জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জানুয়ারি ৬-১২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | আদিপুস্তক ১–২
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫২৭-৫২৮, ইংরেজি
সৃষ্টি
প্রথম দিন ঈশ্বর যখন বলেছিলেন, “দীপ্তি হউক,” তখন স্পষ্টতই বিচ্ছুরিত আলো মেঘের স্তর ভেদ করেছিল, যদিও তখনও ভূপৃষ্ঠ থেকে আলোর উৎস স্পষ্টভাবে বোঝা যায়নি। খুব সম্ভবত এটা ছিল এক ধীর প্রক্রিয়া, যেমনটা জে. ডব্লিউ. ওয়াট্স-এর অনুবাদ ইঙ্গিত করে: “আর ধীরে ধীরে আলো ফুটল।” (আদি ১:৩, আ ডিসটিংটিভ ট্রান্সলেশন অভ্ জেনেসিস) ঈশ্বর আলো ও অন্ধকারের মধ্যে এক বিভেদ তৈরি করেন আর আলোকে দিন ও অন্ধকারকে রাত নাম দেন। এটা ইঙ্গিত দেয়, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে আবর্তন করার পাশাপাশি নিজের অক্ষ বরাবর আবর্তন করছিল যাতে এটার পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধে নির্দিষ্ট সময় পর পর আলো ও অন্ধকার হতে পারে।—আদি ১:৩, ৪.
দ্বিতীয় দিন ঈশ্বর “জলকে দুই ভাগে” পৃথক করার মাধ্যমে বিতান গঠন করলেন। কিছুটা জল ভূমিতেই থাকল কিন্তু অধিকাংশ জল ভূপৃষ্ঠের অনেক উপরে উঠানো হল আর এই দুইয়ের মাঝে বিতান গঠিত হল। ঈশ্বর এই বিতানের নাম রাখলেন আকাশমণ্ডল, তবে এটা পৃথিবীর সাপেক্ষে কারণ কোথাও এমনটা বলা নেই, বিতানের উপরে যে-জল ছিল, তা তারা অথবা মহাকাশের অন্য কোনো বস্তুকে পরিবেষ্টিত করেছিল।—আদি ১:৬-৮. দেখুন, বিতান।
তৃতীয় দিনে ঈশ্বরের অলৌকিক শক্তির সাহায্যে পৃথিবীর জলকে একত্রিত করা হয় আর তখন শুকনো ভূমি দেখা দেয়, ঈশ্বর যেটার নাম ভূমি রেখেছিলেন। এই দিনই, কোনো কাকতালীয় ঘটনা কিংবা বিবর্তনের মাধ্যমে নয় বরং ঈশ্বর নিজে পদার্থের অণুর মধ্যে জীবনীশক্তির সঞ্চার করলেন আর ফল স্বরূপ তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ, শস্য ও শাকসবজির গাছ এবং বিভিন্ন ফলের গাছ অস্তিত্বে এল। প্রধানত এই তিন ধরনের উদ্ভিদের প্রতিটি প্রজাতি “স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী” বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম ছিল।—আদি ১:৯-১৩.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫২৮ অনু. ৫-৮, ইংরেজি
সৃষ্টি
এটাও লক্ষ্যণীয় যে, আদিপুস্তক ১:১৬ পদে ইব্রীয় ক্রিয়াপদ বারা ব্যবহার করা হয়নি, যেটার অর্থ ‘সৃষ্টি করা।’ এর পরিবর্তে, ইব্রীয় শব্দ আসা ব্যবহার করা হয়েছে, যেটার অর্থ ‘নির্ম্মাণ করা।’ যেহেতু সূর্য, চাঁদ ও তারা, এই সমস্তই আদিপুস্তক ১:১ পদে উল্লেখিত ‘আকাশমণ্ডলের’ অন্তর্ভুক্ত, তাই এগুলো চতুর্থ দিনের অনেক আগেই সৃষ্টি করা হয়েছিল। চতুর্থ দিনে, ঈশ্বর এই অর্থে এই মহাজাগতিক বস্তুগুলোকে “নির্ম্মাণ” করেছিলেন যে, সেগুলোর সঙ্গে ভূপৃষ্ঠ ও বিতানের এক সম্পর্ক তৈরি করলেন। বাইবেল যখন বলে, “পৃথিবীতে দীপ্তি দিবার জন্য, . . . ঈশ্বর ঐ জ্যোতিঃসমূহকে আকাশমণ্ডলের বিতানে স্থাপন করিলেন,” তখন তা ইঙ্গিত দেয়, সেই সময় থেকে এগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিল, যেন সেগুলো আকাশমণ্ডলের বিতানে রয়েছে। এ ছাড়া, এই জ্যোতিষ্ক মণ্ডল ‘ঋতুর জন্য এবং দিবসের ও বৎসরের জন্য চিহ্ন’ ছিল আর এভাবে পরবর্তীকালে সেগুলো বিভিন্ন উপায়ে মানুষের জন্য নির্দেশক হিসেবে কাজ করতে শুরু করে।—আদি ১:১৪.
পঞ্চম দিনের উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, সেই দিন পৃথিবীতে প্রথম প্রাণী সৃষ্টি করা হয়। ঈশ্বরের উদ্দেশ্য এটা ছিল না যে, তিনি কেবলমাত্র একটা প্রাণী সৃষ্টি করবেন এবং তারপর সেটা বিবর্তিত হতে থাকবে বরং তিনি নিজের শক্তি ব্যবহার করে আক্ষরিকভাবেই যাবতীয় জীবন্ত প্রাণী সৃষ্টি করেছিলেন। বাইবেল বলে: “ঈশ্বর বৃহৎ তিমিগণের, ও যে নানাজাতীয় জঙ্গম প্রাণিবর্গে জল প্রাণিময় আছে, সে সকলের, এবং নানাজাতীয় পক্ষীর সৃষ্টি করিলেন।” তিনি নিজে যা যা সৃষ্টি করেছিলেন, তাতে খুশি হয়ে ঈশ্বর তাদের আশীর্বাদ করেছিলেন আর এক অর্থে তাদের বলেছিলেন, তোমরা “বহুবংশ হও।” এটা এইজন্য সম্ভব ছিল, কারণ ঈশ্বর বিভিন্ন বর্গের এই প্রাণীদের ক্ষমতা দিয়েছিলেন, যেন তারা “নানাজাতীয়, [“নিজের নিজের জাতি অনুসারে,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]” বংশবৃদ্ধি করতে পারে।—আদি ১:২০-২৩.
ষষ্ঠ দিনে, “ঈশ্বর স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী বন্য পশু ও স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী গ্রাম্য পশু ও স্ব স্ব জাতি অনুযায়ী যাবতীয় ভূচর সরীসৃপ নির্ম্মাণ করিলেন।” এই কাজও তাঁর অন্যান্য সৃষ্টির কাজের মতোই উত্তম ছিল।—আদি ১:২৪, ২৫.
সৃষ্টির ষষ্ঠ দিনের শেষের দিকে ঈশ্বর একেবারে নতুন ধরনের প্রাণী সৃষ্টি করলেন, যারা স্বর্গদূতদের চেয়ে নিম্ন শ্রেণির হলেও পশুপাখির চেয়ে উন্নত ছিল। এটা ছিল মানুষ, যাকে ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতে ও তাঁর মতো করে সৃষ্টি করা হয়েছিল। যদিও আদিপুস্তক ১:২৭ পদ মানবজাতি সম্বন্ধে বলে, ‘ঈশ্বর পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন,’ কিন্তু এই ঘটনারই আরেকটা বিবরণ বলে, যিহোবা ঈশ্বর মাটির ধুলো থেকে মানুষকে নির্মাণ করলেন, তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন আর তখন সেই মানুষ জীবিত প্রাণী হয়ে উঠল, যাকে পরমদেশ গৃহ ও খাবার জুগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সৃষ্টির এই কাজে যিহোবা পৃথিবীর বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করেছিলেন এবং পুরুষকে সৃষ্টি করার পর তিনি আদমের পাঁজরের একটা হাড় নিয়ে তা থেকে নারীকে সৃষ্টি করেছিলেন। (আদি ২:১৮-২৫) নারীকে সৃষ্টি করার সঙ্গেসঙ্গে পুরুষ এক ‘জাতি’ হিসেবে সম্পূর্ণ হয়ে ওঠে।—আদি ৫:১, ২.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১৫ ৬/১ ৫, ইংরেজি
আপনার জীবনে বিজ্ঞানের প্রভাব
পৃথিবী ও মহাবিশ্বের বয়স
বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই পৃথিবীর বয়স প্রায় ৪০০ কোটি বছর আর এই মহাবিশ্বের জন্ম হয়েছিল প্রায় ১৩০০ কোটি থেকে ১৪০০ কোটি বছর আগে। বাইবেল মহাবিশ্ব সৃষ্টির কোনো তারিখ জানায় না। বাইবেলে কোথাও বলা নেই, এই পৃথিবী মাত্র কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। বাইবেলের একেবারে প্রথম পদ বলে: “আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করিলেন।” (আদিপুস্তক ১:১) এই মন্তব্য বোঝায়, প্রতিষ্ঠিত বৈজ্ঞানিক সূত্র অনুসারে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের বয়স নির্ধারণ করতে পারেন।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫২, ইংরেজি
যিশু খ্রিস্ট
সহসৃষ্টিকর্তা নন। পুত্র সৃষ্টির কাজে সাহায্য করেন ঠিকই কিন্তু এটা তাঁকে তাঁর পিতার সঙ্গে সহসৃষ্টিকর্তা করে তোলেনি। সৃষ্টির শক্তি ঈশ্বরের কাছ থেকে তাঁর পবিত্র আত্মা অর্থাৎ সক্রিয় শক্তির মাধ্যমে এসেছিল। (আদি ১:২; গীত ৩৩:৬) আর যেহেতু যিহোবাই হলেন জীবনের উৎস, তাই দৃশ্য-অদৃশ্য সমস্ত জীবিত প্রাণী জীবনের জন্য তাঁর কাছে ঋণী। (গীত ৩৬:৯) এই পুত্র সহসৃষ্টিকর্তা নন বরং সৃষ্টিকর্তা যিহোবার কর্মী বা সাহায্যকারী, যাঁর সাহায্যে তিনি কাজ করেছিলেন। পুরো শাস্ত্র ও সেইসঙ্গে যিশু নিজে সৃষ্টির কৃতিত্ব যিহোবাকে প্রদান করেছেন।—মথি ১৯:৪-৬; দেখুন, সৃষ্টি।
জানুয়ারি ১৩-১৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | আদিপুস্তক ৩–৫
“প্রথম মিথ্যা কথার মারাত্মক পরিণতি”
যিহোবার উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবেই!
৯ শয়তান দিয়াবল একটা সাপ ব্যবহার করে হবাকে তার পিতা যিহোবার অবাধ্য হওয়ার জন্য প্ররোচিত করেছিল। (পড়ুন, আদিপুস্তক ৩:১-৫; প্রকা. ১২:৯) শয়তান এইরকম একটা বিতর্কের বিষয় উত্থাপন করতে চেয়েছিল, ঈশ্বর তাঁর মানবসন্তানদের সেই ‘উদ্যানের কোন বৃক্ষের ফল খাইবার’ অনুমতি দেননি। যেন সে হবাকে বলতে চাইছিল: ‘তার মানে, তুমি নিজের ইচ্ছেমতো কিছুই করতে পারবে না?’ এরপর সে হবাকে বলেছিল: “কোন ক্রমে মরিবে না।” এটা একটা মিথ্যা কথা ছিল। তারপর, সে হবাকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছিল, ঈশ্বরের কথা শোনার কোনো প্রয়োজন তার নেই। শয়তান বলেছিল: “ঈশ্বর জানেন, যে দিন তোমরা তাহা খাইবে, সেই দিন তোমাদের চক্ষু খুলিয়া যাইবে।” শয়তান আসলে এটা বলতে চাইছিল, যিহোবা তাদের সেই ফল খেতে দিতে চান না কারণ সেই ফল খেলে তারা কোনো বিশেষ জ্ঞান লাভ করবেন। সব শেষে, শয়তান এই মিথ্যা প্রতিজ্ঞা করেছিল: “তোমরা ঈশ্বরের সদৃশ হইয়া সদসদ্-জ্ঞান প্রাপ্ত হইবে।”
প্রথম মানব দম্পতির কাছ থেকে আমরা যা শিখতে পারি
হবা কি পাপ করা থেকে বিরত থাকতে পারত না? অবশ্যই পারত! তার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করুন। সাপ তাকে যা বলেছিল, তা ছিল ঈশ্বর ও আদমের কথার উলটো। আপনি যাকে ভালোবাসেন ও যার ওপর ভরসা রাখেন অচেনা কেউ এসে যদি তার সম্বন্ধে আপনাকে খারাপ কিছু বলে, তা হলে আপনি কী করবেন? হবা ঘৃণায় সাপের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বা তাকে তাড়িয়ে দিতে পারত অথবা সে বলতে পারত যে, সে তার কথা শুনতে চায় না। সাপ কে যে, সে ঈশ্বরের ন্যায্যতা ও তার স্বামীর কথাকে চ্যালেঞ্জ করে? মস্তক ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তার স্বামীর সঙ্গে হবার পরামর্শ করে নেওয়া উচিত ছিল। কেউ যদি আমাদেরকে ঈশ্বরের দেওয়া নির্দেশের বিপরীত কোন কথা বলে, তাহলে আমাদেরও এমনটাই করা উচিত। কিন্তু, হবা ওই প্রতারকের কথা বিশ্বাস করেছিল আর কোনটা ভাল ও কোনটা খারাপ, তা সে নিজেই ঠিক করতে চেয়েছিল। এই বিষয়টা নিয়ে সে যত বেশি ভেবেছিল, সেটার প্রতি সে তত বেশি আকৃষ্ট হয়েছিল। একটা ভুল ইচ্ছাকে সঙ্গেসঙ্গে মন থেকে তাড়িয়ে না দিয়ে বা পরিবারের মস্তকের সঙ্গে কোনোরকম কথা না বলে বরং তা মনে পুষে রেখে কত বড় ভুলই না সে করেছিল!—১ করিন্থীয় ১১:৩; যাকোব ১:১৪, ১৫.
আদম তার স্ত্রীর কথা শোনে
শীঘ্রই হবা তার সঙ্গে পাপ করার জন্য আদমকেও প্ররোচিত করে। হবাকে কোনো কিছু না বলে আদম যে সঙ্গেসঙ্গে রাজি হয়ে গিয়েছিল, সেটাকে আমরা কী বলব? (আদিপুস্তক ৩:৬, ১৭) আদম বিশ্বস্ত থাকবে কী থাকবে না, তা নিয়ে পরীক্ষার মুখোমুখি হয়েছিল। সে কি তার স্রষ্টার বাধ্য থাকবে, যিনি তাকে সমস্ত কিছু এমনকী তার প্রিয়তমা স্ত্রী হবাকেও দিয়েছেন? এখন সে কি ঈশ্বরের কথা শুনবে? নাকি তার স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গে সে-ও পাপ করবে? আদম খুব ভাল করেই জানত, যে আশা নিয়ে হবা ওই নিষিদ্ধ গাছের ফল খেয়েছিল তা ছিল মিথ্যা আশা। ঈশ্বরের আত্মার অনুপ্রেরণায় প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “আদম প্রবঞ্চিত হইলেন না, কিন্তু নারী প্রবঞ্চিতা হইয়া অপরাধে পতিতা হইলেন।” (১ তীমথিয় ২:১৪) অর্থাৎ আদম ইচ্ছে করে ঈশ্বরের অবাধ্য হয়েছিল। এই অবস্থাকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে, সেই কথা বিশ্বাস করার চেয়ে স্ত্রীর কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ভয়ই আদমের মধ্যে বেশি কাজ করেছিল।
প্রহরীদুর্গ ১২ ৯/১ ৪ অনু. ২, ইংরেজি
ঈশ্বর কি নারীদের জন্য সত্যিই চিন্তা করেন?
ঈশ্বর কি নারীদের অভিশাপ দিয়েছেন?
না। বরং ঈশ্বর ‘সেই পুরাতন সর্প, যাহাকে দিয়াবল [অপবাদক] বলা যায়,’ তাকেই ‘শাপ’ দিয়েছেন। (প্রকাশিত বাক্য ১২:৯; আদিপুস্তক ৩:১৪) ঈশ্বর যখন বলেছিলেন, আদম তার স্ত্রীর উপর “কর্ত্তৃত্ব” করবেন, তখন তিনি এটা বোঝাননি যে, পুরুষদের মাধ্যমে নারীদের দমন করে রাখার বিষয়টা তিনি অনুমোদন করছেন। (আদিপুস্তক ৩:১৬) তিনি কেবল প্রথম দম্পতির উপর পাপের দুঃখজনক পরিণামের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন।
আদিপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো—প্রথম ভাগ
৩:১৭—কীভাবে ভূমি অভিশপ্ত হয়েছিল আর তা কত সময়ের জন্য? ভূমির ওপর অভিশাপ ঘোষণার অর্থ সেখানে চাষাবাদ করা খুবই কষ্টকর হবে। কন্টক ও শেয়ালকাঁটা সহ অভিশপ্ত ভূমির প্রভাব আদমের বংশধররা এমন গভীরভাবে উপলব্ধি করেছিল যে, নোহের বাবা লেমক বলেছিলেন ‘সদাপ্রভু কর্ত্তৃক অভিশপ্ত ভূমি হইতে আমাদের হস্তের ক্লেশ হয়।’ (আদিপুস্তক ৫:২৯) জলপ্লাবনের পরে যিহোবা নোহ ও তার ছেলেদের আশীর্বাদ করেছিলেন, তারা পৃথিবী পরিপূর্ণ করবে বলে তাঁর উদ্দেশ্য ঘোষণা করেন। (আদিপুস্তক ৯:১) ভূমির ওপর ঈশ্বরের অভিশাপ আপাতদৃষ্টিতে তুলে নেওয়া হয়েছিল।—আদিপুস্তক ১৩:১০.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১৮৬, ইংরেজি
প্রসব বেদনা
সন্তান প্রসব করার সঙ্গে ক্লেশ জড়িত। প্রথম নারী হবা পাপ করার পর ঈশ্বর তাকে বলেছিলেন, সন্তানের জন্ম দেওয়ার ফলে কী হবে। তিনি যদি বাধ্য থাকতেন, তা হলে ঈশ্বরের আশীর্বাদ সবসময় তার উপর থাকত আর সন্তানের জন্ম দেওয়া অপরিমেয় আনন্দের এক বিষয় হতো কারণ “সদাপ্রভুর আশীর্ব্বাদই ধনবান করে, এবং তিনি তাহার সহিত মনোদুঃখ দেন না।” (হিতোপদেশ ১০:২২) কিন্তু এখন দেহ নিখুঁতভাবে কাজ না করায় এই প্রক্রিয়া বেদনাদায়ক হয়। একইভাবে ঈশ্বর বলেছেন (যে অর্থে তিনি কোনো বিষয়কে ঘটার অনুমতি দিলে, সেটাকে তিনি করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়): “আমি তোমার গর্ব্ভবেদনা অতিশয় বৃদ্ধি করিব, তুমি বেদনাতে সন্তান প্রসব করিবে।”—আদি ৩:১৬.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১৯২ অনু. ৫, ইংরেজি
লেমক
লেমক তার স্ত্রীদের জন্য (আদি ৪:২৩, ২৪) যে-কবিতা লিখেছিলেন, সেটা সেই সময়ের দৌরাত্ম্যপূর্ণ পরিবেশকে তুলে ধরে। লেমক তার কবিতায় বলেছেন: “তোমরা আমার কথা শুন, লেমকের ভার্য্যাদ্বয়, আমার বাক্যে কর্ণপাত কর; কারণ আমি আঘাতের পরিশোধে পুরুষকে, প্রহারের পরিশোধে যুবাকে বধ করিয়াছি।” স্পষ্টতই এখানে লেমক নিজের পক্ষ সমর্থন করে একটা ঘটনা তুলে ধরছেন এবং বলছেন এটা পরিকল্পিত খুনের ঘটনা নয়, যেমনটা কয়িনের ক্ষেত্রে ছিল। লেমক দাবি করেন, আত্মরক্ষার জন্যই তিনি সেই ব্যক্তিকে হত্যা করেছেন, যে তাকে আঘাত করে আহত করেছিল। তাই, এই কবিতার মাধ্যমে লেমক অনুরোধ করেছিলেন যে, তিনি তার আক্রমণকারীকে হত্যা করেছেন বলে অন্য কেউ যেন সেটার প্রতিশোধ না নেন।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৩৮ অনু. ২, ইংরেজি
ঈশ্বরনিন্দা
জলপ্লাবনের পূর্বে ইনোশের সময়ে লোকেরা যে “সদাপ্রভুর নামে ডাকিতে” শুরু করেছিল, তা নিশ্চয়ই সঠিক ও উপযুক্ত উপায়ে ছিল না, কারণ নিঃসন্দেহে এর অনেক আগেই হেবল ঈশ্বরের নাম ব্যবহার করে তাঁকে ডাকতেন। (আদি ৪:২৬; ইব্রীয় ১১:৪) কোনো কোনো পণ্ডিত ব্যক্তি যেমন মনে করেন, এভাবে ঈশ্বরের নামে ডাকা যদি আসলে ঈশ্বরের নামের অপব্যবহার হয় এবং কোনো মানুষকে কিংবা মানুষের তৈরি দেবতাকে যিহোবা নামে ডাকা হয়, তা হলে এটা ছিল ঈশ্বরনিন্দার এক কাজ।—দেখুন, ইনোশ।
জানুয়ারি ২০-২৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | আদিপুস্তক ৬–৮
“নোহ সেইরূপ করিলেন”
নোহ, দানিয়েল ও ইয়োবের বিশ্বাস এবং বাধ্যতা অনুকরণ করুন
৪ নোহের প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর মধ্যে কয়েকটা কী ছিল? নোহের ঠাকুরদাদার বাবা হনোকের সময় লোকেরা ইতিমধ্যেই খুব মন্দ ছিল। তারা প্রভু যিহোবার বিষয়ে “কঠোর বাক্য” বলেছিল। (যিহূদা ১৪, ১৫) এরপর, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জগৎ আরও দৌরাত্ম্যপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। নোহের সময় “পৃথিবী দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ ছিল।” মন্দদূতেরা পৃথিবীতে নেমে এসেছিল, মানবদেহ ধারণ করেছিল এবং নারীদের বিয়ে করেছিল। তাদের ছেলেরা নিষ্ঠুর ও দৌরাত্ম্যপ্রিয় ছিল। (আদি. ৬:২-৪, ১১, ১২) কিন্তু, সকলেই লক্ষ করেছিল, নোহ অন্যদের চেয়ে আলাদা। বাইবেল বলে, “নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইলেন।” তার চারপাশের লোকেদের বিপরীতে নোহ যা সঠিক, তা-ই করেছিলেন। “নোহ ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন।”—আদি. ৬:৮, ৯.
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৪/১ ১৪ অনু. ১, ইংরেজি
তিনি “ঈশ্বরের সহিত গমনাগমন করিতেন”
এই কাজে কয়েক দশক লেগেছিল, সম্ভবত ৪০ থেকে ৫০ বছর। গাছ কাটতে হতো, গাছের গুঁড়ি বয়ে নিয়ে আসতে হতো, কাঠ চেরাই করতে হতো, সেগুলো সঠিক আকারে কেটে যুক্ত করতে হতো। সেই জাহাজে তিনটে তলা, অনেকগুলো ঘর এবং একটা দরজা তৈরি করতে হতো। এতে নিশ্চয়ই উপরের দিকে অনেকগুলো জানালা ছিল এবং মাঝখানটা উঁচু এমন এক ছাদ ছিল, যাতে জল গড়িয়ে পড়ে যায়।—আদিপুস্তক ৬:১৪-১৬.
প্রহরীদুর্গ ১১ ৯/১৫ ১৮ অনু. ১৩
ধৈর্যপূর্বক ধাবনক্ষেত্রে দৌড়ান
১৩ কী যিহোবার এই দাসদেরকে ধৈর্য ধরতে ও ধাবনক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করেছে? লক্ষ করুন যে, নোহ সম্বন্ধে পৌল কী লিখেছেন। (পড়ুন, ইব্রীয় ১১:৭.) “যত জীবজন্তু আছে, সকলকে বিনষ্ট করণার্থে . . . পৃথিবীর উপরে [আসন্ন] জলপ্লাবন” নোহের জন্য এমন কিছু ছিল, যা “তখন দেখা যাইতেছিল না।” (আদি. ৬:১৭) এটা এমন একটা বিষয় ছিল, যা আগে কখনোই ঘটেনি অর্থাৎ একেবারেই নজিরবিহীন ঘটনা। তার পরও, নোহ এটাকে অস্বাভাবিক অথবা এমনকী অসম্ভব বলে উড়িয়ে দেননি। কেন? কারণ তার এই বিশ্বাস ছিল যে, যিহোবা যা বলেছেন, সেটা করবেনই করবেন। নোহ এইরকম মনে করেননি যে, তাকে যা করতে বলা হয়েছে, তা করা খুবই কঠিন। এর পরিবর্তে, তিনি ‘সেইরূপ করিয়াছিলেন।’ (আদি. ৬:২২) নোহকে যা যা করতে হয়েছিল—জাহাজ নির্মাণ করা, পশুপাখি সংগ্রহ করা, জাহাজে মানুষ ও পশুপাখির জন্য খাবার মজুত করা, এক সতর্কবাণী প্রচার করা ও তার পরিবারকে আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী রাখা—সেই সমস্তকিছু বিবেচনা করলে “সেইরূপ” করা, কোনো ছোটোখাটো বিষয় ছিল না। তা সত্ত্বেও, নোহের বিশ্বাস ও ধৈর্যের কারণে তিনি এবং তার পরিবার জীবন ও আশীর্বাদ লাভ করেছিলেন।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৪ ১/১ ২৯-৩০ অনু. ৭
আদিপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো—প্রথম ভাগ
৭:২—কোন বিষয়টাকে শুচি ও অশুচি পশুর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করা হতো? স্পষ্টতই উপাসনায় যেগুলোকে বলি দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতো সেগুলোর সঙ্গে পার্থক্য নির্ণয় করার ভিত্তি জড়িত ছিল, যেগুলো খাওয়া যেত ও যেত না, সেগুলোর সঙ্গে নয়। জলপ্লাবনের আগে মানুষ পশুর মাংস খায়নি। খাবারের ক্ষেত্রে “শুচি” ও “অশুচি” বিষয় শুধুমাত্র মোশির ব্যবস্থায় উল্লেখ করা হয়েছে আর সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছিল যখন ব্যবস্থা বিলোপ করা হয়েছিল। (প্রেরিত ১০:৯-১৬; ইফিষীয় ২:১৫) স্পষ্টতই নোহ জানতেন, যিহোবার উপাসনায় বলি দেওয়ার জন্য কোনটা উপযুক্ত ছিল। তিনি জাহাজ থেকে বের হওয়ার পর পরই “সদাপ্রভুর উদ্দেশে যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করিলেন, এবং সর্ব্বপ্রকার শুচি পশুর ও সর্ব্বপ্রকার শুচি পক্ষীর মধ্যে কতকগুলি লইয়া বেদির উপরে হোম করিলেন।”—আদিপুস্তক ৮:২০.
আদিপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো—প্রথম ভাগ
৭:১১—বিশ্বব্যাপী জলপ্লাবনের জল কোথা থেকে এসেছিল? সৃষ্টির দ্বিতীয় সময়কালে বা ‘দিবসে’ যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলসংক্রান্ত “বিতান” গঠিত হয়েছিল, তখন “বিতানের অধঃস্থিত” ও “বিতানের ঊর্দ্ধ্বস্থিত” অবস্থানে জল ছিল। (আদিপুস্তক ১:৬, ৭) “অধঃস্থিত” জলসমূহ ইতিমধ্যেই পৃথিবীতে ছিল। “ঊর্দ্ধ্বস্থিত” জলে প্রচুর পরিমাণে আর্দ্রতা পৃথিবীর উপরে ভাসমান ছিল আর তা এক ‘মহাজলধি’ গঠন করেছিল। আর এই জলই নোহের সময়ে পৃথিবীতে পড়েছিল।
জানুয়ারি ২৭–ফেব্রুয়ারি ২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | আদিপুস্তক ৯–১১
‘সমস্ত পৃথিবীতে এক ভাষা ছিল’
অন্তর্দৃষ্টি-১ ২৩৯, ইংরেজি
মহতী বাবিল
প্রাচীন বাবিলের বৈশিষ্ট্য। শিনিয়র সমভূমিতে যখন বাবিল নগরের পত্তন হচ্ছিল, ঠিক সেই সময়েই বাবিলের দুর্গ নির্মাণের প্রচেষ্টাও চলছিল। (আদি ১১:২-৯) দুর্গ ও নগর নির্মাণ করার মাধ্যমে উন্নতি করার উদ্দেশ্য যিহোবার নামকে উচ্চীকৃত করা ছিল না বরং সেই নির্মাণকর্মীরা নিজেদের “নাম বিখ্যাত” করতে চেয়েছিল। প্রাচীন বাবিলের ধ্বংসাবশেষ ছাড়াও মেসোপটেমিয়ার অন্যান্য জায়গাতেও এমন দুর্গগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে, যেগুলোর চূড়ায় মন্দির ছিল। এটা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, এই ধরনের দুর্গগুলো প্রধানত ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত হতো, তা সেগুলোর আকার ও আকৃতি যেমনই হোক না কেন। মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জন্য যিহোবা যে-চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা দেখায়, মন্দির নির্মাণের কাজ মিথ্যা ধর্মের সঙ্গে জড়িত ছিল। ইব্রীয় ভাষায় এই নগরের যে-নাম রাখা হয়েছিল, সেটার অর্থ “ভেদ” কিন্তু সুমেরীয় (কাডিংগিররা) ও অ্যাকেদীয় (বাবইলু), উভয় ভাষায় এটার অর্থ “ঈশ্বরের দ্বার।” এভাবে সেই নগরের অবশিষ্ট অধিবাসীরা প্রকৃত নিন্দাজনক অর্থ এড়ানোর জন্য নগরের নামে রদবদল করেছিল কিন্তু তবুও এটার নতুন নাম কিংবা পরিবর্ত নাম, উভয়ই এখনও দেখায়, এই নগরের সঙ্গে ধর্মের যোগ রয়েছে।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২০২ অনু. ২, ইংরেজি
ভাষা
আদিপুস্তক বইয়ের বিবরণ বর্ণনা করে, জলপ্লাবনের পরে কিছু কিছু লোক এমন একটা কাজ করার জন্য একতাবদ্ধ হয়েছিল, যেটা ঈশ্বরের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছিল, যে-ইচ্ছা তিনি নোহ ও তার পুত্রদের জানিয়েছিলেন। (আদি ৯:১) চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার ও ‘পৃথিবী পরিপূর্ণ করিবার’ পরিবর্তে তারা কেন্দ্রীয় মানব সমাজ গড়ে তোলার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল আর তাই তারা মেসোপটেমিয়ার শিনিয়র সমভূমিকে কেন্দ্র করে তাদের বসতি গড়ে তুলেছিল। স্পষ্টতই, এটা এক ধর্মীয় কেন্দ্রস্থলও হয়ে উঠেছিল, যেখানে ধর্মীয় কাজকর্মের জন্য একটা উঁচু দুর্গ ছিল।—আদি ১১:২-৪.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২০২ অনু. ৩, ইংরেজি
ভাষা
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তাদের একতাকে ভেঙে ফেলার মাধ্যমে এই দুঃসাহসী কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন আর তিনি তা করেছিলেন, তাদের মধ্যে ভাষার ভেদ করার মাধ্যমে। এর ফলে সংগঠিত উপায়ে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে এবং তারা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। আর ঈশ্বরকে উপেক্ষা করে, তারা যে-ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছিল, ভাষার ভেদ হওয়ার ফলে সেই পথ বাধাপ্রাপ্ত হয়। কারণ এর ফলে তারা নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণ করার জন্য তাদের বুদ্ধি ও শক্তিকে আর একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারত না এবং ভিন্ন ভিন্ন ভাষার দলের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকে একত্রিত করে তা কাজে লাগানো আরও কঠিন হয়ে উঠেছিল। এ ছাড়া, এই জ্ঞান ঈশ্বরের কাছ থেকে আসেনি বরং মানুষের অভিজ্ঞতা ও গবেষণা থেকে অর্জিত হয়েছিল। (তুলনা করুন, উপ ৭:২৯; দ্বিতীয় ৩২:৫.) তাই, যদিও এই ভাষাভেদ মানব সমাজকে বিভক্ত করেছিল কিন্তু এটা আসলে মানব সমাজের জন্য উপকারজনক ছিল কারণ এর ফলে তাদের পক্ষে সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল, যেটা তাদের নিজেদের জন্য বিপদজনক এবং ক্ষতিকর ছিল। (আদি ১১:৫-৯; তুলনা করুন, যিশা ৮:৯, ১০) কেউ যদি আমাদের সময়ে, মানুষের দ্বারা অর্জিত জাগতিক জ্ঞানের দুর্ব্যবহারের ফলে যে-পরিণাম হয়েছে, সেটা লক্ষ করে, তা হলে সহজেই বুঝতে পারবে, ঈশ্বর যদি বাবিলে লোকেদের কাজকে ব্যাহত না করে চলতে দিতেন, তা হলে কী ঘটত, তা ঈশ্বর আগে থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৪৭২, ইংরেজি
জাতি
এখন একে অন্যের কথা বুঝতে না পারার ফলে একই ভাষাভাষীর লোকেরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, শিল্প, রীতিনীতি, বৈশিষ্ট্য ও ধর্ম গড়ে তোলে, যেগুলো অন্য ভাষাভাষীর লোকেদের চেয়ে ভিন্ন। (লেবীয় ১৮:৩) ঈশ্বরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় লোকেরা তাদের পৌরাণিক দেব-দেবীদের অনেক মূর্তি নির্মাণ করেছিল।—দ্বিতীয় ১২:৩০; ২রাজা ১৭:২৯, ৩৩.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১০২৩ অনু. ৪, ইংরেজি
হাম
সম্ভবত কনান নিজে সরাসরি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আর তার বাবা হাম তাকে সংশোধন করেননি। অথবা ঈশ্বরের অনুপ্রেরণায় ভাববাণী হিসেবে এই কথাগুলো বলার সময় নোহ আগে থেকেই হামের মধ্যে মন্দ প্রবৃত্তিগুলো দেখেছিলেন, যেগুলো হয়তো ইতিমধ্যে তার পুত্র কনানের মধ্যে প্রকাশ পেয়েছিল আর যেগুলো কনানের বংশধরদের মধ্যে দেখা যাবে। এই অভিশাপ সেই সময় আংশিকভাবে পূর্ণ হয়েছিল, যখন শেম বংশীয় ইস্রায়েলীয়রা কনানীয়দের পরাজিত করেছিল। আর যাদের ধ্বংস করা হয়নি (উদাহরণ স্বরূপ, গিবিয়োনীয়দের [যিহো ৯]), তাদের ইস্রায়েলীয়দের দাস করে রাখা হয়েছিল। শত শত বছর পর, এই অভিশাপ আরও ব্যাপকভাবে পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন হামের ছেলে কনান যেফৎ বংশীয় বিশ্বশক্তিগুলোর শাসনাধীনে ছিল, যেগুলো হল মাদীয়-পারস্য, গ্রিস ও রোম।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫০৩, ইংরেজি
নিম্রোদ
নিম্রোদের রাজত্বের শুরুতে তার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল শিনিয়র দেশের বাবিল, এরক, অক্কদ ও কল্নী। (আদি ১০:১০) তাই, খুব সম্ভবত তার নির্দেশনাধীনেই বাবিল ও বাবিলের দুর্গ নির্মাণ শুরু হয়। যিহুদিদের পরম্পরাগত দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গেও এই উপসংহার মিলে যায়। জোসিফাস লেখেন: “[নিম্রোদ] একটু একটু করে সেই সময়ের পরিবেশকে এক স্বৈরাচারী শাসনে পরিণত করেছিল। সে মনে করেছিল, লোকেদের ঈশ্বরভয় থেকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় হল তাদের ক্রমাগত তার নিজের ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল করে তোলা। ঈশ্বর যদি আবারও পৃথিবীতে জলপ্লাবন নিয়ে আসতে চান, তা হলে সে ঈশ্বরের উপর সেটার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল; কারণ সে এত উঁচু একটা দুর্গ নির্মাণ করতে চেয়েছিল, যে-উচ্চতা পর্যন্ত জল পৌঁছাতে পারবে না আর এভাবে সে তাদের পূর্বপুরুষদের ধ্বংসের প্রতিশোধ নেবে। লোকেরা মনে করত ঈশ্বরের অধীনে থাকা হল দাসত্বের সমান তাই তারা [নিম্রোদের] এই পরামর্শ অনুসারে কাজ করার জন্য উৎসুক ছিল; ফলে তারা দুর্গ নির্মাণ করতে শুরু করে . . . আর এই দুর্গ অকল্পনীয় গতিতে তৈরি হতে থাকে।”— জুইশ অ্যান্টিকুইটিস বইয়ের প্রথম খণ্ড, ১১৪, ১১৫ (চতুর্থ, ২, ৩)