ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৫ ২/১ পৃষ্ঠা ৪-৭
  • এখনই কেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • এখনই কেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়?
  • ১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কেন ইস্রায়েলকে পরিত্যাগ করা হয়
  • খ্রীষ্টজগতের গুরুতর ধর্মভ্রষ্টতা
  • সংস্কার-সাধন অসম্ভব?
  • “উহা হইতে বাহিরে আইস” এখনই সেই সময়
  • জাগতিক ধর্ম কেন শেষ হবে
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৫ ২/১ পৃষ্ঠা ৪-৭

এখনই কেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়?

খ্রীষ্টপূর্ব ষোড়শ শতাব্দীতে, ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের “সকল জাতি অপেক্ষা . . . নিজস্ব অধিকার, . . . ও পবিত্র এক জাতি,” হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন। (যাত্রাপুস্তক ১৯:৫, ৬) তারা অল্পকালের মধ্যে তাদের সেই পবিত্রতা, তাদের ধর্মীয় বিশুদ্ধতা হারায় এবং প্রতিবেশী জাতিদের পৌত্তলিকতা ও বিকৃত কার্যকলাপের দ্বারা নিজেদের দূষিত করে। এইভাবে তারা “শক্তগ্রীব জাতি” হিসাবে নিজেদের প্রকাশিত করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৯:৬, ১৩; ১০:১৬; ১ করিন্থীয় ১০:৭-১১) যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর প্রায় তিনশ বছরেরও বেশি সময় ধরে যিহোবা একাধিক বিচারক ও বিশ্বস্ত পথপ্রদর্শকদের উৎপন্ন করেন, যাদের উচিত ছিল ইস্রায়েলীয়দের সত্য উপাসনায় ফিরিয়ে আনা। কিন্তু, লোকেরা “আপন আপন কর্ম্ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কিছুই ছাড়িত না।”—বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ২:১৭-১৯.

এরপর, সত্য উপাসনায় লোকেদের ফিরে আসতে প্ররোচিত করার জন্য ঈশ্বর বিশ্বস্ত রাজাদের ও ভাববাদীদের উৎপন্ন করেন। ভাববাদী অসরিয়, রাজা আসাকে ও তার সহদেশবাসীদের উৎসাহ দেন যিহোবার অন্বেষণ করতে: “যদি তোমরা তাঁহার অন্বেষণ কর, তবে তিনি তোমাদিগকে তাঁহার উদ্দেশ পাইতে দিবেন; কিন্তু যদি তাঁহাকে ত্যাগ কর, তবে তিনি তোমাদিগকে ত্যাগ করিবেন।” আসা, যিহূদা রাজ্যে ধর্মের সংস্কার-সাধন করেছিলেন। (২ বংশাবলি ১৫:১-১৬) কিন্তু পরবর্তীকালে, তাঁর ভাববাদী যোয়েলের মাধ্যমে ঈশ্বরকে আবার আমন্ত্রণ জানাতে হয়। (যোয়েল ২:১২, ১৩) পরে আবার, সফনিয়, যিহূদা নিবাসীদের উপদেশ দেন, “যিহোবার অন্বেষণ” করতে। অল্পবয়সী রাজা যোশিয় পৌত্তলিকতা ও দূষিত কার্যকলাপকে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যে সংস্কার-সাধন করেন।—সফনিয় ২:৩, NW; ২ বংশাবলি ৩৪:৩-৭.

অনুতাপের এই উপাখ্যানগুলি থাকা সত্ত্বেও, লোকেদের ধর্মীয় পরিস্থিতি ক্রমশই দোষদর্শী হয়ে পড়ে। (যিরমিয় ২:১৩; ৪৪:৪, ৫) পৌত্তলিক কার্যকলাপের দ্বারা দূষিত ধর্মীয় ব্যবস্থাকে যিরমিয় দোষারোপ করেন এবং এটিকে অসংশোধনীয় বলে বর্ণনা দেন: “কূশীয় কি আপন ত্বক্‌, কিম্বা চিতাবাঘ কি আপন চিত্রবিচিত্র পরিবর্ত্তন করিতে পারে? তাহা হইলে দুষ্কর্ম্ম অভ্যাস করিয়াছ যে তোমরা, তোমরাও সৎকর্ম্ম করিতে পারিবে।” (যিরমিয় ১৩:২৩) এই কারণে ঈশ্বর যিহূদা রাজ্যের উপর কঠোর দণ্ড আনেন। যিরূশালেম ও তার মন্দির সা.শ.পূ. ৬০৭ সালে ধ্বংস হয় এবং যারা রক্ষা পেয়েছিল তাদের ক্রীতদাস হিসাবে বাবিলনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে তারা  ৭০ বছর ছিল।

যখন সেই সময় পার হয়ে যায়, তখন ঈশ্বর দয়া দেখান। তিনি রাজা কোরসকে প্ররোচিত করেন ইস্রায়েলীয়দর মুক্তি দিতে, যাদের অবশিষ্টাংশরা যিরূশালেমে ফিরে আসে মন্দির পুনর্গঠন করতে। এত সব হওয়ার পরেও কোন শিক্ষা না পেয়ে, তারা আবার সত্য উপাসনার থেকে সরে যায়, যার ফলে যিহোবা ঈশ্বরকে পুনরায় আমন্ত্রণ জানাতে হয়: “আমার কাছে ফিরিয়া আইস, আমিও তোমাদের কাছে ফিরিয়া আসিব।”—মালাখি ৩:৭.

কেন ইস্রায়েলকে পরিত্যাগ করা হয়

যীশুর দিনে ইস্রায়েলীয়দের ধর্মীয় পরিস্থিতি কেমন ছিল? ভণ্ড ধর্মীয় নেতারা “অন্ধ পথদর্শক” ছিল তারা “মনুষ্যদের আদেশ ধর্ম্মসূত্র বলিয়া” শিক্ষা দিচ্ছিল। ‘তারা নিজেদের পরম্পরাগত বিধির জন্য ঈশ্বরের আদেশকে লঙ্ঘন করছিল।’ লোকেরা “ওষ্ঠাধরে,” ঈশ্বরের সমাদর করেছিল, কিন্তু তাদের হৃদয় ছিল তাঁর কাছ থেকে অনেক দূরে। (মথি ১৫:৩, ৪, ৮, ৯, ১৪) কিন্তু জাতিগতভাবে অনুতপ্ত হওয়ার জন্য তারা কি আর একবার সুযোগ পাবে? না। যীশু বলেছিলেন: “তোমাদের নিকট হইতে ঈশ্বরের রাজ্য কাড়িয়া লওয়া যাইবে, এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হইবে, যে জাতি তাহার ফল দিবে।” তিনি আরও বলেন: “তোমাদের গৃহ,” অর্থাৎ যিরূশালেমের মন্দির, “তোমাদের নিমিত্ত উৎসন্ন পড়িয়া রহিল।” (মথি ২১:৪৩; ২৩:৩৮) তাদের পাপ খুবই গুরুতর ছিল। তারা যীশুকে মশীহ হিসাবে গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং তাকে হত্যা করে ও অত্যাচারী রোমীয় কৈসরকে তাদের রাজা হিসাবে বেছে নেয়।—মথি ২৭:২৫; যোহন ১৯:১৫.

ইস্রায়েলীয়রা কোন মতেই বুঝতে চাইছিল না যে, যে সময়ে যীশু পরিচর্যার কাজ করছিলেন সেই সময়টি ছিল বিচারের সময়। যিরূশালেমের অবিশ্বস্ত অধিবাসীদের উদ্দেশ্যে যীশু বলেছিলেন: “তোমার তত্ত্বাবধানের সময় তুমি বুঝ নাই।”—লূক ১৯:৪৪.

সা.শ. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনে, ঈশ্বর এক নতুন জাতি বা প্রজা গঠন করলেন যারা হল তাঁর পুত্র, যীশু খ্রীষ্টের, আত্মায়-অভিষিক্ত শিষ্যগণ, যাদের সমগ্র বংশ ও জাতি থেকে বেছে নেওয়া হবে। (প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫; ১৫:১৪) পরিশেষে যিহূদী ধর্মীয় ব্যবস্থার সংশোধনের কি কোন সম্ভাবনা ছিল? রোমীয় সৈন্যবাহিনী সা.শ. ৭০ সালে এর জবাব দেয়, যিরূশালেমকে মাটিতে মিশিয়ে দেওয়ার দ্বারা। ঈশ্বর সম্পূর্ণরূপে সেই ধর্মীয় ব্যবস্থাকে পরিত্যাগ করেন।—লূক ২১:৫, ৬.

খ্রীষ্টজগতের গুরুতর ধর্মভ্রষ্টতা

আত্মায়-অভিষিক্ত খ্রীষ্টানেরাও “পবিত্র জাতি, [ঈশ্বরের] নিজস্ব প্রজাবৃন্দ,” হিসাবে গঠিত হয়। (১ পিতর ২:৯; গালাতীয় ৬:১৬) কিন্তু, এমনকি আদি খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীও তাদের ধর্মীয় বিশুদ্ধতাকে বেশি দিন সংরক্ষিত রাখতে পারেনি।

শাস্ত্র গুরুতর ধর্মভ্রষ্টতা অর্থাৎ সত্য বিশ্বাস থেকে সরে যাওয়া সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল। যীশুর দৃষ্টান্তে দেওয়া রূপক শ্যামাঘাস, অর্থাৎ নকল খ্রীষ্টানেরা চাইবে রূপক গম অর্থাৎ সত্য খ্রীষ্টানদের, যারা ঈশ্বরের আত্মার মাধ্যমে অভিষিক্ত তাদের প্রতিরোধ করতে। দৃষ্টান্তটি প্রকাশ করে যে ঈশ্বরের প্রধান শত্রু দিয়াবলের দ্বারা পরিচালিত মিথ্যা খ্রীষ্টতত্ত্বের প্রসার তখনই শুরু হবে যখন “লোকে নিদ্রা”-গত অবস্থায় থাকবে। এটা ঘটেছিল খ্রীষ্টের বিশ্বস্ত প্রেরিতদের মৃত্যু হওয়ার পরবর্তী সময়কালে যখন আধ্যাত্মিক তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব দেখা দিয়েছিল। (মথি ১৩:২৪-৩০, ৩৬-৪৩; ২ থিষলনীকীয় ২:৬-৮) ঠিক যেমন প্রেরিতেরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, অনেক নকল খ্রীষ্টানেরা সন্তর্পণে এই খোঁয়াড়ের মধ্যে নিজেদের স্থান করে নিয়েছিল। (প্রেরিত ২০:২৯, ৩০; ১ তীমথিয় ৪:১-৩; ২ তীমথিয় ২:১৬-১৮; ২ পিতর ২:১-৩) প্রেরিতদের মধ্যে যোহনই ছিলেন শেষ ব্যক্তি যিনি মারা যান। আনুমানিক সা.শ. ৯৮ সালে, তিনি লিখেছিলেন যে প্রেরিতদের যুগের “শেষকাল”, ইতিমধ্যেই উপস্থিত হয়ে গেছে।—১ যোহন ২:১৮, ১৯.

রোমীয় সম্রাট কনস্টান্‌টিনের দ্বারা অনুমোদিত ধর্মীয় ও রাজনীতির মধ্যে যে মৈত্রীর সম্পর্ক তা খ্রীষ্টজগতের আধ্যাত্মিক, শিক্ষাগত ও নৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অধিক মাত্রায় নাটকীয়ভাবে খারাপ করে তুলেছিল। অনেক ইতিহাসবেত্তারা স্বীকার করেন যে “চতুর্থ শতাব্দীতে গির্জার বিজয়ী” হওয়ার ব্যাপারটা, খ্রীষ্টীয় দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে “একটা দুর্ঘটনা” বলা যেতে পারে। ‘খ্রীষ্টজগৎ তার উচ্চ নৈতিক মানকে হারায়’ এবং পৌত্তলিকতার সাথে অন্তর্ভুক্ত নানা কার্যকলাপ ও দর্শন গ্রহণ করে, যেমন “মরিয়মের উপাসনা” ও “সাধুদের” প্রতি সম্মান প্রদর্শন, আর এছাড়াও ত্রিত্বের মতবাদ।

তার এই মিথ্যা জয়লাভের পরে খ্রীষ্টজগতের পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। পোপ ও উপদেষ্টা সমিতির আইনজারি ও মতবাদের ব্যাখ্যা, আর এছাড়াও ধর্মীয় সংক্রান্ত বিচার, জেহাদ, এবং ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্টদের মধ্যে “পবিত্র” যুদ্ধগুলি, এমন একটি ধর্মীয় ব্যবস্থার সৃষ্টি করে যা অসংশোধনীয় হয়ে উঠে।

এক মাত্র অগ্নির দ্বারা পৃথিবী প্রজ্জ্বলিত (ইংরাজি) নামক তার নিজস্ব বইয়ে, উইলিয়াম্‌ ম্যানচেস্টার লেখেন: “পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে পোপেরা রোমীয় সম্রাটদের মতো জীবন যাপন করত। তারা ছিল পৃথিবীর সবচাইতে ধনী ব্যক্তি এবং তারা ও তাদের উচ্চপদস্থ যাজকবৃন্দ গির্জার অন্যান্য কর্মীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করার দ্বারা নিজেদের আরও বেশি সমৃদ্ধশালী করে তুলতো।” এই গুরুতর ধর্মভ্রষ্টতা চলাকালীন ক্ষুদ্র কিছু দল অথবা ব্যক্তিবিশেষেরা সত্য খ্রীষ্টতত্ত্বকে পুনরায় আবিষ্কার করার চেষ্টা করে এবং এইভাবে তারা রূপক গমের বৈশিষ্ট্যগুলিকে প্রতিফলিত করতে থাকে। এর জন্য তাদের প্রায়ই উচ্চমূল্য দিতে হত। সেই একই বইটি বলে: “এক এক সময় মনে হয় যে ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টান্ট গির্জার অন্তর্ভুক্ত, খ্রীষ্টতত্ত্বের প্রকৃত সাধুরা আগুনের তাপে শহিদের মৃত্যু বরণ করতে করতে কালো হয়ে গেছে।” অন্যান্য তথাকথিত সংস্কারকেরা যেমন, মার্টিন লুথার এবং জন ক্যালভিন, কোনক্রমে এক সহনীয় ধর্মীয় ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরেছিলেন যা ক্যাথলিক গির্জার থেকে আলাদা ছিল কিন্তু তখনও এটি তার মূল মতবাদগুলিকে গ্রহণ করেছিল। এছাড়াও তারা গভীরভাবে রাজনৈতিক বিষয়ের সাথেও যুক্ত ছিল।

প্রোটেস্টান্ট ধর্মের ক্ষেত্রে, চেষ্টা চালান হয়েছিল এক তথাকথিত ধর্মীয় পুনর্জাগরণ সৃষ্টি করার। উদাহরণস্বরূপ অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে এই প্রচেষ্টার ফলে বিদেশী মিশনারীদের জোরদার কার্যকলাপ শুরু হয়। কিন্তু এই মেষপালকদের স্বীকারোক্তি অনুসারে, আজকে প্রোটেস্টান্ট সম্প্রদায়ভুক্ত মেষেদের আধ্যাত্মিক অবস্থা একেবারেই উৎসাহজনক নয়। অস্কার কালম্যান নামে এক প্রোটেস্টান্ট ঈশ্বরতত্ত্ববাদী সম্প্রতি স্বীকার করেন যে “এমনকি গির্জার মধ্যেও, বিশ্বাসের অভাব দেখা দিয়েছে।”

ক্যাথলিক গির্জার মধ্যেও সংস্কার ও প্রতিসংস্কারের উন্নতি সাধন করার চেষ্টা চালান হয়। সা.শ. একাদশ থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দীর মধ্যে যাজকদের ব্যাপক প্রসারী কলুষতা ও অফুরন্ত ঐশ্বর্যের মুখোমুখি, এক সন্ন্যাস ব্রত প্রতিষ্ঠিত হয় যা কঠোরভাবে দারিদ্র জীবনধারা পালন করার মানত নেয়। কিন্তু তাদের খুব ঘনিষ্ঠভাবে পর্যাবেক্ষণ করা হয় এবং পণ্ডিতদের কথা অনুসারে, গির্জার যাজকবৃন্দের দ্বারা তাদের দমন করা হয়। এরপর ষোড়শ শতাব্দীতে ট্রেন্ট উপদেষ্টার দ্বারা পরিচালিত বিপক্ষ সংস্কার সাধনের সূচনা ঘটে যার প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রোটেস্টান্ট সংস্কার সাধনের মোকাবিলা করা।

উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে, যখন গির্জা সংক্রান্ত ব্যবস্থার পুনর্প্রতিষ্ঠত করার চেষ্টা চলছিল, তখন ক্যাথলিক গির্জা এক কর্তৃত্বব্যঞ্জক ও বুদ্ধিসূচক মনোভাব গ্রহণ করে। কিন্তু এটা বলা চলে না যে সত্য খ্রীষ্টতত্ত্বকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কোন প্রকৃত সংস্কার-সাধনের চেষ্টা করা হয়েছে। বরঞ্চ এগুলি ছিল জগতের ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে যাজকদের কর্তৃত্বকে বলশালী করার প্রচেষ্টা মাত্র।

আরও সাম্প্রতিককালে, ১৯৬০ এর দশকে, এটা মনে হয়েছিল যে ক্যাথলিক গির্জা সমগ্র গির্জাগোষ্ঠীর উপদেষ্টা, ভ্যাটিক্যান দ্বিতীয়ের সাথে এক ব্যাপক পরিবর্তনের সূচনা করবে। কিন্তু এই তথাকথিত উপদেষ্টা সম্বন্ধীয় পুনরায় নবীকরণ তৎকালীন পোপের দ্বারা স্থগিত হয়ে পড়ে, যাতে করে গির্জার প্রগতিশীল মনোভাবাপন্ন সদস্যদের নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এই সময়টিকে অনেকে বলে থাকে ভয়টিভার পুনর্স্থাপন এবং একটি ক্যাথলিক দল এটিকে “কনস্ট্যান্টিনীয়বাদের এক নতুন আকৃতি” বলে ব্যাখ্যা করে। যেমন একটি জেসুইট্‌ পত্রিকা লা সিভিলটা ক্যাট্যলিকা জানায় যে, ক্যাথলিক গির্জা, অন্যান্য ধর্মের মতো “অন্তর্নিহিত ও বিশ্বব্যাপৃত সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে: অন্তর্নিহিত কারণ এর অন্তর্ভুক্ত হল বিশ্বাসের মূল শিকড়গুলি; বিশ্বব্যাপৃত কারণ এটি খ্রীষ্টতত্ত্বের সমস্ত দিককে অন্তর্ভুক্ত করে।”

খ্রীষ্টজগতের ধর্মগুলি আসলে আদৌ সংস্কারিত হয়নি এবং হবেও না, যেহেতু সত্য খ্রীষ্টতত্ত্বের পুনর্প্রতিষ্ঠান “শস্যচ্ছেদনের,” সময় হবে যখন রূপক গমকে একটি বিশুদ্ধ মণ্ডলীর মধ্যে একত্রিত করা হবে। (মথি ১৩:৩০, ৩৯) খ্রীষ্টান বলে একজন দাবি করুক বা নাই করুক ধর্মের নামে যে সমস্ত অপরাধ ও অন্যায় কাজের তালিকা রয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হতে পারে যে, খ্রীষ্টজগতের কাছ থেকে প্রকৃত সংস্কার-সাধন আশা করা কি বাস্তবধর্মী?

সংস্কার-সাধন অসম্ভব?

প্রকাশিত বাক্য বইটি, অথবা রহস্যোদ্‌ঘাটন, এক রূপক মহাবেশ্যার কথা জানায় যে একটি রহস্যময় নাম ধারণ করে আছে অর্থাৎ “মহতী বাবিল।” (প্রকাশিত বাক্য ১৭:১, ৫) শতাব্দী ধরে বাইবেল পাঠকেরা এই রূপকের রহস্য ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করে এসেছে। অনেকে যাজকদের এই সমৃদ্ধি ও কলুষতা দেখে অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করেছে। অনেকে ভেবেছিল যে মহতী বাবিল গির্জা সম্বন্ধীয় যাজকতন্ত্রের প্রতিনিধিত্ব করছে। এদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন ইয়ান হুস্‌, বোহেমিয়ার একজন ক্যাথলিক পুরোহিত, যাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয় ১৪১৫ সালে এবং আয়েনিও পালারিও, যিনি ছিলেন একজন ইতালি দেশীয় প্রয়োগবাদী, তাকে ১৫৭০ সালে ফাঁসি দেওয়া হয় ও পুড়িয়ে মারা হয়। এরা দুজনে ক্যাথলিক গির্জার সংস্কার করতে বৃথাই চেষ্টা করেছিলেন এই আশা নিয়ে যে এটি “তার পুরনো ঐতিহ্য” ফিরে পাবে।

তারা যা বিশ্বাস করতেন তার বিপরীতে, প্রকাশিত বাক্যের ১৭ ও ১৮ অধ্যায় ইঙ্গিত দেয় যে মহতী বাবিল সমগ্র মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করছে।a এই যৌগিক “মহাবেশ্যা” হল অসংশোধনীয়, কারণ “উহার পাপ আকাশ পর্য্যন্ত সংলগ্ন হইয়াছে।” বস্তুতপক্ষে, এই বিংশ শতাব্দীতে, শুধু মাত্র খ্রীষ্টজগতের অন্তর্ভুক্ত ধর্মগুলিই নয়, কিন্তু বলতে গেলে সমস্ত ধর্মই যুদ্ধেতে রক্তপাত করার জন্য এবং গুরুতর নৈতিক পতন যা সমগ্র মানবজাতিকে উৎপীড়িত করেছে তার জন্য দায়ী। এর ফলস্বরূপ, ঈশ্বর “বাবিলের” ধ্বংস সম্বন্ধে ঘোষণা করেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৮:৫, ৮.

“উহা হইতে বাহিরে আইস” এখনই সেই সময়

বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলির পরিপূর্ণতা দেখায় যে আমাদের দিনেই এই দুষ্ট “বিধিব্যবস্থার শেষ” হবে। (মথি ২৪:৩, NW) যে কেউ আন্তরিকভাবে ঈশ্বরের উপাসনা করতে চায় তারা কখনও নিজস্ব মতবাদ ও ইচ্ছা অনুসারে চলার চেষ্টা করবে না। তাকে অবশ্যই ‘সদাপ্রভুর অন্বেষণ করতে হবে যাবৎ তাঁকে পাওয়া যায়,’ হ্যাঁ, এখনই তা করতে হবে, কারণ “মহাক্লেশ” যার সম্বন্ধে যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তা সন্নিকট। (যিশাইয় ৫৫:৬; মথি ২৪:২১) ইস্রায়েল লোকেদের ক্ষেত্রে যেরকম ঘটেছিল, ঈশ্বর কখনও ধর্মীয় ভণ্ডামীকে প্রশ্রয় দেবেন না যদিও তা প্রাচীনতার দাবি জানায়। যে জাহাজটি ডুবে যাবে সেটিকে মেরামত করার চাইতে, যারা ঈশ্বরের অনুমোদন ও পরিত্রাণ চায় তাদের অবশ্যই অবিলম্বে প্রকাশিত বাক্য ১৮:৪ পদের অনুপ্রাণিত আদেশ মেনে চলতে হবে যা বলে: “হে আমার প্রজাগণ, উহা [মহতী বাবিল] হইতে বাহিরে আইস, যেন উহার পাপ সকলের সহভাগী না হও, এবং উহার আঘাত সকল যেন প্রাপ্ত না হও।”

কিন্তু “উহা হইতে বাহির” হয়ে কোথায় যাবো? আর কোথায় পরিত্রাণ পাওয়া যাবে? ভুল জায়গায় আশ্রয় নেওয়া কি বিপজ্জনক হবে না? ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদিত একমাত্র ধর্মকে কিভাবে চিহ্নিত করা যাবে? এর একমাত্র নির্ভরযোগ্য উত্তরগুলি পাওয়া যাবে ঈশ্বরের বাক্যে। (২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭) যিহোবার সাক্ষীরা আপনাদের আরও গভীরভাবে বাইবেল পরীক্ষা করতে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। আপনি বুঝতে পারবেন যে কাদের “ঈশ্বর আপন নামের জন্য” বেছে নিয়েছেন, যাদের তিনি আসন্ন আপন ক্রোধের দিনে রক্ষা করবেন।—প্রেরিত ১৫:১৪; সফনিয় ২:৩; প্রকাশিত বাক্য ১৬:১৪-১৬.

[পাদটীকাগুলো]

a আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রে শাস্ত্রসম্মতভাবে রূপক মহতী বাবিলকে চিহ্নিত করতে হলে, প্রকাশিত বাক্য—তার মহান পরিপূর্ণতা সন্নিকট! (ইংরাজি) ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটির দ্বারা ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত বইটির ৩৩ থেকে ৩৭ অধ্যায় দেখুন।

[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

যদি আপনার ধর্মীয় জাহাজ ডুবন্ত হয়ে পড়ে, তাহলে সত্য খ্রীষ্টতত্ত্বের সুরক্ষিত জাহাজে আশ্রয় নিন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার