ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০৬ ১২/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১১
  • বৈচিত্র্যময় হাইতিতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়া

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বৈচিত্র্যময় হাইতিতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়া
  • ২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • এক মফস্‌সল শহরে প্রচার করা
  • বংবেরঙের চিত্রকর্মে সুসমাচার
  • স্কুলে সুসমাচার জানানো
  • ক্রিওল ভাষা ব্যবহার করা
  • জেলে বন্দিরত লোকেদের কাছে সুসমাচার জানানো
  • সচেতন থাক! পত্রিকা অনেকের কাছে সুসমাচার পৌঁছে দেয়
২০০৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০৬ ১২/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১১

বৈচিত্র্যময় হাইতিতে সুসমাচার ছড়িয়ে দেওয়া

হাইতি ও ডোমিনিকান রিপাবলিক দুটোই গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দ্বীপ হিসপানিওলাতে অবস্থিত, যেখানে ক্যারিবিয়ানের উচ্চতম পাহাড়গুলো রয়েছে। বেশ কয়েকটা পাহাড়ের চূড়া ২,৪০০ মিটারের চেয়েও বেশি উঁচু। “ঠাণ্ডার” সময়ে উচ্চভূমির ছোট ছোট পুকুরে হয়তো জমাটবদ্ধ ও পাতলা বরফের স্তর পড়ে।

হাইতির দক্ষিণাঞ্চলের পাহাড় ও উপত্যকাগুলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘন অরণ্যে আবৃত। অন্যান্য জায়গার পাহাড়গুলোর অধিকাংশই ফাঁকা, নিষ্ফলা, প্রায়ই পুরোপুরি কেটে নেওয়া হয়েছে—যেগুলো বনভূমি নিধনের শিকার। আপনি হাইতির উত্তরাঞ্চল বা দক্ষিণাঞ্চল যেদিকেই ভ্রমণ করুন না কেন, আপনি এর সৌন্দর্য দেখতে পাবেন। পাহাড়ের সরু, ঘোরানো কিছু রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে আপনি সেই দেশের ও সমুদ্রের মনোরম, ক্রমাগত পরিবর্তনশীল দৃশ্যগুলো দেখতে পাবেন। আপনি সবজায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও উজ্জ্বল রঙের সমারোহ দেখতে পাবেন।

এই বৈচিত্র্যময় দেশের ৮৩ লক্ষ লোক মূলত আফ্রিকার পল্লিবাসীদের বংশোদ্ভূত। যদিও তাদের বেশির ভাগই দরিদ্র কিন্তু তারা দয়ালু ও অতিথিপরায়ণ। যিহোবার সাক্ষিরা ৬০ বছর ধরে তাদের কাছে আনন্দের সঙ্গে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার পৌঁছে দিচ্ছে আর উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছে।—মথি ২৪:১৪.

এক মফস্‌সল শহরে প্রচার করা

এক মফস্‌সল শহরে প্রথম পরিদর্শনের সময়ে একজন মিশনারির এইরকম অভিজ্ঞতাই হয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন:

“২০০৩ সালের মার্চ মাসের কোনো একদিন, আমরা রাজধানী পোর্ট-ও-প্রিন্স থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে, যেখানে আমাদের বর্তমান মিশনারি হোম অবস্থিত সেই ক্যাবারে শহর থেকে ক্যাজালে নামে একটা ছোট শহরে প্রচার করতে গিয়েছিলাম, যেখানে যেতে আরও প্রায় আধ ঘন্টা সময় লাগে। সাক্ষিরা ১৯৯৯ সালে শেষবারের মতো ক্যাজালেতে প্রচার করেছিল, তাই সকাল ৭:০০টা সময় আমরা অত্যন্ত উৎসুক মনোভাব নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। আমরা বাইশ জন—আমাদের প্রায় পুরো মণ্ডলীই—চার চাকার দুটো ভ্যানে চড়ে গিয়েছিলাম। ঢালু কাঁচা রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে বড় বড় গাছপালায় ভরা উপত্যকায় পৌঁছানোর সময় সকলেই রোমাঞ্চিত হয়ে কথাবার্তা বলছিল ও হাসাহাসি করছিল। উপত্যকার মধ্য দিয়ে একটা নদী বয়ে চলেছে আর এর দুপাশেই ক্যাজালে শহর অবস্থিত।

“এই নিরিবিলি শহরের ইতিহাস শুরু হয়েছিল ১৮০০ সালের প্রথম দিকে, যখন প্রাক্তন ক্রীতদাসদেরকে স্বাধীনতা অর্জন করতে সাহায্য করার জন্য হাইতিতে এসেছিল এমন কিছু পোলিশ সৈন্য এই উর্বর উপত্যকায় তাদের হাইতীয় স্ত্রীদের নিয়ে স্থায়ীভাবে বাস করে। এর ফলস্বরূপ সুন্দর এক মিশ্র লোকেদের উদ্ভব হয়েছিল। শ্বেতাঙ্গ, তামাটে বর্ণের, বাদামি বর্ণের, সবুজ, গাঢ়-বাদামি চোখ ও অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী গ্রামবাসীদের দেখতে খুবই চমৎকার লাগে।

“আমরা প্রথম যে-দরজায় কড়া নেড়েছিলাম, সেই ঘরের ব্যক্তি আগ্রহী ছিলেন না। আমরা যখন সেখান থেকে চলে আসি, তখন একজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য হেঁটে রাস্তা পর্যন্ত এসেছিলেন। তিনি জানতে চেয়েছিলেন যে, যিশু ও ঈশ্বরের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি কি না। আমাদের অনুরোধে তিনি তার বাইবেল নিয়ে এসেছিলেন আর এরপর যে-শাস্ত্রীয় আলোচনা করা হয়েছিল, সেটা তাকে এই বিশ্বাস করতে পরিচালিত করেছিল যে, যিশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র এবং যিহোবা হলেন ‘একমাত্র সত্যময় ঈশ্বর।’ (যোহন ১৭:৩) অনেক লোক আমাদেরকে তাদের সঙ্গে বসতে ও কথা বলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেছিল, ‘আপনারা আবার কবে আসবেন এবং আমাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করবেন?’

“দুপুরবেলা আমরা একটা সুন্দর ছায়া-ঘেরা জায়গা খুঁজে পেয়েছিলাম এবং সেখানেই দুপুরের খাবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। দুজন বোন বেশ বড় এক হাড়ি মাছ রান্না করেছিল। তা খুবই সুস্বাদু ছিল! সেখানে অল্প সময় ধরে খাওয়াদাওয়া করার ও কথাবার্তা বলার সময়ে আমরা পথচারীদের কাছে প্রচারও করেছিলাম। এরপর, আমরা নদী পার হয়ে শহরের অন্য প্রান্তে গিয়েছিলাম। আমরা সেই লোকেদের সঙ্গে কথা বলে আনন্দিত হয়েছিলাম, যারা তাদের সাধাসিধে ঘরের কাছেই গাছের নীচে বসেছিল। বাচ্চারা খেলা করছে, মহিলারা নদীতে কাপড় ধুচ্ছে আর বয়স্ক মহিলারা কফি বিন চূর্ণ করছে, এই বিষয়গুলো লক্ষ করা কতই না চমৎকার!

“শীঘ্রই চারটা বেজে গিয়েছিল আর আমাদের আনন্দিত দলটা ক্যাবারে ফিরে যাওয়ার জন্য ভ্যানে ফিরে এসেছিল। আমার স্বামী ও আমি ক্যাজালেতে আমাদের প্রথম পরিদর্শন সত্যিই উপভোগ করেছিলাম, যেখানে অতিথিপরায়ণ ও বন্ধুত্বপরায়ণ লোকেরাও ছিল।”

মিশনারি সাক্ষিরা ১৯৪৫ সালে প্রথম হাইতিতে পৌঁছানোর পর থেকে এই দেশে রাজ্যের ঘোষণাকারীদের সংখ্যা নিয়মিতভাবেই বৃদ্ধি পেয়েছে আর তাই সেখানে এখন প্রায় ১৪,০০০ জন প্রচার কাজে রত আছে এবং তারা ২২,০০০রেরও বেশি গৃহ বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করছে। তারা ২০০৫ সালের মার্চ মাসে স্মরণার্থ সভায় উপস্থিত ৫৯,৩৭২ জনের জীবনকে প্রভাবিত করেছে এবং জনসমক্ষে স্পষ্টভাবে রাজ্যের সুসমাচার ঘোষণা করেছে। যিহোবার সাক্ষিদের কাজ যে-বিভিন্ন উপায়ে লোকেদের প্রভাবিত করেছে, তা বিবেচনা করুন।

বংবেরঙের চিত্রকর্মে সুসমাচার

হাইতির অধিকাংশ অধিবাসী উজ্জ্বল রং পছন্দ করে। তাদের পোশাক-আশাক, ঘরের রং, তাদের বাগানের বিভিন্ন ধরনের ফুলে ও তাদের চিত্রকর্মে তা প্রতিফলিত হয়। পোর্ট-ও-প্রিন্সের সমস্ত জায়গার রাস্তায় প্রদর্শনের জন্য ক্যানভাসে স্থানীয় পদ্ধতিতে উজ্জ্বল রঙে আঁকা চিত্রকর্ম রয়েছে, যা লার আইসিয়েন বলে পরিচিত। বিশ্বের অনেক জায়গা থেকে ক্রেতারা সেখানে আসে।

কেবল ক্যানভাসেই উজ্জ্বল রঙের সমারোহ দেখা যায় না। পোর্ট-ও-প্রিন্সের রাস্তাগুলো কামিয়োনেট বা ট্যাপ-ট্যাপ বলে পরিচিত যাত্রীবাহী যানবাহনে পরিপূর্ণ থাকে, যেগুলোতে অনেক কাল্পনিক চিত্র আঁকা থাকে। কোনো ব্যক্তি এই চিত্রগুলোতে প্রায়ই বাইবেলের ওপর ভিত্তি করে দৃশ্য দেখে থাকে।

রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হয়তো খুবই পরিচিত একটা দৃশ্য—যেমন এদন উদ্যানে আদম ও হবার কোনো দৃশ্য—হঠাৎ করেই আপনার নজরে পড়বে। হ্যাঁ, আপনার পাশ দিয়ে সবেমাত্র চলে যাওয়া কামিয়োনেটের পিছনের জানালায় সেই চিত্র আঁকা রয়েছে। প্রায়ই এই যানবাহনগুলোতে যিহোবার নাম লেখা শাস্ত্রপদ অথবা নীতিবাক্য দেখতে পাওয়া যায় অথবা কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের নামেও তা যুক্ত করা হয়।

স্কুলে সুসমাচার জানানো

সহছাত্র-ছাত্রীদের বাইবেল সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করার জন্য হাইতির অল্পবয়সি সাক্ষিদের চমৎকার সুযোগগুলো রয়েছে। নীচের রিপোর্টটা হল এর একটা উদাহরণ, যেটি ১৭ বছর বয়সি একজন তরুণী সাক্ষির কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছে।

“একদিন আমার এক সহপাঠী আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করেছিল ছিল যে, ‘ব্যভিচার’ এর অর্থ কী। সেই ছেলেটা আমার সঙ্গে প্রেমের ভান করতে চায় এমনটা চিন্তা করে আমি তাকে উপেক্ষা করেছিলাম। কিন্তু, যখন সে অন্য একটা ছেলেকে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিল, তখন পুরো ক্লাস সেই বিষয়ে আগ্রহ দেখায়। তাই সেই বিষয়ের ওপর কিছু গবেষণা করার পর, পরের সপ্তাহে আমি ক্লাসে বিষয়টা উপস্থাপন করে ব্যাখ্যা করেছিলাম যে, কেন যিহোবার সাক্ষিরা নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও শারীরিকভাবে শুদ্ধ থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে।

“ছাত্র-ছাত্রীরা আমাকে অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিল এবং বাইবেল থেকে আমি যে-উত্তর দিয়েছিলাম, সেগুলো মেনে নিয়েছিল। এমনকি প্রধান শিক্ষক, যিনি প্রথমে একটু দ্বিধা করেছিলেন, তিনিও অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং আমি যাতে অন্যান্য ক্লাসেও কথা বলতে পারি, সেই ব্যবস্থা করেছিলেন। আমি তাদেরকে যুবক-যুবতীদের জিজ্ঞাস্য—যে-উত্তরগুলো কাজ করে (ইংরেজি)a বইটি দেখিয়েছিলাম আর অনেকেই সেটির প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল। পরদিন, আমি সহছাত্র-ছাত্রীদের কাছে ৪৫টি বই অর্পণ করেছিলাম। অনেকেই তাদের কপি খুব তাড়াতাড়ি পড়ে শেষ করে ফেলেছিল এবং এখন কেউ কেউ তাদের কাছাকাছি বসবাস রত সাক্ষিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করছে। একজন ছাত্র, যে আমার পাড়াতেই থাকে, সে এখন সমস্ত সভায় যোগ দিচ্ছে।”

ক্রিওল ভাষা ব্যবহার করা

অধিবাসী ও সেই দেশের মতো হাইতিয়ান ক্রিওল ভাষাও বৈচিত্র্যময় ও আগ্রহজনক, যা ফ্রেঞ্চ শব্দ ও পশ্চিম আফ্রিকার ব্যাকরণের সমন্বয়ে গঠিত। এটাই হাইতীয়দের মাতৃভাষা, যা তাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। যিহোবার সাক্ষিরা মূলত এই ভাষাতেই তাদের পরিচর্যা করে থাকে এবং হাইতিয়ান ক্রিওল ভাষায় আরও সাহিত্যাদি প্রকাশ করার ব্যবস্থা রয়েছে।

১৯৮৭ সালে পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করুন! ব্রোশারটি হাইতিয়ান ক্রিওল ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল আর এরপর জ্ঞান যা অনন্ত জীবনে পরিচালিত করে বই ও পরে ঈশ্বর আমাদের কাছ থেকে কী চান? ব্রোশারও অনুবাদ করা হয়েছিল। এই প্রকাশনাগুলো সেই নতুন বাইবেল ছাত্রদের প্রচুর সাহায্য করেছে, যারা ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে মৌলিক বোধগম্যতা অর্জন করতে চায়। ২০০২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে প্রহরীদুর্গ পত্রিকাও হাইতিয়ান ক্রিওল ভাষায় প্রকাশিত হচ্ছে। এখনও ফ্রেঞ্চ ভাষার সাহিত্যাদি ব্যবহার করা হয়, তবে অনেকেই তাদের নিজেদের ভাষার প্রকাশনা পড়তে পছন্দ করে।

জেলে বন্দিরত লোকেদের কাছে সুসমাচার জানানো

সম্প্রতি, যিহোবার সাক্ষিরা সেই দেশের জেলগুলোতে বন্দি নারী-পুরুষের কাছে সুসমাচার জানাতে শুরু করেছে। যে-সাক্ষিরা তা করছে, তারা এই ধরনের দুঃখজনক পরিস্থিতিতে থাকা ব্যক্তিদের কাছে সান্ত্বনার বার্তা নিয়ে যেতে পেরে আনন্দিত। একজন খ্রিস্টান পরিচারক রিপোর্ট করেন:

“আমরা যখন একটা জেলে প্রথম পরিদর্শনে গিয়েছিলাম, তখন আমাদের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য বন্দিদের একটা বিরাট কক্ষে নিয়ে আসা হয়। তারা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সেই বিষয়টা নিয়ে আমরা চিন্তা করছিলাম। আমরা যখন ব্যাখ্যা করেছিলাম যে, আমরা তাদেরকে বাইবেল বুঝতে সাহায্য করার জন্য এসেছি, তখন ৫০ জনই আমাদেরকে ভালভাবে গ্রহণ করেছিল। আমরা তাদের কাছে ক্রিওল ভাষার নিজে পড়ুন ও লিখুন এবং পৃথিবীতে অনন্তজীবন উপভোগ করুন! ব্রোশারগুলো উপস্থাপন করেছিলাম এবং তাদের মধ্যে ২৬ জনের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেছিলাম। সেখানে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে দশজন পড়ালেখা জানত না কিন্তু আমরা যখন তাদেরকে শব্দগুলো বুঝতে সাহায্য করার জন্য ব্রোশারে দেওয়া চিত্রগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা দেখিয়েছিলাম, তখন তারা আগ্রহ দেখিয়েছিল।”

সাক্ষিরা যখন ফিরে গিয়েছিল, তখন একজন ব্যক্তি বলেছিলেন: “আমি ব্রোশারটা বার বার পড়েছি। এটি যা বলে, সেই বিষয়ে আমি অনবরত চিন্তা করেছি এবং আপনাদের সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।” সশস্ত্র ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এমন একজন ব্যক্তি বলেছিলেন যে, তিনি পরিবর্তিত হতে চান এবং তিনি তার স্ত্রীকে বাইবেল অধ্যয়ন করানোর জন্য কাউকে পাঠাতে অনুরোধ করেছিলেন। জেলে বন্দি ছিলেন এমন একজন বাবা, যার দুটো সন্তান রয়েছে, তিনিও একই অনুরোধ করেছিলেন, যাতে তার স্ত্রী সত্য ও মিথ্যা বিশ্বাসগুলোর মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারে। একজন প্রটেস্টান্ট পাদরি, যিনি মোটা অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করে তার গির্জার সদস্যদের সঙ্গে প্রতারণা করার কারণে অভিযুক্ত ছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে, এখন তিনি সত্য খুঁজে পেয়েছেন এবং তার শাস্তি শেষ হওয়ার পর তিনি তার গির্জার সদস্যদের যিহোবার সাক্ষি হতে সাহায্য করবেন।

আরেকজন বন্দি, যার কাছে ক্রিওল ভাষার চান ব্রোশারের কপি ছিল না, তিনি তার কারাকক্ষের সঙ্গীর কাছ থেকে ব্রোশারের সমস্ত পাঠ্যাংশ লিখে নিয়েছিলেন এবং সেগুলো মুখস্ত করেছিলেন। একজন মহিলা বন্দি যা শিখতেন, তার কারাকক্ষের নয়জন সঙ্গীকে সেগুলো জানাতেন, এমনকি তাদের সঙ্গে অধ্যয়নও করতেন। একজন পুরুষ বন্দি, যিনি ব্রোশার অধ্যয়ন করা শেষ করেছিলেন এবং জ্ঞান বই অধ্যয়ন করছিলেন, তিনি অন্য বন্দিদের কাছে প্রচার করতে শুরু করেছিলেন। শীঘ্রই তিনি চারজনের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন পরিচালনা করতে শুরু করেন।

মার্কনিb বাইবেল অধ্যয়ন করতেন এবং তার যিহোবার সাক্ষি আত্মীয়স্বজন রয়েছে। তিনি অন্য বন্দিদের বাইবেলভিত্তিক সাহিত্যাদি পড়তে উৎসাহিত করতেন, যেগুলো তার আত্মীয়স্বজন তার জন্য নিয়ে এসেছিল। তিনি বলেন: “আমি যখন বন্দিদের সাহিত্যাদি দিই, তখন তারা আমাকে যিহোবার সাক্ষি বলে। আমি তাদের বলি যে আমি তা নই কারণ একজন সাক্ষি হওয়ার অর্থ কী, সেটা আমি জানি। এখন আমি অধ্যয়ন করার ও বাপ্তিস্ম নেওয়ার বিষয়টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে চাই। আমি যখন আরও ছোট ছিলাম তখন যদি আমার ভাইদের পথ অনুসরণ করতাম, তা হলে এখন আমাকে এই জেলে থাকতে হতো না।”

মার্কনির কাছ থেকে সাহিত্যাদি পেয়েছিলেন এমন একজন বন্দি তার সঙ্গে দেখা করতে আসা সাক্ষিকে বলেছিলেন: “গত সোমবার আপনি আসার আগে আমি অনেক হতাশ হয়ে পড়েছিলাম এবং আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এই পত্রিকাগুলো পড়ার পর, আমি ঈশ্বরের কাছে আমার কৃত মন্দ কাজগুলো ক্ষমা করার জন্য এবং আমাকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য যেন কাউকে পাঠানো হয়, সেই বিষয়ে প্রার্থনা করেছিলাম। এর পরদিন যখন আপনি বন্দিদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন, তখন আমি কত আনন্দিতই না হয়েছিলাম! আমি চাই আপনি আমাকে শেখাবেন যে, কীভাবে যিহোবার সেবা করতে হবে।”

সচেতন থাক! পত্রিকা অনেকের কাছে সুসমাচার পৌঁছে দেয়

২০০১ সালের সচেতন থাক! পত্রিকার জানুয়ারি - মার্চ সংখ্যা নার্সিং পেশা সম্বন্ধে তুলে ধরেছিল। একজন মহিলা এটির ২,০০০টা কপি নিয়েছিলেন এবং পোর্ট-ও-প্রিন্সের একটা সেমিনারে যোগ দেওয়া নার্সদের মধ্যে সেগুলো বিতরণ করেছিলেন। পুলিশবাহিনী ও তাদের কাজ সম্বন্ধে ২০০২ সালের সচেতন থাক! পত্রিকার অক্টোবর - ডিসেম্বর সংখ্যা পোর্ট-ও-প্রিন্সের পুলিশদের মাঝে ব্যাপকভাবে বিতরণ করা হয়েছিল। তারা সেটার প্রতি উপলব্ধি প্রকাশ করেছিল, এমনকি এখনও পর্যন্ত কেউ কেউ রাস্তায় সাক্ষিদের থামিয়ে সেই পত্রিকার আরও কপির জন্য অনুরোধ করে।

সম্প্রতি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র একজন কর্মকর্তা এইডস সমস্যা সম্বন্ধে লোকেদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য একটা কর্মসূচির ব্যবস্থা করেছিলেন। তাকে যিহোবার সাক্ষিদের শাখা অফিসে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল, যেখানে তাকে সেই বিষয়ে সচেতন থাক! পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য দেখানো হয়েছিল। তিনি এইডস প্রতিরোধ করার সর্বোত্তম উপায় সম্বন্ধে এবং কীভাবে সংক্রামিত ব্যক্তিদেরকে তাদের পরিস্থিতির সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করতে সাহায্য করা যেতে পারে সেই বিষয়ে প্রবন্ধগুলোতে যে-আলোচনা করা হয়েছে, তা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন যে, সেই বিষয়ের ওপর এই ধরনের তথ্য জোগানোর ক্ষেত্রে সচেতন থাক! পত্রিকাই সর্বাগ্রে রয়েছে।

হ্যাঁ, বৈচিত্র্যময় হাইতিতে যিহোবার সাক্ষিরা বিভিন্ন উপায়ে সুসমাচার ছড়িয়ে দিচ্ছে, ঠিক যেমন বিশ্বব্যাপী দ্বীপ ও দেশ মিলিয়ে ২৩৪টা জায়গাতে তারা তা করে যাচ্ছে। অনেকেই এই আশার বার্তার প্রতি সাড়া দিচ্ছে এবং তাদেরকে বর্তমান জীবনের বিভিন্ন সমস্যাকে ছাপিয়ে এক নতুন জগতের জন্য অপেক্ষা করতে সাহায্য করা হচ্ছে, যে-জগতে যারা সত্য ঈশ্বর যিহোবার উপাসনা করবে, তারা সকলে সিদ্ধ জীবন প্রচুররূপে উপভোগ করবে।—প্রকাশিত বাক্য ২১:৪.

[পাদটীকাগুলো]

a এই প্রবন্ধে সাহিত্যের যে-শিরোনামগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত।

b নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

পটভূমি: ©Adalberto Rios Szalay/photodisc/age fotostock

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার