ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ৭/১ পৃষ্ঠা ৭-১১
  • আপনি কোন্‌ মেজে ভোজন করছেন?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • আপনি কোন্‌ মেজে ভোজন করছেন?
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • “মন্দ দূতেদের মেজ” এড়িয়ে চলা
  • ‘বিশ্বস্ত দাস’ যিহোবার মেজে পরিবেশন করে
  • মন্দ দূতেদের মেজের বিষাক্ত খাদ্য থেকে সাবধান
  • কেবলমাত্র যিহোবার মেজ থাকবে
  • সূচিপত্র
    ২০২৪ সজাগ হোন!
  • যিশু মন্দ স্বর্গদূতদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী
    শিক্ষকের কাছ থেকে শেখো
  • ঐশিক শিক্ষা বনাম মন্দ আত্মাদের শিক্ষা
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • মন্দদূতেরা—কীভাবে আমরা তাদের প্রতিরোধ করতে পারি?
    ২০০৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ৭/১ পৃষ্ঠা ৭-১১

আপনি কোন্‌ মেজে ভোজন করছেন?

“প্রভুর মেজ ও মন্দ দূতেদের মেজ, তোমরা এই উভয় মেজের অংশী হতে পার না।”​—⁠১ করিন্থীয় ১০:​২১, NW.

১. কোন্‌ মেজ আমাদের সামনে প্রস্তুত করা হয়েছে আর সেই সম্বন্ধে প্রেরিত পৌল আমাদের কী সতর্ক করে দেন?

প্রেরিত পৌলের এই অনুপ্রাণিত বাক্যগুলি দেখায় যে মানবজাতির সামনে দুটি রূপক মেজ রাখা হয়েছে। প্রত্যেক মেজকে শনাক্ত করা যায় তার উপর প্রতীকস্বরূপ খাদ্যের দ্বারা এবং আমরা সকলে একটি না একটি মেজ থেকে খাদ্য গ্রহণ করছি। কিন্তু, আমরা যদি ঈশ্বরকে খুশি করতে চাই, তাহলে তাঁর মেজে ভোজন করার সাথে সাথে মন্দ দূতেদের মেজেতেও একটু একটু করে ভোজন করতে পারি না। প্রেরিত পৌল সর্তক করে বলেন: “পরজাতিরা যাহা যাহা বলিদান করে, তাহা মন্দ দূতদের উদ্দেশে বলিদান করে, ঈশ্বরের উদ্দেশে নয়; আর আমার এমন ইচ্ছা নয় যে, তোমরা মন্দ দূতদের সহভাগী হও। প্রভুর পানপাত্র ও মন্দ দূতদের পানপাত্র, তোমরা এই উভয় পাত্রে পান করিতে পার না; প্রভুর মেজ ও মন্দ দূতদের মেজ, তোমরা এই উভয় পাত্রে অংশী হইতে পার না।”​—⁠১ করিন্থীয় ১০:​২০, ২১ NW.

২. (ক) প্রাচীন ইস্রায়েল কালে যিহোবার কোন্‌ মেজ অস্তিত্বে ছিল আর কারা মঙ্গলার্থক বলিতে অংশ গ্রহণ করত? (খ) আজকের দিনে যিহোবার মেজে অংশগ্রহণ করার অর্থ কী?

২ প্রাচীন ইস্রায়েলে যিহোবার নিয়ম অনুসারে যে মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করা হত পৌলের কথাগুলি আমাদের তা মনে করিয়ে দেয়। ঈশ্বরের বেদিকে মেজ বলা হত আর যে ব্যক্তি, পশুটি বলি দেওয়ার জন্যে নিয়ে আসত তাকে যিহোবা ও পুরোহিতদের সঙ্গে অংশীদার বলা হত। কিভাবে? প্রথমত, যিহোবা এই বলিদানে অংশ নিতেন কারণ রক্ত বেদিতে ছিটানো হত আর বেদির নিচে আগুনের দ্বারা মেদ জ্বলে নিঃশেষ হয়ে যেত। দ্বিতীয়ত, পুরোহিতও এতে অংশ নিতেন কারণ তিনি (এবং তার পরিবার) সেই বলি দেওয়া পশুর ঝলসানো বুক ও ডান পায়ের অংশ খেতেন। আর তৃতীয়ত, যিনি বলি উৎসর্গ করতেন তিনি অবশেষটুকু খেতেন। (লেবীয় পুস্তক ৭:​১১-৩৬) আজকের দিনে যিহোবার মেজে অংশ নেওয়ার অর্থ হল, যে ধরনের উপাসনা তিনি চান সেইভাবে উপাসনা করা যার উদাহরণ আমরা যীশু খ্রীষ্ট ও প্রেরিতদের কাছ থেকে পাই। এটি করতে আমাদের আধ্যাত্মিকরূপে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে যা যিহোবা আমাদের তাঁর বাক্য ও সংগঠনের মাধ্যমে দেন। ইস্রায়েলজাতি, যারা যিহোবার সাথে তাঁর মেজে বিশেষ অংশগ্রহণ করা উপভোগ করেছিল তাদের মন্দ দূতেদের প্রতি বলিদান করা নিষিদ্ধ ছিল। আত্মিক ইস্রায়েল ও তাদের “অপর মেষ” সাথীদের প্রতি সেই একই ঐশ্বরিক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।​—⁠যোহন ১০:১৬.

৩. আমাদের দিনে কী করে এক ব্যক্তি মন্দ দূতেদের মেজে অংশগ্রহণকারী হিসাবে দোষী হতে পারে?

৩ আমাদের দিনে কী করে একজন ব্যক্তি মন্দ দূতেদের মেজের অংশ নেওয়ার জন্য দোষী হতে পারে? যিহোবার বিরুদ্ধে যে কোন বিষয়ের ইচ্ছা সাধন করে। মন্দ দূতগণের মেজের অন্তর্ভুক্ত হল, পৈশাচিক সম্প্রচার যা আমাদের ভ্রান্ত করার জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে আমরা যিহোবার কাছ থেকে দূরে সরে যাই। কে এই বিষ নিজের হৃদয়ে ও মনে গ্রহণ করতে চাইবে? বর্তমানে অধিকাংশ লোকে যুদ্ধ ও ধনের দেবতার কাছে যে বলিদান করে, সত্য খ্রীষ্টানেরা তাতে অংশগ্রহণ করে না।​—⁠মথি ৬:২৪.

“মন্দ দূতেদের মেজ” এড়িয়ে চলা

৪. আমরা সকলে কী প্রশ্নের সম্মুখীন হই ও জেনে শুনে কেন আমরা মন্দ দূতেদের মেজে অংশগ্রহণ করব না?

৪ এখন সবার সামনে প্রশ্ন হল আমরা কোন্‌ মেজে খাদ্য গ্রহণ করছি? আমাদের যে কোন একটি মেজে খাদ্য গ্রহণ করতে হবেই এই বিষয়টি আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। (তুলনা করুন মথি ১২:৩০.) আমরা জেনে শুনে মন্দ দূতেদের মেজে অংশ নিতে চাই না। যদি তাই করি, তাহলে আমরা একমাত্র সত্যময় ও জীবন্ত ঈশ্বর, যিহোবার অনুমোদন হারাতে পারি। অপরপক্ষে, শুধুমাত্র যিহোবার মেজে খাদ্য গ্রহণ করলে তা আমাদের আনন্দপূর্ণ অনন্ত জীবনের পথে নিয়ে যাবে! (যোহন ১৭:⁠৩) একটি প্রবাদ আছে যে, একজন ব্যক্তি যেরকম, তার আহারও সেরকম। তাহলে যে উত্তম দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে চায় তাকে তার আহারের দিকেও নজর রাখতে হবে। ঠিক যেমন অতিমাত্রায় তেল দিয়ে তৈরি, রাসায়নিক পদার্থযুক্ত, অস্বাস্থ্যকর সুস্বাদু খাদ্য মুখরোচক হলেও আমাদের উত্তম দৈহিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে না, তেমনি রূপক অস্বাস্থ্যকর সুস্বাদু খাদ্য হচ্ছে, এই জগতের মন্দ দূতেদের বুদ্ধি দ্বারা চালিত প্রচার যা আমাদের মনকে কলুষিত করবে।

৫. কী করে আমরা পৈশাচিক শিক্ষা গ্রহণ করা এড়িয়ে চলতে পারি?

৫ প্রেরিত পৌল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে শেষকালে ‘ভূতগণের শিক্ষার’ ফলে অনেকে বিপথগামী হবে। (১ তীমথিয় ৪:⁠১) সেই মন্দ দূতেদের শিক্ষাগুলি শুধু মিথ্যা ধর্মীয় বিশ্বাসে নয় কিন্তু সেই শিক্ষা অন্যভাবে ব্যাপকরূপে প্রচারিত হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, আমাদের বিশ্লেষণ ও মূল্যনির্ধারণ করতে হবে কী ধরনের বই ও পত্রিকা আমরা এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়ি, টেলিভিশনের কোন্‌ অনুষ্ঠানগুলি আমরা দেখি, কোন্‌ নাটক ও চলচ্চিত্র আমরা দেখি। (হিতোপদেশ ১৪:১৫) যদি আমরা চিত্তবিনোদনের জন্য ফিকশন পড়ি সেটি কি অর্থহীন দৌরাত্ম্য, অবৈধ যৌনতা, প্রেতচর্চার বিষয় দ্বারা পূর্ণ থাকে? যদি আপনি শিক্ষার জন্য ফিকশন নয় এমন বই পড়েন তাহলে কি সেটি দর্শনবাদ অথবা “খ্রীষ্টের অনুরূপ নয়” এমন জীবনধারা সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করে? (কলসীয় ২:⁠৮) ব্যর্থ কল্পনা কি উপস্থাপনা অথবা জগতের সামাজিক আন্দোলনকে কি সমর্থন করা হয়? ধনবান হওয়ার সিদ্ধান্তকে ইন্ধন যোগায়? (১ তীমথিয় ৬:⁠৯) এমন প্রকাশনা কি, যা বিবাদমূলক শিক্ষাকে চতুরভাবে উপস্থাপনা করে যা খ্রীষ্টরূপ নয়? যদি আমাদের উত্তর হ্যাঁ হয় আর আমরা যদি ক্রমাগত এই ধরনের বিষয়বস্তু পড়ি অথবা দেখি তাহলে আমরা হয়ত মন্দ দূতেদের মেজ থেকে খাদ্য গ্রহণ করার ঝুঁকি নিচ্ছি। আজকে, লক্ষেরও বেশি প্রকাশনা আছে যেগুলি জাগতিক দর্শনবাদকে বাড়িয়ে তোলে যা হয়ত আপাতদৃষ্টিতে জ্ঞানালোকপ্রাপ্ত করতে ও সাম্প্রতিক হতে পারে। (উপদেশক ১২:১২) কিন্তু এই প্রচার মাধ্যমগুলি কোনটি নতুন নয়; আমাদের উপকার অথবা ভালোর জন্য কিছুই করে না বরং যেমন শয়তান চতুরভাবে হবার ভালোর জন্য বলেছিল, ঠিক সেইরূপ হয়।​—⁠২ করিন্থীয় ১১:⁠৩.

৬. যখন শয়তান আমাদের তার পৈশাচিক অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায় তখন আমাদের প্রতিক্রিয়া কেমন হওয়া উচিত?

৬ তাহলে যখন শয়তান আমাদের পৈশাচিক অস্বাস্থ্যকর সুস্বাদু খাদ্য খেতে আমন্ত্রণ জানায়, তখন আমাদের প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন যখন শয়তান তাঁকে পাথরকে রুটি করবার জন্য প্রলোভন দেখিয়ে ছিল। যীশু উত্তর করেন: “মনুষ্য কেবল রুটীতে বাঁচিবে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখ হইতে যে প্রত্যেক বাক্য নির্গত হয়, তাহাতেই বাঁচিবে।” আর যখন দিয়াবল যীশুকে “জগতের সমস্ত রাজ্য ও সেই সকলের প্রতাপ” দেবার প্রস্তাব দিল যদি শুধু তিনি নিচুঁ হয়ে শয়তানকে একবার উপাসনা করেন, যীশু উত্তরে বলেন: “দূর হও শয়তান; কেননা লেখা আছে, ‘তোমার ঈশ্বর যিহোবাকেই প্রণাম করিবে কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে।’”​—⁠মথি ৪:​৩, ৪, ৮-১০, NW.

৭. আমরা যদি মনে করি যিহোবা ও মন্দ দূতেদের মেজ উভয় থেকেই খাদ্য গ্রহণ করা যায় তাহলে কেন আমরা আমাদের মনকে প্রতারিত করছি?

৭ যিহোবার মেজ ও মন্দ দূতেদের মেজ কখনও এক করা যাবে না! হ্যাঁ, পূর্বে এক করার চেষ্টা করা হয়েছে। এলিয় ভাববাদীর সময়ে প্রাচীন ইস্রায়েল জাতিকে স্মরণ করুন। তারা যিহোবার উপাসনা করে বলে দাবি করে, কিন্তু তারা অন্য দেবতাদের বিশ্বাস করত, যেমন বাল, কারণ তারা মনে করত যে বাল দেবতা তাদের সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে। এলিয় তাদের সম্মুখে এসে বলেন: “তোমরা কতকাল দুই নৌকায় পা দিয়া থাকিবে? সদাপ্রভু যদি ঈশ্বর হন, তবে তাঁহার অনুগামী হও; আর বাল যদি ঈশ্বর হয়, তবে তাহার অনুগামী হও।” নিঃসন্দেহে ইস্রায়েল জাতি “একবার একটি পায়ে আরেকবার অন্য পায়ে” দাঁড়াচ্ছিল। (১ রাজাবলি ১৮:২১; যিরুশালেম বাইবেল) এলিয় বাল দেবের পুরোহিতদের চ্যালেঞ্জ করেন তাদের দেবতাদের ঈশ্বরত্ব প্রমাণিত করার জন্য। যে ঈশ্বর স্বর্গ থেকে উৎসর্গীকৃত বলির উপর আগুন নিয়ে আসবেন তিনিই সত্যময় ঈশ্বর প্রমাণিত হবেন। বাল দেবের পুরোহিতগণ অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও ব্যর্থ হয়। তারপর এলিয় শুধু প্রার্থনা করেন: “হে সদাপ্রভু, . . . আমাকে উত্তর দেও; যেন এই লোকেরা জানিতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর।” তৎক্ষণাৎ, স্বর্গ থেকে আগুন এসে জলে সিক্ত উৎসর্গীকৃত বলিকে গ্রহণ করল। যিহোবার ঈশ্বরত্বের বিশ্বাসস্থাপনকারী প্রদর্শন দেখে লোকেরা উদ্দীপিত হয়ে এলিয়ের কথায় বাধ্য হয়ে ৪৫০ জন বাল দেবের ভাববাদিগণকে সংহার করল। (১ রাজাবলি ১৮:​২৪-৪০) সুতরাং বর্তমানে আমাদের যিহোবাকে একমাত্র ঈশ্বর হিসাবে জানতে হবে আর শুধু যিহোবারই মেজে খাদ্য গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যদি আমরা এখনও তা না করে থাকি।

‘বিশ্বস্ত দাস’ যিহোবার মেজে পরিবেশন করে

৮. যীশু কোন্‌ দাসদের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন যাদের তিনি ব্যবহার করবেন তার আগমনের সময়ে শিষ্যদের আধ্যাত্মিক খাদ্য যোগাবার জন্য আর সেই দাসেদের শনাক্তিকরণ চিহ্ন কী?

৮ প্রভু যীশু খ্রীষ্ট ভাববাণী করেছিলেন যে তাঁর উপস্থিতির সময় “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” তাঁর শিষ্যদের আধ্যাত্মিক খাদ্য যোগাবে: “ধন্য সেই দাস, যাহাকে তাহার প্রভু আসিয়া সেইরূপ করিতে দেখিবেন। আমি তোমাদিগকে সত্য কহিতেছি, তিনি তাহাকে আপন সর্ব্বস্বের অধ্যক্ষ করিবেন।” (মথি ২৪:​৪৫-৪৭) এই দাস, একজন ব্যক্তি নয় কিন্তু উৎসর্গীকৃত, অভিষিক্ত খ্রীষ্টীয়দের শ্রেণী। অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশ ও “বিস্তর লোক” উভয়ের জন্য এই শ্রেণী যিহোবার মেজে উত্তম আধ্যাত্মিক খাদ্য পরিবেশন করেছে। এখন ৪০ লক্ষের ও বেশি, এই বিস্তর লোক, অভিষিক্ত অবশিষ্টাংশদের সাথে যিহোবার সার্বিক সার্বভৌমত্বের আর তাঁর রাজ্যের সপক্ষে দাঁড়িয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর পবিত্র নামকে মহিমান্বিত করবেন।​—⁠প্রকাশিত বাক্য ৭:​৯-১৭.

৯. যিহোবার সাক্ষীদের আধ্যাত্মিক খাদ্য যোগাবার জন্য দাস শ্রেণী কোন্‌ সাধনী ব্যবহার করছে আর তাদের আধ্যাত্মিক ভোজ সম্বন্ধে শাস্ত্রে কিভাবে বর্ণনা করা হয়েছে?

৯ এই বিশ্বস্ত দাস শ্রেণী সকল যিহোবার সাক্ষীদের আধ্যাত্মিক পুষ্টি যোগাতে ওয়াচ টাওয়ার বাইবেল অ্যাণ্ড ট্র্যাক্ট সোসাইটিকে ব্যবহার করছে। জীবন দায়ক আধ্যাত্মিক খাদ্যের অভাবে খ্রীষ্টীয় জগৎ ও এই বিধি ব্যবস্থার অবশিষ্ট লোকেরা ভোজ উপভোগ করেছে। (আমোষ ৮:১১) এটি যিশাইয় ২৫:৬ পদের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা অনুসারে: “বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই পর্ব্বতে সর্ব্বজাতির নিমিত্ত উত্তম খাদ্য দ্রব্যের এক ভোজ, পুরাতন দ্রাক্ষারসের, মেদোযুক্ত উত্তম উত্তম খাদ্য দ্রব্যের ও নির্ম্মলীকৃত পুরাতন দ্রাক্ষারসের এক ভোজ প্রস্তুত করিবেন।” যেমন ৭:৮ পদ দেখায়, এই ভোজ চিরকাল থাকবে। এখন যারা যিহোবার দৃশ্যতঃ সংগঠনে আছে তাদের জন্য কতই না আশীর্বাদ আর ভবিষ্যতেও এটি কতই না আশীর্বাদ নিয়ে আসবে

মন্দ দূতেদের মেজের বিষাক্ত খাদ্য থেকে সাবধান

১০. (ক) কী ধরনের খাদ্য দুষ্ট দাস শ্রেণী পরিবেশিত করছে আর কী তাদের প্ররোচিত করছে? (খ) দুষ্ট দাস তাদের পূর্বেকার সহদাসদের প্রতি কী রকম আচরণ করে?

১০ মন্দ দূতগণের মেজের খাদ্য বিষাক্ত। উদাহরণস্বরূপ, দুষ্ট দাস শ্রেণী আর ধর্মভ্রষ্টদের দ্বারা পরিবেশিত খাদ্য বিবেচনা করুন। তা পুষ্টি প্রদান করে না অথবা গড়ে তোলে না; এই খাদ্য স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ, ধর্মভ্রষ্টেরা যিহোবার মেজ থেকে খাদ্য গ্রহণ করা বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে, তারা যতটা নতুন ব্যক্তিত্ব গড়ে তুলেছিল, তা চলে গেছে। পবিত্র আত্মা তাদের প্ররোচিত করে না, তাদের প্ররোচিত করে গন্ধদ্রাবকের ন্যায় তীব্র বিদ্বেষ। তারা একটি লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর​—⁠তাদের পূর্বকার সহ দাসদের প্রহার করা যেমন যীশু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।​—⁠মথি ২৪:৪৮, ৪৯.

১১. আধ্যাত্মিক খাদ্য বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সি. টি. রাসেল কী বলেন আর যিহোবার মেজ পরিত্যাগকারিদের তিনি কিভাবে বর্ণনা করেন?

১১ উদাহরণস্বরূপ, সেই ১৯০৯ সালে ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সি. টি. রাসেল তাদের সম্বন্ধে লেখেন, যারা যিহোবার মেজ পরিত্যাগ করে আর তারপরে তাদের পূর্বেকার সহদাসদের সাথে দূর্ব্যবহার করতে আরম্ভ করেছিল। অক্টোবর ১, ১৯০৯ সালের প্রহরীদুর্গ বলে: “যে সব ব্যক্তিরা সংগঠন ও তার কাজ থেকে দূরে সরে যায় তারা উন্নতি করার অথবা একে অপরকে বিশ্বাসে ও আত্মার ফল গড়ে তোলার পরিবর্তে, আপাতদৃষ্টিতে তারা ঠিক বিপরীত করে থাকে​—⁠তারা পূর্বে যে উদ্দেশ্যের পক্ষে ছিল, সেই উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে আঘাত আনতে চায়, কমবেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিজেরাই ধীরে নিঃশেষ হয়ে যায়, নিজেদের আর যাদের সেই একই বিবাদপ্রিয় মনোভাব আছে, তাদের ক্ষতি নিয়ে আসে। . . . যদি কেউ মনে করে একই রকমের অথবা তার থেকে ভাল খাদ্য অন্য মেজে পাওয়া যেতে পারে কিংবা নিজেদের মত উত্তম অথবা তার থেকেও উত্তম ব্যক্তিতে পরিণত করতে পারে​—⁠তারা নিজেদের রাস্তায় চলতে পারে। . . . যদিও আমরা তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী খাদ্য ও আলোক খুঁজবার জন্য যেখানে সেখানে যেতে বাধা দিই না কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, যারা আমাদের বিরোধী পরিণত হয় তারা অন্য পথে চালিত হয়। ‘আমার পছন্দমত আমি কিছু পেয়েছি; এবার বিদায় নিচ্ছি!’ এইরূপ জগতের পুরুষালি মনোভাবের পরিবর্তে, এই ব্যক্তিরা ‘মাংসের ও দিয়াবলের কার্যগুলি,’ যেমন রাগ, বিদ্বেষ, ঘৃণা, বিবাদ, প্রদর্শন করে যা আমরা পূর্বে জাগতিক লোকেদের কাছ থেকে কখনও আশা করিনি। তাদের দেখে মনে হয় উন্মত্ততায়, শয়তানমূলক জলাতঙ্ক [রেবিস] দ্বারা পরিপূর্ণ। কেউ কেউ আবার আমাদের অপমান করে আর বলে যে আমরা নাকি তাদের অপমান করেছি। তারা মিথ্যা বলতে ও লিখতে আর নৈতিক দিক দিয়ে হীন কাজ করতে সবসময়ে প্রস্তুত।”

১২. (ক) কিভাবে ধর্মভ্রষ্টেরা তাদের সহদাসদের প্রহার করে? (খ) কৌতূহলবশত ধর্মভ্রষ্টদের লেখা থেকে খাদ্য গ্রহণ করা কেন বিপজ্জনক হবে?

১২ হ্যাঁ, ধর্মভ্রষ্টেরা বিকৃত, অর্ধ-সত্য, আর সম্পূর্ণ মিথ্যা সাহিত্য প্রকাশ করে। অসতর্ক ব্যক্তিদের ফাঁদে ফেলবার চেষ্টা করে, তারা এমনকি সম্মেলনেও বাধা দিতে আসে। যদি আমরা কৌতূহল বশত তাদের সেই প্রকৃতির লেখা পড়ি অথবা তাদের শ্রুতিকটু ভাষণ শুনি তা কতই না বিপজ্জনক হবে! ব্যক্তিগতভাবে আমরা তা ঝুঁকি মনে না করলেও কিন্তু বিপদ থেকে যায়। কেন? একটি কারণ হল, তারা ধর্মভ্রষ্ট সাহিত্যে মিথ্যাকে “মধুর বাক্য আর “কল্পিত বাক্য” দ্বারা উপস্থাপনা করে! (রোমীয় ১৬:​১৭, ১৮; ২ পিতর ২:⁠৩) মন্দ দূতেদের মেজ থেকে আপনি কী তা আশা করবেন না? আর যদিও ধর্মভ্রষ্টেরা হয়ত কিছু সত্য তথ্য উপস্থাপনা করতে পারে, তা সাধারণত প্রসঙ্গের বাইরে থেকে লোকেদের সরিয়ে রাখতে পারে। তাদের সব লেখা শুধুই গঠনমূলক নয়।

১৩, ১৪. ধর্মভ্রষ্ট ব্যক্তি ও তাদের সম্প্রচারের ফলগুলি কী কী?

১৩ যীশু বলেছিলেন: “তোমরা তাহাদের ফল দ্বারাই তাহাদিগকে চিনিতে পারিবে।” (মথি ৭:১৬) তাহলে এখন, ধর্মভ্রষ্ট ও তাদের সাহিত্যের ফল কী? তাদের সম্প্রচারে চারটে বিষয় লক্ষ্য করা যেতে পারে। (১) কুশলতা। যেমন ইফিষীয় ৪:১৪ বলে যে তারা ‘ভ্রান্তি জাগাতে চতুর।’ (২) গর্বসুলভ বুদ্ধি। (৩) প্রেমের অভাব। (৪) অনেক ক্ষেত্রে অসাধুতা। মন্দ দূতেদের মেজের খাদ্য এই রকম উপাদান দিয়ে তৈরি, যাতে করে যিহোবার লোকেদের বিশ্বাসকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে।

১৪ আরেকটি বিষয় রয়েছে। ধর্মভ্রষ্টেরা কিসে ফিরে গেছে? অনেকক্ষেত্রে তারা খ্রীষ্টীয় জগতের অন্ধকারে আর তাদের মতবাদে ফিরে গেছে, যেমন সকল খ্রীষ্টানেরা স্বর্গে যায়। তাছাড়া অনেকে রক্ত, নিরপেক্ষতা আর ঈশ্বরের রাজ্য প্রচারের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে দৃঢ় শাস্ত্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে না। আমরা মহতী বাবিলের অন্ধকার থেকে রক্ষা পেয়েছি তাই অমরা আর সেখানে কখনও ফিরে যেতে চাই না। (প্রকাশিত বাক্য ১৮:​২, ৪) যিহোবার মেজ পরিত্যা গকারী আর যারা যিহোবার ‘নিরাময় বাক্য-সমূহকে’ ধারণ করতে আমাদের সাহায্য করে, তাদের যারা মৌখিকভাবে প্রহার করে, সেই ব্যক্তিদের সম্প্রচারে বিশ্বস্ত দাস হিসাবে আপনি কেনই বা উঁকি মারতে যাবেন?​—⁠২ তীমথিয় ১:১৩.

১৫. আমরা যখন ধর্মভ্রষ্টদের অভিযোগ শুনি তখন বিজ্ঞের পথ বেছে নিতে বাইবেলের কোন্‌ নীতি আমাদের সাহায্য করবে?

১৫ অনেকে আবার ধর্মভ্রষ্টদের অভিযোগের প্রতি কৌতূহলী হয়ে থাকে। কিন্তু দ্বিতীয় বিবরণ ১২:​৩০, ৩১ পদের নীতি আমাদের হৃদয়ে নেওয়া উচিত প্রতিজ্ঞাত দেশ থেকে পৌত্তলিকদের স্থানচ্যুত করার পর ইস্রায়েলজাতিকে কী এড়িয়ে চলতে হবে যিহোবা তা মোশির মাধ্যমে সতর্ক করে দেন। “তখন সাবধান থাকিও, পাছে তোমার সম্মুখ হইতে তাহাদের বিনাশ হইলে পর তুমি তাহাদের অনুগামী হইয়া ফাঁদে পড়; এবং পাছে তাহাদের দেবগণের অন্বেষণ করিয়া বল, এই জাতিগণ আপন আপন দেবগণের সেবা কিরূপে করে? আমিও সেইরূপ করিব। তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি তদ্রূপ করিবে না।” হ্যাঁ, যিহোবা ঈশ্বর আমাদের কৌতূহল কেমনভাবে কাজ করে তা জানেন। হবা এবং লোটের স্ত্রীকেও স্মরণ করুন! (লূক ১৭:৩২; ১ তীমথিয় ২:১৪) ধর্মভ্রষ্টেরা কী বলছে অথবা করছে, আসুন আমরা যেন সেটিতে মনোযোগী না হই। বরং, একে অপরকে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আর যিহোবার মেজে বিশ্বস্তভাবে খাদ্য গ্রহণ করাতে আমরা যেন ব্যস্ত থাকি!

কেবলমাত্র যিহোবার মেজ থাকবে

১৬. (ক) শীঘ্রই শয়তান, মন্দ দূতেদের, আর প্রতীকস্বরূপ মেজের কী হবে যাতে জগতের জাতিগুলি খাদ্য গ্রহণ করছে? (খ) যারা মন্দ দূতদের মেজে খাদ্য গ্রহণ করেই যাচ্ছে তাদের কী হবে?

১৬ শীঘ্রই মহাক্লেশ হঠাৎ করে আবির্ভূত হবে এবং খুব শীঘ্রই ‘সর্ব্বশক্তিমান্‌ ঈশ্বরের সেই মহাদিনের যুদ্ধে,’ চরম পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। (প্রকাশিত বাক্য ১৬:​১৪, ১৬) অবশেষে তা চরম সীমায় পৌঁছাবে যখন যিহোবা এই বিধি ব্যবস্থাকে ও জাগতিক রাজ্যগুলি যে প্রতীকস্বরূপ মেজে খাদ্য গ্রহণ করেছিল সেই মেজ ধ্বংস করবেন। যিহোবা মন্দ দূতেদের বড় দলসহ শয়তান দিয়াবলের সমস্ত অদৃশ্য সংগঠনকে ধ্বংস করবেন। যারা শয়তানের আধ্যাত্মিক মেজ, মন্দ দূতেদের মেজে খাদ্য গ্রহণ করেই যায়, তাদের আক্ষরিক ভোজনে উপস্থিত থাকতেই হবে, অংশগ্রহণকারী হিসাবে নয় বরং মূল খাদ্য হিসাবে​—⁠তাদের ধ্বংসের জন্য!​—⁠দেখুন যিহিষ্কেল ৩৯:৪; প্রকাশিত বাক্য ১৯:​১৭, ১৮.

১৭. যারা শুধুমাত্র যিহোবার মেজে খাদ্য গ্রহণ করবে তাদের কোন্‌ আশীর্বাদ আসবে?

১৭ কেবলমাত্র যিহোবার মেজ থাকবে। যে সকল ব্যক্তিরা উপলব্ধি সহকারে যিহোবার মেজে খাদ্য গ্রহণ করছে তারা রক্ষা পাবে আর তারাই চিরকালের জন্য সেই মেজ থেকে খাদ্য গ্রহণ করার জন্য সুযোগ পাবে। কোনরকমের খাদ্যের অভাব আর কখনও তাদের অভাবগ্রস্ত করবে না। (গীতসংহিতা ৬৭:৬; ৭২:১৬) পরমদেশে তারা সিদ্ধ স্বাস্থ্যে যিহোবার সেবা করবে! প্রকাশিত বাক্যের ২১:৪ উত্তেজনাদায়ক কথাগুলি অবশেষে পরিপূর্ণ হবে: “তিনি তাহাদের সমস্ত নেত্রজল মুছাইয়া দিবেন; এবং মৃত্যু আর হইবে না; শোক বা আর্ত্তনাদ বা ব্যথাও আর হইবে না; কারণ প্রথম বিষয় সকল লুপ্ত হইল।” যেহেতু বিরোধিতা আর থাকবে না, যিহোবা ঈশ্বরের সার্বিক সার্বভৌমত্ব সর্বত্র এবং চিরকালের জন্য প্রতিষ্ঠিত হবে। উদ্ধারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা যারা পরমদেশ পৃথিবীর অধিকারী হবে তাদের উপর অপরিমেয় ঐশিক আশীর্বাদ ঢেলে দেওয়া হবে। এই পুরস্কার পাওয়ার জন্য আসুন, আমরা সবাই বদ্ধপরিকর হই শুধু যিহোবার মেজে অংশ গ্রহণ করার জন্য, যেখান থেকে উত্তম আধ্যাত্মিক খাদ্য উপচে পড়ছে।

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

▫ পৈশাচিক শিক্ষার দ্বারা ভ্রান্ত হওয়া থেকে আমরা কী করে এড়িয়ে চলতে পারি?

▫ কেন আমরা যিহোবা আর মন্দ দূত উভয় মেজেই সফলরূপে খাদ্য গ্রহণ করতে পারি না?

▫ ধর্মভ্রষ্টদের পরিবেশিত খাদ্য কী রকম?

▫ ধর্মভ্রষ্টদের অভিযোগ সম্বন্ধে কৌতূহল হওয়া কেন বিপজ্জনক?

▫ ধর্মভ্রষ্টদের ফলগুলি কী কী?

[৯ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার মেজে উত্তম আধ্যাত্মিক খাদ্য উপচে পড়ছে

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার