যীশুর অনুকরণে সত্যকে প্রত্যহ ঘোষণা করা
১ যীশু যখন পৃথিবীতে এসেছিলেন, তখন তার একটি বিশেষ কাজ সম্পাদন করার ছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে এটি সহজ ছিল: ‘সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া।’ (যোহন ১৮:৩৭) তিনি তাঁর পিতার অপূর্ব গুণাবলি ও উদ্দেশ্যগুলি সম্বন্ধে সত্যটি ঘোষণা করেছিলেন। এই কাজটি তাঁর কাছে খাদ্যের মত ছিল; তাঁর সমগ্র জীবন সেই কাজের উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। (যোহন ৪:৩৪) লূক বর্ণনা করেছিলেন যে যীশু “প্রতিদিন ধর্ম্মধামে উপদেশ দিতেন।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (লূক ১৯:৪৭) যে সময় যীশু পেয়েছিলেন তিনি তার সদ্ব্যবহার করেছিলেন। (যোহন ৯:৪) তাঁর মৃত্যুর অল্প কিছুদিন পরেই, তাঁর পিতার সম্বন্ধে তিনি ঘোষণা করতে পেরেছিলেন: “তুমি আমাকে যে কার্য্য করিতে দিয়াছ, তাহা সমাপ্ত করিয়া আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করিয়াছি।”—যোহন ১৭:৪.
২ যিহোবা যা কিছু করেছেন তার প্রতি উপলব্ধিবোধে যখন আমাদের হৃদয় ভরে যায়, তখন একইভাবে আমরা নিয়মিতভাবে তাঁর সম্বন্ধে কথা বলতে বাধ্য হই। আমরা ঠিক যীশুর শিষ্যদের মত হই যারা নির্ভীকতার সাথে ঘোষণা করেছিল: “আমরা যাহা দেখিয়াছি ও শুনিয়াছি, তাহা না বলিয়া থাকিতে পারি না।” (প্রেরিত ৪:২০) তারা যিহোবার সম্বন্ধে ক্রমাগত কথা বলত, কারণ বিবরণ জানায় যে, “তাঁহারা প্রতিদিন . . . ক্ষান্ত হইতেন না।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (প্রেরিত ৫:৪২) আমাদের নিজেদের জিজ্ঞাসা করা উচিত, ‘আমি কি আমার শিক্ষক, যীশুর একজন অনুকরণকারী?’
৩ তৎপরতার সাথে প্রচার: যীশু ভাববাণী করেছিলেন যে যখন রাজ্যের বার্তা সমগ্র জগতে প্রচারিত হবে, “তখন শেষ উপস্থিত হইবে।” (মথি ২৪:১৪) আমাদের কাজের গুরুত্ব ও তৎপরতার সম্পর্কে এটি আমাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করা উচিত। আক্ষরিকভাবে লক্ষ লক্ষ ব্যক্তির জীবন বিপন্ন থাকার দরুন আমরা এর থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ অথবা উপকারজনক অন্য কোন কিছু করা খুঁজে পাই না। যেহেতু এই বিধিব্যবস্থার শেষ একেবারে সন্নিকট, তাই এই কাজকে শেষ করার জন্য যে অবশিষ্ট সময়টুকু আছে তা খুবই কম!
৪ বিভিন্ন সংবাদ জানায় যে যিহোবা দ্রুত গতিতে মেষতুল্য ব্যক্তিদের একত্রিত করছেন। (যিশা. ৬০:২২) পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে, লোকেরা আক্ষরিকভাবে সত্যের জন্য জমায়েত হচ্ছে আর ফলস্বরূপ আনন্দের সাথে ঘোষণা করছে: “আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।” (সখ. ৮:২৩) অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে যীশুর বাক্যগুলি আরও বেশি সত্য হচ্ছে: “শস্য প্রচুর বটে, কিন্তু কার্য্যকারী লোক অল্প; . . . শস্যক্ষেত্রের স্বামীর নিকটে প্রার্থনা কর, যেন তিনি নিজ শস্যক্ষেত্রে কার্য্যকারী লোক পাঠাইয়া দেন।” (মথি ৯:৩৭, ৩৮) সেটি কি যীশুর শিষ্যদের মত আমাদের উদ্যোগী হতে অনুপ্রাণিত করে না যারা “নিরন্তর ধর্ম্মধামে থাকিয়া ঈশ্বরের ধন্যবাদ করিতে” থাকতেন? (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—লূক ২৪:৫৩.
৫ সত্যকে প্রত্যহ পরিচিত করান: অন্যদের কাছে সত্যকে জ্ঞাত করার উপায়গুলির জন্য প্রতিদিন আমাদের অনুসন্ধান করতে হবে। সুযোগগুলি সহজেই পাওয়া যায়। যখন আপনি কেনাকাটা করছেন তখন কি আপনি দোকানদারকে একটি ট্র্যাক্ট অর্পণ করার কথা চিন্তা করেছেন? অথবা যাদের আপনি ঘরে পাননি তাদের চিঠি লেখা সম্বন্ধেই বা কী? যারা সাড়া দেবে বলে আপনি মনে করেন এমন কোন বন্ধু অথবা পরিচিতকে কয়েক মিনিটের জন্য কি আপনি ফোন করতে পারেন? সম্ভবত, আপনি প্রতিদিন অন্যদের সাথে আপনার আশাকে বন্টন করে নিতে অন্যান্য অনেক সুযোগগুলির কথা চিন্তা করতে পারেন। যদি আপনি প্রচেষ্টা করেন এবং সামান্য একটু সাহস প্রদর্শন করেন, তাহলে যিহোবা আপনাকে সাহায্য করবেন।—১ থিষল. ২:২.
৬ তাই, যখন আমরা আমাদের প্রতিদিনের কাজ শুরু করি, আমাদের নিজেদের জিজ্ঞাসা করা উচিত, ‘যদি আজই সুযোগ খোলা থাকে, তাহলে আমি কি কারও সাথে আমার আশাকে বন্টন করার জন্য নিজে থেকে এগিয়ে যাব?’ যীশুর উদাহরণ অনুকরণ করুন, যিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন কেন তাঁকে এই পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল: “আমাকে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করিতে হইবে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (লূক ৪:৪৩) যদি আমরা আমাদের শিক্ষকের মত হতে চাই, তাহলে আমরাও একইরকম করব।—লূক ৬:৪০.