ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • g০৫ ৭/৮ পৃষ্ঠা ৪-৯
  • চিত্রনাট্য থেকে পর্দায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • চিত্রনাট্য থেকে পর্দায়
  • ২০০৫ সচেতন থাক!
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • প্রিপ্রোডাকশন—ভিত্তি স্থাপন করা
  • প্রোডাকশন—দৃশ্যগুলোকে ফিল্মে ধারণ করা
  • পোস্টপ্রোডাকশন—অংশগুলোকে যুক্ত করা হয়
  • কোন ছবিগুলো আপনি দেখবেন?
    ২০০৫ সচেতন থাক!
  • “পরীক্ষার মধ্যেও বিশ্বস্ত”
    ২০০৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • পবিত্র শক্তির মাধ্যমে খুবই কঠিন এক কার্যভার সম্পন্ন করা হয়
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০২১
  • এই গরমে কোন কোন ছবি চলছে?
    ২০০৫ সচেতন থাক!
আরও দেখুন
২০০৫ সচেতন থাক!
g০৫ ৭/৮ পৃষ্ঠা ৪-৯

চিত্রনাট্য থেকে পর্দায়

বিগত কয়েক দশক ধরে, হলিউড বহু বক্স-অফিস ব্লকবাস্টার ছবি তৈরি করার উৎস হয়ে উঠেছে। এই হুজুগ সারা বিশ্বের ওপর প্রভাব ফেলেছে কারণ আমেরিকার অনেক ছবি যুক্তরাষ্ট্রে তাদের প্রিমিয়ার শো-র পর মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে—বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে কয়েক দিনের মধ্যে—বিদেশে মুক্তি পায়। এমনকি কিছু কিছু ছবি সারা পৃথিবীতে একই তারিখে মুক্তি পেয়েছে। “আন্তর্জাতিক বাজার হচ্ছে ক্রমবর্ধমান ও খুবই রোমাঞ্চকর,” ওয়ার্নার ব্রাদার্স পিকচার্স এর আভ্যন্তরীণ পরিবেশনের প্রেসিডেন্ট ডান ফেলম্যান বলেন, “তাই আমরা যখন কোনো ছবি বানাই, তখন আমরা এটাকে এক আন্তর্জাতিক সুযোগ হিসেবে দেখে থাকি।” বিশেষভাবে এখন হলিউডে যা কিছু নির্মিত হয়, তা বিশ্বব্যাপী বিনোদন শিল্পকে প্রভাবিত করে থাকে।a

কিন্তু কোনো ছবি থেকে মুনাফা পাওয়া যতটা সহজ বলে মনে হয়, আসলে ততটা সহজ নয়। শুধুমাত্র প্রোডাকশন ও বাজারজাত করার খরচ উঠানোর জন্যই অনেক ছবিকে দশ কোটিরও বেশি মার্কিন ডলার আয় করতেই হয়। আর সেগুলো সফল হবে কি না, তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে দর্শকদের ওপর, যাদের সম্বন্ধে আগে থেকে কিছুই বলা যায় না। “কোনটা কখন দর্শকদের কাছে রোমাঞ্চকর অথবা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বলে মনে হবে, তা আপনি কখনোই বলতে পারবেন না,” ইমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষণার একজন অধ্যাপক ডেভিড কুক বলেন। তাই চলচ্চিত্র নির্মাতারা কীভাবে তাদের সাফল্যের সুযোগগুলোকে বৃদ্ধি করে? উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের প্রথমে চলচ্চিত্র তৈরির কিছু মৌলিক বিষয় বোঝার দরকার আছে।b

প্রিপ্রোডাকশন—ভিত্তি স্থাপন করা

প্রিপ্রোডাকশন হচ্ছে চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রক্রিয়ার প্রায়ই দীর্ঘতম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। যেকোনো বৃহৎ প্রকল্পের মতো, প্রস্তুতি হচ্ছে সাফল্যের চাবিকাঠি। আশা করা হয় যে, প্রিপ্রোডাকশনে যে-পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়, তা ছবি তৈরির সময় যখন অনেক অর্থের প্রয়োজন হয়, তখন বেশ কয়েক গুণ বেশি অর্থ বাঁচিয়ে দেবে।

চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হয় একটা গল্পের ধারণা থেকে, যা হয় কাল্পনিক অথবা বাস্তব জীবনের ঘটনাগুলোর ওপর ভিত্তি করে হতে পারে। একজন লেখক গল্পটাকে চিত্রনাট্যে রূপ দেন। চিত্রনাট্যকে চূড়ান্ত সংস্করণের আগেও বেশ কয়েক বার পুনর্সংশোধিত করা হয়ে থাকে। চিত্রনাট্যে সেই ছবির সংলাপ ও সেইসঙ্গে কী ধরনের অভিনয় করা হবে, সেই বিষয়ে এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনা থাকে। এ ছাড়া, এতে যন্ত্রগত বিভিন্ন বিষয়ের নির্দেশনাও থাকে, যেমন ক্যামেরা কোনদিকে থাকবে এবং দৃশ্য পরিবর্তনের সময় সংঘটিত বিষয়গুলো।

কিন্তু, চিত্রনাট্য যখন প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তখনই একজন প্রযোজকের কাছে তা বিক্রি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।c একজন প্রযোজক হয়তো কোন ধরনের চিত্রনাট্যের প্রতি আগ্রহী হতে পারেন? সাধারণত, গ্রীষ্মের সময়কার ছবি মূলত কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের জন্য তৈরি করা হয়—যারা হচ্ছে “পপকর্ন খাওয়ার দল,” যেমনটা একজন চলচ্চিত্র সমালোচক তাদের সম্বন্ধে বলেন। তাই একজন প্রযোজক হয়তো এমন একটা গল্পের প্রতি আকৃষ্ট হবেন, যা তরুণ-তরুণীদের আকৃষ্ট করবে।

অধিকতর পছন্দসই চিত্রনাট্য হচ্ছে সেটা, যা যেকোনো বয়সের লোকেদের আকৃষ্ট করে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো কার্টুন বইয়ের নায়ককে নিয়ে তৈরি একটা চলচ্চিত্র নিশ্চয়ই সেই চরিত্রের সঙ্গে পরিচিত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আকৃষ্ট করবে। আর কোনো সন্দেহ নেই যে, তাদের বাবামাও তাদের সঙ্গে ছবিটা দেখবে। কিন্তু চলচ্চিত্র নির্মাতারা কীভাবে কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের আকৃষ্ট করে থাকে? “জোরালো বিষয়বস্তু” হচ্ছে মূল চাবিকাঠি, দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট ম্যাগাজিন-এ লাইজা মানডি লেখেন। একটা ছবিতে অমার্জিত ভাষা, প্রচণ্ড দৌরাত্ম্যপূর্ণ দৃশ্য এবং প্রচুর পরিমাণে যৌনতা যোগ করা হল “যেকোনো বয়সের লোকেদের মধ্যে আকর্ষণ সৃষ্টি করে মুনাফা বাড়ানোর সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করার” একটা উপায়।

একজন প্রযোজক যদি মনে করেন যে কোনো চিত্রনাট্য সফল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তা হলে তিনি হয়তো এটাকে কিনে নিতে এবং একজন বিশিষ্ট পরিচালক ও বিখ্যাত অভিনেতা বা অভিনেত্রীর সঙ্গে চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারেন। একজন বিখ্যাত পরিচালক ও খ্যাতনামা তারকাকে নেওয়া ছবিটা মুক্তি পাওয়ার পর, বক্স-অফিসে আকর্ষণ তৈরি করবে। তবে, এমনকি এই প্রাথমিক পর্যায়েও বিখ্যাত নামগুলো বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে পারে, যাদেরকে সেই ছবিতে অর্থ লগ্নি করার জন্য প্রয়োজন।

প্রিপ্রোডাকশনের আরেকটা দিক হচ্ছে স্টোরিবোর্ডিং। স্টোরিবোর্ড হচ্ছে সেই ছবির বিভিন্ন দৃশ্যের বর্ণনাকৃত ধারাবাহিক চিত্রাঙ্কন, বিশেষ করে আ্যকশন দৃশ্যগুলোর। স্টোরিবোর্ড সিনেমাটোগ্রাফারের জন্য একটা ব্লুপ্রিন্ট হিসেবে কাজ করে আর চিত্রায়ণের সময় তা অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়। পরিচালক ও চিত্রনাট্য লেখক ফ্রাংক ডারাবন্ট যেমন বলেন, “ক্যামেরা কোথায় বসানো হবে, তা নির্ধারণ করার চেষ্টায় আপনার সেটের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে শুটিংয়ের দিনটাকে মাটি করার চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না।”

প্রিপ্রোডাকশনের সময়গুলোতে অবশ্যই আরও অনেক বিষয়ের মীমাংসা করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, চিত্রায়ণের জন্য কোন কোন জায়গা ব্যবহৃত হবে? এর জন্য কি অন্য কোথাও যেতে হতে পারে? আভ্যন্তরীণ সেটগুলোকে কীভাবে তৈরি করা ও সাজানো যেতে পারে? বিশেষ ধরনের পোশাকের কি প্রয়োজন হবে? লাইটিং, মেকআপ ও হেয়ারস্টাইলের বিষয়টা কে দেখাশোনা করবে? সাউন্ড, স্পেশাল ইফেক্টস এবং স্টান্টম্যান সম্বন্ধেই বা কী বলা যায়? চলচ্চিত্র তৈরির ক্ষেত্রে এগুলো হচ্ছে অনেকগুলো দিকের মধ্যে মাত্র কয়েকটা, যা কোনো ছবির শুটিং শুরু করার পূর্বে বিবেচনা করতে হয়। বিশাল বাজেটের একটা ছবিতে জড়িত কলাকুশলীদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ নামের তালিকাটা দেখুন আর আপনি দেখতে পাবেন যে, একটা ছবি তৈরির পিছনে আসলে শত শত লোক জড়িত! “একটা পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাতে প্রচুর লোকের প্রয়োজন,” একজন টেকনিশিয়ান বলেন, যিনি অসংখ্য ছবির সেটের জন্য কাজ করেছেন।

প্রোডাকশন—দৃশ্যগুলোকে ফিল্মে ধারণ করা

একটা ছবির শুটিং করা সময়সাপেক্ষ, পরিশ্রমের ও ব্যয়বহুল হতে পারে। বস্তুতপক্ষে, এক মিনিট সময় নষ্ট হওয়া মানে হাজার হাজার ডলারের ক্ষতি হওয়া। মাঝে মাঝে অভিনেতাদের, দলের সদস্য ও সরঞ্জামাদি বিশ্বের দূরবর্তী জায়গাতে নিয়ে যেতে হয়। তবে শুটিং যেখানেই হোক না কেন, প্রতিদিন দৃশ্যগুলো চিত্রায়ণ করতে প্রচুর অর্থ খরচ হয়।

লাইটিং দল, হেয়ারড্রেসার এবং মেকআপ শিল্পীরাই হচ্ছে প্রথম ব্যক্তি যারা সেটে সবচেয়ে আগে এসে থাকে। প্রতিদিন দৃশ্যগুলো চিত্রায়ণের আগে চিত্রতারকারা হয়তো ক্যামেরার সামনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়ার পিছনে বেশ অনেক ঘন্টা ব্যয় করতে পারে। এরপর দৃশ্যগুলোকে চিত্রায়ণ করার দীর্ঘদিনের কাজ শুরু হয়।

প্রত্যেকটা দৃশ্যের চিত্রায়ণ পরিচালক খুব মন দিয়ে তত্ত্বাবধান করেন। এমনকি তুলনামূলকভাবে সাধারণ দৃশ্যকেও ফিল্মে ধারণ করতে সারাদিন লেগে যেতে পারে। কোনো ছবির অধিকাংশ দৃশ্যই একটা ক্যামেরা দিয়ে ফিল্মে ধারণ করা হয়ে থাকে আর ফলস্বরূপ ক্যামেরার বিভিন্ন আ্যঙ্গেল থেকে সেই দৃশ্যটাকে বার বার শুটিং করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া, সর্বোত্তম অভিনয় ধারণ করতে বা কোনো যান্ত্রিক সমস্যাকে সংশোধন করতে প্রতিটা দৃশ্যের জন্য বার বার শুটিং করার দরকার হতে পারে। দৃশ্যগুলোকে চিত্রায়ণ করার এই প্রত্যেকটা প্রচেষ্টাকে বলা হয় টেক। অপেক্ষাকৃত বড় দৃশ্যগুলোর জন্য ৫০টা বা তারও বেশি টেকের প্রয়োজন হতে পারে! পরে—সাধারণত প্রতিদিন শুটিংয়ের শেষে—পরিচালক প্রত্যেকটা টেক দেখেন এবং ঠিক করেন যে, কোনগুলো সংরক্ষণ করা উচিত। দৃশ্যগুলো চিত্রায়ণ করার পুরো প্রক্রিয়ার জন্য একত্রে কয়েক সপ্তাহ বা এমনকি কয়েক মাসও লাগতে পারে।

পোস্টপ্রোডাকশন—অংশগুলোকে যুক্ত করা হয়

পোস্টপ্রোডাকশনের সময়গুলোতে, আলাদা আলাদাভাবে নেওয়া টেকগুলোকে সুবিন্যস্ত করে একটার পর একটার মধ্যে মিল রেখে চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়। প্রথমত, অডিও রেকর্ডিংয়ের সঙ্গে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের মিল আনা হয়। এরপর সম্পাদক অসম্পাদিত দৃশ্যগুলোকে সুবিন্যস্ত করে চলচ্চিত্রের প্রাথমিক সংস্করণে পরিণত করেন, যেটাকে রাফ কাট বলা হয়।

এই পর্যায়ে সাউন্ড ইফেক্টস ও ভিজুয়াল ইফেক্টসও যুক্ত করা হয়। স্পেশাল ইফেক্টস সিনেমাটোগ্রাফি—যা হচ্ছে চলচ্চিত্রনির্মাণের সবচেয়ে জটিল দিকগুলোর মধ্যে একটা—মাঝে মাঝে কম্পিউটার গ্রাফিক্‌সের সাহায্যে পাওয়া যায়। ফলাফল আকর্ষণীয় ও খুবই বাস্তবসম্মত হতে পারে।

কোনো ছবির জন্য তৈরি সংগীতকেও পোস্টপ্রোডাকশনের সময়ে যুক্ত করা হয় আর আজকের চলচ্চিত্রগুলোতে এই দিকটা প্রচুর গুরুত্ব লাভ করেছে। “চলচ্চিত্রশিল্প এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও বেশি করে ছবির জন্য তৈরি করা নিজস্ব সংগীত দাবি করে থাকে—আর তা শুধুমাত্র কুড়ি মিনিটের জন্য নয় বা কয়েকটা নাটকীয় মুহূর্তের জন্য নয় কিন্তু এক ঘন্টারও বেশি সময়ের জন্য,” ফিল্ম স্কোর মান্থলি পত্রিকায় এডুইন ব্ল্যাক লেখেন।

মাঝে মাঝে নতুন সম্পাদিত ছবিটা বাছাই-করা কিছু দর্শককে দেখানো হয়, সম্ভবত পরিচালকের বন্ধুবান্ধব অথবা সহকর্মীদের, যারা সেই ছবি তৈরিতে জড়িত ছিলেন না। তাদের প্রতিক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে পরিচালক হয়তো পুনরায় কিছু দৃশ্যের শুটিং করতে চাইতে পারেন অথবা সেগুলো বাদ দিতে পারেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটা ছবির সমাপ্তি পুরোপুরিভাবে বদলে দেওয়া হয়েছে কারণ বাছাই-করা দর্শকদের সামনে ছবিটা প্রদর্শনের পর তারা ভাল প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ছবিটা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। একমাত্র এই পর্যায়ে এসেই এটা স্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, ছবিটা ব্লকবাস্টার হবে নাকি ফ্লপ হবে—অথবা মোটামুটি ব্যাবসা করবে। কিন্তু এতে শুধুমাত্র পয়সাকড়ির ঝুঁকির চেয়েও আরও বেশি কিছু জড়িত রয়েছে। পরপর কয়েকটা ফ্লপ ছবি একজন অভিনেতার সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিতে পারে এবং পরিচালকের সুনামকে ধ্বংস করতে পারে। “কয়েকটা ছবি ফ্লপ হওয়ার পর আমি আমার বেশ কয়েকজন সমসাময়িক ব্যক্তিকে সরে পড়তে দেখেছি,” পরিচালক জন বোরম্যান ছবি তৈরির বিষয়ে তার শুরুর বছরগুলোর কথা চিন্তা করে বলেন। “চলচ্চিত্রের ব্যাবসার রূঢ় বাস্তবতা হচ্ছে যে, যদি আপনি আপনার মালিকের হাতে টাকা না এনে দেন, তা হলে আপনি কাজ হারাবেন।”

অবশ্য, কোনো প্রেক্ষাগৃহের প্রবেশপথের ওপর টাঙানো পোস্টারগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে সাধারণ দর্শকরা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে ভাবে না। খুব সম্ভবত তাদের মূল চিন্তা হচ্ছে: ‘ছবিটা কি ভাল হবে? এত পয়সা দিয়ে টিকিট কিনে কি কোনো লাভ আছে? ছবিটা কি জঘন্য বা বিরক্তিকর হবে? আমার বাচ্চাদের জন্য কি এটা দেখা ঠিক হবে?’ কোন ছবিগুলো আপনি দেখবেন, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কীভাবে আপনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন?

[পাদটীকাগুলো]

a হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলের একজন অধ্যাপিকা আনিটা এলবার্সের কথা অনুসারে, “যদিও বিদেশি বক্স-অফিসের বিক্রি এখন প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের বিক্রির চেয়ে বেশি কিন্তু তারপরেও যুক্তরাষ্ট্রে একটা ছবি কেমন চলে, তা এখনও বিদেশে তা কেমন চলতে পারে সেটার ওপর এক বিরাট প্রভাব ফেলে থাকে।”

b যদিও একটা ছবির পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা থেকে অন্য ছবির মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু এখানে যা বর্ণনা করা হয়েছে তা বিভিন্ন উপায়ের মধ্যে সম্ভাব্য একটা উপায়।

c কিছু কিছু ক্ষেত্রে একজন প্রযোজককে চিত্রনাট্যের পরিবর্তে একটা গল্পের আউটলাইন দেওয়া হয়ে থাকে। তিনি যদি গল্পের প্রতি আগ্রহী হন, তা হলে তিনি এর স্বত্বগুলো কিনে নিতে ও এটাকে একটা চিত্রনাট্যে পরিণত করতে পারেন।

[৬ পৃষ্ঠার ব্লার্ব]

“কোনটা কখন দর্শকদের কাছে রোমাঞ্চকর অথবা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বলে মনে হবে, তা আপনি কখনোই বলতে পারবেন না।”—ডেভিড কুক, চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষণার অধ্যাপক

[৬, ৭ পৃষ্ঠার বাক্স/চিত্রগুলো]

ব্লকবাস্টার ছবি বিক্রি করা

ছবিটা তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে। কোটি কোটি দর্শকের সামনে প্রদর্শন করার জন্য এটা একেবারে তৈরি। এটা কি চলবে? কয়েকটা উপায় বিবেচনা করুন, যা চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের ছবি বিক্রির ও এটাকে একটা ব্লকবাস্টার ছবিতে পরিণত করার জন্য করে থাকে।

◼ গুঞ্জন (বাজ্‌): একটা ছবির জন্য আগে থেকে আকাঙ্ক্ষা তৈরি করার সবচেয়ে ফলপ্রসূ উপায়গুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে মুখে মুখে প্রচারণা—বা চলচ্চিত্রশিল্পে এটাকে বলা হয় গুঞ্জন। মাঝে মাঝে একটা ছবি মুক্তি পাওয়ার প্রায় কয়েক মাস আগে থেকেই গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। সম্ভবত এইরকম ঘোষণা করা হয়ে থাকে যে, পূর্ববর্তী কোনো হিট ছবির সিকুয়েল। আগের তারকারাই কি এটাতে থাকবে? প্রথম ছবিটার মতো কি এটা ভাল (বা খারাপ) হবে?

কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোনো ছবির বিতর্কিত বিষয় নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়—হতে পারে কোনো যৌন দৃশ্য, যা সাধারণ দর্শকদের জন্য তৈরি ছবিতে অস্বাভাবিকভাবে তুলে ধরা হয়েছে। দৃশ্যটা কি এতটাই খারাপ? ছবিটা কি অতিরিক্ত “সীমা লঙ্ঘন করেছে”? ছবিটার সমালোচনামূলক মতামতগুলো নিয়ে যখন জনসাধারণ্যে বিতর্ক হয়, তখন চলচ্চিত্র নির্মাতারা বিনামূল্যে হওয়া এই বিজ্ঞাপনকে উপভোগ করে থাকে। মাঝে মাঝে যে-বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা কিছুটা হলেও ছবিটার প্রিমিয়ার শো-তে এক বিরাট সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিকে নিশ্চিত করে।

◼ প্রচারমাধ্যম: বিজ্ঞাপন দেওয়ার অধিকতর প্রচলিত উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে পোস্টার টাঙানো, খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন, টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন, প্রেক্ষাগৃহে কোনো পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি শুরুর আগে দেখানো ছবির ট্রেইলার এবং সাক্ষাৎকারগুলো, যেখানে তারকারা তাদের নতুন ছবির কথা বলে থাকে। এখন চলচ্চিত্রের বিজ্ঞাপনের একটা প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে ইন্টারনেট।

◼ পণ্যসামগ্রী বিক্রি করা: বিক্রয়ে সাহায্যের জন্য উৎপন্ন পণ্যসামগ্রীগুলো কোনো ছবি মুক্তি পাওয়ার আকর্ষণকে বাড়াতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো কার্টুন বইয়ের নায়ককে নিয়ে তৈরি একটা ছবির সঙ্গে মিল রেখে লাঞ্চ বক্স, মগ, অলংকার, কাপড়চোপড়, চাবির রিং, ঘড়ি, ল্যাম্প, বোর্ড গেইম এবং আরও অনেক জিনিস কিনতে পাওয়া যায়। “সাধারণত, কোনো একটা ছবি মুক্তি পাওয়ার আগেই সেই ছবির সঙ্গে জড়িত পণ্যসামগ্রীগুলোর মধ্যে ৪০ শতাংশ বিক্রি হয়ে যায়,” আ্যমেরিকান বার এসোসিয়েশন এর এক বিনোদন পত্রিকায় জো সিসটো লেখেন।

◼ ঘরে দেখা ভিডিও: একটা ছবি যদি বক্স-অফিসে আর্থিকভাবে মার খায়, তা হলে ছবিটা ঘরে ভিডিওতে দেখার জন্য বিক্রি করার দ্বারা সেই ক্ষতি পূরণ করা যেতে পারে। ব্রুস ন্যাশ, যিনি চলচ্চিত্রের আর্থিক আয়ের সঠিক নথি রাখেন, তিনি বলেন যে, “৪০ থেকে ৫০ শতাংশ আয় হচ্ছে সেই ভিডিওগুলোর বিক্রি থেকে, যা ঘরে দেখা হয়।”

◼ রেটিং পদ্ধতি: চলচ্চিত্র নির্মাতারা তাদের সুবিধার্থে রেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে শিখেছে। উদাহরণস্বরূপ, এমন কিছু বিষয়বস্তু হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবেই একটা ছবিতে ঢোকানো যেতে পারে, যাতে ছবিটা প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য বলে রেটিং দেওয়া হয়। অন্যদিকে, একটা ছবি থেকে বেশ কয়েকটা দৃশ্য কেটে দেওয়া যেতে পারে, যাতে সেটা প্রাপ্তবয়স্কদের বলে রেটিং দেওয়া এড়াতে পারে ও এটাকে কিশোর-কিশোরীদের দেখার যোগ্য করতে পারে। দ্যা ওয়াশিংটন পোস্ট ম্যাগাজিন-এ লাইজা মানডি লেখেন যে, একটা ছবিকে কিশোর-কিশোরীদের জন্য রেটিং দেওয়া “যেন একটা বিজ্ঞাপনে পরিণত হয়েছে: স্টুডিওগুলো এটাকে এই বলে একটা বিজ্ঞাপনের মতো ব্যবহার করে যে, ছবিগুলোতে কিশোর-কিশোরীদের পছন্দসই বিষয়গুলো রয়েছে যাতে তারা—ও সেইসঙ্গে ছোট বাচ্চারা যারা কিশোর-কিশোরী হওয়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে—আকৃষ্ট হতে পারে।” রেটিং পদ্ধতি “বাবামা ও ছেলেমেয়েদের মধ্যে দূরত্ব” সৃষ্টি করে, মানডি লেখেন, “যা বাবামাদের সাবধান করে অথচ বাচ্চাকে প্রলুব্ধ করে।”

[৮, ৯ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

চলচ্চিত্র যেভাবে তৈরি করা হয়

চিত্রনাট্য

স্টোরিবোর্ডস্‌

পোশাক

মেকআপ

শুটিং করার স্থানে চিত্রায়ণ

স্পেশাল ইফেক্টস চিত্রায়ণ

মিউজিক রেকর্ডিং

সাউন্ড যুক্ত করা

কম্পিউটারে তৈরি আ্যনিমেশন

সম্পাদনা

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার