ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ৩১-৩২
  • “আমি ছিলাম খোলের ভিতরে থাকা একটা কচ্ছপের মতো”

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • “আমি ছিলাম খোলের ভিতরে থাকা একটা কচ্ছপের মতো”
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ৩১-৩২

আমাদের আর্কাইভ থেকে

“আমি ছিলাম খোলের ভিতরে থাকা একটা কচ্ছপের মতো”

উনিশ-শো ঊনত্রিশ সালের আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে নয় দিনব্যাপী ঝড়ের গতিতে সাক্ষ্যদানের অভিযানের সময়, ১০,০০০ জনের চেয়েও বেশি প্রচারক যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছিল। তারা লোকেদের কাছে আড়াই লক্ষ বই ও পুস্তিকা অর্পণ করেছিল। সেই রাজ্য ঘোষণাকারীদের মধ্যে ছিল প্রায় এক হাজার জন কলপোর্টার। তাদের সংখ্যা কতই-না বৃদ্ধি পেয়েছিল! বুলেটিনa এই বিষয়টাকে “প্রায় অবিশ্বাস্য” বলে ঘোষণা করেছিল যে, ১৯২৭ থেকে ১৯২৯ সালের মধ্যে অগ্রগামীদের সংখ্যা তিন গুণ বেড়ে গিয়েছিল।

১৯২৯ সালের শেষের দিকে, অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়। ব্ল্যাক টিউসডে-তে—১৯২৯ সালের ২৯ অক্টোবর—নিউ ইয়র্কের শেয়ার বাজারে ধস নামার কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাপক মন্দা দেখা দেয়। ব্যাঙ্কগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়। ফার্মগুলো কাজ করা বন্ধ করে দেয়। বড়ো বড়ো কারখানা লোক নেওয়া বন্ধ করে দেয়। লক্ষ লক্ষ লোক চাকরি হারায়। ১৯৩৩ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন বাড়ি বন্ধকীদের সংখ্যা সর্বশীর্ষ হয়ে ১,০০০-এ গিয়ে পৌঁছায়।

এইরকম এক কঠিন সময়ে পূর্ণসময়ের প্রচারকরা সব কিছু কীভাবে সামলাতে পেরেছিল? একটা উত্তর ছিল, ভ্রাম্যমাণ বাড়ি। ভাড়া এবং শুল্কমুক্ত এক ভ্রাম্যমাণ বাড়ি বা ট্রেইলার অনেক অগ্রগামীকে একেবারে সামান্য খরচে তাদের পরিচর্যা চালিয়ে যেতে সমর্থ করেছিল।b আর সম্মেলনের সময়, এক ভ্রাম্যমাণ বাড়ি নিখরচায় হোটেল রুম হিসেবে কাজ করত। ১৯৩৪ সালে, বুলেটিন-এর মধ্যে এক ছোট্ট এবং আরামদায়ক বাড়ি তৈরি করার বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছিল, যেখানে জলের ব্যবস্থা, চুলা, ফোল্ডিং বেড এবং ঠাণ্ডার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অন্তরণের মতো ব্যবহারিক বিষয়গুলো ছিল।

সারা পৃথিবীর দক্ষ প্রচারকরা ভ্রাম্যমাণ বাড়ি তৈরি করতে শুরু করেছিল। “নোহের জাহাজ তৈরি করার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না,” ভিক্টর ব্ল্যাকওয়েল স্মরণ করে বলেন, “আর আমারও ট্রেইলার তৈরি করার বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান ছিল না।” তার পরও তিনি তা করেছিলেন।

অ্যাভরি এবং লোভিনিয়া ব্রিস্টোর এক ভ্রাম্যমাণ বাড়ি ছিল। অ্যাভরি বলেছিলেন, “আমি ছিলাম খোলের ভিতরে থাকা একটা কচ্ছপের মতো—আমার বাড়ি সবসময় আমার সঙ্গেই ছিল।” ব্রিস্টো পরিবার হার্ভি এবং অ্যান কন্‌রোর সঙ্গে অগ্রগামীর কাজ করত, যাদের ভ্রাম্যমাণ বাড়ির দেওয়ালের মধ্যে টার-পেপার লাগানো ছিল। প্রতি বার তারা যখন অন্য জায়গায় তাদের বাড়ি নিয়ে যেত, তখন সেই পেপার খুলে খুলে পড়ত। “এর আগে কেউ কখনো এইরকম ট্রেইলার দেখেনি,” অ্যাভরি স্মরণ করে বলেছিলেন, “এবং এর পরেও দেখেনি!” কিন্তু, অ্যাভরি বলেছিলেন যে, কন্‌রো দম্পতি এবং তাদের দুই ছেলে “ছিল সবচেয়ে সুখী পরিবার।” হার্ভি কন্‌রো লিখেছিলেন, “আমাদের কখনোই কোনো কিছুর অভাব হয়নি এবং যিহোবার সেবায় ও তাঁর যত্নাধীনে আমরা পুরোপুরি নিরাপদ বোধ করতাম।” পরবর্তী সময়ে কন্‌রো পরিবারের চার জনই গিলিয়েড স্কুল-এ যোগদান করেছিল এবং তাদেরকে পেরুতে মিশনারি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।

বাটাইনো পরিবারও অগ্রগামীর কাজ করত। জুস্তো এবং ভিনচেন্টসা যখন জানতে পারে যে, তারা বাবা-মা হতে যাচ্ছে, তখন তারা তাদের ১৯২৯ মডেল এ ফোর্ড ট্রাককে বাড়িতে রূপান্তর করেছিল, যেটাকে তারা আগে যে-তাঁবুতে বাস করত, সেটার তুলনায় “এক চমৎকার হোটেল বলে মনে হয়েছিল।” তাদের ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে তারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ইতালীয় ব্যক্তিদের কাছে প্রচার করে তাদের প্রিয় কার্যভার চালিয়ে গিয়েছিল।

অনেক লোক সুসমাচার সম্বন্ধে শুনত কিন্তু দরিদ্র এবং বেকার হওয়ায় লোকেদের কাছ থেকে বাইবেল সাহিত্যাদির জন্য খুব কমই দান পাওয়া যেত। এর পরিবর্তে, তারা বিভিন্ন জিনিস দেওয়ার প্রস্তাব দিত। দু-জন অগ্রগামী যখন আগ্রহী ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করে, তখন তারা দেখে যে, তারা মোট ৬৪-টা জিনিস পেয়েছে। সেই তালিকাটা ছিল “দোকানের একটা ফর্দের মতো।”

ফ্রেড অ্যান্ডারসন একজন কৃষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যিনি এক সেট বই চেয়েছিলেন এবং এর বিনিময়ে এক জোড়া চশমা দিতে চেয়েছিলেন, যা তার মায়ের ছিল। আর পরের খামারে, একজন ব্যক্তি আমাদের সাহিত্যাদির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন কিন্তু তিনি বলেছিলেন, “পড়ার জন্য আমার কাছে কোনো চশমা নেই।” তবে, তিনি যখন তার প্রতিবেশীর চশমা পড়েছিলেন, তখন সেটা দিয়ে তিনি বইগুলো বেশ ভালোভাবে পড়তে পারছিলেন এবং আনন্দের সঙ্গে সেই বই ও চশমার জন্য দান দিয়েছিলেন।

হার্বার্ট অ্যাবোট তার গাড়িতে সবসময় মুরগির খাঁচা রাখতেন। তিনটে বা চারটে মুরগি পাওয়ার পর, তিনি সেগুলো বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতেন এবং তার গাড়িতে তেল ভরতেন। “মাঝে মাঝে এমন সময় কি এসেছিল, যখন আমাদের হাতে বলতে গেলে কোনো পয়সাই থাকত না? অবশ্যই,” তিনি লিখেছিলেন, “কিন্তু এই প্রতিবন্ধকতা আমাদের থামাতে পারেনি। আমাদের গাড়িতে যদি তেল থাকত, তাহলে যিহোবার ওপর বিশ্বাস এবং নির্ভরতা রেখে আমরা এগিয়ে যেতাম।”

যিহোবার ওপর নির্ভরতা এবং দৃঢ়সংকল্প তাঁর লোকেদের এইরকম কঠিন সময়ের মধ্যে টিকে থাকতে সাহায্য করে। একটা ঝড়ের সময় ম্যাক্সওয়েল এবং এমি লুইস একটা গাছ পড়ে তাদের ট্রেইলার দু-ভাগ হয়ে যাওয়ার ঠিক আগে সেখান থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। “এগুলো কোনো বাধাই ছিল না,” ম্যাক্সওয়েল লিখেছিলেন, “এগুলো ছিল কেবল দুর্ঘটনা আর হাল ছেড়ে দেওয়ার কথা আমরা চিন্তাও করতাম না। অনেক কাজ করা বাকি ছিল আর আমরা তা করব বলে ঠিক করেছিলাম।” সাহসের সঙ্গে এবং প্রেমময় বন্ধুদের সাহায্যে ম্যাক্সওয়েল ও এমি আবারও তাদের ভ্রাম্যমাণ বাড়ি তৈরি করতে পেরেছিল।

আমাদের এই কঠিন সময়েও লক্ষ লক্ষ উদ্যোগী যিহোবার সাক্ষিদের মধ্যে একইরকম আত্মত্যাগের মনোভাব দেখা যায়। আসলে, আগের দিনের সেই অগ্রগামীদের মতো আমরাও যত পর্যন্ত যিহোবা থামতে না বলেন, তত পর্যন্ত প্রচার কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ।

a এখন এটিকে আমাদের রাজ্যের পরিচর্যা বলা হয়।

b সেই সময়ে অধিকাংশ অগ্রগামী চাকরি করত না। তারা কম দামে বাইবেল সাহিত্যাদি পেত এবং সেগুলো অর্পণ করার মাধ্যমে যে-দান লাভ করত, তা সাধারণ জীবনযাপনের খরচ মেটানোর জন্য ব্যবহার করত।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার