দুর্গম পর্বতচূড়ার মল্লবিদ্
প্রাচীন শহর এবং তার চতুর্দিকে জনবসতিহীন এন-গেদি নামক অঞ্চলটি লবণ সমুদ্রের পশ্চিম তীর বরাবর অবস্থিত ছিল। অঞ্চলটির শিলাময় পথ এবং উঁচু স্থানগুলি প্রতিজ্ঞাত দেশের পার্বত্য ছাগ, যেগুলি এখানে দেখানো হয়েছে তাদের জন্য এক আদর্শ ঘর যোগায়।
সুদৃঢ় পা বিশিষ্ট এই প্রাণীটি হল অপূর্ব পশু সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। আসুন আমরা বাইবেল খুলি এবং এই মনোমুগ্ধকর পশুর প্রতি এক নিবিড় দৃষ্টি দিই।
‘উচ্চ পর্ব্বত সকল পার্বত্য ছাগের আবাস’
গীতরচক এইরকমই গেয়েছিলেন। (গীতসংহিতা ১০৪:১৮) উঁচু স্থানগুলিতে বসবাস করার জন্য পার্বত্য ছাগগুলি উত্তমভাবে সুসজ্জিত থাকে! এরা অত্যন্ত কর্মতৎপর, প্রচণ্ড প্রত্যয় ও গতি নিয়ে অমসৃণ ভূখণ্ডের উপর চলাফেরা করে। এটি অংশত এদের পায়ের নিচে খুরের গঠনের দরুণ সম্ভব হয়ে থাকে। এদের খুরের মধ্যবর্তী ফাঁক ছাগের ওজনের ভারে প্রসারিত হয় যেটি জন্তুটিকে সংকীর্ণ ঢালু পাথরের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে অথবা চলাফেরা করতে দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরার ক্ষমতা যোগায়।
এছাড়াও পার্বত্য ছাগেরা অসাধারণ ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে। এরা অনেক দূর পর্যন্ত লাফাতে পারে এবং এমন সংকীর্ণ শৈলশিরার উপর যেতে পারে যেখানে খুব কষ্ট করে এর চারটি পা রাখার জন্য জায়গা আছে। জীববিজ্ঞানী ডগ্লাস স্যাডউইক একবার এক অন্যধরনের পার্বত্য ছাগকে, এটির ঘোরার পক্ষে খুবই সংকীর্ণ একটি শৈলশিরায় বিপদগ্রস্ত হওয়াকে এড়ানোর জন্য তার ভারসাম্য ব্যবহার করতে দেখেছিলেন। তিনি বলেন: “প্রায় ১২০ মিটার নিচে পরবর্তী শৈলশিরার প্রতি এক ঝলক দৃষ্টিপাত করার পর, ছাগটি তার সামনের পা দৃঢ়ভাবে রাখে আর ধীরে ধীরে পিছনের অংশটি মাথার উপর দিয়ে পাথরের গা বরাবর হেঁটে এমনভাবে ঘোরায় যেন এটি একটি গাড়ির চাকার মত কাজ করে। আমি রুদ্ধশ্বাসে দেখতে থাকি আর ছাগটি ক্রমাগত তা করে যেতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না তার পিছনের পা নিচে আসে যাতে করে সে সেই পথের মুখোমুখি হয় যেখান থেকে এটি এসেছিল।” (ন্যাশন্যাল জিওগ্রাফিক, ইংরাজি) তাই পার্বত্য ছাগদের “দুর্গম পর্বতচূড়ার মল্লবিদ্” বলে অভিহিত করায় অবাক হওয়ার কিছু নেই!
‘আপনি কি জানেন পার্বত্য ছাগীরা কখন প্রসব করে?’
পার্বত্য ছাগেরা খুবই লাজুক প্রকৃতির প্রাণী। এরা মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে পছন্দ করে। বস্তুতপক্ষে, বন্য অবস্থায় যথেষ্ট কাছ থেকে এদের লক্ষ্য করা লোকেদের পক্ষে কঠিন হয়। তাই, “সহস্র সহস্র পর্ব্বতীয় পশু”-র মালিক উপযুক্তভাবে ইয়োবকে জিজ্ঞাসা করতে পেরেছিলেন: “তুমি কি বনচ্ছাগীদের [“পার্বত্য ছাগীদের,” NW] প্রসবকাল জান?”—গীতসংহিতা ৫০:১০; ইয়োব ৩৯:১.
ঈশ্বর-দত্ত সহজাত প্রবৃত্তি পার্বত্য ছাগকে জানিয়ে দেয় যে কখন এর প্রসবের সময় উপস্থিত হয়। এটি একটি নিরাপদ স্থান খুঁজে বের করে আর তারপর একটি অথবা দুটি বাচ্চার জন্ম দেয়, সাধারণত মে মাসের শেষে অথবা জুন মাসে। সদ্যোজাত বাচ্চাগুলি মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই সুদৃঢ় পা অর্জন করে।
‘সে প্রেমিকা হরিণী ও কমনীয়া পার্বত্য ছাগীবৎ’
জ্ঞানী রাজা শলোমন স্বামীদের উপদেশ দিয়েছিলেন: “তুমি আপন যৌবনের ভার্য্যায় আমোদ কর। সে প্রেমিকা হরিণী ও কমনীয়া বাতপ্রমীবৎ [“পার্বত্য ছাগী,” NW]।” (হিতোপদেশ ৫:১৮, ১৯) এটি নারীদের মর্যাদাহানি করার উদ্দেশ্যে বলা হয়নি। স্পষ্টতই, শলোমন পরোক্ষভাবে এই জন্তুদের সৌন্দর্য, মাধুর্য এবং অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গুণাবলির কথা উল্লেখ করছিলেন।
পার্বত্য ছাগেরা সেই সমস্ত অগণিত “সজীব প্রাণীর” অন্তর্ভুক্ত যা সৃষ্টিকর্তার প্রজ্ঞার অদম্য প্রমাণ দেয়। (আদিপুস্তক ১:২৪, NW, ২৫) ঈশ্বর এত মনোমুগ্ধকর প্রাণীবর্গ দিয়ে আমাদের পরিবেষ্টিত করেছেন বলে আমরা কি আনন্দিত নই?
[২৪ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
Athens University এর সৌজন্যে