খণ্ড ১৩
প্রকৃত বিশ্বাস অনন্তকালীন সুখের দিকে নিয়ে যায়
“যাকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয় সে বিশ্বাসের মধ্য দিয়েই জীবন পাবে,” পবিত্র শাস্ত্র বলে। (রোমীয় ১:১৭) এই কথাগুলোর মধ্যে এক রোমাঞ্চকর প্রতিজ্ঞা রয়েছে, যার সঙ্গে আপনিও জড়িত। কোন কোন দিক দিয়ে?
পৃথিবীতে তাঁর কাজ শেষ করার পর, মশীহ যিশু ঈশ্বরের সঙ্গে থাকার জন্য স্বর্গে আরোহণ করেন। তাঁর শিষ্যরা যখন দেখছিল, তখন “শিষ্যদের চোখের সামনেই যীশুকে তুলে নেওয়া হল এবং তিনি একটা মেঘের আড়ালে চলে গেলেন।” (প্রেরিত ১:৯) স্বর্গে ঈশ্বর তাঁকে এক পরাক্রমী স্বর্গীয় রাজা হিসেবে নিযুক্ত করেন। নিকট ভবিষ্যতে “মনুষ্যপুত্র” যিশু “সমস্ত স্বর্গদূতদের সংগে নিয়ে . . . নিজের মহিমায়” আসবেন এবং “তিনি রাজা হিসাবে তাঁর সিংহাসনে মহিমার সংগে বসবেন। সেই সময় সমস্ত জাতির লোকদের তাঁর সামনে একসংগে জড়ো করা হবে। রাখাল যেমন ভেড়া আর ছাগল আলাদা করে তেমনি তিনি সব লোকদের দু’ভাগে আলাদা করবেন।” (মথি ২৫:৩১, ৩২) এটা কখন ঘটবে?
পবিত্র শাস্ত্র বিশ্বব্যাপী সংকটময় এক সময়কাল সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করে, যা এই চিহ্ন প্রকাশ করবে যে, সমস্ত জাতির ওপর মশীহের বিচার করার সময় খুবই নিকটে। সেই চিহ্নের অন্তর্ভুক্ত কী, সেই বিষয়ে যিশু এভাবে ব্যাখ্যা করেছিলেন: ‘এক জাতি আর এক জাতির বিরুদ্ধে এবং এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। ভীষণ ভূমিকম্প হবে এবং ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও মড়ক হবে। এছাড়া এমন সব ঘটনা ঘটবে যা ভীষণ।’—লূক ২১:৭, ১০, ১১.
আজকের সমস্যাগুলো দেখায় যে, মশীহ শীঘ্র সমস্ত জাতির বিচার করবেন
বর্তমানে, আমরা স্পষ্টভাবে যিশুর কথাগুলোর পরিপূর্ণতা দেখতে পারছি। শীঘ্র, যিশু দুষ্টদের ধ্বংস করার জন্য আসবেন। অবশেষে, এমনকী শয়তানকেও ধ্বংস করা হবে! পুরো পৃথিবী এক পরমদেশ হবে। সমস্ত লোক একে অন্যের সঙ্গে ও এমনকী পশুপাখির সঙ্গে শান্তিতে বাস করবে। “নেকড়েবাঘ ভেড়ার বাচ্চার সংগে বাস করবে, চিতাবাঘ শুয়ে থাকবে ছাগলের বাচ্চার সংগে; গরুর বাচ্চা, যুব সিংহ ও মোটাসোটা বাছুর একসংগে থাকবে, আর ছোট ছেলে তাদের চরাবে। . . . কোন জায়গায় কেউ ক্ষতিও করবে না, ধ্বংসও করবে না।” (যিশাইয় ১১:৬, ৯) “সিয়োনে বাসকারী কেউ বলবে না, ‘আমি অসুস্থ।’ . . . তখন অন্ধদের চোখ খুলে যাবে, বয়রাদের কান বন্ধ থাকবে না।” (যিশাইয় ৩৩:২৪; ৩৫:৫) এমনকী মৃতেরাও পুনরুত্থিত হবে। “সদাপ্রভু সকলের চোখের জল মুছিয়ে দেবেন” এবং “মৃত্যু আর হবে না; দুঃখ, কান্না ও ব্যথা আর থাকবে না।” (যিশাইয় ২৫:৮; প্রকাশিত বাক্য ২১:৪) সেই সময় পৃথিবীর জন্য ঈশ্বরের আদি উদ্দেশ্য পরিপূর্ণ হবে। কী এক অপূর্ব প্রত্যাশা!
বিশ্বাস বৃদ্ধি করে চলুন
ঈশ্বর কোন ধরনের লোকেদের পরমদেশে জীবন দান করবেন? বিশ্বাস—প্রকৃত বিশ্বাস—রয়েছে এমন লোকেদের!
মনে রাখবেন যে, প্রকৃত বিশ্বাসের ভিত্তি হল ঈশ্বরের বাক্যের সঠিক জ্ঞান। তাই, ঈশ্বর এবং যিশুকে ক্রমাগত আরও ভালোভাবে জানুন।
বিশ্বাসী লোকেরা চিরকাল পরমদেশ উপভোগ করবে!
প্রকৃত বিশ্বাস ধার্মিক কাজগুলোর দ্বারা প্রকাশ পায়। ঈশ্বরের বাক্য বলে: “কাজ ছাড়া বিশ্বাসও মৃত।” (যাকোব ২:২৬) এই ধরনের ভালো কাজগুলো করার দ্বারা আপনি ঈশ্বরের অপূর্ব গুণাবলি—শক্তি, ন্যায়বিচার, প্রজ্ঞা এবং প্রেম—প্রকাশ করবেন। ঈশ্বরের এই গুণাবলি ক্রমাগত গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করুন!
প্রকৃত বিশ্বাস গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করলে আপনি প্রচুর পুরস্কার পাবেন। সত্যি বলতে কী, এটা আপনার জন্য এক সুখী জীবনের চাবিকাঠি—এখন ও অনন্ত ভবিষ্যতে!