ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ১২/১ পৃষ্ঠা ৮-১২
  • আমাদের জীবনে যিহোবার উপাসনার সঠিক স্থান

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আমাদের জীবনে যিহোবার উপাসনার সঠিক স্থান
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবার উদ্দেশ্যে ইস্রায়েলের উপাসনা
  • সত্য উপাসনার প্রতি প্রথম শতাব্দীর উদ্যোগ
  • বর্তমান কালে যিহোবার উপাসনাকে উচ্চীকৃত করা হয়েছে
  • সত্য উপাসনা আপনার আনন্দ বৃদ্ধি করবে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • কাদের উপাসনা ঈশ্বর গ্রহণ করেন?
    জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে
  • যিহোবার আধ্যাত্মিক মন্দিরে উপাসনা করার বিশেষ সুযোগের জন্য কৃতজ্ঞতা দেখান!
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২৩
  • একত্রে মিলিত হওয়া পরিত্যাগ করবেন না
    ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ১২/১ পৃষ্ঠা ৮-১২

আমাদের জীবনে যিহোবার উপাসনার সঠিক স্থান

“প্রতিদিন আমি তোমার ধন্যবাদ করিব, যুগে যুগে চিরকাল তোমার নামের প্রশংসা করিব।”—গীতসংহিতা ১৪৫:২.

১. উপাসনার ক্ষেত্রে, যিহোবা কোন জিনিসটি চান?

“আমি যিহোবা তোমাদের ঈশ্বর, একাগ্র ভক্তি প্রত্যাশাকারী ঈশ্বর।” (যাত্রাপুস্তক ২০:৫, NW) মোশি যিহোবার কাছ থেকে এই ঘোষণা শুনেছিলেন এবং পরে তিনি এর পুনরাবৃত্তি করেন যখন ইস্রায়েল জাতির উদ্দেশ্যে তিনি এর পুনরাবৃত্তি করেন যখন ইস্রায়েল জাতির উদ্দেশ্যে তিনি কথা বলছিলেন। (দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৯) মোশির মনে কোন সন্দেহই ছিল না যে যিহোবা ঈশ্বর তাঁর দাসেদের থেকে একাগ্র উপাসনার আশা রাখেন।

২, ৩. (ক) কোন জিনিসটি ইস্রায়েলদের উপর রেখাপাত করেছিল এটা উপলব্ধি করতে যে সিনয় পর্বতে যা ঘটেছিল তা অসাধারণ? (খ) ইস্রায়েলীয়দের এবং বর্তমান দিনে ঈশ্বরের দাসদের উপাসনা সম্বন্ধে কোন প্রশ্নগুলি আমরা পরীক্ষা করব?

২ সিনয় পর্বতের কাছে তাঁবুতে বাস করার সময়, ইস্রায়েলীয়রা এবং “মিশ্রিত লোকদের মহাজনতা,” যারা তাদের সাথে মিশর দেশ ছেড়ে চলে এসেছিল, তারা এক অসাধারণ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে। (যাত্রাপুস্তক ১২:৩৮) এর সাথে মিশরীয় দেবদেবীর উপাসনার কোন মিল ছিল না, যারা সম্প্রতি দশটি আঘাত বা মারীর দ্বারা অবমানিত হয়েছিল। যখন যিহোবা মোশির কাছে তাঁর উপস্থিতি প্রকাশ করেন, ভয়-সঞ্চারকারী বিস্ময়কর ঘটনা ঘটতে আরম্ভ করে: মেঘগর্জ্জন, বিদ্যুৎ আর অতিশয় উচ্চ তূরীধ্বনি, যা সমস্ত শিবিরকে কাঁপিয়ে তোলে। এরপর সমগ্র পাহাড়টি কেঁপে ওঠে এবং আগুন আর ধোয়া প্রতীয়মান হয়। (যাত্রাপুস্তক ১৯:১৬-২০; ইব্রীয় ১২:১৮-২১) এই অসাধারণ ঘটনার সম্পর্কে কোন ইস্রায়েলীয়ের যদি বাড়তি প্রমাণের প্রয়োজন হতো, তৎক্ষণাৎ তা উপস্থিত হতো। অনতিবিলম্বে, সে মোশির দিকে তাকালেই তার উত্তর পেতে পারতো, যখন মোশি ঈশ্বরের নিয়মগুলির একটি দ্বিতীয় কপি পাওয়ার পর সেই পাহাড় থেকে নেমে আসেন। অনুপ্রাণিত বিবরণ অনুসারে, “(মোশীর) মুখের চর্ম্ম উজ্জ্বল, আর (লোকেরা) তাঁহার নিকটে আসিতে ভীত হইল।” বাস্তবিকই, এটি একটি অবিস্মরণীয়, অতিমানবীয় অভিজ্ঞতা!​—⁠যাত্রাপুস্তক ৩৪:৩০.

৩ ঈশ্বরের সেই বিশেষ জাতির ক্ষেত্রে যিহোবার উপাসনা যে স্থানটি দখল করেছিল, সে সম্বন্ধে কোন প্রশ্নই ওঠেনি। তিনি ছিলেন তাদের উদ্ধার কর্তা। তারা তাদের জীবনের জন্যে তাঁর কাছে ঋণী ছিল। এছাড়াও তিনি ছিলেন তাদের আইনদাতা। কিন্তু তারা কি যিহো বার উপাসনাকে প্রথম স্থানে রেখেছিল? আর ঈশ্বরের আধুনিক কালের দাসেদের সম্বন্ধে কী বলা যায়? যিহোবার উপাসনা তাদের জীবনে কোন্‌ স্থান নিয়েছে?​—⁠নিয়েছে?​—⁠রোমীয় ১৫:⁠৪.

যিহোবার উদ্দেশ্যে ইস্রায়েলের উপাসনা

৪. প্রান্তরে থাকাকালীন ইস্রায়েলের তাঁবু কিভাবে সাজানো ছিল এবং সেই তাঁবুর মাঝখানে কী ছিল?

৪ আপনার যদি উড়ন্ত পাখির মতো অনেক উঁচু থেকে এক নজরে প্রান্তরে বসবাসকারী ইস্রায়েলদেরকে দেখার শক্তি থাকত, তাহলে আপনি কী দেখতে পেতেন? উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিমব্যাপী, তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করা, সম্ভবত ৩০ লক্ষ বা তার চাইতেও বেশি সংখ্যক লোকেরা, বিস্তারিত অথচ সুসংগঠিত তাঁবুগুলির মধ্যে বসবাস করছে। আর একটু কাছের থেকে পর্যাবেক্ষণ করলে, আপনি এও লক্ষ্য করতেন যে তাঁবুগুলির মধ্যবর্তী স্থানে আর একটি দলভাগ রয়েছে। এই চারটি ছোট ছোট তাঁবুশ্রেণীর মধ্যে লেবীয় বংশের পরিবারগুলি থাকত। তাঁবুর ঠিক মাঝখানে একটি স্বতন্ত্র কাঠামো ছিল এবং এই স্থানটিকে কাপড়ের একটি আবরণ দিয়ে আলাদা করে রাখা হত। এটিই ছিল “সমাগম তাম্বু” বা আবাস, যা “বিজ্ঞমনা” ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার পরিকল্পনা অনুসারে বানিয়েছিল।​—⁠গণনাপুস্তক ১:​৫২, ৫৩; ২:​৩, ১০, ১৭, ১৮, ২৫; যাত্রাপুস্তক ৩৫:১০.

৫. ইস্রায়েলে আবাস কোন্‌ উদ্দেশ্য সাধন করেছিল?

৫ প্রান্তরে যাত্রার সময় প্রায় ৪০টি শিবির স্থানে ইস্রায়েলীয়রা এক একটি করে এই আবাস নির্মাণ করে এবং এটি সেখানে থাকাকালীন তাদের সবচাইতে প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায়। (গণনাপুস্তক ৩৩ অধ্যায়) তাই যথার্থভাবে বাইবেল বর্ণনা দেয় যে যিহোবা তাঁর লোকেদের সাথে তাদের তাঁবুর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থান করেন। তাঁর মহিমার দ্বারা আবাসটি পরিপূর্ণ থাকত। (যাত্রাপুস্তক ২৯:​৪৩-৪৬; ৪০:৩৪; গণনাপুস্তক ৫:৩; ১১:২০; ১৬:⁠৩) আমাদের জীবন্ত বাইবেল (ইংরাজি) নামক বইটি মন্তব্য করে: “এই বহনীয় মন্দিরটি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বস্তু ছিল, যেহেতু এটি সেই গোষ্ঠীর জন্যে একটি ধর্মীয় সমাবেশের স্থান সৃষ্টি করেছিল। এইভাবে এটি তাদেরকে বহু বছর যাবৎ মরুভূমিতে থাকাকালীন একতায় রেখেছিল এবং একতাবদ্ধভাবে কাজ করতে সাহায্য করেছিল।” কিন্তু তার চাইতেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে, এই আবাস তাদেরকে সর্বদা মনে করিয়ে দিত যে সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে ইস্রায়েলের উপাসনা হল তাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।

৬, ৭. উপাসনার কোন্‌ কাঠামো আবাসের পরিবর্তে আসে এবং এটি কিভাবে ইস্রায়েল জাতির সাহায্যে আসে?

৬ ইস্রায়েলীয়রা প্রতিজ্ঞাত দেশে এসে পৌঁছানোর পরও আবাসটি ছিল তাদের উপাসনার কেন্দ্রস্থান। (যিহোশূয় ১৮:১; ১ শমূয়েল ১:⁠৩) কালক্রমে, রাজা দায়ূদ একটি স্থায়ী কাঠামো নির্মাণ করার প্রস্তাব নেন। এটাই সেই মন্দির হিসাবে পরিগণিত হয়েছিল, যা পরবর্তীকালে তার পুত্র শলোমনের দ্বারা নির্মিত হয়। (২ শমূয়েল ৭:​১-১০) এটির উদ্বোধনের সময়, মেঘ উপনীত হয় যা ইঙ্গিত করে এই নির্মাণের প্রতি যিহোবার অনুমোদন। “আমি সত্যই তোমার এক বসতি গৃহ-নির্ম্মাণ করাইলাম,” শলোমন প্রার্থনা করেন, “ইহা চিরকাল তোমার নিবাসস্থান।” (১ রাজাবলি ৮:​১২, ১৩; ২ বংশাবলি ৬:⁠২) এই নবনির্মিত মন্দিরটি, সেই জাতির জন্য ভক্তির এক কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে।

৭ বছরে তিনবার, সকল ইস্রায়েলীয় পুরুষেরা, যিরূশালেমের সেই মন্দিরের আনন্দানুষ্ঠানে যোগদান করতে যেতো, ঈশ্বরের আশীর্বাদের প্রতি উপলব্ধি প্রকাশ করতে। যথার্থভাবে, এই পুনর্মিলনকে “যিহোবার পর্বসংক্রান্ত উৎসব” বলে অবিহিত করা হয়, যা ঈশ্বরের উপাসনার প্রতি দৃষ্টিনিবদ্ধ করে। (লেবীয় পুস্তক ২৩:​২, ৪, NW) ধার্মিক স্ত্রীলোকেরাও পরিবারে অন্যান্য সদস্যদের সাথে যোগদান করত।​—⁠১ শমূয়েল ১:​৩-৭; লূক ২:​৪১-৪৪.

৮. গীতসংহিতা ৮৪:​১-১২ পদ কিভাবে যিহোবার উপাসনার গুরুত্বকে বর্ণনা দেয়?

৮ অনুপ্রাণিত গীতরচক শব্দালংকারের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন যে তাদের জীবনে উপাসনা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। “হে বাহিনীগণের সদাপ্রভু, তোমার আবাস কেমন প্রিয়!” কোরহের সন্তানেরা গেয়েছিল। তারা অবশ্যই কেবল মাত্র একটা আবাসনের প্রশংসা করছিল না। বরঞ্চ, তারা উচ্চস্বরে যিহোবা ঈশ্বরের প্রশংসা করছিল এই বলে: “আমার হৃদয় ও আমার মাংস জীবন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশে উচ্চধ্বনি করে।” লেবীয় সংক্রান্ত পরিচর্যা তাদের জীবনে অনেক আনন্দ এনেছিল। “ধন্য তাহারা, যাহারা তোমার গৃহে বাস করে,” তারা ঘোষণা করে। “তাহারা সতত তোমার প্রশংসা করিবে।” বস্তুতপক্ষে, সমগ্র ইস্রা য়েল গাইতে পারত: “ধন্য সেই ব্যক্তি, যাহার বল তোমাতে, [সিয়োনগামী] রাজপথ যাহার হৃদয়ে রহিয়াছে। . . . তাহারা উত্তর উত্তর বলবান হইয়া অগ্রসর হয়, প্রত্যেকে সিয়োনে ঈশ্বরের কাছে দেখা দেয়।” যদিও হয়ত একজন ইস্রায়েলীয়ের পক্ষে যিরূশালেমের যাত্রা দীর্ঘ ও ক্লান্তিময় হত, কিন্তু রাজধানীতে প্রবেশকালে সে তার শক্তি পুনরায় ফিরে পেত। প্রশংসাসূচক ভাবে যিহোবার উপাসনা করার সময় তার হৃদয় আনন্দে ভরে যেতো: “কেননা তোমার প্রাঙ্গণে এক দিনও সহস্র দিন অপেক্ষা উত্তম; বরং আমার ঈশ্বরের গৃহের গোবরাটে দাঁড়াইয়া থাকা আমার বাঞ্ছনীয়, তবু দুষ্টতার তাম্বুতে বাস করা বাঞ্ছনীয় নয়। . . . হে বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ধন্য সেই ব্যক্তি, যে তোমার উপরে নির্ভর করে।” যিহোবার উপাসনাকে যে ধরনের প্রাধান্য ইস্রায়েলীয়রা দিয়েছিল, এই অভিব্যক্তিগুলি তারই প্রকাশ করে।—গীতসংহিতা ৮৪:১-১২.

৯. ইস্রায়েল জাতির কী হয়েছিল যখন তারা যিহোবার উপাসনাকে প্রথমে রাখতে ব্যর্থ হয়?

৯ দুঃখের বিষয় হল যে ইস্রায়েল, এই সত্য উপাসনাকে সামনে রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল। মিথ্যা দেবদেবীর প্রতি ভক্তিকে তারা প্রশ্রয় দেয় যিহোবার প্রতি তাদের উদ্যোগকে হ্রাস করতে। পরিশেষে, যিহোবা শত্রুদের হাতে তাদেরকে পরিত্যাগ করেন, বাবিলনে তাদেরকে বন্দী হতে অনুমতি দেন। ৭০ বছর পরে আবার যখন তাদেরকে নিজের দেশে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়, তখন যিহোবা ইস্রায়েলের কাছে, হগয়, সখরিয় ও মালাখির মতে বিশ্বস্ত ভাববাদীদেরকে উত্তেজনামূলক পরামর্শ দিয়ে পাঠান। পুরোহিত ইষ্রা এবং রাজ্যপাল নহিমিয় মন্দির পুনর্নির্মাণ ও সত্য উপাসনা আবার সেখানে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে ঈশ্বরের লোকেদের উদ্দীপিত করেন। কিন্তু যতই শতাব্দী অতিবাহিত হতে থাকে, আবার সেই জাতিদের মধ্যে সত্য উপাসনার প্রাধান্য কমতে শুরু করে।

সত্য উপাসনার প্রতি প্রথম শতাব্দীর উদ্যোগ

১০, ১১. যীশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন তখন বিশ্বস্ত লোকেদের জীবনে যিহোবার উপাসনা কোন্‌ স্থানটি নিয়েছিল?

১০ এরপর, যিহোবার নিরূপিত সময়ে, মশীহের আবির্ভাব ঘটে। বিশ্বস্ত ব্যক্তিবিশেষেরা পরিত্রাণের জন্য যিহোবার উপর নির্ভর করছিল। (লূক ২:২৫; ৩:১৫) লূক লিখিত সুসমাচার নির্দিষ্টভাবে বর্ণনা দেয় যে ৮৪-বছরের বিধবা হান্না “ধর্ম্মধাম হইতে প্রস্থান না করিয়া উপবাস ও প্রার্থনা সহকারে রাত দিন উপাসনা করিতেন।”​—⁠লূক ২:৩৭.

১১ “আমার খাদ্য,” যীশু বলেন, “এই, যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, যেন তাঁহার ইচ্ছা পালন করি ও তাঁহার কার্য্য সাধন করি।” (যোহন ৪:৩৪) চিন্তা করে দেখুন যীশু কী ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন যখন তিনি মন্দিরেতে সেই পোদ্দারদের মুখোমুখি হন। তিনি তাদের ও যারা পায়রা বিক্রি করছিল তাদের মেজ উলটিয়ে দেন। মার্ক বর্ণনা দেন: “[যীশু] ধর্ম্মধামের মধ্য দিয়া কাহাকেও কোন পাত্র লইয়া যাইতে দিলেন না। আর তিনি উপদেশ দিয়া তাহাদিগকে বলিলেন, ইহা কি লেখা নাই, “আমার গৃহকে সর্ব্বজাতির প্রার্থনা-গৃহ বলা যাইবে”? কিন্তু তোমরা ইহা “দস্যুগণের গহ্বর” করিয়াছ।” (মার্ক ১১:১৫-১৭) হ্যাঁ, যীশু, এমনকি কাউকে কোন জিনিস নিয়ে, মন্দিরের প্রাঙ্গণ দিয়ে সংক্ষেপে নগরের অন্য প্রান্তে পর্যন্ত যেতে দিতেন না। যীশুর এই কাজগুলি তাঁর একাগ্র ভক্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে যীশু আমাদের জন্য এক অতি উত্তম আদর্শ রেখে গেছেন। তিনি প্রকৃতই যা প্রচার করেন তা অভ্যাস করেছিলেন।​—⁠১ পিতর ২:২১.

১২. যীশুর শিষ্যরা কিভাবে দেখান যে তারা যিহোবার উপাসনাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন?

১২ মিথ্যা ধর্মের রীতিনীতির ভার থেকে যে ভাবে তিনি নিপীড়িত অথচ বিশ্বস্ত যিহূদীদেরকে মুক্ত করার দায়িত্ব পালন করেন, সে ক্ষেত্রেও যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য এক অনুকরণীয় আর্দশ রেখে গেছেন। (লূক ৪:১৮) যীশু, যে শিষ্যকরণ ও বাপ্তাইজ করার আদেশ দিয়েছিলেন, সেই আদেশ অনুসারে, প্রাথমিক খ্রীষ্টানেরা সাহসের সাথে, তাদের প্রভুর পুনরুত্থান সম্বন্ধীয়, যিহোবার উদ্দেশ্যকে ঘোষণা করত। তাঁর উপাসনাকে প্রাধান্য দেওয়ার জন্য যিহোবা তাদের উপর খুব খুশি হয়েছিলেন। তাই ঈশ্বরের নিজস্ব দূত আশ্চর্যভাবে পিতর এবং যোহনকে কয়েদ থেকে মুক্তি দেন এবং তাদেরকে আদেশ করেন: “তোমরা যাও, ধর্ম্মধামে দাঁড়াইয়া লোকদিগকে এই জীবনের সমস্ত কথা বল।” নবশক্তিতে শক্তিমান হয়ে, তারা তা পালন করেন। প্রতিদিন, যিরূশালেমের মন্দিরে এবং ঘরে ঘরে গিয়ে “উপদেশ দিতেন, এবং যীশুই যে খ্রীষ্ট, এই সুসমাচার প্রচার করিতেন, ক্ষান্ত হইতেন না।”—প্রেরিত ১:৮; ৪:২৯, ৩০; ৫:২০, ৪২; মথি ২৮:১৯, ২০.

১৩, ১৪. (ক) প্রাথমিক খ্রীষ্টানদের সময় থেকে, শয়তান ঈশ্বরের দাসেদেরকে কী করার চেষ্টা করে চলেছে? (খ) ঈশ্বরের বিশ্বস্ত দাসেরা ক্রমাগত কী করে গেছে?

১৩ তাদের প্রচারের প্রতি যতই বিরোধিতা বৃদ্ধি পেতে থাকে, ঈশ্বর তাঁর বিশ্বস্ত দাসদেরকে সময়োপযোগী কিছু উপদেশ লিখতে পরিচালনা করেন। “তোমাদের সমস্ত ভাবনার ভার তাঁহার উপরে ফেলিয়া দেও; কেননা তিনি তোমাদের জন্য চিন্তা করেন,” আনুমানিক সা.শ. ৬০-৬৪ সালে পিতর এই কথাগুলি লেখেন। “তোমরা প্রবুদ্ধ হও, জাগিয়া থাক; তোমাদের বিপক্ষ দিয়াবল, গর্জ্জনকারী সিংহের ন্যায়, কাহাকে গ্রাস করিবে, তাহার অন্বেষণ করিয়া বেড়াইতেছে। তোমরা বিশ্বাসে অটল থাকিয়া তাহার প্রতিরোধ কর; তোমরা জান, জগতে অবস্থিত তোমাদের ভ্রাতৃবর্গেও সেই প্রকার নানা দুঃখভোগ সম্পন্ন হইতেছে।” প্রাথমিক খ্রীষ্টানেরা নিঃসন্দেহে ওই বাক্যগুলি দ্বারা আশ্বাস পেয়েছিল। তারা জানতো যে কিছুক্ষণ তাড়না পাওয়ার পর, ঈশ্বর তাদের অনুশীলনের শেষ আনবেন। (১ পিতর ৫:৭-১০) যিহূদী বিধিব্যবস্থার সেই শেষ দিনগুলিতে, সত্য খ্রীষ্টানেরা যিহোবার প্রেমময় উপাসনাকে, একটা নতুন শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল।​—⁠কলসীয় ১:২৩.

১৪ প্রেরিত পৌল যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ধর্মভ্রষ্টতা অর্থাৎ সত্য উপাসনার থেকে সরে যাওয়ার সূচনা ঘটে। (প্রেরিত ২০:​২৯, ৩০; ২ থিষলনীকীয় ২:⁠৩) প্রথম শতাব্দীর অন্তর্ভূক্ত শেষ দশকগুলিতে জমা হওয়া সাক্ষ্যই এর প্রমাণ দেয়। (১ যোহন ২:​১৮, ১৯) শয়তান সাফল্যের সাথে নকলদেরকে, প্রকৃত খ্রীষ্টানদের মধ্যে বপন করে, আর এর ফলে গমবিশিষ্ট খ্রীষ্টানদের থেকে “শ্যামাঘাস”-কে শনাক্ত করা খুব মুশকিল হয়ে পড়ে। কিন্তু যাইহোক না কেন, বিগত শতাব্দী ধরে, কিছু ব্যক্তিবিশেষেরা, ঈশ্বরের উপাসনাকে প্রথম স্থান দিয়েছিল, এমন কি নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পর্যন্ত। কিন্তু ঈশ্বর সত্য উপাসনাকে উচ্চীকৃত করার জন্য তাঁর দাসেরদেরকে পুনরায় একত্রিত করেননি যতক্ষণ না “জাতিগণের সময়” এর শেষ দশকগুলির উপস্থিতি না হয়েছে।​—⁠মথি ১৩:​২৪-৩০, ৩৬-৪৩; লূক ২১:২৪.

বর্তমান কালে যিহোবার উপাসনাকে উচ্চীকৃত করা হয়েছে

১৫. ১৯১৯ সাল থেকে, কিভাবে যিশাইয় ২:​২-৪ এবং মীখা ৪:​১-৪ পদ পরিপূর্ণতা লাভ করছে?

১৫ ১৯১৯ সালে, যিহোবা অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদেরকে শক্তি দেন সাহসের সাথে জগদ্ব্যাপী সাক্ষ্যদানের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, যা সত্য ঈশ্বরের উপাসনাকে উচ্চীকৃত করেছে। ১৯৩৫ সাল থেকে আজ অবধি রূপক “অপর মেষের” অন্তঃপ্রবাহের ফলে, “সদাপ্রভুর গৃহের পর্ব্বত”-এ আধ্যাত্মিকভাবে জনশ্রোতের আগমন ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৯৯৩ সালের পরিচর্যা বছরে, ৪৭,০৯,৮৮৯ জন যিহোবার সাক্ষী এই উচ্চীকৃত উপাসনাতে যোগ দেওয়ার জন্য অপরকে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করেছে। মিথ্যা ধর্মের বিশ্বসাম্রাজ্য বিশেষ করে, খ্রীষ্ট জগতের সাম্প্রদায়িকতামূলক “পাহাড়ের” অপকৃষ্ট আধ্যাত্মিক পরিস্থিতির তুলনায় এটি কতই না ভিন্ন!​—⁠যোহন ১০:১৬; যিশাইয় ২:​২-৪; মীখা ৪:​১-৪.

১৬. যিশাইয় ২:​১০-২২ পদে যা ভাববাণী করা আছে তার পরিপ্রেক্ষিতে ঈশ্বরের সকল দাসেদের কী করা উচিত?

১৬ মিথ্যাধর্মের সমর্থকেরা তাদের গির্জা এবং ক্যাথিড্রালকে আর এমনকি ক্যাথলিক পাদরীদেরকে আড়ম্বরপূর্ণ উপাধি ও সম্মান দেওয়ার দ্বারা তাদেরকে “উচ্চ” স্থানে বসায়। কিন্তু লক্ষ্য করে দেখুন যে যিশাইয় কী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “সামান্য লোকের উচ্চ দৃষ্টি অবনত হইবে, মান্য লোকদের গর্ব্ব খর্ব্ব হইবে, আর সেই দিন কেবল সদাপ্রভুই উন্নত হইবেন।” এটা কখন হবে? দ্রুতগতি মহাক্লেশের সময় যখন “প্রতিমা সকল নিঃশেষে বিলুপ্ত হইবে।” সেই ভয়সঞ্চারকারী দিন এগিয়ে আসার পরিপ্রেক্ষিতে, ঈশ্বরের সমস্ত দাসেদের গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে যে যিহোবার উপাসনা তাদের জীবনে কোন্‌ স্থানটি নিয়েছে।—যিশাইয় ২:১০-২২.

১৭. বর্তমান দিনে যিহোবার দাসেরা কিভাবে দেখায় যে তারা যিহোবার উপাসনাকে প্রাধান্য দিচ্ছে?

১৭ এক আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃসমাজ হিসাবে, যিহোবা সাক্ষীরা উদ্যোগের সাথে রাজ্যের প্রচার করার জন্যে সুপরিচিত। তাদের উপাসনা কেবল মাত্র সপ্তাহে একঘন্টা স্থায়ী নিছক ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়। না, এটা তাদের জীবনের সম্পূর্ণ পথ। (গীতসংহিতা ১৪৫:⁠২) বস্তুতপক্ষে, গত বছর ৬,২০,০০০ জনেরও বেশি সাক্ষীরা এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল, যাতে তারা খ্রীষ্টীয় পরিচর্যায় পূর্ণ-সময় অংশ নিতে পারে। বাদবাকিরা অবশ্যই যিহোবার উপাসনাকে অবজ্ঞা করেনি। তাদের দৈনন্দিন কথাবার্তা ও জনসাধারণের কাছে প্রচারের মধ্যে তা স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছিল, যদিও তাদের পারিবারিক কর্তব্য তাদেরকে জাগতিক কাজে কঠোর পরিশ্রম করতে বাধ্য করেছিল।

১৮, ১৯. সাক্ষীদের জীবন সম্বন্ধীয় ঘটনা যা পড়ে আপনি হয়তো উৎসাহিত হয়েছিলেন তার একটা উদাহরণ দিন।

১৮ প্রহরীদুর্গ-এ প্রকাশিত সাক্ষীদের জীবন অভিজ্ঞতা সাহায্য করে উপলব্ধি করতে যে কিভাবে ভাইবোনেরা বিভিন্ন উপায়ে যিহোবার উপাসনাকে তাদের জীবনে প্রথম স্থানে রেখেছে। একজন যুবতী বোন যে ৬ বছর বয়সে যিহোবার কাছে তার জীবন উৎসর্গ করে, মিশনারীর কাজকে তার জীবনের লক্ষ্য হিসাবে স্থাপিত করেছিল। তোমরা যারা যুবক ভাইবোনেরা আছো, তোমরা কী ধরনের লক্ষ্য স্থাপন করতে পারো যা তোমাদের সাহায্য করবে যিহোবার উপাসনাকে তোমার জীবনে সবচাইতে প্রধান স্থান দিতে?​—⁠“ছ বছর বয়সে স্থাপিত লক্ষ্যের অনুধাবন,” প্রহরীদুর্গ ১লা মার্চ, ১৯৯২, পৃষ্ঠা ২৬-৩০, প্রবন্ধটি দেখুন।

১৯ যিহোবার উপাসনাকে সঠিক স্থানে রাখবার ক্ষেত্রে, আর একটি উত্তম উদাহরণ রাখেন একজন বয়স্কা বিধবা বোন। যাদেরকে তিনি সত্য শিখতে সাহায্য করেছিলেন, তাদের কাছ থেকেই সহ্য করার যথেষ্ট উৎসাহ তিনি পেয়েছিলেন। তারা ছিল তার “পরিবার।” (মার্ক ৩:​৩১-৩৫) আপনি যদি নিজেকে এইধরনের পরিস্থিতিতে খুঁজে পান, তাহলে কি আপনি মণ্ডলীতে যাদের বয়স কম, তাদের সমর্থন ও সাহায্য গ্রহণ করবেন? (দয়া করে লক্ষ্য করুন যে কিভাবে বোন উইনিফ্রেড রেমি, নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেছেন “আমি শস্য ছেদনের সময় সাড়া দিয়েছিলাম,” নামক প্রবন্ধে, যা ১লা জুলাই, ১৯৯২, পৃষ্ঠা ২১-৩, প্রহরীদুর্গ-এ, প্রকাশিত হয়।) আপনারা যারা পূর্ণসময়ের পরিচারক, আপনাদেরকে যেখানে কাজ করতে বলা হয়েছে সেখানে নম্রতার সাথে পরিচর্যা করার দ্বারা এবং ঈশতান্ত্রিক নির্দেশের প্রতি বশ্যতা দেখানোর দ্বারা আপনারা অবশ্যই প্রমাণ করেছেন যে যিহোবার উপাসনা প্রকৃতই আপনাদের জীবনে প্রথম স্থান নিয়েছে। (দয়া করে লক্ষ্য করুন ভাই রয় রায়ানের উদাহরণ যা ১লা ডিসেম্বর, ১৯৯১, পৃষ্ঠা ২১-৩, প্রহরীদুর্গ-এ “ঈশ্বরের সংগঠনের সাথে নিবিড় ভাবে সংযুক্ত থাকা” নামক প্রবন্ধে বর্ণনা করা হয়েছে।) মনে রাখবেন যে যখন আমরা যিহোবার উপাসনাকে প্রাধান্য দিই, তখন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে যিহোবা আমাদের দেখাশোনা করবেন। জীবনের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলি কোথা থেকে আসবে, তার জন্য আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোন দরকার নেই। বোন অলিভ ও সোনিয়া স্পৃংগেটের অভিজ্ঞতা এর প্রমাণ দেয়।​—⁠“আমরা রাজ্যকে প্রথম স্থান দিয়েছি,” ১লা, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪, পৃষ্ঠা ২০-৫, প্রহরীদুর্গ এর এই প্রবন্ধটি দেখুন।

২০. কোন্‌ যথোপযোগী প্রশ্নগুলি এখন আমাদের নিজেদেরকে করা উচিত?

২০ তাহলে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের নিজেদেরকে কিছু মর্মভেদী প্রশ্ন করা উচিত নয় কি? আমার জীবনে যিহোবার উপাসনা কোন স্থানটি নিয়েছে? ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য আমি যে উৎসর্গ করেছিলাম তা কি আমি সাধ্য মতো মেনে চলার চেষ্টা করছি? জীবনের কোন ক্ষেত্রে আমি উন্নতি করতে পারি? পরবর্তী প্রবন্ধটির চিন্তাপূর্ণ বিবেচনা আমাদেরকে উপলব্ধি করতে সুযোগ দেবে যে কিভাবে আমরা সঙ্গতির সদ্ব্যবহার করব আমাদের জীবনের নির্বাচিত প্রাধান্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে-অর্থাৎ সার্বভৌম প্রভু যিহোবা, আমাদের প্রেমময় পিতার উপাসনা।​—⁠উপদেশক ১২:১৩; ২ করিন্থীয় ১৩:⁠৫.

পুনরালোচনায়:

▫ উপাসনার ক্ষেত্রে, যিহোবা কী চান?

▫ আবাসটি কোন্‌ বিষয়কে স্মরণ করতে সাহায্য করে?

▫ সা.শ. প্রথম শতাব্দীতে সত্য উপাসনার প্রতি উদ্যোগের ক্ষেত্রে কারা অসাধারণ আদর্শ রেখেছেন এবং কিভাবে?

▫ ১৯১৯ সাল থেকে কিভাবে যিহোবার উপাসনা উন্নীত হয়েছে?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার