ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৫ ২/১ পৃষ্ঠা ১৩-২২
  • আজকে ‘মহামূল্য মুক্তার’ অনুধাবন করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আজকে ‘মহামূল্য মুক্তার’ অনুধাবন করা
  • ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সত্য আবিষ্কার করার আনন্দ
  • তারা হাল ছেড়ে দেয়নি
  • তারা ‘সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করে’
  • শস্যচ্ছেদন চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাচ্ছে
  • ‘প্রথমে রাজ্যের বিষয় চেষ্টা করিয়া’ চলুন
  • ‘একটী মহামূল্য মুক্তা পাওয়া’
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • তারা “মহামূল্য একটা মুক্তো” খুঁজে পেয়েছে
    বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে
  • যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া ধনের উপর আপনার মনকে কেন্দ্রীভূত রাখুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • ঈশ্বরের রাজ্য—আপনি কি এর অর্থ বুঝতে পারছেন?
    ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৫ ২/১ পৃষ্ঠা ১৩-২২

আজকে ‘মহামূল্য মুক্তার’ অনুধাবন করা

“সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে।”—মথি ২৪:১৪.

১, ২. (ক) যিশুর দিনে যিহুদিরা ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে কেমন বোধ করেছিল? (খ) রাজ্য সম্বন্ধে সঠিক বোধগম্যতা প্রদান করার জন্য যিশু কী করেছিলেন এবং ফল কী হয়েছিল?

যিশু যখন পৃথিবীতে ছিলেন, তখন ঈশ্বরের রাজ্য যিহুদিদের মধ্যে এক গভীর আগ্রহের বিষয় ছিল। (মথি ৩:১, ২; ৪:২৩-২৫; যোহন ১:৪৯) তবে, প্রথমে তাদের অধিকাংশই এটার পরিধি ও ক্ষমতা সম্বন্ধে পুরোপুরিভাবে উপলব্ধি করতে পারেনি; কিংবা তারা এও বুঝতে পারেনি যে, এটা এক স্বর্গীয় সরকার হবে। (যোহন ৩:১-৫) এমনকি যিশুর অনুসারী হয়ে উঠেছিল এমন কয়েক জন ব্যক্তিও পুরোপুরিভাবে বুঝতে পারেনি যে, ঈশ্বরের রাজ্য কী অথবা খ্রিস্টের সহযোগী শাসক হওয়ার আশীর্বাদ লাভ করার জন্য তাদের কী করতে হবে।—মথি ২০:২০-২২; লূক ১৯:১১; প্রেরিত ১:৬.

২ সময় পেরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যিশু ধৈর্য ধরে তাঁর শিষ্যদের আগের প্রবন্ধে আলোচিত মহামূল্য মুক্তার দৃষ্টান্তসহ আরও অনেক বিষয় শিখিয়েছিলেন, তাদেরকে স্বর্গীয় রাজ্যের অনুধাবন করতে গিয়ে প্রাণপণ করার গুরুত্ব সম্বন্ধে দেখিয়েছিলেন। (মথি ৬:৩৩; ১৩:৪৫, ৪৬; লূক ১৩:২৩, ২৪) এটা নিশ্চয়ই তাদের হৃদয়কে গভীরভাবে স্পর্শ করেছিল কারণ তারা শীঘ্রই পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত রাজ্যের সুসমাচারের অক্লান্ত ও সাহসী ঘোষণাকারীতে পরিণত হয়েছিল, যে-সম্বন্ধে প্রেরিত পুস্তকে প্রচুর সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়।—প্রেরিত ১:৮; কলসীয় ১:২৩.

৩. আমাদের সময় সম্বন্ধে বলতে গিয়ে রাজ্যের বিষয়ে যিশু কী বলেছিলেন?

৩ বর্তমান সম্বন্ধে কী বলা যায়? লক্ষ লক্ষ লোককে রাজ্যের অধীনে এক পার্থিব পরমদেশের আশীর্বাদগুলো সম্বন্ধে জানানো হয়েছে। ‘যুগান্ত’ সম্বন্ধে তাঁর মহান ভবিষ্যদ্বাণীতে যিশু নির্দিষ্টভাবে বলেছিলেন: “সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:৩, ১৪; মার্ক ১৩:১০) তিনি এও ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, প্রবল বাধা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলো, এমনকি তাড়না সত্ত্বেও এই বিশাল কাজটা চালিয়ে যেতে হবে। তবে, তিনি এই আশ্বাস দিয়েছিলেন: “যে কেহ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকিবে, সেই পরিত্রাণ পাইবে।” (মথি ২৪:৯-১৩) এই সমস্তকিছুর জন্য সেই ধরনের আত্মত্যাগ ও উৎসর্গীকরণের প্রয়োজন, যা যিশুর দৃষ্টান্তের বণিক প্রদর্শন করেছিলেন। আজকে কি এইরকম ব্যক্তিরা রয়েছে, যারা রাজ্যের অনুধাবন করতে গিয়ে এই ধরনের বিশ্বাস ও উদ্যোগ দেখায়?

সত্য আবিষ্কার করার আনন্দ

৪. আজকে লোকেদের ওপর রাজ্যের সত্যের কোন প্রভাব রয়েছে?

৪ যিশুর দৃষ্টান্তের বণিক যখন এমন কিছু পেয়েছিলেন, যেটাকে তিনি এক “মহামূল্য মুক্তা” হিসেবে উপলব্ধি করেছিলেন, তখন তিনি অতিশয় আনন্দিত হয়েছিলেন। সেই আনন্দ তাকে সেই মুক্তাটা পাওয়ার জন্য তার সাধ্যমতো সমস্তই করতে পরিচালিত করেছিল। (ইব্রীয় ১২:১) একইভাবে আজকে, ঈশ্বর ও তাঁর রাজ্য সম্বন্ধে সত্য লোকেদের আকৃষ্ট করে ও প্রেরণা দেয়। এই বিষয়টা ভাই এ. এইচ. ম্যাকমিলানের মন্তব্যের কথা মনে করিয়ে দেয়, যিনি বিশ্বাস এগিয়ে চলেছে (ইংরেজি) বইয়ে মানবজাতির জন্য ঈশ্বর ও তার উদ্দেশ্য সম্বন্ধে তাঁর ব্যক্তিগত অনুসন্ধানের বিষয়ে লিখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “আমি যা খুঁজে পেয়েছি, তা হাজার হাজার ব্যক্তি প্রতি বছর খুঁজে পাচ্ছে। আর তারা ঠিক আপনার ও আমার মতোই সাধারণ লোক, কারণ তারা সমস্ত জাতি, বর্ণ, জীবনের সমস্ত পটভূমি ও সব বয়সের মধ্যে থেকে আসছে। সত্য কোনো ব্যক্তিদের বাছবিচার করে না। এটি সমস্ত ধরনের লোককে আকৃষ্ট করে।”

৫. দুহাজার চার সালের পরিচর্যা বছরের রিপোর্টে কোন উত্তম ফলগুলো দেখা যায়?

৫ সেই কথাগুলোর সত্যতা দেখা যায় কারণ বছরের পর বছর ধরে লক্ষ লক্ষ সৎহৃদয়ের ব্যক্তি ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচারের দ্বারা পরিচালিত হয়ে যিহোবা ও তাঁর ইচ্ছা পালন করার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করছে। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০০৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত ব্যাপ্ত ২০০৪ সালের পরিচর্যা বছর কোনো ব্যতিক্রম ছিল না। সেই ১২ মাসে ২,৬২,৪১৬ জন ব্যক্তি জলে বাপ্তিস্ম নিয়ে যিহোবার প্রতি তাদের উৎসর্গীকরণের প্রতীককে লোকেদের সামনে প্রকাশ করেছিল। এটা দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৫টা জায়গায় হয়েছিল, যেখানে যিহোবার সাক্ষিরা সমস্ত পটভূমির লোককে সাহায্য করার জন্য এবং সমস্ত জাতি, বংশ ও ভাষার লোককে ঈশ্বরের বাক্য থেকে জীবনদায়ী সত্য জানানোর জন্য ৬০,৮৫,৩৮৭টা গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন করাচ্ছে।—প্রকাশিত বাক্য ৭:৯.

৬. বছরের পর বছর ধরে ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণ কী?

৬ কোন বিষয়টা এই সমস্তকিছু সম্ভবপর করেছে? কোনো সন্দেহ নেই যে, যিহোবা এই সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের তাঁর কাছে আকর্ষণ করেন। (যোহন ৬:৬৫; প্রেরিত ১৩:৪৮, NW) কিন্তু, সেই ব্যক্তিদের নিঃস্বার্থ মনোভাব ও অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে হালকা করে দেখা উচিত নয়, যারা রাজ্যের অনুধাবন করতে গিয়ে নিজেদের পুরোপুরিভাবে বিলিয়ে দিয়েছে। ৭৯ বছর বয়সে ভাই ম্যাকমিলান লিখেছিলেন: “অসুস্থ ও মুমূর্ষু মানবজাতি সম্বন্ধে প্রথম যখন আমি প্রতিজ্ঞাগুলো জেনেছিলাম, তখন থেকে বাইবেলে প্রকাশিত বার্তার প্রতি আমার আশা ম্লান হয়ে যায়নি। সেই মুহূর্ত থেকে আমি বাইবেল কী শিক্ষা দেয় সেই বিষয়ে আরও বেশি জানার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হয়েছি, যাতে আমার মতো যারা সর্বশক্তিমান ঈশ্বর যিহোবা এবং মানবজাতির প্রতি তাঁর উত্তম উদ্দেশ্যগুলো সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করার চেষ্টা করছে, তাদের সাহায্য করতে পারি।”

৭. কোন অভিজ্ঞতা সেই ব্যক্তিদের আনন্দ ও উৎসুক মনোভাবকে প্রদর্শন করে, যারা বাইবেলের সত্য খুঁজে পাচ্ছে?

৭ আজকে যিহোবার দাসদের মধ্যেও উৎসুক মনোভাব দেখা যায়। উদাহরণ হিসেবে, অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা থেকে আসা ড্যানিয়েলার কথা বিবেচনা করুন। তিনি বলেছিলেন: “ছেলেবেলা থেকেই ঈশ্বর আমার সর্বোত্তম বন্ধু। আমি সবসময় তাঁর নাম জানতে চেয়েছিলাম কারণ আমার কাছে ‘ঈশ্বর’ খুব বেশি নৈর্ব্যক্তিক ছিলেন। কিন্তু, আমাকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল আর এরপরই যিহোবার সাক্ষিরা আমার দরজায় এসেছিল। ঈশ্বর সম্বন্ধে আমি যা কিছু জানতে চেয়েছিলাম, তার সবই তারা ব্যাখ্যা করেছিল। আমি শেষ পর্যন্ত সত্য খুঁজে পেয়েছিলাম আর এটা ছিল চমৎকার! আমি এতটাই রোমাঞ্চিত হয়েছিলাম যে, সকলের কাছে প্রচার করতে শুরু করেছিলাম।” তার উদ্যমী মনোভাবের কারণে শীঘ্রই সহপাঠীরা তাকে উপহাস করতে শুরু করেছিল। “তবে এই বিষয়টা আমার কাছে এমন ছিল যেন বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা আমি দেখতে পাচ্ছিলাম,” ড্যানিয়েলা বলে চলেন, “কারণ আমি শিখেছি, যিশু বলেছিলেন যে তাঁর অনুসারীরা তাঁর নামের জন্য ঘৃণিত ও তাড়িত হবে। আমি খুবই সুখী ও বিস্মিত হয়েছিলাম।” শীঘ্রই, ড্যানিয়েলা তার জীবন যিহোবার কাছে উৎসর্গ করেছিলেন, বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন এবং মিশনারি সেবার লক্ষ্যের অনুধাবন করতে শুরু করেছিলেন। বিয়ের পর, ড্যানিয়েলা তার স্বামী হেলমুটের সঙ্গে একত্রে ভিয়েনায় আফ্রিকান, চাইনিজ, ফিলিপিনো ও ভারতীয় লোকেদের কাছে প্রচার করতে শুরু করেছিলেন। ড্যানিয়েলা এবং হেলমুট এখন দক্ষিণপশ্চিম আফ্রিকায় মিশনারি হিসেবে সেবা করছে।

তারা হাল ছেড়ে দেয়নি

৮. উত্তম ফলদায়ক একটা উপায় কী, যেটার মাধ্যমে অনেকে ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা ও তাঁর রাজ্যের প্রতি তাদের আনুগত্য দেখিয়েছে?

৮ বাস্তবিকই, মিশনারি পরিচর্যা হচ্ছে নানা উপায়গুলোর মধ্যে একটা, যার মাধ্যমে আজ যিহোবার লোকেরা ঈশ্বরের প্রতি তাদের ভালবাসা এবং তাঁর রাজ্যের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রদর্শন করে। যারা এই পরিচর্যা গ্রহণ করে, যিশুর দৃষ্টান্তের সেই বণিকের মতো তারা রাজ্যের জন্য দূরবর্তী স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক। অবশ্য, এই মিশনরারিরা রাজ্যের সুসমাচার খুঁজে পাওয়ার জন্য ভ্রমণ করে না; তারা পৃথিবীর সবচেয়ে দূরবর্তী স্থানগুলোতে বসবাসরত লোকেদের কাছে এটি নিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে যিশু খ্রিস্টের শিষ্য হয়ে উঠতে শিক্ষা দিচ্ছে ও সাহায্য করছে। (মথি ২৮:১৯, ২০) অনেক দেশে, তাদের অস্বাভাবিক কষ্ট সহ্য করতে হয়। কিন্তু তাদের ধৈর্য প্রচুররূপে ফল উৎপন্ন করে থাকে।

৯, ১০. মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের মতো দূরবর্তী জায়গাগুলোর মিশনারিরা কোন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতাগুলো উপভোগ করে থাকে?

৯ উদাহরণস্বরূপ, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের উদাহরণ বিবেচনা করুন, যেখানে গত বছর খ্রিস্টের মৃত্যুর স্মরণার্থ সভায় উপস্থিতি ছিল ১৬,১৮৪ জন, যা সেই দেশের রাজ্য প্রকাশকদের চেয়ে প্রায় সাত গুণ বেশি। যেহেতু সেই দেশের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই, তাই লোকেরা সাধারণত ঘরের বাইরে গাছের ছায়ায় বসে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম করে থাকে। অতএব, মিশনারিরাও সাধারণত একইভাবে তাদের কাজ করে থাকে—বাড়ির বাইরে এক ছায়াঘেরা গাছের নিচে বসে বাইবেল অধ্যয়ন করিয়ে থাকে। শুধুমাত্র বাইরে আলো ও ঠাণ্ডাই নয় সেইসঙ্গে আরেকটা সুবিধাও রয়েছে। বাইবেলের প্রতি লোকেদের সহজাত ভালবাসা রয়েছে এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো আলোচনা করা খুবই সাধারণ। প্রায়ই, পথিকরা কী ঘটছে তা লক্ষ করে থাকে এবং তারাও স্বাভাবিকভাবে অধ্যয়নে যোগ দেয়।

১০ এভাবে, একজন মিশনারি যখন ঘরের বাইরে বসে বাইবেল অধ্যয়ন করাচ্ছিলেন, তখন রাস্তার ওপারে বসবাসরত একজন যুবক এগিয়ে আসে এবং বলে যে যেহেতু তার কাছে কেউ আসেনি, তাই সেই মিশনারির উচিত তার কাছে আসা এবং তাকেও বাইবেল অধ্যয়ন করানো। সেই মিশনারি অবশ্যই খুশিমনে রাজি হয়েছিলেন আর ওই যুবক এখন দ্রুত উন্নতি করছে। সেই দেশে পুলিশ প্রায়ই সাক্ষিদের রাস্তায় থামিয়ে থাকে, তবে তাদের ওপর কোনো সমন জারি করতে বা তাদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করতে নয় বরং প্রহরীদুর্গ ও সচেতন থাক! পত্রিকার নতুন সংখ্যা চাইতে এবং বিশেষভাবে তারা উপভোগ করেছে এমন কোনো প্রবন্ধের জন্য ধন্যবাদ জানাতে তাদেরকে তারা থামিয়ে থাকে।

১১. পরীক্ষাগুলো সত্ত্বেও, দীর্ঘসময়ের মিশনারিরা তাদের পরিচর্যা সম্বন্ধে কেমন বোধ করে থাকে?

১১ যারা ৪০ বা ৫০ বছর আগে মিশনারি পরিচর্যা শুরু করেছিল, তাদের মধ্যে অনেকে এখনও বিশ্বস্তভাবে ক্ষেত্রে সেবা করে চলেছে। আমাদের সকলের জন্য বিশ্বাস ও অধ্যবসায়ের কী এক উদাহরণ! বিগত ৪২ বছর ধরে, এক দম্পতি তিনটে দেশে মিশনারি হিসেবে সেবা করেছে। স্বামী বলেন: “সমস্যা এসেছে। উদাহরণস্বরূপ, আমরা ৩৫ বছর ধরে ম্যালেরিয়া রোগের সঙ্গে লড়াই করেছি। তা সত্ত্বেও, আমরা কখনও মিশনারি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অনুশোচনা করিনি।” তার স্ত্রী আরও বলেন: “কৃতজ্ঞ হওয়ার অনেক কারণ সবসময়ই রয়েছে। ক্ষেত্রের পরিচর্যা হল এই ধরনের এক আনন্দ আর তাই বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করা সহজ। আপনি যখন দেখেন যে, ছাত্র-ছাত্রীরা সভাগুলোতে আসে এবং একে অন্যের সঙ্গে পরিচিত হয়, তখন প্রত্যেক বার মনে হয় যেন পরিবারের সদস্যরা একত্রে মিলিত হচ্ছে।”

তারা ‘সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করে’

১২. রাজ্যের মূল্যের প্রতি প্রকৃত উপলব্ধি কীভাবে প্রকাশ করা হয়েছে?

১২ বণিক যখন একটা মহামূল্য মুক্তা খুঁজে পেয়েছিলেন, তখন তিনি সেটা ‘দেখিতে পাইয়া গিয়া [“অবিলম্বে,” NW] সর্ব্বস্ব বিক্রয় করিয়া তাহা ক্রয় করিয়াছিলেন।’ (মথি ১৩:৪৬) মূল্যবান হিসেবে সমাদৃত কিছুকে পরিত্যাগ করতে ইচ্ছুক মনোভাবই হচ্ছে সেই ব্যক্তিদের বৈশিষ্ট্য, যারা রাজ্যের মূল্যকে প্রকৃতই উপলব্ধি করে থাকে। খ্রিস্টের সঙ্গে রাজ্যের গৌরবের অংশী হওয়ার বিশেষ সুযোগ লাভ করবেন এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে প্রেরিত পৌল বলেছিলেন: “বাস্তবিক আমার প্রভু খ্রীষ্ট যীশুর জ্ঞানের শ্রেষ্ঠতা প্রযুক্ত আমি সকলই ক্ষতি বলিয়া গণ্য করিতেছি; তাঁহার নিমিত্ত সমস্তেরই ক্ষতি সহ্য করিয়াছি, এবং তাহা মলবৎ গণ্য করিতেছি, যেন খ্রীষ্টকে লাভ করি।”—ফিলিপীয় ৩:৮.

১৩. চেক প্রজাতন্ত্রের একজন ব্যক্তি কীভাবে রাজ্যের জন্য তার ভালবাসা প্রদর্শন করেছিলেন?

১৩ একইভাবে, আজকে অনেকে রাজ্যের আশীর্বাদ লাভ করার জন্য তাদের জীবনে বড় বড় পরিবর্তন করতে ইচ্ছুক আছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে, চেক প্রজাতন্ত্রের একটা স্কুলের ৬০ বছর বয়স্ক প্রধান শিক্ষক বাইবেল অধ্যয়ন সহায়ক জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে বইটি পান। এটি পড়ার পরই সঙ্গে সঙ্গে তিনি বাইবেল অধ্যয়ন করার জন্য তার এলাকার যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি উত্তম আধ্যাত্মিক অগ্রগতি করেন এবং শীঘ্রই সমস্ত সভাতে উপস্থিত হতে শুরু করেন। কিন্তু মেয়র পদে দাঁড়ানো এবং পরে রাজ্য সভার এক সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে তার পরিকল্পনা সম্বন্ধে কী বলা যায়? তিনি এক ভিন্ন লক্ষ্য—রাজ্য ঘোষণাকারী হিসেবে জীবনের লক্ষ্য—অনুধাবন করা বেছে নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি আমার ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অনেক অনেক বাইবেল সাহিত্য অর্পণ করতে পেরেছিলাম।” তিনি ২০০৪ সালের জুলাই মাসের একটা সম্মেলনে জলে বাপ্তিস্ম নিয়ে যিহোবার কাছে তার উৎসর্গীকরণের প্রতীককে প্রকাশ করেছেন।

১৪. (ক) রাজ্যের সুসমাচার লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিকে কী করতে পরিচালিত করেছে? (খ) আমরা প্রত্যেকে নিজেদের কোন গম্ভীর প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করতে পারি?

১৪ সারা পৃথিবীতে অন্যান্য লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি রাজ্যের সুসমাচারের প্রতি একইভাবে সাড়া দিয়েছে। তারা মন্দ জগৎ থেকে বেরিয়ে এসেছে, তাদের পুরনো ব্যক্তিত্বকে ত্যাগ করেছে, তাদের পূর্বের বন্ধুবান্ধবদের ছেড়ে এসেছে এবং জাগতিক অনুধাবনগুলোকে পরিত্যাগ করেছে। (যোহন ১৫:১৯; ইফিষীয় ৪:২২-২৪; যাকোব ৪:৪; ১ যোহন ২:১৫-১৭) কেন তারা এই সমস্ত করে? কারণ তারা এই বর্তমান বিধিব্যবস্থা দিতে পারে এমন সমস্তকিছুর ঊর্ধ্বে ঈশ্বরের রাজ্যের আশীর্বাদগুলোকে আরও অধিক মূল্যবান বলে গণ্য করে। রাজ্যের সুসমাচার সম্বন্ধে আপনিও কি একইরকম মনে করেন? আপনি কি আপনার জীবনধারা, মূল্যবোধ এবং লক্ষ্যগুলোকে যিহোবা যেভাবে চান, তার সঙ্গে মিল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তনগুলো করতে এটার দ্বারা প্রেরণা পেয়েছেন? তা করা আপনার জন্য এখন ও ভবিষ্যতে প্রচুর আশীর্বাদ নিয়ে আসবে।

শস্যচ্ছেদন চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাচ্ছে

১৫. শেষকালে ঈশ্বরের লোকেরা কী করবে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল?

১৫ গীতরচক লিখেছিলেন: “তোমার বিক্রম-দিনে তোমার প্রজাগণ স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার হইবে।” যারা নিজেদের প্রদান করেছে তাদের অন্তর্ভুক্ত ‘শিশিরতুল্য যুবকেরা’ এবং ‘শুভবার্তার প্রচারিকাগণের মহাবাহিনী।’ (গীতসংহিতা ৬৮:১১; ১১০:৩) এই শেষকালে যিহোবার লোকেদের—নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলের—অধ্যবসায় ও আত্মত্যাগের ফল কী হয়েছে?

১৬. ঈশ্বরের দাসেরা কীভাবে রাজ্য সম্বন্ধে শিখতে অন্যদের সাহায্য করার জন্য তাদের কাছে পৌঁছাচ্ছে, তার একটা উদাহরণ দিন।

১৬ ভারতে, একজন অগ্রগামী বা পূর্ণসময়ের রাজ্য ঘোষণাকারী বোন চিন্তা করেছিলেন যে, সেই দেশে কুড়ি লক্ষেরও বেশি বধির লোকেদের কীভাবে রাজ্য সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করা যেতে পারে। (যিশাইয় ৩৫:৫) তিনি সাংকেতিক ভাষা শেখার জন্য একটা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি অনেক বধির লোককে রাজ্যের আশা সম্বন্ধে জানাতে পেরেছিলেন ও বাইবেল অধ্যয়ন দল গড়ে উঠেছিল। অল্প কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, প্রায় ১২ জনেরও বেশি লোক কিংডম হলের সভাতে আসতে শুরু করেছিল। পরে, একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে সেই অগ্রগামীর সঙ্গে কলকাতার একজন বধির যুবকের দেখা হয়, যার মনে অনেক প্রশ্ন ছিল এবং সে যিহোবার সম্বন্ধে আরও জানার ব্যাপারে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু, একটা সমস্যা ছিল। সেই যুবকের কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য ১,৬০০ কিলোমিটার দূরে কলকাতায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল আর কলকাতায় সাংকেতিক ভাষা জানে এমন কোনো সাক্ষিও ছিল না। আপ্রাণ প্রচেষ্টা করে সে তার বাবাকে কলকাতার পরিবর্তে ব্যাঙ্গালোরেই একটা কলেজে পড়ার অনুমতি দিতে রাজি করায়, যাতে সে তার বাইবেল অধ্যয়ন চালিয়ে যেতে পারে। সে উত্তম আধ্যাত্মিক অগ্রগতি করে আর প্রায় এক বছর পর সে যিহোবার কাছে তার জীবন উৎসর্গ করে। ফলস্বরূপ, সে বেশ কয়েক জন বধির লোকের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করে, যার মধ্যে তার ছেলেবেলার এক বন্ধুও রয়েছে। ভারতের শাখা অফিস এখন অগ্রগামীদের সাংকেতিক ভাষা শেখার জন্য ব্যবস্থা করছে, যাতে তারা এই ক্ষেত্রটাতে সাহায্য করতে পারে।

১৭. এই পত্রিকার ১৯ থেকে ২২ পৃষ্ঠায় দেওয়া ২০০৪ পরিচর্যা বছরের রিপোর্ট সম্বন্ধে কোন বিষয়টা আপনার কাছে বিশেষভাবে উৎসাহজনক মনে হয়, তা বর্ণনা করুন।

১৭ এই পত্রিকার ১৯ থেকে ২২ পৃষ্ঠায় আপনি পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের ২০০৪ পরিচর্যা বছরের ক্ষেত্রের কাজের রিপোর্ট দেখতে পাবেন। এটা পরীক্ষা করার জন্য একটু সময় করে নিন এবং আজকে যিহোবার লোকেরা যে সারা পৃথিবীতে ‘মহামূল্য মুক্তার’ অনুধাবনের ওপর তাদের দৃষ্টিকে পুরোপুরিভাবে কেন্দ্রীভূত রেখেছে, নিজের চোখে সেটার প্রমাণ দেখুন।

‘প্রথমে রাজ্যের বিষয় চেষ্টা করিয়া’ চলুন

১৮. বণিকের নীতিগল্পে যিশু কোন তথ্য অন্তর্ভুক্ত করেননি এবং কেন করেননি?

১৮ যিশুর বলা বণিকের দৃষ্টান্তে আরেকবার ফিরে গিয়ে আমরা দেখতে পাই যে, সেই বণিক তার যা কিছু ছিল সমস্তই বিক্রি করার পর তিনি কীভাবে তার ভরণপোষণ জোগাবেন, সেই বিষয়ে যিশু কোনোকিছুই বলেননি। স্বাভাবিকভাবেই কেউ কেউ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারে: ‘যেহেতু সেই বণিকের এখন কোনো সঞ্চয়ই নেই, তা হলে কীভাবে তিনি খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান লাভ করবেন? সেই মূল্যবান মুক্তা তার জন্য কোন উপকারই বা নিয়ে আসবে?’ মাংসিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেগুলোকে যুক্তিসংগত প্রশ্ন বলে মনে হবে। কিন্তু, যিশু কি তাঁর শিষ্যদের জোরালোভাবে এই অনুরোধ করেননি যে: “কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে ঐ সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া হইবে”? (মথি ৬:৩১-৩৩) নীতিগল্পের মূল বিষয়টা হচ্ছে, ঈশ্বরের প্রতি সর্বান্তঃকরণ ভক্তি ও রাজ্যের জন্য উদ্যোগ প্রদর্শন করা প্রয়োজন। এটার মধ্যে কি আমাদের জন্য কোনো শিক্ষা রয়েছে?

১৯. মহামূল্য মুক্তা সম্বন্ধে যিশুর নীতিগল্প থেকে আমরা কোন মূল শিক্ষা লাভ করতে পারি?

১৯ আমরা চমৎকার সুসমাচার সম্বন্ধে সবেমাত্র জেনে থাকি বা দশকের পর দশক ধরে রাজ্যের অনুধাবন করছি ও অন্যদের এর আশীর্বাদগুলোর বিষয়ে বলে আসছি, যা-ই হোক না কেন, আমাদের অবশ্যই রাজ্যকে সবসময় আমাদের আগ্রহ ও মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু করতে হবে। বর্তমান সময় হচ্ছে কঠিন সময় কিন্তু আমাদের এইরকম বিশ্বাস করার দৃঢ় কারণ রয়েছে যে, আমরা যেটার অনুধাবন করছি সেটা হচ্ছে বাস্তব এবং অতুলনীয়—ঠিক সেই মুক্তার মতো, যা বণিক খুঁজে পেয়েছিলেন। জগতের ঘটনা ও বাইবেলের পরিপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণীগুলো এই বিষয়ে দৃঢ়প্রত্যয় উৎপাদক প্রমাণ জোগায় যে, আমরা ‘যুগান্তে’ বাস করছি। (মথি ২৪:৩) তাই, সেই বণিকের মতো আসুন আমরা ঈশ্বরের রাজ্যের প্রতি সর্বান্তঃকরণ উদ্যোগ দেখাই ও সুসমাচার ঘোষণা করার বিশেষ সুযোগের জন্য আনন্দ করি।—গীতসংহিতা ৯:১, ২.

আপনার কি মনে আছে?

• বছরের পর বছর ধরে কোন বিষয়টা সত্য উপাসকদের মধ্যে বৃদ্ধির ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে?

• মিশনারি হিসেবে সেবা করছে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে কোন মনোভাব দেখা যায়?

• রাজ্যের সুসমাচারের কারণে ব্যক্তিরা কোন পরিবর্তনগুলো করেছে?

• মহামূল্য মুক্তা সম্বন্ধে যিশুর নীতিগল্প থেকে আমরা কোন মূল্যবান শিক্ষা পেতে পারি?

[১৯-২২ পৃষ্ঠার তালিকা]

২০০৪ বিশ্বব্যাপী যিহোবার সাক্ষিদের পরিচর্যা বছরের রিপোর্ট

(বাঁধাই করা খণ্ড দেখুন)

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্র]

“সত্য . . . সমস্ত ধরনের লোককে আকৃষ্ট করে।” —এ. এইচ. ম্যাকমিলান

[১৫ পৃষ্ঠার চিত্র]

ড্যানিয়েলা এবং হেলমুট ভিয়েনার বিদেশিভাষী ক্ষেত্রে প্রচার করেছে

[১৬, ১৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

সেই বণিকের মতো আজকে মিশনারিরাও প্রচুররূপে আশীর্বাদ পাচ্ছে

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

“তোমার প্রজাগণ স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার হইবে”

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার