ফোন যেভাবে ক্ষতি করে আপনার সন্তানকে
বড়োদের জন্য ফোন অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করা সহজ না-ও হতে পারে। কিন্তু, বর্তমানে একটা বাচ্চার কাছে এগুলো ব্যবহার করা কোনো ব্যাপারই নয়।
প্রায়ই লক্ষ্য করা গিয়েছে, যে-অল্পবয়সিরা ইন্টারনেটে বেশি সময় কাটায়, তারা . . .
ফোনের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।
ইন্টারনেটে অন্যদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করে কিংবা অন্যেরা তাদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করে।
অজান্তে অথবা জেনে-শুনে পর্নোগ্রাফি দেখে।
আপনি কি জানেন?
আসক্তি
কিছু ওয়েবসাইট এবং কিছু অনলাইন গেম এমনভাবে তৈরি করা হয়ে থাকে, যেগুলোর প্রতি একজন ব্যক্তি খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়তে পারে। রিক্লেমিং কনভারসেশন নামে একটা বই বলে, “বর্তমানে আমাদের ফোনে এমন অ্যাপগুলো রয়েছে, যেগুলোর প্রতি আমরা খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ি এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেই অ্যাপগুলো ব্যবহার করি।” কিছু অ্যাপ ব্যবহার করার সময় মাঝে মাঝে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন চলে আসে। আর আমরা যত বেশি সেই অ্যাপগুলো ব্যবহার করি, তত বেশি সেই বিজ্ঞাপনদাতারা অর্থ উপার্জন করে থাকে।
চিন্তা করুন: আপনার সন্তান কি ২৪ ঘণ্টা ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে? কীভাবে আপনি তাকে শেখাতে পারেন, যাতে সে সবসময় ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করে অন্যান্য কাজও করে?—ইফিষীয় ৫:১৫, ১৬.
ইন্টারনেটে করা অসভ্যতা
কিছু ব্যক্তি ইন্টারনেটে যা খুশি তাই বলে থাকে। কিন্তু এটা বলার সময় তারা চিন্তা করে না, যে-ব্যক্তি এটা শুনছে তার কেমন লাগবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধরনের ব্যক্তিদের অন্যদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ করা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়।
কিছু ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়াতে এই ধরনের কথাবার্তা বলে অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করাতে এবং জনপ্রিয় হতে চায়। আবার কেউ যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় থাকা কোনো ছবিতে দেখে যে তার বন্ধুরা তাকে ছাড়া পার্টি করেছে, তখন সে মনে করে, তারা তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে।
চিন্তা করুন: অনলাইনে থাকার সময় আপনার সন্তান কি অন্যদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলে? (ইফিষীয় ৪:৩১) তার বন্ধুরা তাকে বাদ দিয়ে কোনো পার্টি করলে, সে কি কষ্ট পায় এবং এটা ভাবে যে, তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে?
পর্নোগ্রাফি
ইন্টারনেটে প্রচুর নোংরা ছবি ও ভিডিও রয়েছে আর খুব সহজেই সেগুলো দেখা যায়। তাই, সন্তানরা যাতে সেগুলো দেখতে না পারে সেইজন্য অনেক বাবা-মা সন্তানদের ফোনে কিছু সেটিং করে রাখেন। কিন্তু, তারা যে-সেটিংই করুন না কেন অথবা যে-সফ্টওয়্যারই ব্যবহার করুন না কেন, সন্তানরা কোনো না কোনোভাবে সেগুলো দেখেই নেয়।
কিছু দেশে নোংরা ম্যাসেজ এবং নগ্ন ছবি একে অপরকে পাঠানো কিংবা দেখা আইনত অপরাধ। কোনো অল্পবয়সি যদি অন্য কোনো অল্পবয়সিকে নোংরা ছবি পাঠায় অথবা তার নোংরা ছবি দেখে, তা হলে সেটা অনেক বড়ো অপরাধ বলে ধরা হয়।
চিন্তা করুন: কীভাবে আপনার সন্তানকে সাহায্য করতে পারেন, যাতে সে কারোর নোংরা ছবি না দেখে অথবা কাউকে কোনো নোংরা ছবি না পাঠায়?—ইফিষীয় ৫:৩, ৪.
আপনি যা করতে পারেন
আপনার সন্তানকে প্রশিক্ষণ দিন
বাচ্চাদের কাছে ফোন ব্যবহার করা খুবই সহজ, কিন্তু কীভাবে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হয়, তা বাবা-মায়েরা তাদের শেখাতে পারেন। একটা বই বলে, “আপনি যদি সন্তানকে কীভাবে ফোন অথবা কম্পিউটার ব্যবহার করতে হয়, তা না শিখিয়ে সেটা দেন তা হলে এটা এমন হবে, আপনি সন্তানকে সাঁতার না শিখিয়ে, একটা পুকুরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছেন।”
বাইবেলের নীতি: “বালককে তাহার গন্তব্য পথানুরূপ শিক্ষা দেও, সে প্রাচীন হইলেও তাহা ছাড়িবে না।”—হিতোপদেশ ২২:৬.
নীচে দেওয়া পরামর্শগুলোর মধ্যে যেটা আপনি কাজে লাগাতে চান, সেটাতে টিক দিন অথবা আপনার নিজের কিছু মতামত লিখে রাখুন।
সন্তানকে শেখাব, যাতে সে ইন্টারনেটে অন্যদের সঙ্গে ভদ্রভাবে কথা বলে এবং ভালো ব্যবহার করে
সন্তানকে তার বন্ধুরা পার্টিতে না ডাকলে, তাকে বোঝাব যাতে সে মনে না করে যে, তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে
সন্তানের ফোন অথবা কম্পিউটারে এমন সেটিং করে রাখব, যাতে সে কোনো নোংরা ছবি ও ভিডিও দেখতে না পারে
সন্তানের ফোন মাঝে মাঝে চেক করব, যাতে বুঝতে পারি যে, সে কী দেখছে
সন্তান প্রতিদিন কতক্ষণ ফোন ব্যবহার করবে, সেটা ঠিক করে দেব
সন্তানকে রাতে একা একা ফোন ব্যবহার করতে দেব না
খাবার খাওয়ার সময় কেউ যেন ফোন ব্যবহার না করে, তা লক্ষ রাখব