটা যুদ্ধে অর্থাৎ যিহোবার প্রতি তাদের নীতিনিষ্ঠা বজায় রাখার লড়াইয়ে রত, তাই বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন না।

১৫. দ্বিতীয় করিন্থীয় ৪:১৬, ১৭ পদ অনুসারে আমরা কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

১৫ সেই লড়াইয়ে হাল ছেড়ে না দেওয়ার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন। পুরস্কারের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখুন। পৌল করিন্থের খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “আমরা নিরুৎসাহ হই না” বা হাল ছেড়ে দিই না “কিন্তু আমাদের বাহ্য মনুষ্য যদ্যপি ক্ষীণ হইতেছে, তথাপি আন্তরিক মনুষ্য দিন দিন নূতনীকৃত হইতেছে। বস্তুতঃ আপাততঃ আমাদের যে লঘুতর ক্লেশ হইয়া থাকে, তাহা উত্তর উত্তর অনুপমরূপে আমাদের জন্য অনন্তকালস্থায়ী গুরুতর প্রতাপ সাধন করিতেছে।”—২ করি. ৪:১৬, ১৭.

ক্লেশের জন্য এখনই প্রস্তুত হোন

নিজের আধ্যাত্মিকতা বৃধর জন্য পশিক্ষণ নিচ্ছ এমন একজন অপবয়সি ভাইয়ের ছবি এবং অনুশীলন করছ এমন একজন সৈনিকের ছবির মধ্যে তুলনা

অল্পবয়সি হোক কিংবা বয়স্ক হোক, খ্রিস্টানরা তাদের বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করার জন্য প্রশিক্ষণ নেয় (১৬ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৬. কেন এখন থেকেই ক্লেশের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে?

১৬ আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার জন্য শয়তানের কাছে ‘নানাবিধ চাতুরী’ বা মন্দ পরিকল্পনা রয়েছে। (ইফি. ৬:১১) তাই, আমাদের ১ পিতর ৫:৯ পদে প্রাপ্ত উপদেশ অনুসরণ করতে হবে: “তোমরা বিশ্বাসে অটল থাকিয়া তাহার প্রতিরোধ কর।” অটল থাকার জন্য আমাদের মন ও হৃদয়কে এখন থেকেই প্রস্তুত রাখতে হবে, যাতে আমরা যা সঠিক, তা করার জন্য তৈরি ও ইচ্ছুক থাকি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়: যুদ্ধে যাওয়ার অনেক আগে থেকেই সৈনিকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যা তাদেরকে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত করে। আমাদের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। ভবিষ্যতে আমাদের কোন যুদ্ধ করতে হবে, আমরা তা জানি না। তাই পরিস্থিতি যখন শান্ত থাকে, তখনই আমাদের প্রাণপণ প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের উৎসাহিত করেছিলেন: “আপনাদের পরীক্ষা করিয়া দেখ, তোমরা বিশ্বাসে আছ কি না; প্রমাণার্থে আপনাদেরই পরীক্ষা কর।”—২ করি. ১৩:৫.

১৭-১৯. (ক) কীভাবে আমরা আত্মপরীক্ষা করতে পারি? (খ) কীভাবে অল্পবয়সিরা স্কুলে তাদের বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে?

১৭ আপনি একটা যে-উপায়ে আত্মপরীক্ষা করতে পারেন, তা হল, নিজেকে এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করা: ‘আমি কি নিয়মিতভাবে প্রার্থনা করি? অন্যেরা যখন আমাকে ভুল কিছু করার জন্য প্ররোচিত করে, তখন আমি কি মানুষের পরিবর্তে শাসক হিসেবে ঈশ্বরের বাধ্য থাকি? আমি কি নিয়মিতভাবে সভাগুলোতে যোগ দিই? আমি কি সাহসের সঙ্গে আমার বিশ্বাস সম্বন্ধে কথা বলি? আমার ভাই-বোনেরা যখন ভুল করে, তখন আমি কি তাদের ক্ষমা করি, যেমনটা আমি চাই যে, তারাও আমার প্রতি করুক? আমি কি আমার মণ্ডলীর প্রাচীনদের ও সেইসঙ্গে যারা বিশ্বব্যাপী মণ্ডলীর যত্ন নিচ্ছে, সেই ব্যক্তিদের বাধ্য হই?’

১৮ আমাদের আশেপাশে এমন লোকেরা রয়েছে, যারা আমাদের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। অল্পবয়সি অনেক ভাই-বোনকে স্কুলে তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে সাহসের সঙ্গে কথা বলতে হয়েছে। আর সেটা করতে গিয়ে তারা বিব্রতবোধ করে না অথবা ভয় পায় না। কোন বিষয়টা এই অল্পবয়সিদেরকে সাহসের সঙ্গে কথা বলতে সাহায্য করেছে? তারা আমাদের পত্রিকায় প্রাপ্ত পরামর্শ কাজে লাগিয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৩ সালের ১৫ মে প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ৬ পৃষ্ঠায় ব্যাখ্যা করা হয়েছিল, স্কুলের সহপাঠীর কাছে যুক্তি করার জন্য প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে কীভাবে অন্যদের কাছে নিজের বিশ্বাস সম্বন্ধে কথা বলার জন্য আরও আস্থাবান হওয়া যায়। বাবা-মায়েরা, আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে তাদের বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করার বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করার বিষয়ে খেয়াল রাখুন, যাতে তারা স্কুলে থাকার সময় তা করার জন্য প্রস্তুত থাকে।

১৯ অবশ্য, আমাদের বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করা অথবা আমরা যা করব বলে যিহোবা আশা করেন এমন অন্যান্য বিষয় করা, সবসময় সহজ হয় না। যেমন, সারা দিন কাজ করার পর, আমাদের হয়তো শরীরটাকে জোর করে টেনে নিয়ে সভাতে যেতে হয়। অথবা প্রচারে যাওয়ার জন্য সকাল সকাল ঘুম থেকে জেগে ওঠা কঠিন হতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন: আপনি যদি এখনই এই বিষয়গুলো করার অভ্যাস গড়ে তোলেন, তাহলে আপনি ভবিষ্যতে আরও বড়ো বড়ো পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারবেন।

২০, ২১. (ক) মুক্তির মূল্য নিয়ে ধ্যান করা কীভাবে আমাদের নেতিবাচক অনুভূতি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে? (খ) আমাদের কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হওয়া উচিত?

২০ পরোক্ষ আক্রমণ সম্বন্ধে কী বলা যায়? যেমন, কীভাবে আমরা নিরুৎসাহিতার অনুভূতি কাটিয়ে উঠতে পারি? তা করার একটা জোরালো উপায় হচ্ছে, যিশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান নিয়ে ধ্যান করা। প্রেরিত পৌল সেটাই করেছিলেন। কখনো কখনো, তিনি অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু, তিনি জানতেন, খ্রিস্ট সিদ্ধ ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং তার মতো পাপীদের জন্যই মারা গিয়েছেন। তিনি লিখেছিলেন: “আমি বিশ্বাসে, ঈশ্বরের পুত্রে বিশ্বাসেই, যাপন করিতেছি; তিনিই আমাকে প্রেম করিলেন, এবং আমার নিমিত্তে আপনাকে প্রদান করিলেন।” (গালা. ২:২০) হ্যাঁ, পৌল মুক্তির মূল্যকে স্বীকার করেছিলেন এবং এটা যে ব্যক্তিগতভাবে তার প্রতি প্রযোজ্য, তা বিশ্বাস করেছিলেন।

২১ আপনি যদি মুক্তির মূল্যকে যিহোবার কাছ থেকে এক ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে স্বীকার করেন, তাহলে আপনিও প্রচুর উপকার লাভ করবেন। এর অর্থ এই নয় যে, আমাদের নিরুৎসাহিতা সঙ্গেসঙ্গে দূর হয়ে যাবে। নতুন জগৎ না আসা পর্যন্ত, কাউকে কাউকে হয়তো মাঝে মাঝে নিরুৎসাহিতা সহ্য করতে হবে। কিন্তু মনে রাখবেন: যারা হাল ছেড়ে দেবে না, তারাই পুরস্কার লাভ করবে। প্রতিদিন আমরা সেই সময়টার আরও নিকটবর্তী হচ্ছি, যখন ঈশ্বরের রাজ্য আসবে। সেই রাজ্য যখন আসবে, তখন পৃথিবীতে শান্তি থাকবে এবং সমস্ত মানুষ সিদ্ধ হবে। এমনকী আপনাকে যদি অনেক ক্লেশের মধ্য দিয়ে যেতেও হয়, তবুও সেই রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার