পাঠ ৮৩
যিশু হাজার হাজার লোককে খাওয়ান
৩২ খ্রিস্টাব্দে নিস্তারপর্বের কিছু সময় আগে, প্রেরিতেরা বিভিন্ন জায়গায় প্রচার করে ফিরে আসে। তারা খুব ক্লান্ত হয়ে পড়ে আর তাই যিশু তাদের নৌকায় করে বৈৎসৈদায় নিয়ে যান, যাতে তারা একটু বিশ্রাম নিতে পারে। কিন্তু, নৌকাটা যখন তীরে এসে পৌঁছায়, তখন যিশু সেখানে হাজার হাজার লোককে দেখতে পান। এরা তাদের আগেই সেখানে গিয়ে উপস্থিত হয়। যদিও যিশু তাঁর প্রেরিতদের সঙ্গে একা থাকতে চেয়েছিলেন, তারপরও তিনি লোকদের সদয়ভাবে গ্রহণ করেন। তিনি তাদের মধ্যে থাকা অসুস্থ ব্যক্তিদের সুস্থ করেন এবং তাদের শিক্ষা দিতে শুরু করেন। যিশু সারাদিন ধরে তাদের ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেন। যখন বেলা প্রায় শেষ হতে থাকে, তখন প্রেরিতেরা এসে তাঁকে বলে: ‘লোকদের নিশ্চয়ই খিদে পেয়েছে। তাদের বিদায় দিন, যাতে তারা নিজেদের জন্য খাওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে।’
যিশু তাদের বলেন: ‘ওদের যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তোমরাই ওদের এখানে কিছু খেতে দাও।’ প্রেরিতেরা তাঁকে জিজ্ঞেস করে: “তাহলে আমরা গিয়ে কি এই সমস্ত লোকের জন্য খাবার কিনে আনব?” তাদের মধ্যে ফিলিপ নামে একজন প্রেরিত বলেন: ‘আমাদের কাছে যদি অনেক টাকাও থাকত, তারপরও আমরা এত খাবার কিনতে পারতাম না যে, এই লোকদের জন্য তা যথেষ্ট হবে।’
যিশু জিজ্ঞেস করেন: ‘আমাদের কাছে কতটুকু খাবার আছে?’ আন্দ্রিয় বলেন: ‘এখানে একটি ছোটো ছেলে আছে, যার কাছে পাঁচটা রুটি এবং দুটো ছোটো মাছ রয়েছে। এতে তো কিছুই হবে না।’ যিশু বলেন: ‘আমার কাছে সেই রুটি ও মাছ নিয়ে এসো।’ তিনি লোকদের এক-একটা দলে প্রায় ৫০ জন এবং ১০০ জন করে ঘাসের উপরে বসতে বলেন। তিনি সেই রুটি ও মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে প্রার্থনা করেন। এরপর তিনি সেই খাবার শিষ্যদের দেন আর শিষ্যেরা সেগুলো লোকদের হাতে দেয়। সেখানে ৫,০০০ জন পুরুষ আর সেইসঙ্গে অনেক মহিলা এবং অল্পবয়সি ছেলে-মেয়েও ছিল। তারা সবাই পেট ভরে খায়। পরে, শিষ্যেরা বেঁচে যাওয়া খাবার তুলে নেয়, যাতে কিছুই নষ্ট না হয়। সেগুলো তুলে নেওয়ার পর ১২টা ঝুড়ি ভরতি হয়ে যায়! এটা দারুণ এক অলৌকিক কাজ ছিল, তাই না?
লোকেরা যিশুর অলৌকিক কাজ দেখে এত খুশি হয় যে, তারা তাঁকে রাজা করতে চায়। কিন্তু, যিশু জানতেন, তাঁকে রাজা করার জন্য যিহোবার সময় এখনও আসেনি। তাই, তিনি সেই লোকদের বিদায় দেন এবং তাঁর প্রেরিতদের বলেন, যেন তারা গালীল সাগরের অন্য পারে যায়। শিষ্যেরা তাদের নৌকায় ওঠে আর যিশু একা একটা পর্বতে চলে যান। কেন? কারণ তিনি সময় আলাদা করে তাঁর পিতার কাছে প্রার্থনা করতে চান। যিশু যতই ব্যস্ত থাকুন না কেন, তিনি সবসময় প্রার্থনা করার জন্য সময় বের করে নিতেন।
“যে-খাবার নষ্ট হয়ে যায়, সেটার জন্য নয়, বরং যে-খাবার নষ্ট না হয়ে বরং অনন্তজীবন দান করে, সেটার জন্য কাজ করো, যা মনুষ্যপুত্র তোমাদের দেবেন।”—যোহন ৬:২৭