ক্ষেত্রের শস্য এখনই কাটবার মতো শ্বেতবর্ণ হয়েছে
১. কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলছে?
১ একজন শমরীয় স্ত্রীলোকের কাছে সাক্ষ্যদান করার পর, যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন: “চক্ষু তুলিয়া ক্ষেত্রের প্রতি দৃষ্টিপাত কর, শস্য এখনই কাটিবার মত শ্বেতবর্ণ হইয়াছে।” (যোহন ৪:৩৫, ৩৬) ইতিমধ্যেই এক আধ্যাত্মিক শস্যচ্ছেদনের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল আর যিশু আগে থেকেই সেই কাজের পৃথিবীব্যাপী প্রসার সম্বন্ধে বলতে পেরেছিলেন। স্বর্গে তাঁর অবস্থান থেকেই, যিশু শস্যচ্ছেদনের কাজে পুরোপুরিভাবে জড়িত রয়েছেন। (মথি ২৮:১৯, ২০) এই কাজ যে এটার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর সময়ে ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাবে সেটার কোন ইঙ্গিত রয়েছে?
২. কোন উন্নতিগুলো দেখায় যে, পৃথিবীব্যাপী শস্যচ্ছেদনের কাজ বৃদ্ধি পাচ্ছে?
২ বিশ্বব্যাপী শস্যচ্ছেদন: ২০০৯ সালের পরিচর্যা বছরে পৃথিবীব্যাপী প্রকাশকদের মধ্যে ৩.২ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছিল। যে-দেশ ও জায়গাগুলোতে প্রচার কাজের ওপর সীমা আরোপ করা হয়েছে সেখানে ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ করা গিয়েছিল। প্রতি মাসে গৃহ বাইবেল অধ্যয়নের যে-রিপোর্ট করা হয়েছিল সেই সংখ্যা ৭৬,১৯,০০০-কে ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা প্রকাশকের শীর্ষ সংখ্যার চেয়ে বেশি এবং আগের বছর অধ্যয়নের যে-রিপোর্ট করা হয়েছিল সেটার চেয়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ বেশি। অনেক জায়গায় কাজ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অগ্রগামীদের জন্য আরও বেশি অনুরোধ আসছে। একটার পর একটা দেশে, বিদেশি ভাষার ক্ষেত্রগুলো প্রচুর পরিমাণে শস্য উৎপন্ন করছে। এটা স্পষ্ট যে, শস্যচ্ছেদনের শেষের সময়ে যিহোবা এই কাজকে ত্বরান্বিত করছেন। (যিশা. ৬০:২২) আপনার কি আপনার ‘ক্ষেত্র’ সম্বন্ধে এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে?
৩. তাদের স্থানীয় শস্যচ্ছেদনের বিষয়ে কেউ কেউ হয়তো কোন উপসংহারে আসতে পারে?
৩ আপনার স্থানীয় শস্যচ্ছেদন: কেউ কেউ হয়তো বলতে পারে যে, “আমার এলাকা খুব বেশি ফলপ্রসূ নয়।” এটা ঠিক যে, কিছু এলাকা অন্য এলাকাগুলোর অথবা অতীতের মতো ততটা ফলপ্রসূ বলে মনে হয় না। তাই কোনো কোনো সাক্ষি হয়তো এই উপসংহারে আসতে পারে যে, সেই এলাকাগুলোতে যে-লোকেদের সাড়া দেওয়ার কথা তাদের অধিকাংশ ইতিমধ্যেই সাড়া দিয়েছে আর এখন যা করা বাকি রয়েছে তা হল অবশিষ্ট ব্যক্তিদের একত্রিত করা। প্রকৃতপক্ষে কি তাই?
৪. পরিচর্যার প্রতি আমাদের কোন উপযুক্ত মনোভাব গড়ে তোলা উচিত এবং কেন?
৪ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, শস্যচ্ছেদন হল পুরোদমে কাজ চলার এক সময়। যিশুর এই কথাগুলোতে তৎপরতার মনোভাবটি লক্ষ করুন: “শস্য প্রচুর বটে, কিন্তু কার্য্যকারী লোক অল্প; অতএব শস্যক্ষেত্রের স্বামীর নিকটে প্রার্থনা কর, যেন তিনি নিজ শস্যক্ষেত্রে কার্য্যকারী লোক পাঠাইয়া দেন।” (মথি ৯:৩৭, ৩৮) কখন ও কোথায় শস্য উৎপন্ন হয় সেটার মূলে শস্যক্ষেত্রের স্বামী যিহোবাই রয়েছেন। (যোহন ৬:৪৪; ১ করি. ৩:৬-৮) আমাদের কার্যভার কী? বাইবেল উত্তর দেয়: “তুমি প্রাতঃকালে আপন বীজ বপন কর, এবং সায়ংকালেও হস্ত নিবৃত্ত করিও না।” (উপ. ১১:৪-৬) হ্যাঁ, শস্যচ্ছেদনের কাজ যখন এর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে, তখন আমাদের হাত নিবৃত্ত করার সময় নয়!
৫. কেন আমাদের আপাতদৃষ্টিতে ফলপ্রসূ নয় এমন এলাকায় উদ্যোগের সঙ্গে প্রচার করে চলা উচিত?
৫ শস্যচ্ছেদন করে চলুন: এমনকী আমাদের এলাকায় যদি বার বার কাজ করা হয়ে থাকে এবং লোকেরা না-ও সাড়া দিয়ে থাকে, তবুও উদ্যোগ ও তৎপরতার মনোভাব নিয়ে সেখানে কাজ করার উত্তম কারণ রয়েছে। (২ তীম. ৪:২) জগতের দৃশ্যপটে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনগুলো লোকেদেরকে তাদের মনোভাবকে পরিবর্তন করতে এবং ভবিষ্যৎ সম্বন্ধে আরও গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তা করতে পরিচালিত করেছে। অল্পবয়সিরা যখন বৃদ্ধাবস্থায় পৌঁছায়, তখন তারা হয়তো নিরাপত্তা ও মনের শান্তি খুঁজে পাওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারে। আমাদের ধৈর্য হয়তো অন্যদের প্রভাবিত করতে পারে। হ্যাঁ, যারা অতীতে শোনেনি তারা হয়তো ভবিষ্যতে সাড়া দিতে পারে। এমনকী যারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের বার্তাকে প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকেও সাবধান করতে হবে। কিন্তু, এলাকায় অনেকে যদি শুধুমাত্র যে সাড়া দেয় না তাই নয় বরং সুসমাচারের বিরোধিতাও করে, তাহলে অনেক সতর্কতা অবলম্বন করার প্রয়োজন রয়েছে।—যিহি. ২:৪, ৫; ৩:১৯.
৬. আমাদের এলাকা যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তাহলে কী আমাদেরকে উদ্যোগ বজায় রাখতে সাহায্য করবে?
৬ আমাদের এলাকা যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হয়, তাহলে কী আমাদেরকে উদ্যোগ বজায় রাখতে সাহায্য করবে? ঘরে ঘরে প্রচার করা ছাড়াও, খুব সম্ভবত আমরা অন্য ধরনের পরিচর্যা, যেমন ব্যাবসায়িক এলাকায় বা টেলিফোনে সাক্ষ্যদান করায় রত থাকতে পারি। অথবা আমরা আমাদের উপস্থাপনায় রদবদল করতে পারি যাতে একটা নতুন বিষয় নিয়ে কথা বলা যেতে পারে। যারা “অনন্ত জীবনের জন্য নিরূপিত [“সঠিক প্রবণতাসম্পন্ন,” NW],” তাদেরকে খুঁজে বের করার সময় আমরা কৌশলতা ও বিচক্ষণতা প্রদর্শন করতে পারি। (প্রেরিত ১৩:৪৮) আমরা হয়তো আমাদের তালিকায় পরিবর্তন করে বিকেলবেলায় অথবা অন্য সময়গুলোতে খুব সম্ভবত লোকেরা যখন ঘরে থাকে, তখন পরিচর্যায় রত হতে পারি। আরও বেশি লোকেদের কাছে সুসমাচার নিয়ে পৌঁছানোর জন্য আমরা হয়তো একটা নতুন ভাষা শেখার প্রচেষ্টা করতে পারি। আমরা হয়তো নিয়মিত অগ্রগামীর কাজ করার দ্বারা আমাদের পরিচর্যাকে বৃদ্ধি করতে পারি। অথবা আমরা এমন কোনো জায়গায় চলে যেতে পারি যেখানে শস্যক্ষেত্রের কর্মী অল্প। শস্যচ্ছেদনের প্রতি আমাদের যদি সঠিক মনোভাব থাকে, তাহলে এই গুরুত্বপূর্ণ কাজে যতটা সম্ভব পূর্ণরূপে অংশ নেওয়ার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করব।
৭. কতদিন পর্যন্ত সংগ্রহ করার এই কাজ আমাদের চালিয়ে যাওয়া উচিত?
৭ যেহেতু শস্য সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের কাছে সীমিত সময় থাকে, তাই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা আরাম করে না বা ধীর গতি হয়ে পড়ে না। আধ্যাত্মিক শস্যচ্ছেদনের জন্যও একই ধরনের তৎপরতার মনোভাব প্রয়োজন। কতদিন পর্যন্ত সংগ্রহ করার এই কাজ আমাদের চালিয়ে যাওয়া উচিত? “যুগান্ত” বা বিধিব্যবস্থার শেষ ধরে এবং “শেষ” পর্যন্ত। (মথি ২৪:১৪; ২৮:২০) যিহোবার প্রধান পরিচারকের মতো, আমরাও সেই কাজ শেষ করতে চাই যা আস্থা সহকারে আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে। (যোহন ৪:৩৪; ১৭:৪) তাই আসুন আমরা উদ্যোগ, আনন্দ এবং এক ইতিবাচক মনোভাব সহকারে শেষ পর্যন্ত আমাদের পরিচর্যা চালিয়ে যাই। (মথি ২৪:১৩) শস্যচ্ছেদন এখনও শেষ হয়নি!
[২ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত, শস্যচ্ছেদন হল পুরোদমে কাজ চলার এক সময়