ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৪ ১০/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩
  • ঈশ্বরের সেবকেরা—সংগঠিত ও সুখী লোকবৃন্দ

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • ঈশ্বরের সেবকেরা—সংগঠিত ও সুখী লোকবৃন্দ
  • ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • আধুনিক-দিনের সেবকেরাও সংগঠিত
  • সংগঠিত কিন্তু সুখী
  • প্রেম সুখ বাড়িয়ে তোলে
  • আপেক্ষিক সুখ এখনই
  • প্রকৃত সুখ আসে যিহোবার সেবায়
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সুখী তারাই, যারা সুখী ঈশ্বরের সেবা করে
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০১৮
  • যিহোবা হলেন এক সুসংগঠিত ঈশ্বর
    ২০১৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বিবাহ কি সুখের একমাত্র চাবিকাঠি?
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৪ ১০/১ পৃষ্ঠা ৮-১৩

ঈশ্বরের সেবকেরা​—⁠সংগঠিত ও সুখী লোকবৃন্দ

“সুখী সেই জাতি, যিহোবা যার ঈশ্বর!”​—⁠গীতসংহিতা ১৪৪:​১৫, NW.

১, ২. (ক) তাঁর সেবকদের জন্য মান নির্ধারণ করার অধিকার যিহোবার কেন আছে? (খ) যিহোবার কোন্‌ দুটি বৈশিষ্ট্য বিশেষ করে আমাদের অনুকরণ করা উচিত?

যিহোবা হলেন সার্বিক সার্বভৌম, সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা। (আদিপুস্তক ১:১; গীতসংহিতা ১০০:⁠৩) তাই, সঠিকভাবে তিনি তাঁর সেবকদের আচরণের মান নির্ধারণ করেন, কারণ তিনি জানেন কী তাদের জন্য ভালো। (গীতসংহিতা ১৪৩:⁠৮) আর তিনি হলেন মুখ্য উদাহরণ যাঁর গুণাবলি তাদের অনুকরণ করা প্রয়োজন। “প্রিয় বৎসদের ন্যায় তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও।”—ইফিষীয় ৫:১.

২ ঈশ্বরের একটি বৈশিষ্ট্য যা আমাদের অনুকরণ করতে হবে তা, সংগঠিত হওয়ার সাথে যুক্ত আছে তিনি “গোলযোগের ঈশ্বর নহেন।” (১ করিন্থীয় ১৪:৩৩) যখন আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে দেখি যা তিনি সৃষ্টি করেছেন, আমাদের স্বীকার করতেই হয় যে তিনি হলেন সারা বিশ্বে সবচেয়ে সুবিন্যস্ত ব্যক্তি। কিন্তু, ঈশ্বরের আরেকটি বৈশিষ্ট্য যা তিনি চান তাঁর সেবকরা অনুকরণ করুক তা হল তাঁর সুখ, কারণ তিনি হলেন, “সুখী ঈশ্বর।” (১ তীমথিয় ১:​১১, NW) তাই, তাঁর সাংগঠনিক ক্ষমতা সুখের সঙ্গে সামঞ্জস্য। একটি বৈশিষ্ট্য আরেকটি বৈশিষ্ট্যের অবজ্ঞায় উচ্চ করা হয় না।

৩. নক্ষত্রখচিত আকাশ কিভাবে যিহোবার সাংগঠনিক ক্ষমতার পরিচয় দেয়?

৩ বৃহত্তর থেকে ক্ষুদ্রতর যা কিছু যিহোবা সৃষ্টি করেছেন প্রমাণ দেয় যে তিনি হলেন সংগঠনের ঈশ্বর। উদাহরণস্বরূপ, দৃশ্যত মহাবিশ্ব সম্বন্ধে চিন্তা করুন। এর মধ্যে কোটি কোটি নক্ষত্র আছে। কিন্তু এগুলি যেখানে সেখানে ছড়ানো ছিটানো নেই। জ্যোতিপদার্থবিজ্ঞানী জর্জ গ্রীনস্টাইন লক্ষ্য করেন যে সেখানে “সংগঠিত নক্ষত্রগুলিতে এক গঠন আছে।” এদের একত্র করা হয়েছে দলে যাকে বলা হয় ছায়াপথ, এদের মধ্যে কয়েকটিতে লক্ষ কোটি নক্ষত্র থাকে। আর অনুমান করা হয় যে সেখানে কোটি কোটি ছায়াপথ আছে! এই ছায়াপথগুলিও সংগঠিত করা হয়েছে, কয়েকটি (কয়েকটি থেকে কয়েক হাজার) গুচ্ছ একসঙ্গে করে ছায়াপথের গুচ্ছ মনে করা হয় আরও বড় মাত্রায় সংগঠিত, যাকে বড় গুচ্ছ বল হয়।​—⁠গীতসংহিতা ১৯:১; যিশাইয় ৪০:​২৫, ২৬.

৪, ৫. পৃথিবীতে জীবিত বস্তুগুলির মধ্যে সংগঠনের উদাহরণ গুলি দিন।

৪ ঈশ্বরের সৃষ্টির এত সুন্দর সংগঠন সর্বত্র দেখা যায়, শুধু দৃশ্যত আকাশেতে নয় কিন্তু পৃথিবীতে, হাজার হাজার জীবিত প্রাণীর মধ্যেও। এই বিষয়ে পদার্থবিজ্ঞানের এক অধ্যাপক, পল ডেভিস লেখেন যে “এই ভৌত জগতের মহত্ব আর জটিল সংগঠন দেখে” পর্যবেক্ষকেরা “হতভম্ভ।”​—⁠গীতসংহিতা ১০৪:২৪.

৫ “জটিল সংগঠন”-এর কিছু উদাহরণ বিবেচনা করুন যা জীবিত বস্তু দেখা যায়। স্নায়ুশল্যচিকিৎসক যোসেফ ইভানস্‌ মানুষের মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকাণ্ডের বিষয়ে বলেন: “সুবিন্যস্ততার বাস্তবতা প্রায় অদম্য।” সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জীবিত কোষ সম্বন্ধে রোগজীবাণুবিৎ এইচ. জে. স্লোনেসি বলেন: “জীবাণুবিজ্ঞানের জগতের জটিলতা এবং সুন্দর ব্যবস্থা এত সঠিকভাবে গড়ে তোলা যে মনে হয় তা ঐশিক ব্যবস্থার এক অঙ্গ।” আর আণবিক জীববীৎ মাইকেল ডেন্টান কোষের মধ্যে জেনেটিক কোড (ডি এন এ) সম্বন্ধে বলেন: “এটি এত কার্যকর যে সমস্ত তথ্য . . . যা দরকার, সমস্ত প্রজাতি যা এই গ্রহে অস্তিত্বে ছিল তার নির্দিষ্ট নকশা গড়তে . . . তা চায়ের চামচে ধরে যাবে আর তার পরেও, এতকাল পর্যন্ত যত বই লেখা হয়েছে সেই তথ্যের জন্য জায়গা থাকবে।”​—⁠গীতসংহিতা ১৩৯:১৬ পদ দেখুন।

৬, ৭. আত্মিক প্রাণীদের মধ্যে কী ধরনের সংগঠন দেখা যায় এবং কিভাবে তারা তাদের নির্মাণকর্তার প্রতি উপলব্ধি দেখায়?

৬ যিহোবা শুধু তাঁর ভৌত সৃষ্টিকে সংগঠিত করেননি কিন্তু তিনি স্বর্গে তাঁর আত্মিক সৃষ্টিকেও করেছেন। দানিয়েল ৭:১০ পদ আমাদের বলে যে, দূতেদের সংখ্যা ‘অযুতের অযুত তাঁহার সম্মুখে দণ্ডায়মান ছিল।’ দশ কোটি শক্তিশালী আত্মিক প্রাণী উপস্থিত ছিল, প্রত্যেকজনের সঠিক কাজ রয়েছে! এত বড় সংখ্যাকে সংগঠিত করার দক্ষতা চিন্তাও করা যায় না। উপযুক্তভাবে, বাইবেল তাই বলে: “সদাপ্রভুর দূতগণ! তাঁহার ধন্যবাদ কর, তোমরা বলে বীর, তাঁহার বাক্য-সাধক, তাঁহার বাক্যের রব শ্রবণে নিবিষ্ট। সদাপ্রভুর সমস্ত বাহিনি! তাঁহার ধন্যবাদ কর, তোমরা তাঁহার পরিচারক, তাঁহার অভিমত-সাধক।”—গীতসংহিতা ১০৩:২০, ২১; প্রকাশিত বাক্য ৫:১১.

৭ কত চমৎকারভাবে সৃষ্টিকর্তার কাজ সংগঠিত ও কার্যকর এটি অবাক করার বিষয় নয় যখন শ্রদ্ধা এবং আনুগত্যের সাথে ঘোষণা করেন: “‘হে আমাদের প্রভু ও আমাদের ঈশ্বর, তুমিই প্রতাপ ও সমাদর ও পরাক্রম গ্রহণের যোগ্য; কেননা তুমিই সকলের সৃষ্টি করিয়াছ, এবং তোমার ইচ্ছাহেতু সকলই অস্তিত্বপ্রাপ্ত ও সৃষ্ট হইয়াছে।’”—প্রকাশিত বাক্য ৪:১১.

৮. কোন্‌ উদাহরণগুলি দেখায় যে যিহোবা পৃথিবীতে তাঁর সেবকদের সংগঠিত করেন?

৮ যিহোবা পৃথিবীতে তাঁর সেবকদেরও সংগঠিত করেন। সা.শ.পূ. ২৩৭০ সালে নোহের দিনে যখন তিনি জলপ্লাবন আনেন, নোহ এবং অন্য সাতজন, সংগঠিত পরিবার হিসাবে প্লাবন থেকে রক্ষা পায়। সা.শ.পূ. ১৫১৩ সালে প্রস্থানের সময়, যিহোবা কয়েক লক্ষ লোককে মিশরের বন্দি দশা থেকে বার করে নিয়ে আসেন এবং তাদের জীবনধারা এবং উপাসনায় সংগঠিত হতে তিনি তাদের লিপিবদ্ধ নিয়ম দেন। আর পরে, প্রতিজ্ঞাত দেশে, হাজার হাজার ব্যক্তিদের মন্দিরে বিশেষ সেবার জন্য সংগঠিত করা হয়। (১ বংশাবলি ২৩:​৪, ৫) ঐশিক নির্দেশ দ্বারা প্রথম শতাব্দীতে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীগুলিকে সংগঠিত করা হয়: “তিনিই কয়েক জনকে প্রেরিত কয়েক জনকে ভাববাদী, কয়েক জনকে সুসমাচার-প্রচারক ও কয়েক জনকে পালক ও শিক্ষাগুরু করিয়া দান করিয়াছেন, পবিত্রগণকে পরিপক্ব করিবার নিমিত্ত করিয়াছেন, যেন পরিচর্য্যা-কার্য্য সাধিত হয়।”​—⁠ইফিষীয় ৪:​১১, ১২.

আধুনিক-দিনের সেবকেরাও সংগঠিত

৯, ১০. আমাদের দিনে কিভাবে যিহোবা তাঁর লোকেদের সংগঠিত করেছেন?

৯ একইভাবে, যিহোবা তাঁর আধুনিক দিনের সেবকদের সংগঠিত করেছেন, যাতে করে তারা আমাদের দিনের জন্য তাঁর কাজ​—⁠ঈশ্বরবিহীন এই বর্তমান বিধিব্যবস্থার ধ্বংস আনার পূর্বে তাঁর রাজ্যের সুসমাচার কার্যকারীরূপে প্রচার করতে পারে। (মথি ২৪:১৪) জগদ্ব্যাপী এই কাজের সঙ্গে কী জড়িয়ে আছে এবং উত্তম সংগঠন কত গুরুত্বপূর্ণ তা বিবেচনা করুন। অন্যদের বাইবেল সত্য শেখাতে লক্ষ লক্ষ পুরুষ, স্ত্রী এবং বাচ্চাদের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। এই শিক্ষায় সাহায্য করার জন্য প্রচুর পরিমাণে বাইবেল এবং বাইবেল-ভিত্তিক প্রকাশনা ছাপানো হচ্ছে। কেন এখন প্রহরীদুর্গ-এর প্রত্যেক সংখ্যা ১৬০ লক্ষেরও বেশি ১১৮ ভাষায় এবং সচেতন থাক! প্রায় ১৩০ লক্ষ ৭৩ ভাষায় ছাপানো হচ্ছে। প্রায় প্রত্যেকটি সংখ্যা এক সঙ্গে ছাপানো হয়, যাতে করে যিহোবার সেবকেরা একই তথ্য একই সময়ে পায়।

১০ এছাড়া, জগদ্ব্যাপী যিহোবার সাক্ষীরা ৭৩,০০০ এর বেশি মণ্ডলীতে নিয়মিতরূপে বাইবেল শিক্ষার জন্য মিলিত হয়। (ইব্রীয় ১০:​২৪, ২৫) তার উপর, প্রত্যেক বছরে​—⁠হাজার হাজার ব্যক্তির বড় বড় সমাবেশগুলি​—⁠সীমা অধিবেশন এবং জেলা সম্মেলনগুলি আছে। নতুন কিংবা আরও ভালো কিংডম হল, অধিবেশন হল, বেথেল আর বাইবেল সাহিত্যাদি ছাপানোর জায়গার জন্য বড় আকারে জগদ্ব্যাপী নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। বাইবেল শিক্ষকদের উচ্চ শিক্ষার জন্য স্কুলগুলি, যেমন মিশনারিদের জন্য ওয়াচটাওয়ার বাইবেল স্কুল অফ গিলিয়েড এবং অগ্রগামী পরিচর্যা স্কুল পৃথিবীর চতুর্দিক দেশগুলিতে পরিচালনা করা হয়।

১১. এখন উত্তমভাবে সংগঠিত হওয়া শেখার দ্বারা ভবিষ্যতে কী উপকারিতা আসতে পারে?

১১ তাঁর পরিচর্যারত দূতগণের সাহায্যে যিহোবা কতই না সুন্দরভাবে ‘তাদের পরিচর্য্যা সম্পন্ন করতে’ পৃথিবীতে তাঁর লোকদের সংগঠিত করেছেন! (২ তীমথিয় ৪:৫; ইব্রীয় ১:​১৩, ১৪; প্রকাশিত বাক্য ১৪:⁠৬) এখন উত্তমভাবে সংগঠিত হওয়ার শিক্ষা দেওয়ার সাথে সাথে যিহোবা তাঁর সেবকদের আরও কিছু শেখাচ্ছেন। তাদের আগে থেকে ভালভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে, যাতে করে এই বিধি ব্যবস্থার শেষ থেকে রক্ষা পেয়ে তারা সংগঠিতভাবে নতুন জগতে জীবন শুরু করতে পারবে। কোটি কোটি লোক যারা মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হবে, তাদের জীবনের জন্য ঈশ্বরের পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রয়োজনীয়তাগুলি শেখাতে তারা আগে থেকে ভালভাবে প্রস্তুত থাকবে।​—⁠যিশাইয় ১১:৯; ৫৪:১৩; প্রেরিত ২৪:১৫; প্রকাশিত বাক্য ২০:​১২, ১৩.

সংগঠিত কিন্তু সুখী

১২, ১৩. কেন আমরা বলতে পারি যে যিহোবা চান তাঁর লোকেরা সুখী হোক?

১২ যদিও যিহোবা বিস্ময়কর কর্মী এবং চমৎকার সংগঠক, তবুও তিনি অনুভূতিহীন, কঠোর এবং যান্ত্রিক নন। পরিবর্তে, তিনি অত্যন্ত কোমল, সুখী ব্যক্তি যিনি আমাদের সুখ সম্বন্ধে চিন্তিত। “তিনি তোমাদের জন্য চিন্তা করেন,” ১ পিতর ৫:৭ পদ ঘোষণা করে। তাঁর সেবকদের সুখী করার বিষয়ে তাঁর যত্ন এবং ইচ্ছা দেখা যায় তিনি যা তাদের জন্য করেছেন তার মাধ্যমে। উদাহরণস্বরূপ, তিনি যখন সিদ্ধ পুরুষ এবং নারী সৃষ্টি করেন, তিনি তাদের উপভোগ্য পরমদেশে রাখেন। (আদিপুস্তক ১:​২৬-৩১; ২:​৮, ৯) তিনি তাদের অতিমাত্রায় সুখী করার সবকিছুই দেন। কিন্তু বিদ্রোহের দ্বারা তারা সবকিছুই হারায়। তাদের পাপের ফল হিসাবে আমরা উত্তরাধিকারসূত্রে অসিদ্ধতা এবং মৃত্যু পাই।​—⁠রোমীয় ৩:২৩; ৫:১২.

১৩ যদিও এখন আমরা অসিদ্ধ, তবুও ঈশ্বর যা বানিয়েছেন তাতে সুখ খুঁজে পেতে পারি। অনেক জিনিস আছে যা আমাদের আনন্দ নিয়ে আসে​—⁠বৃহৎ পর্বতসমূহ, সুন্দর হ্রদ, নদী, সমুদ্র এবং অন্যান্য অনেকরকমের শাক শবজি; বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাদ্য; অতিমনোরম সূর্যাস্ত যা আমরা দেখে ক্লান্ত হই না; নক্ষত্রখচিত আকাশ যা রাত্রে দেখে চিন্তা করে আমরা উপভোগ করি; বিভিন্ন রকমের জন্তু সৃষ্টি এবং তাদের বাচ্চাদের মর্মস্পর্শী খেলাধূলা; অনুপ্রেরণাদায়ক সঙ্গীত; আগ্রহী এবং কার্যকারী কাজ; উত্তম বন্ধু। এটি স্পষ্টই বোঝা যায় যে, সুখের এইধরনের জিনিসগুলি যিনি তৈরি করেছেন তিনি নিশ্চয়ই সুখী ব্যক্তি যিনি অপরকে সুখী করা উপভোগ করেন।

১৪. যিহোবাকে অনুকরণ করার বিষয়ে তিনি আমাদের কাছ থেকে কী সামঞ্জস্য চান?

১৪ তাই, সংগঠিত কার্যকারিতা শুধু যিহোবা চান না। তিনি যেমন সুখী তিনি চান তাঁর সেবকরাও যেন ঠিক সেইরকম সুখী হয়। আমাদের আনন্দকে ক্ষতি করে আমরা অত্যন্ত উৎসাহের সাথে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করব তা তিনি চান না। ঈশ্বরের সেবকদের তাদের সংগঠন করার ক্ষমতাকে সুখের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে, যেমন তিনি করেন, কারণ যেখানে তাঁর শক্তিশালী পবিত্র আত্মা সেখানে আনন্দ আছে। সত্যই, গালাতীয় ৫:২২ পদ দেখায় যে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার দ্বিতীয় ফল যা তাঁর লোকেদের উপর কাজ করছে তা হল “আনন্দ।”

প্রেম সুখ বাড়িয়ে তোলে

১৫. সুখী হওয়ার সাথে প্রেম কেন গুরুত্বপূর্ণ?

১৫ এটি লক্ষ্য করা খুবই আগ্রহের বিষয় যে বাইবেল যা বলে: “ঈশ্বর হলেন প্রেম।” (১ যোহন ৪:​৮, ১৬, NW) এটি কখনও বলে না: “ঈশ্বর হলেন সংগঠন।” প্রেম হল ঈশ্বরের মুখ্য গুণ এবং তাঁর সব সেবকদের তা অনুকরণ করা উচিত। তাই জন্য ঈশ্বরের আত্মার প্রথম ফল যা গালাতীয় ৫:২২ পদ লেখা আছে তা হল “প্রেম” তারপরে “আনন্দ।” প্রেম আনন্দ বাড়িয়ে তোলে। অপরের সাথে ব্যবহারের সময় যখন আমরা যিহোবার প্রেম অনুকরণ করি, সুখ আসে, কারণ প্রেমময় ব্যক্তিরা হল সুখী ব্যক্তি।

১৬. প্রেমের গুরুত্বতা যীশু কিভাবে প্রদর্শন করেছিলেন?

১৬ ঈশ্বরীয় প্রেম অনুকরণ করার গুরুত্বতা যীশুর শিক্ষার মধ্যে লক্ষণীয়। তিনি বলেন: “তখন যীশু কহিলেন, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্ত্রকে উচ্চে উঠাইবে, তখন জানিবে যে, আমিই তিনি, আর আমি আপনা হইতে কিছুই করি না, কিন্তু পিতা আমাকে যেমন শিক্ষা দিয়াছেন, তদনুসারে এই সকল কথা কহি।” (যোহন ৮:২৮) বিশেষকরে যীশুকে কী শিক্ষা দেওয়া হয় যা তিনি অপরকে শিক্ষা দেন? সেটি ছিল দুটি সবচেয়ে মহৎ আজ্ঞা, ঈশ্বরকে প্রেম করা এবং প্রতিবেশিকে প্রেম করা। (মথি ২২:​৩৬-৩৯) যীশু সেইরকম প্রেম দেখান। তিনি বলেন: “আমি পিতাকে প্রেম করি,” মৃত্যু পর্যন্ত ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে তিনি তা প্রমাণ করেন। তিনি লোকেদের প্রতি প্রেম প্রদর্শন করেন তাদের জন্য মৃত্যু বরণ করে। ইফিষীয় খ্রীষ্টানদের প্রেরিত পৌল বলেন: ‘খ্রীষ্ট তোমাদিগকে প্রেম করিলেন।’ (যোহন ১৪:৩১; ইফিষীয় ৫:⁠২) তাই যীশু তাঁর অনুগামীদের বলেছিলেন: “আমার আজ্ঞা এই, তোমরা পরস্পর প্রেম কর, যেমন আমি তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি।”—যোহন ১৫:১২, ১৩.

১৭. পৌল কিভাবে দেখান যে অপরের প্রতি প্রেম দেখানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ?

১৭ এই ঈশ্বরীয় প্রেম যে কত গুরুত্বপূর্ণ পৌল তা এইভাবে বর্ণনা করে প্রকাশ করেন: “যদি আমি মনুষ্যদের, এবং দূতগণেরও ভাষা বলি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি শব্দকারক পিত্তল ও ঝম্‌ঝম্‌কারী করতাল হইয়া পড়িয়াছি। আর যদি ভাববাণী প্রাপ্ত হই, ও সমস্ত নিগূঢ়তত্ত্বে ও সমস্ত জ্ঞানে পারদর্শী হই, এবং যদি আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস থাকে যাহাতে আমি পর্ব্বত স্থানান্তর করিতে পারি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমি কিছুই নহি। আর যথাসর্ব্বস্ব যদি দরিদ্রদিগকে খাওয়াইয়া দিই, এবং পোড়াইবার জন্য আপন দেহ দান করি, কিন্তু আমার প্রেম না থাকে, তবে আমার কিছুই লাভ নাই। আর এখন বিশ্বাস, প্রত্যাশা, প্রেম এই তিনটী আছে, আর ইহাদের মধ্যে প্রেমই শ্রেষ্ঠ।”—১ করিন্থীয় ১৩:১-৩, ১৩.

১৮. যিহোবার কাছ থেকে আমরা কী আশা করতে পারি যা আমাদের সুখ বাড়িয়ে তুলবে?

১৮ যদি আমরা যিহোবার প্রেম অনুকরণ করি, তাহলে আমরা তাঁর প্রেমের উপর, এমনকি যখন আমরা ভুল করি সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে পারি, কারণ তিনি “স্নেহশীল ও কৃপাময় ঈশ্বর, ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান্‌।” (যাত্রাপুস্তক ৩৪:⁠৬) যখন আমরা ভুল করি তখন আমরা যদি আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হই, তাহলে ঈশ্বর আমাদের ভুল গণনা করেন না কিন্তু প্রেমের সাথে ক্ষমা করেন। (গীতসংহিতা ১০৩:​১-৩) হ্যাঁ, যিহোবা স্নেহপূর্ণ এবং ক্ষমাশীল।” (যাকোব ৫:​১১, NW) এটি জানলে পরে আমাদের সুখ আরও বেড়ে যায়।

আপেক্ষিক সুখ এখনই

১৯, ২০. (ক) কেন এখনই সম্পূর্ণ সুখ লাভ করা সম্ভব নয়? (খ) বাইবেল কিভাবে দেখায় যে এখনই আমরা আপেক্ষিক সুখ পেতে পারি?

১৯ কিন্তু, আমরা যেহেতু শেষকালের এই দৌরাত্ম্যপূর্ণ, হিংস্র, শয়তানের অনৈতিক জগতে বাস করছি, যেখানে রোগ-ব্যাধি এবং মৃত্যু আমাদের সম্মুখবর্তী, তবুও কি বর্তমানে সুখী হওয়া সম্ভব? অবশ্যই, আমরা সেই পরিমাণে সুখ আশা করতে পারি না যে পরিমাণে ঈশ্বরের নতুন জগতে পাব, যেমন তাঁর বাক্য পূর্বেই বলে: “দেখ, আমি নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি করি; এবং পূর্ব্বে যাহা ছিল, তাহা স্মরণে থাকিবে না, আর মনে পড়িবে না। কিন্তু আমি যাহা সৃষ্টি করি, তোমরা তাহাতে চিরকাল আমোদ ও উল্লাস কর।”—যিশাইয় ৬৫:১৭, ১৮.

২০ যিহোবার সেবকেরা এখনই আপেক্ষিক সুখ উপভোগ করে, কারণ তারা তাঁর ইচ্ছা জানে এবং তাঁর পরমদেশীয় নতুন জগতে যে অপূর্ব আশীর্বাদগুলি যা আসতে চলেছে তার যথার্থ জ্ঞান আছে। (যোহন ১৭:৩; প্রকাশিত বাক্য ২১:⁠৪) তাই জন্য বাইবেল বলতে পারে: “হে বাহিনীগণের যিহোবা সুখী সেই ব্যক্তি, যে তোমার উপরে আস্থা রাখে,” যে তাঁর সকল পথে চলে,” সুখী যারা মৃদুশীল, কারণ তারা পৃথিবীর অধিকারী হবে।” (গীতসংহিতা ৮৪:​১২, NW; ১২৮:​১, NW; মথি ৫:​৫, NW) কিন্তু, বর্তমানে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করা সত্ত্বেও, আমরা অনেকখানি সুখী। এমনকি যখন আমাদের উপর খারাপ কিছু ঘটে, যারা যিহোবাকে জানে না এবং যাদের অনন্তজীবনের আশা নেই আমরা তাদের মত দুঃখী হই না।​—⁠১ থিষলনীকীয় ৪:১৩.

২১. কিভাবে সম্পূর্ণ দেওয়ার মাধ্যমে যিহোবার সেবকদের সুখ বেড়ে উঠে?

২১ যিহোবার সেবকদের উপর সুখ আসে কারণ তারা সময়, শক্তি এবং সংস্থান ব্যয় করে অপরকে বাইবেলের সত্যগুলি শেখানোর জন্য, বিশেষ করে সেই লোকেদের যারা ‘ঘৃণার্হ কার্য্যের বিষয়ে . . . দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করছে আর কোঁকাচ্ছে’ যা শয়তানের জগতে ঘটছে। (যিহিষ্কেল ৯:⁠৪) বাইবেল বলে: “সুখী সেই জন, যে দীনহীনের পক্ষে চিন্তাশীল; বিপদের দিনে সদাপ্রভু তাহাকে নিস্তার করিবেন। সদাপ্রভু তাহাকে রক্ষা করিবেন, জীবিত রাখিবেন, দেশে সে আশীর্ব্বাদ পাইবে।” (গীতসংহিতা ৪১:১, ২, NW) যেমন যীশু বলেছিলেন, “গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হইবার বিষয়।”—প্রেরিত ২০:৩৫.

২২. (ক) সুখ সম্পর্কে, ঈশ্বরের সেবক আর যারা তাঁকে সেবা করে না তাদের মধ্যে পার্থক্য দেখান। (খ) আমাদের সুখী হওয়ার কোন্‌ বিশেষ কারণ আছে?

২২ তাই ঈশ্বরের সেবকেরা যদিও এই বর্তমান সময়ে সম্পূর্ণ সুখ আসা করতে পারে না, তবুও তারা সেই সুখটুকু উপভোগ করে যা যারা ঈশ্বরকে সেবা করে না, তারা পায় না। যিহোবা ঘোষণা করেন: “দেখ, আমার দাসেরা চিত্তের সুখে আনন্দরব করিবে, কিন্তু তোমরা চিত্তের দুঃখে ক্রন্দন করিবে, এবং আত্মার ক্ষোভে হাহাকার করিবে।” (যিশাইয় ৬৫:১৪) তাছাড়া, এখন যারা ঈশ্বরকে সেবা করে তাদের সুখী হওয়ার বিশেষ কারণ আছে​—⁠তাদের কাছে তাঁর পবিত্র আত্মা আছে “যে আত্মা ঈশ্বর আপন আজ্ঞাবহদিগকে দিয়াছেন।” (প্রেরিত ৫:৩২) আর মনে রাখবেন, যেখানে ঈশ্বরের আত্মা আছে সেখানে সুখ আছে।​—⁠গালাতীয় ৫:২২.

২৩. আমাদের পরবর্তী অধ্যয়নে আমরা কী বিবেচনা করব?

২৩ আজকে, ঈশ্বরের সেবকদের সংগঠনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করছেন ‘প্রাচীনদিগেরা,’ অর্থাৎ প্রাচীনেরা, যারা মণ্ডলীকে পরিচালনা করে, যিহোবার লোকেদের সুখ বাড়িয়ে তোলে। (তীত ১:⁠৫) তারা কিভাবে তাদের দায়িত্বগুলি এবং আধ্যাত্মিক ভাই বোনেদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে দেখবেন? আমাদের পরবর্তী প্রবন্ধ তা আলোচনা করবে।

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

◻ সৃষ্টি কিভাবে প্রমাণ দেয় যিহোবা সংগঠিত

◻ অতীতে আর বর্তমানে যিহোবা কিভাবে তাঁর সেবকদের সংগঠিত করেছেন?

◻ যিহোবা আমাদের কাছ থেকে কি ধরনের সামঞ্জস্য চান?

◻ আমাদের সুখের বিষয়ে প্রেম কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

◻ আমাদের দিনে কি ধরনের সুখ আমরা আশা করতে পারি?

[৮ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Top: Courtesy of ROE/Anglo-Australian Observatory, photograph by David Malin

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার