জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
মে ৩-৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ২৭-২৯
“যিহোবার পক্ষপাতহীন মনোভাব অনুকরণ করুন”
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৬/১৫ ১০ অনু. ১৪
যিহোবার গুণাবলি পূর্ণরূপে উপলব্ধি করুন
১৪ সেই পাঁচ বোন মোশির কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিল: “আমাদের পিতার পুত্ত্র নাই বলিয়া তাঁহার গোষ্ঠী হইতে তাঁহার নাম কেন লোপ পাইবে?” তারা অনুনয় করে বলেছিল: “আমাদের পিতৃকুলের ভ্রাতৃগণের মধ্যে আমাদিগকে অধিকার দিউন।” মোশি কি এইরকম প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন যে, ‘নিয়ম ভাঙা যাবে না’? না, তিনি “সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাদের বিচার উপস্থিত করিলেন।” (গণনা. ২৭:২-৫) যিহোবা কী বলেছিলেন? যিহোবা মোশিকে বলেছিলেন: “সলফাদের কন্যাগণ যথার্থ কহিতেছে; তুমি উহাদের পিতৃকুলের ভ্রাতাদিগের মধ্যে অবশ্য উহাদিগকে স্বত্বাধিকার দিবে, ও উহাদের পিতার অধিকার উহাদিগকে সমর্পণ করিবে।” যিহোবা আরও কিছু করেছিলেন। তিনি মোশিকে নির্দেশনা প্রদান করার মাধ্যমে এই ব্যতিক্রম পরিস্থিতির জন্য একটা নিয়ম স্থাপন করেছিলেন: “কেহ যদি অপুত্ত্রক হইয়া মরে, তবে তোমরা তাহার অধিকার তাহার কন্যাকে দিবে।” (গণনা. ২৭:৬-৮; যিহো. ১৭:১-৬) এরপর থেকে, একইরকম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল এমন সমস্ত ইস্রায়েলীয় নারী সুরক্ষা লাভ করেছিল।
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৬/১৫ ১১ অনু. ১৫
যিহোবার গুণাবলি পূর্ণরূপে উপলব্ধি করুন
১৫ সেটা কত সদয় এবং পক্ষপাতহীন এক সিদ্ধান্তই না ছিল! যিহোবা এই নারীদের সঙ্গে, যারা প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ছিল, মর্যাদা সহকারে আচরণ করেছিলেন, যেমনটা তিনি সেই ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গেও করেছিলেন, যারা আরও অনুকূল পরিস্থিতিতে ছিল। (গীত. ৬৮:৫) এটা হল বাইবেলের এমন অনেক বিবরণের মধ্যে মাত্র একটা বিবরণ, যা এই হৃদয়গ্রাহী সত্য সম্বন্ধে তুলে ধরে: যিহোবা তাঁর সমস্ত দাসের সঙ্গে পক্ষপাতহীনভাবে আচরণ করেন।—১ শমূ. ১৬:১-১৩; প্রেরিত ১০:৩০-৩৫, ৪৪-৪৮.
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৬/১৫ ১১ অনু. ১৬
যিহোবার গুণাবলি পূর্ণরূপে উপলব্ধি করুন
১৬ কীভাবে আমরা যিহোবার পক্ষপাতহীন মনোভাবকে অনুকরণ করতে পারি? মনে রাখবেন, পক্ষপাতহীন মনোভাবের দুটো দিক রয়েছে। কেবল আমরা যদি পক্ষপাতহীন হই, তাহলে আমরা অন্যদের সঙ্গে পক্ষপাতহীনভাবে আচরণ করতে পারব। এটা ঠিক যে, আমরা সকলেই নিজেদেরকে খোলা মনের এবং পক্ষপাতহীন বলে মনে করতে চাই। কিন্তু, আপনি হয়তো একমত হবেন যে, আমাদের নিজেদের অনুভূতিগুলো নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন করা সবসময় সহজ নয়। তাই, আমরা পক্ষপাতহীন ব্যক্তি কি না, তা নির্ণয় করার জন্য আমরা কী করতে পারি? যিশু যখন লোকেরা তাঁর সম্বন্ধে কী বলে, তা জানতে আগ্রহী ছিলেন, তখন তিনি তাঁর নির্ভরযোগ্য বন্ধুদের জিজ্ঞেস করেছিলেন: “মনুষ্যপুত্ত্র কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে?” (মথি ১৬:১৩, ১৪) এক্ষেত্রে, যিশুকে অনুসরণ করুন না কেন? আপনাকে অকপটভাবে উত্তর দেবে এমন কিছু বন্ধুকে আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন যে, পক্ষপাতহীন ব্যক্তি হিসেবে আপনার সুনাম রয়েছে কি না। তিনি যদি স্বীকার করেন যে, আপনি হয়তো বর্ণ, সামাজিক পদমর্যাদা অথবা টাকাপয়সা দেখে কিছুটা পক্ষপাতিত্ব করে থাকেন, তাহলে আপনার কী করা উচিত? আপনার অনুভূতি সম্বন্ধে যিহোবার কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করুন, আপনার মনোভাব পরিবর্তন করার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ করুন, যাতে আপনি তাঁর পক্ষপাতহীন মনোভাবকে পূর্ণরূপে প্রতিফলিত করতে পারেন।—মথি ৭:৭; কল. ৩:১০, ১১.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫২৮ অনু. ৫, ইংরেজি
নৈবদ্য
পেয় নৈবেদ্য। অন্যান্য বেশিরভাগ নৈবেদ্যের সঙ্গে সঙ্গে পেয় নৈবেদ্যও উৎসর্গ করা হত আর তা বিশেষভাবে ইজরায়েলীয়েরা প্রতিজ্ঞাত দেশে বাস করতে শুরু করার পর। (গণনা ১৫:২, ৪খ, ৫, ৮-১০) এটার অন্তর্ভুক্ত ছিল দ্রাক্ষারস (‘মদিরা’) আর এটা বেদির উপর ঢেলে দেওয়া হত। (গণনা ২৮:৭, ১৪; তুলনা করুন, যাত্রা ৩০:৯; গণনা ১৫:১০.) প্রেরিত পৌল ফিলিপীর খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “তোমাদের বিশ্বাস তোমাদের যে-পবিত্র সেবা করতে অনুপ্রাণিত করেছে, সেটার উদ্দেশ্যে আমাকে যদি দ্রাক্ষারস উৎসর্গ করার মতো ঢেলে দেওয়া হয়, তবুও আমি খুশি।” এখানে তিনি সহখ্রিস্টানদের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করতে গিয়ে পেয় নৈবেদ্যের উদাহরণ ব্যবহার করেছিলেন। (ফিলি ২:১৭) তিনি তার মৃত্যুর কিছুদিন আগে, তীমথিয়কে লিখেছিলেন: “আমাকে দ্রাক্ষারস উৎসর্গ করার মতো ঢেলে দেওয়া হচ্ছে এবং আমার মুক্তি লাভ করার সময় এসে গিয়েছে।”—২তীম ৪:৬.
মে ১০-১৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ৩০-৩১
“আপনার অঙ্গীকার রক্ষা করুন”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১১৬২, ইংরেজি
অঙ্গীকার
স্বেচ্ছায় করা হত, তবে একবার তা করার পর সেটা রক্ষা করতে হত। একজন ব্যক্তি পুরোপুরিভাবে নিজের ইচ্ছায় অঙ্গীকার করতেন। কিন্তু, একবার একটা অঙ্গীকার করার পর ঈশ্বরের আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি তা রক্ষা করতে বাধ্য ছিলেন। তাই, মানত বা অঙ্গীকার সম্বন্ধে বলা হয়েছে যে, তা একজন ব্যক্তির ‘আপন প্রাণকে বদ্ধ করে।’ এর অর্থ হল, একজন ব্যক্তি তার কথা অনুযায়ী কাজ করার জন্য নিজের জীবনকে জামিন হিসেবে রাখতেন। (গণনা ৩০:২; এ ছাড়া, রোমীয় ১:৩১, ৩২ পদ দেখুন।) যেহেতু এর সঙ্গে জীবন জড়িত, তাই শাস্ত্র আমাদের পরামর্শ দেয়, আমরা যেন ভালো করে ভেবেচিন্তে অঙ্গীকার করি এবং এর সঙ্গে যে-বিষয়গুলো জড়িত, সেগুলো পূরণ করতে পারব কি না, তা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করি। ব্যবস্থায় বলা হয়েছিল: “তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে কিছু মানত করিলে . . . সদাপ্রভু অবশ্য তাহা তোমা হইতে আদায় করিবেন; না দিলে তোমার পাপ হইবে। কিন্তু যদি মানত না কর, তবে তাহাতে তোমার পাপ হইবে না।”—দ্বিতীয় ২৩:২১, ২২.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১১৬২, ইংরেজি
অঙ্গীকার
মানত বা অঙ্গীকার হল কোনো কাজ করার, কোনো কিছু উৎসর্গ করার অথবা উপহার হিসেবে দেওয়ার, কোনো সেবা শুরু করার বা শর্ত পূরণ করার অথবা আইন অনুযায়ী ভুল নয় এমন কিছু বিষয় থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে ঈশ্বরের কাছে করা এক গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞা। একজন ব্যক্তি নিজের স্বাধীন ইচ্ছা ব্যবহার করে স্বেচ্ছায় অঙ্গীকার করতেন। যেহেতু অঙ্গীকার হল এক গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞা, তাই এটা কোনো শপথকে অথবা কোনো দিব্যকে আরও জোরদার করত। আর কখনো কখনো বাইবেলে দুটো অভিব্যক্তি একসঙ্গে এসেছে। (গণনা ৩০:২; মথি ৫:৩৩) “অঙ্গীকার” হল কোনো কিছু করার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করা। আর “শপথ” হল উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নামে এই নিশ্চয়তা দেওয়া যে, একজন ব্যক্তি তার প্রতিজ্ঞা অবশ্যই রক্ষা করবে। নিয়ম বা চুক্তি করার সময় প্রায়ই শপথ করে চুক্তি করা হত।—আদি ২৬:২৮; ৩১:৪৪, ৫৩.
গণনাপুস্তকের প্রধান বিষয়গুলো
৩০:৬-৮—একজন খ্রিস্টান পুরুষ কি তার স্ত্রীর মানতকে বাতিল করতে পারেন? মানতের ক্ষেত্রে, এখন যিহোবা তাঁর উপাসকদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আচরণ করেন। উদাহরণস্বরূপ, যিহোবার প্রতি উৎসর্গীকরণ হল এক ব্যক্তিগত মানত। (গালাতীয় ৬:৫) একজন স্বামীর এই ধরনের মানতকে বাতিল করার কোনো অধিকার নেই। তবে, একজন স্ত্রীর এমন কোনো মানত করা এড়িয়ে চলা উচিত, যেটা ঈশ্বরের বাক্য অথবা তার স্বামীর প্রতি তার কর্তব্যগুলোর সঙ্গে সংঘাত সৃষ্টি করে।
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২৮ অনু. ১, ইংরেজি
যিপ্তহ
কোনো ব্যক্তিকে ধর্মধামে পুরোপুরিভাবে যিহোবার উদ্দেশে সেবা করার জন্য উৎসর্গ করা যেত। এই ক্ষেত্রে, বাবা-মায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার ছিল। শমূয়েল ছিলেন এইরকম একজন ব্যক্তি। তার জন্মের আগেই তার মা হান্না একটা মানত বা অঙ্গীকার করার মাধ্যমে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তিনি তার ছেলেকে আবাসে সেবা করার জন্য দিয়ে দেবেন। তার এই অঙ্গীকারে তার স্বামী ইল্কানার সম্মতি ছিল। শমূয়েল স্তন্যপান ত্যাগ করার পর পরই, হান্না তাকে যিহোবার সেবায় উৎসর্গ করার জন্য ধর্মধামে নিয়ে এসেছিলেন। সেই সময় হান্না বলি হিসেবে উৎসর্গ করার জন্য সঙ্গে করে পশুও নিয়ে এসেছিলেন। (১শমূ ১:১১, ২২-২৮; ২:১১) শিম্শোন ছিলেন এইরকম আরেকজন সন্তান, যাকে নাসরীয় হিসেবে বিশেষভাবে ঈশ্বরের সেবায় উৎসর্গ করা হয়েছিল।—বিচার ১৩:২-৫, ১১-১৪; একজন মেয়ের উপর তার বাবার অধিকার সম্বন্ধে জানার জন্য তুলনা করুন, গণনা ৩০:৩-৫, ১৬.
মে ১৭-২৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ৩২-৩৩
“সেই দেশনিবাসী সকলকে অধিকারচ্যুত করিবে”
প্রহরীদুর্গ ১০ ৮/১ ২৩, ইংরেজি
আপনি কি জানতেন?
সেইসমস্ত “উচ্চস্থলী” কী ছিল, যেগুলোর বিষয়ে ইব্রীয় শাস্ত্রে প্রায়ই উল্লেখ করা হয়েছে?
ইজরায়েলীয়েরা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল, তখন যিহোবা তাদের বলেছিলেন, তারা যেন সেখানে বসবাসরত কনানীয়দের সমস্ত উপাসনার স্থান ধ্বংস করে ফেলে। ঈশ্বর তাদের আদেশ দিয়েছিলেন, “তাহাদের সমস্ত প্রতিমা ভগ্ন করিবে, সমস্ত ছাঁচে ঢালা বিগ্রহ বিনষ্ট করিবে, ও সমস্ত উচ্চস্থলী উচ্ছিন্ন করিবে।” (গণনা ৩৩:৫২) পাহাড়ের উপর খোলা জায়গায় অথবা অন্যান্য স্থানে যেমন, গাছের নীচে কিংবা নগরের ভিতরে উঁচু কাঠামো তৈরি করে হয়তো সেখানে মিথ্যা উপাসনা করা হত। (১রাজা ১৪:২৩; ২রাজা ১৭:২৯; যিহি ৬:৩) উপাসনার জন্য ব্যবহৃত সেই জায়গাগুলো বেদি, স্তম্ভ কিংবা আশেরা-মূর্তি, প্রতিমা, সূর্যপ্রতিমা এবং মিথ্যা উপাসনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য জিনিস দিয়ে সাজানো যেত।
প্রহরীদুর্গ ০৮ ২/১৫ ২৭ অনু. ৫-৬
ইস্রায়েলীয়দের ভুলগুলো থেকে শিখুন
বর্তমানে, আমরা ইস্রায়েলীয়দের মতো একই ধরনের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়ে থাকি। আধুনিক সমাজেও এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলোকে লোকেরা ঈশ্বরতুল্য করে তুলেছে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হল টাকাপয়সা, চিত্রতারকা, খেলোয়াড়, রাজনৈতিক ব্যবস্থাগুলো, নির্দিষ্ট ধর্মীয় নেতারা এবং এমনকি পরিবারের সদস্যরাও। এগুলোর মধ্যে যেকোনোটাই হয়তো আমাদের জীবনের প্রধান চিন্তার বিষয় হয়ে উঠতে পারে। যারা যিহোবাকে ভালবাসে না, এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে তোলা আমাদেরকে আধ্যাত্মিক ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
অবৈধ যৌনসম্পর্ক ছিল বাল উপাসনার একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ, যেটা বহু ইস্রায়েলীয়কে আকর্ষণ ও প্রলুব্ধ করেছিল। একই ধরনের ফাঁদগুলো বর্তমানেও ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে কিছুজনকে প্রলুব্ধ করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, কারোর নিজের ঘরের একান্তে কম্পিউটারের মাউসে ক্লিক করা একজন কৌতূহলী বা অসতর্ক ব্যক্তির জন্য তার শুদ্ধ বিবেককে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট হতে পারে। একজন খ্রিস্টান যদি ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফির দ্বারা প্রলুব্ধ হন, তাহলে তা কত দুঃখজনকই না হবে!
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৪০৪ অনু. ২, ইংরেজি
কনান
কনানীয়দের ধ্বংস করে দেওয়ার বিষয়ে “মোশির প্রতি উক্ত সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশের একটী কথাও” যিহোশূয় বিজ্ঞতার সঙ্গে “অন্যথা করিলেন না।” (যিহো ১১:১৫) কিন্তু, পরবর্তী সময়ে ইজরায়েল জাতি যিহোশূয়ের উত্তম উদাহরণ অনুসরণ করেনি এবং সেই দেশ থেকে কনানীয়দের পুরোপুরিভাবে দূর করে দেয়নি। কনানীয়দের কারণে পরে ইজরায়েল দেশে অপরাধ, অনৈতিকতা ও প্রতিমাপূজা ছড়িয়ে পড়েছিল। এর ফলে, অনেক লোক মারা গিয়েছিল। (গণনা ৩৩:৫৫, ৫৬; বিচার ২:১-৩, ১১-২৩; গীত ১০৬:৩৪-৪৩) যিহোবা ইজরায়েলীয়দের আগেই সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, তারা যদি কনানের লোকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে, তাদের বিয়ে করে, তাদের ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলে এবং তাদের মতো খারাপ কাজ করে, তা হলে তিনি তাদের শাস্তি দেবেন। কনানীয়দের মতো তাদেরও তিনি ধ্বংস করে দেবেন এবং সেই দেশ থেকে “উদগীরণ” করবেন।—যাত্রা ২৩:৩২, ৩৩; ৩৪:১২-১৭; লেবীয় ১৮:২৬-৩০; দ্বিতীয় ৭:২-৫, ২৫, ২৬.
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৩৫৯ অনু. ২, ইংরেজি
সীমানা
ঘুঁটি চেলে বংশের জায়গার ভৌগলিক অবস্থান নির্ধারণ করার পর দ্বিতীয় যে-বিষয়টা সেই জায়গার পরিসীমা নির্ধারণ করেছিল, তা হল: বংশের লোকদের সংখ্যার আনুপাতিক হার। “আর তোমরা গুলিবাঁট দ্বারা আপন আপন গোষ্ঠী অনুসারে দেশাধিকার বিভাগ করিয়া লইবে; অধিক লোককে অধিক অংশ, ও অল্প লোককে অল্প অংশ দিবে; যাহার অংশ যে স্থানে পড়ে, তাহার অংশ সেই স্থানে হইবে।” (গণনা ৩৩:৫৪) ভৌগলিক অবস্থান সম্বন্ধে ঘুঁটি চালার ফলাফল অপরিবর্তনশীল ছিল কিন্তু কোনো বংশ কতটা জায়গা লাভ করবে, সেই বিষয়ে রদবদল করা যেতে পারত। তাই, যিহূদা বংশের এলাকা যখন এর লোকদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি হয়ে গিয়েছিল, তখন সেখান থেকে জায়গা কমিয়ে কিছু অংশ শিমিয়োন বংশের লোকদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।—যিহো ১৯:৯.
মে ২৪-৩০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গণনাপুস্তক ৩৪-৩৬
“যিহোবার কাছে আশ্রয় নিন”
আপনি কি যিহোবার কাছে আশ্রয় নিচ্ছেন?
৪ কিন্তু, একজন ইস্রায়েলীয় যদি দুর্ঘটনাবশত কাউকে হত্যা করে ফেলতেন, তা হলে কী হতো? এমনকী যদিও সেই মৃত্যুটা দুর্ঘটনাবশত ঘটেছিল, কিন্তু তারপরও সেই হত্যাকারী ব্যক্তি একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে হত্যা করার দোষে দোষী ছিলেন। (আদি. ৯:৫) তবে যিহোবা বলেছিলেন, এইরকম ক্ষেত্রে করুণা দেখানো যেতে পারে। যদি কোনো ব্যক্তি প্রমাদবশত বা অনিচ্ছাকৃতভাবে কাউকে হত্যা করে ফেলতেন, তা হলে তিনি রক্তের প্রতিশোধদাতার কাছ থেকে পালিয়ে গিয়ে ছ-টা আশ্রয় নগরের মধ্যে কোনো একটাতে যেতে পারতেন। সেই নগরে থাকার অনুমতি পাওয়ার পর তিনি সুরক্ষিত থাকতেন। কিন্তু, তাকে মহাযাজকের মৃত্যু পর্যন্ত সেই আশ্রয় নগরেই থাকতে হতো।—গণনা. ৩৫:১৫, ২৮.
আপনি কি যিহোবার কাছে আশ্রয় নিচ্ছেন?
৬ একজন ইস্রায়েলীয় যদি দুর্ঘটনাবশত কাউকে হত্যা করতেন, তা হলে তাকে কোনো আশ্রয় নগরে পালিয়ে যেতে হতো এবং সেই নগরের দরজায় দাঁড়িয়ে প্রাচীনদের কাছে ‘আপনার কথা বলিতে’ হতো। প্রাচীনদের সেই ব্যক্তিকে স্বাগত জানাতে হতো। (যিহো. ২০:৪) কিছুসময় পর তারা তাকে সেই নগরে পাঠাতেন, যে-নগরে তিনি হত্যা করেছিলেন, যাতে সেখানকার প্রাচীনরা তার বিচার করতে পারেন। (পড়ুন, গণনাপুস্তক ৩৫:২৪, ২৫.) সেখানকার প্রাচীনরা যদি এই সিদ্ধান্তে আসতেন যে, সেই মৃত্যুটা দুর্ঘটনাবশত ঘটেছিল, তা হলে তারা সেই পলাতককে পুনরায় আশ্রয় নগরে পাঠিয়ে দিতেন।
আপনি কি যিহোবার কাছে আশ্রয় নিচ্ছেন?
১৩ সেই পলাতক একবার আশ্রয় নগরে প্রবেশ করার পর সুরক্ষিত থাকতেন। যিহোবা এই নগরগুলোর বিষয়ে বলেছিলেন: “সেই নগরগুলি . . . তোমাদের রক্ষার স্থান হইবে।” (যিহো. ২০:২, ৩) যিহোবা চাননি যে, সেই পলাতককে তার অপরাধের জন্য পুনরায় বিচার করা হোক। এ ছাড়া, সেই রক্তের প্রতিশোধদাতা যাতে আশ্রয় নগরে ঢুকে পলাতককে হত্যা করতে না পারেন, সেইজন্য প্রতিশোধদাতাকে সেই নগরে প্রবেশ করতে দেওয়া হতো না। সেই পলাতক যতক্ষণ আশ্রয় নগরের ভিতরে থাকতেন, ততক্ষণ তিনি যিহোবার সুরক্ষার অধীনে নিরাপদে থাকতেন। কিন্তু, বিষয়টা এমন ছিল না যে, তিনি জেলে রয়েছেন। তিনি কাজ করতে, অন্যদের সাহায্য করতে এবং শান্তিতে যিহোবার সেবা করতে পারতেন। হ্যাঁ, তিনি এক সুখী ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন উপভোগ করতে পারতেন!
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রহরীদুর্গ ৯১ ২/১৫ ১৩ অনু. ১৩, ইংরেজি
সকলের জন্য সমরূপ মুক্তির মূল্য
১৩ কিন্তু, আদম ও হবা কেউই মুক্তির মূল্য থেকে উপকার লাভ করবে না। মোশির ব্যবস্থায় এই নীতি ছিল: “প্রাণদণ্ডের অপরাধী নরহন্তার প্রাণের জন্য তোমরা কোন প্রায়শ্চিত্ত গ্রহণ করিবে না; তাহার প্রাণদণ্ড অবশ্য হইবে।” (গণনাপুস্তক ৩৫:৩১) আদম প্রতারিত হননি, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে পাপ করেছিলেন। (১ তীমথিয় ২:১৪) এর অর্থ ছিল, তার বংশধরদের হত্যা করা, কারণ তারা এখন উত্তরাধিকারসূত্রে তার কাছ থেকে পাপ পেয়েছে আর এর ফলে মৃত্যুদণ্ড লাভ করেছে। স্পষ্টতই, আদম মৃত্যুর যোগ্য কারণ একজন সিদ্ধ মানুষ হিসেবে তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের আইনের অবাধ্য হওয়া বেছে নিয়েছিলেন। আদমের জন্য মুক্তির মূল্যের ব্যবস্থা কার্যকর করা যিহোবার ধার্মিক নীতির বিপরীত কাজ হত। কিন্তু, আদমের পাপের বেতন প্রদান করার ফলে আদমের বংশধরদের মৃত্যুদণ্ড অকার্যকর হয়ে যায়! (রোমীয় ৫:১৬) আইনগত দিক দিকে, পাপের ধ্বংসাত্মক প্রভাব দূর করে দেওয়া হয়। যিনি মুক্তির মূল্য প্রদান করেছেন, তিনি ‘প্রত্যেকের হয়ে মৃত্যুর স্বাদ নিয়েছেন,’ আদমের সমস্ত সন্তানের হয়ে পাপের পরিণতি নিজে ভোগ করেছেন।—ইব্রীয় ২:৯; ২ করিন্থীয় ৫:২১; ১ পিতর ২:২৪.
মে ৩১–জুন ৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ১-২
“বিচার ঈশ্বরের”
যিহোবা ধার্মিকতা এবং ন্যায়বিচারের প্রেমিক
নিযুক্ত মণ্ডলীর প্রাচীনদের গুরুতর ভুলের ক্ষেত্রে বিচার করতে হয়। (১ করিন্থীয় ৫:১২, ১৩) সেটি করার সময়, তারা মনে রাখে যিহোবার ন্যায়বিচার বলে যে যেখানে সম্ভব সেখানে দয়া দেখানো। যদি তা দেখানোর কোন কারণ না থাকে—যেমন অনুতপ্তহীন পাপীদের ক্ষেত্রে—দয়া দেখানো যাবে না। কিন্তু প্রাচীনেরা প্রতিহিংসাবশতঃ মণ্ডলী থেকে এইধরনের অপরাধীকে বহিষ্কার করেন না। তারা আশা করে যে সমাজচ্যুত করা তাকে তার সচেতনতায় ফিরিয়ে আনবে। (তুলনা করুন যিহিষ্কেল ১৮:২৩.) খ্রীষ্টের মস্তক ব্যবস্থার অধীনে প্রাচীনেরা ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করেন যার অন্তর্ভুক্ত হল “ঝটিকা হইতে অন্তরাল” হওয়ার মত। (যিশাইয় ৩২:১, ২) তাই তাদের পক্ষপাতিত্বহীন এবং যুক্তিবাদী হতে হবে।—দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৬, ১৭.
ঈশ্বরের কর্তৃত্বের প্রতি আনুগত্যের সঙ্গে বশীভূত হোন
৪ কিন্তু একজন বিচারক হওয়ার জন্য কেবল ব্যবস্থা জানা ছাড়াও আরও বেশি কিছুর দরকার ছিল। অসিদ্ধ হওয়ায় এই প্রাচীনদের যেকোন স্বেচ্ছাচারী প্রবণতা, যেমন স্বার্থপরতা, পক্ষপাত এবং লোভকে দমন করতে হতো, যা কিনা তাদের বিচারকে বিকৃত করে দিতে পারত। মোশি তাদের বলেছিলেন: “তোমরা বিচারে কাহারও মুখাপেক্ষা [“পক্ষপাতিত্ব,” NW] করিবে না; সমভাবে ক্ষুদ্র ও মহান্ উভয়ের কথা শুনিবে; মনুষ্যের মুখ দেখিয়া ভয় করিবে না, কেননা বিচার ঈশ্বরের।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) হ্যাঁ, ইস্রায়েলের বিচারকরা ঈশ্বরের পক্ষে বিচার করছিলেন। কত সম্মানীয় ও অসাধারণ সুযোগই না তা ছিল!—দ্বিতীয় বিবরণ ১:১৬, ১৭.
আধ্যাত্মিক রত্ন
যিহোবার অনুস্মারকগুলো নির্ভরযোগ্য
৯ ইস্রায়েল যখন যাত্রা শুরু করেছিল, যা এক ‘ভয়ঙ্কর প্রান্তরে’ ৪০ বছরের সুদীর্ঘ যাত্রায় পরিণত হয়েছিল, তখন যিহোবা কীভাবে তাদের পরিচালনা দেবেন, সুরক্ষা করবেন এবং যত্ন নেবেন, সেই বিষয়ে তাদেরকে আগে থেকেই বিস্তারিত বিষয় জানাননি। তবে, তিনি বার বার দেখিয়েছিলেন যে, তারা তাঁর ও তাঁর নির্দেশনাগুলোর ওপর নির্ভর করতে পারে। দিনের বেলায় একটা মেঘস্তম্ভ এবং রাতের বেলায় একটা অগ্নিস্তম্ভ ব্যবহার করে, যিহোবা ইস্রায়েলকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তাদেরকে জনশূন্য এলাকার মধ্যে দিয়ে পরিচালনা দেওয়ার সময় সমর্থন করছেন। (দ্বিতীয়. ১:১৯; যাত্রা. ৪০:৩৬-৩৮) এ ছাড়া, তিনি তাদের মৌলিক চাহিদাগুলোও পূরণ করেছিলেন। “তাহাদের বস্ত্র জীর্ণ হইল না, ও তাহাদের পা ফুলিল না।” সত্যি বলতে কী, “তাহাদের অভাব হইল না।”—নহি. ৯:১৯-২১.
জুন ৭-১৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ৩-৪
“যিহোবার আইন বিজ্ঞ ও ন্যায্য”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১১৪০ অনু. ৫, ইংরেজি
বোঝার ক্ষমতা
একজন ব্যক্তি যদি মনোযোগ দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য অধ্যয়ন করেন এবং সেই বাক্য কাজে লাগান, তা হলে তিনি তার গুরু বা শিক্ষকদের চেয়ে আরও বেশি জ্ঞান এবং প্রাচীন বা বয়স্ক ব্যক্তিদের চেয়ে আরও বেশি বুদ্ধি বা বোঝার ক্ষমতা লাভ করতে পারবেন। (গীত ১১৯:৯৯, ১০০, ১৩০; তুলনা করুন, লূক ২:৪৬, ৪৭.) ঈশ্বর আমাদের এমন বিধি বা আইনকানুন দিয়েছেন, যেগুলো পালন করার মাধ্যমে জ্ঞান বা প্রজ্ঞা ও বুদ্ধি বা বোঝার ক্ষমতা লাভ করা যায়; তাই ইজরায়েলীয়েরা যখন বিশ্বস্তভাবে এগুলো পালন করত, তখন তাদের আশেপাশের জাতিগুলো তাদের “জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোক” হিসেবে দেখত। (দ্বিতীয় ৪:৫-৮; গীত ১১১:৭, ৮, ১০; তুলনা করুন, ১রাজা ২:৩) বুদ্ধি বা বোঝার ক্ষমতা রয়েছে এমন একজন ব্যক্তি উপলব্ধি করেন, ঈশ্বরের বাক্য অমান্য করা যায় না, বরং তাকে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে হবে এবং এর জন্য ঈশ্বরের কাছে সাহায্য চাইতে হবে। (গীত ১১৯:১৬৯) তিনি ঈশ্বরের বার্তাকে হৃদয়ের একেবারে গভীরে যেতে দেন (মথি ১৩:১৯-২৩), তা হৃদয়ের ফলকে লিখে রাখেন (হিতো ৩:৩-৬; ৭:১-৪) এবং ‘সমুদয় মিথ্যাপথের’ প্রতি ঘৃণা গড়ে তোলেন (গীত ১১৯:১০৪)। ঈশ্বরের পুত্র যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তখন তিনি এভাবে বোঝার ক্ষমতা দেখিয়েছিলেন। তিনি এমনকী দণ্ডে মৃত্যুবরণ করার বিষয়টা থেকে রেহাই পাওয়া প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ শাস্ত্রের কথা পরিপূর্ণ হওয়ার জন্য তাঁকে সেভাবে মারা যেতে হবে।—মথি ২৬:৫১-৫৪.
প্রহরীদুর্গ ৯৯ ১১/১ ২০ অনু. ৬-৭
অনেক উদারতা
রানি যা কিছু শুনেছিলেন এবং দেখেছিলেন তাতে অবাক হয়ে তিনি নম্রভাবে বলেছিলেন: “ধন্য [সুখী] আপনার এই দাসেরা, যাহারা নিয়ত আপনার সম্মুখে দাঁড়ায়, যাহারা আপনার জ্ঞানের উক্তি শোনে।” (১ রাজাবলি ১০:৪-৮) শলোমনের দাসেদের চারপাশে প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল বলে রানি তাদেরকে সুখী বলেছিলেন তা নয়। কিন্তু শলোমনের দাসেরা এইজন্য সুখী ছিল যে তারা সবসময় শলোমনের মুখে ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া জ্ঞানের কথা শুনতে পারত। আজকে যিহোবার লোকেদের জন্য শিবার রানির উদাহরণ কতই না ভাল যারা সৃষ্টিকর্তার এবং তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের প্রজ্ঞায় চলেন!
এছাড়াও শলোমনের প্রতি বলা রানির এই কথাগুলোও নজর কাড়ে: “ধন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু।” (১ রাজাবলি ১০:৯) স্পষ্টতই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে শলোমনের প্রজ্ঞা এবং সাফল্যের পিছনে যিহোবার আশীর্বাদ ছিল। আর যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের কাছে যেমন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই মতো তিনি তা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার বিধি মান্য করা তোমাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিস্বরূপ হইবে; এই সকল বিধি শুনিয়া তাহারা বলিবে, সত্যই, এই মহাজাতি জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান্ লোক।’—দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৫-৭.
আপনি কি “ঈশ্বরের উদ্দেশে ধনবান্”?
১৩ যিহোবা যখন তাঁর লোকেদের ওপর আশীর্বাদ বর্ষণ করেন, তখন তিনি সবসময় তাদেরকে সর্বোত্তমটা দিয়ে থাকেন। (যাকোব ১:১৭) উদাহরণস্বরূপ, যিহোবা যখন ইস্রায়েলীয়দের একটা দেশ দিয়েছিলেন, তখন তা “দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ” ছিল। যদিও মিশরকে সেইরকম একটা দেশ বলে বর্ণনা করা হয়েছিল কিন্তু যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের যে-দেশ দিয়েছিলেন, তা অন্তত একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক দিয়ে ভিন্ন ছিল। “সেই দেশের প্রতি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোযোগ আছে,” মোশি ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন। অন্য কথায়, তারা সমৃদ্ধি লাভ করতে পারবে কারণ যিহোবা তাদের যত্ন নেবেন। যতদিন পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়রা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত ছিল, ততদিন পর্যন্ত তারা তাঁর কাছ থেকে প্রচুর আশীর্বাদ লাভ করেছিল ও এমন এক জীবন উপভোগ করতে পেরেছিল, যা স্পষ্টতই তাদের চারপাশের জাতিগুলো থেকে উৎকৃষ্ট ছিল। হ্যাঁ, যিহোবার আশীর্বাদই “ধনবান করে”!—গণনাপুস্তক ১৬:১৩; দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৫-৮; ১১:৮-১৫.
আধ্যাত্মিক রত্ন
দ্বিতীয় বিবরণ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৪:১৫-২০, ২৩, ২৪—ক্ষোদিত প্রতিমা বানানোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অর্থ কি এই যে, সাজানোর উদ্দেশ্যে বস্তুগুলোর প্রতিরূপ বানানো ভুল? না। এখানে নিষেধাজ্ঞাটা ছিল উপাসনার জন্য প্রতিমাগুলো বানানোর বিরুদ্ধে—‘প্রতিমাগুলোর কাছে প্রণিপাত করিবার ও তাহাদের সেবা করিবার’ বিরুদ্ধে। শাস্ত্র সাজানোর উদ্দেশ্যে খোদাই করা ভাস্কর্য তৈরি অথবা কোনো বস্তুর চিত্রাঙ্কন করাকে নিষেধ করে না।—১ রাজাবলি ৭:১৮, ২৫.
জুন ১৪-২০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ৫-৬
“আপনার সন্তানদের যিহোবাকে ভালোবাসতে প্রশিক্ষণ দিন”
প্রহরীদুর্গ ০৫ ৬/১৫ ২০ অনু. ১১
বাবামারা, আপনাদের পরিবারের চাহিদাগুলোর যত্ন নিন
১১ এই বিষয়ে, সম্ভবত দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৫-৭ পদের মতো শাস্ত্রের আর কোনো অংশ এত ঘন ঘন উদ্ধৃত করা হয় না। দয়া করে আপনার বাইবেল খুলুন এবং সেই পদগুলো পড়ুন। লক্ষ করুন যে, প্রথমে বাবামাদের বলা হয়েছে যাতে তারা নিজেদের আধ্যাত্মিকতা বৃদ্ধি করার প্রচেষ্টা করে, যিহোবার প্রতি ভালবাসা গড়ে তোলে এবং তাঁর কথাগুলো হৃদয়ে নেয়। হ্যাঁ, আপনাদেরকে ঈশ্বরের বাক্যের ঐকান্তিক ছাত্র হতে হবে, নিয়মিতভাবে বাইবেল পড়তে হবে এবং এটি নিয়ে ধ্যান করতে হবে যাতে আপনারা যিহোবার পথ, নীতি এবং আইনগুলোর প্রতি প্রকৃত বোধগম্যতা ও ভালবাসা বৃদ্ধি করতে পারেন। এর ফলে, আপনাদের হৃদয় এত চমৎকার বাইবেলের সত্য দ্বারা পূর্ণ হবে যে, আপনারা যিহোবার জন্য আনন্দ, শ্রদ্ধা ও ভালবাসা বোধ করবেন। আপনাদের সন্তানদের হৃদয়ে গেঁথে দেওয়ার জন্য অনেক ভাল ভাল বিষয় আপনাদের জানা থাকবে।—লূক ৬:৪৫.
কীভাবে আমি আমার সন্তানদের প্রকৃতই শিক্ষিত হয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারি?
আপনার বিভিন্ন আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ, মূল্যবোধ ও আগ্রহ কেবল আপনি যা বলেন, তার মধ্যেই নয় কিন্তু আপনি যা করেন, সেটার মধ্যে দিয়েও প্রকাশিত হয়। (রোমীয় ২:২১, ২২) শিশুকাল থেকেই সন্তানরা তাদের বাবামাকে সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে শেখে। সন্তানরা লক্ষ করে যে, তাদের বাবামার কাছে কোন বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ আর এই বিষয়গুলো প্রায়ই এই অল্পবয়সিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আপনি যদি সত্যি সত্যিই যিহোবাকে ভালবাসেন, তা হলে আপনার সন্তানরা সেটা উপলব্ধি করবে। উদাহরণস্বরূপ, তারা দেখবে যে, বাইবেল পড়া ও অধ্যয়ন করা আপনার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তারা উপলব্ধি করবে যে, রাজ্যের বিষয়গুলোকে আপনি জীবনে প্রথম স্থানে রাখেন। (মথি ৬:৩৩) খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে আপনার নিয়মিত উপস্থিতি এবং রাজ্যের প্রচার কাজে নিয়মিত অংশগ্রহণ তাদের দেখাবে যে, যিহোবাকে পবিত্র সেবা প্রদান করা আপনার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।—মথি ২৮:১৯, ২০; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.
প্রহরীদুর্গ ০৫ ৬/১৫ ২১ অনু. ১৪
বাবামারা, আপনাদের পরিবারের চাহিদাগুলোর যত্ন নিন
১৪ দ্বিতীয় বিবরণ ৬:৭ পদ যেমন দেখায় যে, এমন অনেক উপলক্ষ রয়েছে, যখন আপনারা বাবামা হিসেবে আপনাদের সন্তানদের সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে পারেন। একসঙ্গে ভ্রমণ করার সময়, একসঙ্গে কাজ করার সময় অথবা একসঙ্গে আনন্দদায়ক সময় কাটানোর সময় আপনারা হয়তো আপনাদের সন্তানদের আধ্যাত্মিক চাহিদার যত্ন নেওয়ার সুযোগগুলো খুঁজে পেতে পারেন। অবশ্য, আপনাদের সন্তানদেরকে বাইবেলের সত্যের বিষয়ে অবিরত “ভাষণ” দেওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং, আপনাদের পারিবারিক কথাবার্তাকে গঠনমূলক এবং আধ্যাত্মিক পর্যায়ে রাখুন। উদাহরণস্বরূপ, সচেতন থাক! পত্রিকার মধ্যে বিভিন্ন বিষয়বস্তুর ওপর প্রচুর প্রবন্ধ রয়েছে। এই প্রবন্ধগুলো যিহোবার সৃষ্ট পশুপাখি, সারা পৃথিবীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় স্থানগুলো এবং মানব সংস্কৃতি ও জীবনধারার বিভিন্ন অপূর্ব দিক নিয়ে কথা বলার পথ খুলে দেয়। এই ধরনের কথাবার্তা হয়তো অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েদেরকে বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস শ্রেণীর দ্বারা জোগানো সাহিত্যাদি আরও বেশি করে পড়ার জন্য পরিচালিত করতে পারে।—মথি ২৪:৪৫-৪৭.
আধ্যাত্মিক রত্ন
প্রাচীন ইস্রায়েলে প্রেম ও ন্যায়বিচার
১১ শিক্ষা: যিহোবা একজন ব্যক্তির মুখশ্রী বা বাহ্যিক বিষয়গুলোর চেয়ে আরও বেশি কিছু দেখেন। আমাদের অন্তঃকরণে অর্থাৎ আমাদের হৃদয়ে আসলে কী রয়েছে, তিনি তা লক্ষ করেন। (১ শমূ. ১৬:৭) আমরা কোনো চিন্তাভাবনা, কোনো অনুভূতি, কোনো কাজ যিহোবার কাছ থেকে গোপন রাখতে পারি না। তিনি আমাদের মধ্যে ভালো বিষয়গুলো খোঁজার চেষ্টা করেন এবং চান যেন আমাদের মধ্যে সেগুলো বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, তিনি এও চান যেন আমাদের মন্দ চিন্তাভাবনাগুলো মন্দ কাজে পরিণত হওয়ার আগেই আমরা সেগুলো শনাক্ত করি এবং নিয়ন্ত্রণ করি।—২ বংশা. ১৬:৯; মথি ৫:২৭-৩০.
জুন ২১-২৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ৭-৮
“তাহাদের সহিত বিবাহ-সম্বন্ধ করিবে না”
প্রহরীদুর্গ ১২ ৭/১ ২৯ অনু. ২, ইংরেজি
কেন ঈশ্বর চেয়েছিলেন, যেন তাঁর উপাসকেরা কেবল সহবিশ্বাসীদের বিয়ে করে?
যিহোবা ভালোভাবেই জানতেন, তাঁর লোকদের মিথ্যা দেবতাদের উপাসনা করার দিকে পরিচালিত করার মাধ্যমে শয়তান তাদের কলুষিত করতে চাইবে। এই কারণে ঈশ্বর তাদের বার বার সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, ন-ইজরায়েলীয় লোকেরা “তোমার সন্তানকে আমার অনুগমন হইতে ফিরাইবে, আর তাহারা অন্য দেবগণের সেবা করিবে।” এর সঙ্গে আরও ঝুঁকি জড়িত ছিল। ইজরায়েল জাতি যদি অন্যান্য দেবতার উপাসনা করতে শুরু করে, তা হলে তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহ ও সুরক্ষা হারাবে। আর এর ফলে তাদের শত্রুরা সহজেই তাদের আক্রমণ করার সুযোগ পাবে। যদি তা-ই হয়, তা হলে কীভাবে সেই জাতির মধ্য থেকে প্রতিজ্ঞাত মশীহ আসবে? স্পষ্টতই, ন-ইজরায়েলীয়দের বিয়ে করার জন্য ইজরায়েলীয়দের প্রলুব্ধ করার পিছনে শয়তানের যথেষ্ট কারণ ছিল।
“কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করুন এই পরামর্শ কি এখনও ব্যাবহারিক?
তা সত্ত্বেও, বাইবেলে যিহোবা আমাদের কেবল প্রভুতেই বিয়ে করার আজ্ঞা দিয়েছেন। কেন? কারণ তিনি জানেন, আমাদের জন্য সবচেয়ে উত্তম কোনটা আর তিনি আমাদের সুরক্ষা করতে চান। তিনি চান না, আমরা এমন ভুল বাছাই করি, যা আমাদের জন্য কষ্ট অথবা দুঃখ নিয়ে আসবে। নহিমিয়ের দিনে, অনেক যিহুদি এমন নারীদের বিয়ে করেছিল, যারা ঈশ্বরের সেবা করত না। তাই, নহিমিয় শলোমনের মন্দ উদাহরণ সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি “আপন ঈশ্বরের প্রিয় পাত্র ছিলেন, এবং ঈশ্বর তাঁহাকে সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজা করিয়াছিলেন; তথাপি বিজাতীয় স্ত্রীরা তাঁহাকেও পাপ করাইয়াছিল।” (নহি. ১৩:২৩-২৬) যিহোবা জানেন, তাঁর সাক্ষ্য বা অনুস্মারকগুলো আমাদের জন্য মঙ্গলজনক আর এই কারণে তিনি খ্রিস্টানদের কেবল প্রভুতেই বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন। (গীত. ১৯:৭-১০; যিশা. ৪৮:১৭, ১৮) আমরা অনেক কৃতজ্ঞ যে, তিনি আমাদের এমন পরামর্শ দেন, যা প্রেমময় এবং নির্ভরযোগ্য। আমরা যখন আমাদের শাসক হিসেবে যিহোবার বাধ্য হই, তখন আমরা এই বিষয়টা মেনে নিই যে, আমরা কী করব, তা বলার অধিকার তাঁর রয়েছে।—হিতো. ১:৫.
প্রহরীদুর্গ ১৫ ৮/১৫ ২৬ অনু. ১২
এই শেষকালে আপনার মেলামেশার ব্যাপারে সাবধান থাকুন
১২ যে-খ্রিস্টানরা বিয়ে করার ব্যাপারে আগ্রহী, তারা কাদের সঙ্গে মেলামেশা করছে, সেই ব্যাপারে তাদের অনেক সতর্ক হতে হবে। ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সাবধান করে: “তোমরা অবিশ্বাসীদের সহিত অসমভাবে যোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না; কেননা ধর্ম্মে ও অধর্ম্মে পরস্পর কি সহযোগিতা? অন্ধকারের সহিত দীপ্তিরই বা কি সহভাগিতা?” (২ করি. ৬:১৪) বাইবেল ঈশ্বরের দাসদের “কেবল প্রভুতেই” বিয়ে করতে বলে। এর অর্থ হচ্ছে, তারা শুধুমাত্র এমন ব্যক্তিকেই বিয়ে করবে, যারা উৎসর্গীকৃত ও বাপ্তাইজিত এবং যিহোবার মান অনুযায়ী জীবনযাপন করে। (১ করি. ৭:৩৯) আপনি যদি এমন কাউকে বিয়ে করেন যিনি যিহোবাকে ভালোবাসেন, তাহলে আপনি এমন একজন সাথি পাবেন, যিনি আপনাকে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ততা বজায় রাখতে সাহায্য করবেন।
আধ্যাত্মিক রত্ন
যিহোবা আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনগুলো জোগান
৪ এ ছাড়া, দৈনন্দিন খাদ্যের জন্য প্রার্থনা করার বিষয়টা আমাদের এও মনে করিয়ে দেওয়া উচিত যে, আমাদের দৈনন্দিন আধ্যাত্মিক খাদ্যের প্রয়োজন রয়েছে। যদিও দীর্ঘদিন উপবাস থাকার পর যিশু অত্যন্ত ক্ষুধার্ত ছিলেন, তবুও তিনি পাথরকে রুটি বানানোর বিষয়ে শয়তানের প্রলোভনকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন: “লেখা আছে, ‘মনুষ্য কেবল রুটীতে বাঁচিবে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখ হইতে যে প্রত্যেক বাক্য নির্গত হয়, তাহাতেই বাঁচিবে।’” (মথি ৪:৪) যিশু এখানে ভাববাদী মোশির কথাগুলো উদ্ধৃত করেছিলেন, যিনি ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “[যিহোবা] তোমাকে নত করিলেন, ও তোমাকে ক্ষুধিত করিয়া তোমার অজ্ঞাত ও তোমার পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত মান্না দিয়া প্রতিপালন করিলেন; যেন তিনি তোমাকে জানাইতে পারেন যে, মনুষ্য কেবল রুটীতে বাঁচে না, কিন্তু সদাপ্রভুর মুখ হইতে যাহা যাহা নির্গত হয়, তাহাতেই মনুষ্য বাঁচে।” (দ্বিতীয় বিবরণ ৮:৩) যিহোবা যেভাবে মান্না সরবরাহ করতেন, তা ইস্রায়েলীয়দের কেবল দৈহিক খাদ্যই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আধ্যাত্মিক শিক্ষাগুলোও জুগিয়েছিল। একটা শিক্ষা হল, তাদের ‘প্রতিদিন দিনের খাদ্য কুড়াইতে’ হতো। তারা যদি দিনের চেয়ে অতিরিক্ত সংগ্রহ করত, তা হলে অবশিষ্ট মান্না থেকে দুর্গন্ধ বের হতে এবং তাতে পোকা জন্মাতে শুরু করত। (যাত্রাপুস্তক ১৬:৪, ২০) তবে, ষষ্ঠ দিনে এইরকম ঘটতো না, যখন তাদেরকে বিশ্রাম দিনের প্রয়োজন মেটানোর জন্য দৈনিক পরিমাণের চেয়ে দ্বিগুণ সংগ্রহ করতে হতো। (যাত্রাপুস্তক ১৬:৫, ২৩, ২৪) তাই, মান্না তাদের মনের ওপর এই গভীর ছাপ ফেলেছিল যে, তাদেরকে বাধ্য থাকতে হবে এবং তাদের জীবন কেবল খাদ্যের ওপরই নয় কিন্তু “সদাপ্রভুর মুখ হইতে যাহা যাহা নির্গত হয়, তাহাতেই” নির্ভর করত।
জুন ২৮–জুলাই ৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দ্বিতীয় বিবরণ ৯-১০
“তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার কাছে কি চাহেন?”
প্রহরীদুর্গ ১০ জুলাই–সেপ্টেম্বর ১৬ অনু. ৩-৪
যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?
কী আমাদেরকে স্বেচ্ছায় ঈশ্বরের বাধ্য হতে অনুপ্রাণিত করতে পারে? মোশি এই বলে একটা কারণ উল্লেখ করেন: “তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় কর।” (১২ পদ) এটা মন্দ পরিণতিগুলোর জন্য আতঙ্কজনক ভয় করা নয় বরং ঈশ্বর ও তাঁর পথগুলোর প্রতি এক গঠনমূলক, সশ্রদ্ধ ভয়। ঈশ্বরের প্রতি যদি আমাদের গভীর সশ্রদ্ধ ভয় থাকে, তাহলে আমরা তাঁকে অখুশি করা এড়াতে চাইব।
কিন্তু, ঈশ্বরের বাধ্য হওয়ার পিছনে আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কী হওয়া উচিত? মোশি বলেন: “তাঁহাকে [সদাপ্রভুকে] প্রেম কর, এবং তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সহিত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর।” (১২ পদ) ঈশ্বরকে প্রেম করার সঙ্গে আমাদের অনুভূতির চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। একটি তথ্যগ্রন্থ ব্যাখ্যা করে: “অনুভূতির জন্য ব্যবহৃত ইব্রীয় ক্রিয়াপদগুলো মাঝেমধ্যে সেই কাজগুলোকেও ইঙ্গিত করে, যেগুলো সেই অনুভূতি প্রকাশ করার ফলে করা হয়।” সেই একই গ্রন্থ বলে যে, ঈশ্বরকে প্রেম করার অর্থ তাঁর প্রতি “প্রেমের সঙ্গে কাজ করা।” অন্য কথায়, আমরা যদি ঈশ্বরকে সত্যিই ভালোবাসি, তাহলে আমরা সেইসমস্ত উপায়ে কাজ করব, যেগুলো তাঁকে খুশি করে বলে আমরা জানি।—হিতোপদেশ ২৭:১১.
প্রহরীদুর্গ ১০ জুলাই–সেপ্টেম্বর ১৬ অনু. ৬
যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কী চান?
স্বেচ্ছায় আমাদের বাধ্য হওয়া বিভিন্ন আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। মোশি লেখেন: “অদ্য আমি তোমার মঙ্গলার্থে . . . যে যে আজ্ঞা দিতেছি, সেই সকল যেন পালন কর।” (১৩ পদ) হ্যাঁ, যিহোবার সমস্ত আজ্ঞা—তিনি আমাদের কাছ থেকে যা চান, সেগুলোর সমস্তই—আমাদের মঙ্গলের জন্য। কীভাবেই বা এর বিপরীতটা হতে পারে? বাইবেল বলে, “ঈশ্বর প্রেম।” (১ যোহন ৪:৮) তাই, তিনি আমাদের কেবল সেই আজ্ঞাগুলোই দিয়েছেন, যেগুলো আমাদের স্থায়ী মঙ্গল সাধন করবে। (যিশাইয় ৪৮:১৭) যিহোবা আমাদের কাছ থেকে যা চান, সেই সমস্তকিছু করা আমাদেরকে এখনই বিভিন্ন হতাশা থেকে রেহাই দেবে এবং তাঁর রাজ্য শাসনের অধীনে অফুরন্ত ভবিষ্যৎ আশীর্বাদগুলোর দিকে পরিচালিত করবে।
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ১৬ অনু. ২
আপনি কি সত্যিই ‘ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হইতে’ পারেন?
২ প্রাচীনকালের অব্রাহাম ছিলেন এমনই একজন, যিনি এইরকম নিকট সম্পর্ক উপভোগ করেছিলেন। যিহোবা সেই কুলপতিকে “আমার বন্ধু” বলেছিলেন। (যিশাইয় ৪১:৮) হ্যাঁ, যিহোবা অব্রাহামকে তাঁর বন্ধু হিসেবে গণ্য করেছিলেন। অব্রাহামকে সেই নিকট সম্পর্ক উপভোগ করতে দেওয়া হয়েছিল কারণ তিনি “ঈশ্বরে বিশ্বাস করিলেন।” (যাকোব ২:২৩) আজকেও, যিহোবা তাদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ হওয়ার’ সুযোগগুলো খোঁজেন, যারা তাঁকে ভালবেসে সেবা করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ১০:১৫, NW) তাঁর বাক্য পরামর্শ দেয়: “ঈশ্বরের নিকটবর্ত্তী হও, তাহাতে তিনিও তোমাদের নিকটবর্ত্তী হইবেন।” (যাকোব ৪:৮) এই বাক্যগুলোতে আমরা এক আমন্ত্রণ ও এক প্রতিজ্ঞা দুটোই পাই।
আধ্যাত্মিক রত্ন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১০৩, ইংরেজি
অনাকীয়
এই লোকেরা অস্বাভাবিক বড়ো ছিল। তারা কনানের পাহাড়ি এলাকাগুলোতে আর সেইসঙ্গে কিছু উপকূলবর্তী এলাকায়, বিশেষভাবে দক্ষিণ দিকে, বাস করত। একসময় অহীমান, শেশয় ও তল্ময় নামে অনাকীয়দের মধ্যে তিন জন প্রসিদ্ধ ব্যক্তি হিব্রোণে বাস করত। (গণনা ১৩:২২) ১২ জন ইব্রীয় গুপ্তচর প্রথম বার এখানেই অনাকীয়দের দেখতে পেয়েছিল। এদের দেখেই ১০ জন গুপ্তচর ভয় পেয়ে ইজরায়েলীয়দের সেই সংবাদ জানিয়েছিল। তারা মনে করেছিল, এই লোকেরা জলপ্লাবনের আগে যে-বীর বা নেফিলিমেরা বাস করত, তাদের বংশধর। আর তাই তাদের তুলনায় ইব্রীয়েরা “ফড়িঙ্গের” মতো। (গণনা ১৩:২৮-৩৩; দ্বিতীয় ১:২৮) তাদের দেহের আকৃতি এত বড়ো ছিল যে, এমনকী এমীয় ও রফায়ীয়ের দৈত্যাকৃতি লোকদের সম্বন্ধে বর্ণনা করার সময় তাদের তুলনা দেওয়া হত। তাদের শক্তির কারণে এই প্রবাদ প্রচলিত হয়ে উঠেছিল: “অনাক-সন্তানদের সম্মুখে কে দাঁড়াইতে পারে?”—দ্বিতীয় ২:১০, ১১, ২০, ২১; ৯:১-৩.