ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • mwbr20 মে পৃষ্ঠা ১-৮
  • জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
  • জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স (২০২০)
  • উপশিরোনাম
  • মে ৪-১০
  • মে ১১-১৭
  • মে ১৮-২৪
  • মে ২৫-৩১
জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স (২০২০)
mwbr20 মে পৃষ্ঠা ১-৮

জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স

মে ৪-১০

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন

আদিপুস্তক ৩৬-৩৭

“যোষেফ ঈর্ষার শিকার হন”

প্রহরীদুর্গ ১৪ ৮/১ ১২-১৩

“আমি এক স্বপ্ন দেখিয়াছি, নিবেদন করি, তাহা শুন”

বাইবেল উত্তর দেয়: “কিন্তু পিতা তাহার সকল ভ্রাতা অপেক্ষা তাহাকে অধিক ভাল বাসেন, ইহা দেখিয়া তাহার ভ্রাতৃগণ তাহাকে দ্বেষ করিত, তাহার সঙ্গে প্রণয়ভাবে কথা কহিতে পারিত না।” (আদিপুস্তক ৩৭:৪) যোষেফের ভাইয়েরা কেন ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েছিল, তা হয়তো আমরা বুঝতে পারি কিন্তু সেই মনোভাবকে পুষে রাখা বিজ্ঞতার কাজ ছিল না। (হিতোপদেশ ১৪:৩০; ২৭:৪) আপনি কি কখনো কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঈর্ষা পুষে রেখেছেন, বিশেষ করে সেই সময়ে, যখন আপনি দেখেন যে, লোকেরা সেই ব্যক্তিকে পছন্দ করছে কিংবা বেশি সম্মান করছে? যদি তা-ই হয়, তা হলে যোষেফের ভাইদের স্মরণ করুন। তাদের ঈর্ষা তাদেরকে এমন মন্দ কাজ করতে পরিচালিত করেছিল, যেটার জন্য তারা পরে গভীর অনুশোচনা করেছিল। তাদের উদাহরণ খ্রিস্টানদের মনে করিয়ে দেয়, “যাহারা আনন্দ করে, তাহাদের সহিত আনন্দ” করাই হল বিজ্ঞতার কাজ।—রোমীয় ১২:১৫.

যোষেফ নিশ্চয়ই এটা বুঝতে পেরেছিলেন যে, তার ভাইয়েরা তাকে ঘৃণা করে। তাই, তার ভাইদের মাঝে থাকার সময় যোষেফ কি তার বিশেষ জামাটা লুকিয়ে রেখেছিলেন? তিনি হয়তো তা করার জন্য প্রলুব্ধ হয়েছিলেন। কিন্তু মনে রাখবেন, যাকোবের দেওয়া এই জামাটা অনুগ্রহ ও ভালোবাসার এক চিহ্ন ছিল। তার বাবা যোষেফের উপর যে-আস্থা রেখেছিলেন, যোষেফ সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করতে চেয়েছিলেন আর তাই তিনি আনুগত্যের সঙ্গে সেই জামাটা পরে থাকতেন। তার এই উদাহরণ আমাদের জন্য ব্যাবহারিক। আমাদের স্বর্গীয় পিতা যদিও কখনো পক্ষপাতিত্ব করেন না, তবুও তিনি কখনো কখনো তাঁর বিশ্বস্ত দাসদের মধ্য থেকে কাউকে বেছে নিয়ে তাকে অনুগ্রহ প্রদান করেন। এ ছাড়া, তিনি চান যেন তারা এই কলুষিত ও অনৈতিক জগৎ থেকে নিজেদের পৃথক রাখে। যোষেফের বিশেষ জামার মতো, সত্য খ্রিস্টানদের আচরণ তাদেরকে আশেপাশের লোকেদের থেকে পৃথক করে তোলে। এই ধরনের আচরণের ফলে কখনো কখনো তারা লোকেদের ঈর্ষা ও ঘৃণার শিকার হয়ে থাকেন। (১ পিতর ৪:৪) একজন খ্রিস্টানের কি ঈশ্বরের এক দাস হিসেবে নিজের পরিচয় লুকিয়ে রাখা উচিত? না। যোষেফ যেমন নিজের জামাটা লুকিয়ে রাখেননি, ঠিক তেমনই আমাদেরও নিজেদের পরিচয় লুকিয়ে রাখা উচিত নয়।—লূক ১১:৩৩.

প্রহরীদুর্গ ১৪ ৮/১ ১৩ অনু. ২-৪

“আমি এক স্বপ্ন দেখিয়াছি, নিবেদন করি, তাহা শুন”

সেই স্বপ্নগুলো যিহোবা দেখিয়েছিলেন। সেই স্বপ্নগুলোর ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক অর্থ ছিল আর যিহোবা চেয়েছিলেন যেন যোষেফ সেগুলোর বার্তা অন্যদের জানান। এক অর্থে, যোষেফকে সেই কাজ করতে হতো, যা পরবর্তীকালে সমস্ত ভাববাদী করেছিলেন, যখন তারা বিপথগামী লোকেদের প্রতি ঈশ্বরের বার্তা ও বিচার ঘোষণা করেছিলেন।

যোষেফ কৌশলে তার ভাইদের বলেন: “আমি এক স্বপ্ন দেখিয়াছি, নিবেদন করি, তাহা শুন।” তার ভাইয়েরা এই স্বপ্নের অর্থ বুঝতে পেরেছিল আর এটা তাদের একেবারেই ভালো লাগেনি। তারা বলেছিল: তুই কি বাস্তবিক আমাদের রাজা হইবি? আমাদের উপরে বাস্তবিক কর্ত্তৃত্ব করিবি?” বিবরণ আরও বলে: “ফলে তাহারা তাহার স্বপ্ন ও তাহার বাক্য প্রযুক্ত তাহাকে আরও দ্বেষ করিল।” যোষেফ যখন দ্বিতীয় স্বপ্ন সম্বন্ধে তার বাবাকে ও ভাইদের বলেছিলেন, তখনও তারা একইরকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। আমরা পড়ি: “তাহার পিতা তাহাকে ধম্‌কাইয়া কহিলেন, তুমি এ কেমন স্বপ্ন দেখিলে? আমি, তোমার মাতা ও তোমার ভ্রাতৃগণ, আমরা কি বাস্তবিক তোমার কাছে ভূমিতে প্রণিপাত করিতে আসিব?” কিন্তু, যাকোব এই বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করতে লাগলেন। যিহোবা কি এই ছেলেটার সঙ্গে কথা বলছেন?—আদিপুস্তক ৩৭:৬, ৮, ১০, ১১.

যিহোবা চেয়েছিলেন যেন যোষেফ ভবিষ্যদ্‌বাণীমূলক বার্তা প্রদান করেন। এই কাজ যিহোবা তাঁর অন্য দাসদেরও দিয়েছিলেন। কখনো কখনো সেই বার্তা লোকেরা অপছন্দ করত আর এর ফলে তাদের তাড়নাও ভোগ করতে হয়েছিল। এইরকম বার্তাবাহকদের মধ্যে যিশু ছিলেন সর্বমহান আর তিনি তাঁর অনুসারীদের বলেছিলেন: “লোকে যখন আমাকে তাড়না করিয়াছে, তখন তোমাদিগকেও তাড়না করিবে” (যোহন ১৫:২০) সমস্ত বয়সের খ্রিস্টানরা অল্পবয়সি যোষেফের বিশ্বাস ও সাহস থেকে অনেক কিছু শিখতে পারেন।

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৬৭৮

ইদোম

[রাঙ্গা], ইদোমীয়

ইদোম হল যাকোবের যমজ ভাই এষৌকে দেওয়া আরেকটা নাম বা দ্বিতীয় নাম। (আদি ৩৬:১) তাকে এই নাম দেওয়ার কারণ হল, তিনি রাঙ্গা বা লাল ডালের বিনিময়ে নিজের জ্যেষ্ঠাধিকার বিক্রি করে দিয়েছিলেন। (আদি ২৫:৩০-৩৪) ঘটনাক্রমে, জন্মের সময় এষৌ রক্তবর্ণের ছিলেন (আদি ২৫:২৫) আর পরবর্তীকালে তিনি ও তার বংশধরেরা যেখানে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন, সেখানকার কিছু অংশের মাটির রংও লাল ছিল।

অন্তর্দৃষ্টি-১ ৫৬১-৫৬২

তত্ত্বাবধান

যখন একজন মেষপালক কিংবা পশুপালক বলতেন, তিনি কোনো মেষপাল কিংবা পশুপালকে নিজের কাছে রাখবেন অথবা সেই পালের পাহারা দেবেন, তখন তিনি বোঝাতেন যে, তিনি আইনতভাবে এই পশুগুলোর তত্ত্বাবধান করার দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। তিনি এই নিশ্চয়তা দিচ্ছেন যে, তিনি এই পশুদের খাওয়াবেন, সেগুলো যাতে চুরি না হয়, সেইদিকে খেয়াল রাখবেন আর এর অন্যথা হলে তিনি ক্ষতিপূরণ প্রদান করবেন। কিন্তু, তার দায়িত্ব পরম দায়িত্ব ছিল না কারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল না এমন পরিস্থিতি দেখা দিলে, যেমন বন্য পশু আক্রমণ করলে, উপরোক্ত এই আইন সেই তত্ত্বাবধায়ককে দায়িত্বের হাত থেকে রেহাই দিত। তবে, সেই তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য তাকে মালিকের কাছে প্রমাণ দিতে হতো, যেমন পশুর রক্তাক্ত মৃতদেহ। সেই প্রমাণ পরীক্ষা করার পর মালিককে সেই তত্ত্বাবধায়কের উদ্দেশে এই রায় দিতে হতো যে, তিনি নির্দোষ।

এই নীতি সাধারণভাবে এমন যেকোনো সম্পত্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল, যেটা দেখাশোনা করার দায়িত্ব কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া হতো। শুধু তা-ই নয়, এই নীতি পারিবারিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য ছিল। উদাহরণ স্বরূপ, বড়ো ভাইকে সাধারণত ছোটো ভাই-বোনদের আইনত অভিভাবক হিসেবে ধরা হতো। তাই আমরা বুঝতে পারি, আদিপুস্তক ৩৭:১৮-৩০ পদে যেমন লিপিবদ্ধ রয়েছে, অন্য ভাইয়েরা যখন যোষেফকে মেরে ফেলার কথা বলছিল, তখন বড়ো ছেলে হিসেবে রূবেণ কেন যোষেফের জীবনের জন্য উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। “রূবেণ . . . কহিল, না, আমরা উহাকে প্রাণে মারিব না। . . . তোমরা রক্তপাত করিও না, . . . উহার উপরে হস্ত তুলিও না। এইরূপে রূবেণ তাহাদের হস্ত হইতে তাহাকে উদ্ধার করিয়া পিতার নিকটে ফিরিয়া পাঠাইবার চেষ্টা করিল।” আর যখন রূবেণ জানতে পারেন, যোষেফ নেই, তখন তিনি এতটাই উদ্‌বিগ্ন হয়ে পড়েছিলেন যে, ‘তিনি আপন বস্ত্র চিরিলেন, আর ভ্রাতাদের নিকটে ফিরিয়া আসিয়া কহিলেন, যুবকটী নাই, আর আমি! আমি কোথায় যাই?’ তিনি জানতেন, যোষেফের মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করা হতে পারে। দায়ভার এড়ানোর জন্য ভাইয়েরা চতুরভাবে এমন মিথ্যা সাক্ষ্যপ্রমাণ তুলে ধরেছিল, যাতে মনে হয়, যোষেফ কোনো বন্য পশুর দ্বারা নিহত হয়েছেন। এর জন্য তারা যোষেফের পোশাকটা ছাগলের রক্তে ডুবিয়েছিল। এরপর তারা এই প্রমাণ তাদের বাবা ও কুলের বিচারক যাকোবকে দেখিয়েছিল, যিনি রূবেণকে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন কারণ যোষেফের ভাইয়েরা প্রমাণ হিসেবে যোষেফের রক্তমাখা যে-পোশাক দেখিয়েছিল, তা থেকে যাকোব এই উপসংহারে পৌঁছেছিলেন যে, যোষেফ নিহত হয়েছেন।—আদি ৩৭:৩১-৩৩.

মে ১১-১৭

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন

আদিপুস্তক ৩৮-৩৯

“যিহোবা কখনোই যোষেফকে ত্যাগ করেননি”

প্রহরীদুর্গ ১৪ ১১/১ ১২ অনু. ৪-৫

“আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম্ম করিতে . . . পারি?”

“যোষেফ মিসর দেশে আনীত হইলে পর, যে ইশ্মায়েলীয়েরা তাঁহাকে তথায় লইয়া গিয়াছিল, তাহাদের নিকটে ফরৌণের কর্ম্মচারী পোটীফর তাঁহাকে ক্রয় করিলেন; ইনি রক্ষক-সেনাপতি, এক জন মিস্রীয় লোক।” (আদিপুস্তক ৩৯:১) এই কয়েকটা কথার মাধ্যমে বাইবেলের বিবরণ আমাদের এটা কল্পনা করতে সাহায্য করে, এই যুবককে যখন দ্বিতীয় বার বিক্রি করা হয়েছিল, তখন এটা তার কাছে কতটা অপমানজনক ছিল। তিনি ছিলেন, কেবলমাত্র একটা সম্পত্তি! আমরা হয়তো কল্পনা করতে পারি, যোষেফ তার নতুন মালিককে, যিনি একজন মিশরীয় কর্মকর্তা, অনুসরণ করে বাজারের মধ্য দিয়ে নগরের ব্যস্ত রাস্তা ধরে তার নতুন বাড়ির দিকে এগিয়ে চলেছেন।

বাড়ি! বাড়ি বলতে যোষেফ যা বুঝতেন, সেটার চেয়ে এটা একেবারে আলাদা। তিনি এক যাযাবর পরিবারে বড়ো হয়ে উঠেছেন, যারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাওয়ার সময় তাঁবুতে বাস করতেন এবং মেষপালের দেখাশোনা করতেন। কিন্তু এখানে এই ধনী মিশরীয় পোটীফর এক সুদৃশ্য, উজ্জ্বল রং করা বাড়িতে বাস করেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলেন, প্রাচীন মিশরীয়রা গাছপালা পছন্দ করত আর তাদের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা বাগানের মধ্যে বড়ো বড়ো গাছ থাকত, যেগুলো ছায়া দিত আর শান্ত পুকুর থাকত, যেখানে প্যাপিরাস, পদ্ম ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ জন্মাত। কোনো কোনো বাড়ি বাগানের মধ্যেই থাকত। বাড়িগুলোতে ঠাণ্ডা বাতাস উপভোগ করার জন্য বারান্দা, আলো-বাতাস চলাচলের জন্য উঁচু উঁচু জানালা এবং অনেক ঘর থাকত, যেগুলোর মধ্যে খাবার খাওয়ার ঘর ও দাসদের থাকার ঘর থাকত।

প্রহরীদুর্গ ১৪ ১১/১ ১৪-১৫

“আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম্ম করিতে . . . পারি?”

সেই সময়ে মিশরীয় কারাগারগুলো কেমন ছিল, সেই বিষয়ে আমরা প্রায় কিছুই জানি না। প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেই সমস্ত জায়গায় যে-ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছে, সেখানে বড়ো বড়ো দুর্গের মতো কাঠামো ছিল, যেগুলোতে ঘর ও কারাকক্ষ ছিল। পরবর্তীকালে যোষেফ সেই জায়গার বর্ণনা দেওয়ার জন্য এমন একটা শব্দ ব্যবহার করেছিলেন, যেটার আক্ষরিক অর্থ ‘কূপ,’ যা ইঙ্গিত দেয়, এটা এক অন্ধকারময় স্থান, যেখান থেকে বের হওয়ার কোনো আশা নেই। (আদি ৪০:১৫) গীতসংহিতা বই থেকে আমরা জানতে পারি, যোষেফকে আরও কষ্ট ভোগ করতে হয়েছিল: “লোকে বেড়ী দ্বারা তাঁহার চরণকে ক্লেশ দিল; তাঁহার প্রাণ লৌহে বদ্ধ হইল” (গীত ১০৫:১৭, ১৮) মিশরীয়রা কখনো কখনো তাদের বন্দিদের হাত পিছমোড়া করে কনুইয়ের কাছে বেঁধে রাখত; অন্যদের গলায় লোহার বেড়ি পরানো হতো। নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও যোষেফকে কতই-না অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল!

আর এটা অল্পসময়ের জন্য ছিল না। বিবরণ বলে, যোষেফ “সেই কারাগারে থাকিলেন।” তিনি সেই ভয়ঙ্কর জায়গায় বহু বছর ছিলেন! আর কখনো সেখান থেকে ছাড়া পাবেন কি না, সেটাও যোষেফ জানতেন না। এই অবস্থায় যখন সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস কেটে যেতে থাকে, তখন কোন বিষয়টা তাকে হতাশ হয়ে না পড়তে এবং হাল ছেড়ে না দিতে সাহায্য করেছিল?

বিবরণ আমাদের এই আশ্বাসদায়ক উত্তর দেয়: “সদাপ্রভু যোষেফের সহবর্ত্তী ছিলেন, এবং তাঁহার প্রতি দয়া করিলেন।” (আদিপুস্তক ৩৯:২১) কোনো কারাগারের প্রাচীর, কোনো বেড়ি, কোনো অন্ধকার কারাকক্ষ যিহোবার অনুগত প্রেমকে তাঁর দাসদের কাছে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে না। (রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯) আমরা কল্পনা করতে পারি, যোষেফ তার প্রিয় স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনায় নিজের সমস্ত যন্ত্রণার কথা খুলে বলছেন আর তারপর এমন শান্তি ও স্বস্তি লাভ করছেন, যা একমাত্র “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” দিতে পারেন। (২ করিন্থীয় ১:৩, ৪; ফিলিপীয় ৪:৬, ৭) যিহোবা যোষেফের জন্য আর কী করেছিলেন? আমরা পড়ি, তিনি যোষেফকে “কারারক্ষকের দৃষ্টিতে অনুগ্রহপাত্র করিলেন।”

প্রহরীদুর্গ ১৪ ১১/১ ১৫ অনু. ২

“আমি কিরূপে এই মহা দুষ্কর্ম্ম করিতে . . . পারি?”

বিবরণ আমাদের এই আশ্বাসদায়ক উত্তর দেয়: “সদাপ্রভু যোষেফের সহবর্ত্তী ছিলেন, এবং তাঁহার প্রতি দয়া করিলেন” (আদিপুস্তক ৩৯:২১) কোনো কারাগারের প্রাচীর, কোনো বেড়ি, কোনো অন্ধকার কারাকক্ষ যিহোবার অনুগত প্রেমকে তাঁর দাসদের কাছে পৌঁছাতে বাধা দিতে পারে না। (রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯) আমরা কল্পনা করতে পারি, যোষেফ তার প্রিয় স্বর্গীয় পিতার কাছে প্রার্থনায় নিজের সমস্ত যন্ত্রণার কথা খুলে বলছেন আর তারপর এমন শান্তি ও স্বস্তি লাভ করছেন, যা একমাত্র “সমস্ত সান্ত্বনার ঈশ্বর” দিতে পারেন। (২ করিন্থীয় ১:৩, ৪; ফিলিপীয় ৪:৬, ৭) যিহোবা যোষেফের জন্য আর কী করেছিলেন? আমরা পড়ি, তিনি যোষেফকে “কারারক্ষকের দৃষ্টিতে অনুগ্রহপাত্র করিলেন।”

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫৫৫

ওনন

[অর্থ: “উৎপন্ন করার ক্ষমতা; শক্তি”]।

যিহূদার দ্বিতীয় ছেলে, যার মা কনানীয় শূয়ের মেয়ে। (আদি ৩৮:২-৪; ১বংশা ২:৩) যিহোবা ওননের সন্তানহীন ভাই এরকে তার মন্দ কাজের জন্য মেরে ফেলার পর যিহূদা ওননকে এরের বিধবা স্ত্রী তামরের প্রতি দেবরের কর্তব্য পালন করতে বলেন। তাদের পুত্রসন্তান হলে সে ওননের পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা হবে না বরং সে এরের পুত্র হিসেবে জ্যেষ্ঠাধিকার লাভ করবে; কিন্তু এরের যদি কোনো উত্তরাধিকারী না থাকে, তা হলে ওনন নিজে উত্তরাধিকারী হবেন। ওনন যখন তামরের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক করেছিলেন, তখন তিনি তামরের যৌনাঙ্গে রেতঃপাত না করে ‘ভূমিতে রেতঃপাত করিলেন।’ ওনন হস্তমৈথুন করছিলেন না, কারণ বিবরণ বলে “ভ্রাতৃজায়ার কাছে গমন করিলেও” ভূমিতে রেতঃপাত করেছিলেন। স্পষ্টতই, এটা ছিল “যৌন মিলনের” এক ঘটনা, যেখানে ওনন ইচ্ছাকৃতভাবে তামরের যৌনাঙ্গে রেতঃপাত করেননি। তাই হস্তমৈথুন করার জন্য নয় বরং তার বাবার অবাধ্য হওয়ার জন্য, তার লোভের জন্য এবং ঈশ্বরের বিবাহ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে পাপ করার জন্য ওনন নিজেও সন্তানহীন অবস্থায় যিহোবার দ্বারা নিহত হয়েছিলেন।—আদি ৩৮:৬-১০; ৪৬:১২; গণনা ২৬:১৯.

প্রহরীদুর্গ ০৪ ১/১৫ ৩০ অনু. ৪-৫

পাঠক-পাঠিকাদের থেকে প্রশ্নসকল

যিহূদা তার প্রতিজ্ঞানুসারে তার ছেলে শেলাকে তামরের কাছে না পাঠিয়ে ভুল করেছিলেন। এ ছাড়া, তিনি এমন এক স্ত্রীলোকের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, যাকে তিনি মন্দিরের বেশ্যা মনে করেছিলেন। এটাও এক পুরুষের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যের বিপরীত কাজ ছিল, যেখানে কিনা যৌন সম্পর্ক কেবলমাত্র বিবাহ ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। (আদিপুস্তক ২:২৪) যাইহোক, বাস্তবে যিহূদা একজন বেশ্যার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করেননি। বরং তিনি নিজের অজান্তেই দেবরের কর্তব্য সাধন করে তার ছেলে শেলার বিকল্প হয়েছিলেন এবং তা করে বৈধ বংশধরের বাবা হয়েছিলেন।

তামরের ক্ষেত্রে বলা যায় যে, তা অনৈতিক ছিল না। তার যমজ পুত্রদের ব্যভিচারের সন্তান হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। যখন বৈৎলেহমের বোয়স দেবরকে বিয়ে করার প্রথানুযায়ী মোয়াবীয় রূৎকে গ্রহণ করেছিলেন, তখন বৈৎলেহমের প্রাচীনরা তামরের সন্তান পেরসের পক্ষে কথা বলে বোয়সের উদ্দেশে বলেছিলেন: “সদাপ্রভু সেই যুবতীর গর্ব্ভ হইতে যে সন্তান তোমাকে দিবেন, তাহা দ্বারা তামরের গর্ব্ভজাত যিহূদার পুত্ত্র পেরসের কুলের ন্যায় তোমার কুল হউক।” (রূতের বিবরণ ৪:১২) পেরসও যিশু খ্রিস্টের পূর্ব পুরুষদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।—মথি ১:১-৩; লূক ৩:২৩-৩৩.

মে ১৮-২৪

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন

আদিপুস্তক ৪০-৪১

“যিহোবা যোষেফকে উদ্ধার করেন”

প্রহরীদুর্গ ১৫ ২/১ ১৪ অনু. ৪-৫

“অর্থ করিবার শক্তি কি ঈশ্বর হইতে হয় না?”

সেই পানপাত্রবাহক হয়তো যোষেফকে ভুলে গিয়েছিল কিন্তু যিহোবা তাকে ভুলে যাননি। এক রাতে যিহোবা ফরৌণকে অবিস্মরণীয় দুটো স্বপ্ন দেখান। প্রথম স্বপ্নে রাজা দেখেন, সাতটা সুন্দর, হৃষ্টপুষ্ট গরু নীল নদ থেকে উঠে আসে আর তারপরেই সাতটা কুৎসিত, শীর্ণ গরু উঠে আসে। শীর্ণ গরুগুলো হৃষ্টপুষ্ট গরুগুলোকে খেয়ে ফেলে। পরের স্বপ্নে ফরৌণ দেখেন, একটা বৃন্তে সাতটা উত্তম শিষ ধরেছে। কিন্তু এরপর শুকনো, ক্ষীণ আরও সাতটা শিষ ধরে আর এগুলো উত্তম শিষগুলোকে খেয়ে ফেলে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফরৌণ স্বপ্নের কারণে খুবই উদ্‌বিগ্ন ছিলেন, তাই তিনি স্বপ্নের অর্থ জানার জন্য সমস্ত জ্ঞানী ব্যক্তি ও মন্ত্রবেত্তাদের ডেকে পাঠান। কিন্তু তারা সকলে ব্যর্থ হয়। (আদিপুস্তক ৪১:১-৮) তারা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গিয়েছিল নাকি তারা পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন ধারণা তুলে ধরেছিল, তা আমরা জানি না। যা-ই ঘটে থাকুক না কেন, ফরৌণ হতাশ হয়েছিলেন কিন্তু তিনি এই ধাঁধাঁর উত্তর পাওয়ার জন্য আরও বেশি মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন।

অবশেষে, সেই পানপাত্রবাহকের যোষেফের কথা মনে পড়ে। তার বিবেক তাকে দংশন করছিল এবং তিনি ফরৌণকে কারাগারে থাকা সেই যুবকের কথা বলেছিলেন, যিনি দু-বছর আগে তার নিজের ও মোদকের স্বপ্নের অর্থ সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। ফরৌণ সঙ্গেসঙ্গে কারাগার থেকে যোষেফকে ডেকে পাঠান।—আদিপুস্তক ৪১:৯-১৩.

প্রহরীদুর্গ ১৫ ২/১ ১৪-১৫

“অর্থ করিবার শক্তি কি ঈশ্বর হইতে হয় না?”

যিহোবা নম্র ও বিশ্বস্ত লোকেদের ভালোবাসেন। তাই এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই যে, তিনি সেই জ্ঞানী ব্যক্তি ও মন্ত্রবেত্তাদের নয় বরং যোষেফকে স্বপ্নের অর্থ জানিয়েছিলেন। যোষেফ ফরৌণকে বলেন, দুটো স্বপ্নের অর্থ একই। একই বার্তার পুনরাবৃত্তি করার মাধ্যমে যিহোবা বুঝিয়েছিলেন, তিনি এই বিষয়টা “স্থির করিয়াছেন” অর্থাৎ এটা অবশ্যই পরিপূর্ণ হবে। সাতটা হৃষ্টপুষ্ট গরু ও উত্তম শিষ, মিশরে সাত বছর প্রচুর শস্যের ফলনকে চিত্রিত করে আর শীর্ণ গরু ও ক্ষীণ শিষ সাত বছরের দুর্ভিক্ষকে চিত্রিত করে, যা প্রচুর শস্য ফলনের ঠিক পরেই হবে। সেই দুর্ভিক্ষ সারা দেশের শস্য খেয়ে ফেলবে।—আদিপুস্তক ৪১:২৫-৩২.

প্রহরীদুর্গ ১৫ ২/১ ১৫ অনু. ৩

“অর্থ করিবার শক্তি কি ঈশ্বর হইতে হয় না?”

ফরৌণ নিজের কথা রেখেছিলেন। শীঘ্র যোষেফকে সাদা সুতির কাপড় পরানো হয়। ফরৌণ তাকে একটা সোনার হার, সিলমোহর বসানো আংটি, রাজকীয় রথ এবং দেশের যেকোনো জায়গায় যাওয়ার পূর্ণ অধিকার দেন। (আদিপুস্তক ৪১:৪২-৪৪) এক দিনের মধ্যে যোষেফ কারাগার থেকে রাজপ্রাসাদে চলে আসেন। তিনি একজন সাধারণ বন্দি হিসেবে ঘুম থেকে উঠেছিলেন কিন্তু ফরৌণের পরেই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে ঘুমাতে গিয়েছিলেন। নিঃসন্দেহে, যিহোবা ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস রাখার পুরস্কার যোষেফ পেয়েছিলেন! তাঁর দাস বছরের পর বছর ধরে যে-অবিচারের শিকার হয়েছেন, তা যিহোবা দেখেছিলেন। তিনি একেবারে সঠিক সময়ে ও একেবারে সঠিক উপায়ে বিষয়গুলো সমাধান করেছিলেন। যিহোবা শুধুমাত্র যোষেফের প্রতি করা অন্যায়ের প্রতিকার করারই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে ভাবি ইস্রায়েল জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখারও পরিকল্পনা করেছিলেন। যিহোবা কীভাবে তা করেছিলেন, তা আমরা এই ধারাবাহিক প্রবন্ধের পরবর্তী এক প্রবন্ধে দেখব।

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

প্রহরীদুর্গ ১৫ ১১/১ ৯ অনু. ১-৩

আপনি কি জানতেন?

কেন যোষেফ ফরৌণের কাছে দেখা করতে যাওয়ার আগে চুল ও দাড়ি কামিয়েছিলেন?

আদিপুস্তকের বিবরণ অনুসারে, ফরৌণ আদেশ দিয়েছিলেন, যেন তার স্বপ্নের অর্থ ব্যাখ্যা করার জন্য ইব্রীয় বন্দি যোষেফকে শীঘ্র তার সামনে নিয়ে আসা হয়। ইতিমধ্যে যোষেফ বেশ কয়েক বছর ধরে কারাগারে বন্দি হয়ে রয়েছেন। ফরৌণের সামনে উপস্থিত হওয়ার তাগাদা সত্ত্বেও যোষেফ সময় নিয়ে চুল ও দাড়ি কামিয়েছিলেন। (আদিপুস্তক ৩৯:২০-২৩; ৪১:১, ১৪) আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ বলে মনে হওয়া এই বিবরণটা দেখায়, তিনি মিশরীয় রীতিনীতির সঙ্গে ভালোভাবে পরিচিত ছিলেন।

ইব্রীয়দের ও সেইসঙ্গে অন্য প্রাচীন জাতিদের মধ্যে দাড়ি রাখার রীতি সাধারণ বিষয় ছিল। তবে, জন ম্যাকক্লিনটক এবং জেমস স্ট্রং-এর সাইক্লোপিডিয়া অফ বিবলিক্যাল, থিওলজিক্যাল অ্যান্ড ইকলিসিয়াসটিক্যাল লিটারেচার অনুসারে “প্রাচীন মিশরীয়রা ছিল প্রাচ্যের একমাত্র জাতি, যারা দাড়ি রাখত না।”

তারা কি শুধুমাত্র দাড়ি কামাত? বিবলিক্যাল আর্কিওলজি রিভিউ পত্রিকা জানায়, কিছু কিছু মিশরীয় রীতি অনুসারে একজন ব্যক্তিকে ফরৌণের সামনে হাজির হওয়ার জন্য ঠিক একইভাবে প্রস্তুতি নিতে হতো, যেন তিনি একটা মন্দিরে প্রবেশ করতে চলেছেন। এইরকম পরিস্থিতিতে, যোষেফকে হয়তো তার মাথার সমস্ত চুল ও দেহের লোম কামিয়ে ফেলতে হয়েছিল।

প্রহরীদুর্গ ০৯ ১১/১৫ ২৮ অনু. ১৪

ঈশ্বরের পরিচারক হিসেবে উত্তম আচরণ প্রদর্শন করা

১৪ বাইবেলের সময়ে ধার্মিক বাবা-মায়েরা নিশ্চিত হতো যে, তাদের ছেলে-মেয়েরা ঘরে ভদ্রতার মৌলিক বিষয়গুলো শিখছে। অব্রাহাম ও তার ছেলে ইস্‌হাক আদিপুস্তক ২২:৭ পদে একে অন্যকে যে-ভদ্র উপায়ে সম্বোধন করেছিলেন, তা বিবেচনা করুন। বাবা-মার উত্তম প্রশিক্ষণ যোষেফের বেলায়ও স্পষ্ট দেখা গিয়েছিল। কারাগারে থাকার সময়, তিনি এমনকী তার সহবন্দিদের প্রতিও ভদ্র আচরণ করেছিলেন। (আদি. ৪০:৮, ১৪) ফরৌণের উদ্দেশে বলা তার কথাগুলো দেখায় যে, একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিকে সম্বোধন করার সঠিক উপায় তিনি শিখেছিলেন।—আদি. ৪১:১৬, ৩৩, ৩৪.

মে ২৫-৩১

ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন

আদিপুস্তক ৪২-৪৩

“যোষেফ অসাধারণ আত্মসংযম দেখান”

প্রহরীদুর্গ ১৫ জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৩ অনু. ৫

“আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?”

যোষেফ সম্বন্ধে কী বলা যায়? তিনি সঙ্গেসঙ্গে তার ভাইদের চিনতে পারেন! সবচেয়ে বড়ো কথা হল, তিনি যখন তাদেরকে তার সামনে প্রণিপাত করতে দেখেন, তখন তার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যায়। বিবরণ আমাদের জানায়, ছোটোবেলায় যিহোবার কাছ থেকে “যোষেফ . . . যে যে স্বপ্ন দেখিয়াছিলেন, তাহা তাঁহার স্মরণ হইল।” এই স্বপ্নগুলোর মাধ্যমে বোঝানো হয়েছিল, এমন একটা সময় আসবে, যখন ভাইয়েরা তার সামনে প্রণিপাত করবে আর এখন তারা ঠিক এই কাজটাই করছেন! (আদিপুস্তক ৩৭:২, ৫-৯; ৪২:৭, ৯) যোষেফ কী করবেন? তাদের জড়িয়ে ধরবেন? নাকি প্রতিশোধ নেবেন?

প্রহরীদুর্গ ১৫ জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৪ অনু. ১

“আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?”

আপনি হয়তো কখনো এইরকম অস্বাভাবিক ঘটনার মুখোমুখি হননি। কিন্তু, বর্তমান জগতে পরিবারের মধ্যে শত্রুতা এবং ভাঙন খুবই সাধারণ বিষয়। আমরা যখন এইরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হই, তখন আমরা সাধারণত আবেগের বশবর্তী হয়ে আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী কাজ করি। সেই সময় যোষেফকে অনুকরণ করা এবং সেই পরিস্থিতিতে আমরা কী করি বলে ঈশ্বর চান, তা বোঝার চেষ্টা করা আরও বেশি বিজ্ঞতার কাজ। (হিতোপদেশ ১৪:১২) মনে রাখবেন, যদিও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু যিহোবা ও তাঁর পুত্রের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।—মথি ১০:৩৭.

প্রহরীদুর্গ ১৫ জুলাই-সেপ্টেম্বর ১৪ অনু. ২

“আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?”

যোষেফ পর পর কয়েকটা পরীক্ষা করেন, যাতে তিনি তার ভাইদের হৃদয়ের অবস্থা জানতে পারেন। প্রথমে, তিনি একজন অনুবাদকের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কর্কশভাবে কথা বলেন, তাদেরকে বিদেশি চর বলে দোষারোপ করেন। নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য তারা বলেন, তাদের একটা পরিবার রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, তারা এও জানান যে, তাদের সবচেয়ে ছোটো ভাই বাড়িতে রয়েছেন, যেটা জানার জন্য যোষেফ উৎসুক ছিলেন। যোষেফ তার উত্তেজনা চেপে রাখার চেষ্টা করেন। তার ছোটো ভাই কি সত্যিই বেঁচে আছেন? এখন তিনি বুঝতে পারেন, তার কী করা উচিত। তিনি বলেন: “ইহা দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করা যাইবে” আর এরপর প্রমাণ হিসেবে তিনি তাদের ছোটো ভাইকে নিয়ে আসতে বলেন। পরে, তিনি এই শর্তে অন্যদের বাড়ি ফিরে গিয়ে সবচেয়ে ছোটো ভাইকে নিয়ে আসার অনুমতি দেন যে, একজনকে তার এখানে জামিন হিসেবে থাকতে হবে।—আদিপুস্তক ৪২:৯-২০.

অন্তর্দৃষ্টি-২ ১০৮ অনু. ৪

যোষেফ

এই সমস্ত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যোষেফের সৎ ভাইয়েরা এটা উপলব্ধি করতে শুরু করেছিল যে, অনেক বছর আগে তারা যোষেফকে বিক্রি করে দিয়েছিল বলে এখন ঈশ্বর তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিচ্ছেন। তারা তাদের ভাইকে চিনতে না পারায়, তার সামনেই নিজেদের অপরাধ নিয়ে আলোচনা করছিল। তাদের কথা শুনতে পেয়ে এবং তারা যে অনুতপ্ত হয়েছে, তা বুঝতে পেরে যোষেফ এতটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি তাদের সামনে থেকে চলে গিয়ে কাঁদতে থাকেন। ফিরে এসে তিনি শিমিয়োনকে ততক্ষণ বেঁধে রাখতে বলেন, যতক্ষণ না তারা তাদের সবচেয়ে ছোটো ভাইকে নিয়ে ফিরে আসেন।—আদিপুস্তক ৪২:২১-২৪.

আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন

অন্তর্দৃষ্টি-২ ৭৯৫

রূবেণ

রূবেণের কিছু কিছু ভালো গুণ সেই সময় প্রকাশ পেয়েছিল, যখন তিনি তার নয় জন ভাইকে বলেছিলেন যেন তারা যোষেফকে হত্যা না করে বরং একটা শুকনো কুয়োয় ফেলে দেয়। তিনি মনে মনে ঠিক করেছিলেন, পরে গোপনে ফিরে এসে যোষেফকে কুয়ো থেকে উদ্ধার করবেন। (আদি ৩৭:১৮-৩০) ২০ বছরেরও বেশি সময় পরে যখন এই ভাইয়েরাই মনে করেছিল যে, যোষেফের প্রতি অন্যায় আচরণের কারণে তাদেরকে চরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হচ্ছে, তখন রূবেণ তাদের মনে করিয়ে দেন, যোষেফকে হত্যা করার ষড়যন্ত্রে তিনি তাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। (আদি ৪২:৯-১৪, ২১, ২২) পরে তারা যখন দ্বিতীয় বার মিশরের উদ্দেশে রওনা হচ্ছিল, তখন যাকোব বিন্যামীনকে তাদের সঙ্গে যেতে দিতে রাজি হননি। সেই সময় রূবেণই নিজের দুই পুত্রকে জামিন রেখে বলেছিলেন: “আমি যদি তোমার নিকটে [বিন্যামীনকে] না আনি, তবে আমার দুই পুত্ত্রকে বধ করিও।”—আদি ৪২:৩৭.

প্রহরীদুর্গ ০৪ ১/১৫ ২৯ অনু. ১

আদিপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো—দ্বিতীয় ভাগ

৪৩:৩২—ইব্রীয়দের সঙ্গে আহার করা মিশরীয়দের কাছে কেন ঘৃণিত কাজ ছিল? এর কারণ ছিল মূলত ধর্মীয় কুসংস্কার অথবা জাতিগত গর্ব। এ ছাড়া, মিশরীয়রা পশুপালকদেরও ঘৃণা করত। (আদিপুস্তক ৪৬:৩৪) কেন? সহজভাবে বললে, মেষপালকরা মিশরীয় পদমর্যাদার দিক থেকে একেবারে নিম্নশ্রেণীর ছিল। অথবা হতে পারে যে, যেহেতু চাষাবাষ করার জন্য ভূমি সীমিত ছিল, তাই মিশরীয়রা সেই ব্যক্তিদের ঘৃণার চোখে দেখত, যারা পশুপালের জন্য চারণভূমি খুঁজে বেড়াত।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার