ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৫ ৩/১ পৃষ্ঠা ১০-১৫
  • আজকের জগতে বিবাহ সফল হতে পারে

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আজকের জগতে বিবাহ সফল হতে পারে
  • ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যে-ফাঁদগুলো এড়াতে হবে
  • তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করবেন না
  • যেকারণে কিছু বিয়ে ভেঙে যায়
  • বাস্তববাদী হোন এবং ভাববিনিময় করুন
  • খ্রিস্টীয় বিয়েকে যেভাবে সফল করে তোলা যায়
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • বিয়ে যদি ভাঙনের মুখে থাকে
    পারিবারিক সুখের রহস্য
  • আপনার বিবাহের এক উত্তমভিত্তি স্থাপন করা
    আপনার পারিবারিক জীবন সুখী করা
  • আপনার বিবাহকে একটি স্থায়ী বন্ধন করে তুলুন
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৫ ৩/১ পৃষ্ঠা ১০-১৫

আজকের জগতে বিবাহ সফল হতে পারে

“প্রেম পরিধান কর; তাহাই সিদ্ধির যোগবন্ধন।”—কলসীয় ৩:১৪.

১, ২. (ক) খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর ক্ষেত্রে কোন বিষয়টা উৎসাহজনক? (খ) এক সফল বিবাহ বলতে কী বোঝায়?

আমরা যখন খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর দিকে তাকাই, তখন সেই সব বিবাহিত দম্পতিদের দেখে কি আনন্দিত হই না, যারা ১০, ২০, ৩০ বছর বা এমনকি তারও বেশি সময় ধরে তাদের সাথিদের প্রতি অনুগত রয়েছে? তারা সুখে-দুঃখে তাদের সাথিদের সঙ্গে সঙ্গে থেকেছে।—আদিপুস্তক ২:২৪.

২ অধিকাংশ ব্যক্তিই স্বীকার করবে যে, তাদের বিবাহ সমস্যাবিহীন ছিল না। একজন মহিলা পর্যবেক্ষক লিখেছিলেন: “সুখী বিবাহিত জীবন ঝামেলামুক্ত নয়। জীবনে সুসময় এবং দুঃসময় উভয়ই রয়েছে . . .। কিন্তু, যেকোনোভাবেই হোক . . . এই ব্যক্তিরা আধুনিক জীবনের [অশান্ত অবস্থা] সত্ত্বেও, বিয়েকে টিকিয়ে রেখেছে।” সফল দম্পতিরা জীবনের বিভিন্ন চাপের কারণে আসা অবশ্যম্ভাবী বিপর্যয় এবং সংকটের সঙ্গে মোকাবিলা করতে শিখেছে, বিশেষ করে তারা যদি সন্তানদের মানুষ করে থাকে। অভিজ্ঞতার আলোকে এই দম্পতিরা শিখেছে যে, প্রকৃত প্রেম “কখনও শেষ হয় না।”—১ করিন্থীয় ১৩:৮.

৩. বিয়ে এবং বিবাহবিচ্ছেদ সম্বন্ধে পরিসংখ্যান কী ইঙ্গিত দেয় আর তা কোন প্রশ্নগুলো উত্থাপন করে?

৩ অন্যদিকে, লক্ষ লক্ষ বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে। একটা রিপোর্ট বলে: “বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সমস্ত বিয়ের মধ্যে অর্ধেক বিয়েই বিবাহবিচ্ছেদের মাধ্যমে শেষ হয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। আর এই [বিবাহবিচ্ছেদের] মধ্যে অর্ধেকই, বিবাহিত জীবনের প্রথম ৭.৮ বছরের মধ্যেই ঘটবে . . .। যে-লোকেরা পুনর্বিবাহ করে তাদের ৭৫ শতাংশের মধ্যে ৬০ শতাংশ লোকই আবার বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাবে।” এমনকি যে-দেশগুলোতে বিবাহবিচ্ছেদের হার অপেক্ষাকৃত কম ছিল, সেখানেও পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, জাপানে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিবাহবিচ্ছেদের হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে এমন কয়েকটা চাপ কী, যে-চাপগুলো মাঝেমধ্যে এমনকি খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতেও দেখা যায়? এই ব্যবস্থাকে ক্রমশ দুর্বল করে দেওয়ার জন্য শয়তানের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, বিবাহকে সফল করার জন্য কীসের প্রয়োজন?

যে-ফাঁদগুলো এড়াতে হবে

৪. কিছু বিষয় কী, যেগুলো একটা বিয়েকে ক্রমশ দুর্বল করে দিতে পারে?

৪ ঈশ্বরের বাক্য আমাদের সেই বিষয়গুলো বুঝতে সাহায্য করে, যেগুলো একটা বিয়েকে দুর্বল করে দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, এই শেষকালে যে-পরিস্থিতিগুলো বিদ্যমান থাকবে, সেই সম্বন্ধে প্রেরিত পৌলের এই কথাগুলো বিবেচনা করুন: “শেষ কালে বিষম সময় উপস্থিত হইবে। কেননা মনুষ্যেরা আত্মপ্রিয়, অর্থপ্রিয়, আত্মশ্লাঘী, অভিমানী, ধর্ম্মনিন্দক, পিতামাতার অবাধ্য, অকৃতজ্ঞ, অসাধু, স্নেহরহিত, ক্ষমাহীন, অপবাদক, অজিতেন্দ্রিয়, প্রচণ্ড, সদ্‌বিদ্বেষী, বিশ্বাসঘাতক, দুঃসাহসী, গর্ব্বান্ধ, ঈশ্বরপ্রিয় নয়, বরং বিলাসপ্রিয় হইবে; লোকে ভক্তির অবয়বধারী, কিন্তু তাহার শক্তি অস্বীকারকারী হইবে; তুমি এরূপ লোকদের হইতে সরিয়া যাও।”—২ তীমথিয় ৩:১-৫.

৫. কেন “আত্মপ্রিয়” হওয়া একজন ব্যক্তির বিবাহকে বিপন্ন করে আর এই সম্বন্ধে বাইবেলের পরামর্শ কী?

৫ আমরা যখন পৌলের কথাগুলো বিশ্লেষণ করি তখন দেখতে পাই যে, তিনি যে-বিষয়গুলো তালিকাভুক্ত করেছিলেন, সেগুলোর অনেক বিষয়ই বৈবাহিক সম্পর্ককে ভেঙে দেওয়ার কারণ হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যে-ব্যক্তিরা “আত্মপ্রিয়” তারা স্বার্থপর এবং অন্যদের প্রতি তাদের বিবেচনার অভাব রয়েছে। যে-স্বামী অথবা স্ত্রীরা কেবল নিজেকেই ভালবাসে তারা নিজের ইচ্ছামতো চলতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। তারা কঠিনমনা এবং অনমনীয়। এইরকম মনোভাব কি এক সুখী বিবাহের ক্ষেত্রে অবদান রাখে? কোনোভাবেই না। প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের ও সেইসঙ্গে বিবাহিত দম্পতিদের বিজ্ঞতার সঙ্গে পরামর্শ দিয়েছিলেন: “[তোমরা] প্রতিযোগিতার কিম্বা অনর্থক দর্পের বশে কিছুই করিও না, বরং নম্রভাবে প্রত্যেক জন আপনা হইতে অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান কর; এবং প্রত্যেক জন আপনার বিষয়ে নয়, কিন্তু পরের বিষয়েও লক্ষ্য রাখ।”—ফিলিপীয় ২:৩, ৪.

৬. কীভাবে অর্থের প্রতি ভালবাসা বৈবাহিক সম্পর্ককে ক্রমশ দুর্বল করে দিতে পারে?

৬ অর্থের প্রতি ভালবাসা স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি করতে পারে। পৌল সাবধান করেছিলেন: “যাহারা ধনী হইতে বাসনা করে, তাহারা পরীক্ষাতে ও ফাঁদে এবং নানাবিধ মূঢ় ও হানিকর অভিলাষে পতিত হয়, সে সকল মনুষ্যদিগকে সংহারে ও বিনাশে মগ্ন করে। কেননা ধনাসক্তি সকল মন্দের একটা মূল; তাহাতে রত হওয়াতে কতক লোক বিশ্বাস হইতে বিপথগামী হইয়াছে, এবং অনেক যাতনারূপ কন্টকে আপনারা আপনাদিগকে বিদ্ধ করিয়াছে।” (১ তীমথিয় ৬:৯, ১০) দুঃখজনক যে, পৌলের সাবধানবাণী আজকে অনেক বিয়ের ক্ষেত্রে সত্য হয়েছে। ধনসম্পদের পিছনে ছোটার কারণে অনেক স্বামী-স্ত্রী তাদের সাথির চাহিদাগুলোকে অবহেলা করে, যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত আবেগগত সমর্থন এবং নিয়মিত ও উষ্ণ সাহচর্যের মতো মৌলিক চাহিদা।

৭. কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোন আচরণ বৈবাহিক আনুগত্যহীনতার দিকে পরিচালিত করেছে?

৭ এ ছাড়া, পৌল এও বলেছিলেন যে এই শেষকালে কিছু ব্যক্তি “অসাধু, স্নেহরহিত, ক্ষমাহীন” হবে। বৈবাহিক অঙ্গীকার এক আনুষ্ঠানিক প্রতিজ্ঞা, যেটার এক স্থায়ী বন্ধনের দিকে পরিচালিত করা উচিত, বিশ্বাসঘাতকতার দিকে নয়। (মালাখি ২:১৪-১৬) তা সত্ত্বেও, কেউ কেউ এমন ব্যক্তিদের প্রতি প্রণয়শীল মনোযোগ দিয়েছে, যারা তাদের স্বামী বা স্ত্রী নয়। ৩০ এর কোঠায় বয়স এমন একজন স্ত্রী, যার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছে, তিনি জানান যে এমনকি তাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার আগেও তার স্বামী অন্য মহিলাদের প্রতি অত্যন্ত অন্তরঙ্গভাবে, অতিরিক্ত অনুরাগ দেখিয়ে আচরণ করত। তার স্বামী এই বিষয়টা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছিল যে, একজন বিবাহিত পুরুষের জন্য কোনটা অনুপযুক্ত আচরণ। এইরকম ঘটতে দেখে সেই স্ত্রী খুবই আঘাত পেয়েছিলেন এবং যে-ঝুঁকিপূর্ণ পথের দিকে তার স্বামী ধাবিত হচ্ছিল, সেই সম্বন্ধে তাকে কৌশলে সাবধান করার চেষ্টা করেছিলেন। তা সত্ত্বেও, তিনি পারদার্যে জড়িয়ে পড়েছিলেন। যদিও সদয়ভাবে সাবধানবাণী দেওয়া হয়েছিল, তবুও দোষী সাথি তাতে মনোযোগ দিতে চাননি। তিনি কোনোকিছুকে পরোয়া না করে ফাঁদে পা দিয়েছিলেন।—হিতোপদেশ ৬:২৭-২৯.

৮. কী ব্যভিচারের দিকে পরিচালিত করতে পারে?

৮ ব্যভিচারের বিষয়ে বাইবেল কতই না স্পষ্টভাবে সাবধান করে! “পরদারগামী পুরুষ বুদ্ধিবিহীন, সে তাহা করিয়া আপনার প্রাণ আপনি নষ্ট করে।” (হিতোপদেশ ৬:৩২) সাধারণত, ব্যভিচার হঠাৎ করে, ঝোঁকের বশে করা কোনো কাজ নয়। বাইবেল লেখক যাকোব যেমন উল্লেখ করেছেন, ব্যভিচারের মতো কোনো পাপ সাধারণত তখনই ঘটে থাকে যখন সেই সম্বন্ধে আগে থেকে চিন্তা প্রকাশ করা হয় ও ক্রমাগত করেই চলে। (যাকোব ১:১৪, ১৫) দোষী স্বামী বা স্ত্রী ধীরে ধীরে সাথির প্রতি আর অনুগত থাকেন না, যার প্রতি তিনি জীবনভর বিশ্বস্ত থাকবেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। যিশু বলেছিলেন: “তোমরা শুনিয়াছ, উক্ত হইয়াছিল, ‘তুমি ব্যভিচার করিও না’। কিন্তু আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।”—মথি ৫:২৭, ২৮.

৯. হিতোপদেশ ৫:১৮-২০ পদে কোন বিজ্ঞ পরামর্শ পাওয়া যায়?

৯ তাই, বিজ্ঞ এবং অনুগত কাজ হল সেটাই, যে-সম্বন্ধে হিতোপদেশের বইয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে: “তোমার উনুই ধন্য হউক, তুমি আপন যৌবনের ভার্য্যায় আমোদ কর। সে প্রেমিকা হরিণী ও কমনীয়া বাতপ্রমীবৎ; তাহারই কুচযুগ দ্বারা তুমি সর্ব্বদা আপ্যায়িত হও, তাহার প্রেমে তুমি সতত মোহিত থাক। বৎস, তুমি পরকীয়া স্ত্রীতে কেন মোহিত হইবে? বিজাতীয়ার বক্ষ কেন আলিঙ্গন করিবে?”—হিতোপদেশ ৫:১৮-২০.

তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করবেন না

১০. ভাবি সাথি সম্বন্ধে জানার জন্য সময় করে নেওয়া কেন বিজ্ঞতার কাজ?

১০ বিবাহে তখনই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে, যখন কোনো দম্পতি তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করে। তাদের বয়স হয়তো খুব কম হতে পারে বা তারা খুব বেশি অভিজ্ঞ না-ও হতে পারে। অথবা তারা হয়তো একে অপরকে—তাদের পছন্দ-অপছন্দ, তাদের জীবনের লক্ষ্য, তাদের পারিবারিক পটভূমি—ভালভাবে জানার জন্য খুব বেশি সময় নেয় না। ধৈর্য ধরা, ভাবি সাথি সম্বন্ধে জানার জন্য সময় নেওয়া বিজ্ঞতার কাজ। ইস্‌হাকের ছেলে যাকোবের কথা চিন্তা করুন। রাহেলকে বিয়ে করার জন্য অনুমতি পাওয়ার আগে তাকে তার ভাবি শ্বশুরের জন্য সাত বছর কাজ করতে হয়েছিল। তিনি তা করতে রাজি হয়েছিলেন কারণ তার অনুভূতি কেবল শারীরিক আকর্ষণের প্রতি নয় কিন্তু প্রকৃত প্রেমের ওপর ভিত্তি করে ছিল।—আদিপুস্তক ২৯:২০-৩০.

১১. (ক) বৈবাহিক বন্ধন কোন বিষয়কে একত্রিত করে? (খ) বিবাহের মধ্যে বিজ্ঞতার সঙ্গে কথা বলা কেন অতীব গুরুত্বপূর্ণ?

১১ বিয়ে কেবল রোমান্টিক সম্পর্কের চেয়ে আরও বেশি কিছু। বৈবাহিক বন্ধন আলাদা পারিবারিক পটভূমির দুজন ব্যক্তিকে একত্রিত করে, যাদের ব্যক্তিত্ব ও আবেগগত চাহিদা স্বতন্ত্র এবং প্রায়ই ভিন্ন শিক্ষাগত পটভূমি থাকে। কখনও কখনও এটা দুটো সংস্কৃতিকে এমনকি দুটো ভাষাকে সংযুক্ত করে। অন্ততপক্ষে, এটা এমন দুটো অভিমত প্রকাশকারী কণ্ঠস্বরকে একত্রিত করে, যাদের সমস্ত বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য করার ক্ষমতা রয়েছে। এই দুটো কণ্ঠস্বর বৈবাহিক বন্ধনের এক অপরিহার্য অংশ। সেগুলো হয়তো সবসময় সমালোচনা এবং অভিযোগ করতে পারে অথবা আন্তরিকভাবে উৎসাহ দিতে এবং গঠনমূলক হতে পারে। হ্যাঁ, আমাদের কথার মাধ্যমে আমরা আমাদের সাথিকে হয় কষ্ট দিতে পারি না হয় আরোগ্য করতে পারি। অসংযত কথাবার্তা একটা বিয়েকে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।—হিতোপদেশ ১২:১৮; ১৫:১, ২; ১৬:২৪; ২১:৯; ৩১:২৬.

১২, ১৩. বিবাহ সম্বন্ধে কোন বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গি রাখার বিষয়ে উৎসাহিত করা হয়েছে?

১২ তাই, ভাবি সাথিকে সত্যিকারভাবে জানার জন্য সময় নেওয়া বিজ্ঞতার কাজ। একজন অভিজ্ঞ খ্রিস্টান বোন একবার বলেছিলেন: “আপনি যখন একজন ভাবি বিবাহ সাথিকে দেখেন, তখন কমপক্ষে দশটা মৌলিক চাহিদা সম্বন্ধে চিন্তা করুন, যা আপনি তার মধ্যে দেখতে চান। আপনি যদি কেবল সাতটা খুঁজে পান, তা হলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘যে-তিনটে বিষয় বাদ পড়েছে, সেগুলো কি আমি উপেক্ষা করতে রাজি আছি? আমি কি প্রতিদিন সেই অভাবগুলো সহ্য করতে পারব?’ আপনার যদি সন্দেহ থাকে, তা হলে পিছিয়ে আসুন এবং আবারও চিন্তা করুন।” অবশ্য, আপনাকে বাস্তববাদী হতে হব। আপনি যদি বিয়ে করতে চান, তা হলে জেনে রাখুন যে আপনি কখনও নিখুঁত সাথি খুঁজে পাবেন না। আবার সেইসঙ্গে আপনি যে-ব্যক্তিকে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করবেন তিনিও এক নিখুঁত সাথি পাবেন না!—লূক ৬:৪১.

১৩ বিয়ের সঙ্গে ত্যাগস্বীকার জড়িত। পৌল এই বিষয়টা তুলে ধরেছিলেন, যখন তিনি বলেছিলেন: “আমার বাসনা এই যে, তোমরা চিন্তা-রহিত হও। যে অবিবাহিত, সে প্রভুর বিষয় চিন্তা করে, কিরূপে প্রভুকে সন্তুষ্ট করিবে। কিন্তু যে বিবাহিত, সে সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিরূপে স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করিবে; তাই তাহার বিভিন্নতা ঘটে। আর অবিবাহিতা স্ত্রী ও কুমারী প্রভুর বিষয় চিন্তা করে, যেন দেহে ও আত্মাতে পবিত্রা হয়; কিন্তু বিবাহিতা স্ত্রী সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিরূপে স্বামীকে সন্তুষ্ট করিবে।”—১ করিন্থীয় ৭:৩২-৩৪.

যেকারণে কিছু বিয়ে ভেঙে যায়

১৪, ১৫. কী বিবাহবন্ধনকে দুর্বল করে দিতে পারে??

১৪ সম্প্রতি একজন খ্রিস্টান মহিলা বিবাহবিচ্ছেদের কারণে মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন, যখন তার স্বামী বিবাহের ১২ বছর পর তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন এবং আরেকজন মহিলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বিচ্ছেদের আগে তিনি কি কোনো সাবধানবাণীমূলক চিহ্ন লক্ষ করেছিলেন? তিনি বলেন: “আমার স্বামী এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, সে আর প্রার্থনা করত না। খ্রিস্টীয় সভা এবং প্রচার কাজ বাদ দেওয়ার বিষয়ে সে ছোটোখাটো অজুহাত দাঁড় করাত। সে খুবই ব্যস্ত নতুবা ক্লান্ত হওয়ার কথা বলে আমার সঙ্গে সময় কাটাতে চাইত না। আমার সঙ্গে কথাও বলত না। আধ্যাত্মিক বিষয়গুলো বাদ হয়ে গিয়েছিল। এটা খুবই লজ্জাজনক এক বিষয়। সে আর সেই ব্যক্তি ছিল না যাকে আমি বিয়ে করেছিলাম।”

১৫ অন্যেরা একইরকম লক্ষণ দেখেছে বলে রিপোর্ট করে, যেগুলোর অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিগত বাইবেল অধ্যয়ন, প্রার্থনা অথবা খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে উপস্থিত হওয়াকে অবহেলা করা। অন্য কথায়, অবশেষে বিবাহ সাথিকে ছেড়ে চলে গিয়েছে এমন অনেক ব্যক্তি যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে দুর্বল হয়ে যেতে দিয়েছে। এর ফলে, তাদের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি ম্লান হয়ে গিয়েছে। তাদের কাছে যিহোবা আর জীবন্ত ঈশ্বর ছিলেন না। ধার্মিকতার প্রতিজ্ঞাত নতুন জগৎ তাদের কাছে আর বাস্তব ছিল না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই আধ্যাত্মিক দুর্বলতা এমনকি অবিশ্বস্ত বিবাহিত সাথির বিয়ের বাইরে সম্পর্ক গড়ে তোলার আগেই ঘটেছিল।—ইব্রীয় ১০:৩৮, ৩৯; ১১:৬; ২ পিতর ৩:১৩, ১৪.

১৬. কী একটা বিয়েকে শক্তিশালী করে?

১৬ এর বৈসাদৃশ্যে, অত্যন্ত সুখী এক দম্পতি তাদের বিবাহের সফলতার কারণ দৃঢ় আধ্যাত্মিক বন্ধনের ওপর আরোপ করেছে। তারা একসঙ্গে প্রার্থনা করে এবং একসঙ্গে অধ্যয়ন করে। স্বামী বলেন: “আমরা একসঙ্গে বাইবেল পড়ি। আমরা একসঙ্গে পরিচর্যায় যাই। আমরা একসঙ্গে অন্যান্য কাজ করা উপভোগ করি।” শিক্ষাটা স্পষ্ট: যিহোবার সঙ্গে এক উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখা বিবাহের দৃঢ়তার ক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখবে।

বাস্তববাদী হোন এবং ভাববিনিময় করুন

১৭. (ক) কোন দুটো বিষয় এক সফল বিবাহে অবদান রাখে? (খ) খ্রিস্টীয় প্রেমকে পৌল কীভাবে বর্ণনা করেছেন?

১৭ আরও দুটো বিষয় এক সফল বিবাহে অবদান রাখে: খ্রিস্টীয় প্রেম এবং ভাববিনিময়। দুজন ব্যক্তি যখন একে অপরের প্রেমে পড়ে, তখন পরস্পরের দোষগুলোকে উপেক্ষা করার প্রবণতা থাকে। সেই দম্পতি হয়তো প্রেমের উপন্যাসগুলোতে যা পড়েছে বা সিনেমাগুলোতে যা দেখেছে, সেটার ওপর ভিত্তি করে অতিরিক্ত প্রত্যাশা নিয়ে বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করে। কিন্তু, সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই দম্পতিকে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয়। তখন ছোটোখাটো দোষ অথবা সামান্য অস্বস্তিকর অভ্যাসগুলো বিরাট সমস্যায় পরিণত হতে পারে। যদি তা-ই হয়ে থাকে, তা হলে খ্রিস্টানদের আত্মার ফল দেখাতে হবে, যার একটা হল প্রেম। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) প্রেম বাস্তবিকই খুবই শক্তিশালী—রোমান্টিক প্রেম নয় কিন্তু খ্রিস্টীয় প্রেম। পৌল সেই ধরনের খ্রিস্টীয় প্রেমকে এভাবে বর্ণনা করেছেন: “প্রেম চিরসহিষ্ণু, . . . মধুর, . . . [এটি] স্বার্থ চেষ্টা করে না, রাগিয়া উঠে না, অপকার গণনা করে না, . . . সকলই বহন করে, সকলই বিশ্বাস করে, সকলই প্রত্যাশা করে, সকলই ধৈর্য্যপূর্ব্বক সহ্য করে।” (১ করিন্থীয় ১৩:৪-৭) স্পষ্টতই, প্রকৃত প্রেম মানুষের দোষত্রুটিগুলোর ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে থাকে। বস্তুতপক্ষে, এটা কোনো সিদ্ধতা আশা করে না।—হিতোপদেশ ১০:১২.

১৮. কীভাবে ভাববিনিময় একটা সম্পর্ককে শক্তিশালী করতে পারে?

১৮ এ ছাড়া, ভাববিনিময়ও গুরুত্বপূর্ণ। যত বছরই কেটে যাক না কেন, বিবাহিত দম্পতিদের পরস্পরের সঙ্গে কথা বলা এবং সত্যিকারভাবে পরস্পরের কথা শোনা উচিত। একজন স্বামী বলেন: “আমরা দুজনেই খোলাখুলিভাবে আমাদের অনুভূতি প্রকাশ করি তবে বন্ধুত্বপূর্ণ উপায়ে।” অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে একজন স্বামী অথবা স্ত্রী কেবল যা বলা হয় তা-ই নয় কিন্তু যা বলা হয় না সেটাও শুনতে শেখে। অন্য কথায়, বছর গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক সুখী বিবাহিত দম্পতি অব্যক্ত চিন্তাভাবনা অথবা অপ্রকাশিত অনুভূতি বুঝতে শেখে। কিছু স্ত্রী বলেছেন যে, তাদের স্বামীরা আসলে তাদের কথা শোনে না। আবার কিছু স্বামী অভিযোগ করেছে যে, তাদের স্ত্রীরা একেবারে অনুপযুক্ত সময়ে ভাববিনিময় করতে চায়। ভাববিনিময়ের সঙ্গে সমবেদনা এবং বোধগম্যতা জড়িত। কার্যকারী ভাববিনিময় স্বামী এবং স্ত্রী উভয়ের জন্যই উপকারী।—যাকোব ১:১৯.

১৯. (ক) দোষস্বীকার করা কেন কঠিন হতে পারে? (খ) কী আমাদের দোষস্বীকার করতে পরিচালিত করবে?

১৯ ভাববিনিময় কখনো কখনো দোষস্বীকার করাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটা সবসময় সহজ নয়। নিজের ভুল স্বীকার করার জন্য নম্রতার প্রয়োজন। কিন্তু, বিবাহে সেটা কতই না পার্থক্য এনে দেয়! অকপটভাবে দোষস্বীকার করা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাব্য কারণ দূর করতে পারে এবং প্রকৃত ক্ষমা ও সমস্যা সমাধানের পথ খুলে দেয়। পৌল বলেছিলেন: “পরস্পর সহনশীল হও, এবং যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর; প্রভু [“যিহোবা,” NW] যেমন তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন, তোমরাও তেমনি কর। আর এই সকলের উপরে প্রেম পরিধান কর; তাহাই সিদ্ধির যোগবন্ধন।”—কলসীয় ৩:১৩, ১৪.

২০. একান্তে এবং অন্যদের সামনে বিবাহ সাথির সঙ্গে একজন খ্রিস্টানের কেমন আচরণ করা উচিত?

২০ এ ছাড়া, একটা বিয়েতে পারস্পরিক সমর্থনও অতীব গুরুত্বপূর্ণ। একজন খ্রিস্টান স্বামী এবং স্ত্রীর উচিত একে অপরের ওপর নির্ভর করা এবং পরস্পরের ওপর ভরসা রাখা। কোনোভাবেই অপরের মর্যাদাহানি করা অথবা অন্যান্য উপায়ে সাথির আত্মবিশ্বাসকে হ্রাস করা উচিত নয়। আমরা প্রেমের সঙ্গে আমাদের বিবাহ সাথিকে প্রশংসা করি; আমরা রূঢ়ভাবে তাদের সমালোচনা করি না। (হিতোপদেশ ৩১:২৮খ) আমরা কখনোই তাদেরকে মূর্খ এবং বিবেচনাহীন কৌতুকের পাত্র বানিয়ে ছোট করি না। (কলসীয় ৪:৬) এই ধরনের পারস্পরিক সমর্থন নিয়মিত স্নেহের অভিব্যক্তিগুলোর মাধ্যমে শক্তিশালী হয়। সামান্য স্পর্শ অথবা খুব আস্তে বলা স্নেহপূর্ণ কথা প্রকাশ করতে পারে: “আমি এখনও তোমাকে ভালবাসি। তোমাকে পেয়ে আমি সুখী।” এগুলো হল কিছু বিষয়, যা সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলতে এবং আজকের জগতে বিবাহকে সফল হতে সাহায্য করতে পারে। অন্যান্য বিষয়ও রয়েছে আর পরের প্রবন্ধ এই সম্বন্ধে আরও শাস্ত্রীয় নির্দেশাবলি দেবে যে, কীভাবে একটা বিবাহকে সফল করা যায়।a

[পাদটীকা]

a আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত আপনার পারিবারিক জীবন সুখী করা বইটি দেখুন।

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

• কিছু বিষয় কী, যেগুলো একটা বিয়েকে ক্রমশ দুর্বল করে দিতে পারে?

• তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করা কেন বিজ্ঞতার কাজ নয়?

• আধ্যাত্মিকতা কীভাবে একটা বিয়েকে প্রভাবিত করে?

• কোন বিষয়গুলো একটা বিয়েকে স্থায়ী রাখতে সাহায্য করে?

[১২ পৃষ্ঠার চিত্র]

বিবাহ কেবল রোমান্টিক সম্পর্কের চেয়ে আরও বেশি কিছু

[১৪ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যিহোবার সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক এক বিবাহিত দম্পতিকে বিবাহ সফল করতে সাহায্য করে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার