ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯২ ৮/১ পৃষ্ঠা ২৩-২৭
  • বিবাহ কি সুখের একমাত্র চাবিকাঠি?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিবাহ কি সুখের একমাত্র চাবিকাঠি?
  • ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আনন্দ হবার কারনগুলি
  • “কেবল প্রভুতেই”
  • “প্রভুতে” বিবাহ করতে না পারা
  • প্রকৃত সুখের চাবিকাঠি
  • “পুত্রকন্যা অপেক্ষা উত্তম কিছু”
  • বিবাহ সুখের একমাত্র চাবিকাঠি নয়
  • প্রকৃত সুখ আসে যিহোবার সেবায়
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বিয়ে—প্রেমময় ঈশ্বরের কাছ থেকে এক উপহার
    “ঈশ্বরের প্রেমে আপনাদিগকে রক্ষা কর”
  • অবিবাহিত এবং বিবাহিত জীবন সম্বন্ধে বিজ্ঞ পরামর্শ
    ২০১১ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • অবিবাহিত থাকা এবং বিয়ে করার বিষয়ে বাইবেল কী বলে?
    চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
আরও দেখুন
১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯২ ৮/১ পৃষ্ঠা ২৩-২৭

বিবাহ কি সুখের একমাত্র চাবিকাঠি?

“যাহাকে ইচ্ছা করে, তাহার সহিত বিবাহিতা হইতে পারে, কিন্তু কেবল প্রভুতেই। তথাপি সে অমনি থাকিলে আরও ধন্যা।”— করিন্থীয় ৭:৩৯, ৪০, NW.

১. শাস্ত্র কিভাবে যিহোবাকে বর্ণনা করে, এবং তিনি তাঁর প্রাণীদের জন্য কি করেছেন?

যিহোবা হলেন “সুখী ঈশ্বর।” (১ তীমথিয় ১:১১) “সমস্ত উত্তম দান ও সমস্ত উত্তম বর” দাতা হিসাবে, তিনি তাঁর সকল বুদ্ধিদীপ্ত প্রাণীদের জন্য—মানুষ এবং আত্মিক—সেই সব কিছু লব্ধ করে থাকেন যা তাঁর সেবায় প্রয়োজন সুখী থাকার জন্য। (যাকোব ১:১৭) সেইকারণে, একটি পাখি যখন তার গান গায়, আনন্দোচ্ছল এক কুকুরছানা, অথবা খেলায় রত এক ডলফিন সবই সাক্ষ্য দেয় যে যিহোবা জন্তুদের সৃষ্টি করেছেন যেন তারা তাদের নিজ নিজ স্বাভাবিক আবাসে তাদের জীবন উপভোগ করে। গীতরচক দায়ূদ এই সম্বন্ধে কবিতায় বলতে গিয়ে এত দূর অবধি যান যখন তিনি বলেন: “পরিতৃপ্ত হইয়াছে যিহোবার বৃক্ষ সকল, লিবানোনের সেই এরস বৃক্ষরাজি, যাহা তিনি রোপন করিয়াছেন।”—গীতসংহিতা ১০৪:১৬, NW.

২. (ক) কি প্রদর্শণ করে যে যীশু তাঁর পিতার ইচ্ছা পালনে আনন্দ পান? (খ) যীশুর শিষ্যদের আনন্দ করার কি কারণ ছিল?

২ যীশু খ্রীষ্ট যিনি হলেন ‘ঈশ্বরের সত্ত্বের প্রতিমূর্তি।’ (ইব্রীয় ১:৩, NW) তাই ইহা আশ্চর্য্যের নয়, যে, যীশুকে ডাকা হবে “সুখী এবং একমাত্র ক্ষমতাবান” বলে। (১ তীমথিয় ৬:১৫, NW) তিনি আমাদের সুন্দর উদাহরণ স্থাপন করেছেন যে কি ভাবে যিহোবার ইচ্ছা পালন করা খাদ্যের থেকেও আরও তৃপ্তিদায়ক হতে পারে, যা উৎপন্ন করে বিশুদ্ধ আনন্দ। যীশু এও দেখান যে যখন আমরা যিহোবার ভয়ে কাজ করি তা আনন্দায়ক হতে পারে, তাহল তাকে অসন্তুষ্ট করার এক শ্রদ্ধাযুক্ত সাস্থ্যকর ভয়। (গীতসংহিতা ৪০:৮; যিশাইয় ১১:৩; যোহন ৪:৩৪) রাজ্যের প্রচার অভিযান শেষ করে যখন ৭০ জন শিষ্য ফিরে আসে “আনন্দের সাথে”, যীশু নিজে “পবিত্র আত্মায় উল্লাসিত হইলেন।” তার আনন্দ তাঁর পিতার কাছে প্রার্থনায় ব্যক্ত করার পর, তিনি তার শিষ্যদের দিকে ফিরে বলেন: “ধন্য সেই সকল চক্ষু, তোমরা যাহা যাহা দেখিতেছ, যাহারা তাহা দেখে। কেননা আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, তোমরা যাহা যাহা দেখিতেছ, তাহা অনেক ভাববাদী ও রাজা দেখিতে বাঞ্ছা করিয়াও দেখিতে পান নাই; এবং তোমরা যাহা যাহা শুনিতেছ, তাহা তাঁহারা শুনিতে বাঞ্ছা করিয়াও শুনিতে পান নাই।—লূক ১০:১৭-২৪.

আনন্দ হবার কারনগুলি

৩. আনন্দের কতগুলি কারণ কি?

৩ আমাদের চক্ষুর কি আনন্দ করা উচিৎ নয় যখন আমরা দেখি যে যিহোবার বাক্য ও তাঁর উদ্দেশ্য এই শেষের দিনে পূর্ণ হচ্ছে? আমাদের কি অত্যাধিক আনন্দ করা উচিৎ নয় এই বিষয় বুঝে যে সেই ভাববাণী সকল যা বিশ্বস্ত ভাববাদী এবং রাজা যেমন যিশাইয়, দানিয়েল, এবং দায়ূদ বুঝতে পারেননি আমাদের আজ তা বোধগম্য? আমারা কি সুখী ঈশ্বরকে সেবা করতে আনন্দিত নই, সেই সুখী একমাত্র ক্ষমতাসম্পন্ন নেতা (১ তীমথিয় ৬:১৫), আমাদের রাজা যীশু খ্রীষ্টের অধীনে? অবশ্যই আমরা আনন্দিত!

৪, ৫. (ক) যিহোবার সেবায় সুখী থাকার জন্য, আমাদের কি এড়িয়ে চলতে হবে? (খ) সুখের জন্য কতগুলি কি জিনিষ সাহায্য করে, এবং তা কি প্রশ্ন তোলে?

৪ যদি আমরা ঈশ্বরের সেবায় সুখী থাকতে চাই, যাহাহোক, আমাদের উচিৎ হবে না আমাদের সুখের চাহিদা জগতের ধারনার উপর ভিত্তি করে করতে। তা সহজেই আমাদের চিন্তধারাকে মেঘাচ্ছন্ন করতে পারে কারণ তার মধ্যে জড়িত আছে জাগতিক ধন, এক আকর্ষণীয় জীবন-ধারা, এবং এইরূপ অন্যান্য বিষয়। যে কোন “সুখ” যা এর উপর স্থাপিত তা খুব ক্ষণস্থায়ী হবে, কারণ এই জগত বহিয়া যাচ্ছে।—১ যোহন ২:১৫-১৭.

৫ বেশিরভাগ যিহোবার লোকেরা উপলব্ধি করে যে জাগতিক লক্ষ্য অর্জন করার দ্বারা সত্য সুখ আসবে না। কেবল আমাদের স্বর্গীয় পিতা সেই আত্মিক ও জাগতিক বস্তু প্রদান করে থাকেন যা তাঁর সেবকদের অকৃত্রিম সুখ দিতে পারে। আমরা কত কৃতজ্ঞ যে আত্মিক খাদ্য তিনি আমাদের দিয়ে থাকেন তাঁর “সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্‌ দাস”এর মাধ্যমে! (মথি ২৪:৪৫-৪৭) ঈশ্বরের প্রেমময় হাত থেকে আমরা যে শারীরিক খাদ্য এবং অন্যান্য বস্তুগত জিনিষগুলি পাই তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। তারপর, আছে, বিবাহের অপূর্ব দান এবং তার সাথে জড়িত পারিবারিক জীবনের আনন্দ। কোন সন্দেহ নেই নয়মী তার বিধবা পুত্রবধূদের জন্য তার আন্তরিক ইচ্ছা এই কথায় ব্যক্ত করেন: “তোমরা উভয়ে যেন স্বামীর বাটীতে বিশ্রাম পাও, যিহোবা তোমাদিগকে এই বর দিউন।” (রূতের বিবরণ ১:৯) তাই বিবাহ একটি চাবিকাঠি যা সুখের এক বিরাট দরজাকে খুলে দিতে পারে। কিন্তু বিবাহ কি কেবল একমাত্র চাবিকাঠি যা জীবনে সুখকে খুলে দিতে পারে? বিশেষ করে যারা অল্পবয়স্ক তাদের গম্ভীরভাবে চিন্তা করতে হবে যে এইরূপ কিনা।

৬. আদিপুস্তক অনুসারে, প্রথম বিবাহ ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য কি ছিল?

৬ বিবাহের আরম্ভ সম্বন্ধে বর্ণনা দিতে গিয়ে, বাইবেল এই বলে: “ঈশ্বর আপনার প্রতিমূর্ত্তিতে মনুষ্যকে সৃষ্টি করিলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তিতেই তাহাকে সৃষ্টি করিলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করিয়া তাহাদিগকে সৃষ্টি করিলেন। পরে ঈশ্বর তাহাদিগকে আশীর্ব্বাদ করিলেন; ঈশ্বর কহিলেন, তোমরা প্রজাবন্ত ও বহুবংশ হও, এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও বশীভূত কর।” (আদিপুস্তক ১:২৭, ২৮) যিহোবা যে বিবাহের আয়োজন করেন, তার মাধ্যমে আদমকে ব্যবহার করা হয় আরও মনুষ্য প্রাণীকে অস্তিত্বে আনার জন্য, এইভাবে মনুষ্যজাতির ব্যপ্তি ঘটে। কিন্তু বিবাহের সাথে এর থেকেও আরও অনেক কিছু যুক্ত আছে।

“কেবল প্রভুতেই”

৭. বিবাহের কোন চাহিদা পূরণ করতে এক কুলপতি অনেক প্রচেষ্টা করেন?

৭ যেহেতু যিহোবা ঈশ্বর হলেন বিবাহের আরম্ভকর্ত্তা, আমরা আশা করব যে তিনি মান নির্ধারন করবেন বিবাহের জন্য যার ফল হবে তার সেবকদের জন্য সুখ। কুলপতি-শাসিত সময়ে, যারা যিহোবার উপাসক নয় তাদের সাথে বিবাহ খুব জোরালভাবে নিরুউৎসাহিত করা হত। আব্রাহাম তার ভৃত্য ইলিয়াজারকে যিহোবার নামে শপথ করান যে সে যেন সেই কুলপতির ছেলে ইস্‌হাকের জন্য কনানীয়দের মধ্যে থেকে কোন কন্যাকে স্ত্রী হিসাবে না নেয়। ইলিয়াজার অনেক দূর যাত্রা করেন এবং যথাযথভাবে আব্রাহমের আদেশ পালন করেন যাতে সেই কন্যাকে খুঁজে পান ‘যাঁহাকে যিহোবা আমার কর্ত্তার পুত্রের জন্য নিরূপণ করিয়াছেন।’ (আদিপুস্তক ২৪:৩, ৪৪) তাই ইস্‌হাক রিবিকাকে বিবাহ করিলেন। যখন তাদের পুত্র এষৌ তার নিজের জন্য হিত্তীয়দের নিকট থেকে স্ত্রী গ্রহণ করে, তখন এই স্ত্রীলোকেরা “ইস্‌হাকের ও রিবিকার মনের দুঃখদায়িকা হইল।”—আদিপুস্তক ২৬:৩৪, ৩৫; ২৭:৪৬; ২৮:১, ৮.

৮. আইন চুক্তির মাধ্যমে বিবাহ সম্বন্ধে কি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়, এবং কেন?

৮ নিয়ম চুক্তির অধীনে, যে কোন পুরুষ ও স্ত্রী যারা কনানীয় জাতির বংশভূত তাদের সাথে বিবাহ করা নিষেধ ছিল। যিহোবা তাঁর লোকদের আদেশ দেন: “আর তাহাদের সহিত বিবাহ-সম্বন্ধ করিবে না; তুমি তাহার পুত্রেকে আপনার কন্যা দিবেনা, ও আপন পুত্রের জন্য তাহার কন্যা গ্রহণ করিবে না। কেননা সে তোমার সন্তানকে আমার অনুগমন হইতে ফিরাইবে, আর তাহারা অন্য দেবগণের সেবা করিবে; তাই তোমাদের প্রতি যিহোবার ক্রোধ প্রজ্বলিত হইবে, এবং তিনি তোমাকে শীঘ্র বিনষ্ট করিবেন।”—দ্বিতীয় বিবরণ ৭:৩, ৪.

৯. বিবাহ সম্বন্ধে বাইবেল খ্রীষ্টানদের কি উপদেশ দিয়ে থাকে?

৯ তাহলে ইহা কি আশ্চর্য্যের যে আজ খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে যে যিহোবাকে উপাসনা করে না তাকে বিবাহ করা সম্বন্ধে অনুরূপ বাধানিষেধ প্রয়োগ করা হবে। প্রেরিত পৌল তার সহ বিশ্বাসীদের এই উপদেশ দেন: “তোমরা অবিশ্বাসীদের সহিত অসমভাবে যোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না; কেননা ধর্ম্মে ও অধর্ম্মে পরস্পর কি সহযোগিতা? অন্ধকারের সহিত দীপ্তিরই বা কি সহভাগিতা? আর বলীয়ালের [পাপ-দেবের] সহিত খ্রীষ্টের কি ঐক্য? আবিশ্বাসীর সহিত বিশ্বাসীরই বা কি অংশ?” (২ করিন্থীয় ৬:১৪, ১৫) এই উপদেশ বিভিন্ন ভাবে প্রযোজ্য, আর অবশ্যই বিবাহের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পৌল স্পষ্ট আদেশ দেন সকল উৎসর্গীকৃত যিহোবার সেবকদের যে তারা বিবাহের জন্য যেন তাদেরই চিন্তা করেন “কেবলমাত্র সে যদি প্রভুতে থাকে।”—১ করিন্থীয় ৭:৩৯, ফুটনোট, NW.

“প্রভুতে” বিবাহ করতে না পারা

১০. অনেক অবিবাহিত খ্রীষ্টানেরা কি করছে, এবং কি প্রশ্ন উঠে?

১০ অনেক অবিবাহিত খ্রীষ্টানেরা যীশু খ্রীষ্টের উদাহরণ অনুকরণ করে তাদের একাকিত্বের যে দান তা উৎপন্ন করেছে। তারপর হয়ত, যেহেতু একজন বর্তমানে কোন ঈশ্বর ভয়শীল সঙ্গী খুঁজে পাননি যাতে সে “প্রভুতে” বিবাহ করতে পারে, অনেক বিশ্বস্ত খ্রীষ্টানেরা তাদের আস্থা যিহোবার উপরে রেখে কোন অবিশ্বাসীকে বিবাহ করার বদলে অবিবাহিত থেকেছেন। ঈশ্বরের আত্মা তাদের মধ্যে নিয়ে আসে এই গুনগুলি যেমন আনন্দ, শান্তি, বিশ্বাস, এবং ইন্দ্রিয়দমন, যা তাদের সাহায্য করে অবিবাহিত জীবনকে বিশুদ্ধ রাখতে। (গালাতীয় ৫:২২, ২৩) যারা ঈশ্বরের প্রতি তাদের এই বিশ্বস্ততায় ভক্তি প্রদর্শন করছে তাদের মধ্যে আমাদের বেশ কিছু সংখ্যক ভগ্নিরা আছেন, যাদের জন্য রয়েছে আমাদের আন্তরিক সহনাভূতি। বিভিন্ন দেশে তাদের সংখ্যা ভাইদের থেকে অনেক অধিক এবং সেই কারণে তারা প্রচার কার্য্যে অধিক অংশ নিয়ে থাকে। অবশ্যই, “যিহোবা বাক্য দেন; শুভবার্ত্তার প্রচারিকাগণ মহা বাহিনী। (গীতসংগিতা ৬৮:১১, NW) বাস্তবপক্ষে, ঈশ্বরের অনেক অবিবাহিত সেবকেরা পুরুষ এবং স্ত্রীরা তাদের বিশ্বস্ততা বজায় রাখেন কারণ তারা ‘সমস্ত চিত্তে যিহোবাতে বিশ্বাস করে, এবং তিনি তাদের পথ সরল করেন।’ (হিতোপদেশ ৩:৫, ৬) কিন্তু যারা আজ “প্রভুতে” বিবাহ করতে পারছে না তারা কি অবশ্যই অসুখী হবে?

১১. যে খ্রীষ্টানেরা বাইবেলের নিতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে একাকী থাকেন তারা কি বিষয় নিশ্চিত থাকতে পারে?

১১ আসুন আমরা যেন স্মরণে রাখি যে আমরা সুখী ঈশ্বর, যিহোবার সাক্ষী, এবং একমাত্র সুখী যীশু খ্রীষ্টের অধীনে, সেবা করছি। তাই আমাদের শ্রদ্ধা সেই বাধানিষেধগুলির প্রতি যা পরিষ্কার ভাবে বাইবেলে লেখা আছে তার জন্য আমরা যদি এক বিবাহ সঙ্গী না পাই “প্রভুতে” বিবাহ করার জন্য তাহলে ইহা ভাবা কি যুক্তিসংঙ্গত হবে যে ঈশ্বর ও খ্রীষ্ট আমাদের অসুখী অবস্থায় ছেড়ে দেবেন? অবশ্যই নয়। তাই আমরা এই উপসংহারে পৌঁছাতে পারি যে অবিবাহিত অবস্থায়ও একজন খ্রীষ্টানের পক্ষে সুখী থাকা সম্ভব। আমরা বিবাহিত অথবা অবিবাহিত থাকি যিহোবা আমাদের সত্যই সুখী করতে পারেন।

প্রকৃত সুখের চাবিকাঠি

১২. বিবাহ সম্বন্ধে অবাধ্য দূতদের ঘটনা কি নির্দেশ করে?

১২ বিবাহ সকল যিহোবার সেবকদের জন্য সুখের একমাত্র চাবিকাঠি নয়। যেমন, উদাহরণস্বরূপ দূতদের নিন। প্লাবনের পূর্বে, কিছু দূতেরা সেই আকাঙ্খা গড়ে তোলে যা আত্মিক প্রাণীদের জন্য ছিল অস্বাভাবিক, তারা অপরিতৃপ্ত হয় যে তারা বিবাহ করতে পারবে না, এবং তারা মাংসিক দেহে রূপান্তরিত হয় যাতে স্ত্রীলোকদের তাদের স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করতে পারে। যেহেতু এই দূতেরা তাদের “নিজ বাসস্থান ত্যাগ করিয়াছিল,” ঈশ্বর “তাহাদিগকে মহাদিনের বিচারার্থে ঘোর অন্ধকারের অধীনে অনন্তকালীয় শৃঙ্খলে বদ্ধ রাখিয়াছেন।” (যিহূদার পত্র ৬; আদিপুস্তক ৬:১, ২; NW) ইহা পরিস্কার যে, ঈশ্বর কখনও ব্যবস্থা করেননি যে দূতেরা বিবাহ করবে। তাই বিবাহ তাদের জন্য সুখের চবিকাঠি হতে পারে না।

১৩. কেন পবিত্র দূতেরা সুখী, এবং ইহা সকল ঈশ্বরের সেবকদের জন্য কি নির্দেশ করে?

১৩ তবুও, বিশ্বস্ত দূতেরা সুখী। যিহোবা ঈশ্বর পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছেন “তৎকালে প্রভাতীয় নক্ষত্রগণ ঐকতানে আনন্দরব এবং সর্বসম্মত রূপে ঈশ্বরের [দূত] পুত্রেরা প্রশংসাধ্বনি করিল।” (ইয়োব ৩৮:৭, দ্যা নিউ যেরুশালেম বাইবেল) পবিত্র দূতেরা কেন সুখী? কারণ তারা নিয়মিতভাবে যিহোবা ঈশ্বরের পরিচর্য্যায় রত, “তাঁহার বাক্যের রব শ্রবণে নিবিষ্ট” যাতে তারা তা করে যেতে পারে। তারা আনন্দ করে “তাঁহার পরিচর্য্যায়।” (গীতসংগিতা ১০৩:২০, ২১, ফুটনোট দেখুন) হ্যাঁ, পবিত্র দূতগনের সুখ আসে যিহোবাকে বিশ্বস্তভাবে সেবা করার মাধ্যমে। মনুষ্যদের জন্য প্রকৃত সুখের চাবিকাঠিও ঠিক তাই। সেইকারণে, যে অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ খ্রীষ্টানেরা এখন যিহোবাকে আনন্দের সাথে সেবা করছে তারা যখন পুনরুত্থিত হবে স্বর্গীয় জীবনে তখন বিবাহ করবে না, কিন্তু আত্মিক প্রাণী হিসাবে তারা ঐশিক ইচ্ছা পালন করে সুখী হবে। বিবাহিত হোন বা অবিবাহিত, তাহলে, সকল যিহোবার সেবকেরা সুখী হতে পারে কারণ তাদের সুখের ভিত্তি হল তাদের সৃষ্টিকর্ত্তাকে বিশ্বস্ত সেবা দেওয়া।

“পুত্রকন্যা অপেক্ষা উত্তম কিছু”

১৪. ঈশ্বরীয় নপুংসকদের জন্য কি ভবিষ্যৎবাণী দেওয়া হয়েছিল প্রাচীন ইস্রায়েলে, এবং কেন ইহা আশ্চর্য্য জনক মনে হতে পারে?

১৪ যদি একজন বিশ্বস্ত খ্রীষ্টান কখন বিবাহ নাও করে, ঈশ্বর দেখবেন যেন সেইজন সুখী হয়। উৎসাহ পাওয়া যেতে পারে এই কথাগুলির দ্বারা যা প্রাচীনকালের ইস্রায়েলের নপুংসকদের উদ্দেশ্যে ভাববাণীমূলকভাবে বলা হয়: “কেননা যিহোবা এই কথা কহেন: ‘যে, যে নপুংসক আমার বিশ্রামবার পালন করে, ও আমার নিয়ম দৃঢ় করিয়া রাখে, তাহাদিগকে আমি আমার ঘৃহমধ্যে ও আমার প্রাচীরের ভিতরে পুত্রকন্যা অপেক্ষা উত্তম স্থান ও নাম দিব; আমি তাহাদিগকে লোপহীন অনন্তকালস্থায়ী নাম দিব।’” (যিশাইয় ৫৬:৪, ৫, NW) একজন হয়ত ভাববে যে এই ব্যক্তিদের স্ত্রী ও পুত্র দেওয়া প্রতিজ্ঞা করা হবে তাদের নাম বহন করার জন্য। কিন্তু তাদের প্রতিজ্ঞা করা হয় “পুত্রকন্যা অপেক্ষা উত্তম কিছু”—যিহোবার ঘৃহে এক অনন্তকাল স্থায়ী নাম।

১৫. যিশাইয় ৫৬:৪, ৫ পদের পরিপূর্ণতা সম্বন্ধে কি বলা যেতে পারে?

১৫ এই নপুংসকদের যদি নেওয়া হয় যে তারা ভাববাণীমূলক ভাবে “ঈশ্বরের ইস্রায়েলকে” চিত্রিত করছে, তাহলে তা তাদের চিত্রিত করে সেই মনোনীতদের যারা যিহোবার আত্মিক ঘৃহে বা মন্দিরে অনন্তকালীন স্থান পায়। (গালাতীয় ৬:১৬) কোন সন্দেহ নেই যে এই ভাববাণী আক্ষরিক অর্থে প্রয়োগ হবে সেই পুরাকালের ঈশ্বর ভীরু ইস্রায়েলীয়ও নপুংসকদের ক্ষেত্রে যারা পুনুরুত্থান পাবে। যদি তারা খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যরূপী প্রায়শ্চিত গ্রহণ করে এবং যিহোবা যাতে আনন্দ পান তা বেছে নেন, তারা পাবে “অনন্তকালস্থায়ী নাম” ঈশ্বরের নতুন জগতে। ইহা তাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যারা “অপর মেষের” এবং এই শেষের সময় বিবাহ ও পিতামাতা হবার স্বাদ ত্যাগ করেছে যাতে নিজেদের আরও পূর্ণভাবে যিহোবার সেবায় ব্যায় করতে পারে। (যোহন ১০:১৬) তাদের কেউ কেউ হয়ত অবিবাহিত ও সন্তানহীন অবস্থায় মারা যেতে পারে। কিন্তু তারা যদি বিশ্বস্ত হয় তাহলে পুনরুত্থানে তারা “পুত্রকন্যা অপেক্ষা উত্তম কিছু—এক নাম “যা লোপহীন” নতুন বিধিব্যবস্থায় পাবে।

বিবাহ সুখের একমাত্র চাবিকাঠি নয়

১৬. কেন ইহা বলা যেতে পারে যে বিবাহ সবসময় সুখ নিয়ে আসে না?

১৬ অনেক ব্যক্তিরা মনে করেন যে সুখ অবিচ্ছেদ্য ভাবে বিবাহের সাথে জড়িত। ইহা স্বীকার করা দরকার, যাহাহোক, যে যিহোবার সেবকদের মধ্যেও আজ বিবাহ সবসময় সুখ নিয়ে আসে না। ইহা হয়ত কিছু সমস্যার সমাধান করে কিন্তু প্রায়ই সেই সব সমস্যার সৃষ্টি করে যা হয়ত অবিবাহিতরা যা অভিজ্ঞতা করে তার থেকেও কঠিন। পৌল বলেন যে বিবাহ ‘দৈহিক ক্লেশ’ ঘটাইবে। (১ করিন্থীয় ৭:২৮) সেই সময়গুলি আসে যখন একজন বিবাহিত ব্যক্তি “চিন্তা” এবং “বিভিন্নতা” ভোগ করে। আর স্ত্রী বা পুরুষ তারা “একাগ্রমনে প্রভুতে আসক্ত” থাকা কঠিন বোধ করে।—১ করিন্থীয় ৭:৩৩-৩৫.

১৭, ১৮. (ক) ভ্রমনকারী অধ্যক্ষরা কি রির্পোট করেছেন? (খ) পৌল কি উপদেশ দেন, এবং তাহা ব্যবহার করা উপকারী কেন?

১৭ বিবাহিত বা অবিবাহিত থাকা উভয় ঈশ্বরের নিকট থেকে দানস্বরূপ। (রূতের বিবরণ ১:৯; মথি ১৯:১০-১২) উভয় ক্ষেত্রে সফল হবার জন্য, যাহাহোক, প্রার্থনার সাথে বিবেচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভ্রমণকারী অধ্যক্ষরা রির্পোট করছেন যে অনেকে খুব অল্প বয়সে বিবাহ করছে, এবং প্রায়ই তারা পিতামাতা হচ্ছে সেই বয়সে যখন তারা তার দায়িত্ব নেবার জন্য প্রস্তুত নয়। এইরূপ কিছু কিছু বিবাহ ভেঙ্গে যায়। অন্য দম্পতিরা তাদের সমস্যার সাথে মোকাবিলার চেষ্টা করে, কিন্তু বিবাহ তাদের সুখ এনে দেয়নি। যেমেন ইংরেজ নাট্যকার উইলিয়াম কনগ্রেভ লেখেন, যারা তাড়াহুড়ো করে বিবাহ করে “তারা ব্যস্তহীনভাবে অনুতাপ করতে পারে।”

১৮ সীমা অধ্যক্ষরা এও রির্পোট করেছেন যে কিছু যুবক ভাইরা বেথেল সেবা এবং স্বেছায় নিজেদের মিনিষ্ট্রিয়াল ট্রেনিং স্কুলের জন্য আবেদন করা থেকে বিরত রাখেন কারণ তার একটি চাহিদা হল যে একজনকে কিছু সময়ের জন্য অবিবাহিত থাকতে হবে। কিন্তু পৌল উপদেশ দেন যে একজন যেন ততক্ষন বিবাহ না করে যতক্ষন একজনের “সৌকুমার্য্য অতীত হইয়া থাকে,” এর অর্থ হচ্ছে, সেই অবদ্ধি অপেক্ষা করা যতক্ষন একজনের প্রারম্ভের যে যৌন আকাঙ্ক্ষা তা কমে না যায়। (১ করিন্থীয় ৭:৩৬-৩৮) যে বৎসরগুলি একজন একাকী পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিরূপে কাটান তা তাকে অমূল্য অভিজ্ঞতা ও দূরদৃষ্টি লাভ করতে সাহায্য করে, সেই নারী অথবা পুরুষকে এক উত্তম অবস্থায় রাখে যেখানে সে তার বিবাহ সঙ্গী ভাল করে বেছে নিতে পারে অথবা গুরুত্বপূর্ণভাবে নির্ণয় করতে পারে যে একাকী থাকতে চায় কিনা।

১৯. আমাদের যদি বিবাহের প্রকৃত প্রয়োজন না থাকে তবে আমরা বিষয়টিকে কিভাবে দেখতে পারি?

১৯ আমরা হয়ত অনেকেই সৌকুমার্য্য পার হয়ে এসেছি, এবং তার সাথে যে প্রবল যৌন আকাঙ্ক্ষা তাও। আমরা হয়ত কখন কখন বিবাহের আশীর্বাদ সম্বন্ধে চিন্তা করি কিন্তু হয়ত আমাদের একাকী থাকার দান আছে। যিহোবা হয়ত দেখেন যে আমরা তাকে একাকী অবস্থায় ভাল সেবা করতে পারছি এবং হয়ত আমাদের বিবাহের প্রকৃত দরকার নেই, যার জন্য হয়ত প্রয়োজন হতে পারে যে আমরা তার সেবায় কোন সুযোগ পরিত্যাগ করি। যদি বিবাহের জন্য আপনার ব্যক্তিগত চাহিদা না থাকে এবং এক সঙ্গীর দ্বারা আশির্ব্বাদযুক্ত না হন, ঈশ্বর হয়ত আমাদের জন্য অন্য কিছু সঞ্চিত রেখেছেন। তাই আসুন আমরা সেই বিশ্বাস দেখাই যে তিনি সেই সবকিছু দেবেন যার আমাদের প্রয়োজন আছে। সব থেকে বড় সুখ আসে যখন আমরা নম্রতার সাথে সেই সবকিছু গ্রহণ করি যা মনে হয় আমাদের জন্য ঈশ্বরের ইচ্ছা, যেমন যিহৃদী ভাইরা ‘একমত হলেন ও ঈশ্বরের গৌরব প্রদান করিলেন’ ইহা উপলব্ধি করে যে তিনি পরজাতীয়দের পশ্চাতাপ অনুমোদন করেন যাতে তারাও জীবন পায়।—প্রেরিত ১১:১-১৮, NW.

২০. (ক) এখানে যুবক যুবতী একাকী খ্রীষ্টানদের কি উপদেশ দেওয়া হয়েছে? (খ) সুখ সম্বন্ধে কোন মূল বিষয় সত্য থেকে যায়?

২০ তাহলে, বিবাহ সুখের চাবিকাঠি হতে পারে, যদিও তা সমস্যার জন্য দরজাও খুলে দিতে পারে। একটি বিষয় যদিও নিশ্চিৎ: যে বিবাহ সুখ খুজে পাওয়ার একমাত্র পথ নয়। সবকিছু বিবেচনা করে তাহলে ইহা বিজ্ঞের কাজ হবে, বিশেষ করে যুবক যুবতী খ্রীষ্টানদের ক্ষেত্রে, যাতে তারা কতকগুলি বৎসর একাকী থাকতে পারে তার জায়গা করে নেয়। সেই বৎসরগুলি যিহোবাকে উত্তমরূপে সেবা করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং আত্মিকভাবে অগ্রসর হওয়া যেতে পারে। আমাদের বয়স যাই হোক না কেন অথবা আত্মিক বৃদ্ধ যাই হোক, এই মৌলিক বিষয়টি সত্য তাদের সকলের ক্ষেত্রে যারা কোন শর্ত ছাড়া ঈশ্বরের কাছে উৎসগিকৃত: যে সত্যিকারের সুখ কেবল পাওয়া যেতে পারে বিশ্বস্তভাবে যিহোবাকে সেবা করার মাধ্যমে। (w92 5/15)

আপনি কিভাবে সাড়া দেবেন?

▫ যিহোবার উপাসকেরা কেন সুখী?

▫ বিবাহ কেন মহৎ সুখের চাবিকাঠি নয়?

▫ একজন বিবাহের সাথী বেছে নেওয়ার ব্যাপারে, যিহোবার লোকেদের চাহিদা কি?

▫ কেন ইহা বিশ্বাস করা যুক্তিসংঙ্গত যে, যে খ্রীষ্টানরা একাকী থাকেন তারা সুখী হতে পারেন?

▫ বিবাহ ও সুখ সম্বন্ধে আমাদের কি স্বীকার করতে হবে?

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার