ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w15 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ৩১-৩২
  • ‘সূর্যের নীচে কোনো কিছুই যেন তোমাদের বাধা না দেয়!’

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ‘সূর্যের নীচে কোনো কিছুই যেন তোমাদের বাধা না দেয়!’
  • ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করা
  • সামান্য আয় আর বিচ্ছিন্ন এলাকায় জীবনযাপন তাদের থামাতে পারেনি
২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w15 ১১/১৫ পৃষ্ঠা ৩১-৩২

আমাদের আর্কাইভ থেকে

‘সূর্যের নীচে কোনো কিছুই যেন তোমাদের বাধা না দেয়!’

ফাসর প্যারিসে ১৯৩১ সালের মে মাসের আন্তর্জাতিক সমলনের বিজ্ঞাপন

সময়টা হল ১৯৩১ সালের বসন্ত কাল। বিখ্যাত প্লিয়েল কনসার্ট হলের প্রবেশ পথ ২৩টা দেশ থেকে আসা অতিথিতে পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বড়ো বড়ো ট্যাক্সিক্যাব থেকে হালফ্যাশনের পোশাক পরা যাত্রীরা হলের সামনে নামছে আর খুব দ্রুত হলের মূল জায়গা পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৩,০০০ লোক কোনো কনসার্ট শুনতে নয়, বরং জোসেফ এফ. রাদারফোর্ডের বক্তৃতা শুনতে এসেছে, যিনি সেই সময়ে আমাদের প্রচার কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তার জোরালো বক্তৃতা ফ্রেঞ্চ, জার্মান, পোলিশ এই তিনটা ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছিল। সেই হলের মধ্যে ভাই রাদারফোর্ডের ভরাট কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছিল।

প্যারিসে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলন, ফ্রান্সে সুসমাচার প্রচার কাজে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিল। ভাই রাদারফোর্ড আন্তর্জাতিক শ্রোতাদের—বিশেষভাবে অল্পবয়সি খ্রিস্টানদের—ফ্রান্সে কলপোর্টার (অগ্রগামী) হিসেবে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের একজন অল্পবয়সি, জন কুক কখনো এই উদ্দীপনাদায়ক কথা ভুলে যাবেন না: “অল্পবয়সিরা, সূর্যের নীচে কোনো কিছুই যেন তোমাদের কলপোর্টার হতে বাধা না দেয়!”a

জন কুক, যিনি পরে একজন মিশনারি হয়েছিলেন, তিনি ছাড়া আরও অনেকে এই মাকিদনীয় আহ্বানের প্রতি সাড়া দিয়েছিল। (প্রেরিত. ১৬:৯, ১০) আসলে, ১৯৩০ সালে ফ্রান্সে কলপোর্টারদের সংখ্যা ছিল ২৭ জন, কিন্তু মাত্র এক বছর পর ১৯৩১ সালে তা লক্ষনীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ১০৪ জন হয়ে যায়। যেহেতু প্রথমদিকের এই অগ্রগামীদের মধ্যে বেশিরভাগই ফ্রেঞ্চ বলতে পারতেন না, তাই কীভাবে তারা ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা, সামান্য আয় এবং বিচ্ছিন্ন এলাকায় গিয়ে থাকার মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছিলেন?

ভাষাগত প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করা

অন্য দেশ থেকে আসা কলপোর্টাররা রাজ্যের আশা নিয়ে কথা বলার জন্য টেস্টিমনি কার্ডের (সংক্ষিপ্ত বার্তা লেখা কার্ডের) উপর নির্ভর করতেন। একজন জার্মানভাষী ভাই, যিনি সাহসের সঙ্গে প্যারিসে প্রচার করেছিলেন, তিনি স্মরণ করে বলেন: “আমরা জানতাম আমাদের ঈশ্বর হলেন একজন পরাক্রমী ব্যক্তি। প্রচার করার সময় আমাদের হৃদয় যদি ধুক ধুক করেও থাকে, সেটার কারণ লোকভয় নয় বরং আমরা ভয় পেতাম, আমরা হয়তো এই ছোটো বাক্যটা ভুলে যেতে পারি: ‘ভুলে-ভু লিয়া সেট্‌ ক্যায়াত, সিল ভু প্লে? [আপনি কি দয়া করে এই কার্ড পড়ে দেখবেন?]’ আমাদের কাজ যে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ, সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত ছিলাম।”

কলপোর্টাররা সাইকেল ও মোটরসাইকেল চালাত

প্রথমদিকের কলপোর্টাররা ফ্রান্সে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সাইকেল ও মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছিল

আ্যপার্টমেন্ট বিল্ডিংগুলোতে প্রচার করার সময়, দারোয়ানরা প্রায় সময়ই কলপোর্টারদের দূর দূর করে তাড়িয়ে দিত। একদিন, ইংল্যান্ডের দু-জন বোন একজন মারমুখী দারোয়ানের সামনে পড়েছিলেন। এই দু-জন বোন খুব অল্প ফ্রেঞ্চ জানতেন। দারোয়ান তাদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, তারা কার সঙ্গে দেখা করতে চান। রাগান্বিত দারোয়ানকে শান্ত করতে চেষ্টা করার সময় একজন বোন দরজায় লাগানো একটা এনামেলের প্লেট দেখতে পেয়েছিলেন। সেখানে এই কথা লেখা ছিল: “টুরনে লো বুতোন [বেল বাজান]।” বোন মনে করেছিলেন এটা গৃহকর্তার নাম, তাই হাসিমুখে উত্তর দিয়েছিলেন: “আমরা মাদাম ‘টুরনে লো বুতোনের’ সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।” এই ধরনের হাস্যকর ঘটনা এই উদ্যোগী কলপোর্টারদের তাদের কাজ চালিয়ে যেতে অনেক সাহায্য করেছিল!

সামান্য আয় আর বিচ্ছিন্ন এলাকায় জীবনযাপন তাদের থামাতে পারেনি

উনিশ-শো ত্রিশের দশকে ফ্রান্সের বেশিরভাগ লোকই দরিদ্র ছিল আর অন্য দেশ থেকে আসা কলপোর্টাররা এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। মোনা ব্রসকা নামে একজন ইংরেজিভাষী বোন ও তার অগ্রগামী সঙ্গীর যে-অভিজ্ঞতা হয়েছিল, সেই সম্বন্ধে বোন মোনা বলেন: “আমাদের থাকার জায়গা খুবই সাধারণ ছিল আর শীতকালে ঘর গরম রাখা ছিল একটা বড়ো সমস্যা। আমাদের বাধ্য হয়ে সেই ঘরে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেই থাকতে হতো। সকাল বেলা হাতমুখ ধোয়ার জন্য জগের জলের উপর জমে থাকা পাতলা বরফের স্তর ভেঙে সেই জল ব্যবহার করতে হতো।” সেই সময়ের অগ্রগামীরা কি স্বাচ্ছন্দ্যের অভাবে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েছিলেন? না! অগ্রগামীদের মধ্যে একজন তাদের অনুভূতি সম্বন্ধে সংক্ষেপে সুন্দর মন্তব্য করেছিলেন: “আমাদের কিছুই ছিল না, কিন্তু আমাদের কোনো কিছুরই অভাব হয়নি।”—মথি ৬:৩৩.

পাঁচ জন অগগামী বোন, যারা ১৯৩১ সালে ফাসর প্যারিসে অনুষ্ঠত সমলনে যোগ দিয়েছন

ইংল্যান্ডের অগ্রগামীরা, যারা ১৯৩১ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন

এ ছাড়া, এই সাহসী কলপোর্টারদের বিচ্ছিন্ন এলাকায় থাকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়েছিল। ১৯৩০ এর দশকের শুরুর দিকে, ফ্রান্সে রাজ্য প্রকাশকের সংখ্যা ৭০০-শোর বেশি ছিল না আর তাদের মধ্যে বেশিরভাগই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকা এই কলপোর্টাদেরকে কোন বিষয়টা আনন্দ বজায় রাখতে সাহায্য করেছিল? বোন মোনা, যিনি তার অগ্রগামী সঙ্গীর সঙ্গে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হয়েছিলেন, তিনি বলেন: “সংগঠনের প্রকাশনাগুলো একসঙ্গে নিয়মিতভাবে অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আমরা বিচ্ছিন্ন এলাকায় থাকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সঙ্গে লড়াই করেছিলাম। সেই সময়ে [কোনো পুনর্সাক্ষাৎ অথবা কারো বাড়িতে গিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা] করতে হতো না, তাই আমরা সন্ধ্যা বেলা আমাদের পরিবারের কাছে ও বিশেষভাবে অন্যান্য অগ্রগামীর কাছে আমাদের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এবং পরস্পরকে উৎসাহিত করে চিঠি লেখার সময় পেতাম।”—১ থিষল. ৫:১১.

বিভিন্ন বাধা সত্ত্বেও এই আত্মত্যাগী কলপোর্টাররা এক ইতিবাচক মনোভাব বজায় রেখেছিলেন। ফ্রান্সে অগ্রগামী সেবা করার কয়েক দশক পরে তারা শাখা অফিসে যে-চিঠিগুলো পাঠিয়েছিলেন, সেগুলো থেকে তা বোঝা যায়। আ্যনি ক্রেজিন নামে অভিষিক্ত একজন বোন, তার স্বামীর সঙ্গে ১৯৩১ সাল থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সের সমস্ত জায়গায় গিয়েছেন। তিনি তার অতীতের কথা স্মরণ করে লিখেছিলেন: “আমরা অনেক আনন্দময় ও ঘটনাবহুল জীবন উপভোগ করেছি! আমরা অগ্রগামীরা একতাবদ্ধ একটা দল হিসেবে কাজ করতাম। প্রেরিত পৌল যেমন বলেছিলেন, ‘আমি রোপণ করিলাম, আপল্লো জল সেচন করিলেন, কিন্তু ঈশ্বর বৃদ্ধি দিতে থাকিলেন।’ আমরা যারা বহুবছর আগে লোকেদের সাহায্য করার সুযোগ পেয়েছিলাম, আমরা পৌলের এই কথাগুলোর পরিপূর্ণতা দেখে রোমাঞ্চিত হয়েছি।”—১ করি. ৩:৬.

যারা প্রচার কাজ বৃদ্ধি করতে চায়, তাদের জন্য উত্তরাধিকার হিসেবে অতীতের অগ্রগামীরা সত্যিই ধৈর্য ও উদ্যোগের এক নথি রেখে গিয়েছেন। বর্তমানে, ফ্রান্সে প্রায় ১৪,০০০ নিয়মিত অগ্রগামী রয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই বিদেশিভাষী দল অথবা মণ্ডলীতে সেবা করছে।b তাদের পূর্বসুরিদের মতো, তারাও সূর্যের নীচে কোনো কিছুকেই তাদের বাধা হতে দেয় না!—আমাদের আর্কাইভ থেকে, ফ্রান্স।

a ফ্রান্সে পোলিশ অভিবাসীদের কাছে প্রচার কাজ সম্বন্ধে জানার জন্য ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রহরিদুর্গ পত্রিকায় “যিহোবা আপনাদের সত্য শেখার জন্য ফ্রান্সে নিয়ে এসেছেন” শিরোনামের প্রবন্ধ দেখুন।

b ২০১৪ সালে, ফ্রান্সের শাখা অফিসের তত্ত্বাবধানের অধীনে ৯০০-রও বেশি বিদেশিভাষী মণ্ডলী ও দল ৭০টা ভাষায় আন্তরিক সত্য অন্বেষণকারীদের সাহায্য করেছে।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার