হতাশার মধ্যে কিভাবে আশা খুঁজে পাওয়া যায়
কল্পনা করুন যেন নিম্নের অভিজ্ঞতাগুলি আপনাকে ভোগ করতে হয়েছিল: আপনার বস্তুগত সমস্ত সম্পত্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ও আপনাকে নিঃস্ব করে ছেড়েছে। আপনার সন্তান—আপনার জীবনের আনন্দ—আর নেই। আপনার বিবাহ-সঙ্গী আপনাকে কোন নৈতিক সমর্থন প্রদান করছে না। আপনার স্বাস্থ্য আক্ষরিকভাবে ভেঙ্গে গিয়েছে। প্রতিটি দিনই এক যন্ত্রণাদায়ক কঠোর পরীক্ষা।
যদি আপনার জীবনে এইধরনের পরিস্থিতি আসে, তাহলে আপনি কি বেঁচে থাকার কোন কারণ খুঁজে পেতেন? অথবা আপনি কি হতাশার কাছে বশীভূত হতেন?
এমনই করুণ দুরাবস্থা যা এইমাত্র বর্ণনা করা হয়েছে, তা ছিল ইয়োবের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা, যে ব্যক্তি বাইবেলের সময়ে জীবিত ছিলেন। (ইয়োব, ১, ২ অধ্যায়) এক অত্যন্ত বিষণ্ণ মুহূর্তে ইয়োব বিলাপ করেছিলেন: “আমার প্রাণ জীবনে ক্লান্ত হইয়াছে।” তিনি হয়ত স্বস্তি পাওয়ার জন্য মৃত্যুকে স্বাগত জানাতে পারতেন। (ইয়োব ১০:১; ১৪:১৩) কিন্তু, তার সীমাহীন দুঃখকষ্ট থাকা সত্ত্বেও, ইয়োব যিহোবার প্রতি তার বিশ্বস্ততা বজায় রেখেছিলেন। সেইজন্য যিহোবা “ইয়োবের প্রথম অবস্থা হইতে শেষাবস্থা অধিক আশীর্ব্বাদযুক্ত করিলেন।” তিনি “বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হইয়া” শান্তিতে প্রাণত্যাগ করলেন।—ইয়োব ৪২:১২, ১৭.
ইয়োব ধৈর্যের এক উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন যা আজ পর্যন্ত প্রশংসনীয়। তার পরীক্ষাগুলি তার ব্যক্তিত্বের সংশোধন করে এবং অন্যদের সৎকার্য করতে অনুপ্রাণিত করে। (যাকোব ৫:১০, ১১) সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল, ইয়োবের অটল বিশ্বস্ততা যিহোবার হৃদয় আনন্দিত করেছিল। (হিতোপদেশ ২৭:১১) সুতরাং এটি ছিল নিদারুণ যন্ত্রণার এক বিভীষিকা যা পরিশেষে ঐশিকভাব, বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার অসাধারণ সাফল্যে পরিণত হয়, যেটি ইয়োব ও যারা তার উদাহরণের দ্বারা প্রণোদিত হয় তাদের সকলের জন্য আশীর্বাদ নিয়ে এসেছিল।
নানাবিধ পরীক্ষা সত্ত্বেও আশা
ইয়োবের ক্ষেত্রে যা হয়েছিল আপনারও হয়ত তদ্রূপ পরীক্ষাগুলি ভোগ করতে হতে পারে। প্রিয়জনকে হারানো হয়ত আপনাকে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত করেছে। ভীষণ অসুস্থতা আপনার অস্তিত্বকে হয়ত এক যন্ত্রণাময় কঠিন পরীক্ষা করে তুলেছে। হৃদয়বিদারক বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে হয়ত মনে হতে পারে যে আপনার সম্পূর্ণ জীবনধারা ছিন্নভিন্ন হয়েছে। অর্থনৈতিক বিপর্যয় হয়ত আপনাকে নিঃস্ব করে ছেড়েছে। সত্য উপাসনার পীড়াদায়ক বিরোধীদের মাধ্যমে আপনি হয়ত সাংঘাতিক তাড়নার শিকার হতে পারেন। আপনার পরীক্ষাগুলি মোকাবিলা করার সংগ্রাম হয়ত আপনাকে মনে করাতে বাধ্য করেছে যে আপনার ভবিষ্যৎ আশাবিহীন।—১ পিতর ১:৬.
হতাশার কাছে নতিস্বীকার না করে বরঞ্চ, নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন, ‘আমি কষ্টভোগ করছি কেন?’ আপনি কষ্টভোগ করছেন কারণ আপনি এমন এক জগতে বাস করছেন যা “সেই পাপাত্মার মধ্যে শুইয়া রহিয়াছে,” আর সে হল শয়তান দিয়াবল। (১ যোহন ৫:১৯) ফলস্বরূপ, সকলে কষ্টভোগ করে। কোন না কোনভাবে রাজ্যের বার্তার প্রতি দিয়াবল-অনুপ্রাণিত ঘৃণা, অন্যদের অপ্রিয় বাক্য অথবা অনৈশ্বরিক আচরণের বীভৎস কীর্তি-কলাপের দ্বারা আমরা সকলে প্রভাবিত হয়ে থাকি, যা এই ‘বিষম সময়ে’ অতি সাধারণ।—২ তীমথিয় ৩:১-৫.
আপনার জীবনে যদি কোন করুণ বিষয় ঘটে থাকে, আপনি হয়ত “কাল ও দৈব” এর শিকার হয়েছেন। (উপদেশক ৯:১১) অপরপক্ষে, আমাদের নিজেদের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত পাপের কারণে জীবনে বিষয়গুলি কখনও কখনও ভুল হয়ে যায়। (রোমীয় ৫:১২) এমনকি আপনি যদি গুরুতর পাপ করে থাকেন, অথচ অনুতপ্ত হয়েছেন ও আধ্যাত্মিক সাহায্যের অন্বেষণ করেছেন, তাহলে মনে করবেন না যে আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে পরিত্যক্ত হয়েছেন। (গীতসংহিতা ১০৩:১০-১৪; যাকোব ৫:১৩-১৫) অন্য যে কোন ব্যক্তির চেয়ে তিনি আমাদের জন্য বেশি চিন্তা করেন। (১ পিতর ৫:৬, ৭) আপনি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারেন যে “সদাপ্রভু ভগ্নচিত্তদের নিকটবর্ত্তী, তিনি চূর্ণমনাদের পরিত্রাণ করেন।” (গীতসংহিতা ৩৪:১৮) আপনার পরীক্ষা যত করুণ অথবা নির্মমই হোক না, যিহোবা আপনাকে সেগুলির সাথে মোকাবিলা করার জন্য প্রজ্ঞা প্রদান করতে পারেন। (যাকোব ১:৫-৮) সর্বদা মনে রাখবেন যে যিহোবা সমস্ত ক্ষতগুলি আরোগ্য করতে পারেন। আপনার উপর যখন তাঁর অনুকম্পা থাকে তখন কোন কিছুই আপনাকে জীবনের পুরস্কার অর্জন করা থেকে রোধ করতে পারবে না।—রোমীয় ৮:৩৮, ৩৯.
পরীক্ষাগুলি থেকে কি উত্তম কিছু আসতে পারে?
একটি পুরনো প্রবাদ আছে, “দুর্দশায়ও আশার আলো থাকে।” এটি সহজভাবে বলা যায় যে পরিস্থিতি যতই অপ্রীতিকর হোক না কেন, আপনি সর্বদা আশার কারণ খুঁজে পেতে পারেন। ঈশ্বরের বাক্যে যা কিছু লিখিত রয়েছে তার উদ্দেশ্য হল যেন “আমরা প্রত্যাশা প্রাপ্ত হই।” (রোমীয় ১৫:৪) আপনার দুরাবস্থা যতটা তীব্রই হোক না কেন, বাইবেলের প্রতিজ্ঞা ও নীতিগুলি আপনার মধ্যে পুনরায় আনন্দ ও প্রত্যাশা আনতে পারে।
যারা ঈশ্বরকে প্রেম করে তাদের সামনে যে অনন্তকালীন আশীর্বাদগুলি রয়েছে তার তুলনায় “ক্লেশ অল্পকালস্থায়ী এবং লঘু।” (২ করিন্থীয় ৪:১৬-১৮, NW) বাইবেল আরও ইঙ্গিত দেয় যে পরীক্ষার মাঝে যে ঈশ্বরীয় গুণাবলিগুলি গড়ে ওঠে তা খ্যাতি অথবা বস্তুগত সম্পদের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যবান। (১ যোহন ২:১৫-১৭) অতএব, এমনকি কষ্টভোগও এক উত্তম উদ্দেশ্য প্রদান করতে পারে। (ইব্রীয় ৫:৮) বস্তুতপক্ষে, পরীক্ষাগুলির সময় যা শেখা হয় তা প্রয়োগ করা আপনার জন্য অপ্রত্যাশিত আশীর্বাদগুলি নিয়ে আসতে পারে।
কঠিন পরীক্ষা হয়ত আপনাকে আরও সহনশীল করতে পারে। আপনি হয়ত স্বীকার করবেন যে অতীতে আপনার ব্যক্তিত্বে এমন এক বৈশিষ্ট্য ছিল যা অন্যদের বিরক্ত করে তুলত এবং এমনকি তা আপনার আধ্যাত্মিক প্রগতির ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত সৃষ্টি করত। হয়ত তা ছিল অত্যধিক আস্থা। কিছু চরম দুর্দশায় পীড়িত হওয়ার পর, আপনি হয়ত হঠাৎ উপলব্ধি করতে পারবেন যে আপনি কতটা দুর্বল এবং অন্যদের সাহায্য আপনার কতটা প্রয়োজন। আপনার পরীক্ষা যদি সেই বিষয়ে আপনাকে শিক্ষা দিয়ে থাকে এবং আপনি প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে থাকেন, তাহলে এটি আপনাকে উপকৃত করেছে।
অতীতে, আপনার মেজাজ দমন করার অসুবিধার কারণে অন্যেরা যদি আপনার সাথে কাজ করা কঠিন মনে করত, তাহলে কী? এটি হয়ত এমনকি আপনার স্বাস্থ্যের সাথে যুক্ত কিছু সমস্যা সৃষ্টি করছে। (হিতোপদেশ ১৪:২৯, ৩০) কিন্তু, এখন আপনার অবস্থা হয়ত অনেকটা ভাল কারণ ইন্দ্রিয়দমনে সাহায্য করতে আপনি ঈশ্বরের আত্মার উপর নির্ভর করছেন।—গালাতীয় ৫:২২, ২৩.
অন্যদের মত, আপনারও সম্ভবত কোন এক সময়, যারা ভুল করে তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হতে সহানুভূতির অভাব ছিল। কিন্তু আপনি যদি নিজে এমন এক পরিস্থিতিতে পড়ে থাকেন যেক্ষেত্রে আপনি প্রচুর ক্ষমার প্রয়োজন বোধ করেছিলেন, তদ্রূপ হয়ত অন্যদের প্রতি ক্ষমাশীল হতে আপনি এখন আরও বেশি প্রবণ হবেন। আপনাকে যে আন্তরিক সহানুভূতি, যত্ন ও ক্ষমা দেখান হয়েছে তা আপনাকে উপলব্ধি করাবে যে অনুতপ্ত অন্যায়কারীর প্রতিও আপনার অনুরূপ গুণাবলি প্রদর্শন করা উচিত। আপনার দুঃখ যদি আপনার ব্যক্তিত্বের এই সমস্ত দুর্বলতাগুলি সংশোধন করতে প্রণোদিত করে থাকে, তাহলে আপনি আপনার অভিজ্ঞতা থেকে এক উপকার লাভ করেছেন। আপনি শিখেছেন যে “দয়াই বিচারজয়ী হইয়া শ্লাঘা করে।”—যাকোব ২:১৩; মথি ৫:৭.
যদি খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর শাসনের ফলে আপনার আকাঙ্ক্ষিত সুযোগগুলি এবং অন্যদের সম্মান লাভের হানি হয় তাহলে কী? হতাশার কাছে বশীভূত হবেন না। শাসনমূলক কাজ মণ্ডলীকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে, কিন্তু এর উদ্দেশ্যগুলি অন্যায়কারীর আধ্যাত্মিক পুনরুদ্ধারকে অন্তর্ভুক্ত করে। স্বীকার করতে হয় যে “কোন শাসনই আপাততঃ আনন্দের বিষয় বোধ হয় না, কিন্তু দুঃখের বিষয় বোধ হয়; তথাপি তদ্দ্বারা যাহাদের অভ্যাস জন্মিয়াছে, তাহা পরে তাহাদিগকে ধার্ম্মিকতার শান্তিযুক্ত ফল প্রদান করে।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (ইব্রীয় ১২:১১) যদিও শাসন এক ধ্বংসাত্মক আঘাত হানতে পারে, তবে তা নম্র অনুতপ্ত ব্যক্তিকে নিরাশায় ফেলে রাখে না। প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদকে অন্যায়ের দরুন কঠোরভাবে শাসন করা হয়েছিল, কিন্তু তিনি অনুতপ্ত হয়েছিলেন এবং পরিণামস্বরূপ বিশ্বাসের উল্লেখযোগ্য একজন ব্যক্তি হিসাবে বিশেষ প্রশংসা লাভ করেছিলেন।—২ শমূয়েল ১২:৭-১২; গীতসংহিতা ৩২:৫; ইব্রীয় ১১:৩২-৩৪.
পরীক্ষা আপনার দৃষ্টিভঙ্গির উপর এক গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। অতীতে, আপনার মনোযোগ হয়ত বস্তুবাদিতার লক্ষ্যে এবং এই জগতে যা আপনার কৃতিত্ব ও সামাজিক মর্যাদা আনতে পারে তা অর্জন করার উপর কেন্দ্রীভূত ছিল। সম্ভবত অর্থনৈতিক বিপর্যয় অথবা বস্তুগত অবক্ষয়ের সাথে যুক্ত পরীক্ষা আপনার চিন্তাধারাকে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভূত করেছে। (তুলনা করুন ফিলিপীয় ১:১০.) এখন আপনি উপলব্ধি করছেন যে পবিত্র পরিচর্যায় আধ্যাত্মিক মূল্য এবং লক্ষ্যগুলি একমাত্র বিষয় যা প্রকৃত আনন্দ এবং স্থায়ী সন্তুষ্টি আনে।
যিহোবাতে আস্থা রাখুন
যারা আপনার খ্রীষ্টীয় বিশ্বাসের বিরোধিতা করে তাদের কাছ থেকে, যিহোবার পবিত্র পরিচর্যা করার ফলস্বরূপ হয়ত তাড়না ও কষ্টভোগ আসতে পারে। এই পরীক্ষার কারণে আপনি হয়ত লাঞ্ছিত বোধ করতে পারেন, কিন্তু এর থেকে উত্তম কিছু আসতে পারে। এই পরীক্ষা আপনার বিশ্বাসকে শক্তিশালী করতে পারে। অধিকন্তু, আপনার দৃঢ়তা লক্ষ্য করার দ্বারা অন্যেরা যারা তাড়না ভোগ করছে তারা হয়ত উৎসাহিত ও শক্তিশালী হতে পারে। আপনার উত্তম আচরণের প্রত্যক্ষদর্শীরা হয়ত ঈশ্বরকে গৌরবান্বিত করতে পরিচালিত হতে পারে। এমনকি আপনার বিরুদ্ধাচারীরাও হয়ত লজ্জিত হতে পারে এবং আপনার সৎকার্যগুলি স্বীকার করতে পারে!—১ পিতর ২:১২; ৩:১৬.
তাড়িত হওয়ার সময় হতাশা এড়াতে আপনার যিহোবাতে আস্থা রাখা প্রয়োজন। তাঁর বাক্য দেখায় যে পরীক্ষা থেকে উদ্ধার লাভ অবশ্যই হবে, কিন্তু তা হয়ত যত শীঘ্র আপনি চান তত শীঘ্র হবে না। ইত্যবসরে, “সৎকর্ম্ম করিতে নিরুৎসাহ হইও না।” (২ থিষলনীকীয় ৩:১৩) পরীক্ষার সাথে মোকাবিলা ও সহ্য করার পথগুলি অনুসন্ধান করতে থাকুন। এমনকি বিষয়গুলি যখন আশাবিহীন মনে হয় তখন “তুমি সদাপ্রভুতে আপনার ভার অর্পণ কর; তিনিই তোমাকে ধরিয়া রাখিবেন, কখনও ধার্ম্মিককে বিচলিত হইতে দিবেন না।” (গীতসংহিতা ৫৫:২২) আত্ম-গ্লানিতে নিজেকে বিজড়িত করার চেয়ে বরঞ্চ, যিহোবাকে জানতে পারা, তাঁর লোকেদের মাঝে এক স্থান পাওয়া এবং অন্তহীন জীবনের আশার অধিকারী হওয়ার মাধ্যমে আপনি কতটা আশীর্বাদ লাভ করেছেন সেই সম্বন্ধে চিন্তা করুন।—যোহন ৩:১৬, ৩৬.
আপনার মন অপরিহার্য বিষয়গুলির উপর কেন্দ্রীভূত করুন। সহ্য করতে শক্তি চাওয়ার জন্য প্রার্থনায় প্রতিদিন যিহোবার নিকটবর্তী হোন। (ফিলিপীয় ৪:৬, ৭, ১৩) যারা আপনার দুঃখকষ্ট ঘটাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে যে কোন প্রতিশোধমূলক চিন্তাধারা দূর করুন। বিষয়গুলি যিহোবার হাতে ছেড়ে দিন। (রোমীয় ১২:১৯) আপনার ব্যক্তিত্বকে পরিশোধিত করার পথ খুঁজতে থাকুন, খ্রীষ্টীয় গুণাবলি গড়ে তুলুন। (২ পিতর ১:৫-৮) অন্যেরা আপনার প্রতি যা করে থাকে যার অন্তর্ভুক্ত প্রাচীনেরা যারা প্রেমের সাথে আপনার আধ্যাত্মিক প্রয়োজনের প্রতি যত্ন নিয়ে থাকেন, সেই সমস্ত কিছুর প্রতি উপলব্ধি প্রকাশ করুন। (ইব্রীয় ১৩:৭, ১৭) ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বস্ত হোন এবং জীবনের পুরস্কারের প্রতি আপনার দৃষ্টি রাখুন, এই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে যে এমনকি মৃত্যুও তা আপনার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবে না।—যোহন ৫:২৮, ২৯; ১৭:৩.
যদি এখন আপনি প্রচুর দুঃখ অথবা নিদারুণ পরীক্ষাগুলি ভোগ করছেন তবে “তোমার সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস করিও” আর পরিশেষে পর্যাপ্ত আনন্দ আপনার শোক ও কষ্টকে সম্পূর্ণ অপসারিত করবে। (হিতোপদেশ ৩:৫, ৬; যোহন ১৬:২০) সুখ দুঃখকে মুছে দেবে যখন ঈশ্বর আপনাকে আশীর্বাদ করবেন যেমন তিনি ইয়োবের প্রতি করেছিলেন। বর্তমান-দিনের কষ্টভোগগুলি আপনার পুরস্কারের সাথে তুলনা করলে কোনভাবেই পরিগণিত হয় না। (তুলনা করুন রোমীয় ৮:১৮.) আপনার বিশ্বস্ত ধৈর্য অন্যদের উৎসাহিত করতে এবং আপনাকে ‘নূতন মনুষ্যের’ সাথে আসে এইরূপ সুন্দর খ্রীষ্টীয় গুণাবলি উৎপন্ন করতে সাহায্য করতে পারে। (ইফিষীয় ৪:২৩, ২৪; কলসীয় ৩:১০, ১২-১৪) সুতরাং, প্রেরিত পিতরের বিজ্ঞ পরামর্শ থেকে সাহস অর্জন করুন: “যাহারা ঈশ্বরের ইচ্ছাক্রমে দুঃখভোগ করে, তাহারা সদাচরণ করিতে করিতে আপন আপন প্রাণকে বিশ্বস্ত সৃষ্টিকর্ত্তার হস্তে গচ্ছিত রাখুক।”—১ পিতর ৪:১৯.
[২৩ পৃষ্ঠার চিত্র]
ইয়োবের মত হোন। কখনও আশা হারাবেন না
[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
আপনার সমস্ত চিত্তে যিহোবাতে আস্থা রাখুন