আপনার প্রচার কাজে “নিবিষ্ট” থাকুন
১ আমরা যখন পড়ি যে, করিন্থে থাকার সময় প্রেরিত পৌল তাঁবু বানানোর কাজ করতেন, তখন আমরা হয়তো মনে করতে পারি এটা তার প্রচার কাজ করার সুযোগকে কমিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু প্রেরিত ১৮:৫ পদ বলে: “পৌল বাক্যে নিবিষ্ট ছিলেন, যীশুই যে খ্রীষ্ট, ইহার প্রমাণ যিহূদীদিগকে দিতেছিলেন।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) প্রচার কাজে পৌল কেন এত নিবিষ্ট ছিলেন? যদিও করিন্থে তখন অনেকে বিশ্বাসী হয়ে গিয়েছিলেন কিন্তু প্রভু তাকে বলেছিলেন যে এখনও সেই শহরে আরও অনেককে শিষ্য করতে বাকি আছে। (প্রেরিত ১৮:৮-১১) আমাদেরও কি প্রচার কাজে নিবিষ্ট থাকার একই কারণ রয়েছে? হ্যাঁ। আরও অনেক লোকেদের পাওয়া যেতে ও সত্য শেখানো যেতে পারে।
২ এপ্রিল মাসে আরও বেশি সময় প্রচার করুন: সম্ভবত প্রত্যেক মাসে সুসমাচার প্রচারে ব্যস্ত থাকা আপনার লক্ষ্য। কিন্তু কোন কোন মাস আমাদের এই প্রচার কাজে “নিবিষ্ট” থাকার জন্য অনেক সুযোগ করে দেয়। এপ্রিল মাস হল তেমনই একটা মাস যা স্মরণার্থক মরশুমের এক বিশেষ মাস। এই গরমের সময়ে কি আপনার পরিস্থিতি আপনাকে সহায়ক অগ্রগামীর কাজ করতে বা আরও বেশি করে প্রচারে অংশ নিতে সুযোগ করে দিয়েছে? অনেক প্রকাশকেরা যারা এই কাজ করছেন তারা অনেক আশীর্বাদ পেয়েছেন। (২ করি. ৯:৬) আপনি যদি আপনার সাধ্য মতো করে থাকেন, তাহলে মনে রাখবেন যে সম্পূর্ণ মন-প্রাণ দিয়ে করা আপনার কাজে যিহোবা খুশি হন। (লূক ২১:২-৪) আপনার পরিস্থিতি যেমনই হোক, এই এপ্রিল মাসে প্রচার কাজে “নিবিষ্ট” থাকার লক্ষ্য রাখুন। আর মাসের শেষে প্রচার কাজের রিপোর্ট দিতে ভুলবেন না যাতে যিহোবার আরও বাকি লোকেদের সঙ্গে আপনার রিপোর্টও গোণা যায়।
৩ স্মরণার্থক সভায় আসা নতুন ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করুন: ভারতে গত বছর স্মরণার্থক সভায় ৪৯,১২০ জন উপস্থিত ছিলেন। এই বছরের উপস্থিতি সংখ্যা এখনও জানা যাইনি। কিন্তু রিপোর্ট দেখায় যে প্রচুর “শস্য” পাওয়ার অনেক সম্ভাবনা আছে। (মথি ৯:৩৭, ৩৮) তাই স্মরণার্থক সভায় আসা নতুন ব্যক্তিদেরকে আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য করার জন্য তাদের সঙ্গে যত তাড়াতাড়ি পারেন দেখা করুন। তাদের সঙ্গে দেখা করতে যদি দেরি করেন, তাহলে ‘পাপাত্মাকে . . . তাহাদের হৃদয়ে যাহা বপন করা হইয়াছিল, তাহা হরণ করিয়া লইতে’ সুযোগ করে দেওয়া হবে। (মথি ১৩:১৯) সঙ্গে সঙ্গে তার কাছে যাওয়া দেখাবে যে আপনি সত্যিই আপনার প্রচার কাজে “নিবিষ্ট” আছেন।
৪ নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের সাহায্য করে চলুন: ফেব্রুয়ারি মাসে নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য এক বিশেষ কাজ শুরু করা হয়েছে। এখনও যদি এমন কেউ থেকে থাকেন যাদের কাছে আধ্যাত্মিকভাবে সাহায্য করার জন্য যাওয়া হয়নি, তাহলে এপ্রিল মাস শেষ হওয়ার আগেই প্রাচীনদের তাদের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করা উচিত। প্রাচীনেরা সেই ব্যক্তির সমস্যার আসল কারণ বোঝার এবং যিহোবাকে আবার সক্রিয়ভাবে সেবা করার জন্য কীভাবে তাকে সবচেয়ে ভালভাবে সাহায্য করা যায় তার চেষ্টা করবেন। প্রেমের সঙ্গে করা এই সাহায্য দেখাবে যে প্রাচীনেরা “ঈশ্বরের যে পাল আছে” সেটাকে পালন করার দায়িত্বকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন। (১ পিতর ৫:২; প্রেরিত ২০:২৮) ১৯৯৩ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বরের প্রহরীদুর্গ (ইংরেজি) এর ২২-৩ পৃষ্ঠায় অনেক ভাল ভাল পরামর্শ দেওয়া আছে, যেগুলো প্রাচীনেরা যখন নিষ্ক্রিয় ব্যক্তিদের ওপর আসা পাঁচটা সমস্যার যে কোন একটা নিয়ে আলোচনা করবেন তখন ব্যবহার করতে পারেন। সম্ভবত এপ্রিলে কিছুজনকে প্রচারে আবার সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু করতে সাহায্য করা যেতে পারে।
৫ অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হতে আরও অনেককে সাহায্য করুন: আপনার ছেলেমেয়েরা কি সুসমাচার প্রচারের নতুন প্রকাশক হওয়ার যোগ্য হয়েছে? আপনি যাদের সঙ্গে বাইবেল অধ্যয়ন করছেন তাদের বিষয়ে কী বলা যায়? যদি এই ব্যক্তিরা প্রাচীনদের কাছ থেকে অনুমতি পেয়ে যান, তাহলে তাদের জন্য প্রচার শুরু করতে এপ্রিল মাসটা কি এক উপযুক্ত মাস হতে পারে না? যদি একজন ব্যক্তি উন্নতি করে থাকেন এবং চান ব্রোশার ও জ্ঞান বই অধ্যয়ন করা শেষ করেছেন, তাহলে দ্বিতীয় বই দিয়ে বাইবেল অধ্যয়ন চালিয়ে যাওয়া যায় যেমন, আমার বাইবেলের গল্পের বই। ছাত্রকে গভীরভাবে সত্য জানতে, অবাপ্তাইজিত প্রকাশক হিসেবে যোগ্য হতে এবং যিহোবার একজন উৎসর্গীকৃত ও বাপ্তাইজিত সাক্ষি হতে সাহায্য করা আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত।—ইফি. ৩:১৭-১৯; ১ তীম. ১:১২; ১ পিতর ৩:২১.
৬ বাইবেল ছাত্রদের পিছনে সবসময় লেগে থাকলে ও তাদের প্রতি সত্যিকারের আগ্রহ দেখালে, তারা হয়তো একসময় সত্যকে নিজের করে নেবেন। একজন সাক্ষি এক বৃদ্ধ দম্পতিকে পেয়েছিলেন যারা খুশিমনে বাইবেল অধ্যয়ন করতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু সেই দম্পতি পর পর তিন সপ্তা অধ্যয়ন করা পিছিয়ে দিতে থাকেন। শেষে অধ্যয়ন শুরু হয়েছিল। তারপর সেই দম্পতি প্রায় বলতে গেলে প্রতি সপ্তায় অধ্যয়ন বাতিল করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শেষে স্ত্রী উন্নতি করেছিলেন ও বাপ্তিস্মিত হয়েছিলেন। সেই ভাই স্মরণ করেন “বাপ্তিস্ম নেওয়ার পর আনন্দে তার চোখে জল চলে এসেছিল আর তা দেখে আমার ও আমার স্ত্রীরও আনন্দে চোখে জল চলে আসে।” হ্যাঁ, সুসমাচার প্রচারে “নিবিষ্ট” থাকায় অনেক আনন্দ আসে!
৭ বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী ও জগতের ঘটনাবলি দেখায় যে আমরা শেষ কালের গভীরে বাস করছি। এখনই সেই সময় যখন ঈশ্বরের লোকেদের অন্যদেরকে সুসমাচার জানানোর কাজে “নিবিষ্ট” থাকা দরকার। প্রেরিত পৌল নিশ্চয়তা দেন যে “প্রভুতে” এই পরিশ্রম কখনই “নিষ্ফল নয়।”—১ করি. ১৫:৫৮.