আমাদের এক কার্যভার রয়েছে
১ যীশু তাঁর অনুগামীদের “সমুদয় জাতিকে শিষ্য” করতে আদেশ দিয়েছিলেন। (মথি ২৮:১৯) পৃথিবীর চতুর্দিকে ২৩২টি দেশ এবং দ্বীপপুঞ্জগুলিতে ৫০ লক্ষের অধিক যিহোবা ঈশ্বরের প্রশংসাকারীগণ যীশুর এই আদেশের পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে জীবন্ত সাক্ষ্য প্রদান করে। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সম্বন্ধে কী? প্রচার করার এই কার্যভারকে আমরা কি গম্ভীরভাবে নিই?
২ এক নৈতিক বাধ্যবাধকতা: কার্যভার হল “নির্দেশিত কাজ সম্পাদন করার প্রতি এক আজ্ঞা।” প্রচার করার জন্য আমরা খ্রীষ্টের দ্বারা আদেশপ্রাপ্ত। (প্রেরিত ১০:৪২) প্রেরিত পৌল উপলব্ধি করেছিলেন যে এটি তার উপর সুসমাচার ঘোষণা করার এক প্রয়োজনীয়তা অথবা এক নৈতিক বাধ্যবাধকতা অর্পণ করেছিল। (১ করি. ৯:১৬) উদাহরণস্বরূপ: কল্পনা করুন ডুবে যাচ্ছে এমন একটি জাহাজে আপনি নাবিক দলের একজন। যাত্রীদের সতর্ক করে দিতে এবং তাদের জীবনতরীর দিকে পরিচালিত করতে ক্যাপ্টেন আপনাকে আদেশ দেয়। আপনি কি সেই আদেশ উপেক্ষা করবেন আর কেবলমাত্র নিজেকে রক্ষা করার প্রতি মনোযোগ দেবেন? অবশ্যই নয়। অন্যেরা আপনার উপর নির্ভর করে আছে। তাদের জীবন বিপন্ন। তাদের সাহায্য করার জন্য আপনার কার্যভার পালন করতে আপনি নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ।
৩ আমরা এক সতর্কবাণী ঘোষণা করার জন্য ঐশিকভাবে কার্যভারপ্রাপ্ত হয়েছি। যিহোবা শীঘ্রই এই সমগ্র দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষ আনবেন। লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিদের জীবন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে। অন্যদের এই বিপদকে উপেক্ষা করা এবং কেবলমাত্র নিজেদের রক্ষা সম্বন্ধে চিন্তা করা কি আমাদের জন্য সঠিক কাজ হবে? অবশ্যই না। আমরা অন্যদের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করার জন্য নৈতিকভাবে দায়বদ্ধ।—১ তীম. ৪:১৬.
৪ অনুসরণ করার জন্য বিশ্বস্ত উদাহরণগুলি: অবিশ্বস্ত ইস্রায়েলদের কাছে সতর্কবার্তা প্রদান করাকে ভাববাদী যিহিষ্কেল নিকাশযোগ্য দায়িত্ব বলে মনে করেছিলেন। যিহোবা জোরালোভাবে তাকে পরিণাম সম্বন্ধে সাবধান করে দিয়েছিলেন যদি তিনি তার দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হন: “যখন আমি দুষ্ট লোককে বলি, তুমি মরিবেই মরিবে, তখন তুমি যদি তাহাকে চেতনা না দেও, . . . তবে সেই দুষ্ট লোক নিজ অপরাধে মরিবে, কিন্তু তাহার রক্তের প্রতিশোধ আমি তোমার হস্ত হইতে লইব।” (যিহি. ৩:১৮) এমনকি তীব্র বিরোধিতার সম্মুখেও যিহিষ্কেল বিশ্বস্ততার সাথে তার কার্যভার সম্পন্ন করেছিলেন। তাই যখন যিহোবার বিচার সম্পাদিত হয়েছিল, তিনি আনন্দ করতে পেরেছিলেন।
৫ অনেক শতাব্দী পর, প্রেরিত পৌল প্রচার করার জন্য তার দায়িত্ব সম্বন্ধে লিখেছিলেন। তিনি ঘোষণা করেছিলেন: “সকলের রক্তের দায় হইতে আমি শুচি; কারণ আমি তোমাদিগকে ঈশ্বরের সমস্ত মন্ত্রণা জ্ঞাত করিতে সঙ্কুচিত হই নাই।” পৌল সাধারণ্যে এবং গৃহ থেকে গৃহে প্রচার করেছিলেন কারণ তিনি বুঝেছিলেন যে তা করতে ব্যর্থ হওয়া তাকে ঈশ্বরের সামনে রক্তের দোষে দোষী করতে পারত।—প্রেরিত ২০:২০, ২৬, ২৭.
৬ যিহিষ্কেলের মত সেই উদ্যোগ কি আমাদের আছে? প্রচার করার জন্য আমরা কি সেইরকম উত্তেজনা অনুভব করি যেমন পৌল করেছিলেন? তাদের মত আমাদের কার্যভারও একই। তাদের অনীহা, ঔদাসীন্য অথবা বিরোধিতা সত্ত্বেও অন্যদের সাবধান করতে আমরা অবশ্যই ক্রমাগত আমাদের দায়িত্ব পরিপূর্ণ করে চলব। আরও হাজার হাজার ব্যক্তিরা এখনও রাজ্যের বার্তার প্রতি সাড়া দিতে এবং ঘোষণা করতে পারে: “আমরা তোমাদের সহিত যাইব, কেননা আমরা শুনিলাম, ঈশ্বর তোমাদের সহবর্ত্তী।” (সখ. ৮:২৩) ঈশ্বরের প্রতি এবং আমাদের সহমানবদের প্রতি আমাদের প্রেম, আমাদের হাল ছেড়ে না দিতে পরিচালিত করুক। আমাদের প্রচার করার এক কার্যভার রয়েছে!