ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w13 ২/১৫ পৃষ্ঠা ১৭-২১
  • যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করুন

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করুন
  • ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • ‘সদাপ্রভুর এক দিনের’ শুরু
  • যিহোবা “অতি বৃহৎ উপত্যকা” গঠন করেন
  • উপত্যকায় পলায়ন শুরু হয়!
  • ‘সংগ্রামের দিন’ উপস্থিত হয়
  • “জীবন্ত জল নির্গত হইবে”
  • ‘পর্ব্বতগণের সেই উপত্যকায়’ অবস্থিতি করুন
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৭
  • আপনাদের বিপরীতে গঠিত কোনো অস্ত্রই সার্থক হবে না
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • চারটে রথ ও একটা মুকুট আপনাকে সুরক্ষিত রাখে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w13 ২/১৫ পৃষ্ঠা ১৭-২১

যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করুন

“সদাপ্রভু . . . সংগ্রামের দিনে যেমন যুদ্ধ করিয়াছিলেন, তেমনি ঐ জাতিগণের সহিত যুদ্ধ করিবেন।”—সখ. ১৪:৩.

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

“জৈতুন পর্ব্বতের” বিদীর্ণ হওয়ার দ্বারা রূপকভাবে কী বোঝানো হয়েছে?

“অতি বৃহৎ উপত্যকা” কোন বিষয়টাকে চিত্রিত করে এবং কীভাবে আমরা সেখানে অবস্থিতি করতে পারি?

“জীবন্ত জল” কী এবং কারা তা পান করার মাধ্যমে উপকার লাভ করবে?

১, ২. খুব শীঘ্র সত্যিকারের কোন যুদ্ধ সংগঠিত হতে যাচ্ছে আর এই যুদ্ধে ঈশ্বরের দাসদের কী করার প্রয়োজন হবে না?

উনিশ-শো আটত্রিশ সালের ৩০ অক্টোবর, যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ লক্ষ লোক এমন একটা জনপ্রিয় রেডিও কার্যক্রম শুনছিল, যেখানে নাটক পরিবেশন করা হচ্ছিল। সেই দিন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত সেই নাটক গ্রহগুলোর মধ্যে যুদ্ধ (ইংরেজি) নামক বিজ্ঞানভিত্তিক এক কাল্পনিক উপন্যাসের ওপর ভিত্তি করে উপস্থাপন করা হয়েছিল। যে-অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সংবাদপাঠকের ভূমিকায় অভিনয় করছিল, তারা মঙ্গলগ্রহ থেকে এক আক্রমণাত্মক বাহিনী নেমে আসার বিষয়ে বর্ণনা করেছিল, যে-বাহিনী পৃথিবীতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। যদিও ঘোষণা করা হয়েছিল যে, রেডিও কার্যক্রমটা একটা নাটক মাত্র কিন্তু অনেক শ্রোতা সেই আক্রমণটাকে বাস্তব ভেবে ভয় পেয়েছিল। কেউ কেউ এমনকী ভিন্ন গ্রহ থেকে আসা সেই কাল্পনিক অধিবাসীদের কাছ থেকে নিজেদের সুরক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছিল।

২ বর্তমানে, খুব শীঘ্র সত্যিকারের এক যুদ্ধ সংগঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু, আসন্ন এই যুদ্ধের প্রতি লোকেরা সাড়া দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এই যুদ্ধ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্‌বাণী করা হয়েছিল, তবে সেটা বিজ্ঞানভিত্তিক কোনো কাল্পনিক উপন্যাসে নয় বরং ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত বাক্য বাইবেলে। এটা হল আরমাগিদোনের যুদ্ধ—এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঈশ্বরের যুদ্ধ। (প্রকা. ১৬:১৪-১৬) এই যুদ্ধে ঈশ্বরের পার্থিব দাসদের অন্য গ্রহ থেকে আসা অধিবাসীদের বিরুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষা করার প্রয়োজন হবে না। তা সত্ত্বেও, তারা বিস্ময়কর ঘটনাগুলো এবং ঈশ্বরের সেই শক্তির প্রদর্শন দেখে বিস্মিত হয়ে যাবে, যা ভয় জাগিয়ে তোলে।

৩. আমরা কোন ভবিষ্যদ্‌বাণী বিবেচনা করব এবং কেন তা আমাদের জন্য আগ্রহজনক?

৩ সখরিয় ১৪ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ বাইবেলের একটা ভবিষ্যদ্‌বাণী সরাসরি আরমাগিদোন যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। প্রায় ২,৫০০ বছর আগে লিপিবদ্ধ করা হলেও, এই ভবিষ্যদ্‌বাণী আমাদের জীবনকেও প্রভাবিত করে। (রোমীয় ১৫:৪) সেই অধ্যায়ে যা বলা হয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই ১৯১৪ সালে স্বর্গে মশীহ রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ঈশ্বরের লোকেদের প্রভাবিত করছে এমন পরিস্থিতিগুলোর সঙ্গে এবং নিকট ভবিষ্যতে উন্মোচিত হবে এমন রোমাঞ্চকর ঘটনাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সেই ভবিষ্যদ্‌বাণীর লক্ষণীয় দিকগুলোর মধ্যে “অতি বৃহৎ উপত্যকা” গঠিত হওয়ার এবং “জীবন্ত জলের” নির্গমনের বিষয়টাও রয়েছে। (সখ. ১৪:৪, ৮) এই উপত্যকা যিহোবার উপাসকদের সুরক্ষা জোগানোর ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ এক ভূমিকা পালন করে। আর আমরা যখন বুঝতে পারব যে, আমাদের জন্য জীবন্ত জলের অর্থ কী হতে পারে, তখন আমরা যে কেবল তা পান করার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধেই বুঝতে পারব এমন নয় কিন্তু সেইসঙ্গে আমরা তা পানও করতে চাইব। তাই, এই ভবিষ্যদ্‌বাণীর প্রতি গভীর মনোযোগ দেওয়া আমাদের জন্যই উপকারজনক।—২ পিতর ১:১৯, ২০.

‘সদাপ্রভুর এক দিনের’ শুরু

৪. (ক) কখন ‘সদাপ্রভুর দিন’ শুরু হয়েছিল? (খ) ১৯১৪ সালের আগের বছরগুলোতে যিহোবার উপাসকরা কী ঘোষণা করছিল আর জগতের নেতারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল?

৪ সখরিয় ১৪ অধ্যায়ের শুরুতে এই কথাগুলো রয়েছে, “সদাপ্রভুর এক দিন।” (পড়ুন, সখরিয় ১৪:১, ২.) এই দিন কী? এটা হল ‘প্রভুর দিন,’ যা সেই সময় শুরু হয়েছিল, যখন ‘জগতের রাজ্য আমাদের প্রভুর ও তাঁহার খ্রীষ্টের হইয়াছিল।’ (প্রকা. ১:১০; ১১:১৫) সেই দিন ১৯১৪ সালে স্বর্গে মশীহ রাজ্যের জন্মের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। ১৯১৪ সালের আগের বছরগুলোতে যিহোবার উপাসকরা জাতিগণের কাছে ঘোষণা করেছিল যে, সেই বছরই “জাতিগণের সময়” শেষ হবে এবং জগতে এমন সমস্যাগুলো দেখা দেবে, যেগুলো আগে কখনো দেখা যায়নি। (লূক ২১:২৪) জাতিগণ কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল? সময়োপযোগী সেই সাবধানবাণীতে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা সেই উদ্যোগী অভিষিক্ত সুসমাচার প্রচারকদের অবজ্ঞা এবং তাড়না করেছিল। এইরকমটা করার মাধ্যমে জগতের নেতারা স্বয়ং সর্বশক্তিমান ঈশ্বরকে উপহাস করেছিল কারণ অভিষিক্ত রাজদূতেরা ‘স্বর্গীয় যিরূশালেমকে’—মশীহ রাজ্যকে—প্রতিনিধিত্ব করে, যারা সেই রাজ্যের একটা অংশ।—ইব্রীয় ১২:২২, ২৮.

৫, ৬. (ক) “নগর” এবং এর ‘প্রজাদের’ বিরুদ্ধে জাতিগণ ভবিষ্যদ্‌বাণীকৃত কোন পদক্ষেপ নিয়েছিল? (খ) কারা ‘অবশিষ্ট প্রজা’ ছিল?

৫ জাতিগণ কোন পদক্ষেপ নেবে, তা সখরিয় এই কথাগুলোর মাধ্যমে ভবিষ্যদ্‌বাণী করেছিলেন: “নগর [যিরূশালেম] শত্রুহস্তগত . . . হইবে।” “নগর” রূপকভাবে ঈশ্বরের মশীহ রাজ্যকে চিত্রিত করে। পৃথিবীতে এর ‘প্রজারা,’ অর্থাৎ অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের অবশিষ্টাংশরা এই রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে। (ফিলি. ৩:২০) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় যিহোবার সংগঠনের পার্থিব অংশের প্রধান সদস্যদের “শত্রুহস্তগত” বা গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ার আটলান্টার জেলে পাঠানো হয়েছিল। এই অর্থে ‘সকল গৃহের দ্রব্য লুটিত হইয়াছিল’ যে, এই ব্যক্তিদের এবং নীতিনিষ্ঠা রক্ষাকারী অন্যান্য নির্দোষ ব্যক্তির প্রতি অবিচার এবং নিষ্ঠুর আচরণ করা হয়েছিল। আক্রমণকারীরা তাদের সাহিত্যাদির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করার এবং রাজ্য ঘোষণাকারী হিসেবে তাদের কার্যক্রমের ওপর সীমা আরোপ করার মাধ্যমে প্রভাববিস্তারকারী সেই সম্পদগুলো লুঠ করেছিল, যেগুলো অভিষিক্ত ব্যক্তিরা ব্যবহার করত।

৬ যদিও আক্রমণকারীরা সংখ্যায় ঈশ্বরের লোকেদের তুলনায় বেশি ছিল, তাদের ভুলভাবে তুলে ধরেছিল, তাদের বিরোধিতা করেছিল এবং তাদের তাড়না করেছিল, তবুও তারা সত্য উপাসনাকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারেনি। সেই সময় “অবশিষ্ট প্রজারা” অর্থাৎ অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশরা ছিল, যারা অনুগতভাবে ‘নগর হইতে উচ্ছিন্ন হইবার’ বিষয়টা প্রত্যাখ্যান করেছিল।

৭. যিহোবার অভিষিক্ত সাক্ষিদের কাজ বর্তমানে সমস্ত সত্য উপাসনাকারীর জন্য কোন উদাহরণ স্থাপন করে?

৭ এই ভবিষ্যদ্‌বাণী কি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে সম্পূর্ণরূপে পরিপূর্ণ হয়েছিল? না। জাতিগণ অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ এবং তাদের পার্থিব আশাসম্পন্ন অনুগত সহযোগীদের ওপর আরও বেশি আক্রমণ নিয়ে এসেছিল। (প্রকা. ১২:১৭) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হচ্ছে এর একটা প্রমাণ। ঈশ্বরের বিশ্বস্ত অভিষিক্ত সাক্ষিদের নীতিনিষ্ঠার উদাহরণ, বর্তমানে ঈশ্বরের দাসদেরকে তাদের সামনে আসা যেকোনো পরীক্ষা সহ্য করার জন্য প্রেরণা জোগায়, যে-পরীক্ষার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে অবিশ্বাসী আত্মীয়স্বজন, সহকর্মী অথবা সহছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে আসা বিরোধিতা, যারা তাদের বিশ্বাসের জন্য তাদেরকে উপহাস করে। (১ পিতর ১:৬, ৭) সত্য উপাসকরা যেখানেই বাস করুক না কেন, তারা ‘এক আত্মাতে স্থির থাকিবার’ এবং “বিপক্ষগণ কর্ত্তৃক ত্রাসযুক্ত” না হওয়ার জন্য আগের চেয়ে আরও বেশি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। (ফিলি. ১:২৭, ২৮) কিন্তু, যিহোবার লোকেরা এমন একটা জগতে কোথায় সুরক্ষা খুঁজে পাবে, যে-জগৎ তাদেরকে ঘৃণা করে?—যোহন ১৫:১৭-১৯.

যিহোবা “অতি বৃহৎ উপত্যকা” গঠন করেন

৮. (ক) বাইবেলে মাঝে মাঝে পর্বতসমূহের দ্বারা কোন বিষয়টাকে চিত্রিত করা হয়? (খ) ‘জৈতুন পর্ব্বত’ কোন বিষয়টাকে চিত্রিত করে?

৮ যিরূশালেম—“নগর”—যেহেতু রূপকভাবে স্বর্গীয় যিরূশালেমকে চিত্রিত করে, তাই ‘যিরূশালেমের সম্মুখে অবস্থিত জৈতুন পর্ব্বতকেও’ রূপকভাবে ধরে নিতে হবে। সেই পর্বত কোন বিষয়টাকে চিত্রিত করে? কীভাবে সেটা ‘মধ্যদেশে বিদীর্ণ’ হয়ে দুটো পর্বত হয়ে উঠবে? কেন যিহোবা এগুলোকে ‘আমার পর্ব্বতগণ’ বলে উল্লেখ করেন? (পড়ুন, সখরিয় ১৪:৩-৫.) বাইবেলে মাঝে মাঝে পর্বতসমূহের দ্বারা রাজ্য অথবা সরকারগুলোকে চিত্রিত করা হয়। এ ছাড়া, বাইবেল প্রায়ই বলে যে, আশীর্বাদ এবং সুরক্ষা ঈশ্বরের পর্বত থেকে আসে। (গীত. ৭২:৩; যিশা. ২৫:৬, ৭) তাই, যিরূশালেমের পূর্ব দিকে অবস্থিত জৈতুন পর্বত, যেটার ওপর ঈশ্বর দাঁড়িয়ে আছেন, তা যিহোবার সর্বজনীন সার্বভৌমত্বকে, তাঁর সর্বোচ্চ শাসনব্যবস্থাকে চিত্রিত করে।

৯. কোন অর্থে ‘জৈতুন পর্ব্বত’ বিদীর্ণ হয়?

৯ জৈতুন পর্বত বিভক্ত হওয়ার দ্বারা কী ইঙ্গিত করা হয়েছে? পর্বতটা এই অর্থে বিদীর্ণ হয় যে, যিহোবা আরেকটা শাসনব্যবস্থা অর্থাৎ এক পরিপূরক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। এই গৌণ শাসনব্যবস্থা হল যিশু খ্রিস্টের অধীনস্থ মশীহ রাজ্য। এই কারণে “জৈতুন পর্ব্বতের” বিদীর্ণতার ফলে সৃষ্ট সেই দুটো পর্বতকে যিহোবা ‘আমার পর্ব্বতগণ’ বলে উল্লেখ করেন। (সখ. ১৪:৪, ৫) দুটো পর্বতই তাঁর।

১০. দুই পর্বতের মধ্যে অবস্থিত “অতি বৃহৎ উপত্যকা” কোন বিষয়টাকে চিত্রিত করে?

১০ যখন রূপক পর্বত অর্ধেক উত্তর দিকে এবং অর্ধেক দক্ষিণ দিকে বিদীর্ণ হয়, তখন যিহোবার চরণ উভয় পর্বতের মধ্যে দাঁড়ায়। “অতি বৃহৎ উপত্যকা” যিহোবার চরণের নীচে অস্তিত্ব লাভ করে। এই রূপক উপত্যকা ঐশিক সুরক্ষাকে চিত্রিত করে, যেটার মাধ্যমে যিহোবার দাসেরা তাঁর সর্বজনীন সার্বভৌমত্ব এবং তাঁর পুত্রের মশীহ রাজ্যের অধীনে সুরক্ষা লাভ করে। যিহোবা বিশুদ্ধ উপাসনাকে কখনো বন্ধ হয়ে যেতে দেবেন না। জৈতুন পর্বত কখন বিভক্ত হয়েছিল? ১৯১৪ সালে, যখন পরজাতিগণের সময়ের শেষে মশীহ রাজ্য প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। রূপক উপত্যকায় সত্য উপাসকদের পলায়ন কখন শুরু হয়েছিল?

উপত্যকায় পলায়ন শুরু হয়!

১১, ১২. (ক) কখন রূপক উপত্যকায় পলায়ন শুরু হয়েছিল? (খ) কী প্রমাণ দেয় যে, যিহোবার বলবান বাহু তাঁর লোকেদের সঙ্গে রয়েছে?

১১ যিশু তাঁর অনুসারীদের এই সাবধানবাণী দিয়েছিলেন: “আমার নাম প্রযুক্ত সমুদয় জাতি তোমাদিগকে দ্বেষ করিবে।” (মথি ২৪:৯) ১৯১৪ সাল থেকে এই বিধিব্যবস্থার শেষ সময়ে সেই ঘৃণা বিশেষভাবে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশের ওপর নিষ্ঠুর আক্রমণ চালানো সত্ত্বেও, তাদের শত্রুরা এই বিশ্বস্ত দলকে পুরোপুরিভাবে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারেনি। ১৯১৯ সালে তারা মহতী বাবিলের—মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যের—শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়েছিল। (প্রকা. ১১:১১, ১২)a সেই সময়ই যিহোবার পর্বতের উপত্যকায় পলায়ন শুরু হয়েছিল।

১২ উনিশ-শো উনিশ সাল থেকে ঐশিক সুরক্ষার উপত্যকা পৃথিবীব্যাপী সত্য উপাসকদের সুরক্ষা করে আসছে। দশকের পর দশক ধরে পৃথিবীর অনেক জায়গায় যিহোবার সাক্ষিদের ক্ষেত্রের পরিচর্যা এবং সাহিত্যাদির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল বা এগুলোর ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। কিছু কিছু দেশে এখনও এই ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু, জাতিগণ যত প্রচেষ্টাই করুক না কেন, তারা কখনোই সত্য উপাসনাকে বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষেত্রে সফল হতে পারবে না! যিহোবার বলবান বাহু সর্বদাই তাঁর লোকেদের সঙ্গে থাকবে।—দ্বিতীয়. ১১:২.

১৩. কীভাবে আমরা যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করে থাকি এবং কেন তা আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

১৩ আমরা যদি যিহোবার প্রতি অনুগত থাকি এবং সত্যে দৃঢ় থাকি, তাহলে তিনি এবং তাঁর পুত্র যিশু খ্রিস্ট তাদের ভূমিকা পালন করবেন আর ঈশ্বর কখনোই কাউকে অথবা কোনো কিছুকেই ‘তাঁহার হস্ত হইতে আমাদিগকে কাড়িয়া লইবার’ সুযোগ দেবেন না। (যোহন ১০:২৮, ২৯) যিহোবা যেকোনো প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করতে প্রস্তুত, যাতে সর্বজনীন সার্বভৌম হিসেবে তাঁর প্রতি আমরা বাধ্য থাকতে এবং মশীহ রাজ্যের অনুগত প্রজা হিসেবে অটল থাকতে পারি। তাই, আমাদের জন্য সুরক্ষামূলক উপত্যকায় থাকা আবশ্যক কারণ সেই উপত্যকা দ্রুত আসন্ন মহাক্লেশের সময় সত্য উপাসকদের জন্য এমনকী আরও বড়ো অর্থ রাখবে।

‘সংগ্রামের দিন’ উপস্থিত হয়

১৪, ১৫. শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘ঈশ্বরের সংগ্রামের দিনে’ সেই ব্যক্তিদের পরিস্থিতি কেমন হবে, যারা উপত্যকার বাইরে থাকবে?

১৪ এই বিধিব্যবস্থার শেষ নিকটবর্তী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শয়তানও যিহোবার দাসদের ওপর তার আক্রমণ আরও জোরদার করবে। তখনই তাঁর শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘ঈশ্বরের সংগ্রামের দিন’ আসবে। যিহোবা শয়তানের আক্রমণকে শীঘ্র শেষ করে দেবেন। সেই দিন নিখিলবিশ্বের সার্বভৌম, পূর্বের যেকোনো ‘যুদ্ধের’ সময়ের চেয়ে নিজেকে আরও মহান একজন যোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করবেন।—সখ. ১৪:৩.

১৫ সংগ্রামের দিনে যারা সুরক্ষামূলক ‘বৃহৎ উপত্যকার’ বাইরে থাকবে, তাদের পরিস্থিতি কেমন হবে? তাদের ওপর ঐশিক অনুগ্রহের কোনো “আলো” থাকবে না। আসন্ন সেই যুদ্ধের দিনে, ‘অশ্ব, অশ্বতর, উষ্ট্র, গর্দ্দভ প্রভৃতি সকল পশু’—জাতিগণের সামরিক সাজসরঞ্জামের প্রতীক—প্রভাবিত হবে। এই ধরনের সাজসরঞ্জাম অকেজো হয়ে পড়বে। এ ছাড়া, যিহোবা মহামারী নিয়ে আসবেন এবং “আঘাত” করবেন। সেই আঘাত আক্ষরিক বা রূপক, যা-ই হোক না কেন, তা ভয়ানক হুমকিকে বন্ধ করে দেবে। সেই দিন এই অর্থে ‘তাহাদের চক্ষু দুটী ক্ষয় পাইবে, ও জিহ্বা ক্ষয় পাইবে’ যে, আক্রমণকারীরা কেবল অন্ধের মতো আঘাত করবে এবং তাদের গর্বিত বাক্য রুদ্ধ হয়ে যাবে। (সখ. ১৪:৬, ৭, ১২, ১৫) পৃথিবীর কোনো জায়গাই ধ্বংস থেকে রেহাই পাবে না। যুদ্ধক্ষেত্রে যে-বাহিনী শয়তানের পক্ষে দাঁড়াবে, সেটার সংখ্যা হবে বিরাট। (প্রকা. ১৯:১৯-২১) “তৎকালে সদাপ্রভুর নিহত লোক সকল পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে পৃথিবীর অন্য প্রান্ত পর্য্যন্ত দেখা যাইবে।”—যির. ২৫:৩২, ৩৩.

১৬. ঈশ্বরের সংগ্রামের দিন যেহেতু এগিয়ে আসছে, তাই আমাদের কোন প্রশ্নগুলো মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত এবং আমাদের কী করতে হবে?

১৬ যুদ্ধ সবসময়ই কষ্ট নিয়ে আসে আর তা এমনকী চূড়ান্ত বিজয়ীদের বেলায়ও সত্য। খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে। সহায়সম্পদ হারিয়ে যেতে পারে। জীবনযাত্রার মান নিম্ন হয়ে যেতে পারে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা কমে যেতে পারে। এই ধরনের কষ্টগুলো যদি আমাদের ওপর আসে, তাহলে আমরা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাব? আমরা কি আতঙ্কিত হয়ে পড়ব? আমরা কি চাপের মুখে আমাদের বিশ্বাস অস্বীকার করব? আমরা কি আশা হারিয়ে ফেলব এবং হতাশায় ডুবে যাব? মহাক্লেশের সময় যিহোবার রক্ষা করার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস বজায় রাখা এবং যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করা কতই না গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে!—পড়ুন, হবক্‌কূক ৩:১৭, ১৮.

“জীবন্ত জল নির্গত হইবে”

১৭, ১৮. (ক) “জীবন্ত জল” কী? (খ) ‘পূর্ব্বসমুদ্র’ এবং ‘পশ্চিমসমুদ্র’ কোন বিষয়কে চিত্রিত করে? (গ) আপনি যখন ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেন, তখন আপনার দৃঢ়সংকল্প কী?

১৭ আরমাগিদোনের পর, “জীবন্ত জল” মশীহ রাজ্যের আসন থেকে ক্রমাগত প্রবাহিত হবে। এই “জীবন্ত জল” হল জীবনের জন্য যিহোবার ব্যবস্থা। ‘পূর্ব্বসমুদ্র’ লবণসমুদ্রকে এবং ‘পশ্চিমসমুদ্র’ ভূমধ্যসাগরকে নির্দেশ করে। দুটো সমুদ্রই লোকেদের নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। লবণসমুদ্র সেই ব্যক্তিদের চিত্রিত করে, যারা সমস্ত মানবজাতির সাধারণ কবরে রয়েছে। যেহেতু ভূমধ্যসাগর জীবিত প্রাণীতে পরিপূর্ণ, তাই এটা উপযুক্তভাবেই আরমাগিদোন থেকে রক্ষাপ্রাপ্ত ‘বিস্তর লোককে’ চিত্রিত করে। (পড়ুন, সখরিয় ১৪:৮, ৯; প্রকা. ৭:৯-১৫) এভাবে, উভয় দলই সেই সময় আদমজাত মৃত্যুর দণ্ড থেকে মুক্ত হওয়ার মাধ্যমে উপকার লাভ করবে, যখন তারা রূপক জীবন্ত জলের অথবা ‘জীবন-জলের নদীর’ মাধ্যমে তাদের তৃষ্ণা মেটাতে থাকবে।—প্রকা. ২২:১, ২.

১৮ যিহোবার সুরক্ষার অধীনে আমরা এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ থেকে রক্ষা পাব এবং ঈশ্বরের ধার্মিক নতুন জগতে প্রবেশ করব। যদিও আমরা সমস্ত জাতির ঘৃণার লক্ষবস্তু, তবুও আসুন আমরা ঈশ্বরের রাজ্যের অনুগত প্রজা হিসেবে অটল থাকি এবং যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করার জন্য আগের চেয়ে আরও বেশি দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হই।

[পাদটীকা]

a প্রকাশিত বাক্য—এটির মহান পরিপূর্ণতা সন্নিকট! (ইংরেজি) বইয়ের ১৬৯-১৭০ পৃষ্ঠা দেখুন।

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

[২১ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার সুরক্ষামূলক উপত্যকায় অবস্থিতি করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার