ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w17 জানুয়ারি পৃষ্ঠা ১৭-২১
  • কেন বিনয়ী হওয়া এখনও গুরুত্বপূর্ণ?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কেন বিনয়ী হওয়া এখনও গুরুত্বপূর্ণ?
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • কেন বিনয়ী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ?
  • বিনয়ী হওয়ার সঙ্গে কী জড়িত?
  • ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আপনার ভূমিকা
  • বিনয়ভাব সম্বন্ধে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি
  • ‘প্রজ্ঞা নম্রদিগের সহচরী’
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পরীক্ষার মধ্যেও আপনি বিনয়ী মনোভাব বজায় রাখতে পারেন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
  • নম্রতা—এমন এক গুণ যা শান্তি বাড়ায়
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • নম্রতা ও বিনয়ী মনোভাব দেখিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২০
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৭
w17 জানুয়ারি পৃষ্ঠা ১৭-২১
রাজা শৌলকে শমূয়েল তিরস্কার করছন

কেন বিনয়ী হওয়া এখনও গুরুত্বপূর্ণ?

“প্রজ্ঞাই নম্রদিগের [‘বিনয়ীদের,’ ইজি-টু-রিড ভারশন] সহচরী।” —হিতো. ১১:২.

গান সংখ্যা: ৩৮, ১১

আপনি কি ব্যাখ্যা করতে পারেন?

  • কেন বিনয়ী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ?

  • কীভাবে বিনয়ভাব নম্রতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত?

  • কীভাবে আমরা যিহোবার সেবায় সন্তুষ্ট থাকতে পারি?

১, ২. কেন ঈশ্বর শৌলকে অগ্রাহ্য করেছিলেন? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)

যিহোবা যখন শৌলকে রাজা হিসেবে মনোনীত করেছিলেন, তখন শৌল একজন বিনয়ী ব্যক্তি ছিলেন। (১ শমূ. ৯:১, ২, ২১; ১০:২০-২৪) কিন্তু, রাজা হওয়ার পর তিনি অহংকারী হয়ে উঠেছিলেন। একবার, হাজার হাজার পলেষ্টীয় ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এসেছিল। ভাববাদী শমূয়েল রাজা শৌলকে বলেছিলেন যে, তিনি এসে যিহোবার উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করবেন। কিন্তু, শমূয়েল আসার আগেই ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে অনেকে ভয় পেয়ে শৌলকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল। তিনি অধৈর্য হয়ে পড়েছিলেন এবং শমূয়েলের জন্য অপেক্ষা করার পরিবর্তে নিজেই বলি উৎসর্গ করেছিলেন। যেহেতু তা করার কোনো অধিকার শৌলের ছিল না, তাই যিহোবা এতে খুশি হননি।—১ শমূ. ১৩:৫-৯.

২ সেখানে পৌঁছানোর পর শমূয়েল যখন দেখেছিলেন যে, শৌল যিহোবার অবাধ্য হয়ে কাজ করেছেন, তখন তিনি তাকে তিরস্কার করেছিলেন। কিন্তু, শৌল মনে করেছিলেন, তিনি অন্যায় কিছু করেননি। তিনি অজুহাত দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন, এমনকী তাঁর নিজের দোষ অন্যদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলেন। (১ শমূ. ১৩:১০-১৪) সেই সময়ের পর থেকে শৌল অহংকারী হয়ে আরও অনেক কাজ করেছিলেন। তাই, যিহোবা তাকে রাজা হিসেবে অগ্রাহ্য করেছিলেন। (১ শমূ. ১৫:২২, ২৩) শুরুতে শৌল একজন ভালো ব্যক্তি ছিলেন কিন্তু পরে একজন মন্দ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন আর তাই তার জীবনের শেষ পরিণতি অনেক খারাপ হয়েছিল।—১ শমূ. ৩১:১-৬.

৩. (ক) বিনয়ভাব সম্বন্ধে অনেকের ধারণা কী? (খ) আমরা কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর লক্ষ করব?

৩ বর্তমানে, অনেকে মনে করে, তাদের পক্ষে বিনয়ী হওয়া এবং একইসঙ্গে সফল জীবন বা কেরিয়ার লাভ করা সম্ভব নয়। তারা দম্ভ করে নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে আরও উত্তম হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে। উদাহরণ স্বরূপ, একজন বিখ্যাত অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বলেছিলেন: “বিনয় শব্দটা আমার ক্ষেত্রে একেবারেই প্রযোজ্য নয় আর কখনো হবে বলেও মনে করি না।” কিন্তু, কেন একজন খ্রিস্টানের জন্য বিনয়ী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ? বিনয় বলতে কী বোঝায় এবং কী বোঝায় না? এই প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর লক্ষ করব। আর পরের প্রবন্ধে আমরা দেখব যে, কীভাবে এমনকী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা বিনয়ী মনোভাব বজায় রাখতে পারি।

কেন বিনয়ী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ?

৪. অহংকারের বশে করা পাপ কী?

৪ বাইবেল দেখায়, অহংকার হচ্ছে বিনয়ী মনোভাবের বিপরীত। কারণ এটি বলে: ‘অহঙ্কার আসিলে অপমানও আইসে; কিন্তু প্রজ্ঞাই বিনয়ীদের সহচরী।’ (হিতো. ১১:২) দায়ূদ যিহোবার কাছে এই বিনতি করেছিলেন: ‘দুঃসাহসজনিত [“অহংকারের বশে করা,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন] [পাপ] হইতে নিজ দাসকে পৃথক্‌ রাখ।’ (গীত. ১৯:১৩) অহংকারের বশে করা পাপ কী? এটা হচ্ছে এমন কাজ, যা করার অধিকার আমাদের নেই কিন্তু অধৈর্য বা গর্বিত মনোভাবের কারণে আমরা হয়তো সেটা করে ফেলি। যেহেতু আমরা অসিদ্ধ, তাই আমরা সকলেই কোনো-না-কোনো সময়ে অহংকারের বশে কাজ করে ফেলেছি। কিন্তু, রাজা শৌলের উদাহরণ থেকে আমরা যেমন শিখতে পেরেছি, এটা যদি আমাদের অভ্যাস হয়ে ওঠে, তা হলে যিহোবা আমাদের প্রতি খুশি হবেন না। গীতসংহিতা ১১৯:২১ পদ বলে, যিহোবা “অহঙ্কারীদিগকে ভর্ৎসনা” করবেন। কেন?

৫. কেন অহংকারের বশে করা পাপ এক গুরুতর ভুল?

৫ প্রথমত, আমরা যদি অহংকারের বশে কোনো কাজ করি, তা হলে আমরা আমাদের ঈশ্বর ও শাসক যিহোবার প্রতি অসম্মান দেখাই। দ্বিতীয়ত, আমরা যখন আমাদের অধিকার নেই এমন কাজ করি, তখন অন্যদের সঙ্গে আমরা তর্কবিতর্কে জড়িয়ে পড়ি এবং তাদের সঙ্গে আমাদের মতপার্থক্য দেখা দেয়। (হিতো. ১৩:১০) আর তৃতীয়ত, অন্যেরা যখন বুঝতে পারে যে, আমরা অহংকারের বশে কোনো কাজ করেছি, তখন আমরা হয়তো নিজেদেরকে লজ্জার পাত্র হিসেবে তুলে ধরি। (লূক ১৪:৮, ৯) স্পষ্টতই, আমরা বুঝতে পারছি যে, কেন যিহোবা চান যেন আমরা বিনয়ী হই।

বিনয়ী হওয়ার সঙ্গে কী জড়িত?

৬, ৭. কীভাবে বিনয়ভাব নম্রতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত?

৬ বিনয়ভাব নম্রতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। একজন নম্র খ্রিস্টান গর্বিত মনোভাব দেখান না বরং নিজের চেয়ে অন্যদের শ্রেষ্ঠ বলে মনে করেন। (ফিলি. ২:৩) একজন নম্র ব্যক্তি সাধারণত বিনয়ী মনোভাবও দেখিয়ে থাকেন। তিনি বুঝতে পারেন যে, তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে আর তাই তিনি নম্রভাবে নিজের ভুলগুলো স্বীকার করেন। তিনি অন্যদের মতামত মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেন। একজন নম্র ব্যক্তি যিহোবাকে অনেক খুশি করেন।

৭ বাইবেল দেখায়, একজন বিনয়ী ব্যক্তি নিজের সম্বন্ধে ভালোভাবে জানেন এবং স্বীকার করেন যে, এমন কিছু কাজ রয়েছে, যেগুলো করার সামর্থ্য বা অনুমতি তার নেই। আর এটা তাকে অন্যদের সম্মান করতে এবং তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করতে সাহায্য করে।

৮. বিনয়ী মনোভাব বজায় রাখার জন্য আমাদের কোন ধরনের চিন্তাভাবনা এড়িয়ে চলা উচিত?

৮ কিন্তু, নিজেদের অজান্তেই আমাদের মধ্যে হয়তো অহংকারী চিন্তাভাবনা চলে আসতে পারে। কীভাবে? নিজেদের বা যাদের সঙ্গে আমাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে, তাদের যদি মণ্ডলীতে বিশেষ দায়িত্ব থাকে, তা হলে আমরা হয়তো নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা শুরু করতে পারি। (রোমীয় ১২:১৬) কিংবা আমরা হয়তো নিজেদের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ আকর্ষণ করানো শুরু করতে পারি। (১ তীম. ২:৯, ১০) আমরা হয়তো এমনকী অন্যদের কী করা উচিত বা কী করা উচিত নয়, সেই ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করা শুরু করতে পারি।—১ করি. ৪:৬.

৯. কেন অনেকে দুঃসাহসী ও অহংকারী হয়ে উঠেছে? বাইবেলের একটা উদাহরণ তুলে ধরুন।

৯ আমরা যদি অনুপযুক্ত আকাঙ্ক্ষাকে নিয়ন্ত্রণ না করি, তা হলে আমরা অহংকারের বশে আচরণ করা শুরু করতে পারি। নিজেরা গৌরব পেতে চাওয়ার, অন্যদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হওয়ার কিংবা রাগ নিয়ন্ত্রণ না করার কারণে অনেকে দুঃসাহসী ও অহংকারী হয়ে উঠেছে। বাইবেলে উল্লেখিত কয়েক জন ব্যক্তির প্রতি এমনটা ঘটেছিল, যেমন অবশালোম, উষিয় ও নবূখদ্‌নিৎসর। যিহোবা তাদের স্পষ্টভাবে দেখিয়েছিলেন যে, তাদের নম্র হওয়া প্রয়োজন।—২ শমূ. ১৫:১-৬; ১৮:৯-১৭; ২ বংশা. ২৬:১৬-২১; দানি. ৫:১৮-২১.

১০. কেন অন্যদের মনোভাব নিয়ে আমাদের বিচার করা এড়িয়ে চলা উচিত? বাইবেলের একটা উদাহরণ তুলে ধরুন।

১০ অন্যান্য আরও অনেক কারণ থাকতে পারে, যেগুলোর জন্য কখনো কখনো লোকেরা বিনয়ী মনোভাব দেখায় না। অবীমেলক ও পিতরের উদাহরণ বিবেচনা করুন। (আদি. ২০:২-৭; মথি ২৬:৩১-৩৫) এই ব্যক্তিরা কি অহংকারী ছিলেন? না কি এমনটা হতে পারে যে, তারা সমস্ত তথ্য জানতেন না কিংবা চিন্তা না করেই কাজ করেছিলেন? যেহেতু আমরা লোকেদের হৃদয় পড়তে পারি না, তাই তাদের মনোভাব নিয়ে আমাদের বিচার করা উচিত নয়।—পড়ুন, যাকোব ৪:১২.

ঈশ্বরের ব্যবস্থায় আপনার ভূমিকা

১১. আমাদের কী উপলব্ধি করতে হবে?

১১ একজন বিনয়ী ব্যক্তি ঈশ্বরের ব্যবস্থায় নিজের ভূমিকা উপলব্ধি করেন। যিহোবা ঈশ্বর হলেন শৃঙ্খলার ঈশ্বর। তিনি মণ্ডলীর প্রত্যেক সদস্যকে নিজ নিজ ভূমিকা প্রদান করেছেন। মণ্ডলীতে আমাদের প্রত্যেকেরই প্রয়োজন রয়েছে। যিহোবা আমাদের প্রত্যেককে বিভিন্ন দান, দক্ষতা, মেধা অথবা ক্ষমতা দিয়েছেন এবং সেগুলো তিনি আমাদের ইচ্ছে অনুযায়ী ব্যবহার করার সুযোগ দিয়েছেন। আমরা যদি বিনয়ী হই, তা হলে আমরা যিহোবা যেভাবে চান, সেভাবে আমাদের দান ব্যবহার করব। (রোমীয় ১২:৪-৮) আমরা উপলব্ধি করি, যিহোবা চান যেন সেগুলো আমরা তাঁর সম্মানের জন্য এবং অন্যদের সাহায্যের জন্য ব্যবহার করি।—পড়ুন, ১ পিতর ৪:১০.

যিশু সৃষ্টির কাজে সাহায্য করেন, একজন মানুষ হিসেবে জন্মগহণ করেন, তাঁর শিষ্যদের শিক্ষা দেন, স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন এবং রাজ্যের রাজা হিসেবে শাসন করেন

আমাদের কার্যভার যখন পরিবর্তিত হয়, তখন যিশুর উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? (১২-১৪ অনুচ্ছেদ দেখুন)

১২, ১৩. যিহোবার সেবায় আমাদের কার্যভার যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হয়, তা হলে আমাদের কী মনে রাখা উচিত?

১২ যিহোবার সেবায় আমাদের কার্যভার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, যিশুর জীবনে যে-পরিবর্তনগুলো হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। প্রথমে, তিনি তাঁর পিতার সঙ্গে একা ছিলেন। (হিতো. ৮:২২) এরপর, যিহোবাকে তিনি স্বর্গদূত, নিখিলবিশ্ব ও মানুষ তৈরি করার কাজে সাহায্য করেছিলেন। (কল. ১:১৬) পরে, তাঁকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। তিনি মানবশিশু হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং এরপর প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠেছিলেন। (ফিলি. ২:৭) যিশু তাঁর মৃত্যুর পর স্বর্গে ফিরে গিয়েছিলেন এবং ১৯১৪ সালে ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা হয়েছিলেন। (ইব্রীয় ২:৯) আর ভবিষ্যতে হাজার বছর রাজা হিসেবে শাসন করার পর, যিশু যিহোবাকে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন, যেন “ঈশ্বরই সর্ব্বেসর্ব্বা হন।”—১ করি. ১৫:২৮.

১৩ আমাদের জীবনেও বিভিন্ন পরিবর্তন আসতে পারে। মাঝে মাঝে নিজেদের সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের দায়িত্ব পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা হয়তো অবিবাহিত ছিলাম কিন্তু পরে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিংবা আমাদের হয়তো ছেলে-মেয়ে রয়েছে। পরে, আমরা হয়তো বিভিন্ন পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারি, যাতে পূর্ণসময় যিহোবার সেবা করতে পারি। আবার অন্যান্য সময় বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে হয়তো আমাদের দায়িত্ব পরিবর্তিত হতে পারে আর তাই আমরা হয়তো আরও বেশি কাজ করার সুযোগ পেতে পারি কিংবা আমাদের কাজের পরিমাণ হয়তো কিছুটা কমাতে হতে পারে। কিন্তু, আমরা যুবক বা বৃদ্ধ, সুস্থ বা অসুস্থ, যা-ই হই না কেন, যিহোবা জানেন ব্যক্তি-বিশেষ হিসেবে আমরা প্রত্যেকে কীভাবে সর্বোত্তম উপায়ে তাঁকে সেবা করতে পারি। তিনি আমাদের কাছে সাধ্যের অতিরিক্ত আশা করেন না। আর তাঁর সেবায় আমরা যা-ই করি না কেন, তাতে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হন।—ইব্রীয় ৬:১০.

১৪. কীভাবে এক বিনয়ী মনোভাব যেকোনো পরিস্থিতিতে আমাদের সন্তুষ্ট ও আনন্দিত থাকতে সাহায্য করে?

১৪ যিহোবা যিশুকে যে-কার্যভারই দিয়েছিলেন, তাতে তিনি আনন্দিত ছিলেন আর আমরাও আনন্দিত হতে পারি। (হিতো. ৮:৩০, ৩১) একজন বিনয়ী ব্যক্তি মণ্ডলীতে তার কার্যভার ও দায়িত্ব নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন। তিনি অন্যদের কাজের প্রতি মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করেন না। এর পরিবর্তে, ঈশ্বরের সংগঠনে তিনি নিজের ভূমিকা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকেন। তিনি সেটাকে যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া সুযোগ বলেই মনে করেন। এ ছাড়া, একজন বিনয়ী ব্যক্তি অন্যদের প্রতি সম্মান দেখান এবং আনন্দের সঙ্গে তাদের সমর্থন করেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে, যিহোবা তাদেরকেও এক ভূমিকা প্রদান করেছেন।—রোমীয় ১২:১০.

বিনয়ভাব সম্বন্ধে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি

১৫. গিদিয়োনের উদাহরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি?

১৫ গিদিয়োন হলেন বিনয়ী মনোভাবের এক চমৎকার উদাহরণ। যিহোবা যখন গিদিয়োনকে মিদিয়নীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলকে রক্ষা করার কার্যভার দিয়েছিলেন, তখন গিদিয়োন বলেছিলেন: “মনঃশির মধ্যে আমার গোষ্ঠী সর্ব্বাপেক্ষা ক্ষুদ্র, এবং আমার পিতৃকুলে আমি কনিষ্ঠ।” (বিচার. ৬:১৫) কিন্তু, গিদিয়োন যিহোবার উপর নির্ভর করেছিলেন এবং কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন। যিহোবা তার কাছ থেকে যা চেয়েছিলেন, তা তিনি পুরোপুরি বুঝতে পেরেছেন কি না, সেটা ভালোভাবে পরীক্ষা করেছিলেন এবং তাঁর নির্দেশনা চেয়ে প্রার্থনা করেছিলেন। (বিচার. ৬:৩৬-৪০) যদিও গিদিয়োন একজন শক্তিশালী ও সাহসী ব্যক্তি ছিলেন কিন্তু এর পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞ এবং সতর্কও ছিলেন। (বিচার. ৬:১১, ২৭) পরবর্তী সময়ে, লোকেরা যখন তাকে তাদের শাসক হিসেবে নিযুক্ত করতে চেয়েছিল, তখন তিনি সেটা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। যিহোবা তাকে যা করতে বলেছিলেন, তা সম্পন্ন করার পর তিনি বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন।—বিচার. ৮:২২, ২৩, ২৯.

১৬, ১৭. আধ্যাত্মিক উন্নতির বিষয়ে চিন্তা করার সময় একজন বিনয়ী ব্যক্তি কোন বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা করেন?

১৬ একজন ব্যক্তি যখন নতুন কার্যভার গ্রহণ করেন অথবা মণ্ডলীতে আরও বেশি কাজ করতে চান, তখন এর অর্থ এই নয় যে, তিনি বিনয়ী নন। বাইবেল বলে, যিহোবার একজন দাস যদি তার ভাইদের জন্য আরও বেশি কাজ করতে এবং উন্নতি করতে চান, তা হলে সেটা উত্তম। (১ তীম. ৪:১৩-১৫) কিন্তু, উন্নতি করার জন্য আমাদের কি একটা নতুন কার্যভার পেতে হবে? না। আমরা প্রত্যেকেই খ্রিস্টান হিসেবে আমাদের ব্যক্তিত্ব ও যিহোবার কাছ থেকে প্রাপ্ত ক্ষমতার ক্ষেত্রে ক্রমাগত উন্নতি করতে পারি, যেন আমরা তাঁকে আরও উত্তমরূপে সেবা করতে এবং অন্যদের সাহায্য করতে পারি।

১৭ কোনো কার্যভার গ্রহণ করার আগে একজন বিনয়ী ব্যক্তি বোঝার চেষ্টা করেন যে, এর সঙ্গে কী কী জড়িত। তিনি এই বিষয়ে প্রার্থনা করেন এবং এই কাজ করার মতো সামর্থ্য তার আছে কি না, তা মনোযোগের সঙ্গে বিবেচনা করেন। এই কার্যভার গ্রহণ করার পর, অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার মতো যথেষ্ট সময় ও শক্তি কি তার থাকবে? যদি না থাকে, তা হলে তার কিছু কাজের দায়িত্ব কি অন্যদের দেওয়া যেতে পারে? এই সমস্ত কিছু নিয়ে চিন্তা করার পর, একজন বিনয়ী ব্যক্তি হয়তো এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে, তিনি নতুন দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না। আমরা যদি বিনয়ী হই, তা হলে আমাদের হয়তো না বলতে হবে।

১৮. (ক) একজন বিনয়ী ব্যক্তি সেই সময় কী করবেন, যখন তাকে নতুন কার্যভার দেওয়া হয়? (খ) রোমীয় ১২:৩ পদ কীভাবে আমাদের বিনয়ী হতে সাহায্য করে?

১৮ যিহোবা চান যেন আমরা তাঁর সঙ্গে “নম্রভাবে [“বিনয়ের সঙ্গে,” NW] গমনাগমন” করি। (মীখা ৬:৮) তাই, আমাদের যখন নতুন কার্যভার দেওয়া হয়, তখন আমরা তাঁর নির্দেশনা খোঁজার চেষ্টা করি এবং তাঁর কাছে সাহায্য চাই, যেমনটা গিদিয়োন করেছিলেন। যিহোবা তাঁর বাক্য বাইবেল এবং তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের যা বলেন, তা নিয়ে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে। আমরা যেন মনে রাখি, যিহোবার সেবায় আমরা যা-কিছুই করি না কেন, সেটা আমরা নিজেদের ক্ষমতায় করতে পারি না। এর পরিবর্তে, যিহোবা আমাদের প্রতি নম্রভাব দেখিয়েছেন বলে এবং আমাদের সাহায্য করতে চান বলে আমরা তা করতে পারি। (গীত. ১১৩:৬, ৭) একজন বিনয়ী ব্যক্তি “আপনার বিষয়ে যেমন বোধ করা উপযুক্ত, . . . তদপেক্ষা বড় বোধ” করবেন না।—পড়ুন, রোমীয় ১২:৩.

১৯. কেন আমাদের বিনয়ী হওয়া উচিত?

১৯ একজন বিনয়ী ব্যক্তি জানেন যে, একা যিহোবাই সমস্ত প্রতাপ বা গৌরব পাওয়ার যোগ্য কারণ তিনি হলেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা এবং নিখিলবিশ্বের সর্বোচ্চ ব্যক্তি। (প্রকা. ৪:১১) আমরা যদি বিনয়ী হই, তা হলে যিহোবার সেবায় যেকোনো কাজ করেই আমরা আনন্দিত থাকব। আমরা আমাদের ভাই-বোনদের অনুভূতি ও মতামতের প্রতি সম্মান দেখাব আর এর ফলে আমরা একতাবদ্ধ হব। একজন বিনয়ী ব্যক্তি কিছু করার আগে মনোযোগের সঙ্গে চিন্তা করেন আর এভাবে তিনি গুরুতর ভুল করা এড়িয়ে চলেন। যারা বিনয়ী, তাদের ব্যাপারে তিনি অনেক খুশি হন। এই কারণগুলোর জন্য ঈশ্বরের লোকেদের বিনয়ী হওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরের প্রবন্ধে আমরা দেখব, কীভাবে আমরা এমনকী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও বিনয়ী মনোভাব বজায় রাখতে পারি।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার