রাজ্য ঘোষণাকারীরা বিবৃতি দেয়
“অপ্রত্যাশিত দেশে” প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলি জয় করা
প্রেরিত পৌল প্রথম শতাব্দীর করিন্থের খ্রীষ্টানদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “তূরীর ধ্বনি যদি অস্পষ্ট হয়, তবে কে যুদ্ধের জন্য সুসজ্জ হইবে? তেমনি তোমরা যদি জিহ্বা দ্বারা, যাহা সহজে বুঝা যায়, এমন কথা না বল, তবে কি বলা হইতেছে, তাহা কিসে জানা যাইবে?”—১ করিন্থীয় ১৪:৮, ৯.
পাপুয়া নিউ গিনিতে যাকে কখনও কখনও অপ্রত্যাশিত দেশ বলা হয়েছে, যিহোবার সাক্ষীরা বাইবেলের স্পষ্ট বার্তা প্রচার করার ক্ষেত্রে ভয়ংকর বাধার সম্মুখীন হয়ে থাকে। তারা সেই লোকেদের সাথে প্রচার করে থাকে যারা ৭০০টিরও বেশি বিভিন্ন ভাষায় কথা বলে ও যাদের বহুসংখ্যক বিভিন্ন প্রকার প্রথাগুলি আছে। এছাড়াও সাক্ষীরা পার্বত্য ভূখণ্ডগুলিতেও তাদের সংগ্রাম চালিয়ে যায় যেখানে কোন রাস্তা নেই এবং অপরাধ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই সমস্ত অসুবিধাগুলি ছাড়াও সেখানে নির্দিষ্ট একটি ধর্মীয় দলের পক্ষ থেকে বিরোধিতা আছে আর কখনও কখনও এমনকি বিদ্যালয় আধিকারিকদের পক্ষ থেকেও।
তৎসত্ত্বেও, উত্তম আধ্যাত্মিক নির্দেশনা ও স্থানীয় ভাষাগুলিতে বাইবেল অধ্যয়ন সহায়কগুলির এক বৃদ্ধিরত গ্রন্থাগার এক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ তূরীধ্বনির মত সুসমাচার প্রদান করতে সাক্ষীদের সজ্জিত করছে। প্রায়ই অনুকূল সাড়া পাওয়া যায় যেমন নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলি দেখায়:
● বিদ্যালয়ের নতুন বছর শুরু হওয়ার পর এক শিক্ষক জানতে চেয়েছিলেন যে কেন যিহোবার সাক্ষীদের সন্তানেরা পতাকা অভিবাদন করে না অথবা জাতীয় সংগীত গায় না। তিনি প্রশ্নটি ১৩ বছর বয়স্ক এক ছাত্রী মিওলা যে একজন বাপ্তিস্মিত সাক্ষী তাকে লক্ষ্য করে করেছিলেন। মিওলা একটি স্পষ্ট শাস্ত্র ভিত্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছিল। শিক্ষক তার যুক্তি মেনে নিয়েছিলেন যেহেতু এটি বাইবেল থেকে ছিল। তার ব্যাখ্যাটি বিদ্যালয়ের অন্যান্য কর্মচারীদের সাথেও বন্টন করা হয়েছিল।
পরবর্তী সময়ে, যখন ছাত্রছাত্রীদের একটি রচনা লেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তখন মিওলা ত্রিত্বের বিষয়টিকে বেছে নিয়েছিল। ক্লাশে তার রচনাটি সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল আর শিক্ষক তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে কোথা থেকে সে তথ্য পেয়েছে? সে তাকে ইংরাজি ভাষায় আপনি পরমদেশ পৃথিবীতে অনন্তকাল বেঁচে থাকতে পারেন বইটি দেখায়। শিক্ষক বইটি সম্পূর্ণ শ্রেণীর সামনে উপস্থাপিত করেছিলেন আর অনেকেই তাদের নিজস্ব একটি কপি চেয়েছিল। পরের দিন মিওলা তার সহপাঠীদের কাছে ১৪টি বই ও ৭টি পত্রিকা অর্পণ করে আর তাদের তিনজনের সাথে সে বাইবেল অধ্যয়নও শুরু করে। মিওলার লক্ষ্য হল একজন পূর্ণ-সময়ের পরিচারক হওয়া।
● পোর্ট মোরেসবির কাছে একটি উপকূলবর্তী গ্রামে সাক্ষীদের একটি বিচ্ছিন্ন দল ১৯৭০ দশকের প্রারম্ভ থেকেই বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে এসেছে। কিন্তু সম্প্রতি তারা একটি অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে সাহায্য পেয়েছে। ইউনাইটেড চার্চের বিশপ, যিনি পাপুয়া নিউ গিনিতে বাস করতেন ও বিদেশে শিক্ষাগ্রহণ করেছিলেন, একদিন গির্জার শ্রোতাদের প্রশ্নের জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। একজন ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিলেন: “আমাদের গ্রামে দুটি ধর্ম আছে—ইউনাইটেড চার্চ ও যিহোবার সাক্ষী। যখন সাক্ষীরা আমাদের গৃহে আসে তখন আমাদের কী করা উচিত?” অনেকক্ষণ বিরতির পর বিশপ উত্তর দিয়েছিলেন: “সত্যিই আমি জানি না যে আপনাকে কী উত্তর আমি দেব। সম্প্রতি দুইজন যুবক সাক্ষী আমার দরজায় এসেছিলেন। তারা আমাকে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিলেন আর আমার সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণ সত্ত্বেও আমি উত্তরটি জানতাম না। কিন্তু তারা সহজেই বাইবেল থেকে উত্তরটি দিয়েছিলেন। তাই আমি আপনাকে বলব না যে কী করা উচিত—বিষয়টি আমি আপনার উপর ছেড়ে দিচ্ছি। যদি আপনি না চান তাহলে শুনবেন না কিন্তু তাদের প্রতি হিংস্র হবেন না।”
ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির এক ভ্রমণ প্রতিনিধি যিনি পরবর্তী সময়ে সাক্ষীদের এই দলটিকে পরিদর্শন করেছিলেন, বিবৃতি দেন: “যখন তারা প্রচারে গিয়েছিল গ্রামের প্রায় প্রত্যেকে সাক্ষীদের কথা শুনেছিল। কিছুজন এমনকি তাদের ঘরেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। প্রচার কাজের জন্য এখন এটি একটি পরমদেশ।”