ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • lv অধ্যায় ১০ পৃষ্ঠা ১২৬-১৩৭
  • বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার
  • “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কেন বিয়ে করবেন?
  • কে উত্তম বিবাহসাথি হবে?
  • কীভাবে আপনি এক সফল বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন?
  • কীভাবে আপনি একটা বিয়েকে স্থায়ী করতে পারেন?
  • জীবনসাথি বাছাই করার ক্ষেত্রে ঈশ্বরের নির্দেশনা
    ২০০১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনার বিবাহের এক উত্তমভিত্তি স্থাপন করা
    আপনার পারিবারিক জীবন সুখী করা
  • এক সফল বিয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া
    পারিবারিক সুখের রহস্য
  • বিবাহের মধ্যে “ত্রিগুণ সূত্র” বজায় রাখুন
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
“ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
lv অধ্যায় ১০ পৃষ্ঠা ১২৬-১৩৭
এক সুখী দপতি

অধ্যায় ১০

বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার

“ত্রিগুণ সূত্র শীঘ্র ছিঁড়ে না।”—উপদেশক ৪:১২.

১, ২. (ক) নতুন বিবাহিত দম্পতিদের সম্বন্ধে আমরা হয়তো মাঝে মাঝে কী ভেবে থাকি আর কেন? (খ) এই অধ্যায়ে আমরা কোন প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করব?

আপনি কি বিয়েতে যেতে পছন্দ করেন? অনেকে পছন্দ করে কারণ এই ধরনের অনুষ্ঠান অনেক আনন্দদায়ক হতে পারে। আপনি দেখতে পান যে, বিবাহিত দম্পতিকে সবচেয়ে সুন্দর দেখায়। শুধু তা-ই নয়, তাদের চোখে-মুখে মহা আনন্দের ছাপ ফুটে ওঠে! সেই দিন তারা খুবই সুখী থাকে আর তাদের ভবিষ্যৎ আশা ও প্রতিজ্ঞায় পূর্ণ বলে মনে হয়।

২ তা সত্ত্বেও, এটা স্বীকার করতেই হবে যে, বিয়ে সম্বন্ধে লোকেদের দৃষ্টিভঙ্গি আজকে বিভ্রান্তিকর। যদিও আমরা সদ্য বিবাহিত দম্পতিদের জন্য সর্বোত্তমটাই আশা করে থাকি কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা হয়তো ভেবে থাকি: ‘এই বিয়ে কি সুখী হবে? এটা কি টিকে থাকবে?’ এই প্রশ্নগুলোর উত্তর, স্বামী ও স্ত্রী বিয়ে সম্বন্ধে দেওয়া ঈশ্বরের পরামর্শে নির্ভর ও সেগুলো প্রয়োগ করে কি না, তার উপর নির্ভর করবে। (পড়ুন, হিতোপদেশ ৩:৫, ৬.) ঈশ্বরের প্রেমে অবস্থিতি করার জন্য তাদেরকে তা করতে হবে। আসুন এখন আমরা এই চারটে প্রশ্নের বিষয়ে বাইবেলের উত্তরের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি: কেন বিয়ে করবেন? আপনি যদি বিয়ে করেন, তাহলে সাথি হিসেবে আপনার কাকে বেছে নেওয়া উচিত? কীভাবে আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন? আর বিয়েতে সুখ বজায় রাখার জন্য কী একটা দম্পতিকে সাহায্য করতে পারে?

কেন বিয়ে করবেন?

৩. সামান্য কারণগুলোর জন্য বিয়ে করা কেন বিজ্ঞতার কাজ হবে না?

৩ কেউ কেউ মনে করে যে, সুখের জন্য বিয়ে অপরিহার্য—অর্থাৎ আপনি একজন সাথি খুঁজে না পেলে জীবনে পরিতৃপ্তি বা আনন্দ খুঁজে পাবেন না। এটা একেবারেই সত্য নয়! অবিবাহিত ব্যক্তি যিশু অবিবাহিত থাকাকে প্রদত্ত ক্ষমতা বা একটা দান হিসেবে উল্লেখ করেছেন আর যারা সেটা গ্রহণ করতে পারে, সেই ব্যক্তিদের তা গ্রহণ করতে জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন। (মথি ১৯:১১, ১২) প্রেরিত পৌলও অবিবাহিত থাকার উপকারগুলো সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন। (১ করিন্থীয় ৭:৩২-৩৫) যিশু বা পৌল কেউই এই ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম স্থাপন করেনি; বস্তুতপক্ষে বিবাহ নিষেধ করাকে ‘ভূতগণের শিক্ষামালার’ মধ্যে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। (১ তীমথিয় ৪:১-৩) তা সত্ত্বেও, অবিবাহিত থাকা সেই ব্যক্তিদের অনেক কিছু দিতে পারে, যারা বিক্ষেপ ছাড়াই যিহোবাকে সেবা করতে চায়। তাহলে, সামান্য কারণগুলোর জন্য যেমন, সঙ্গীসাথিদের কাছ থেকে আসা চাপের জন্য বিয়ে করা বিজ্ঞতার কাজ হবে না।

৪. এক সফল বিয়ে সন্তান প্রতিপালনের জন্য কোন ভিত্তিস্থাপন করে?

৪ অন্যদিকে, বিয়ে করার উপযুক্ত কারণগুলো কি রয়েছে? হ্যাঁ, রয়েছে। বিয়েও আমাদের প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক দান। (পড়ুন, আদিপুস্তক ২:১৮.) তাই, এরও কিছু উপকার রয়েছে ও বিভিন্ন আশীর্বাদ নিয়ে আসার সম্ভাবনা আছে। উদাহরণ স্বরূপ, এক সফল বিয়ে পারিবারিক জীবনের জন্য সর্বোত্তম ভিত্তি। সন্তানদের এমন এক স্থায়ী পরিবেশ দরকার, যেখানে বাবা-মা তাদেরকে লালনপালন করবে এবং প্রেম, শাসন ও নির্দেশনা জোগাবে। (গীতসংহিতা ১২৭:৩; ইফিষীয় ৬:১-৪) কিন্তু, সন্তান প্রতিপালন করাই বিয়ে করার একমাত্র কারণ নয়।

৫, ৬. (ক) উপদেশক ৪:৯-১২ পদ অনুসারে, ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের কিছু ব্যাবহারিক উপকার কী? (খ) কীভাবে একটা বিয়ে ত্রিগুণ সূত্রের মতো হতে পারে?

৫ এই অধ্যায়ের মূল শাস্ত্রপদ ও সেইসঙ্গে প্রসঙ্গটা বিবেচনা করুন: “এক জন অপেক্ষা দুই জন ভাল, কেননা তাহাদের পরিশ্রমে সুফল হয়। কারণ তাহারা পড়িলে এক জন আপন সঙ্গীকে উঠাইতে পারে; কিন্তু ধিক্‌ তাহাকে, যে একাকী, কেননা সে পড়িলে তাহাকে তুলিতে পারে, এমন দোসর কেহই নাই। আবার দুই জন একত্র শয়ন করিলে উষ্ণ হয়, কিন্তু এক জন কেমন করিয়া উষ্ণ হইবে? আর যে একাকী, তাহাকে যদ্যপি কেহ পরাস্ত করে, তথাপি দুই জন তাহার প্রতিরোধ করিবে, এবং ত্রিগুণ সূত্র শীঘ্র ছিঁড়ে না।”—উপদেশক ৪:৯-১২.

৬ মূলত, এই শাস্ত্রপদ বন্ধুত্বের মূল্য সম্বন্ধে তুলে ধরে। বিয়ে অবশ্যই সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের অন্তর্ভুক্ত। এই শাস্ত্রপদ যেমন দেখায় যে, এইরকম এক বন্ধন সহযোগিতা, সান্ত্বনা ও সুরক্ষা প্রদান করতে পারে। একটা বিয়ে বিশেষভাবে তখন শক্তিশালী হয়, যদি দু-জন ব্যক্তির এই বন্ধনে আরও কিছু যুক্ত থাকে। এই শাস্ত্রপদ যেমন বলে যে, দ্বিগুণ সূত্র হয়তো ছিঁড়ে ফেলা যেতে পারে। কিন্তু, একত্রে বোনা ত্রিগুণ সূত্র এতটাই শক্ত হবে যে, তা ছিঁড়ে ফেলা অনেক কঠিন। যিহোবাকে খুশি করা যখন স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের প্রধান চিন্তার বিষয় হয়, তখন তাদের বিয়ে সেই ত্রিগুণ সূত্রের মতো হয়। যিহোবা নিজেই হলেন বিয়ের এক অংশ, তাই সেই বন্ধন সত্যিই অনেক শক্তিশালী।

৭, ৮. (ক) যে-অবিবাহিত খ্রিস্টানরা যৌন আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে লড়াই করে, তাদের জন্য পৌল কোন পরামর্শের বিষয় লিখেছেন? (খ) বাইবেল আমাদেরকে বিয়ে সম্বন্ধে কোন বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে?

৭ এ ছাড়া, বিয়ে হল একমাত্র সম্পর্ক, যেখানে যৌন আকাঙ্ক্ষাকে সঠিকভাবে পরিতৃপ্ত করা যেতে পারে। এই সম্পর্কের মধ্যে যৌনসম্পর্ককে উপযুক্তভাবে আনন্দের এক উৎস হিসেবে দেখা হয়। (হিতোপদেশ ৫:১৮) একজন অবিবাহিত ব্যক্তি বাইবেল যেটাকে “সৌকুমার্য্য”—যৌন আকাঙ্ক্ষা প্রথম প্রবল হয়ে ওঠে এমন সময়—বলে অভিহিত করে, তা পার করে ফেলার পরও হয়তো যৌন আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে লড়াই করতে পারেন। নিয়ন্ত্রণ করা না হলে এইরকম আকাঙ্ক্ষা অশুচিতা অথবা অনুপযুক্ত আচরণের দিকে পরিচালিত করতে পারে। অবিবাহিত ব্যক্তিদের জন্য পৌল এই পরামর্শ লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “তাহারা যদি ইন্দ্রিয় দমন করিতে না পারে, তবে বিবাহ করুক; কেননা আগুণে জ্বলা অপেক্ষা বরং বিবাহ করা ভাল।”—১ করিন্থীয় ৭:৯, ৩৬; যাকোব ১:১৫.

৮ যে-কারণই একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করার জন্য অনুপ্রাণিত করুক না কেন, বাস্তববাদী হওয়া উচিত। পৌল যেমনটা বলেছেন যে, যারা বিয়ে করে, তাদের “দৈহিক ক্লেশ ঘটিবে।” (১ করিন্থীয় ৭:২৮) বিবাহিত ব্যক্তিরা এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মুখোমুখি হয়ে থাকে, যেগুলোর মুখোমুখি অবিবাহিত ব্যক্তিরা হবে না। কিন্তু, আপনি যদি বিয়ে করার বিষয়টা বাছাই করেন, তাহলে কীভাবে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোকে হ্রাস এবং আশীর্বাদগুলোকে বৃদ্ধি করতে পারেন? একটা উপায় হচ্ছে, বিজ্ঞতার সঙ্গে একজন সাথি বাছাই করার মাধ্যমে।

কে উত্তম বিবাহসাথি হবে?

৯, ১০. (ক) কীভাবে পৌল দৃষ্টান্তের মাধ্যমে অবিশ্বাসীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধন গড়ে তোলার বিপদ সম্বন্ধে তুলে ধরেছেন? (খ) একজন অবিশ্বাসীকে বিয়ে না করার বিষয়ে ঈশ্বরের পরামর্শ উপেক্ষা করার ফলে প্রায়ই কী ঘটে থাকে?

৯ পৌল অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা নীতি লিখতে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, যেটা একজন বিবাহসাথি বাছাই করার সময় প্রয়োগ করা উচিত: “তোমরা অবিশ্বাসীদের সহিত অসমভাবে যোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না।” (২ করিন্থীয় ৬:১৪) তার দৃষ্টান্ত কৃষি জীবনের এক বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে ছিল। আকার বা শক্তির দিক দিয়ে অনেক আলাদা দুটো পশুকে যদি একই জোয়ালে আবদ্ধ করা হয়, তাহলে দুটো পশুই কষ্ট পাবে। একইভাবে, বিয়ের মাধ্যমে একই জোয়ালে একত্রে আবদ্ধ একজন বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসী ব্যক্তি নিঃসন্দেহে বিরোধের এবং বিভিন্ন চাপের মুখোমুখি হবে। একজন সাথি যদি যিহোবার প্রেমে অবস্থিতি করতে চায় এবং অন্য সাথি যদি সেই বিষয়ে সামান্যই আগ্রহ দেখায় বা কোনো আগ্রহই না দেখায়, তাহলে জীবনে তাদের অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে না এবং এর ফলে সম্ভবত অনেক দুর্দশা আসবে। তাই, পৌল খ্রিস্টানদেরকে “কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করার জোরালো পরামর্শ দিয়েছেন।—১ করিন্থীয় ৭:৩৯.

১০ কোনো কোনো ক্ষেত্রে, অবিবাহিত খ্রিস্টানরা এই উপসংহারে এসেছে যে, বর্তমানে তারা যে-একাকিত্ব বোধ করে, সেটার চেয়ে বরং অসমভাবে জোয়ালে বদ্ধ হওয়া আরও ভালো। কেউ কেউ বাইবেলের পরামর্শ উপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারা এমন একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করে, যিনি যিহোবাকে সেবা করেন না। প্রায়ই এর ফল হয় দুঃখজনক। এই ধরনের ব্যক্তিরা দেখতে পায় যে, তারা এমন একজন ব্যক্তিকে বিয়ে করেছে, যার সঙ্গে তারা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো ভাগ করে নিতে পারে না। এর ফলে তারা যে-একাকিত্ব বোধ করে, তা হয়তো তারা বিয়ের আগে যে-একাকিত্ব বোধ করত, সেটার চেয়ে আরও অনেক বেশি। আনন্দের বিষয় যে, হাজার হাজার অবিবাহিত খ্রিস্টান রয়েছে, যারা এই ক্ষেত্রে ঐশিক পরামর্শের উপর নির্ভর করে এবং অনুগতভাবে সেগুলো মেনে চলে। (পড়ুন, গীতসংহিতা ৩২:৮.) যদিও তারা কোনো একদিন বিয়ে করার আশা করে থাকে, কিন্তু তারা যিহোবা ঈশ্বরকে উপাসনা করে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে থেকে একজন সাথি খুঁজে না পাওয়া পর্যন্ত অবিবাহিত থাকে।

১১. বিজ্ঞতার সঙ্গে একজন বিবাহসাথি বাছাই করার ক্ষেত্রে কী আপনাকে সাহায্য করতে পারে? (এ ছাড়া, “একজন সাথির মধ্যে আমি কোন বিষয়গুলো দেখতে চাই?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)

১১ অবশ্য, যিহোবার প্রতিটা দাস বা দাসী এমনি এমনিই এক উপযুক্ত সাথি হয়ে ওঠে না। আপনি যদি বিয়ে করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে এমন কাউকে খুঁজুন, যার ব্যক্তিত্ব, আধ্যাত্মিক লক্ষ্যগুলো এবং ঈশ্বরের প্রতি ভালোবাসা আপনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস এই বিষয়ে অনেক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছে আর এই ধরনের শাস্ত্রীয় পরামর্শ প্রার্থনাপূর্বক বিবেচনা করা এবং এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সেগুলোকে নির্দেশনা দিতে দেওয়া আপনার জন্য বিজ্ঞতার কাজ হবে।a—পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:১০৫.

১২. বিয়ে সম্বন্ধে অনেক দেশে কোন প্রথা রয়েছে আর বাইবেলের কোন উদাহরণ কিছু নির্দেশনা জোগায়?

১২ অনেক দেশে এই প্রথা রয়েছে যে, বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানের জন্য সাথি বাছাই করে। সেই সংস্কৃতিগুলোতে সাধারণত এটা মেনে নেওয়া হয় যে, এই ধরনের এক গুরুত্বপূর্ণ বাছাইয়ের ব্যাপারে বাবা-মায়েদের আরও বেশি প্রয়োজনীয় প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। এভাবে স্থির করা বিয়ে প্রায়ই সফল হয়ে থাকে, যেমনটা বাইবেলের দিনেও হতো। ইস্‌হাকের জন্য একজন স্ত্রী খুঁজে নিয়ে আসতে তার দাসকে পাঠানোর বিষয়ে অব্রাহামের উদাহরণ সেই বাবা-মায়েদের জন্য সাহায্যকারী, যারা হয়তো বর্তমানে একই অবস্থানে রয়েছে। টাকাপয়সা এবং সামাজিক পদমর্যাদা অব্রাহামের জন্য প্রধান চিন্তার বিষয় ছিল না। এর পরিবর্তে, তিনি ইস্‌হাকের জন্য এমন লোকেদের মধ্যে থেকে একজন স্ত্রী খোঁজার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ ছিলেন, যারা যিহোবাকে উপাসনা করত।b—আদিপুস্তক ২৪:৩, ৬৭.

একজন সাথির মধ্যে আমি কোন বিষয়গুলো দেখতে চাই?

নীতি: “সে দুই জন একাঙ্গ হইবে?” —মথি ১৯:৫.

নিজেকে জিজ্ঞেস করার মতো কিছু প্রশ্ন

  • বিয়ে করার আগে “সৌকুমার্য্য অতীত” হওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?—১ করিন্থীয় ৭:৩৬; ১৩:১১; মথি ১৯:৪, ৫.

  • যদিও আমার বিয়ে করার মতো যথেষ্ট বয়স হয়েছে, তবুও কিছু সময়ের জন্য অবিবাহিত থাকার মাধ্যমে কীভাবে আমি উপকৃত হতে পারি?—১ করিন্থীয় ৭:৩২-৩৫.

  • আমি যদি বিয়ে করার বিষয়টা বাছাই করি, তাহলে কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আমার সম্ভাব্য সাথির যেন যিহোবাকে বিশ্বস্তভাবে সেবা করার এক নথি থাকে?—১ করিন্থীয় ৭:৩৯.

  • কীভাবে এই শাস্ত্রপদগুলো একজন বোনকে সেই গুণাবলি শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে, যেগুলো একজন সাথির মধ্যে থাকা প্রয়োজন?—গীতসংহিতা ১১৯:৯৭; ১ তীমথিয় ৩:১-৭.

  • কীভাবে হিতোপদেশ ৩১:১০-৩১ পদ একজন ভাইকে বিজ্ঞতার সঙ্গে একজন বিবাহসাথি বাছাই করার জন্য সাহায্য করতে পারে?

কীভাবে আপনি এক সফল বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারেন?

১৩-১৫. (ক) হিতোপদেশ ২৪:২৭ পদে প্রাপ্ত নীতিটা কীভাবে এমন একজন যুবককে সাহায্য করতে পারে, যিনি বিয়ের কথা ভাবছেন? (খ) বিয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়ার সময় একজন যুবতী কী করতে পারেন?

১৩ আপনি যদি বিয়ের ব্যাপারে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করে থাকেন, তাহলে নিজেকে আপনার এই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা উচিত, ‘আমি কি আসলেই প্রস্তুত?’ এর উত্তর কেবল প্রেম, যৌনতা, সাহচর্য বা সন্তান প্রতিপালন সম্বন্ধে আপনার অনুভূতির উপর নির্ভর করে না। এর পরিবর্তে, এমন কিছু লক্ষ্য রয়েছে, যেগুলো নিয়ে প্রত্যেক সম্ভাব্য স্বামী বা স্ত্রীর চিন্তা করা উচিত।

১৪ যে-যুবক একজন স্ত্রী খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করছেন, তার এই নীতি সম্বন্ধে গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করা উচিত: “তোমার ক্ষেত-খামার প্রস্তুত করে তুমি বাইরের কাজ শেষ কর, তার পরে তোমার ঘর বাঁধ।” (হিতোপদেশ ২৪:২৭, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন) এটা কোন বিষয়ের উপর জোর দিচ্ছে? তখনকার সময়ে, একজন পুরুষ যদি বিয়ে করার মাধ্যমে পরিবার গঠন করতে চাইতেন, তাহলে নিজেকে তার জিজ্ঞেস করতে হতো, ‘আমি কি আমার স্ত্রীর ও পরে আমাদের যে-সন্তান হতে পারে, তাদের যত্ন নিতে ও সমর্থন করতে প্রস্তুত?’ তাকে প্রথমে কাজ করতে হতো, তার ক্ষেতের বা শস্যের যত্ন নিতে হতো। আজকেও একই নীতি প্রযোজ্য। যে-পুরুষ বিয়ে করতে চান, তাকে প্রথমে তার দায়িত্ব গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি শারীরিকভাবে সমর্থ, ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কাজ করতে হবে। ঈশ্বরের বাক্য উল্লেখ করে যে, যে-পুরুষ তার পরিবারের শারীরিক, আবেগগত ও আধ্যাত্মিক চাহিদাগুলোর যত্ন নেন না, তিনি অবিশ্বাসী অপেক্ষা অধম!—পড়ুন, ১ তীমথিয় ৫:৮.

১৫ যে-নারী বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন, তিনিও একইভাবে বেশ কিছু গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করার ব্যাপারে একমত। বাইবেল এমন কিছু দক্ষতা ও গুণের প্রশংসা করে, যেগুলো একজন স্ত্রীর হয়তো তার স্বামীকে সাহায্য করার ও ঘরের যত্ন নেওয়ার সময় প্রয়োজন হতে পারে। (হিতোপদেশ ৩১:১০-৩১) বিয়ের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন দায়িত্ব গ্রহণ করার প্রস্তুতি না নিয়েই যে-পুরুষ ও নারীরা তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করে, তারা আসলে স্বার্থপর হয়ে থাকে। তাদের সম্ভাব্য সাথিকে তারা যা দিতে পারে, সেটা নিয়ে চিন্তা করে না। তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, যারা বিয়ে করার কথা চিন্তা করছে, তাদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে প্রস্তুত হতে হবে।

১৬, ১৭. যারা বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, তাদের কোন শাস্ত্রীয় নীতিগুলোর উপর ধ্যান করা উচিত?

১৬ বিয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সঙ্গে ঈশ্বর স্বামী ও স্ত্রীকে যে-ভূমিকা প্রদান করেছেন, সেটা নিয়ে ধ্যান করা জড়িত। একজন পুরুষকে জানতে হবে যে, খ্রিস্টীয় পরিবারের মস্তক হওয়ার অর্থ কী। তবে এই ভূমিকা একজন স্বৈরাচারী হিসেবে কাজ করার কোনো লাইসেন্স নয়। বরং, যিশু যে-উপায়ে তাঁর মস্তকপদ ব্যবহার করেছিলেন, সেটা তাকে অনুকরণ করতে হবে। (ইফিষীয় ৫:২৩) একইভাবে, একজন খ্রিস্টান নারীকেও স্ত্রীর মর্যাদাপূর্ণ ভূমিকা সম্বন্ধে বুঝতে হবে। তিনি কি তার ‘স্বামীর ব্যবস্থার’ প্রতি বশীভূত থাকতে ইচ্ছুক হবেন? (রোমীয় ৭:২) ইতিমধ্যেই তিনি যিহোবা ও খ্রিস্টের ব্যবস্থার অধীন। (গালাতীয় ৬:২) ঘরের মধ্যে তার স্বামীর কর্তৃত্ব আরেকটা ব্যবস্থাকে প্রবর্তন করে। যখন একজন অসিদ্ধ মানুষের কর্তৃত্বের বশীভূত থাকার বিষয়টা আসে, তখন তিনি কি সমর্থন করবেন ও বশীভূত হবেন? সেই সম্ভাবনা যদি সন্তোষজনক না হয়, তাহলে তার বিয়ে করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

১৭ অধিকন্তু, প্রত্যেক সাথিকে অপর সাথির বিশেষ চাহিদাগুলোর প্রতি যত্ন নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। (পড়ুন, ফিলিপীয় ২:৪.) পৌল লিখেছিলেন: “তোমরাও প্রত্যেকে আপন আপন স্ত্রীকে তদ্রূপ আপনার মত প্রেম কর; কিন্তু স্ত্রীর উচিত যেন সে স্বামীকে ভয় [“শ্রদ্ধা,” জুবিলী বাইবেল] করে।” ঐশিক অনুপ্রেরণায় পৌল বুঝতে পেরেছিলেন, পুরুষের এই বিষয়টা অনুভব করার এক বিশেষ চাহিদা রয়েছে যে, তার প্রতি স্ত্রীর শ্রদ্ধা রয়েছে। আর স্বামী যে তাকে ভালোবাসে, তা অনুভব করার এক বিশেষ চাহিদা স্ত্রীর রয়েছে।—ইফিষীয় [এফেষীয়] ৫:২১-৩৩.

বিয়ের উদ্দেশ্যে মেলামেশা করার সময় অনেক দম্পতি বিজ্ঞতার সঙ্গে একজন অভিভাবকের ব্যবস্থা করে থাকে

১৮. বিয়ের উদ্দেশ্যে মেলামেশা করার সময় দম্পতিদেরকে কেন ইন্দ্রিয়দমন করা উচিত?

১৮ তাই, বিয়ের উদ্দেশ্যে মেলামেশা কেবল মজা করার এক সময় নয়। একজন নারী ও পুরুষের জন্য এই সময়টা হল, কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে সঠিকভাবে আচরণ করা যায়, তা শেখার এবং বিয়ে করা বিজ্ঞ বাছাই হবে কি না, তা জানার সময়। এ ছাড়া, এটা ইন্দ্রিয়দমন করারও সময়! শারীরিকভাবে ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রলোভন অনেক জোরালো হতে পারে—আসলে এই আকর্ষণ খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু, যারা প্রকৃতই পরস্পরকে ভালোবাসে, তারা এমন যেকোনো কাজ করা এড়িয়ে চলবে, যা প্রিয় ব্যক্তিকে আধ্যাত্মিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। (১ থিষলনীকীয় ৪:৬) তাই, আপনি যদি এখন বিয়ের উদ্দেশ্যে মেলামেশা করে থাকেন, তাহলে ইন্দ্রিয়দমন করুন; এই গুণের জন্য আপনি সারাজীবন ধরে উপকার লাভ করতে পারবেন, তা আপনি বিয়ে করুন বা না-ই করুন।

কীভাবে আপনি একটা বিয়েকে স্থায়ী করতে পারেন?

১৯, ২০. বিয়ে সম্বন্ধে একজন খ্রিস্টানের দৃষ্টিভঙ্গি কীভাবে আজকের জগতের অনেকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলাদা হওয়া উচিত? উদাহরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা করুন।

১৯ কোনো দম্পতিকে যদি তাদের বিয়ে স্থায়ী করতে হয়, তাহলে প্রতিশ্রুতি সম্বন্ধে তাদের এক সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে। উপন্যাস ও চলচ্চিত্রগুলোতে প্রায়ই একটা বিয়েতে সুখময় সমাপ্তি ঘটে, যা লোকেরা সাধারণত আকাঙ্ক্ষা করে থাকে। কিন্তু, বাস্তব জীবনে বিয়ে কোনো সমাপ্তি নয়; এটা হল এক শুরু—এমনকিছুর শুরু, যা স্থায়ী থাকার উদ্দেশ্যে যিহোবা ব্যবস্থা করেছিলেন। (আদিপুস্তক ২:২৪) দুঃখজনক যে, এটা আজকের জগতের দৃষ্টিভঙ্গি নয়। কিছু কিছু সংস্কৃতিতে, লোকেরা বিয়েকে দুটো দড়ি দিয়ে বাঁধা একটা গিঁট হিসেবে দেখে থাকে। তারা হয়তো বুঝতে পারে না যে, এই দৃষ্টান্ত কত উপযুক্তভাবে বিয়ে সম্বন্ধে সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরে। কীভাবে? যদিও একটা উপযুক্ত গিঁটের প্রয়োজন অনুযায়ী শক্ত হওয়া উচিত, তবে আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা হল এটাকে যেন সহজে বাঁধা ও খোলা যেতে পারে।

২০ আজকে অনেকে বিয়েকে ক্ষণস্থায়ী হিসেবে দেখে থাকে। তারা সহজেই এতে আবদ্ধ হয় কারণ তারা মনে করে যে, এটা তাদের চাহিদাগুলো পূরণ করবে কিন্তু তারা এইরকমটা আশা করে থাকে যে, যখনই এটাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বলে মনে হবে, তখনই তারা যেন বিয়েকে শেষ করে দিতে পারে। অথচ, বিয়ের মতো একটা বন্ধনের জন্য বাইবেল যে-দৃষ্টান্ত ব্যবহার করে, তা মনে করে দেখুন আর তা হল সূত্র। উপদেশক ৪:১২ পদে যে-ইব্রীয় শব্দটাকে “সূত্র” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটা দড়িকেও নির্দেশ করতে পারে। জাহাজের জন্য নির্মিত দড়িকে এমনভাবে তৈরি করা হয়, যেন তা ক্ষয় হয়ে না যায় কিংবা ছিঁড়ে না যায় বরং প্রচণ্ড ঝড়ের মধ্যেও যেন টিকে থাকে। একইভাবে, বিয়েকে টিকে থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে। মনে করে দেখুন যে, যিশু বলেছিলেন: “ঈশ্বর যাহার যোগ করিয়া দিয়াছেন, মনুষ্য তাহার বিয়োগ না করুক।” (মথি ১৯:৬) আপনি যদি বিয়ে করেন, তাহলে বিয়ে সম্বন্ধে আপনাকেও একই দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে। এই ধরনের প্রতিশ্রুতি কি বিয়েকে একটা বোঝা করে তোলে? না।

২১. একজন স্বামী ও স্ত্রীকে পরস্পরের প্রতি কোন মনোভাব বজায় রাখতে হবে আর কী তাদেরকে তা করার জন্য সাহায্য করতে পারে?

২১ একজন স্বামী ও স্ত্রীকে পরস্পরের প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেকে যদি অপরের উত্তম গুণাবলি ও প্রচেষ্টার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করে, তাহলে বিয়ে হবে আনন্দ এবং সতেজতার এক উৎস। একজন অসিদ্ধ সাথি সম্বন্ধে এইরকম এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা কি অবাস্তব? যিহোবা কখনো অবাস্তববাদী নন, তা সত্ত্বেও আমাদের প্রতি এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখার বিষয়ে আমরা তাঁর উপর নির্ভর করতে পারি। গীতরচক জিজ্ঞেস করেছিলেন: “হে সদাপ্রভু, তুমি যদি অপরাধ সকল ধর, তবে, হে প্রভু, কে দাঁড়াইতে পারিবে?” (গীতসংহিতা ১৩০:৩) স্বামী ও স্ত্রীকে পরস্পরের প্রতি একইরকম ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও ক্ষমা করার মনোভাব রাখতে হবে।—পড়ুন, কলসীয় ৩:১৩.

২২, ২৩. কীভাবে অব্রাহাম ও সারা আজকে বিবাহিত দম্পতিদের জন্য এক উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছে?

২২ বিয়ে আরও বেশি সুখ ও পরিতৃপ্তি নিয়ে আসতে পারে, যখন তা বছরের পর বছর ধরে টিকে থাকে। বাইবেল আমাদেরকে অব্রাহাম ও সারার বিয়ে সম্বন্ধে জানায়, যখন তারা এক বয়স্ক দম্পতি ছিল। তাদের জীবন কোনোভাবেই কষ্ট এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা মুক্ত ছিল না। সমৃদ্ধশালী শহর ঊরের আরামদায়ক বাড়ি ত্যাগ করা এবং তার বাকি জীবন তাঁবুতে বাস করা সম্ভবত ৬০-এর কোঠায় থাকা একজন নারী সারার জন্য কেমন ছিল, তা কল্পনা করে দেখুন। তা সত্ত্বেও, তিনি তার স্বামীর মস্তকপদের প্রতি বশীভূত ছিলেন। অব্রাহামের একজন প্রকৃত পরিপূরক ও সাহায্যকারী হিসেবে তিনি তার স্বামীর সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করার জন্য সম্মানের সঙ্গে সাহায্য করেছিলেন। আর তার বশ্যতা উপর উপর ছিল না। এমনকী “মনে মনে” তিনি তার স্বামীকে “নাথ” বা প্রভু বলে উল্লেখ করেছিলেন। (আদিপুস্তক ১৮:১২; ১ পিতর ৩:৬) অব্রাহামের প্রতি তার সম্মান হৃদয় থেকে এসেছিল।

২৩ অবশ্য, এর অর্থ এই নয় যে, অব্রাহাম ও সারা সবসময় সমস্ত ব্যাপারে একমত ছিল। সারা একবার এমন পরামর্শ দিয়েছিলেন, যা অব্রাহামকে “অতি অসন্তুষ্ট” করেছিল। তা সত্ত্বেও, যিহোবার নির্দেশনায় অব্রাহাম নম্রভাবে তার স্ত্রীর কথা শুনেছিলেন, যা তার পরিবারের জন্য আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিল। (আদিপুস্তক ২১:৯-১৩) আজকে স্বামী ও স্ত্রীরা, এমনকী যারা বিয়ের পর কয়েক দশক পার করেছে, তারাও এই ঈশ্বরভয়শীল দম্পতির কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে।

২৪. কোন ধরনের বিয়েগুলো যিহোবা ঈশ্বরের সম্মান নিয়ে আসে আর কেন?

২৪ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে হাজার হাজার সুখী বিয়ে রয়েছে—যে-বিয়েগুলোতে স্ত্রী তার স্বামীকে গভীর সম্মান করেন, স্বামী তার স্ত্রীকে প্রেম ও সমাদর করেন এবং দু-জনেই সমস্ত বিষয়ে যিহোবার ইচ্ছাকে প্রথমে রাখার জন্য একত্রে কাজ করে। আপনি যদি বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি যেন আপনার সাথিকে বিজ্ঞতার সঙ্গে বাছাই করেন, বিয়ের জন্য উপযুক্ত প্রস্তুতি নেন আর এমন এক শান্তিপূর্ণ ও প্রেমময় বিয়ের জন্য কাজ করেন, যা যিহোবা ঈশ্বরের সম্মান নিয়ে আসে। সেই ক্ষেত্রে আপনার বিয়ে নিশ্চিতভাবেই আপনাকে ঈশ্বরের প্রেমে অবস্থিতি করতে সাহায্য করবে।

a যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত পারিবারিক সুখের রহস্য বইয়ের ২ অধ্যায়টা দেখুন।

b কিছু বিশ্বস্ত কুলপতির একাধিক স্ত্রী ছিল। যিহোবা যখন সেই কুলপতিদের ও মাংসিক ইস্রায়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তখন তিনি বহুবিবাহকে মেনে নিয়েছিলেন। তবে তিনি এই ব্যবস্থা প্রবর্তন করেননি বরং এটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন। যাইহোক, খ্রিস্টানরা মনে রাখে যে, যিহোবা তাঁর উপাসকদের মধ্যে বহুবিবাহকে আর অনুমোদন করেন না।—মথি ১৯:৯; ১ তীমথিয় ৩:২.

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার