ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯২ ৯/১ পৃষ্ঠা ১৪-১৯
  • মনুষ্যধারী হয়ে সেবা করা

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • মনুষ্যধারী হয়ে সেবা করা
  • ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “মনুষ্যদের জীবিত ধরা”
  • মনুষ্যধারী
  • মানব সমুদ্রে মৎস্য ধরা
  • “প্রভুর দিনে” মনুষ্যধারী হওয়া
  • চারজন শিষ্যকে ডাকা হয়
    সর্বমহান পুরুষ যিনি কখনও জীবিত ছিলেন
  • বিশ্বব্যাপী জলে মনুষ্যধারী হওয়া
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিশু তাঁর শিষ্যদের আবার দেখা দেন
    বাইবেল থেকে তুমি যা শিখতে পার
১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯২ ৯/১ পৃষ্ঠা ১৪-১৯

মনুষ্যধারী হয়ে সেবা করা

“যীশু শিমোনকে কহিলেন, ‘ভয় করিও না, এখন অবধি তুমি জীবনার্থে মানুষ ধরিবে।’”—লূক ৫:১০.

১, ২. (ক) মৎস্য ধরা মানুষের ইতিহাসে কি ভূমিকা রাখে? (খ) কি নতুন ধরনের মৎস্য ধরা ২,০০০ বৎসর পূর্বে প্রবর্তন করা হয়?

সহস্র বৎসর ধরে, মানবজাতি খাদ্যের জন্য মৎস্য ধরেছে পৃথিবীর সমুদ্রে, হ্রদে, এবং নদীতে। নীল নদের মাছ প্রাচীন মিশরবাসীদের খাদ্যের এক বিশেষ অংশ ছিল। যখন মোশীর দিনে নীল নদের জল রক্তে পরিণত হয়, মিশরীয়রা কেবল যে জলকষ্ট ভোগ করে তা নয় কিন্তু যেহেতু সব মাছ মারা যায়, তা খাদ্যের সরবরাহের উপর প্রভাব ফেলে। পরে, সিনয়ে, যখন যিহোবা ইস্রায়েলকে আইন দেন, তিনি তাদের বলেন যে তারা কোন কোন মাছ খেতে পারে কিন্তু অন্য কিছু মাছ অসূচী, তা যেন ভোজন করা না হয়। ইহা ইঙ্গিত দেয় যে ইস্রায়েলীয়রা যখন প্রতিজ্ঞাত দেশে আসবে তখন মৎস্য ভোজন করবে, তাই তাদের মধ্যে কেহ কেহ হবে মৎস্যধারী।—যাত্রাপুস্তক ৭:২১, ২২; লেবীয়পুস্তক ১১:৯-১২.

২ যাহাহোক, প্রায় ২,০০০ বৎসর আগে, আরেক ধরনের মৎস্যধরা মানবজাতির কাছে প্রবর্তন করা হয়। ইহা ছিল আত্মিক ধরনের মৎস্য ধরা যা কেবলমাত্র মৎস্যধারীকে নয় কিন্তু মাছকেও সাহায্য করবে! এই ধরনের মৎস্যধরা আজও অভ্যাস করা হচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষকে উপকৃত করছে।

“মনুষ্যদের জীবিত ধরা”

৩, ৪. কোন দুইজন মৎস্যধারী যীশুর প্রতি অধিক আগ্রহ দেখান?

৩ ২৯ সা. শ., যীশু যিনি এই ধরনের মৎস্য ধরা প্রবর্তন করবেন, জর্দ্দন নদীতে বাপ্তিস্ম নেন যোহন বাপ্তাইজকের দ্বারা। কয়েক সপ্তাহ পরে, যোহন যীশুকে দেখিয়ে তার দুইজন শিষ্যকে বলেন: “ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষশাবক!” এই শিষ্যদের একজন, যার নাম ছিল আন্দ্রিয়, তাড়াতাড়ি এই বিষয় তার ভ্রাতা শিমোন পিতরকে বলেন: “আমরা মশীহর দেখা পাইয়াছি”! আগ্রহজনক ভাবে আন্দ্রিয় ও পিতর উভয় পেশায় মৎস্যধারী ছিলেন।—যোহন ১:৩৫, ৩৬, ৪০, ৪১; মথি ৪:১৮.

৪ বেশ কিছু সময় পরে, গালীল সমুদ্রের ধারে যীশু লোকদের নিকটে প্রচার করছিলেন, সেখান থেকে আন্দ্রিয় ও পিতর খুব দূরে বাস করত না। তিনি লোকদের বলছিলেন: “মন ফিরাও, কেননা স্বর্গ-রাজ্য সন্নিকট হইল।” (মথি ৪:১৩, ১৭) আমরা চিন্তা করতে পারি যে পিতর ও আন্দ্রিয় তার সংবাদ শুনবার জন্য ব্যাকুল ছিল। যদিও, তারা উপলব্ধি করতে পারেনি যে যীশু তাদের এমন কিছু বলতে যাচ্ছিলেন যা তাদের জীবনকে সর্বকালের জন্য পরিবর্তিত করবে। আরও, যীশু তাদের যা বলবেন ও তাদের সাক্ষাতে যা করবেন তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্থ রাখে আমাদের দিনের জন্য।

৫. কি করে ধীবর পিতর যীশুর কাজে আসেন?

৫ আমরা পড়ি: একদা যখন লেকসমূহ তাঁহার উপরে চাপাচাপি করিয়া পড়িয়া ঈশ্বরের বাক্য শুনিতেছিল, তখন তিনি গিনেষরৎ হ্রদের কূলে দাঁড়াইয়াছিলেন, আর তিনি দেখিলেন, হ্রদের ধীবরেরা দুইখান নৌকা হইতে নামিয়া গিয়া জাল ধুইতেছেন।” (লূক ৫:১, ২) তখনকার সময়, পেশাদারী মৎস্যধারীরা বেশীরভাগ সময় রাত্রে কাজ করতেন, আর এই ব্যক্তিরা রাতে মাছ ধরার পর জালগুলো ধুচ্ছিলেন। যীশু তাদের একটি নৌকা নিতে মনস্থ করেন যাতে আরও কার্য্যকারী রূপে সেই বিস্তর লোকের কাছে প্রচার করতে পারেন। “তাহাতে তিনি ঐ দুইয়ের মধ্যে একখানিতে, শিমোনের নৌকাতে, উঠিয়া স্থল হইতে একটু দূরে যাইতে তাঁহাকে বিনতি করিলেন; আর তিনি নৌকায় বসিয়া লোকসমূহকে উপদেশ দিতে লাগিলেন।”—লূক ৫:৩.

৬, ৭. মাছ ধরা সম্বন্ধে যীশু কি আশ্চর্য্য কাজ করেন, এবং তা মৎস্য ধরা সম্বন্ধে কি মন্তব্যে পরিচালিত করে?

৬ লক্ষ্য করুন যীশুর লোক সমূহকে শিক্ষা দেওয়া অপেক্ষা আরও কিছু মনে ছিল: “পরে কথা শেষ করিয়া তিনি শিমোনকে কহিলেন, ‘তুমি গভীর জলে নৌকা লইয়া চল, আর তোমরা মাছ ধরিবার জন্য তোমাদের জাল ফেল।’” স্মরণে রাখবেন, যে এই ধীবরেরা সারা রাত্রী ব্যাপী কাজ করছিল। তাই ইহা আশ্চর্য্যের নয়, যে পিতর উত্তর দেন: “হে নাথ, আমরা সমস্ত রাত্রি পরিশ্রম করিয়া কিছুমাত্র পাই নাই, কিন্তু আপনার কথায় আমি জাল ফেলিব।” যখন তারা তা করে তখন কি ঘটে? “মাছের বড় ঝাক ধরা পড়িল, ও তাঁহাদের জাল ছিড়িতে লাগিল; তাহাতে তাঁহাদের যে অংশীদারেরা অন্য নৌকায় ছিলেন, তাঁহাদের তাঁহারা সঙ্কেত করিলেন, যেন তাঁহারা আসিয়া তাঁহাদের সাহায্য করেন। তাহারা আসিয়া দুইখানি নৌকা এমন পূর্ণ করিলেন যে, নৌকা দুখানি ডুবিতে লাগিল।”—লূক ৫:৪-৭; NW.

৭ যীশু এক আশ্চর্য্য কাজ সাধন করেন। সমুদ্রের সেই অংশ সারা রাত্রিব্যাপী প্রায় অনুৎপাদী ছিল; এখন তা মৎসে পরিপূর্ণ। এই আশ্চর্য্য কাজ পিতরের উপর দারুন প্রভাব ফেলে। “শিমোন পিতর যীশুর জানুর উপর পড়িয়া কহিলেন, ‘আমার নিকট হইতে প্রস্থান করুন, কেননা হে প্রভু আমি পাপী।’” কারণ তারা যে মাছ ধরে তা তাকে ও তার সঙ্গে যারা ছিল তাদের সকলকে আশ্চর্য্য করে দেয়, তাই তার মত যাকোব এবং যোহন, সিবদিয়ের পুত্ররাও বলে, যারা শিমোনের সাথে অংশীদার ছিলেন। যীশু পিতরকে ডাকেন এবং তারপর তাকে সেই কথা বলেন যা তার জীবনকে পরিবর্তন করবে। “ভয় করিও না, এখন তুমি জীবনার্থে মানুষ ধরিবে।”—লূক ৫:৮-১০; NW.

মনুষ্যধারী

৮. কি ভাবে চারজন পেশাদার মৎস্যধারী ‘জীবন্ত মনুষ্যদের ধরা’ সম্বন্ধে সাড়া দেন?

৮ তাই যীশু মানুষকে মৎস্যের সাথ তুলনা করেছেন, আর তিনি এই নম্র ধীবরটিকে আহ্বান করেন তার জাগতিক কাজকে পরিত্যাগ করতে এক আরও বৃহৎ মৎস্য ধরার কাজের জন্য—জীবন্ত মানুষ ধরা। পিতর ও তার ভাই আন্দ্রিয়, এই আহ্বান গ্রহণ করেন। “আর তখনই তাঁহারা জাল পরিত্যাগ করিয়া তাঁহার পশ্চাদগামী হইলেন।” (মথি ৪:১৮-২০) যীশু এরপর যাকোব ও যোহনকে ডাকেন, যারা তাদের নৌকায় বসে তাদের জাল মেরামত করছিল। তিনি এদেরও আহ্বান করেন মনুষ্যধারী হতে। তারা কি ভাবে সাড়া দেয়? “আর তখনই তাঁহারা নৌকা ও আপনাদের পিতাকে পরিত্যাগ করিয়া তাঁহার পশ্চাদগামী হইলেন।” (মথি ৪:২১, ২২) যীশু তার দক্ষতা মনুষ্যধারী হিসাবে দেখান। এই ক্ষেত্রে তিনি চারজন ব্যক্তিকে জীবন্ত ধরেন।

৯, ১০. পিতর ও তার সহযোগীরা কি বিশ্বাস দেখান, আর তাদের আত্মিক মৎস্য ধরায় কিভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?

৯ একজন পেশাদারী ধীবর তার জীবিকা নির্বাহ করে সে যা ধরেছে তা বিক্রয় করে, কিন্তু একজন আত্মিক ধীবর তা করতে পারে না। সেইকারণে, এই শিষ্যরা প্রচুর বিশ্বাস দেখান যখন তারা তাদের সব কিছু পরিত্যাগ করেন যীশুকে অনুধাবন করার জন্য। তাদের মনে কোন সন্দেহ ছিল না, যে তাদের আত্মিক মৎস্যধরার কাজ সফল হবে। যীশু সেই অনুৎপাদী জলকে সত্যিকারের মৎসে ভরিয়ে তোলেন। তদ্রুপ, যখন তারা তাদের জাল সেই ইস্রায়েল জাতির উপর ফেলবে, শিষ্যরা নিশ্চিত হতে পারে যে, ঈশ্বরের সাহায্যে, তারা মানুষ জীবন্ত ধরতে পারবে। সেই আত্মিক মৎস্য ধরার কাজ যা তখন শুরু হয় তা চলছে, আর যিহোবা এখনও ফলবতী ফসল দিচ্ছেন।

১০ প্রায় দুই বৎসর, ওই শিষ্যদের যীশু শিক্ষা দেন মনুষ্যধারী হওয়ার জন্য। অনেক ক্ষেত্রে তিনি তাদের আনেক যত্নের সাথে নির্দেশ দেন এবং তাদেরকে তার অগ্রে পাঠান প্রচার করার জন্য। (মথি ১০:১-৭; লূক ১০:১-১১) যখন যীশুর সাথে বিশ্বাসঘতকতা করা হয় ও তাকে হত্যা করা হয়, শিষ্যরা স্তম্ভিত হয়। কিন্তু যীশুর মৃত্যু কি বুঝায় মানুষ্য ধরার কাজের শেষ? ঘটনাগুলি খুব শীঘ্রই এর উত্তর দেয়।

মানব সমুদ্রে মৎস্য ধরা

১১, ১২. তার পুনরুত্থানের পরে, যীশু কি আশ্চর্য্য কাজ করেন যা মৎস্য ধরার সাথে যুক্ত ছিল?

১১ যিরুশালেমের বাইরে যীশুর মত্যু ও পুনরুত্থানের কিছু পরে, শিষ্যরা গালীলে ফেরৎ যান। এমন এক ক্ষেত্রে তারা সাতজন একসাথে গালীল সমুদ্রের নিকটে ছিলেন। পিতর বলেন যে তিনি মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন, এবং অন্যরা তার সাথে যোগ দেন। স্বাধারণত, যে সময় মাছ ধরে থাকেন রাত্রে তা ধরছিলেন। বাস্তবপক্ষে, তারা আবার তাদের জাল সমুদ্রে ফেলেন এবং কিছুই পান না। তারপর, যখন প্রায় ভোর হয়ে আসছে, একটি মূর্ত্তি দেখা যায় তীরে দাঁড়িয়ে আছে আর সেখান থেকে তাদের জলের মধ্যে থেকে ডাকছে: “বৎসেরা তোমাদের নিকটে কিছু খাবার আছে?” শিষ্যরা চিৎকার করে উত্তর দেয়: “না!” তাই যিনি তীরে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের বলেন: “নৌকার দক্ষিণ পার্শ্বে জাল ফেল, পাইবে। অতএব তাঁহারা জাল ফেলিলেন, এবং এত মাছ পড়িল যে, তাঁহারা আর তাহা টানিয়া তুলিতে পারিলেন না।”—যোহন ২১:৫, ৬; NW.

১২ ইহা এক স্তম্ভিত করার মত অভিজ্ঞতা! সম্ভবত শিষ্যদের মাছ ধরা সম্বন্ধে আগের যে আশ্চর্য্য ঘটনা তা মনে পড়ে, তাদের মধ্যে অন্তত একজন চিনতে পারে তীরে দাঁড়ান সেই মূর্ত্তিটি কে। “যীশু যাঁহাকে প্রেম করিতেন, সেই শিষ্য পিতরকে বলিলেন, ‘উনি প্রভু!’ তাহাতে উনি প্রভু এই কথা শুনিয়া শিমোন পিতর দেহে কাপড় জড়াইলেন, কেননা তিনি উলঙ্গ ছিলেন, এবং সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়া পড়িলেন। কিন্তু অন্য শিষ্যরা মাছে পূর্ণ জাল টানিতে টানিতে ছোট নৌকাতে করিয়া আসিলেন; কেননা তাঁহারা স্থল হইতে দূরে ছিলেন না, অনুমান কেবল তিনশত ফুট দূরে।—যোহন ২১:৭, ৮.

১৩. যীশু স্বর্গে উথিত হওয়ার পরে, কি বিশ্বব্যাপী মাছ ধরার কার্য্যক্রম শুরু হয়?

১৩ এই আশ্চর্য্য কাজ কি ইঙ্গিত করে? মানুষদের ধরার যে কাজ তা শেষ হয়নি। এই বিষয় জোর দেওয়া হয় যখন যীশু তিনবার পিতরকে জোর দিয়ে বলেন—আর তার দ্বারা সব শিষ্যদের—যীশুর মেষদের ভোজন করাতে। (যোহন ২১:১৫-১৭) হ্যাঁ, আত্মিক খাদ্য খাওয়ানোর যে অনুক্রম তা তাদের সামনে রাখা হয়। তার মৃত্যুর পূর্বে, তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেন: “আর সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে।” (মথি ২৪:১৪) এখন সময় ছিল প্রথম শতাব্দীর সেই ভবিষ্যৎবাণী পরিপূর্ণতার। তার শিষ্যরা এবার তাদের জাল ফেলবেন মানব সমুদ্রে, আর তাদের জাল শূন্য উঠে আসবে না।—মথি ২৮:১৯, ২০.

১৪. যিরুশালেমের ধ্বংসের পূর্বেকি উপায়ে যীশুর অনুগমীদের মৎস্য ধরার অভিযান আশীর্বাদযুক্ত হয়?

১৪ তিনি স্বর্গে তার পিতার সিংহাসনে আরোহণ করার পূর্বে, যীশু তার শিষ্যদের বলেন: “কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে আসিলে তোমরা শক্তি প্রাপ্ত হইবে; আর তোমরা যিরূশালেমে, সমুদয় যিহৃদীয়া ও শমরিয়া দেশে, এবং পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত আমার সাক্ষী হইবে।” (প্রেরিত ১:৮) যখন পবিত্র আত্মা ৩৩ সা.শ. পঞ্চাশত্তমীর দিনে শিষ্যদের উপর ঢেলে দেওয়া হয়, তখন থেকে আত্মিক মৎস্য ধরার সেই বৃহৎ কাজ বিশ্বব্যাপী শুরু হয়। কেবলমাত্র পঞ্চাশত্তমীর দিনে তিন হাজার প্রানকে জীবিত ধরা হয়, আর তারপরই “পুরুষদের সংখ্যা কমবেশ পাঁচ হাজার হইল।” (প্ররিত ২:৪১; ৪:৪) এই বৃদ্ধি চলতে থাকে। রেকর্ড আমাদের বলে যে: “আর উত্তর উত্তর অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক বিশ্বাসী হইয়া প্রভুতে সংযুক্ত হইতে লাগিলেন।” (প্রেরিত ৫:১৪) খুব শীঘ্র, সমরিয়রা সুসমাচারের প্রতি সাড়া দেয়, এবং তার কিছু পরে অছিন্নত্বক্‌ পরজাতিয়রা। (প্রেরিত ৮:৪-৮; ১০:২৪, ৪৪-৪৮) পঞ্চাশত্তমীর প্রায় ২৭ বৎসর বাদে, প্রেরিত পৌল কলসীয় খ্রীষ্টানদের লেখেন যে সুসমাচার “আকাশমণ্ডলের অধঃস্থিত সমস্ত সৃষ্টির কাছে প্রচারিত হইয়াছে।” (কলসীয় ১:২৩) স্পষ্টতই, যীশুর শিষ্যরা গালীল সমুদ্রের অনেক দূরে তাদের মৎস্য ধরার অভিযান চালিয়ে যান। তারা তাদের জাল যে যিহৃদীরা রোমীয় সাম্রাজ্যের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল তাদের মধ্যে এবং যে অনাশাজনক ন-যিহৃদী লোকের সমুদ্র তাদের উপর ফেলেন। আর তাদের জালগুলি পূর্ণ হয়ে উঠে আসে। প্রথম শতাব্দীর খ্রীষ্টানদের চহিদা, যীশুর ভবিষ্যৎবাণীর মথি ২৪:১৪-পদের পূর্ণ হয় ৭০ সা. শ. যিরুশালেম ধ্বংস হবার পূর্বে।

“প্রভুর দিনে” মনুষ্যধারী হওয়া

১৫. প্রকাশিত বাক্যের পুস্তকে, আরও কি মৎস্য ধরার কাজ ভবিষ্যৎবাণী করা ছিল, আর তা কখন থেকে শুরু হবে?

১৫ যাহাহোক, আরও অনেক কিছু সম্মুখে রাখা ছিল। প্রথম শতাব্দীর প্রায় শেষের দিকে, যিহোবা শেষ জীবিত প্রেরিত, যোহনকে এক প্রকাশিত বিষয় সকল দেওয়ার অনুমোদন করেন যা সেই ঘটনাগুলিকে দেখায় যেগুলি শীঘ্রই ঘটতে চলেছে “প্রভুর দিনে।” (প্রকাশিত বাক্য ১:১, ১০) একটি বিশেষ বৈশিষ্ট হবে বিশ্বব্যাপী সুসমাচারের প্রচার। আমরা পড়ি: “পরে আমি আর এক দূতকে দেখিলাম, তিনি আকাশের মধ্য পথে উড়িতেছেন, তাঁহার কাছে অনন্তনকালীন সুসমাচার আছে, যেন তিনি পৃথিবী-নিবাসীদিগকে, প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও প্রজাবৃন্দকে, সুসমাচার জানান।” (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬) দূতেদের পরিচালনায় ঈশ্বরের দাসেরা বাস্তবপক্ষে সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচার করবে, কেবল রোমীয় সাম্রাজে নয়। বিশ্বাব্যাপী ব্যক্তিদের ধরার এক কাজ অধিগ্রহণ করা হবে, আর আমাদের দিন আজ সেই দর্শনের পরিপূর্ণতা লক্ষ্য করেছে।

১৬, ১৭. পরের দিকের আত্মিক মৎস্য ধরার কাজ কখন শুরু হয়, আর যিহোবা তা কি ভাবে আশীর্বাদ করেছেন?

১৬ এই বিংশ শতাব্দীতে এই ধরনের মৎস্য ধরার কাজ কিরূপ হচ্ছে? প্রথমের দিকে এই মৎস্যধারীরা অল্প সংখ্যায় ছিলেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে, কেবলমাত্র চার হাজার সুসমাচারের প্রচারক ছিলেন, উৎসাহী নারী ও পুরুষ যারা বেশীরভাগ মনোনীতদের অন্তর্ভুক্ত। যিহোবা যেখানে তাদের জন্য পথ খুলে দেন তারা সেখানে জাল ফেলেন, আর অনেক প্রাণ জীবন্ত ধরা পড়ে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, যিহোবা মৎস্য ধরার নতুন জলাশয়গুলি খুলে দেন। মিশ্‌নরিরা যারা ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ্‌ গিলিয়েডে যোগ দেয় তারা এই কাজের অগ্রভাগে থেকে অনেক দেশে কাজ করে। এই সব দেশগুলিতে যেমন জাপান, ইতালী, এবং স্পেনে, যেখানে প্রথমে মনে হয়েছিল ফলপ্রসূ হওয়া যাবে না, অবশেষে প্রচুর প্রাণের ফসল পাওয়া যায়। আমরা সাম্প্রতিক সময়ে জানতে পেরেছি যে পূর্ব ইউরোপে এই মৎস্য ধরার কাজ কত সফল হয়েছে।

১৭ আজ অনেক দেশে জাল প্রায় ছিড়তে চলেছে। প্রাণের এই বিরাট শষ্যছেদনের কাজ বাধ্য করেছে নতুন মণ্ডলী ও সীমা তৈরি করতে। এইগুলির জায়গা করে দেবার জন্য সব সময় নতুন কিংডম হল ও সম্মেলন হল তৈরি হচ্ছে। আরও প্রাচীন ও পরিচারক দাস দরকার দেখাশোনরা যে প্রয়োজন বৃদ্ধি পাচ্ছে তা তত্ত্বাবধান করার জন্য। এক বৃহৎ কাজ ১৯১৯ সালে সেই বিশ্বস্তদের দ্বারা আরম্ভ হয়। বাস্তবে আজ, যিশাইয় ৬০:২২ পদ পূর্ণতা লাভ করছে। ‘যে ছোট সে সহস্র হইয়া উঠিবে,’ আজ সেই চার হাজার মৎস্যধারী চল্লিশ লক্ষে পৌঁছেচে। আর শেষ দৃষ্টিগোচর এখন নয়।

১৮. আমরা প্রথম শতাব্দীর আত্মিক মনুষ্যধারীদের উদাহরণ কি করে অনুকরণ করতে পারি?

১৮ ব্যক্তিগতভাবে এইসকল আমাদের জন্য কি অর্থ রাখে? শাস্ত্র আমাদের বলে যে যখন পিতর, আন্দ্রিয়, যাকোব এবং যোহনকে ডাকা হয় মনুষ্যধারী হতে, “তাহারা . . . সকলই পরিত্যাগ করিয়া তাঁহার [যীশুর] পশ্‌চাদগামী হইলেন।” (লূক ৫:১১) বিশ্বাস ও আত্মোৎস্বর্গের কি উত্তম উদাহরণ! আমরাও কি আত্ম-ত্যাগের একই আত্মা ও যিহোবাকে সেবা করার একই তৎপরতা গড়ে তুলতে পারি তার মূল্য যাই হোক না কেন? লক্ষ লক্ষ ব্যক্তিরা উত্তর দিয়েছে যে তারা পারে। প্রথম শতাব্দীতে, শিষ্যরা যিহোবা তাদের যেখানে অনুমতি দেন তারা সেখানে মনুষ্যদের ধরে। তা যিহৃদী বা পরজাতিয় যাদের মধ্যেই হোক না কেন, তারা কোন শর্ত না রেখে মনুষ্যধারী হয়। আমরাও যেন বাধা বা পক্ষপাত ছাড়া সকলের কাছে প্রচার করি।

১৯. আমরা কি করতে পারি যদি যে জলে আমরা মৎস্য ধরি তা ফলউৎপাদক না হয়?

১৯ কিন্তু, যদি, আপনার বর্তমান ক্ষেত্র ফলহীন হয়? নিরুৎসাহিত হবেন না। মনে রাখবেন, যীশু তার শিষ্যদের জাল পূর্ণ করেন তারা সারা রাত্রিব্যাপী নিষ্ফল পরিশ্রম করার পর। আত্মিকভাবে একইরূপ ঘটতে পারে। আয়ারল্যাণ্ডে, উদাহরনস্বরূপ, বিশ্বস্ত সাক্ষীরা অনেক বৎসর যাবৎ পরিশ্রম করেন যার ফল খুব অল্পই হয়। কিন্তু, এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। ১৯৯১ ইয়ারবুক অফ্‌ যিহোভাস উইটনেসেস রির্পোট করে যে ১৯৯০ সালের বৎসরিক বৎসরের শেষে, আয়ারল্যাণ্ডে পরপর ২৯টি শীর্ষক দেখা যায়! হয়ত আপনার ক্ষেত্র একদিন তদ্রুপ উৎপাদন করবে। যতদিন যিহোবা সময় দেন মৎস্য ধরে যান!

২০. আমরা মানুষ ধরার কার্য্যে কখন থেকে যুক্ত হব?

২০ ইস্রায়েলদেশে, মৎস্যধারীরা রাত্রে যান মৎস্য ধরতে, যখন অন্য সবাই তাদের বিছানায় আরামে ঘুমাছে। তারা তখন বইরে যায় নি, যখন তা তাদের জন্য সুবিধাজনক ছিল, কিন্তু যখন তারা সব থেকে বেশী মাছ পাবে সেই সময় যায়। আমাদেরও আমাদের ক্ষেত্রের ভাল করে পরিসংখ্যান করতে হবে যাতে আমরা সেই সময়, যেন মাছ ধরতে যাই, যখন বেশীরভাগ লোক বাড়ীতে থাকবে এবং আমাদের কথা শুনবে। তাহা হয়ত বিকেলে, সপ্তাহের শেষে, বা অন্য কোন সময় হতে পারে। তাহা যখনই হোক, আসুন আমরা সবকিছু করি যাতে সঠিক হৃদয়ের লোকদের চিহ্নিত করতে পারি।

২১. আমাদের অঞ্চল যদি প্রায় কাজ হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কি মনে রাখা দরকার?

২১ কিন্তু আমাদের ক্ষেত্র যদি প্রায় প্রচারিত এলাকা হয়? জগতে পেশাদারী মৎস্যধারীরা প্রায় অভিযোগ করেন যে তাদের এলাকায় অতিরিক্ত মৎস্য ধরা হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের আত্মিক মৎস্য ধরার ক্ষেত্রে তদ্রুপ হতে পারে? বাস্তবে নয়! অনেক ক্ষেত্র যদিও বহুবার প্রচারিত হয়েছে তবুও ফল উৎপন্ন করে। অন্যগুলি ভাল উৎপাদন করে কারণ তা উত্তমরূপে কাজ করা হয়। যাহাহোক, যখন গৃহগুলি প্রায় পরিদর্শন করা হয়, অতিরিক্ত ভাবে নিশ্চিত হোন যাতে যারা গৃহতে-নেই তাদের তালিকা রাখতে পারেন ও পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলতে শিখুন। আর স্মরণে রাখবেন যে খুব শীঘ্রই কেউ আবার সাক্ষাৎ করবে তাই আপনার অভ্যর্থনায় অনেক সময় নিয়ে গৃহকর্তাকে শত্রুতে পরিণত করবেন না। রাস্তায় প্রচার ও অক্রমানুসারী সাক্ষ্যদানে আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করুন। আপনার আত্মিক জালকে সর্ব ক্ষেত্রে ও সর্ব উপায়ে ফেলুন।

২২. কি মহৎ সুযোগ আমরা এখন উপভোগ করি এই সময়ে?

২২ মনে রাখবেন যে এই মৎস্য ধরার কাজে মাছ ও মৎস্যধারী উভয়ে উপকৃত হয়। যাদের আমরা ধরি তারা যদি অধ্যবসায়ী হয়, তারা চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে। পৌল তীমথিয়কে উৎসাহ দেন: “এ সকলে স্থির থাক; কেননা তাহা করিলে তুমি আপনাকে ও যাহারা তোমার কথা শুনে, তাহাদিগকে পরিত্রাণ করিবে।” (১ তীমথিয় ৪:১৬) যীশু ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি তার শিষ্যাদের আত্মিক মৎস্য ধরতে শিক্ষা দেন, আর এই কাজ এখন তার পরিচালনায় হচ্ছে। (তুলনা করুন প্রকাশিত বাক্য ১৪:১৪-১৬) আমাদের কি উত্তম সুযোগ না রয়েছে তার আধিনে কাজ করে এই কাজ সম্পন্ন করার! আসুন আমারা আমাদের জাল ততক্ষন অবধি ফেলে রাখি যতক্ষন যিহোবা তা অনুমোদন করেন। জীবন্ত প্রাণগুলি ধরা ব্যাতিরেকে আর কি মহৎ কাজ থাকতে পারে? (w92 6/15)

আপনি কি স্মরণে আনতে পারেন?

▫ যীশু তার অনুগামীদের কি কাজ করতে শিক্ষা দেন?

▫ কি করে যীশু দেখান যে আত্মিক মৎস্য ধরার যে কাজ তা তার মৃত্যুর সাথে শেষ হয়ে যায়নি?

▫ কি উপায়ে যিহোবা আত্মিক মৎস্যধরার কাজকে প্রথম শতাব্দীতে আর্শীবাদযুক্ত করেন?

▫ মৎস্যদের কি উত্তম ফসল কাটা হয়েছে এই “প্রভুর দিনে”?

▫ আমরা ব্যক্তিগতভাবে এখন কি করে মনুষ্যধারী হিসাবে আরও বেশী কার্য্যকারী হতে পারি?

[Pictures on page 17]

যীশুর পুনরুত্থানের পর, তার প্রেরিতরা মনুষ্য ধরার সেই ঐশিক কাজকে আরও ব্যপ্ত করেন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার