ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g৯৫ ৭/৮ পৃষ্ঠা ৭-১১
  • একসাথে প্রেমে বসবাস করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • একসাথে প্রেমে বসবাস করা
  • ১৯৯৫ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রেম​—⁠“সিদ্ধির যোগবন্ধন”
  • “পক্ব কেশ শোভার মুকুট”
  • পারিবারিক সম্পর্ককে গড়ে তোলার উপকারগুলি
  • পরস্পরকে সম্মান করার উপকারগুলি
  • দাদুদিদিমাদের শিক্ষামূলক ভূমিকা
  • ঐশিক শিক্ষার সাথে মিল রেখে কাজ করা
  • কয়েকটি সমস্যা কী?
    ১৯৯৫ সচেতন থাক!
  • দাদুদিদিমাদের ক্ষেত্রে কী ঘটছে?
    ১৯৯৫ সচেতন থাক!
  • একসঙ্গে বার্ধক্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া
    পারিবারিক সুখের রহস্য
  • বয়স্ক পিতামাতাদের সম্মান করার পুরস্কারগুলি
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৫ সচেতন থাক!
g৯৫ ৭/৮ পৃষ্ঠা ৭-১১

একসাথে প্রেমে বসবাস করা

প্রিয় দাদু ও দিদা,

তোমরা ভাল আছ? আমার মনে হয় আমার ঠান্ডা লেগেছে।

সেইদিন আমার সাথে খেলা করার জন্য ধন্যবাদ। তোমরা আমাকে পার্কে আর সাধারণ স্নানাগারে নিয়ে গিয়েছিলে। আমি খুব আনন্দ করেছিলাম।

আসছে বছর ১১ই ফেব্রুয়ারিতে, আমাদের স্কুলে কনসার্ট আছে। তোমরা যদি আবার আসতে পার, দয়া করে একবার এস।

দাদু ও দিদা, তোমরা যখন আস তখন আমাদের খুব ভাল লাগে।

নিজেদের শরীরের যত্ন নিও, আর সবসময়ে ভাল থেকো। খুব শীঘ্রই ঠান্ডা পড়বে, সাবধানে থেকো যেন ঠান্ডা না লাগে।

আমি সেই সময়ের জন্য অপেক্ষা করছি যখন তোমরা আবার এসে আমার সাথে খেলবে। ইউমি ও মাসাকিকে আমার হয়ে ভালবাসা দিও।

মিকা (জাপানি)

আপনার নাতি বা নাতনী আপনাকে কি কখনও এইধরনের চিঠি লিখেছে? যদি তা লিখে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই তা আপনাকে অনেক আনন্দ দিয়েছে। এইধরনের চিঠিগুলি দাদুদিদিমার সাথে নাতিনাতনীদের এক মধুর ও স্নেহের সম্পর্ককে প্রমাণ করে। কিন্তু এইধরনের সম্পর্ককে গড়ে তুলতে, বজায় রাখতে এবং দৃঢ় করার জন্য কিসের প্রয়োজন? আর এটি এই তিনটি বংশের ক্ষেত্রে কিভাবে উপকারজনক বলে প্রমাণীত হতে পারে?

প্রেম​—⁠“সিদ্ধির যোগবন্ধন”

রয় এবং জিন, ব্রিটেনের দুই দাদুদিদিমা, বলেন: “আমাদের মতে প্রধান বিষয়টি হল মস্তক ব্যবস্থাকে স্বীকার করা এবং পরস্পরের সাথে প্রেমের সঙ্গে চলা।” এই দুইজন যিহোবার সাক্ষী নির্দিষ্টভাবে কলসীয় ৩:​১৪ পদের উল্লেখ করেন, যেটি খ্রীষ্টীয় প্রেমকে “সিদ্ধির যোগবন্ধন” হিসাবে বর্ণনা করে। প্রেম সাধারণত সম্মান, চিন্তাপূর্বক মনোযোগ, অনুরাগ এবং পারিবারিক একতার সৃষ্টি করে। যখন বাবা কাজ থেকে বাড়িতে ফেরে তখন সমগ্র পরিবার তার কাছে ছুটে যায় তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে। পরিবারের মধ্যে যদি প্রেম থাকে তাহলে একই জিনিস ঘটে যখন দাদুদিদিমা আসেন। “দাদু আর দিদা এসেছে!” উত্তেজিত একটি শিশু চিৎকার করে ওঠে। সেই দিন সন্ধ্যায় পুরো পরিবার একসাথে নৈশভোজে বসে এবং দাদু স্থানীয় রীতি অনুসারে টেবিলে তার জন্য সংরক্ষিত প্রধান আসনটিতে বসেন। এই প্রেমপূর্ণ দৃশ্যে আপনি নিজেকে ও আপনার পরিবারকে কি কল্পনা করতে পারেন? আপনি কি এইধরনের আশীর্বাদ উপভোগ করেন?

“পক্ব কেশ শোভার মুকুট”

অবশ্যই, দাদুদিদিমার প্রতি প্রেম ও সম্মান সবসময় প্রকাশ করা উচিত, কেবলমাত্র কোন বিশেষ উপলক্ষে নয়। এই কারণে সন্তানদের সমানে শিক্ষা দেওয়ার প্রয়োজন আছে। পরিবারের মধ্যেই সন্তানেরা তাদের বাবামাদের আদর্শ অনুসরণ করে আত্মীয় ও অন্যান্যদের ভালবাসতে শেখে। অনেকগুলি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে যেমন দেখানো হয়েছে, তাদের উদাহরণ হল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাকাই, নাইজেরিয়ার, বেনিন শহরের একজন পিতা বলেন: “আমার মনে হয় যে শ্বশুর শ্বাশুড়ীকেও সম্মান করার ক্ষেত্রে আমার আদর্শ আমার সন্তানদের সাহায্য করেছে নম্র ও সম্মানসূচক হতে। আমি আমার শ্বশুর-শ্বাশুড়ীকে, ‘বাবা’ ও ‘মা’ বলে ডাকি। আমার সন্তানেরা এটা শোনে ও দেখে যে আমি তাদের আমার নিজের বাবামার মতো সম্মান করি।”

যদি নাতিনাতনীরা তাদের দাদুদিদিমাদের সম্মান দেখাতে ভুলে যায় তখন তারা যতটা না তাদের এই দোষের জন্য দুঃখ পায় কিন্তু তার চাইতে বেশি তারা আঘাত পায় এই বিষয় যে বাবামারা তাদের সংশোধন করে দেয় না বলে। ইটালির, রোম শহরের এক দাদু, ডেমিট্রিও জানান: “আমাদের প্রতি আমার মেয়ে ও জামাইয়ের ভালবাসা আমি উপলব্ধি করি যখন দেখি যে তারা কিভাবে আমাদের নাতিনাতনীদের শিক্ষা দিচ্ছে আমাদের সম্মান ও মর্যাদা দিতে।” এক এক সময়, নাতিনাতনীরা হয়ত তাদের দাদুদিদিমার প্রতি তাচ্ছিল্যের ব্যবহার দেখায় এবং মনে করে যে এরা হলেন তাদের বন্ধুর পাত্র অথবা তারা অনেক সময় এক উৎকৃষ্টতার মনোভাব প্রকাশ করে থাকে। এইধরনের যে কোন প্রবণতাকে সংশোধন করে দেওয়া হল বাবামার দায়িত্ব। পল্‌ নামে নাইজেরিয়ার একজন সাক্ষী জানান: “কিছু বছর আগে সন্তানেরা আমার মাকে একটু নিচু চোখে দেখতে আরম্ভ করে। আমি যখন এটা লক্ষ্য করলাম তখন আমি তাদের হিতোপদেশ ১৬:৩১ পদ পড়ে শোনাই যা বলে: ‘পক্বকেশ শোভার মুকুট,’ আর এছাড়াও আমি তাদের স্মরণ করিয়ে দিই যে দিদিমা হলেন আমার মা। তারা যেমন আমাকে সম্মান করে, ঠিক তেমনি তাকেও তাদের সম্মান করতে হবে। এছাড়াও আমি তাদের সাথে তোমার যৌবন​—⁠এর থেকে সর্বোত্তম উপকার পাওয়া (ইংরাজি)a বইটির ১০ অধ্যায়টি পড়ি যার বিষয় বস্তুটি ছিল ‘তুমি তোমার বাবামাকে কী চোখে দেখ?’ এখন দিদিমাকে সম্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের আর কোন সমস্যা হয় না।”

পারিবারিক সম্পর্ককে গড়ে তোলার উপকারগুলি

এমনকি পরিবারের সদস্যেরা যখন একে অপরের থেকে দূরে বসবাস করে তখনও পরস্পরের প্রতি প্রেম গড়ে তোলা যায়। স্টিভেন নামে নাইজেরিয়ার এক দাদু বলেন: “আমরা আমাদের প্রত্যেক নাতিনাতনীকে আলাদা করে চিঠি লিখি। যদিও এটা করা সহজ নয় কিন্তু এর পুরস্কারস্বরূপ যখন নাতিনাতনীদের সাথে এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তখন তা খুবই উত্তম বলে মনে হয়।” এই ক্ষেত্রে বাবামার প্রচেষ্টা অত্যন্ত প্রয়োজন। অন্যান্যেরা তাদের পরিস্থিতি অনুযায়ী ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ বজায় রাখে।

জুসেপে, ইটালির, বারি শহরের একজন দাদু, যার ১১টি নাতিনাতনী আছে, তিনি ব্যাখ্যা যে কী করে তিনি তার এই নিকট পরিবারের সদস্যদের সাথে এক উত্তম বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখতে পেরেছেন: “এই মুহূর্তে, আমার ছয়টি পরিবারের মধ্যে তিনটি পরিবার অনেক দূরে থাকে। কিন্তু এটা আমাদের মধুর সম্পর্ক ও মেলামেশাকে বিঘ্নিত করতে পারেনি। আমাদের একটা নিয়ম আছে যে বছরে একবার আমরা সকলে অর্থাৎ ২৪ জন একসাথে মিলিত হই।”

যখন দাদুদিদিমারা একলা থাকেন, তখন যদি দেখাসাক্ষাৎ, টেলিফোনে কথাবার্তা অথবা চিঠির আদানপ্রদান পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়মিতভাবে না হয় তাহলে এই সম্পর্ক অনেকটা বাহ্যিক হয়ে পড়ে। ভালবাসাকে সবসময় প্রকাশ করতে হবে। কিছু মধ্যবয়স্ক দাদুদিদিমারা অথবা যাদের উত্তম স্বাস্থ্য আছে তারা হয়ত যতক্ষণ নিজেদের দেখাশোনা করার শক্তি ও সামর্থ আছে ততক্ষণ তারা স্বাধীনভাবে থাকতে চাইতে পারেন। কিন্তু তারা যদি সম্পূর্ণভাবে নিজেদের আলাদা করে রাখার চেষ্টা করেন পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছ থেকে, তাহলে যখন প্রকৃতই তাদের ভালবাসার প্রয়োজন হবে তখন তা হয়তো সহজে তারা নাও পেতে পারেন।

মাইকেল নামক এক নাইজেরিয়ান দাদুর কাছ থেকে আরেকটি ব্যবহারিক প্রস্তাব আসে: “আমি যীশুর দেওয়া সুবর্ণ নিয়ম পালন করি​—⁠আপনি অপরের কাছ থেকে যেরকম আশা করেন আপনিও তাদের প্রতি তাই করুন। এইজন্য আমার সন্তানেরা আমাকে অত্যন্ত ভালবাসে। আমাদের মধ্যে খুব ভাল ভাববিনিময় হয়ে থাকে।” তিনি আরও বলেন: “যদি আমার নাতিনাতনীদের কেউ এমন কিছু করে যা আমাকে আঘাত দেয়, তখন আমি তাদের সাথে প্রয়োজন হলে কথা বলি। কিন্তু যদি তা এমন কিছু যা হয়ত আমার পক্ষে উপেক্ষা করা সম্ভব, তখন আমি তা সাধারণত ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করি।”

দাদুদিদিমাদের কাছ থেকে আসা ছোটখাট কিছু উপহার অথবা কোন উপকার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। সবসময় অভিযোগের পরিবর্তে দয়াসূচক ও উৎসাহজনক কিছু বাক্য পারিবারিক জীবনকে মধুর করে তোলে। নাতিনাতনীদের সাথে সময় কাটানো, তাদের মজার খেলা শেখানো এবং তাদের দিয়ে উপকারজনক কিছু টুকিটাকি কাজ করানো, বাইবেলের গল্প অথবা পরিবারের কিছু ঘটনা বলা, এগুলি সমস্তই এক উষ্ম ও স্থায়ী স্মৃতির সূচনা করতে পারে। এইধরনের ছোটছোট অথচ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলি জীবনকে আরও অধিক আনন্দদায়ক করে তোলে।

পরস্পরকে সম্মান করার উপকারগুলি

“দাদুদিদিমাদের,” চিকিৎসক গ্যাসপারে ভিলা বলেন, “সচেতন থাকতে হবে যে তারা যেন সন্তানদের গড়ে তোলার দায়িত্বের ক্ষেত্রে বাবামাদের যে কর্তৃত্ব আছে তার বিরুদ্ধাচরণ অথবা তার সাথে যেন প্রতিযোগিতা না করেন।” “তা না হলে,” তিনি বলেন, “তারা দাদুদিদিমার যে সীমা তা লঙ্ঘন করবেন এবং বাবামার যে স্থান সেটি নিয়ে নেবেন।” এই প্রস্তাবটি শাস্ত্রের সাথে একমত যা বলে যে সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাবামারই দায়িত্ব হল প্রধান।​—⁠হিতোপদেশ ৬:২০; কলসীয় ৩:⁠২০.

জীবনে তাদের অভিজ্ঞতা থাকার দরুন, দাদুদিদিমার পক্ষে উপদেশ দেওয়া সহজ। কিন্তু তাদের সতর্ক থাকতে হবে যে যেখানে প্রয়োজন নেই ও যেখানে তা গৃহীত হবে না তারা যেন সেখানে উপদেশ না দেন। রয় ও জিন বলেন: “এটা উপলব্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ যে বাবামারই প্রাথমিক দায়িত্ব হল তাদের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়া ও শাসন করা। এক এক সময় হয়ত তাদের মনে হতে পারে যে তারা অত্যন্ত কঠোর অথবা যথেষ্ট কঠোর নয়। তখনই তাদের হস্তক্ষেপ করার যে প্রবণতা তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।” মাইকেল ও শিনা, ব্রিটেনের অন্য দুই দাদুদিদিমা, তারাও এই বিষয়ে একমত: “যদি সন্তানেরা আমাদের উপদেশ চায় তাহলে আমরা তা দেব, কিন্তু আমরা এটা আশা করি না যে তারা তা মানবে এবং দুঃখও বোধ করি না যদি তারা তা না মানে।” বিবাহিত পুত্র বা কন্যার উপর ভরসা করা বয়স্ক বাবামার পক্ষে উত্তম। এইধরনের আস্থা তিন বংশের সম্পর্ককে উন্নত করে তোলে।

ভিভিয়েন ও জেন, যারা দক্ষিণ ইংল্যান্ডে থাকেন তারা সবসময় চেষ্টা করেন নাতিনাতনীদের উপর তাদের ছেলে ও বউ যাদের সাথে তারা থাকেন তাদের দেওয়া শাসনকে তুলে ধরতে: “আমরা যে ক্ষেত্রে একমত হতে পারি না সেখানে আমরা কখনও আমাদের অভিমতকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি না। তাদের বাবামাকে আমরা সমর্থন করি, সেটা বুঝতে পারার দরুন সন্তানেরা কখনও বাবামা “পরস্পরের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে না।’” এমনকি বাবামাদের অনুপস্থিতিতেও দাদুদিদিমাদের সতর্ক থাকতে হবে যে কিভাবে তারা নাতিনাতনীদের শাসন করছেন। ব্রিটেন থেকে হ্যারল্ড বলেন: “বাবামার অনুপস্থিতিতে দাদুদিদিমার দ্বারা কোন শাসন যদি প্রয়োজন হয় তাহলে তা আগে থেকে বাবামার সাথে আলোচনা করে নেওয়া উচিত।” হ্যারল্ড আরও বলেন যে নাতিনাতনীর প্রতি দয়াসুলভ অথচ দৃঢ়ভাবে কিছু বলা অথবা তাদের কাছ থেকে “বাবামা কী আশা করেন” কেবলমাত্র সেটা মনে করিয়ে দেওয়াই তাদের পক্ষে যথেষ্ট।

যখন নাইজেরিয়ার একজন দাদু, ক্রিস্টোফার, তার সন্তানের কিছু দোষ দেখতে পান, তখন তিনি তা তার নাতিনাতনীদের সামনে আলোচনা করাকে এড়িয়ে চলেন: “যখন বাবামা একা থাকে তখনই আমি প্রয়োজন মতো কোন উপদেশ দিয়ে থাকি।” বাবামাদেরও তাদের নিজস্ব ভূমিকা পালন করা উচিত এটা দেখানোর জন্য যে দাদুদিদিমার ভূমিকাও সম্মানজনক। “এটা গুরুত্বপূর্ণ,” ইটালির রোম শহরের বাসিন্দা কারলো নামে একজন পিতা বলেন, “যে কখনও যেন ছোট ছেলেমেয়েদের সামনে দাদুদিদিমা অথবা পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের দোষ ত্রুটি নিয়ে আলোচনা না করা হয়।” হিরোকো নামে জাপানের এক মা বলেন: “যখন আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ীকে কেন্দ্র করে কোন সমস্যার সৃষ্টি হয় তখন আমি প্রথমে আমার স্বামীর সাথে আলোচনা করে নিই।”

দাদুদিদিমাদের শিক্ষামূলক ভূমিকা

প্রত্যেক পরিবারের একটা নিজস্ব ইতিহাস, আচার ব্যবহার এবং অভিজ্ঞতা আছে যা একটিকে অপরটির থেকে পৃথক করে তোলে। সাধারণত, দাদুদিদিমারাই পরিবারের ঐতিহাসিক স্মৃতির সূত্রকে ধরে রাখেন। আফ্রিকার একটি প্রবাদ বাক্য অনুসারে, “প্রতিটি বৃদ্ধ ব্যক্তির যখন মৃত্যু হয় তখন তার সাথে একটি গ্রন্থাগারও পুড়ে যায়।” দাদুদিদিমারা আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলি এবং পারিবারিক মূল্যবোধ যা একটি পরিবারকে একসূত্রে গেঁথে তোলে এই সব তথ্যগুলি সরবরাহ করে থাকেন। এর সাথে যদিও ধরা হয়নি বাইবেলের সেই নৈতিক উপদেশগুলি, যেমন একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি বলেন যে যদি “যুবক ব্যক্তিদের ঐতিহাসিক কিছু স্মৃতি না থাকে, তাহলে তারা অতীতের অভিজ্ঞতার যে ভিত্তি তা ছাড়াই এবং কোনরকম মূল্যবোধ ব্যতিরেকে এক অনিশ্চয়তা ও অরক্ষিত পরিস্থিতিতে বড় হয়ে উঠবে।”​—⁠গেটানো বারলেটা, ননি এ নিপোটি (দাদুদিদিমারা ও নাতিনাতনীরা)।

নাতিনাতনীরা তাদের বাবামা এবং অন্যান্য আত্মীয়রা যখন ছোট ছিল তাদের গল্প শুনতে ভালবাসে। ছবির অ্যালবামগুলি দেখা খুবই শিক্ষামূলক ও আনন্দদায়ক হতে পারে। কতই না স্নেহ ও উষ্মতার প্রভাব পাওয়া যেতে পারে যখন দাদুদিদিমারা সেই ছবিগুলিকে কেন্দ্র করে অতীতের ঘটনাগুলি বলেন।

ব্রিটেনের দুইজন দাদুদিদিমা, যারা হলেন যিহোবার সাক্ষী রেজ ও মলি বলেন: “আমরা আনন্দ পাই যখন নাতিনাতনীদের সাথে মেলামেশা করি, বাবামায়ের সাথে তাদের নিকট সম্পর্কের মধ্যে ব্যাঘাত না ঘটিয়ে, এক সাথে কাজ করি, তাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিই, একসাথে খেলা করি, একসাথে পড়ি, কিভাবে লিখতে হয় তা দেখিয়ে দিই, তারা যখন পড়ে তা শুনি এবং প্রেমপূর্ণ আগ্রহের সাথে তাদের স্কুলের কাজগুলিকে দেখি।”

সবচাইতে মারাত্মক ভুল অনেক দাদুদিদিমারা এবং বাবামারা করে থাকেন তা হল তাদের সন্তান ও নাতিনাতনীদের শুধুমাত্র স্বাস্থ্য সম্বন্ধে চিন্তা করা। রেজ ও মলি, যাদের কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, তারা বলেন: “সবচাইতে মূল্যবান উত্তরাধিকার যা আমরা আমাদের সন্তান ও নাতিনাতনীদের দিতে পারি যখন আমরা দেখি যে তারা ঈশ্বরের বাক্যের যে সত্য জ্ঞান তার মাধ্যমে বড় হয়ে উঠছে।”​—⁠দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৯; ৩২:৭; গীতসংহিতা ৪৮:১৩; ৭৮:​৩, ৪, ৬.

ঐশিক শিক্ষার সাথে মিল রেখে কাজ করা

পবিত্র বাইবেল, ঈশ্বরের বাক্য, লোকেদের উপর “কার্য্যসাধক।” এগুলি তাদের বিভক্তিকরণের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি যেমন স্বার্থপরতা ও অহঙ্কারকে নিয়ন্ত্রণে অথবা পরিহার করতে সাহায্য করে। (ইব্রীয় ৪:১২) সেইজন্য, যারা এর শিক্ষাগুলিকে অনুশীলন করে, তারা পারিবারিক শান্তি ও একতা উপভোগ করে। বহু শাস্ত্রপদগুলির মধ্যে একটি পদ যা তিনটি বংশের মধ্যে যে ব্যবধান তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারে, তা হল ফিলিপীয় ২:​২-৪ পদ যেটি সকলকে প্রেম ও নম্রতা প্রকাশ করতে এবং একতা বজায় রাখতে ও ‘তাদের নিজেদের বিষয়ে নয়, কিন্তু পরের বিষয়েও লক্ষ্য রাখতে’ উৎসাহ দেয়।

ঐশিক শিক্ষার সাথে মিল রেখে কাজ করা দ্বারা বাবামারা এবং নাতিনাতনীরা এই উপদেশটিকে গুরুত্বের সাথে উপলব্ধি করে বস্তুগতভাবে, মানুষিকভাবে এবং আধ্যাত্মিকভাবে “বাবামার ও দাদুদিদিমার প্রত্যুপকার করিতে শিক্ষা করুক।” (১ তীমথিয় ৫:⁠৪, NW) যিহোবার প্রতি স্বাস্থ্যকর ভয় থাকার দরুন, তারা দাদুদিদিমার প্রতি গভীর সম্মান দেখিয়ে থাকে, বিশেষকরে তাঁর এই বাক্যগুলি স্মরণে রেখে: “তুমি পক্বকেশ প্রাচীনের সম্মুখে উঠিয়া দাঁড়াইবে, বৃদ্ধ লোককে সমাদর করিবে, ও আপন ঈশ্বরের প্রতি ভয় রাখিবে।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:৩২) তাদের বংশধরদের জন্য উত্তম কাজ করার দ্বারা দাদুদিদিমারা মঙ্গলভাব প্রকাশ করে থাকেন: “সৎ লোক পুত্ত্রদের পত্ত্রগণের জন্য অধিকার রাখিয়া যায়।”​—⁠হিতোপদেশ ১৩:⁠২২.

দাদুদিদিমারা, বাবামারা এবং নাতিনাতনীরা, তারা একসাথে থাকুক বা নাই থাকুক তারা সকলেই স্নেহপূর্ণ সম্পর্কের দ্বারা পারস্পরিক উপকৃত হতে পারে যার ভিত্তি হল প্রেম ও সম্মান প্রদর্শন, ঠিক যেমন হিতোপদেশ ১৭:৬ বলে: “পুত্ত্রদের পুত্ত্রগণ বৃদ্ধদিগের মুকুট, এবং পিতারাই বালকদের শোভা।” (g95 7/8)

[পাদটীকা]

a ওয়াচটাওয়ার বাইবেল অ্যান্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটি অফ নিউ ইয়র্ক, ইনক., দ্বারা প্রকাশিত।

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

পারিবারিক পুনর্মিলন পারিবারিক একতার বৃদ্ধি করতে পারে

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

যখন তুমি তোমার দাদুদিদিমাদের চিঠি লেখ তখন তারা উৎসাহিত হন

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

নাতিনাতনীদের সাথে পরিবারের অ্যালবাম দেখা এক আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা হতে পারে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার