ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w14 ১২/১৫ পৃষ্ঠা ১১-১৫
  • আপনি কি “বুঝিতে পারেন”?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনি কি “বুঝিতে পারেন”?
  • ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের দৃষ্টান্ত
  • টানা জালের দৃষ্টান্ত
  • অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্ত
  • কোনটা সফল হবে, তা তো আপনি জানেন না!
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ‘শুনুন ও বুঝুন’
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “বৃদ্ধিদাতা ঈশ্বরই সার”!
    ২০০৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • টানা-জাল ও মৎস্য আপনার জন্য কি অর্থ রাখে?
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w14 ১২/১৫ পৃষ্ঠা ১১-১৫
নিদা যায় এমন বীজবাপক, টানা জাল এবং অপব্যয়ী পুত্র সপর্কে যিশুর দৃটাত

আপনি কি “বুঝিতে পারেন”?

“তিনি তাঁহাদের বুদ্ধিদ্বার খুলিয়া দিলেন, যেন তাঁহারা শাস্ত্র বুঝিতে পারেন।” —লূক ২৪:৪৫.

আপনি কী শিখতে পারেন . . .

  • নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের দৃষ্টান্ত থেকে?

  • টানা জালের দৃষ্টান্ত থেকে?

  • অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্ত থেকে?

১, ২. পুনরুত্থানের দিন যিশু তাঁর শিষ্যদের কীভাবে শক্তিশালী করেন?

যিশুর দু-জন শিষ্য যিরূশালেম থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) দূরে একটা গ্রামের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন। যিশু মারা গিয়েছেন বলে তারা শোকার্ত আর তিনি যে পুনরুত্থিত হয়েছেন, সেই বিষয়টা তারা এখনও জানেন না। হঠাৎ, যিশু আবির্ভূত হন এবং তাদের সঙ্গে হাঁটতে থাকেন। তারপর, “তিনি মোশি হইতে ও সমুদয় ভাববাদী হইতে আরম্ভ করিয়া সমুদয় শাস্ত্রে তাঁহার নিজের বিষয়ে যে সকল কথা আছে, তাহা তাঁহাদিগকে বুঝাইয়া দিলেন।” (লূক ২৪:১৩-১৫, ২৭) এর ফলে তারা সান্ত্বনা লাভ করেন এবং তাদের চিত্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কারণ তিনি তাদের কাছে শাস্ত্রের “অর্থ খুলিয়া” দেন বা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন।—লূক ২৪:৩২.

২ এই দুই শিষ্য সেই দিন সন্ধ্যা বেলায় যিরূশালেমে ফিরে যান। প্রেরিতদের দেখতে পেয়ে তারা যা যা ঘটেছে, সেগুলো তাদের কাছে বলেন। তারা যখন কথা বলছেন, তখন যিশু তাদের সামনে আবির্ভূত হন। প্রেরিতরা অনেক ভয় পেয়ে যান এবং এই ব্যক্তি সত্যিই যিশু কি না, তা নিয়ে সন্দেহ করতে শুরু করেন। তখন যিশু তাদের যেভাবে শক্তিশালী করেন, সেই বিষয়ে বাইবেল বলে: “তিনি তাঁহাদের বুদ্ধিদ্বার খুলিয়া দিলেন, যেন তাঁহারা শাস্ত্র বুঝিতে পারেন।”—লূক ২৪:৪৫.

৩. যিহোবার সেবা করার সময় কেন আমরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়তে পারি আর এইরকম পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে আনন্দ বজায় রাখতে পারি?

৩ মাঝে মাঝে, সেই শিষ্যদের মতো আমরাও হয়তো অনেক দুঃখিত হতে পারি। যদিও আমরা যিহোবার সেবাতে ব্যস্ত রয়েছি, কিন্তু লোকেরা আমাদের প্রচারের প্রতি সাড়া না দিলে আমরা হয়তো নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ি। (১ করি. ১৫:৫৮) অথবা আমরা মনে করতে পারি, আমাদের বাইবেল ছাত্ররা যথেষ্ট উন্নতি করছে না। এমনকী তাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো যিহোবাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এইরকম পরিস্থিতিতে কীভাবে আমরা পরিচর্যায় আনন্দ বজায় রাখতে পারি? যে-বিষয়টা আমাদের সাহায্য করবে তা হল, যিশুর দৃষ্টান্তগুলোর অর্থ বোঝা। এখন আমরা তিনটে দৃষ্টান্ত পরীক্ষা করব এবং সেগুলো থেকে আমরা কী শিখতে পারি, তা লক্ষ করব।

নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের দৃষ্টান্ত

৪. নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্তের অর্থ কী?

৪ মার্ক ৪:২৬-২৯ পদ পড়ুন। নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্তের অর্থ কী? বীজবাপক হল রাজ্যের প্রচারকরা এবং বীজ হল সেই বার্তা, যা তারা সৎহৃদয়ের ব্যক্তিদের কাছে প্রচার করে। বীজবাপক অন্য সকলের মতোই স্বাভাবিক কাজকর্ম করে অর্থাৎ “রাত দিন নিদ্রা যায় ও উঠে [‘রাতে ঘুমিয়ে ও দিনে জেগে থেকে সময় কাটায়,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন]।” বীজের বৃদ্ধির জন্য অর্থাৎ বপন করার দিন থেকে শস্যচ্ছেদন পর্যন্ত কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। এই সময়ের মধ্যে “ঐ বীজ অঙ্কুরিত হইয়া বাড়িয়া উঠে।” এই বৃদ্ধি “আপনা আপনি” অর্থাৎ ধীরে ধীরে ও ধাপে ধাপে ঘটে। একইভাবে, একজন ব্যক্তি ধীরে ধীরে ও ধাপে ধাপে আধ্যাত্মিকভাবে বৃদ্ধি লাভ করেন বা যিহোবার নিকটবর্তী হন। তিনি যখন উন্নতি করে ঈশ্বরকে সেবা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো পর্যায়ে পৌঁছান, তখন তিনি যিহোবার কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করার ও বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে ‘ফল উৎপন্ন করেন।’

৫. নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের দৃষ্টান্ত যিশু কেন তুলে ধরেছিলেন?

৫ কেন যিশু এই দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন? যিশু চান যেন আমরা এটা বুঝতে পারি, যিহোবাই “নিরূপিত [“সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন,” NW]” ব্যক্তিদের হৃদয়ে সত্য বৃদ্ধি পেতে দেন। (প্রেরিত ১৩:৪৮; ১ করি. ৩:৭) আমরা রোপণ ও জল সেচন করি, কিন্তু আমরা জোর করে অথবা দ্রুত বীজের বৃদ্ধি ঘটাতে পারি না। দৃষ্টান্তের সেই ব্যক্তির মতো, আমরা জানি না বৃদ্ধি কীভাবে ঘটে। দৈনন্দিন জীবনযাপনে ব্যস্ত থাকার সময়, কোনো ব্যক্তির মধ্যে রাজ্যের বীজ যে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা হয়তো আমরা লক্ষও করি না। কিন্তু, পরে হয়তো সেই বীজ ফল উৎপন্ন করে এবং সেই নতুন শিষ্য আমাদের সঙ্গে শস্যচ্ছেদনের কাজ করে।—যোহন ৪:৩৬-৩৮.

৬. একজন বাইবেল ছাত্রের উন্নতির ব্যাপারে আমাদের কোন বিষয়টা স্বীকার করতে হবে?

৬ এই দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কী শিখতে পারি? প্রথমত, আমাদের এটা স্বীকার করতে হবে, একজন বাইবেল ছাত্র সত্যে কত দ্রুত উন্নতি করবেন, তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। যদিও আমরা ছাত্রকে সাহায্য ও সমর্থন করার জন্য যথাসাধ্য করে থাকি, কিন্তু আমরা কখনো তাকে বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য চাপ দিতে পারি না। এর পরিবর্তে, আমরা নম্রভাবে এটা স্বীকার করি, তিনি ঈশ্বরের কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করবেন কি না, সেই ব্যাপারে একমাত্র তিনিই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। যিহোবা একমাত্র তখনই আমাদের উৎসর্গীকরণকে মেনে নেন, যখন আমরা সত্যিই তাঁকে ভালোবাসি।—গীত. ৫১:১২; ৫৪:৬; ১১০:৩.

৭, ৮. (ক) নিদ্রা যায় এমন বীজবাপকের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্ত থেকে আমরা আর কোন কোন শিক্ষা লাভ করতে পারি? একটা উদাহরণ দিন। (খ) এই দৃষ্টান্ত থেকে আমরা যিহোবা ও যিশু সম্বন্ধে কী শিখতে পারি?

৭ দ্বিতীয়ত, আমরা যদি এই দৃষ্টান্তের শিক্ষাটা বুঝতে পারি, তাহলে আমাদের শিক্ষাদানের ফলাফল সঙ্গেসঙ্গে দেখতে না পেলে আমরা নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ব না। এক্ষেত্রে আমাদের দীর্ঘসহিষ্ণু বা ধৈর্যশীল হতে হবে। (যাকোব ৫:৭, ৮) ছাত্রকে সাহায্য করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করা সত্ত্বেও তার হৃদয়ে যদি সত্য বৃদ্ধি না পায়, সেটার অর্থ এই নয় যে, আমরা ভালো শিক্ষক নই। যিহোবা কেবল সেই নম্র ব্যক্তির হৃদয়েই সত্যের বীজকে বৃদ্ধি পেতে দেন, যিনি বিভিন্ন পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক থাকেন। (মথি ১৩:২৩) তাই, আমাদের পরিচর্যা কতটা সফল, তা শুধুমাত্র আমরা কত জন ব্যক্তিকে বাপ্তিস্ম নিতে সাহায্য করেছি, সেটার দ্বারা বিচার করা উচিত নয়। কারণ আমাদের শিক্ষার প্রতি লোকেরা কীভাবে সাড়া দেয়, সেটার মাধ্যমে যিহোবা আমাদের পরিচর্যার সফলতা পরিমাপ করেন না। এর পরিবর্তে, অধ্যবসায়ের সঙ্গে করা আমাদের প্রচেষ্টাকে তিনি মূল্য দেন।—পড়ুন, লূক ১০:১৭-২০; ১ করিন্থীয় ৩:৮.

৮ তৃতীয়ত, একজন ব্যক্তির হৃদয়ে যে-পরিবর্তনগুলো ঘটছে, সেগুলো আমরা সবসময় বুঝতে পারি না। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একজন মিশনারির সঙ্গে অধ্যয়ন করছিলেন এমন এক দম্পতি তাকে জানিয়েছিলেন, তারা অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হতে চান। মিশনারি তখন তাদের মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, প্রথমে তাদের ধূমপান করা বন্ধ করতে হবে। তারা যখন সেই মিশনারিকে বলেছিলেন, তারা কয়েক মাস আগেই তা বন্ধ করে দিয়েছেন, তখন তিনি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। সেই দম্পতি এটা বুঝতে পেরেছিলেন, তারা যদি এমনকী গোপনেও ধূমপান করেন, তবুও যিহোবা তাদের দেখতে পান এবং তিনি কপটতা ঘৃণা করেন। তাই তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, হয় তারা মিশনারির সামনেই ধূমপান করবেন, নতুবা তা পুরোপুরি বন্ধ করে দেবেন। এই দম্পতি যে-বিরাট পরিবর্তন করেছেন, সেই সম্বন্ধে যদিও সেই মিশনারির কোনো ধারণাই ছিল না, তবে যিহোবার জন্য তাদের বৃদ্ধিরত ভালোবাসা তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছিল।

টানা জালের দৃষ্টান্ত

৯. টানা জালের দৃষ্টান্তের অর্থ কী?

৯ মথি ১৩:৪৭-৫০ পদ পড়ুন। টানা জালের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্তের অর্থ কী? যিশু বলেছিলেন, রাজ্যের বার্তা প্রচার করা হল সমুদ্রে একটা বিশাল টানা জাল ফেলার মতো। ঠিক যেমন একটা টানা জালে “সর্ব্বপ্রকার মাছ” ধরা পড়ে, তেমনই আমাদের প্রচার কাজ সকল ধরনের লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিকে আকর্ষণ করে। (যিশা. ৬০:৫) প্রতি বছর আমাদের বিভিন্ন সম্মেলনে ও স্মরণার্থ সভায় আসা লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি এই বিষয়টারই প্রমাণ দেয়। এই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ দৃষ্টান্তের ‘ভাল’ মাছের মতো আর তারা খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর অংশ হয়। আর অন্যেরা ‘মন্দ’ মাছের মতো এবং যিহোবা তাদের গ্রহণ করেন না।

একটা টানা জালে সর্ব্বপকার মাছ ধরা পড়ে এবং ভালোগুলোকে একটা পাত্র জড়ো করে রাখা হয়

মথি ১৩:৪৭-৫০ পদ পড়ার পর . . .

১০. কেন যিশু টানা জালের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন?

১০ কেন যিশু এই দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন? দৃষ্টান্তে মাছ পৃথক করার বিষয়টা মহাক্লেশের সময়ে চূড়ান্ত বিচারকে নির্দেশ করে না। এর পরিবর্তে, এটা এমন বিষয় সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে, যা এই বিধিব্যবস্থার শেষকালেই ঘটবে। যিশু দেখিয়েছিলেন, রাজ্যের বার্তার প্রতি আগ্রহ দেখায় এমন সকলেই যে যিহোবার দাস হতে চাইবে, এমন নয়। আমাদের বিভিন্ন সভায় এসেছে অথবা আমাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করেছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে যিহোবার কাছে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করতে চায় না। (১ রাজা. ১৮:২১) অন্যেরা আবার সভায় আসা বন্ধ করে দিয়েছে। কিছু অল্পবয়সি যদিও খ্রিস্টান বাবা-মায়ের কাছেই মানুষ হয়েছে, কিন্তু তারা আসলে যিহোবাকে ভালোবাসতে শেখেনি। যিশু এই বিষয়ের ওপর জোর দিয়েছিলেন, আমাদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা যদি সঠিক বাছাই করি, তাহলে যিহোবা আমাদের “মনোরঞ্জন বস্তু” বা মূল্যবান হিসেবে দেখবেন।—হগয় ২:৭.

একজন রাজ্য পচারক একদল লোকের কাছ সাক্ষ্য দেন কিতু তাদের মধ্যে কেবল একজন যিহোবার পক্ষসমর্থন করেন

. . . বর্তমানে কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, তা বিবেচনা করুন

১১, ১২. (ক) কীভাবে আমরা টানা জালের দৃষ্টান্ত থেকে উপকৃত হতে পারি? (খ) এই দৃষ্টান্ত থেকে আমরা যিহোবা ও যিশু সম্বন্ধে কী শিখতে পারি?

১১ কীভাবে আমরা টানা জালের দৃষ্টান্ত থেকে উপকৃত হতে পারি? আমরা যদি এই দৃষ্টান্তের শিক্ষাটা বুঝতে পারি, তাহলে আমরা সেই সময়ে অতিরিক্ত দুঃখিত বা হতাশ হয়ে পড়ব না, যখন আমাদের কোনো বাইবেল ছাত্র অথবা সন্তান যিহোবার সেবা করা প্রত্যাখ্যান করে। তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আমরা হয়তো সবরকম প্রচেষ্টাই করেছি। কিন্তু, আমাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছে বলে অথবা সত্যে মানুষ হয়েছে বলে কোনো ব্যক্তি এমনি এমনিই যিহোবার বন্ধু হয়ে উঠতে পারে না। কেউ যদি যিহোবার কর্তৃত্বকে স্বীকার করতে ইচ্ছুক না হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের দাস হতে পারে না।

সত্যের প্রতি আকৃষ্ট হয় এমন কেউ কেউ যিহোবার পক্ষসমর্থন করবে (৯-১২ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১২ তার অর্থ কি এই, যারা সত্য ছেড়ে চলে যায়, তাদের আর কখনো মণ্ডলীতে ফিরে আসার সুযোগ নেই? না কি এর অর্থ হল, এখনও যিহোবার কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করেননি এমন একজন ব্যক্তির কোনো আশা নেই? না, তা নয়। মহাক্লেশ শুরু হওয়ার আগে, তাদের জন্য যিহোবার বন্ধু হওয়ার সুযোগ এখনও খোলা রয়েছে। যিহোবা তাদের বলেন: “আমার কাছে ফিরিয়া আইস, আমিও তোমাদের কাছে ফিরিয়া আসিব।” (মালাখি ৩:৭) অপব্যয়ী পুত্রের বিষয়ে যিশু যে-দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন, সেখানে এই বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।—পড়ুন, লূক ১৫:১১-৩২.

অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্ত

১৩. অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্তের অর্থ কী?

১৩ অপব্যয়ী পুত্রের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্তের অর্থ কী? এই দৃষ্টান্তের করুণাময় পিতা, আমাদের প্রেমময় স্বর্গীয় পিতা যিহোবাকে প্রতিনিধিত্ব করে। যে-পুত্র নিজের মূল্যবান উত্তরাধিকার নষ্ট করে, সে সেই ব্যক্তিদের প্রতিনিধিত্ব করে, যারা খ্রিস্টীয় মণ্ডলী ছেড়ে চলে যায়। এর ফলে তারা শয়তানের জগতের অংশ হয়ে ওঠে, যা যিহোবার কাছ থেকে “দূরদেশে” চলে যাওয়ার মতো। (ইফি. ৪:১৮; কল. ১:২১) পরবর্তী সময়ে এই ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ কেউ নিজেদের গুরুতর ভুল বুঝতে পারে এবং যিহোবার কাছে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য প্রচেষ্টা করা প্রয়োজন। তবে এই ব্যক্তিরা যেহেতু নম্রতা দেখায় এবং নিজেদের কাজের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত হয়, তাই যিহোবা তাদের ক্ষমা করেন এবং সাদরে গ্রহণ করে নেন।—যিশা. ৪৪:২২; ১ পিতর ২:২৫.

১৪. কেন যিশু অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন?

১৪ কেন যিশু এই দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন? যিশু দেখিয়েছিলেন যে, যিহোবা সত্যিই চান যেন সেই ব্যক্তিরা তাঁর কাছে ফিরে আসে, যারা তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এই দৃষ্টান্তের পিতা কখনো এই আশা ত্যাগ করেননি যে, তার পুত্র ফিরে আসবে। পুত্র “দূরে থাকিতেই” তিনি তাকে আসতে দেখেছিলেন এবং তার সঙ্গে দেখা করার জন্য দৌড়ে গিয়েছিলেন। সেই পিতা এটা চেয়েছিলেন যেন তার পুত্র বুঝতে পারে, তিনি তাকে গ্রহণ করতে চান। এই দৃষ্টান্ত, সত্য ছেড়ে চলে গিয়েছে এমন ব্যক্তিদের দেরি না করে যিহোবার কাছে ফিরে আসতে অনুপ্রাণিত করবে। হতে পারে, যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অনেক দুর্বল হয়ে গিয়েছে আর তাই তারা যিহোবার কাছে ফিরে আসতে বিব্রতবোধ করছেন এবং অনেক কঠিন বলে মনে করছেন। কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টা সার্থক হবে। তারা যখন ফিরে আসেন, তখন যিহোবা, যিশু এবং স্বর্গদূতেরা আনন্দিত হন।—লূক ১৫:৭.

১৫, ১৬. (ক) অপব্যয়ী পুত্রের বিষয়ে যিশুর দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কী শিখতে পারি? কিছু উদাহরণ দিন। (খ) এই দৃষ্টান্ত থেকে আমরা যিহোবা ও যিশু সম্বন্ধে কী শিখতে পারি?

১৫ কীভাবে আমরা অপব্যয়ী পুত্রের দৃষ্টান্ত থেকে উপকৃত হতে পারি? আমাদেরকে যিহোবার প্রেমের উদাহরণ অনুকরণ করতে হবে। কেউ যখন মণ্ডলীতে ফিরে আসেন, তখন আমরা “অতি ধার্ম্মিক” হব না এবং তাকে পুনরায় গ্রহণ করে নিতে অসম্মত হব না। তা করলে যিহোবার সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। (উপ. ৭:১৬) এখান থেকে আমরা আরেকটা শিক্ষা লাভ করতে পারি আর তা হল, মণ্ডলী ছেড়ে চলে গিয়েছেন এমন একজন ব্যক্তিকে আমরা ‘হারাণ মেষ’ হিসেবে দেখব, যে-মেষ আবার ফিরে আসতে পারে। (গীত. ১১৯:১৭৬) আর মণ্ডলী ছেড়ে চলে গিয়েছেন এমন কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যদি আমাদের দেখা হয়, তাহলে তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করার জন্য আমরা কী করতে পারি? আমরা কি অবিলম্বে গিয়ে প্রাচীনদের তা জানাব, যাতে তারা তাকে সাহায্য করতে পারেন? আমরা যদি যিশুর দৃষ্টান্ত সত্যিই বুঝতে পারি এবং সেই শিক্ষা কাজে লাগাই, তাহলে আমরা সেটাই করব।

১৬ যে-ব্যক্তিরা ফিরে আসেন, তারা যিহোবার করুণা এবং মণ্ডলীর প্রেম ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ হন। ২৫ বছর ধরে সমাজচ্যুত ছিলেন এমন একজন ভাই বলেন: “যখন থেকে আমাকে পুনর্বহাল করা হয়েছে, আমার আনন্দ দিন দিন বেড়েই চলেছে কারণ আমি যিহোবার কাছ থেকে ‘তাপশান্তির সময়’ বা সতেজতা উপভোগ করছি। (প্রেরিত ৩:১৯) সবাই অনেক সমর্থন করছে ও প্রেম দেখাচ্ছে! এখন আমার এক চমৎকার আধ্যাত্মিক পরিবার রয়েছে।” একজন বোন পাঁচ বছর মণ্ডলী থেকে দূরে থাকার পর আবার ফিরে এসেছেন। তিনি বলেন: “যিশু যে-প্রেমের বিষয়ে বলেছিলেন, তা যখন আমার প্রতি সুস্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে, তখন আমার কেমন লেগেছে, সেটা আমি আপনাদের কাছে ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। যিহোবার সংগঠনের অংশ হওয়ার চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই!”

১৭, ১৮. (ক) এই তিনটে দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কোন কোন শিক্ষা লাভ করেছি? (খ) আমরা কী করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

১৭ এই তিনটে দৃষ্টান্ত থেকে আমরা কী শিখেছি? প্রথমত, আমাদের এটা বুঝতে হবে, একজন বাইবেল ছাত্র সত্যে কত দ্রুত উন্নতি করবেন, তা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। সেই বিষয়টা আমরা যিহোবার ওপর ছেড়ে দিই। দ্বিতীয়ত, আমাদের সঙ্গে মেলামেশা ও অধ্যয়ন করে এমন সকলে যিহোবার সেবা করতে চাইবে, এমনটা আশা করা বাস্তবসম্মত নয়। সব শেষে বলা যায়, কেউ কেউ যিহোবার কাছ থেকে দূরে চলে গেলেও, তারা যে আবার ফিরে আসবে, এই আশা যেন আমরা কখনো ত্যাগ না করি। তারা যখন ফিরে আসে, তখন আমরা যেন তাদের যিহোবার মতো প্রেম দেখিয়ে গ্রহণ করে নিই।

১৮ আসুন আমরা প্রত্যেকে জ্ঞান, বোধগম্যতা ও প্রজ্ঞার অন্বেষণ করে চলি। যিশুর দৃষ্টান্তগুলো পড়ার সময় নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘এই দৃষ্টান্তের অর্থ কী? কেন এটা বাইবেলে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে? কীভাবে আমি এর শিক্ষাগুলো কাজে লাগাতে পারি? এখান থেকে আমি যিহোবা ও যিশু সম্বন্ধে কী শিখতে পারি?’ আমরা যখন এভাবে অন্বেষণ করি, তখন আমরা দেখাই, আমরা যিশুর বাক্যের অর্থ বুঝতে পেরেছি।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার