ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৬ ৪/১৫ পৃষ্ঠা ১৬-২১
  • কেন সত্য উপাসনা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পায়

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কেন সত্য উপাসনা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পায়
  • ১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • সত্য ধর্মকে কোন্‌ ফল অবশ্যই উৎপাদন করতে হবে?
  • প্রেমের ধর্ম, ঘৃণার নয়
  • ঈশ্বর আচরণের এবং শিক্ষার শুদ্ধতা আশীর্বাদ করেন
  • “সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে”
  • একটি নাম যা স্বতন্ত্র
  • যে-উপাসনা ঈশ্বর অনুমোদন করেন
    বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়?
  • আপনি কি সঠিক ধর্ম খুঁজে পেয়েছেন?
    ১৯৯৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • সত্যকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখুন
    প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য সম্বন্ধে ঘোষণা করে (অধ্যয়ন)—২০২১
  • খ্রিস্টের একজন প্রকৃত অনুসারী হিসেবে প্রমাণিত হোন
    ২০১০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
১৯৯৬ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৬ ৪/১৫ পৃষ্ঠা ১৬-২১

কেন সত্য উপাসনা ঈশ্বরের আশীর্বাদ পায়

“হাল্লিলূয়া, পরিত্রাণ ও প্রতাপ ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই; কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য।”—প্রকাশিত বাক্যা ১৯:১, ২.

১. কিভাবে মহতী বাবিলের শেষ হবে?

“মহতী বাবিল” ঈশ্বরের চোখে পড়ে গেছে এবং এখন নির্মূল হওয়ার মুখে। বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী ইঙ্গিত করে যে এই জগৎব্যাপী ধর্মীয় বেশ্যা খুব শীঘ্রই তার রাজনৈতিক প্রণয়ীর হাতে শেষ হয়ে যাবে; তার শেষ হঠাৎ এবং শীঘ্র হবে। যোহনের কাছে যীশু যা প্রকাশ করেছিলেন তার মধ্যে এই ভবিষ্যদ্বাণীমূলক কথাগুলি অন্তর্ভুক্ত ছিল: “এক শক্তিমান দূত বৃহৎ এক পাট যাঁতার তুল্য একখান প্রস্তর লইয়া সমুদ্রে নিক্ষেপ করিয়া কহিলেন, ইহার ন্যায় মহানগরী বাবিল মহাবলে নিপাতিতা হইবে, আর কখনও তাহার উদ্দেশ পাওয়া যাইবে না।”—প্রকাশিত বাক্য ১৮:২, ২১.

২. বাবিলনের ধ্বংসের প্রতি কিভাবে যিহোবার সেবকেরা প্রতিক্রিয়া দেখাবে?

২ মহতী বাবিলের ধ্বংসে শয়তানের জগতের কিছু অংশ বিলাপ করবে, কিন্তু ঈশ্বরের সেবকেরা অবশ্যই নয় তা স্বর্গীয় অথবা পার্থিব যাই হোক না কেন। ঈশ্বরের প্রতি তাদের আনন্দপূর্ণ চিৎকার হবে: “হাল্লিলূয়া, পরিত্রাণ ও প্রতাপ ও পরাক্রম আমাদের ঈশ্বরেরই; কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য; কারণ যে মহাবেশ্যা আপন বেশ্যাক্রিয়া দ্বারা পৃথিবীকে ভ্রষ্ট করিত, তিনি তাহার বিচার করিয়াছেন, তাহার হস্ত হইতে আপন দাসগণের রক্তপাতের পরিশোধ লইয়াছেন।”—প্রকাশিত বাক্য ১৮:৯, ১০; ১৯:১, ২.

সত্য ধর্মকে কোন্‌ ফল অবশ্যই উৎপাদন করতে হবে?

৩. কোন্‌ প্রশ্নগুলির উত্তরের প্রয়োজন রয়েছে?

৩ যেহেতু এই পৃথিবী থেকে মিথ্যা ধর্ম নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে, তাই কোন্‌ ধরনের উপাসনা থাকবে? কিভাবে আমরা আজ নিশ্চিত হতে পারি যে কোন্‌ ধর্মীয় দল শয়তানের মিথ্যা ধর্মের সাম্রাজ্যের ধ্বংস থেকে রক্ষা পাবে? কোন্‌ ধার্মিক ফল এই দলটিকে অবশ্যই উৎপাদন করতে হবে? যিহোবার সত্য উপাসনাকে স্বতন্ত্র করার জন্য কমপক্ষে প্রায় দশটি নির্ণায়ক রয়েছে।—মালাখি ৩:১৮; মথি ১৩:৪৩.

৪. সত্য উপাসনার প্রথম প্রয়োজনীয়তা কী এবং এই বিষয়ে যীশু কোন্‌ উদাহরণ স্থাপন করেছেন?

৪ প্রথম এবং মুখ্য হল সত্য খ্রীষ্টানদের অবশ্যই সার্বভৌমত্বকে সমর্থন করতে হবে যার জন্য যীশু মারা গিয়েছিলেন—তাঁর পিতার সার্বভৌমত্ব। যীশু তাঁর জীবন কোন রাজনৈতিক, উপজাতিয়, সাম্প্রদায়িক, অথবা সামাজিক বিষয়ের জন্য উৎসর্গ করেননি। তিনি তাঁর পিতার রাজ্য যিহূদী রাজনৈতিক অথবা বিদ্রোহী ইচ্ছার আগে রেখেছিলেন। তিনি এই কথাগুলির দ্বারা শয়তানের জাগতিক শক্তির প্রস্তাবের উত্তর দিয়েছিলেন: “দূর হও, শয়তান; কেননা লেখা আছে, ‘তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই [“যিহোবাকেই,” NW] প্রণাম করিবে, কেবল তাঁহারই আরাধনা করিবে।” তিনি ইব্রীয় শাস্ত্র থেকে জানতেন যে যিহোবা হলেন পৃথিবীর উপর প্রকৃত সার্বভৌম। এই জগতের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সমর্থন না করে কোন্‌ ধর্মীয় দল স্পষ্টরূপে যিহোবার শাসনকে সমর্থন করে?—মথি ৪:১০; গীতসংহিতা ৮৩:১৮.

৫. (ক) সত্য উপাসকদের ঈশ্বরের নামকে কোন্‌ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা উচিত? (খ) কী দেখায় যে যিহোবার সাক্ষীরা সেই নামকে সম্মান করে?

৫ দ্বিতীয় প্রয়োজনীয়তা হল যে সত্য উপাসনা যেন অবশ্যই ঈশ্বরের নামের প্রশংসা এবং পবিত্রীকরণ করে। সর্বশক্তিমান তাঁর নাম, যিহোবা (কিছু বাইবেল সংস্করণে ইয়াওয়ে) হিসাবে তাঁর লোক ইস্রায়েলের কাছে প্রকাশ করেছিলেন এবং তা সহস্রাধিক বার ইব্রীয় শাস্ত্রাবলীতে ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি এর আগেও, আদম, হবা এবং অন্যান্যেরা সেই নাম জানত, যদিও তারা সেই নামের প্রতি সবসময় সম্মান দেখায়নি। (আদিপুস্তক ৪:১; ৯:২৬; ২২:১৪; যাত্রাপুস্তক ৬:২) যদিও খ্রীষ্টীয়জগৎ এবং যিহূদী অনুবাদকেরা সাধারণত তাদের বাইবেল থেকে ঐশিক নাম তুলে দিয়েছে, পবিত্র শাস্ত্রের নতুন জগৎ অনুবাদ (ইংরাজি)-এ যিহোবার সাক্ষীরা কিন্তু সেই নামের প্রতি যথাযথ স্থান এবং সম্মান প্রদর্শন করেছে। তারা সেই নামকে সম্মান দেয় ঠিক যেমন প্রাথমিক খ্রীষ্টানেরা করেছিল। যাকোব সাক্ষ্য দিয়েছিলেন: “ঈশ্বর আপন নামের জন্য পরজাতিগণের মধ্য হইতে এক দল প্রজা গ্রহণার্থে কিরূপে প্রথমে তাহাদের তত্ত্ব লইয়াছিলেন, তাহা শিমোন বর্ণনা করিয়াছেন। আর ভাববাদিগণের বাক্য তাহার সহিত মিলে, . . . যেন অবশিষ্ট লোক সকল প্রভুর [“যিহোবার,” NW] অন্বেষণ করে, আর যে জাতিগণের উপরে আমার নাম কীর্ত্তিত হইয়াছে, তাহারা সকলেও করে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—প্রেরিত ১৫:১৪-১৭; আমোষ ৯:১১, ১২.

৬. (ক) সত্য উপাসনার তৃতীয় প্রয়োজনীয়তা কী? (খ) কিভাবে যীশু এবং দানিয়েল রাজ্য শাসনের উপর জোর দিয়েছেন? (লূক ১৭:২০, ২১)

৬ সত্য উপাসনার তৃতীয় প্রয়োজনীয়তা হল যে মানবজাতির শাসনের সমস্যার একমাত্র বৈধ এবং কার্যকারী সমাধান হিসাবে তা যেন ঈশ্বরের রাজ্যকে উন্নীত করে। যীশু স্পষ্টভাবে তাঁর অনুসরণকারীদের সেই রাজ্য আসার জন্য প্রার্থনা করতে শিখিয়েছিলেন, যাতে করে পৃথিবী ঈশ্বরের শাসনের নিয়ন্ত্রণে আসে। সেই শেষকাল সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করতে দানিয়েল অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন: “স্বর্গের ঈশ্বর এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না, . . . তাহা ঐ সকল [জাগতিক, রাজনৈতিক] রাজ্য চূর্ণ ও বিনষ্ট করিয়া আপনি চিরস্থায়ী হইবে।” এই বিংশ শতাব্দীতে কারা তাদের কাজের ধারার দ্বারা সেই রাজ্যের প্রতি অবিভক্ত সমর্থন দেখিয়েছে—মহতী বাবিলের ধর্মগুলি অথবা যিহোবার সাক্ষীরা?—দানিয়েল ২:৪৪; মথি ৬:১০; মথি ২৪:১৪.

৭. সত্য উপাসকেরা বাইবেলকে কোন্‌ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে?

৭ ঈশ্বরের অনুমোদনের জন্য চতুর্থ প্রয়োজনীয়তা হল যে ঈশ্বরের সত্য সেবকদের বাইবেলকে ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য হিসাবে তুলে ধরা উচিত। অতএব তার জন্য তারা উচ্চ সমালোচকদের শিকার হবে না যারা চেষ্টা করে বাইবেলকে এক সাধারণ মানবীয় গ্রন্থতে পরিণত করতে যার সাথে যুক্ত রয়েছে অসিদ্ধতা। যিহোবার সাক্ষীরা বাইবেলকে ঈশ্বরের অনুপ্রাণিত বাক্য হিসাবে বিশ্বাস করে ঠিক যেমন পৌল তীমথিয়কে লিখেছিলেন: “ঈশ্বর-নিশ্বসিত প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি আবার শিক্ষার, অনুযোগের, সংশোধনের, ধার্ম্মিকতা সম্বন্ধীয় শাসনের নিমিত্ত উপকারী, যেন ঈশ্বরের লোক পরিপক্ব, সমস্ত সৎকর্ম্মের জন্য সুসজ্জীভূত হয়।”a তাই যিহোবার সাক্ষীরা বাইবেলকে তাদের পথনির্দেশক, তাদের দৈনন্দিন জীবনের পরিচালক এবং ভবিষ্যতের জন্য তাদের আশার এক জলস্রোত হিসাবে গ্রহণ করে থাকে।—২ তীমথিয় ৩:১৬, ১৭.

প্রেমের ধর্ম, ঘৃণার নয়

৮. সত্য উপাসনার পঞ্চম প্রয়োজনীয়তা কী?

৮ যীশু কিভাবে তাঁর সত্য অনুসরণকারীদের শনাক্ত করেছিলেন? তাঁর উত্তর আমাদের সত্য উপাসনার অত্যাবশ্যকীয় পঞ্চম শনাক্তিকরণ চিহ্নতে নিয়ে আসে। যীশু বলেছিলেন: “এক নূতন আজ্ঞা আমি তোমাদিগকে দিতেছি, তোমরা পরস্পর প্রেম কর; আমি যেমন তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি, তোমরাও তেমনি পরস্পর প্রেম কর। তোমরা যদি আপনাদের মধ্যে পরস্পর প্রেম রাখ, তবে তাহাতেই সকলে জানিবে যে, তোমরা আমার শিষ্য।” (যোহন ১৩:৩৪, ৩৫) (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) যীশু কিভাবে তাঁর প্রেম দেখিয়েছিলেন? তাঁর জীবন মুক্তির মূল্যরূপ বলিদান হিসাবে প্রদান করে। (মথি ২০:২৮; যোহন ৩:১৬) কেন প্রকৃত প্রেম সত্য খ্রীষ্টানদের জন্য অপরিহার্য? যোহন ব্যাখ্যা করেছিলেন: “প্রিয়তমেরা, আইস, আমরা পরস্পর প্রেম করি; কারণ প্রেম ঈশ্বরের; . . . যে প্রেম করে না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর প্রেম।”—১ যোহন ৪:৭, ৮.

৯. কারা প্রকৃত প্রেম দেখিয়েছে এবং কিভাবে?

৯ উপজাতিয়, জাতীয় অথবা সাম্প্রদায়িক ঘৃণা সত্ত্বেও আমাদের দিনে এইধরনের প্রেম কারা দেখিয়েছে? কারা মুখ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত, যাতে করে তাদের প্রেম বিজয়লাভ করতে পারে? তারা কি ক্যাথলিক পাদ্রিরা এবং নানেরা যারা স্বীকার করে নেয় যে তাদের কিছু অংশে দায়িত্ব নিতে হবে ১৯৯৪ সালের রুয়াণ্ডার হত্যাকাণ্ডের জন্য? তারা কি সার্বিয়ার অর্থোডক্স অথবা ক্রোয়েশিয়ার ক্যাথলিকেরা যারা বাল্কানের গৃহযুদ্ধে “সম্প্রদায় বিলুপ্তিকরণ”-এ যুক্ত হয়েছিল এবং অন্যান্য অখ্রীষ্টীয় আচরণ দেখিয়েছিল? অথবা তারা কি ক্যাথলিক অথবা প্রটেস্টান্ট পাদ্রিবর্গ যারা বিগত কিছু দশক ধরে উত্তর আয়ারল্যান্ডে কুসংস্কার এবং ঘৃণাকে উৎসাহ দিয়েছে? অবশ্যই যিহোবার সাক্ষীরা এইধরনের কোন বিবাদে অংশ নিয়েছে বলে অভিযোগ করা যেতে পারে না। তাদের খ্রীষ্টীয় প্রেমের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করার চাইতে তারা কারাগারে এবং কনসেনট্রেশন ক্যাম্পগুলিতে এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত কষ্টভোগ করেছে।—যোহন ১৫:১৭.

১০. কেন সত্য খ্রীষ্টানেরা নিরপেক্ষ থাকে?

১০ ঈশ্বর যে উপাসনা গ্রহণ করেন তার ষষ্ঠ প্রয়োজনীয়তা হল জগতের রাজনৈতিক বিষয়গুলি সম্পর্কে নিরপেক্ষ থাকা। কেন খ্রীষ্টানদের রাজনীতি সম্বন্ধে নিরপেক্ষ থাকতে হবে? পৌল, যাকোব এবং যোহন এর ভিত্তির জন্য সুস্পষ্ট যুক্তি দেন। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন যে শয়তান হল “এই যুগের দেব” যে, যে কোন উপায়ে যার অন্তর্ভুক্ত হল বিভক্তকারী রাজনীতি, অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করে দিচ্ছে। শিষ্য যাকোব বলেছিলেন যে “জগতের মিত্রতা ঈশ্বরের সহিত শত্রুতা” আর প্রেরিত যোহন বলেছিলেন “সমস্ত জগৎ সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে।” তাই শয়তানের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি এবং শক্তির জগতের সাথে যুক্ত হয়ে একজন সত্য খ্রীষ্টান ঈশ্বরের প্রতি তার ভক্তিকে আপোশ করতে পারবে না।—২ করিন্থীয় ৪:৪; যাকোব ৪:৪; ১ যোহন ৫:১৯.

১১. (ক) খ্রীষ্টানেরা যুদ্ধকে কোন্‌ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে? (খ) এই দৃষ্টিভঙ্গির কোন্‌ শাস্ত্রীয় ভিত্তি রয়েছে? (২ করিন্থীয় ১০:৩-৫)

১১ পূর্বের দুই প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে, সপ্তমটি স্পষ্ট হয়ে যায়, অর্থাৎ সত্য খ্রীষ্টীয় উপাসকদের যুদ্ধে অংশ নেওয়া উচিত নয়। যেহেতু সত্য ধর্ম হল জগদ্ব্যাপী ভ্রাতৃত্ব যার ভিত্তি হল প্রেম, তাই কোন কিছু সেই ‘জগতে অবস্থিত . . . ভ্রাতৃবর্গকে’ বিভক্ত অথবা নষ্ট করতে পারবে না। যীশু প্রেম শিক্ষা দিয়েছিলেন ঘৃণাকে নয়; শান্তি, যুদ্ধকে নয়। (১ পিতর ৫:৯; মথি ২৬:৫১, ৫২) সেই একই ‘পাপাত্মা,’ শয়তান, যে হেবলকে হত্যা করার জন্য কয়িনকে প্ররোচিত করেছিল সে এখনও মানবজাতির মধ্যে ঘৃণা বপন করে যাচ্ছে এবং রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের ভিত্তিতে কলহ ও রক্তপাত ঘটাতে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। তাদের যা মূল্যই দিতে হোক না কেন সত্য খ্রীষ্টানেরা ‘যুদ্ধ শেখে না।’ রূপক অর্থে, তারা ইতিমধ্যেই ‘তাহাদের খড়্গ ভাঙ্গিয়া লাঙ্গলের ফাল গড়িয়াছে ও তাহাদের বড়শা ভাঙ্গিয়া কাস্তা গড়িয়াছে।’ তারা ঈশ্বরের আত্মার শান্তিপূর্ণ ফল উৎপাদন করে।—১ যোহন ৩:১০-১২; যিশাইয় ২:২-৪; গালাতীয় ৫:২২, ২৩.

ঈশ্বর আচরণের এবং শিক্ষার শুদ্ধতা আশীর্বাদ করেন

১২. (ক) অষ্টম প্রয়োজনীয়তা কী, কিন্তু কোন্‌ ধর্মীয় বিভাজন আপনি দেখাতে পারেন? (খ) পৌল কিভাবে এই অষ্টম প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরেন?

১২ খ্রীষ্টীয় একতা হল সত্য উপাসনার অষ্টম প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু খ্রীষ্টীয়জগতের বিভাজিত ধর্মগুলি এই বিষয়ে কোন সাহায্যকারী হয়নি। অনেক তথাকথিত মুখ্য ধর্মগুলি ছোট ছোট দলে বিভাজিত হয়েছে যার ফলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপটিস্ট ধর্ম যা উত্তর ব্যাপটিস্ট (ইউ.এস.এ. অ্যামেরিকান ব্যাপটিস্ট গির্জাগুলি) এবং দক্ষিণ ব্যাপটিস্ট (সাদার্ন ব্যাপটিস্ট কনভেনশন) বিভাজিত হয়েছে সাথে সাথে অনেক অন্যান্য ব্যাপটিস্ট দলগুলি এই বিভাজনের ফল। (ওয়ার্ল্ড ক্রিশ্চান এনসাইক্লোপিডিয়া পৃষ্ঠা ৭১৪) অনেক বিভাজন শুরু হয়েছে শিক্ষা অথবা গির্জার শাসনতন্ত্রের মতবিরোধের জন্য (উদাহরণস্বরূপ, প্রেসবিটেরিয়ান, এপিসকোপালিয়ান, কংগ্রিগেশন্যাল)। খ্রীষ্টীয়জগতের মধ্যে বিভাজনের সমান্তরাল আমরা খ্রীষ্টীয়জগতের বহির্ভূত ধর্মগুলির মধ্যেও দেখতে পাই—তা বৌদ্ধ, ইসলাম অথবা হিন্দু ধর্ম যাই হোক না কেন। প্রাথমিক খ্রীষ্টানদের প্রেরিত পৌল কী উপদেশ দিয়েছিলেন? “কিন্তু হে ভ্রাতৃগণ, আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামে আমি তোমাদিগকে বিনয় করিয়া বলি, তোমরা সকলে একই কথা বল, তোমাদের মধ্যে দলাদলি না হউক, কিন্তু এক মনে ও এক বিচারে পরিপক্ব হও।”—১ করিন্থীয় ১:১০; ২ করিন্থীয় ১৩:১১.

১৩, ১৪. (ক) ‘পবিত্র হওয়ার’ অর্থ কী? (খ) সত্য উপাসনা কিভাবে শুদ্ধ রাখা হয়?

১৩ ঈশ্বরের দ্বারা অনুমোদনপ্রাপ্ত ধর্মের নবম প্রয়োজনীয়তা কী? লেবীয় পুস্তক ১১:৪৫ পদে একটি বাইবেল নীতি ব্যক্ত করা হয়েছে: “তোমরা পবিত্র হইবে, কারণ আমি পবিত্র।” প্রেরিত পিতর এই প্রয়োজনীয়তাকে পুনরাবৃত্তি করেন যখন তিনি লিখেছিলেন: “সেই পবিত্রতমের ন্যায় আপনারাও সমস্ত আচার ব্যবহারে পবিত্র হও।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—১ পিতর ১:১৫.

১৪ পবিত্র হওয়ার সাথে কী যুক্ত রয়েছে? তা হল যেন যিহোবার উপাসকেরা আধ্যাত্মিক এবং নৈতিক দিক দিয়ে শুদ্ধ থাকে। (২ পিতর ৩:১৪) অননুতপ্ত, স্বেচ্ছাচারী পাপীরা, যারা তাদের আচরণের দ্বারা খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের প্রতি অবজ্ঞা দেখায় তাদের কোন স্থান নেই। (ইব্রীয় ৬:৪-৬) যিহোবা চান যে, যেন খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী পরিষ্কার এবং পবিত্র থাকে। কিভাবে তা সম্পন্ন হয়? আংশিকভাবে তা বিচারসংক্রান্ত সমাজচ্যুত করার যে নিয়ম তার দ্বারা করা হয় যারা মণ্ডলীকে অপরিচ্ছন্ন করে।—১ করিন্থীয় ৫:৯-১৩.

১৫, ১৬. অনেক খ্রীষ্টানেরা তাদের জীবনে কোন্‌ পরিবর্তনগুলি করেছে?

১৫ খ্রীষ্টীয় সত্য জানার আগে, অনেকে লম্পট, হেদনিসটিক, আত্মকেন্দ্রিক জীবন যাপন করেছে। কিন্তু খ্রীষ্ট সম্বন্ধীয় বাক্য তাদের পরিবর্তিত করেছে এবং তারা তাদের পাপের ক্ষমা লাভ করেছে। পৌল তা দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করেছিলেন যখন তিনি লেখেন: “অথবা তোমরা কি জান না যে, অধার্ম্মিকেরা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না? ভ্রান্ত হইও না; যাহারা ব্যভিচারী কি প্রতিমাপূজক কি পারদারিক কি স্ত্রীবৎ আচারী কি পুঙ্গামী কি চোর কি লোভী কি মাতাল কি কটুভাষী কি পরধনগ্রাহী, তাহারা ঈশ্বরের রাজ্যে অধিকার পাইবে না। আর তোমরা কেহ কেহ সেই প্রকার লোক ছিলে; কিন্তু তোমরা . . . আপনাদিগকে ধৌত করিয়াছ।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।)—১ করিন্থীয় ৬:৯-১১.

১৬ এটি প্রতীয়মান যে যিহোবা তাদের অনুমোদন করেন যারা অশাস্ত্রীয় আচরণের জন্য পশ্চাত্তাপ করে, ফিরে এবং খ্রীষ্টের এবং তাঁর শিক্ষার অনুসরণকারী হয়। তারা প্রকৃতই তাদের প্রতিবেশীকে ভালবাসে এবং অনেক দিক দিয়ে তা দেখিয়ে থাকে, যেমন পরিচর্যায় অনবরত প্রচেষ্টা করার দ্বারা, আর যারা শোনে তাদের জন্য জীবনের বার্তা প্রদান করে থাকে।—২ তীমথিয় ৪:৫.

“সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে”

১৭. সত্য উপাসনার দশম প্রয়োজনীয়তা কী? উদাহরণ দিন।

১৭ দশম প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যা যিহোবা তাদের জন্য রেখেছেন যারা তাঁকে আত্মায় এবং সত্যে উপাসনা করে—শুদ্ধ শিক্ষা দেওয়া। (যোহন ৪:২৩, ২৪) যীশু তাঁর অনুসরণকারীদের বলেছিলেন: “তোমরা সেই সত্য জানিবে, এবং সেই সত্য তোমাদিগকে স্বাধীন করিবে।” (যোহন ৮:৩২) বাইবেলের সত্য আমাদের ঈশ্বর অসম্মানকারী মতবাদগুলি, যেমন প্রাণ অমর, নরকাগ্নি এবং পুরগাতরী থেকে স্বাধীন করে। (উপদেশক ৯:৫, ৬, ১০; যিহিষ্কেল ১৮:৪, ২০) এটি আমাদের খ্রীষ্টীয়জগতের বাবিলনের রহস্য “পবিত্রতম ত্রিত্ব” থেকে স্বাধীন করে। (দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৩৫; ৬:৪; ১ করিন্থীয় ১৫: ২৭, ২৮) বাইবেলের সত্যের প্রতি বাধ্যতা পরিণামের ফলস্বরূপ প্রেমপূর্ণ, আন্তরিক, দয়াপূর্ণ এবং করুণাপূর্ণ লোক হয়। সত্য খ্রীষ্টতত্ত্ব কখনও প্রতিহিংসাপরায়ণ, অসহিষ্ণু ইনকিউসিটরস, যেমন তোমাস ডি তরকোমাদা অথবা ঘৃণাপূর্ণ যুদ্ধ প্ররোচনাকারী যেমন ক্রুসেডের সমর্থনকারী গির্জার সদস্যদের পোষণ করেনি। তবুও, মহতী বাবিল এইধরনের ফল সমগ্র ইতিহাস জুড়ে উৎপাদন করেছে, নিম্রোদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত।—আদিপুস্তক ১০:৮, ৯.

একটি নাম যা স্বতন্ত্র

১৮. (ক) কারা দশটি প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে এবং কিভাবে? (খ) আমাদের সামনে যে আশীর্বাদ রয়েছে তা পেতে আমাদের ব্যক্তিগতরূপে কী করতে হবে?

১৮ কারা আজকে এই সত্য উপাসনার দশটি প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ করে? কাদের বিশ্বস্ততা এবং শান্তিপ্রিয় ব্যক্তি হিসাবে অন্যদের দ্বারা জ্ঞাত ও চিহ্নিত করা হয়? পৃথিবীব্যাপী যিহোবার সাক্ষীরা ‘জগতের নয়’ বলে জানা যায়। (যোহন ১৫:১৯; ১৭:১৪, ১৬; ১৮:৩৬) যিহোবার লোকেরা তাঁর নাম এবং সাক্ষী হতে সম্মানিত ঠিক যেমন যীশু খ্রীষ্ট তাঁর পিতার বিশ্বস্ত সাক্ষী ছিলেন। আমরা সেই পবিত্র নাম বহন করি, সেই দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন যে এটি কী প্রতিনিধিত্ব করে। আর তাঁর সাক্ষী হিসাবে আমাদের সামনে কতই না চমৎকার আশা রয়েছে! তা হল বাধ্য, ঐক্যবদ্ধ মানব পরিবারের অংশ হয়ে সার্বজনীন সার্বভৌমকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত পরমদেশ পৃথিবীতে উপাসনা করা। এই আশীর্বাদ পেতে হলে, আসুন আমরা স্পষ্টরূপে নিজেদের সত্য উপাসনার সাথে শনাক্ত করি এবং গর্বের সাথে যিহোবার সাক্ষী নাম বহন করি “কেননা তাঁহার বিচারাজ্ঞা সকল সত্য ও ন্যায্য।”—প্রকাশিত বাক্য ১৯:২; যিশাইয় ৪৩:১০-১২; যিহিষ্কেল ৩:১১.

[পাদটীকাগুলো]

a বাইবেল অনুবাদগুলি স্বয়ং ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত নয়। অনুবাদগুলি, তাদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, বাইবেল যে আদি ভাষায় লিপিবব্ধ করা হয়েছিল তার বোধগম্যতার পার্থক্য হয়ত প্রতিবিম্বিত করতে পারে।

আপনি কিভাবে উত্তর দেবেন?

◻ যিহোবার সাক্ষীরা মহতী বাবিলের ধ্বংসকে কোন্‌ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে?

◻ সত্য উপাসনার মুখ্য প্রয়োজনীয়তাগুলি কী কী?

◻ সত্য কিভাবে আপনাকে স্বাধীন করে?

◻ যিহোবা সাক্ষী হিসাবে আমাদের কোন্‌ বিশিষ্ট সম্মান রয়েছে?

[১৭ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিহোবার সাক্ষীরা ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করছে এবং শিক্ষা দিচ্ছে

[১৮ পৃষ্ঠার চিত্র]

জাগতিক রাজনীতি এবং যুদ্ধ সম্বন্ধে সত্য খ্রীষ্টানেরা সবসময়ই নিরপেক্ষ থেকেছে

[সজন্যে]

Airplane: Courtesy of the Ministry of Defense, London

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার