ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • wp16 নং ১ পৃষ্ঠা ১০-১১
  • এখন আমার মনে হয়, আমি অন্যদের সাহায্য করতে পারি

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • এখন আমার মনে হয়, আমি অন্যদের সাহায্য করতে পারি
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা আমার চোখ খুলে দিয়েছেন
    ২০১২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
    প্রহরীদুর্গ: বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
  • বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • ঈশ্বরের যত্ন থেকে আমি কিভাবে উপকৃত হয়েছিলাম
    ১৯৯৫ সচেতন থাক!
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (জনসাধারণের সংস্করণ)—২০১৬
wp16 নং ১ পৃষ্ঠা ১০-১১

বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে

এখন আমার মনে হয়, আমি অন্যদের সাহায্য করতে পারি

বলেছেন হুলিও করিও

  • জন্ম: ১৯৮১ সাল

  • দেশ: গুয়াতেমালা

  • ইতিহাসে: আমার ছেলেবেলা খুবই কষ্টের মধ্যে কেটেছে

আমার অতীত:

গুয়াতেমালার পশ্চিম দিকের পার্বত্য অঞ্চলের এক বিচ্ছিন্ন শহর, আকুলে আমি জন্মগ্রহণ করি। আমার পরিবার মায়া জাতির ইসিল সম্প্রদায়ভুক্ত। স্প্যানিশ ভাষা ছাড়াও আমি আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারি। আমি যখন ছোটো ছিলাম, তখন গুয়াতেমালায় গৃহযুদ্ধ চলছিল এবং এই নৃশংস যুদ্ধ ৩৬ বছর ধরে চলেছিল। আর সেই সময় ইসিল সম্প্রদায়ের অনেক লোক মারা যায়।

হুলিও করিও

আমার বয়স যখন মাত্র চার বছর, তখন একদিন আমার দাদা একটা হ্যান্ড গ্রেনেড (হাত বোমা) নিয়ে খেলছিল, যেটা হঠাৎ ফেটে যায়। এই দুর্ঘটনায় আমি আমার দৃষ্টিশক্তি হারাই এবং দুঃখের বিষয় হল, আমার দাদা মারা যায়; তার বয়স ছিল মাত্র সাত বছর। এরপর আমাকে গুয়াতেমালা শহরে অন্ধদের জন্য একটা শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে আমার ছেলেবেলা কাটে। সেখানেই আমি ব্রেইল ভাষা শিখি। কেন জানি না, সেখানে যারা কাজ করতেন, তারা আমাকে অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে দিতেন না আর আমার সহপাঠীরা আমাকে এড়িয়ে চলত। আমি সবসময় একা থাকতাম এবং প্রতি বছর সেই দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করে থাকতাম, যখন আমাকে দু-মাসের জন্য বাড়ি গিয়ে মায়ের সঙ্গে থাকার সুযোগ দেওয়া হতো। আমার মা সবসময় আমার প্রতি দয়া এবং সমবেদনা দেখাতেন। দুঃখের বিষয় হল, আমার বয়স যখন দশ বছর, তখন তিনি মারা যান। পৃথিবীতে যিনি আমাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন, তাকে হারিয়ে আমি একেবারে ভেঙে পড়ি।

১১ বছর বয়সে আমি নিজের শহরে ফিরে যাই এবং আমার সৎ ভাই ও তার পরিবারের সঙ্গে থাকতে শুরু করি। তারা আমার ভরণ-পোষণ জোগাত ঠিকই কিন্তু আবেগগতভাবে কেউই আমাকে সাহায্য করতে পারেনি। কখনো কখনো আমি দুঃখের সঙ্গে চিৎকার করে ঈশ্বরকে বলতাম: “কেন আমার মা মারা গেল? কেন আমি অন্ধ হয়ে গেলাম?” লোকেরা আমাকে বলত, সবই ঈশ্বরের ইচ্ছা। তাই আমার মনে হয়েছিল, ঈশ্বর হলেন নির্দয় এবং অন্যায়কারী। একমাত্র যে-কারণে আমি আত্মহত্যা করিনি, তা হল আত্মহত্যা করার কোনো উপায় আমার কাছে ছিল না।

অন্ধ হওয়ায় আমি শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে অসহায় ছিলাম। অল্পবয়সে আমি একাধিক বার যৌন নিগ্রহের শিকার হই। এই নিগ্রহের বিষয়ে আমি কখনো কাউকে বলিনি কারণ আমি মনে করতাম, এতে কারো কিছু আসে-যায় না। লোকেরা আমার সঙ্গে খুব কমই কথা বলত আর আমিও কারো সঙ্গে কথা বলতাম না। বেশিরভাগ সময় আমি একা থাকতাম এবং অবসাদে ভুগতাম আর কাউকেই বিশ্বাস করতাম না।

বাইবেল যেভাবে আমার জীবনকে পরিবর্তন করেছে:

আমার বয়স তখন ১৩ বছর। একদিন স্কুলের বিরতির সময় এক যিহোবার সাক্ষি দম্পতি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। আমার স্কুলের একজন শিক্ষিকা আমার করুণ পরিস্থিতির প্রতি সমবেদনা দেখিয়ে তাদেরকে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলেছিলেন। তারা আমাকে বাইবেলের প্রতিজ্ঞার বিষয়ে বলেন, যেমন মৃত ব্যক্তিরা আবার জীবিত হবে এবং অন্ধ ব্যক্তিরা তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে। (যিশাইয় ৩৫:৫; যোহন ৫:২৮, ২৯) তাদের কথাগুলো আমার ভালো লেগেছিল কিন্তু আমি যেহেতু খুব একটা কথা বলতাম না, তাই আলোচনা করা আমার জন্য কঠিন ছিল। যদিও আমি চুপচাপ থাকতাম কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা আমাকে বাইবেল থেকে শেখানোর জন্য সদয়ভাবে এবং ধৈর্য ধরে নিয়মিতভাবে আমার কাছে আসতেন। তারা আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য একটা পর্বতমালা অতিক্রম করে ১০ কিলোমিটারেরও (ছয় মাইল) বেশি পথ পায়ে হেঁটে আসতেন।

আমার সৎ ভাই আমাকে বলতেন যে, এই দম্পতি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরে আসেন কিন্তু তাদের যে অনেক টাকাপয়সা রয়েছে, তা নয়। তবুও, তারা আমার প্রতি সবসময় আগ্রহ দেখাতেন এবং ছোটোখাটো উপহার নিয়ে আসতেন। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, একমাত্র সত্য খ্রিস্টানরাই এই ধরনের আত্মত্যাগের মনোভাব দেখাতে  পারে।

আমি ব্রেইল প্রকাশনার সাহায্যে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করি। যদিও আমি যা শিখছিলাম, সেগুলো বুঝতে পারছিলাম কিন্তু কিছু কিছু বিষয় মন থেকে মেনে নেওয়া আমার পক্ষে কঠিন ছিল। যেমন, আমি এই বিষয়টা মেনে নিতে পারছিলাম না যে, ঈশ্বর ব্যক্তিগতভাবে আমার জন্য চিন্তা করেন আর অন্যেরাও ঈশ্বরের মতো করে আমাকে দেখে। আমি এটা বুঝতে পারতাম, কেন ঈশ্বর সাময়িকভাবে দুষ্টতা থাকার অনুমতি দিয়েছেন, কিন্তু আমি তাঁকে একজন সত্যিকারের প্রেমময় পিতা হিসেবে মেনে নিতে পারছিলাম না।a

শাস্ত্র থেকে আমি যা শিখছিলাম, তা ধীরে ধীরে আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছিল। উদাহরণ স্বরূপ আমি শিখেছিলাম, যারা দুঃখভোগ করে, তাদের জন্য ঈশ্বর গভীরভাবে চিন্তা করেন। দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছিল, এমন উপাসকদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেছিলেন: “সত্যই আমি . . . আপন প্রজাদের কষ্ট দেখিয়াছি, . . . ফলতঃ আমি তাহাদের দুঃখ জানি।” (যাত্রাপুস্তক ৩:৭) আমি যখন যিহোবার কোমল গুণাবলি সম্বন্ধে জানতে পারি, তখন আমি তাঁর কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিই আর ১৯৯৮ সালে একজন যিহোবার সাক্ষি হিসেবে বাপ্তিস্ম নিই।

হুলিও করিও সেই সাক্ষি ভাইয়ের সগ, যার পরিবার তার দেখাশোনা করে

সেই ভাইয়ের সঙ্গে, যার পরিবার আমার দেখাশোনা করে

বাপ্তিস্ম নেওয়ার প্রায় এক বছর পর, আমি এসকুইন্টলা শহরের কাছে অন্ধ ব্যক্তিদের জন্য আয়োজিত একটা কোর্স করি। আমার নিজের শহর থেকে সভায় যাওয়া যে আমার পক্ষে কতটা কষ্টকর ছিল, তা স্থানীয় মণ্ডলীর একজন প্রাচীন ভাই লক্ষ করেন। আপনাদের হয়তো মনে আছে, আমার সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য এক সাক্ষি দম্পতি একটা পর্বতমালা অতিক্রম করে আসতেন। আর আগ্রহজনক বিষয়টা হল, আমার বাড়ি থেকে সবচেয়ে কাছের মণ্ডলী সেই একই পর্বতমালায় অবস্থিত ছিল। কিন্তু আমার পক্ষে এতটা পথ যাত্রা করা সহজ ছিল না। আমাকে সাহায্য করার জন্য সেই প্রাচীন ভাই এসকুইন্টলায় এমন একটা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, যারা আমাকে তাদের ঘরে রাখার এবং মণ্ডলীর সভাগুলোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি ছিলেন। এখনও পর্যন্ত তারা এমনভাবে আমার যত্ন নিয়ে চলেছেন, যেন আমি তাদের পরিবারের এক সদস্য।

মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা আমার প্রতি যে-আন্তরিক ভালোবাসা দেখিয়েছেন, তা আমি বলে শেষ করতে পারব না। এই সমস্ত অভিজ্ঞতা আমাকে এ-বিষয়ে দৃঢ়নিশ্চিত করেছে যে, একজন যিহোবার সাক্ষি হিসেবে আমি সত্য খ্রিস্টানদের মাঝে রয়েছি।—যোহন ১৩:৩৪, ৩৫.

আমি যেভাবে উপকৃত হয়েছি:

আমি আর নিজেকে অযোগ্য বলে মনে করি না বরং আমার সামনে এক আশা রয়েছে। এখন আমার জীবনের এক উদ্দেশ্য রয়েছে। আমি নিজের অক্ষমতার উপর নয় বরং যিহোবার সাক্ষিদের বাইবেল শিক্ষা কাজের একজন পূর্ণসময়ের পরিচারক হিসেবে অন্যদের বাইবেলের মূল্যবান সত্য শেখানোর উপর মনোযোগ দিই। এ ছাড়া, মণ্ডলীতে আমি একজন প্রাচীন হিসেবে সেবা করার সুযোগ পেয়েছি এবং স্থানীয় মণ্ডলীতে জনসাধারণের উদ্দেশে বক্তৃতাও দিয়ে থাকি। এমনকী আমি আঞ্চলিক সম্মেলনে হাজার হাজার লোকের সামনে বাইবেলভিত্তিক বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি।

নিজের বইল বাইবেল ব্যবহার করে হুলিও করিও যিহোবার সাক্ষিদের মডলীতে জনসাধারণের উদশে বক্তৃতা দিচ্ছন

আমি আমার ব্রেইল বাইবেল ব্যবহার করে বক্তৃতা দিচ্ছি

২০১০ সালে আমি মিনিস্টিরিয়াল ট্রেনিং স্কুল (যেটাকে এখন রাজ্যের সুসমাচার প্রচারকদের জন্য স্কুল বলা হয়) থেকে গ্র্যাজুয়েট হই, যেটা এল সালভাডরে আয়োজিত হয়েছিল। এই স্কুল আমাকে আরও ভালোভাবে মণ্ডলীর দায়িত্ব পালন করার জন্য প্রস্তুত করেছে। এই প্রশিক্ষণ আমাকে বুঝতে সাহায্য করেছে যে, যিহোবা আমাকে মূল্যবান বলে মনে করেন ও ভালোবাসেন আর তিনি যেকোনো ব্যক্তিকে তাঁর কাজের জন্য যোগ্য করে তুলতে পারেন।

যিশু বলেছিলেন: “ গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য” বা সুখী “হইবার বিষয়।” (প্রেরিত ২০:৩৫) এখন আমি হৃদয় থেকে বলতে পারি, আমি সুখী এবং আগে অসম্ভব বলে মনে হলেও এখন আমার মনে হয়, আমি অন্যদের সাহায্য করতে পারি। ▪ (w১৫-E ১০/০১)

a কেন ঈশ্বর দুষ্টতা থাকতে দিয়েছেন, সেই বিষয়ে আরও তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১১ অধ্যায় দেখুন।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার