ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w17 অক্টোবর পৃষ্ঠা ২১-২৫
  • সখরিয়কে দেখানো দর্শনগুলো যেভাবে আপনাকে প্রভাবিত করে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • সখরিয়কে দেখানো দর্শনগুলো যেভাবে আপনাকে প্রভাবিত করে
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যারা চুরি করে, তাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বিচার
  • “দিন দিন” আপনার প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করুন
  • যিহোবা দুষ্ট লোকেদের সরিয়ে দেন
  • শুচি লোকেরা যিহোবার সমাদর করে
  • চারটে রথ ও একটা মুকুট আপনাকে সুরক্ষিত রাখে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • সখরিয়ের দর্শন মনে রাখুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২২
  • আপনাদের হস্ত সবল হোক
    ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • হগয় ও সখরিয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
w17 অক্টোবর পৃষ্ঠা ২১-২৫
একটা গুটানো পুতক বাতাসে উড়ছ; একটা পাত্রর মধ্যে একজন মহিলা রয়েছন; দু-জন মহিলা সারস পাখির মতো ডানা মেলে বাতাসে উড়ছন

সখরিয়কে দেখানো দর্শনগুলো যেভাবে আপনাকে প্রভাবিত করে

“তোমরা আমার প্রতি ফির, . . . আমিও তোমাদের প্রতি ফিরিব।” —সখ. ১:৩.

গান সংখ্যা: ৬, ২০

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • চুরি করা সম্বন্ধে যিহোবা কেমন অনুভব করেন?

  • কীভাবে আমরা “দিন দিন” ঈশ্বরের কাছে করা আমাদের উৎসর্গীকরণের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করতে পারি?

  • কীভাবে আমরা দুষ্টতাকে যিহোবার সংগঠন থেকে দূরে রাখার জন্য সাহায্য করতে পারি?

১-৩. (ক) সখরিয় যখন ভবিষ্যদ্‌বাণী করতে শুরু করেছিলেন, তখন যিহোবার লোকেদের পরিস্থিতি কেমন ছিল? (খ) কেন যিহোবা তাঁর লোকেদের তাঁর কাছে ফিরে আসতে বলেছিলেন?

একটা গুটানো পুস্তক বাতাসে উড়ছে, একটা পাত্রের মধ্যে একজন মহিলা রয়েছেন এবং দু-জন মহিলা সারস পাখির মতো ডানা মেলে বাতাসে উড়ছেন। এগুলো হল সেই আগ্রহজনক দর্শনগুলোর মধ্যে কয়েকটা, যেগুলো ভাববাদী সখরিয়কে দেখানো হয়েছিল। (সখ. ৫:১, ৭-৯) কেন যিহোবা তাকে এই অসাধারণ দর্শনগুলো দেখিয়েছিলেন? সেই সময় ইস্রায়েলীয়দের পরিস্থিতি কেমন ছিল? আর কীভাবে আমরা বর্তমানে সেই দর্শনগুলো থেকে উপকার লাভ করতে পারি?

২ সময়টা ছিল খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৭ সাল আর যিহোবার লোকেরা খুবই আনন্দের মধ্যে ছিল। তারা দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে বাবিলের বন্দিত্বে ছিল কিন্তু এখন তাদের মুক্ত করা হয়েছে! তারা যিরূশালেমে ফিরে গিয়ে মন্দির পুনর্নির্মাণ করার এবং সেখানে যিহোবার উপাসনা করার বিষয়ে উৎসুক ছিল। এর এক বছর পর, ইস্রায়েলীয়রা মন্দিরের ভিত্তিমূল স্থাপন করেছিল। লোকেরা খুবই আনন্দিত ছিল এবং তারা ‘এরূপ উচ্চৈঃস্বর করিল যে, তাহার শব্দ দূর হইতে শুনা গেল।’ (ইষ্রা ৩:১০-১৩) কিন্তু, নির্মাণকাজের বিরুদ্ধে বিরোধিতা ধীরে ধীরে প্রবল হয়ে উঠেছিল। এর ফলে, ইস্রায়েলীয়রা এতটাই নিরুৎসাহিত হয়ে গিয়েছিল যে, তারা মন্দির নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দিয়ে নিজেদের বাড়ি নির্মাণ করা ও চাষ করার উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেছিল। যিহোবার মন্দিরের ভিত্তিমূল স্থাপন করার ষোলো বছর পরও সেটার নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়নি। ঈশ্বরের লোকেদের যিহোবার কাছে ফিরে আসার জন্য এবং নিজেদের বিষয়ে চিন্তা করা বন্ধ করার জন্য অনুস্মারকের প্রয়োজন হয়েছিল। যিহোবা চেয়েছিলেন যেন তারা উদ্যোগ ও সাহসের সঙ্গে তাঁর উপাসনা করে।

৩ তাই, খ্রিস্টপূর্ব ৫২০ সালে যিহোবা ভাববাদী সখরিয়কে তাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন। যিহোবা সেই ভাববাদীর মাধ্যমে লোকেদের এই বিষয়টা স্মরণ করিয়ে দিতে চেয়েছিলেন যে, কেন তিনি তাদের বাবিলের বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করেছিলেন। একটা আগ্রহজনক বিষয় হল, সখরিয় নামের অর্থ “যিহোবা স্মরণ করেছেন।” এমনকী যদিও ইস্রায়েলীয়রা তাদের প্রতি করা যিহোবার সমস্ত কাজ ভুলে গিয়েছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও, যিহোবা তাদের স্মরণে রেখেছিলেন। (পড়ুন, সখরিয় ১:৩, ৪.) যিহোবা বিশুদ্ধ উপাসনা পুনর্স্থাপন করার বিষয়ে তাদের সাহায্য করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। কিন্তু, তিনি তাদের এই সাবধানবাণীও দিয়েছিলেন যে, তারা যদি তাঁকে তাদের সর্বোত্তমটা দেয়, একমাত্র তা হলেই তিনি তাদের উপাসনা গ্রহণ করবেন। আসুন, আমরা সখরিয়ের ষষ্ঠ ও সপ্তম দর্শন নিয়ে পরীক্ষা করি। আমরা শিখব যে, কীভাবে যিহোবা ইস্রায়েলীয়দের অনুপ্রাণিত করেছিলেন এবং কীভাবে এই দুটো দর্শন বর্তমানে আমাদের সাহায্য করতে পারে।

যারা চুরি করে, তাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের বিচার

৪. সখরিয় তার ষষ্ঠ দর্শনে কী দেখেছিলেন এবং কেন সেই গুটানো পুস্তকের দু-দিকেই লেখা ছিল? (শুরুতে দেওয়া ১ নং ছবিটা দেখুন।)

৪ সখরিয় ৫ অধ্যায় এক অস্বাভাবিক দর্শন দিয়ে শুরু হয়। (পড়ুন, সখরিয় ৫:১, ২.) সখরিয় দেখেছিলেন, একটা জড়ানো পত্র বা গুটানো পুস্তক বাতাসে উড়ছে। সেই গুটানো পুস্তকটা ৩০ ফুট (৯ মিটার) লম্বা ও ১৫ ফুট (৪.৫ মিটার) চওড়া ছিল। সেই পুস্তকটা খোলা ছিল এবং সেটার মধ্যে একটা বার্তা লেখা ছিল। (সখ. ৫:৩) এটা ছিল বিচারের এক গুরুগম্ভীর বার্তা। প্রাচীন কালে লোকেরা সাধারণত গুটানো পুস্তকের কেবল এক দিকে লিখত। কিন্তু, এই বার্তা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে, সেটা পুস্তকের দু-দিকেই লেখা ছিল।

একজন মহিলা দোকান থেকে সানগ্লাস চুরি করছন

খ্রিস্টানদের অবশ্যই যেকোনো ধরনের চুরি করা এড়িয়ে চলতে হবে (৫-৭ অনুচ্ছেদ দেখুন)

৫, ৬. যেকোনো ধরনের চুরি সম্বন্ধে যিহোবা কেমন অনুভব করেন?

৫ সখরিয় ৫:৩, ৪ পদ পড়ুন। সমস্ত মানুষকেই তাদের কাজের জন্য ঈশ্বরের কাছে নিকাশ দিতে হবে। এটা বিশেষভাবে যিহোবার লোকেদের প্রতি প্রযোজ্য কারণ তারা যিহোবার নাম বহন করে। তারা তাঁকে ভালোবাসে এবং জানে যে, চুরি করা তাঁর নামের উপর দুর্নাম নিয়ে আসে। (হিতো. ৩০:৮, ৯) কেউ কেউ হয়তো মনে করে, চুরি করার পিছনে উত্তম কারণ থাকলে তা করা ভুল নয়। কিন্তু, সেই কারণকে যত উত্তম বলেই মনে হোক না কেন, চুরি করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি দেখান যে, যিহোবা, তাঁর নাম ও তাঁর আইনের চেয়ে তিনি নিজের লোভী আকাঙ্ক্ষাকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন।

৬ আপনি কি লক্ষ করেছেন সখরিয় ৫:৩, ৪ পদ বলে যে, সেই অভিশাপ “চোরের বাটীতে . . . প্রবেশ করিবে” এবং তারপর সেটা “তাহার বাটীর মধ্যে অবস্থিতি করিয়া . . . বাটী বিনাশ করিবে”? তাই, যিহোবা তাঁর লোকেদের যেকোনো মন্দ কাজকে প্রকাশ করে দিতে পারেন এবং তাদের উপর বিচার আনতে পারেন। যে-ব্যক্তি চুরি করেন, তিনি এমনকী পুলিশ, কর্মকর্তা, প্রাচীন অথবা বাবা-মায়ের কাছে সেটা গোপন করতে সক্ষম হলেও, যিহোবার কাছে তা পারেন না। ঈশ্বর এই বিষয়টা নিশ্চিত করবেন যেন যেকোনো ধরনের চুরি প্রকাশ করা হয়। (ইব্রীয় ৪:১৩) আমরা সেই লোকেদের মাঝে থাকতে পেরে কতই-না আনন্দিত, যারা “সর্ব্ববিষয়ে” সৎ থাকার জন্য যথাসাধ্য করে!—ইব্রীয় ১৩:১৮.

৭. উড়তে থাকা গুটানো পুস্তকের দর্শন থেকে আমরা কী শিখি?

৭ যেকোনো ধরনের চুরি যিহোবাকে অসন্তুষ্ট করে। এটা এক সম্মানের বিষয় যে, আমরা সঠিক ও ভুল সম্বন্ধে যিহোবার নীতি জানি এবং এমনভাবে জীবনযাপন করি, যাতে তাঁর নামের উপর দুর্নাম না আসে। এমনটা করার মাধ্যমে আমরা যিহোবার সেই বিচার এড়িয়ে চলতে পারব, যা তিনি অবাধ্য লোকেদের উপর আনতে চলেছেন।

“দিন দিন” আপনার প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করুন

৮-১০. (ক) শপথ কী? (খ) রাজা সিদিকিয় তার কোন শপথ অনুযায়ী কাজ করেননি?

৮ এরপর, উড়তে থাকা গুটানো পুস্তকটা সেই সমস্ত ব্যক্তিদের উদ্দেশে একটা সাবধানবাণী দিয়েছিল, যারা ঈশ্বরের নামে ‘মিথ্যা শপথ’ করে। (সখ. ৫:৪) শপথ হল একটা উক্তি, যা কোনো কিছুর সত্যতাকে নিশ্চিত করে অথবা এটা হল নির্দিষ্ট কিছু করার কিংবা না করার বিষয়ে এক গুরুগম্ভীর প্রতিজ্ঞা।

৯ যিহোবার নামে শপথ করা খুবই গুরুগম্ভীর এক বিষয়। আমরা এই বিষয়টা যিরূশালেমের উপর রাজত্বকারী শেষ রাজা সিদিকিয়ের প্রতি যা ঘটেছিল, তা থেকে জানতে পারি। সিদিকিয় যিহোবার নামে এই শপথ করেছিলেন যে, তিনি বাবিলরাজের বশ্যতা স্বীকার করবেন। কিন্তু, সিদিকিয় সেই প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করেননি। এই কারণে যিহোবা সিদিকিয়ের বিষয়ে বলেছিলেন, “যে রাজা তাহাকে রাজা করিল, যাহার শপথ সে তুচ্ছ করিল, ও যাহার নিয়ম সে ভঙ্গ করিল, সেই রাজার বাসস্থানে ও তাহারই নিকটে বাবিলের মধ্যে সে মরিবে।”—যিহি. ১৭:১৬.

১০ সিদিকিয় যিহোবার নামে দিব্য বা শপথ করেছিলেন এবং যিহোবা আশা করেছিলেন যে, তিনি সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। (২ বংশা. ৩৬:১৩) কিন্তু, সিদিকিয় তার প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করেননি। তিনি বাবিলের কাছ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য মিশরের কাছে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু, মিশর তাকে সাহায্য করতে পারেনি।—যিহি. ১৭:১১-১৫, ১৭, ১৮.

১১, ১২. (ক) আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিজ্ঞা কী? (খ) আমাদের উৎসর্গীকরণের দ্বারা আমাদের দৈনন্দিন জীবন কীভাবে প্রভাবিত হওয়া উচিত?

১১ সিদিকিয়ের প্রতি যা ঘটেছিল, সেখান থেকে আমরা জানতে পারি যে, আমরা যখন কোনো প্রতিজ্ঞা করি, তখন যিহোবা সেটা শোনেন। তাঁকে খুশি করার জন্য আমাদের অবশ্যই নিজেদের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করতে হবে। (গীত. ৭৬:১১) আমরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে-প্রতিজ্ঞা করতে পারি, সেটা হল যিহোবার কাছে নিজেদের উৎসর্গীকরণ। আমরা যখন তাঁর কাছে নিজেদের উৎসর্গ করি, তখন আমরা এই প্রতিজ্ঞা করি যে, আমাদের জীবনে যা-ই ঘটুক না কেন, আমরা তাঁর সেবা করব।

১২ কীভাবে আমরা যিহোবার কাছে করা প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করতে পারি? “দিন দিন” আমাদের ছোটো-বড়ো বিভিন্ন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। আমরা এই পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে যেভাবে মোকাবিলা করি, সেটার মাধ্যমে দেখাই যে, যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কতটা দৃঢ়। (গীত. ৬১:৮) উদাহরণ স্বরূপ, কেউ যদি কর্মস্থলে অথবা স্কুলে আপনার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেখিয়ে প্রেমের ভান করতে শুরু করেন, তা হলে আপনি কী করবেন? আপনি কি সেটা প্রত্যাখ্যান করবেন এবং দেখাবেন যে, আপনি যিহোবার বাধ্য হতে চান? (হিতো. ২৩:২৬) অথবা আপনি যদি আপনার পরিবারে একাই যিহোবার উপাসনা করেন, তা হলে? আপনি কি যিহোবার কাছে সাহায্য চান, যাতে তিনি আপনাকে একজন খ্রিস্টানের মতো আচরণ করে চলতে সাহায্য করেন? আপনি যে-পরিস্থিতির মধ্যেই থাকুন না কেন, আপনি কি তাঁর ভালোবাসা ও নির্দেশনার জন্য প্রতিদিন তাঁকে ধন্যবাদ জানান? আপনি কি প্রতিদিন বাইবেল পড়ার জন্য সময় করে নেন? এক অর্থে, আমরা যখন যিহোবার কাছে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলাম, তখন আমরা এই বিষয়গুলো করার প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। আমরা যখন তাঁর বাধ্য হই এবং তাঁকে আমাদের সর্বোত্তমটা দিই, তখন আমরা যিহোবাকে দেখাই যে, আমরা তাঁকে ভালোবাসি এবং আমরা সত্যিই তাঁর প্রতি উৎসর্গীকৃত। আমাদের জীবনধারার মাধ্যমে আমরা দেখাই যে, আমরা তাঁর উপাসনা করি। আর যেহেতু আমরা যিহোবার প্রতি বিশ্বস্ত, তাই তিনি আমাদের এক অপূর্ব ভবিষ্যৎ প্রদান করার প্রতিজ্ঞা করেছেন।—দ্বিতীয়. ১০:১২, ১৩.

১৩. সখরিয়কে দেখানো ষষ্ঠ দর্শন থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১৩ সখরিয়কে দেখানো ষষ্ঠ দর্শন আমাদের বুঝতে সাহায্য করে যে, আমরা যদি যিহোবাকে ভালোবাসি, তা হলে আমরা চুরি করব না অথবা আমাদের প্রতিজ্ঞা ভেঙে ফেলব না। এ ছাড়া আমরা শিখি যে, এমনকী ইস্রায়েলীয়রা অনেক ভুল করা সত্ত্বেও যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করেছিলেন এবং তাঁর লোকেদের পরিত্যাগ করেননি। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, তারা তাদের শত্রুদের মাঝে খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। যিহোবা নিজের উদাহরণের মাধ্যমে আমাদের শেখান যে, আমাদের নিজেদের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী কাজ করা উচিত। আর আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, তিনি আমাদের তা করতে সাহায্য করবেন। একটা যে-উপায়ে যিহোবা আমাদের সাহায্য করেন, তা হল ভবিষ্যতের বিষয়ে এক আশা প্রদান করার মাধ্যমে। শীঘ্রই তিনি পৃথিবী থেকে সমস্ত দুষ্টতা দূর করে দেবেন। আমরা সখরিয়কে দেখানো পরবর্তী দর্শনের বিষয়ে পড়ার মাধ্যমে এই আশা সম্বন্ধে জানতে পারি।

যিহোবা দুষ্ট লোকেদের সরিয়ে দেন

১৪, ১৫. (ক) সখরিয়কে সপ্তম দর্শনে কী দেখানো হয়েছিল? (শুরুতে দেওয়া ২ নং ছবিটা দেখুন।) (খ) পাত্রের মধ্যে থাকা সেই মহিলা কে এবং কেন স্বর্গদূত সেই পাত্রের মুখ বন্ধ করে দিয়েছিলেন?

১৪ সখরিয় উড়তে থাকা গুটানো পুস্তকটা দেখার পর, একজন স্বর্গদূত তাকে বলেছিলেন: “তুমি চক্ষু তুলিয়া দেখ।” এরপর, সখরিয় একটা পাত্র দেখেছিলেন, যেটাকে বলা হয়েছে ‘ঐফা।’ (পড়ুন, সখরিয় ৫:৫-৮.) সেই পাত্রের উপর সীসার তৈরি একটা গোল ঢাকনা ছিল। সেই ঢাকনাটা যখন সরানো হয়েছিল, তখন সখরিয় দেখেছিলেন যে, সেটার “মধ্যে এক স্ত্রী বসিয়া আছে।” সেই স্বর্গদূত সখরিয়ের কাছে ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, পাত্রের মধ্যে থাকা সেই মহিলা হল “দুষ্টতা।” একটু কল্পনা করুন, সখরিয় যখন দেখেছিলেন যে, সেই মহিলা পাত্র থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছেন, তখন তিনি কতই-না ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন! কিন্তু, স্বর্গদূত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি সেই মহিলাকে পাত্রের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন এবং পাত্রটার মুখ সেটার ভারী ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এই দর্শনের অর্থ কী?

১৫ এই দর্শন আমাদের আস্থা প্রদান করে যে, যিহোবা তাঁর লোকেদের মাঝে কোনো ধরনের দুষ্টতা থাকতে দেবেন না। যিহোবা যদি কোনো মন্দ বিষয় লক্ষ করেন, তা হলে তিনি সেটা সরিয়ে দেওয়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন। (১ করি. ৫:১৩) সেই স্বর্গদূত যেভাবে দ্রুত সেই পাত্রটার মুখ ভারী ঢাকনা দিয়ে বন্ধ করেছিলেন, সেখান থেকে আমরা এই বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি।

সারস পাখির মতো শক্তিশালী ডানা থাকায় দু-জন মহিলা সেই পাত্র ও সেটার মধ্যে থাকা “দুষ্টতাকে” তুলে শিনিয়রে নিয়ে যাচ্ছন

যিহোবা তাঁর উপাসনা শুচি রাখার প্রতিজ্ঞা করেছেন (১৬-১৮ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১৬. (ক) সেই পাত্রটা নিয়ে কী করা হয়েছিল? (শুরুতে দেওয়া ৩ নং ছবিটা দেখুন।) (খ) ডানাওয়ালা সেই মহিলারা পাত্রটাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন?

১৬ এরপর, সখরিয় দু-জন মহিলাকে দেখেছিলেন, যাদের হাড়গিলা বা সারস পাখীর মতো শক্তিশালী ডানা ছিল। (পড়ুন, সখরিয় ৫:৯-১১.) এই মহিলারা পাত্রের মধ্যে থাকা সেই দুষ্ট মহিলার চেয়ে একেবারে আলাদা ছিলেন। তাদের শক্তিশালী ডানা থাকায়, তারা “দুষ্টতা” সমেত সেই পাত্রটা নিয়ে উড়ে গিয়েছিলেন। তারা সেই মহিলাকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিলেন? তারা সেই পাত্রটাকে “শিনিয়র দেশে” অর্থাৎ বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। কেন তারা সেই মহিলাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন?

১৭, ১৮. (ক) কেন বাবিলই ছিল ‘দুষ্টতার আপন স্থান’ বা সেটাকে নিয়ে যাওয়ার সঠিক স্থান? (খ) আপনি কী করার বিষয়ে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ?

১৭ সখরিয়ের দিনের ইস্রায়েলীয়রা বুঝতে পেরেছিল যে, কেন বাবিলই হল ‘দুষ্টতার আপন স্থান’ বা সেটাকে নিয়ে যাওয়ার সঠিক স্থান। তারা জানত যে, বাবিল ছিল অনৈতিকতা ও মিথ্যা উপাসনায় পরিপূর্ণ এক দুষ্ট নগর। সখরিয় ও অন্যান্য যে-যিহুদিরা সেখানে বাস করেছিল, তাদের সেখানকার পৌত্তলিক উপাসনার প্রভাব প্রতিরোধ করার জন্য প্রতিদিন কঠোর প্রচেষ্টা করতে হয়েছিল। তাই, এই দর্শন নিশ্চয়তা প্রদান করেছিল যে, যিহোবা তাঁর উপাসনাকে শুচি রাখবেন।

১৮ এ ছাড়া, এই দর্শন যিহুদিদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল যে, উপাসনাকে বিশুদ্ধ রাখার বিষয়ে তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। ঈশ্বরের লোকেদের মধ্যে দুষ্টতা থাকতে পারে না আর এটাকে থাকতে দেওয়াও হবে না। বর্তমানে, যিহোবা আমাদের তাঁর শুচি সংগঠনে নিয়ে এসেছেন, যেখানে আমরা তাঁর ভালোবাসা ও সুরক্ষা অনুভব করতে পারি। এই সংগঠনকে শুচি রাখার বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব রয়েছে। যিহোবার লোকেদের মধ্যে দুষ্টতা থাকা উচিত নয়।

শুচি লোকেরা যিহোবার সমাদর করে

১৯. সখরিয়কে দেখানো আগ্রহজনক দর্শনগুলো বর্তমানে আমাদের জন্য কোন অর্থ রাখে?

১৯ সখরিয়কে দেখানো ষষ্ঠ ও সপ্তম দর্শন সেই ব্যক্তিদের উদ্দেশে এক গুরুগম্ভীর সাবধানবাণী, যারা মন্দ কাজ করে। যিহোবা দুষ্টতাকে ক্রমাগত চলতে দেবেন না। তাঁর দাস হিসেবে আমাদেরও অবশ্যই দুষ্টতাকে ঘৃণা করতে হবে। এ ছাড়া, এই সাবধানবাণীগুলো আমাদের আশ্বাস দেয় যে, আমরা যদি আমাদের প্রেমময় পিতাকে খুশি করার জন্য কাজ করি, তা হলে তিনি আমাদের অভিশাপ দেবেন না বরং সুরক্ষা ও আশীর্বাদ প্রদান করবেন। আমাদের পক্ষে এই দুষ্ট জগতে শুচি থাকা কঠিন হওয়া সত্ত্বেও যিহোবার সাহায্যে আমরা সফল হতে পারি! কিন্তু, কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, সত্য উপাসনা টিকে থাকবে? আর কীভাবে আমরা মহাক্লেশের আরও নিকটবর্তী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জানতে পারি যে, যিহোবা তাঁর সংগঠনকে সুরক্ষিত রাখবেন? আমরা এই প্রশ্নগুলো নিয়ে পরবর্তী প্রবন্ধে আলোচনা করব।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার