পাঠ ১২
যাকোব উত্তরাধিকার পান
ইস্হাকের বয়স যখন ৪০ বছর, তখন তিনি রিবিকাকে বিয়ে করেন। তিনি রিবিকাকে অনেক ভালোবাসতেন। একসময় তাদের যমজ ছেলে হয়।
বড়ো ছেলের নাম হল এষৌ এবং ছোটো ছেলের নাম যাকোব। এষৌ জঙ্গলে জঙ্গলে ঘুরতে পছন্দ করতেন আর তিনি একজন ভালো শিকারি ছিলেন। কিন্তু, যাকোব বাড়িতে থাকতে পছন্দ করতেন।
তখনকার দিনে, বাবা মারা যাওয়ার পর তার জায়গাজমি এবং টাকাপয়সার বেশিরভাগ অংশ তার বড়ো ছেলে পেত। এটাকে উত্তরাধিকার বলা হত। ইস্হাকের পরিবারের উত্তরাধিকারের মধ্যে যিহোবার সেই প্রতিজ্ঞাগুলোও যুক্ত ছিল, যেগুলো তিনি অব্রাহামের কাছে করেছিলেন। এষৌ সেই প্রতিজ্ঞাগুলোকে ততটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেননি। কিন্তু, যাকোব জানতেন যে, এই প্রতিজ্ঞাগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
একবার এষৌ সারাদিন শিকার করার পর ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরে আসেন। যাকোব তখন খাবার রান্না করছিলেন আর সেই রান্না থেকে দারুণ গন্ধ বের হচ্ছিল। সেই গন্ধ পেয়ে এষৌ যাকোবকে বলেন: ‘আমার খুব খিদে পেয়েছে! আমাকে একটু ডাল খেতে দে!’ যাকোব বলেন: ‘দেব, কিন্তু প্রথমে আমাকে কথা দে, তুই এর বদলে তোর উত্তরাধিকার আমাকে দিবি।’ তখন এষৌ বলেন: ‘উত্তরাধিকার নিয়ে আমার কিছু যায়-আসে না! ওটা তুই নে। আমার শুধু খাবার চাই।’ তোমার কি মনে হয়, এষৌ বুদ্ধিমানের মতো কাজ করেছিলেন? একদমই না। তিনি এক বাটি ডালের জন্য অনেক মূল্যবান একটা জিনিস দিয়ে দিয়েছিলেন।
ইস্হাক যখন খুব বৃদ্ধ হয়ে যান, তখন তার বড়ো ছেলেকে আশীর্বাদ করার সময় আসে। কিন্তু, রিবিকার সাহায্যে ছোটো ছেলে যাকোব সেই আশীর্বাদ পান। এষৌ যখন এই বিষয়টা জানতে পারেন, তখন তিনি ভীষণ রেগে যান এবং তার যমজ ভাইকে মেরে ফেলবেন বলে ঠিক করেন। ইস্হাক ও রিবিকা যাকোবকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন আর তাই তারা তাকে বলেন: ‘তুমি তোমার মামা লাবনের কাছে পালিয়ে যাও আর এষৌর রাগ ঠাণ্ডা না হওয়া পর্যন্ত তার কাছেই থাকো।’ যাকোব তার বাবা-মায়ের কথা শোনেন এবং সেখান থেকে পালিয়ে যান।
“একজন মানুষ যদি সমস্ত জগৎ লাভ করেও নিজের জীবন হারায়, তবে তার কী লাভ? কিংবা একজন মানুষ নিজের জীবনের বিনিময়ে কীই-বা দিতে পারে?”—মার্ক ৮:৩৬, ৩৭