ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৮ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ১৯-২৪
  • যিরূশালেম যেটি এর নামের উপযুক্ত

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিরূশালেম যেটি এর নামের উপযুক্ত
  • ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • এক সুন্দর সমাবেশ দিন
  • অপর একটি আনন্দপূর্ণ সমাবেশ
  • আমাদের ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ করা উচিত নয়
  • এক আনন্দপূর্ণ প্রতিষ্ঠা
  • অনন্তকালীন আনন্দের কারণ
  • যিরূশালেম—এটি কি ‘আপনার পরমানন্দ হইতে অধিক ভালবাসার পাত্র’?
    ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • নহিমিয়ের পুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • জেরুসালেমের প্রাচীর
    বাইবেল থেকে তুমি যা শিখতে পার
  • যিরূশালেমের প্রাচীর
    আমার বাইবেলের গল্পের বই
আরও দেখুন
১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৮ ১০/১৫ পৃষ্ঠা ১৯-২৪

যিরূশালেম যেটি এর নামের উপযুক্ত

“আমি যাহা সৃষ্টি করি, তোমরা তাহাতে চিরকাল . . . উল্লাস কর; কারণ দেখ, আমি যিরূশালেমকে উল্লাসভূমি . . . করিয়া সৃষ্টি করি।”—যিশাইয় ৬৫:১৮.

১. ঈশ্বরের মনোনীত নগর সম্বন্ধে ইষ্রা কেমন অনুভব করতেন?

ঈশ্বরের বাক্যের এক মনোযোগী ছাত্র হিসাবে যিহূদী যাজক ইষ্রা যিহোবার বিশুদ্ধ উপাসনার সঙ্গে একসময় যিরূশালেমের যে যোগ ছিল সে বিষয়ে আনন্দ করতেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ১২:৫; ইষ্রা ৭:২৭) বাইবেলের যে অংশটি লেখার জন্য তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন তা হল প্রথম ও দ্বিতীয় বংশাবলি এবং ইষ্রা, সেখানে ঈশ্বরের নগরের জন্য তার প্রেম প্রকাশ পেয়েছে। সম্পূর্ণ বাইবেলে যিরূশালেম নামটি ৮০০ বারেরও কিছু বেশি বার দেখতে পাওয়া যায়। আর এই ঐতিহাসিক বিবরণে নামটি তার প্রায় এক চতুর্থাংশ বার উল্লেখ করা হয়েছে।

২. যিরূশালেমের নামটির তাৎপর্যের মধ্যে কোন্‌ ভবিষ্যদ্বাণীসূচক অর্থ আমরা দেখতে পাই?

২ বাইবেলে ব্যবহৃত ইব্রীয় ভাষায়, ‘যিরূশালেমকে’ ইব্রীয় ভাষার দ্বিবচন রূপ হিসাবে দেখা যেতে পারত। এই দ্বিবচন প্রায়ই সেই সমস্ত বস্তুগুলির জন্য ব্যবহার করা হতো যা এক জোড়া হয় যেমন চোখ, কান, হাত এবং পা। তাই যিরূশালেম নামের জন্য দ্বিবচনের ব্যবহারকে সেই শান্তির পূর্ববার্তা হিসাবে দেখা যেতে পারে যা ঈশ্বরের লোকেরা দুটি অর্থে উপভোগ করবে—আধ্যাত্মিক ও শারীরিক। শাস্ত্র স্পষ্টভাবে জানায় না যে ইষ্রা এটি ঠিকভাবে বুঝতে পেরেছিলেন কি না। কিন্তু একজন যাজক হিসাবে ঈশ্বরের সঙ্গে শান্তিতে বাস করার জন্য তিনি তার যথাসাধ্য করেছিলেন। আর তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন যাতে যিরূশালেমের ক্ষেত্রে তার নামের অর্থ সত্য হয় যা হল “দ্বিগুণ শান্তির অধিকারী [অথবা ভিত্তি]।”—ইষ্রা ৭:৬.

৩. ইষ্রা আবার কাজ শুরু করার আগে কত বছর পার হয়ে গিয়েছিল আর আমরা তাকে কোন্‌ পরিস্থিতিতে দেখতে পাই?

৩ বাইবেল বলে না যে যিরূশালেমে ইষ্রার আগমন থেকে শুরু করে নহিমিয়ের সেখানে এসে পৌঁছানো পর্যন্ত এই ১২ বছর তিনি কোথায় ছিলেন। সেই সময়ে নগরের দুর্বল আধ্যাত্মিক অবস্থা প্রকাশ করে যে ইষ্রা সেখানে ছিলেন না। তবুও আমরা দেখি যে নগরের প্রাচীর পুনর্নির্মিত হওয়ার পরই ইষ্রা আবার একজন বিশ্বস্ত যাজক হিসাবে যিরূশালেমে সেবা করতে শুরু করেন।

এক সুন্দর সমাবেশ দিন

৪. ইস্রায়েলের সপ্তম মাসের প্রথম দিনটির তাৎপর্য কী ছিল?

৪ যিরূশালেমের প্রাচীর ঠিক গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের মাস, ইস্রায়েলীয়দের ধর্মীয় ক্যালেন্ডারের সপ্তম মাস তিসরিতে শেষ হয়েছিল। তিসরি মাসের প্রথম দিনটি ছিল এক বিশেষ নতুন চাঁদের পর্ব যেটিকে তূরীধ্বনির উৎসব বলা হতো। সেই দিনে যিহোবার কাছে বলি উৎসর্গের সময় যাজকেরা তূরী বাজাতেন। (গণনাপুস্তক ১০:১০; ২৯:১) এই দিনটি ইস্রায়েলীয়দের তিসরি মাসের দশম দিনে বাৎসরিক প্রায়শ্চিত্তের দিনের জন্য এবং সেই একই মাসের ১৫ থেকে ২১তম দিনে আনন্দপূর্ণ ফলসংগ্রহের উৎসবের জন্য প্রস্তুত করত।

৫. (ক) কিভাবে ইষ্রা ও নহিমিয় ‘সপ্তম মাসের প্রথম দিনটিকে’ ভালভাবে কাজে লাগিয়েছিলেন? (খ) কেন ইস্রায়েলীয়রা কেঁদেছিল?

৫ “সপ্তম মাসের প্রথম দিনে” “সমস্ত লোক” সমবেত হয়েছিল। সম্ভবত ইষ্রা ও নহিমিয় তাদের তা করতে উৎসাহিত করেছিলেন। স্ত্রী পুরুষ এবং “যাহারা শুনিয়া বুঝিতে পারে” এমন সকলে এসেছিল। সুতরাং অল্পবয়স্ক সন্তানেরাও সেখানে ছিল আর মনোযোগ দিয়ে শুনেছিল যখন ইষ্রা তাদের সামনে একটি মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন ও “প্রাতঃকাল হইতে মধ্যাহ্ন পর্য্যন্ত” ব্যবস্থা পাঠ করেছিলেন। (নহিমিয় ৮:১-৪) যা পড়া হয়েছিল লোকেদের সেগুলি বুঝতে বিরতির সময় লেবীয়রা সাহায্য করেছিলেন আর লোকেরা কান্নায় ভেঙে পড়েছিল কারণ তারা উপলব্ধি করেছিল যে তারা ও তাদের পূর্বপুরুষেরা অবাধ্য হয়ে ঈশ্বরের ব্যবস্থা থেকে কত দূরে সরে এসেছিল।—নহিমিয় ৮:৫-৯.

৬, ৭. নহিমিয় যিহূদীদের কান্না বন্ধ করার জন্য যা করেছিলেন তার থেকে খ্রীষ্টানেরা কী শিখতে পারেন?

৬ কিন্তু এই সময়টি শোকগ্রস্ত হওয়া ও কান্নার সময় ছিল না। এটি ছিল উৎসবের সময় আর লোকেরা সবেমাত্র যিরূশালেমের প্রাচীরের পুনর্নির্মাণ শেষ করেছিল। তাই নহিমিয় তাদের উপযুক্ত মনোভাব রাখতে সাহায্য করেছিলেন এই বলে: “পুষ্ট দ্রব্য ভোজন কর, মিষ্ট রস পান কর, এবং যাহার জন্য কিছু প্রস্তুত নাই, তাহাকে অংশ পাঠাইয়া দেও; কারণ অদ্যকার দিন আমাদের প্রভুর উদ্দেশে পবিত্র, তোমরা বিষণ্ণ হইও না, কেননা সদাপ্রভুতে যে অনন্দ, তাহাই তোমাদের শক্তি।” বাধ্যভাবে “সমস্ত লোক ভোজন পান, অংশ প্রেরণ ও অতিশয় আনন্দ করিতে গেল, কেননা যে সকল কথা তাহাদের কাছে বলা গিয়াছিল, তাহারা সে সকল বুঝিতে পারিয়াছিল।”—নহিমিয় ৮:১০-১২.

৭ বর্তমানে ঈশ্বরের লোকেরা এই বিবরণ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন। সভা ও সম্মেলনগুলিতে যাদের অংশ থাকে তাদের উপরে উল্লেখিত মনোভাব রাখা দরকার। সংশোধনমূলক পরামর্শ যা কখনও কখনও দরকার সেগুলো দেওয়া ছাড়াও এই সমাবেশগুলি তুলে ধরে যে ঈশ্বরের চাহিদাগুলি পূরণ করলে তা উপকার ও আশীর্বাদ নিয়ে আসে। সমাবেশগুলিতে উত্তম কাজের জন্য প্রশংসা করা হয় ও লেগে থাকার জন্য উৎসাহ যোগান হয়। ঈশ্বরের লোকেরা যেন এই সমাবেশগুলি থেকে আনন্দপূর্ণ স্মৃতি নিয়ে ঘরে ফেরেন কারণ সেখানে তারা ঈশ্বরের বাক্য থেকে গঠনমূলক নির্দেশনা পেয়েছেন।—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

অপর একটি আনন্দপূর্ণ সমাবেশ

৮, ৯. সপ্তম মাসের দ্বিতীয় দিনে কোন্‌ বিশেষ সভা হয়েছিল আর ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে তার ফল কী হয়েছিল?

৮ সেই বিশেষ মাসের দ্বিতীয় দিনে “সমস্ত লোকের পিতৃকুলপতিরা, যাজকেরা ও লেবীয়েরা ব্যবস্থার বাক্যে মনোনিবেশ করিবার জন্য অধ্যাপক ইষ্রার কাছে একত্র হইল।” (নহিমিয় ৮:১৩) এই সভা পরিচালনা করার জন্য ইষ্রা খুবই উপযুক্ত ছিলেন যেহেতু “সদাপ্রভুর ব্যবস্থা অনুশীলন ও পালন করিতে, এবং ইস্রায়েলে বিধি ও শাসন শিক্ষা দিতে ইষ্রা আপন অন্তঃকরণ সুস্থির করিয়াছিলেন।” (ইষ্রা ৭:১০) কোন সন্দেহ নেই যে এই সভা সেইসমস্ত দিকগুলি তুলে ধরেছিল, যেখানে ঈশ্বরের লোকেদের আরও বেশি করে নিয়ম চুক্তি মেনে চলার প্রয়োজন ছিল। আসন্ন কুটির উৎসব পালনের জন্য সঠিক প্রস্তুতি করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল।

৯ সমস্ত লোক সপ্তাহ-ব্যাপী এই উৎসব সঠিকভাবে পালন করেছিল আর তারা বিভিন্ন গাছের ডাল ও পাতা দিয়ে তৈরি অস্থায়ী আবাসে বাস করেছিল। লোকেরা তাদের সমতল ছাদের উপর, তাদের উঠোনে, মন্দিরের উঠোনে ও যিরূশালেমের সাধারণ চকে এই কুটিরগুলি তৈরি করেছিল। (নহিমিয় ৮:১৫, ১৬) সমস্ত লোকেদের একত্র করা ও তাদের সামনে ঈশ্বরের ব্যবস্থা থেকে পড়ার এটি কতই না এক উত্তম সুযোগ ছিল! (দ্বিতীয় বিবরণ ৩১:১০-১৩ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) উৎসবের “প্রথম দিন হইতে শেষ দিন পর্য্যন্ত,” প্রতিদিন এটি করা হতো আর তার ফলে ঈশ্বরের লোকেদের “অতি বড় আনন্দ হইল।”—নহিমিয় ৮:১৭, ১৮.

আমাদের ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ করা উচিত নয়

১০. সপ্তম মাসের ২৪তম দিনে কেন এক বিশেষ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল?

১০ ঈশ্বরের লোকেদের গুরুতর ভুলগুলিকে সংশোধন করার জন্য সঠিক সময় ও স্থান রয়েছে। স্পষ্টতই সেই সময়টি এসেছে বলে উপলব্ধি করে ইষ্রা ও নহিমিয় তিসরি মাসের ২৪তম দিনটিকে উপবাসের দিন হিসাবে ঠিক করেছিলেন। আবারও ঈশ্বরের ব্যবস্থা পড়া হয়েছিল আর লোকেরা তাদের পাপ স্বীকার করেছিল। তারপর লেবীয়েরা ঈশ্বর কিভাবে তাঁর স্বেচ্ছাচারী লোকেদের সঙ্গে করুণাপূর্ণ ব্যবহার করেছিলেন তা পুনরালোচনা করেছিল, সুন্দর অভিব্যক্তি দিয়ে যিহোবার প্রশংসা করেছিল আর এক “নিশ্চিত নিয়ম” লিখেছিল যাতে তাদের অধ্যক্ষগণ, লেবীয়েরা ও যাজকগণ মুদ্রাঙ্ক দিয়েছিল।—নহিমিয় ৯:১-৩৮.

১১. কোন্‌ “নিশ্চিত নিয়ম” পালন করার জন্য যিহূদীরা অঙ্গীকার করেছিল?

১১ সমস্ত লোকেরা সেই লিখিত “নিশ্চিত নিয়ম” মেনে চলবে বলে শপথ করেছিল। তারা সত্য “ঈশ্বরের ব্যবস্থা-পথে চলিব” বলে প্রতিজ্ঞা করেছিল। আর তারা বলেছিল যে তারা “দেশীয় লোকদের” সঙ্গে বিবাহ করবে না। (নহিমিয় ১০:২৮-৩০) এছাড়াও যিহূদীরা বিশ্রামবার পালন করতে, সত্য উপাসনার জন্য বাৎসরিক আর্থিক দান দিতে, বলিদানের বেদী বানানোর জন্য কাঠ দিতে, বলি দেওয়ার জন্য তাদের পক্ষী ও পশুপাল থেকে প্রথমজাত পশুপক্ষী দিতে আর মন্দিরের মেজে তাদের ক্ষেত্রের প্রথম ফল নিয়ে আসবে বলে অঙ্গীকার করেছিল। স্পষ্টতই তারা সংকল্প করেছিল যে তারা ‘তাদের ঈশ্বরের গৃহ ত্যাগ করিবে না।’—নহিমিয় ১০:৩২-৩৯.

১২. আজকে ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ না করার সঙ্গে কী জড়িত?

১২ আজকে যিহোবার লোকেরা যিহোবার মহান আধ্যাত্মিক মন্দিরের প্রাঙ্গণে “আরাধনা” করার সুযোগকে ত্যাগ করার বিষয়ে সতর্ক হবেন। (প্রকাশিত বাক্য ৭:১৫) আর এটি যিহোবার উপাসনায় আরও উন্নতি করার জন্য নিয়মিত হৃদয় থেকে প্রার্থনা করাকে জড়িত করে। এই প্রার্থনার সঙ্গে মিল রেখে চলতে হলে খ্রীষ্টীয় সভাগুলির জন্য প্রস্তুতি, সেগুলিতে অংশ নেওয়া, সুসমাচার প্রচারে অংশ নেওয়া আর পুনর্সাক্ষাৎ ও যদি সম্ভব হয় আগ্রহী ব্যক্তিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করে তাদের সাহায্য করা দরকার। অনেকে যারা ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ করতে চান না তারা প্রচার কাজ ও সত্য উপাসনার স্থান মেরামতের জন্য আর্থিক দান দিয়ে থাকেন। খুব তাড়াতাড়ি দরকার এমন সভাস্থানগুলি তৈরির কাজে আমরা সাহায্য করতে পারি আর সেগুলিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখেও তা করা যেতে পারে। ঈশ্বরের আধ্যাত্মিক গৃহের জন্য প্রেম দেখানোর একটি প্রধান উপায় হল সহবিশ্বাসীদের সঙ্গে শান্তিতে থাকা আর যে কারও বস্তুগত বা আধ্যাত্মিক প্রয়োজনে তাকে সাহায্য করা।—মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০; ইব্রীয় ১৩:১৫, ১৬.

এক আনন্দপূর্ণ প্রতিষ্ঠা

১৩. যিরূশালেমের প্রাচীর প্রতিষ্ঠার আগে কোন্‌ জরুরি বিষয়ের প্রতি মনোযোগ দেওয়ার দরকার হয়েছিল আর অনেকে কোন্‌ ভাল উদাহরণ স্থাপন করেছিল?

১৩ নহিমিয়ের দিনে মুদ্রাঙ্কিত সেই “নিশ্চিত নিয়ম” ঈশ্বরের প্রাচীনকালের লোকেদের যিরূশালেমের প্রাচীরের প্রতিষ্ঠা দিনের জন্য প্রস্তুত করেছিল। কিন্তু আর একটি জরুরি বিষয়ের প্রতিও মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। ১২টি দরজা সমেত বিশাল প্রাচীর দিয়ে ঘেরা যিরূশালেমে বসবাসের জন্য এখন অনেক লোকের প্রয়োজন। যদিও কিছু ইস্রায়েলীয় সেখানে বাস করত তবুও “নগর বৃহৎ ও বিস্তারিত, কিন্তু তন্মধ্যে লোক অল্প ছিল।” (নহিমিয় ৭:৪) এই সমস্যা সমাধানের জন্য লোকেরা “পবিত্র নগর যিরূশালেমে বাস করণার্থে প্রতি দশ জনের মধ্যে এক জনকে সেখানে আনিবার ও নয় জনকে অন্যান্য নগরে বাস করাইবার জন্য গুলিবাঁট করিল।” তাদের এই ব্যবস্থার প্রতি স্বেচ্ছায় সাড়া দেওয়ার জন্য লোকেরা “যে সকল লোক ইচ্ছাপূর্ব্বক যিরূশালেমে বাস করিতে চাহিল,” তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছিল। (নহিমিয় ১১:১, ২) আজকে সত্য খ্রীষ্টানদের জন্য এটি কতই না ভাল উদাহরণ, যাদের পরিস্থিতি অনুমতি দেয়, যেখানে পরিপক্ব খ্রীষ্টানদের বেশি প্রয়োজন সেখানে গিয়ে সাহায্য করা!

১৪. যিরূশালেমের প্রাচীর প্রতিষ্ঠার দিনে কী ঘটেছিল?

১৪ যিরূশালেমের প্রাচীর প্রতিষ্ঠার মহান দিনের জন্য প্রস্তুতি খুব তাড়াতাড়িই শুরু হয়েছিল। যিহূদার আশেপাশের নগর থেকে বাদ্যকার ও গায়কেরা এসেছিল। তাদের স্তবগানকারী দুই মহা সংকীর্তন-দলে ভাগ করা হয়েছিল, আর এই দলগুলির পিছনে একটি করে শোভাযাত্রা যেতো। সংকীর্তন-দল ও শোভাযাত্রা মন্দিরের বিপরীত দিক, সম্ভবত উপত্যকা দ্বার থেকে শুরু হয়েছিল আর দল দুটি বিপরীত অভিমুখে চলেছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা ঈশ্বরের গৃহে এসে পৌঁছেছিল। “সেই দিবস লোকেরা অনেক বলিদান করিয়া আনন্দ করিল, কেননা ঈশ্বর তাহাদিগকে মহানন্দে আনন্দিত করিলেন, এবং স্ত্রী ও বালক বালিকাগণও আনন্দ করিল; তাহাতে অনেক দূর পর্য্যন্ত যিরূশালেমের আনন্দধ্বনি শুনা গেল।”—নহিমিয় ১২:৪৩.

১৫. কেন যিরূশালেমের প্রাচীরের উৎসর্গ চিরস্থায়ী আনন্দের কারণ ছিল না?

১৫ বাইবেল আমাদের এই আনন্দপূর্ণ উদ্‌যাপনের তারিখ সম্বন্ধে জানায় না। কোন সন্দেহ নেই যে এটি ছিল যিরূশালেম পুনর্স্থাপনের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা, শুধু তাই নয় এক চূড়ান্ত ঘটনা। অবশ্যই নগরের মধ্যে আরও নির্মাণ কাজ করার ছিল। কালক্রমে, যিরূশালেমের অধিবাসীরা তাদের উত্তম আধ্যাত্মিক মান হারিয়ে ফেলেছিল। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে যখন নহিমিয় দ্বিতীয়বার নগরটি পরিদর্শন করেছিলেন তখন তিনি দেখেছিলেন যে আবারও ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ করা হয়েছিল আর ইস্রায়েলীয়রা আবার পৌত্তলিক স্ত্রীলোকদের বিবাহ করতে শুরু করেছিল। (নহিমিয় ১৩:৬-১১, ১৫, ২৩) ভাববাদী মালাখির লেখা থেকেও এই একই খারাপ পরিস্থিতি সম্বন্ধে জানা যায়। (মালাখি ১:৬-৮; ২:১১; ৩:৮) তাই যিরূশালেমের প্রাচীরের উৎসর্গ চিরস্থায়ী আনন্দের কারণ হয়ে ওঠেনি।

অনন্তকালীন আনন্দের কারণ

১৬. কোন্‌ ঘটনার জন্য ঈশ্বরের লোকেরা অপেক্ষা করে আছেন?

১৬ আজকে যিহোবার লোকেরা সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে আছেন যখন ঈশ্বর তাঁর সমস্ত শত্রুর উপর বিজয় লাভ করবেন। এটি “মহতী বাবিল”—এক রূপক শহর যেটি সমস্ত রকম মিথ্যা ধর্মকে স্বাগত জানিয়েছে তার ধ্বংসের মাধ্যমে শুরু হবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৮:২, ৮) মিথ্যা ধর্মের ধ্বংস আসন্ন মহাক্লেশের প্রথম পর্বকে বোঝাবে। (মথি ২৪:২১, ২২) আমাদের সামনেও সত্যিই এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা অপেক্ষা করছে—প্রভু যীশু খ্রীষ্টের কনে “নূতন যিরূশালেম” এর ১৪৪০০০ জন নাগরিকের সঙ্গে তাঁর স্বর্গীয় বিবাহ। (প্রকাশিত বাক্য ১৯:৭; ২১:২) আমরা বলতে পারি না যে ঠিক কখন সেই বিবাহ সম্পন্ন হবে কিন্তু নিশ্চয়ই এটি এক আনন্দপূর্ণ ঘটনা হবে।—১৯৯০ সালের ১৫ই আগস্ট প্রহরীদুর্গ (ইংরাজি) এর ৩০-১ পৃষ্ঠা দেখুন।

১৭. নতুন যিরূশালেমের পূর্ণতার বিষয়ে আমরা কী জানি?

১৭ আমরা জানি যে নতুন যিরূশালেমের পূর্ণতা খুবই কাছে। (মথি ২৪:৩, ৭-১৪; প্রকাশিত বাক্য ১২:১২) পার্থিব যিরূশালেম নগরের মত এটি কখনও হতাশার কারণ হবে না। কারণ এর সমস্ত নাগরিক যীশু খ্রীষ্টের অনুগামী যারা, আত্মায় অভিষিক্ত, পরীক্ষিত এবং সংশোধিত। মৃত্যু পর্যন্ত বিশ্বস্ত থেকে তারা প্রত্যেকে সার্বভৌম প্রভু যিহোবা ঈশ্বরের কাছে নিজেদের চিরকালীন নিষ্ঠাবান হিসাবে প্রমাণ করেন। মানবজাতির বাকি অংশের জন্য এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ রাখে—জীবিত এবং মৃত উভয়ের জন্যই!

১৮. কেন আমরা ‘চিরকাল আমোদ ও উল্লাস’ করব?

১৮ নতুন যিরূশালেম যখন সেইসমস্ত মানুষের প্রতি দৃষ্টি দেবে, যারা যীশুর মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানে বিশ্বাস দেখিয়েছেন তখন কী ঘটবে তা ভেবে দেখুন। “দেখ,” প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন। “মনুষ্যদের সহিত ঈশ্বরের আবাস; তিনি তাহাদের সহিত বাস করিবেন, এবং তাহারা তাঁহার প্রজা হইবে; এবং ঈশ্বর আপনি তাহাদের সঙ্গে থাকিবেন, ও তাহাদের ঈশ্বর হইবেন। আর তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।” (প্রকাশিত বাক্য ২১:২-৪) এছাড়াও ঈশ্বর মানবজাতিকে সিদ্ধতায় নিয়ে আসার জন্য এই নগরতুল্য ব্যবস্থাকে ব্যবহার করবেন। (প্রকাশিত বাক্য ২২:১, ২) ‘ঈশ্বর যাহা সৃষ্টি করেন, আমাদের তাহাতে চিরকাল আমোদ ও উল্লাস করার’ জন্য কত সুদৃঢ় কারণই না রয়েছে!—যিশাইয় ৬৫:১৮.

১৯. আধ্যাত্মিক পরমদেশ কী যেখানে খ্রীষ্টানেরা একত্রিত হয়েছেন?

১৯ কিন্তু অনুতপ্ত মানুষদের ঈশ্বরের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার জন্য ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। যিহোবা ১৯১৯ সাল থেকে ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত ব্যক্তির শেষ সদস্যদের আধ্যাত্মিক পরমদেশে একত্র করতে শুরু করেছেন যেখানে ঈশ্বরের আত্মার ফলগুলি—প্রেম, আনন্দ এবং শান্তি—প্রচুরভাবে রয়েছে। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) এই আধ্যাত্মিক পরমদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল এর অভিষিক্ত অধিবাসীদের বিশ্বাস, যারা সর্বজাতির কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার কাজে সফলতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। (মথি ২১:৪৩; ২৪:১৪) ফলস্বরূপ, প্রায় ৬০ লক্ষ “অপর মেষ” যাদের পার্থিব আশা রয়েছে তারাও আধ্যাত্মিক পরমদেশে প্রবেশ করার ও এই উৎপাদনের কাজ উপভোগ করার অনুমতি পেয়েছেন। (যোহন ১০:১৬, NW) তারা যিহোবা ঈশ্বরের পুত্র যীশু খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানে বিশ্বাসের ভিত্তিতে, তাঁর কাছে নিজেদের উৎসর্গ করার দ্বারা তাদের যোগ্য করে তুলেছেন। নতুন যিরূশালেমের সম্ভাব্য সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগ তাদের জন্য সত্যিই আশীর্বাদজনক। এইভাবে অভিষিক্ত খ্রীষ্টানদের সঙ্গে ব্যবহারের দ্বারা যিহোবা “নূতন পৃথিবীর”—ঈশ্বর ভয়শীল মানবসমাজ যারা স্বর্গীয় রাজ্যের পার্থিব অংশে উত্তরাধিকারসূত্রে বাস করবেন তাদের জন্য এক দৃঢ় ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।—যিশাইয় ৬৫:১৭; ২ পিতর ৩:১৩.

২০. কিভাবে নতুন যিরূশালেম এর নামের অর্থ অনুযায়ী থাকবে?

২০ যিহোবার লোকেরা এখন তাদের আধ্যাত্মিক পরমদেশে যে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি উপভোগ করেন, তা তারা খুব শীঘ্রই পৃথিবীর আক্ষরিক পরমদেশে উপভোগ করবেন। এটি ঘটবে যখন নতুন যিরূশালেম স্বর্গ থেকে মানবজাতির উপর আশীর্বাদ বর্ষণ করবে। যিশাইয় ৬৫:২১-২৫ পদে যে শান্তিপূর্ণ অবস্থার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে দুটি অর্থে ঈশ্বরের লোকেরা তা উপভোগ করবে। আধ্যাত্মিক পরমদেশে যিহোবার একতাবদ্ধ উপাসক হিসাবে যে অভিষিক্ত ব্যক্তিরা স্বর্গীয় নতুন যিরূশালেমে তাদের নিজেদের স্থান নেননি তারা ও ‘অপর মেষেরা’ এখন ঈশ্বর দত্ত শান্তি উপভোগ করছেন। আর এই শান্তি আক্ষরিক পরমদেশেও বিরাজ করবে যখন ঈশ্বরের ‘ইচ্ছা সিদ্ধ হবে, যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হবে।’ (মথি ৬:১০) হ্যাঁ, ঈশ্বরের গৌরবময় স্বর্গীয় নগর, যিরূশালেম তার নামের অর্থ ‘দ্বিগুণ শান্তির ভিত্তির’ উপযুক্ত হিসাবে প্রমাণিত হবে। চিরকাল ধরে এটি এর মহান সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বর আর এর বর রাজা যীশু খ্রীষ্টের প্রশংসাসূচক খ্যাতি হিসাবে থাকবে।

আপনার কি স্মরণে আছে?

◻ নহিমিয় যখন লোকেদের যিরূশালেমে একত্র করেছিলেন তখন কী সম্পন্ন হয়েছিল?

◻ ঈশ্বরের গৃহকে ত্যাগ না করার জন্য প্রাচীন যিহূদীদের কী করতে হয়েছিল এবং আমাদের কী করতে বলা হয়েছে?

◻ স্থায়ী আনন্দ ও শান্তি আনার ক্ষেত্রে “যিরূশালেম” কিভাবে জড়িত?

[২৩ পৃষ্ঠার মানচিত্র]

(পুরোপুরি ফরম্যাট করা টেক্সটের জন্য এই প্রকাশনা দেখুন)

যিরূশালেমের দ্বার

সংখ্যাগুলি আজকে এই জায়গাগুলির উচ্চতাকে মিটারের হিসাবে প্রকাশ করে

মৎস-দ্বার

পুরাতন দ্বার

ইফ্রোয়িমের দ্বার

কোণের দ্বার

প্রশস্ত প্রাচীর

চক

উপত্যকা দ্বার

দ্বিতীয় বিভাগ

পুরনো উত্তরের প্রাচীর

দায়ূদ নগর

অগ্নিভক্ষিত দ্বার

হিন্নোম উপত্যকা

রাজধানী

মেষ দ্বার

রক্ষীদের দ্বার

মন্দির এলাকা

উনুই দ্বার

অশ্ব-দ্বার

ওফল

চক

জল-দ্বার

গিহোনের জল

উনুই দ্বার

রাজার বাগান

ঐন্‌-রোগেল

টাইরোপোয়ন (কেন্দ্রীয়) উপত্যকা

স্রোতের ধার কিদ্রোণ উপত্যকা

৭৪০

৭৩০

৭৩০

৭৫০

৭৭০

৭৭০

৭৫০

৭৩০

৭১০

৬৯০

৬৭০

৬২০

৬৪০

৬৬০

৬৮০

৭০০

৭২০

৭৪০

৭৩০

৭১০

৬৯০

৬৭০

নগরটি ধ্বংসের সময় এবং নহিমিয় যখন প্রাচীর পুনর্নির্মাণে নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন তখন সম্ভবত যিরূশালেমের প্রাচীরের আয়তন এইরকমই ছিল

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার