ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w19 জুন পৃষ্ঠা ৮-১৩
  • ঈশ্বরের জ্ঞানের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটা যুক্তি খণ্ডন করুন!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরের জ্ঞানের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটা যুক্তি খণ্ডন করুন!
  • প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “মনের নূতনীকরণ” করা
  • “আপন আপন মনের ভাবে . . . নবীনীকৃত হও”
  • যেভাবে আমাদের মনের ভাব পরিবর্তন করা যায়
  • “বিশ্বাসে দৃঢ়ীভূত” হোন
  • আপনি কি রূপান্তরিত হয়েছেন?
    ২০১৩ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বাইবেল কি এখনও আপনার জীবনকে পরিবর্তন করছে?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৬
  • খ্রীষ্টের মতো মনোভাব দেখান
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • কে আপনার চিন্তাভাবনার উপর প্রভাব ফেলে?
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
আরও দেখুন
প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৯
w19 জুন পৃষ্ঠা ৮-১৩

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ২৪

ঈশ্বরের জ্ঞানের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিটা যুক্তি খণ্ডন করুন!

“আমরা বিতর্ক সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছি।”—২ করি. ১০:৫.

গান সংখ্যা ১৮ ঈশ্বরের অনুগত প্রেম

সারাংশa

১. অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের উদ্দেশে পৌল কোন সতর্কবাণী দিয়েছিলেন?

“এই যুগের অনুরূপ হইও না।” (রোমীয় ১২:২) পৌল এই কথাগুলো প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন। কেন তিনি ঈশ্বরের কাছে উৎসর্গীকৃত এবং পবিত্র আত্মার দ্বারা অভিষিক্ত পুরুষ ও নারীদের এই দৃঢ় সতর্কবাণী দিয়েছিলেন?—রোমীয় ১:৭.

২-৩. কীভাবে শয়তান আমাদের যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু কীভাবে আমরা আমাদের মনের মধ্যে দৃঢ়ভাবে গেঁথে থাকা বিষয়গুলো উপড়ে ফেলতে পারি?

২ পৌল চিন্তিত ছিলেন কারণ কোনো কোনো খ্রিস্টান খুব সম্ভবত শয়তানের জগতের মাধ্যমে তুলে ধরা ক্ষতিকর যুক্তি ও দর্শনবিদ্যার দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছিল। (ইফি. ৪:১৭-১৯) আমাদের মধ্যে যেকোনো ব্যক্তি এর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। শয়তান হল এই বিধিব্যবস্থার শাসক আর সে আমাদের যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনেক ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা যদি গুরুত্বপূর্ণ অথবা সুপরিচিত ব্যক্তি হয়ে উঠতে চাই, তা হলে সে এই আকাঙ্ক্ষাকে ব্যবহার করে আমাদের যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। সে হয়তো এমনকী আমাদের পটভূমি, আমাদের সংস্কৃতি অথবা আমাদের শিক্ষার কোনো কোনো দিককে ব্যবহার করে তার মতো করে চিন্তা করাতে চায়।

৩ আমাদের মনের মধ্যে “দুর্গসমূহ” বা দৃঢ়ভাবে গেঁথে থাকা বিষয়গুলো কি উপড়ে ফেলা সম্ভব? (২ করি. ১০:৪) লক্ষ করুন পৌল কী উত্তর দিয়েছিলেন: “আমরা বিতর্ক” বা যুক্তি “সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু ভাঙ্গিয়া ফেলিতেছি,” বা খণ্ডন করছি “এবং সমুদয় চিন্তাকে বন্দি করিয়া খ্রীষ্টের আজ্ঞাবহ করিতেছি।” (২ করি. ১০:৫) হ্যাঁ, যিহোবার সাহায্যে আমরা ভুল চিন্তাভাবনা কাটিয়ে উঠতে পারি। ঠিক যেমন ওষুধ বিষের ক্ষতিকর প্রভাবকে কাটিয়ে ওঠার জন্য সাহায্য করতে পারে, একইভাবে ঈশ্বরের বাক্য শয়তানের জগতের মন্দ প্রভাবকে কাটিয়ে ওঠার জন্য আমাদের সাহায্য করতে পারে।

“মনের নূতনীকরণ” করা

৪. বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা শেখার সময়ে আমাদের মধ্যে অনেককে কোন পরিবর্তনগুলো করতে হয়েছিল?

৪ আপনি যখন বাইবেল প্রকৃতপক্ষে যা শিক্ষা দেয়, তা শিখেছিলেন এবং যিহোবার সেবা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন আপনাকে যে-পরিবর্তনগুলো করতে হয়েছিল, সেগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। এর জন্য আমাদের মধ্যে অনেককে বিভিন্ন ধরনের মন্দ অভ্যাস ত্যাগ করতে হয়েছিল। (১ করি. ৬:৯-১১) যিহোবার সাহায্যে এই পাপপূর্ণ অভ্যাসগুলো কাটিয়ে উঠতে পেরে আমরা কতই-না কৃতজ্ঞ!

৫. রোমীয় ১২:২ পদে কোন দুটো পদক্ষেপের বিষয়ে ব্যাখ্যা করা হয়েছে?

৫ তবে, আমরা যেন কখনোই মনে না করি, আমাদের আর কোনো পরিবর্তন করার প্রয়োজন নেই। এমনকী আমরা যদিও সেই গুরুতর পাপগুলো করা বন্ধ করে দিয়েছি, যেগুলো আমরা বাপ্তিস্মের আগে করেছিলাম, তারপরও আমাদের এমন যেকোনো বিষয় এড়িয়ে চলার জন্য ক্রমাগত কঠোর প্রচেষ্টা করতে হবে, যেগুলো আমাদের সেই গুরুতর পাপগুলো পুনরায় করার জন্য প্রলুব্ধ করতে পারে। কীভাবে আমরা এই প্রচেষ্টা করতে পারি? পৌল বলেছিলেন: “এই যুগের অনুরূপ হইও না, কিন্তু মনের নূতনীকরণ দ্বারা স্বরূপান্তরিত হও।” (রোমীয় ১২:২) তাই, আমাদের অবশ্যই দুটো পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রথমত, আমাদের এই জগতের ‘অনুরূপ হওয়া’ বা এর দ্বারা প্রভাবিত হওয়া বন্ধ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমাদের “মনের নূতনীকরণ” বা মনোভাব পরিবর্তন করার দ্বারা “স্বরূপান্তরিত” হতে হবে।

আমরা কি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়েছি, না কি কেবল বাইরে থেকে দেখে এমনটা মনে হচ্ছে?

একজন যুবক দাড়ি কাটেননি এবং অপরিপাটি অবস্থায় রয়েছেন কিন্তু তিনি নিজের একটা ছবি ধরে আছেন, যেখানে তিনি দাড়ি কেটে পরিচ্ছন্ন রয়েছেন এবং শার্ট ও টাই পড়ে আছেন

রোমীয় ১২:২ পদে যে-গ্রিক শব্দকে “স্বরূপান্তরিত” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়ে একেবারে নতুন কিছু হওয়াকে নির্দেশ করে, যেমন শুঁয়োপোকা থেকে প্রজাপতি হওয়া। স্বরূপান্তরিত হওয়ার অর্থ হল আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করা যেমন আমাদের চরিত্র, আমাদের স্বভাব। এর বিপরীতে, ২ করিন্থীয় ১১:১৩-১৫ পদে যে-গ্রিক শব্দকে “বেশ ধারণ করে” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটা কেবল বাহ্যিক বিষয়গুলো পরিবর্তন করাকে বোঝায়।

৬. মথি ১২:৪৩-৪৫ পদে বলা যিশুর কথাগুলোর পিছনে যে-ধারণা রয়েছে, সেখান থেকে আমরা কী শিখি?

৬ পৌল যে-স্বরূপান্তরের বিষয়ে উল্লেখ করেছিলেন, সেটার সঙ্গে বাহ্যিক পরিবর্তনের চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত রয়েছে। এটা আমাদের ব্যক্তিত্বের সমস্ত দিককে প্রভাবিত করে। (“আমরা কি সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত হয়েছি, না কি কেবল বাইরে থেকে দেখে এমনটা মনে হচ্ছে?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।) আমাদের মনকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে হবে, যার মধ্যে রয়েছে আমাদের মনোভাব, অনুভূতি ও আকাঙ্ক্ষা। তাই আমাদের সবাইকে নিজেদের জিজ্ঞেস করতে হবে, ‘একজন খ্রিস্টান হওয়ার জন্য আমি যে-পরিবর্তনগুলো করছি, সেগুলো কি কেবল বাহ্যিক, না কি আমি মনে-প্রাণে একজন প্রকৃত খ্রিস্টান হয়ে উঠছি?’ যিশু মথি ১২:৪৩-৪৫ পদে বলা তাঁর কথায় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, কী করার প্রয়োজন রয়েছে। (পড়ুন।) সেই কথাগুলোর পিছনে যে-ধারণা রয়েছে, সেটা এই গুরুত্বপূর্ণ সত্যকে তুলে ধরে: আমাদের মন থেকে মন্দ চিন্তাভাবনা দূর করে দেওয়াই যথেষ্ট নয়; সেই স্থান ঈশ্বরের অনুমোদিত চিন্তাভাবনার দ্বারা পূরণ করতে হবে।

“আপন আপন মনের ভাবে . . . নবীনীকৃত হও”

৭. কীভাবে আমরা নিজেদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করতে পারি?

৭ আমাদের পক্ষে কি নিজেদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করা সম্ভব? ঈশ্বরের বাক্য উত্তর দেয়: তোমরা “আপন আপন মনের ভাবে যেন ক্রমশঃ নবীনীকৃত হও, এবং সেই নূতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে “পরিধান কর, যাহা সত্যের ধার্ম্মিকতায় ও সাধুতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট হইয়াছে।” (ইফি. ৪:২৩, ২৪) হ্যাঁ, আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করা সম্ভব। তবে এমনটা করা সহজ নয়। আমাদের কেবল মন্দ আকাঙ্ক্ষা প্রতিরোধ করা এবং মন্দ কাজ করা বন্ধ করার চেয়ে আরও বেশি কিছু করতে হবে। আমাদের ‘মনের ভাবকে’ পরিবর্তন করতে হবে। এর অন্তর্ভুক্ত হল আমাদের আকাঙ্ক্ষা, আমাদের চিন্তাভাবনা ও আমাদের মনোভাবকে পরিবর্তন করা। আর এর জন্য ক্রমাগত প্রচেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে।

৮-৯. কীভাবে একজন ভাইয়ের উদাহরণ আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে?

৮ আসুন, আমরা একজন ভাইয়ের উদাহরণ বিবেচনা করি, যিনি অতীতে একজন দৌরাত্ম্যপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মদ খাওয়া ও মারামারি করা বন্ধ করে দেওয়ার পর বাপ্তিস্ম নেওয়ার জন্য যোগ্য হয়ে ওঠেন। এটা তার এলাকার লোকেদের কাছে এক উত্তম সাক্ষ্য বহন করে। কিন্তু, বাপ্তিস্মের অল্প কিছু দিন পরই একটা সন্ধ্যায় তিনি অপ্রত্যাশিত এক পরীক্ষার মুখোমুখি হন। একজন মাতাল তার বাড়িতে আসেন এবং মারামারি করার জন্য তাকে চ্যালেঞ্জ করেন। শুরুতে ভাই নিজের মারামারি করার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিরোধ করেন। কিন্তু, পরিশেষে সেই ব্যক্তি যখন যিহোবার নামে খারাপ কথা বলেন, তখন ভাইয়ের ধৈর্যের বাঁধ ছাড়িয়ে যায়। তিনি বাইরে যান এবং সেই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারেন। সমস্যাটা কোথায় ছিল? যদিও বাইবেল অধ্যয়ন তাকে মারামারি করার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিরোধ করতে সাহায্য করেছিল কিন্তু তিনি তখনও নিজের মনের ভাব পরিবর্তন করতে পারেননি। অন্যভাবে বললে, তিনি তখনও তার ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করতে পারেননি।

৯ তবে, এই ভাই পরিবর্তিত হওয়া বন্ধ করে দেননি। (হিতো. ২৪:১৬) প্রাচীনদের সাহায্যে তিনি ক্রমাগত উন্নতি করে চলেন। একসময়ে তিনি প্রাচীন হিসেবে সেবা করার যোগ্য হয়ে ওঠেন। তারপর, এক সন্ধ্যায় কিংডম হলের বাইরে তিনি প্রায় একই ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হন, যেটার মুখোমুখি তিনি কয়েক বছর আগে হয়েছিলেন। একজন মাতাল অন্য একজন প্রাচীনকে প্রায় মারতে যাচ্ছিলেন। আমাদের সেই ভাই কী করেন? তিনি শান্ত ও নম্রভাবে সেই মাতালের সঙ্গে কথা বলেন, তাকে শান্ত হতে সাহায্য করেন আর এমনকী তাকে বাড়ি পৌঁছাতে সাহায্য করেন। কেন আমাদের ভাই এই বারে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখান? আমাদের ভাই নিজের মনের ভাব পরিবর্তন করেছেন। তিনি সত্যিই একজন শান্তিপূর্ণ ও নম্র ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। আর এটা যিহোবার প্রশংসা নিয়ে আসে!

১০. আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করার জন্য আমাদের অবশ্যই কী করতে হবে?

১০ এই পরিবর্তনগুলো রাতারাতি হয় না অথবা আপনা-আপনি হয় না। আমাদের হয়তো অনেক বছর ধরে কঠোর প্রচেষ্টা করতে হয়। (২ পিতর ১:৫) এই পরিবর্তনগুলো দীর্ঘ সময় ধরে যিহোবার সেবা করলেই ঘটে না। আমাদের ভিতরের ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করতে হবে। বেশ কয়েকটা প্রাথমিক পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের এই পরিবর্তন করার জন্য সাহায্য করবে। আসুন, আমরা সেগুলোর কয়েকটা নিয়ে পরীক্ষা করি।

যেভাবে আমাদের মনের ভাব পরিবর্তন করা যায়

একজন বোন প্রার্থনা করার, আয়নায় নিজেকে দেখার সময়ে ধ্যান করার এবং উত্তম বন্ধুবান্ধব বাছাই করার মাধ্যমে মনের ভাব পরিবর্তন করছেন

১১. কীভাবে প্রার্থনা আমাদের মনের ভাব পরিবর্তন করতে সাহায্য করে?

১১ প্রথম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল প্রার্থনা করা। আমাদের গীতরচকের মতো প্রার্থনা করতে হবে: “হে ঈশ্বর, আমাতে বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ সৃষ্টি কর, আমার অন্তরে সুস্থির আত্মাকে নূতন করিয়া দেও।” (গীত. ৫১:১০) আমাদের যে মনের ভাব পরিবর্তন করার প্রয়োজন রয়েছে, আমাদের অবশ্যই সেটা স্বীকার করতে হবে এবং যিহোবার কাছে সাহায্য চাইতে হবে। কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি, যিহোবা আমাদের পরিবর্তন করতে সাহায্য করবেন? যিহিষ্কেলের দিনে যিহোবা কঠিন হৃদয়ের ইস্রায়েলীয়দের প্রতি যা করার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেখান থেকে আমরা উৎসাহ পেতে পারি: “আমি তাহাদিগকে একই হৃদয় দান করিব, ও তোমাদের অন্তরে এক নূতন আত্মা স্থাপন করিব; আর . . . তাহাদিগকে মাংসময় হৃদয় দিব,” যে-হৃদয় ঈশ্বরের নির্দেশনা অনুসরণ করতে ইচ্ছুক হবে। (যিহি. ১১:১৯) যিহোবা সেই ইস্রায়েলীয়দের পরিবর্তন করার জন্য সাহায্য করতে ইচ্ছুক ছিলেন এবং তিনি আমাদেরও সাহায্য করতে ইচ্ছুক।

১২-১৩. (ক) গীতসংহিতা ১১৯:৫৯ পদ অনুযায়ী কী নিয়ে আমাদের ধ্যান করতে হবে? (খ) আপনার নিজেকে কোন প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করা উচিত?

১২ দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল ধ্যান করা। আমরা যখন প্রতিদিন সতর্কতার সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য পড়ি, তখন আমাদের ধ্যান করার জন্য অর্থাৎ গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য সময় করে নিতে হবে, যাতে আমরা সেই চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিগুলো শনাক্ত করতে পারি, যেগুলো আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১১৯:৫৯; ইব্রীয় ৪:১২; যাকোব ১:২৫) আমাদের অবশ্যই জগতের ধারণার দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যেকোনো চিন্তাভাবনা ও অনুভূতিকে শনাক্ত করতে হবে। আমাদের সততার সঙ্গে নিজেদের দুর্বলতাগুলো স্বীকার করতে হবে আর তারপর সেই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করতে হবে।

১৩ উদাহরণ স্বরূপ, নিজেকে জিজ্ঞেস করুন: ‘আমার হৃদয়ে কি বিন্দুমাত্র “মাৎসর্য্য” বা হিংসা রয়েছে?’ (১ পিতর ২:১) ‘আমি কি আমার পটভূমি, শিক্ষাগত যোগ্যতা অথবা আর্থিক অবস্থানের কারণে অন্যদের চেয়ে নিজেকে বড়ো বলে মনে করি?’ (হিতো. ১৬:৫) ‘আমি কি সেই ব্যক্তিদের নীচু চোখে দেখি, যাদের আমার মতো সামাজিক পদমর্যাদা নেই অথবা যারা ভিন্ন পটভূমি থেকে এসেছে?’ (যাকোব ২:২-৪) ‘আমি কি শয়তানের জগতের দ্বারা প্রস্তাবিত বিষয়গুলোর প্রতি আকৃষ্ট হই?’ (১ যোহন ২:১৫-১৭) ‘আমি কি অনৈতিক ও দৌরাত্ম্যপূর্ণ আমোদপ্রমোদের প্রতি আকৃষ্ট হই?’ (গীত. ৯৭:১০; ১০১:৩; আমোষ ৫:১৫) আপনি যখন এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেবেন, তখন আপনি হয়তো এটা বুঝতে পারবেন যে, কোথায় আপনাকে উন্নতি করতে হবে। আমরা যখন দৃঢ়ভাবে গেঁথে থাকা এই ধরনের চিন্তাভাবনা অথবা অনুভূতি পরিবর্তন করায় সফল হব, তখন আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতাকে খুশি করব।—গীত. ১৯:১৪.

১৪. কেন উত্তম বন্ধুবান্ধব বাছাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ?

১৪ তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল উত্তম বন্ধুবান্ধব বাছাই করা। আমরা এটা উপলব্ধি করি অথবা না-ই করি, আমরা যাদের সঙ্গে মেলামেশা করি, তাদের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হই। (হিতো. ১৩:২০) কাজের জায়গায় অথবা স্কুলে আমরা সম্ভবত এমন ব্যক্তিদের মধ্যে থাকি, যারা ঈশ্বরের অনুমোদিত চিন্তাভাবনা গড়ে তোলার জন্য আমাদের উৎসাহিত করবে না। তবে, আমরা আমাদের খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে উত্তম বন্ধুবান্ধব খুঁজে পেতে পারি। সেখানে আমরা “প্রেম ও সৎক্রিয়া” দেখানোর জন্য অনুপ্রাণিত অথবা উৎসাহিত হই।—ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.

“বিশ্বাসে দৃঢ়ীভূত” হোন

১৫-১৬. কীভাবে শয়তান আমাদের চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে?

১৫ মনে রাখবেন, শয়তান আমাদের চিন্তাভাবনাকে পরিবর্তন করার জন্য দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। আমাদের চিন্তাভাবনার উপর ঈশ্বরের বাক্যের সত্যের যে-উত্তম প্রভাব রয়েছে, সেটাকে নষ্ট করার জন্য শয়তান সমস্ত ধরনের যুক্তি ব্যবহার করে।

১৬ শয়তান আমাদেরও সেই একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে, যেটা সে এদন উদ্যানে হবাকে জিজ্ঞেস করেছিল: “ঈশ্বর কি বাস্তবিক” বা সত্যিই “বলিয়াছেন, . . . ?” (আদি. ৩:১) শয়তানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই জগতে আমরা প্রায়ই এমন প্রশ্নগুলো শুনি, যেগুলো আমাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে সন্দেহ জাগিয়ে তুলতে পারে, যেমন: ‘ঈশ্বর কি সত্যিই সমলিঙ্গের ব্যক্তিদের মধ্যে বিয়েকে অনুমোদন করেন না? ঈশ্বর কি সত্যিই চান যেন আপনি বড়োদিন অথবা জন্মদিন উদ্‌যাপন না করেন? আপনার ঈশ্বর কি সত্যিই আপনার কাছ থেকে আশা করেন যেন আপনি রক্ত সঞ্চালন না করেন? একজন প্রেমময় ঈশ্বর হিসেবে তিনি কি সত্যিই আপনার কাছ থেকে আশা করেন যেন আপনি সমাজচ্যুত হওয়া প্রিয় ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা না করেন?’

১৭. আমরা যখন আমাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে সন্দেহ জাগিয়ে তোলার মতো প্রশ্নের মুখোমুখি হই, তখন আমাদের কী করা উচিত এবং কলসীয় ২:৬, ৭ পদ যেমন দেখায়, এর ফল কী হতে পারে?

১৭ আমাদের নিজেদের বিশ্বাস সম্বন্ধে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে হবে। আমরা যদি আমাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা না করি, তা হলে সেই প্রশ্নগুলো আমাদের মনে বিভিন্ন গুরুতর সন্দেহ জাগিয়ে তুলতে পারে। আর এই সন্দেহগুলো পরিশেষে আমাদের চিন্তাভাবনাকে বিকৃত করে দিতে এবং আমাদের বিশ্বাসকে ভেঙে দিতে পারে। তা হলে, আমাদের কী করার প্রয়োজন রয়েছে? ঈশ্বরের বাক্য আমাদের মনকে রূপান্তরিত করতে বলে, যাতে আমরা পরীক্ষা করে জানতে পারি, “ঈশ্বরের ইচ্ছা কি, যাহা উত্তম ও প্রীতিজনক ও সিদ্ধ।” (রোমীয় ১২:২) নিয়মিত অধ্যয়ন করার মাধ্যমে আমরা পরীক্ষা করে জানতে পারি, আমরা বাইবেল থেকে যা শিখেছি, তা সত্য। আমরা একেবারে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে পারি যে, যিহোবার মানগুলো সঠিক। এ ভাবে, আমরা এমন একটা গাছের মতো হব, যেটা শক্তিশালী শিকড়ের কারণে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে অর্থাৎ আমরা “বিশ্বাসে দৃঢ়ীভূত” হব।—পড়ুন, কলসীয় ২:৬, ৭.

১৮. কোন বিষয়গুলো শয়তানের জগতের মন্দ প্রভাবের হাত থেকে আমাদের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে?

১৮ অন্য কোনো ব্যক্তি আপনার হয়ে আপনার বিশ্বাসকে দৃঢ়ীভূত করতে পারবে না। তাই, আপনার মনের ভাবকে ক্রমাগত নতুন করে তুলুন। ক্রমাগত প্রার্থনা করুন; যিহোবার কাছে পবিত্র আত্মা চেয়ে সাহায্যভিক্ষা করুন। গভীরভাবে ধ্যান করুন; আপনার চিন্তাভাবনা ও মনোভাব নিয়ে ক্রমাগত পরীক্ষা করুন। উত্তম বন্ধুবান্ধব খোঁজার চেষ্টা করুন; এমন ব্যক্তিদের মাঝে থাকুন, যারা আপনার চিন্তাভাবনাকে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করবে। আপনি যখন এমনটা করবেন, তখন আপনি শয়তানের জগতের মন্দ প্রভাবগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন আর “বিতর্ক” বা যুক্তি “সকল এবং ঈশ্বর-জ্ঞানের বিরুদ্ধে উত্থাপিত সমস্ত উচ্চ বস্তু” সফলতার সঙ্গে ভেঙে ফেলতে বা খণ্ডন করতে পারবেন।—২ করি. ১০:৫.

আপনি কীভাবে উত্তর দেবেন?

  • রোমীয় ১২:২ পদে কোন দুটো পদক্ষেপের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে?

  • আমাদের মনের ভাব পরিবর্তন করার জন্য আমাদের কোন তিনটে বিষয় করতে হবে?

  • কলসীয় ২:৬, ৭ পদে প্রাপ্ত পরামর্শ কীভাবে আমরা কাজে লাগাতে পারি?

গান সংখ্যা ৪৮ প্রতিদিন যিহোবার সঙ্গে গমনাগমন করা

a আমাদের মনোভাব অথবা চিন্তাভাবনা সবসময় আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা, আমাদের প্রথা আর আমাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার দ্বারা প্রভাবিত হয়। আমরা হয়তো উপলব্ধি করতে পারি, নির্দিষ্ট কিছু ভুল চিন্তাভাবনা আমাদের ব্যক্তিত্বের একটা অংশ হয়ে গিয়েছে আর সেগুলো কাটিয়ে ওঠা কঠিন বলে মনে হচ্ছে। এই প্রবন্ধ দেখাবে, কীভাবে আমরা আমাদের মধ্যে থাকা যেকোনো ভুল চিন্তাভাবনা কাটিয়ে উঠতে পারি।

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার