পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা চিরকালের জন্য নিশ্চিহ্ন!
ঈশ্বরের ইচ্ছা নয় যে মানুষ মৃত্যুভয়ে বাস করুক। “পরম সুখী” ঈশ্বর হিসাবে, তিনি চান যে তারা শান্তি উপভোগ করুক এবং সুরক্ষিতভাবে বেঁচে থাকুক--সংক্ষেপে, তারা সুখী থাকুক। (১ তীমথিয় ১:১১, NW) পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় ভরা জগতে, তা স্পষ্টতই সম্ভব নয়।
নকল “শান্তি এবং নিরাপত্তা”
স্পষ্টতই বোঝা যায় যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা এখনও রয়েছে। তবুও, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা সত্ত্বেও, জাতিগুলি প্রধানত আশাবাদী মনোভাব রাখে। রাষ্ট্রসংঘের আন্তর্জাতিক শান্তি বর্ষ, ১৯৮৬ সাল থেকে শুরু করে বিপদের আশঙ্কা কমিয়ে দেওয়ার ক্রমাগত প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা হয়েছে।
গত দশ বছরের মধ্যে, দ্যা বুলেটিন অফ দ্যা অ্যাটমিক সায়েন্টিস্ তাদের আণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনাকে ইঙ্গিত করার ব্যবস্থা--প্রলয়ের ঘড়িকে মধ্যরাত্রির ৩ মিনিট আগে থেকে ১৭ মিনিট আগে পিছিয়ে নিয়ে গেছে। স্টক্হলম্ আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা সংস্থা (Stockholm International Peace Research Institute) ১৯৮৯ সালে উল্লেখ করেছিল যে “শান্তিপূর্ণভাবে বাদবিবাদ নিষ্পত্তি করার আশা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অন্য যে কোন বছরের তুলনায় এই বছরে বেশি।”
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, আন্তর্জাতিক সমস্যার কেন্দ্রগুলির মোকাবিলা করার জন্য রাষ্ট্রসংঘকে আরও শক্তিশালী করে তোলা হয়েছে। সম্পূর্ণ সফল না হলেও, প্রধানত একটি আশাবাদী মনোভাব গড়ে তুলবার জন্য রাষ্ট্রসংঘ যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে। ভবিষ্যতে হয়ত আরও সাফল্য আসবে। “শান্তি এবং নিরাপত্তার” চিৎকার হয়ত আরও জোর এবং দৃঢ় হয়ে উঠবে। হয়ত তা বিশ্বাসযোগ্যও হয়ে উঠবে।
কিন্তু সাবধান থাকুন! “লোকে যখন বলে, শান্তি ও অভয়,” বাইবেল আমাদের সাবধান করে দেয়, “তখনই তাহাদের কাছে যেমন গর্ব্ভবতীর প্রসব-বেদনা উপস্থিত হইয়া থাকে, তেমনি আকস্মিক বিনাশ উপস্থিত হয়; আর তাহারা কোন ক্রমে এড়াইতে পারিবে না।” সুতরাং, “শান্তি ও নিরাপত্তার” কথা চিহ্নিত করবে যে ঈশ্বরের সময় এসে গেছে, “পৃথিবীনাশকদিগকে [যারা পরিবেশকে দূষিত করে, পারমাণবিক এবং অন্যান্য উপায়ে] নাশ করিবার।”—১ থিষলনীকীয় ৫:৩-৪; প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮.
লক্ষ্য করুন যে বাইবেল বলেনি জাতিগুলি “শান্তি এবং নিরাপত্তা” লাভ করবে। তারা সম্ভবত বিশেষভাবে সেই বিষয়ে কথা বলবে, এমনভাবে আশা এবং বিশ্বাস প্রদর্শন করবে যা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। শান্তি এবং নিরাপত্তা লাভ করার সম্ভাবনা আগের থেকে সবচেয়ে বেশি মনে হবে। পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা সত্ত্বেও, জাতিগুলির মনে একটি মিথ্যা নিরাপত্তার মনোভাব জেগে উঠবে।
প্রকৃত খ্রীষ্টানেরা কিন্তু ভ্রান্ত হবে না। অধীর আগ্রহের সাথে তারা মানব শান্তি এবং নিরাপত্তার থেকেও বেশি কিছুর প্রতি লক্ষ্য রাখবে!
প্রকৃত শান্তি এবং নিরাপত্তা
গীতসংহিতা ৪:৮ পদ অনুযায়ী, প্রকৃত শান্তি এবং নিরাপত্তা একমাত্র যিহোবা ঈশ্বরের ব্যবস্থার মাধ্যমে পাওয়া যাবে: “আমি শান্তিতে শয়ন করিব, নিদ্রাও যাইব; কেননা, হে সদাপ্রভু তুমিই একাকী আমাকে নির্ভয়ে বাস করিতে দিতেছ।” যিহোবার রাজ্যের ব্যবস্থার বাইরে “শান্তি এবং নিরাপত্তার” যে কোন দাবি হল নকল। তার মাধ্যমে স্থায়ী কোন কিছু পাওয়া যাবে না।
খ্রীষ্টের অধীনে ঈশ্বরের রাজ্যে অর্ধসমাপ্ত কাজের কোন মূল্য নেই। ঐশ্বরিক সরকার শুধুমাত্র পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া ছাড়াও অন্য কিছু করবে, সম্পূর্ণরূপে সেগুলি এবং অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্রগুলি ধ্বংস করবে। গীতসংহিতা ৪৬:৯ পদে প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে: “তিনি পৃথিবীর প্রান্ত পর্য্যন্ত যুদ্ধ নিবৃত্ত করেন; তিনি ধনু ভগ্ন করেন, বড়শা খণ্ড খণ্ড করেন, তিনি রথ সকল আগুনে পোড়াইয়া দেন।”
একইভাবে, অকেজো হয়ে যাওয়া পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র এবং তেজষ্ক্রিয় জঞ্জাল যে বিপদের সৃষ্টি করে, তাও অতীতের বিষয় হয়ে উঠবে। তা না হলে, এই কথাগুলি সত্য হবে না: “প্রত্যেকে আপন আপন দ্রাক্ষালতার ও আপন আপন ডুমুরবৃক্ষের তলে বসিবে; কেহ তাহাদিগকে ভয় দেখাইবে না; কেননা বাহিনীগণের সদাপ্রভুর মুখ ইহা বলিয়াছে।” ঈশ্বর মিথ্যা কথা বলতে পারেন না। তাঁর কথায় অবিশ্বাস করার কোন কারণ আমাদের কাছে নেই।—মীখা ৪:৪; তীত ১:২.
যে জগৎ থেকে চিরকালের জন্য পারমাণবিক যুদ্ধের ভয় সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপনি কি সেখানে থাকতে পছন্দ করবেন? আপনি সেখানে থাকতে পারেন, কারণ কী প্রয়োজন হবে ঈশ্বরের বাক্য সেই অনুযায়ী জীবন যাপন করে, একদিন হয়ত আপনি নিশ্চিন্ত হয়ে এই কথা বলবার আনন্দ পেতে পারেন: “পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়—অবশেষে আর নেই!”
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
পারমাণবিক যুদ্ধের ভয়বিহীন ঈশ্বরের নতুন জগতে শান্তি রাজত্ব করবে
[সজন্যে]
M. Thonig/H. Armstrong Roberts
[৬ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
U.S. National Archives photo