ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৮ ৯/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩১
  • বাইবেলের যে অনুবাদটি বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বাইবেলের যে অনুবাদটি বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল
  • ১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • একটি অনুপ্রাণিত অনুবাদ?
  • শেমের তাঁবুতে যেফৎ?
  • ধর্মান্তরিত এবং ঈশ্বর-ভয়শীল ব্যক্তিগণ
  • সেপটুয়াজিন্ট পথ প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছিল
  • সেপটুয়াজিন্ট এর “অনুপ্রেরণা” হারায়
  • “সেপ্টুয়াজিন্ট” অতীতের মতো বর্তমানেও উপকারী
    ২০০২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবা হলেন ভাববিনিময়কারী ঈশ্বর
    ২০১৫ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • বাইবেল যেভাবে আমাদের কাছে এসেছে—ভাগ এক
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • খ্রীষ্টানেরা এবং মনুষ্যজাতির জগৎ
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
আরও দেখুন
১৯৯৮ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৮ ৯/১৫ পৃষ্ঠা ২৮-৩১

বাইবেলের যে অনুবাদটি বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল

ঈশ্বরের ভাববাদী মোশি ৩,৫০০ বছর আগে যখন বাইবেল লেখা শুরু করেছিলেন, তখন কেবল একটি ক্ষুদ্র জাতিই তা পড়তে পারত। (দ্বিতীয় বিবরণ ৭:৭) কারণ তখন শাস্ত্র কেবল সেই জাতির মূল ইব্রীয় ভাষাতেই পাওয়া যেত। কিন্তু, সময়ের প্রবাহে তা পরিবর্তিত হয়েছে।

শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বাইবেলের বার্তা ছড়িয়ে পড়া এবং লোকেদের উপর এর ইতিবাচক প্রভাবের প্রধান কারণ ছিল এটির প্রথম অনুবাদ—সেপটুয়াজিন্ট। কেন এটি রচনা করা হয়েছিল? আর এটি বলা কি যুক্তিসংগত যে এই বাইবেলই বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল?

একটি অনুপ্রাণিত অনুবাদ?

সা.কা.পূ. সপ্তম ও ষষ্ঠ শতাব্দীতে বাবিলনে যিহূদীদের নির্বাসনের পর অনেক যিহূদী, প্রাচীন ইস্রায়েল ও যিহূদা দেশের বাইরে থেকে গিয়েছিল। নির্বাসনে থাকার সময় যারা জন্মগ্রহণ করেছিল, ইব্রীয় ভাষা সেই যিহূদীদের জন্য গৌণ ভাষায় পরিণত হয়েছিল। সা.কা.পূ. তৃতীয় শতাব্দীর মধ্যে, গ্রীক সাম্রাজ্যের প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় একটি যিহূদী সমাজ গড়ে উঠেছিল। ওই যিহূদীরা পবিত্র শাস্ত্রাবলিকে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করার প্রয়োজন বোধ করেছিল কারণ তখন তাদের মাতৃভাষা ছিল গ্রীক।

সেই সময় পর্যন্ত বাইবেলের অনুপ্রাণিত বার্তা শুধু ইব্রীয় ভাষায় লিপিবদ্ধ ছিল এবং অল্প কিছু অংশ অরামীয় ভাষায়, ইব্রীয় ভাষার সঙ্গে যেটির মিল ছিল। ঈশ্বরের বাক্যকে এক ভিন্ন ভাষায় প্রকাশ করা কি ঐশিক অনুপ্রেরণার ক্ষমতাসম্পন্ন প্রভাবকে কমিয়ে দেবে কিংবা ভুল ব্যাখ্যার দিকে পরিচালিত করবে? ঐশিক বাক্য, যে যিহূদীদের উপর বিশ্বাস করে অর্পণ করা হয়েছিল, তারা কি অনুবাদের দ্বারা সেই বার্তা বিকৃত করার ঝুঁকি গ্রহণ করতেন?—গীতসংহিতা ১৪৭:১৯, ২০; রোমীয় ৩:১, ২.

এই সূক্ষ্ম বিষয়গুলি আশঙ্কা জাগিয়েছিল। কিন্তু যিহূদীরা আর ঈশ্বরের বাক্য বুঝতে পারবে না, এই উদ্বিগ্নতা শেষে অন্য সমস্ত বিষয়গুলিকে ছাপিয়ে গিয়েছিল। আর সেই কারণে শুধু মোশির লেখা বাইবেলের প্রথম পাঁচটি বই—তোরাহ্‌কে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। অনুবাদের প্রকৃত প্রক্রিয়া কী ছিল তা আজ আমরা জানি না। আরিস্টিয়াসের পত্র অনুসারে, মিশরীয় শাসক টলেমি দ্বিতীয় (সা.কা.পূ. ২৮৫-২৪৬), তার রাজকীয় পাঠাগারের জন্য গ্রীক ভাষায় অনূদিত পেন্টাটিওকের (অথবা তোরাহ্‌র) একটি প্রতিলিপি চেয়েছিলেন। তিনি ৭২ জন যিহূদী পণ্ডিত ব্যক্তিকে নিযুক্ত করেছিলেন যারা ইস্রায়েল থেকে মিশরে এসেছিলেন এবং ৭২ দিনে অনুবাদ করা শেষ করেছিলেন। এরপর এই অনুবাদ যিহূদী সমাজে পড়া হয়েছিল, যারা এটিকে চমৎকার ও যথার্থ বলে ঘোষণা করেছিলেন। এই বিবরণের পরের সংস্করণে কিছুটা অতিরঞ্জিত করে বলা হয়েছিল যে প্রত্যেক অনুবাদক আলাদা আলাদা কক্ষে বসে অনুবাদ করেছিলেন কিন্তু তাদের অনুবাদগুলি সম্পূর্ণ একরকম ছিল। এমনকি এর অক্ষরগুলিও একেবারে অভিন্ন ছিল। ৭২ জন অনুবাদকের কাহিনী প্রচলিত থাকায়, গ্রীক ভাষার এই বাইবেল অনুবাদটি সেপটুয়াজিন্ট হিসাবে পরিচিত হয়েছিল, যেটি একটি ল্যাটিন শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ “সত্তর।”

আধুনিক দিনের অধিকাংশ পণ্ডিত ব্যক্তিগণ একমত যে আরিস্টিয়াসের পত্র একটি অপ্রামাণিক রচনা। তারা এও বিশ্বাস করেন যে টলেমি দ্বিতীয় অনুবাদের উদ্যোক্তা ছিলেন না বরং আলেকজান্দ্রীয় যিহূদী সমাজের নেতারা ছিলেন এর প্রকৃত উদ্যোক্তা। কিন্তু আলেকজান্দ্রীয় যিহূদী দার্শনিক ফিলিও ও যিহূদী ইতিহাসবেত্তা যোসেফাসের রচনা এবং সেইসঙ্গে তালমুড দেখায় যে প্রথম-শতাব্দীর যিহূদীদের মধ্যে এক সর্বজনীন বিশ্বাস ছিল যে সেপটুয়াজিন্ট মূল শাস্ত্রাবলির মতই অনুপ্রাণিত। নিঃসন্দেহে, সেপটুয়াজিন্ট-কে পৃথিবী জুড়ে যিহূদী সম্প্রদায়ের অনুমোদনযোগ্য করে তোলার জন্য যে প্রচেষ্টা করা হয়েছিল তার ফলে এই বিশ্বাস গড়ে উঠেছিল।

যদিও প্রথমে কেবল মোশির পাঁচটি বইকে অনুবাদ করা হয়েছিল কিন্তু সেপটুয়াজিন্ট নামটি গ্রীক ভাষায় অনূদিত সম্পূর্ণ ইব্রীয় শাস্ত্রের জন্যই ব্যবহৃত হতে শুরু হয়। অবশিষ্ট বইগুলি পরবর্তী একশ বছর অথবা তার চেয়ে বেশি সময় ধরে অনুবাদ করা হয়েছিল। একসঙ্গে শেষ হওয়ার পরিবর্তে, সমগ্র সেপটুয়াজিন্ট-কে অনেক বছর ধরে ক্রমে ক্রমে সম্পূর্ণ করা হয়েছিল। অনুবাদকদের দক্ষতা এবং ইব্রীয় ভাষার জ্ঞান বিভিন্ন ছিল। অধিকাংশ বইগুলি আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়েছিল, কিছু কিছু একেবারেই আক্ষরিক ছিল আবার কতকগুলি ছিল কিছুটা সাবলীল। কয়েকটি বইয়ের দুটি সংস্করণ ছিল—একটি দীর্ঘ ও একটি সংক্ষিপ্ত। সা.কা.পূ. দ্বিতীয় শতাব্দীর শেষের মধ্যে ইব্রীয় শাস্ত্রের সবগুলি বই গ্রীক ভাষায় পাওয়া গিয়েছিল। অনুবাদে এই ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও, ইব্রীয় শাস্ত্রকে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করার ফলাফল, অনুবাদকদের আশাকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

শেমের তাঁবুতে যেফৎ?

সেপটুয়াজিন্ট সম্বন্ধে আলোচনা করতে গিয়ে, তালমুড আদিপুস্তক ৯:২৭ পদ উদ্ধৃতি করে: ‘যেফৎ . . . শেমের তাম্বুতে বাস করুক।’ (মেগিলাহ্‌ ৯খ, বাবিলনীয় তালমুড) তালমুড রূপকভাবে ইঙ্গিত করে যে সেপটুয়াজিন্ট এর গ্রীক ভাষার সৌন্দর্যের মধ্যে দিয়ে যেফৎ (যবনের পিতা, যার থেকে গ্রীক জাতির উদয় হয়েছিল) শেমের (ইস্রায়েল জাতির পূর্বপুরুষ) তাঁবুতে বাস করেছিলেন। কিন্তু, এটিও বলা যেতে পারে যে সেপটুয়াজিন্ট এর প্রভাবে শেম, যেফতের তাঁবুতে বাস করেছিলেন। কিভাবে?

মহান আলেকজান্ডারের বিভিন্ন দেশ জয়ের পর, সা.কা.পূ. চতুর্থ শতাব্দীর শেষের দিকে বিজিত দেশগুলিতে গ্রীক ভাষা ও সংস্কৃতি বিস্তার করার জন্য এক ঐকান্তিক প্রচেষ্টা করা হয়েছিল। এই কর্মপন্থাকে হেলেনাইজেশন বলা হতো। যিহূদীরা সবসময় সাংস্কৃতিক আক্রমণ ভোগ করে চলেছে বলে মনে করত। গ্রীক সংস্কৃতি ও দর্শনবিদ্যা যদি এভাবে চলতে থাকত, তবে যিহূদীদের মূল ধর্মই বিলুপ্ত হয়ে যেত। এই আক্রমণের প্রসারকে কী থামাতে পারত?

সেপটুয়াজিন্ট অনুবাদ করার পিছনে যিহূদীদের একটি সম্ভাব্য উদ্দেশ্য সম্বন্ধে, যিহূদী বাইবেল অনুবাদক ম্যাক্স মারগোলিস মন্তব্য করেন: “যদি আমরা ধরে নিই যে এই অনুবাদের পিছনে সমস্ত পরিকল্পনা যিহূদী সম্প্রদায়ের তবে এর মধ্যে আরেকটি উদ্দেশ্য জড়িয়ে যাবে। আর সেটি হল পরজাতীয় লোকেদের কাছে যিহূদী আইনকে প্রকাশ করা এবং বিশ্বকে এই বিষয়টি জানানো যে যিহূদীরা এমন একটি সংস্কৃতির অধিকারী যা হেলাসের [গ্রীসের] পাণ্ডিত্যের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে।” তাই বলা যায় যে গ্রীক-ভাষী জনসাধারণের কাছে ইব্রীয় শাস্ত্রাবলি পৌঁছানোর পিছনে হয়ত দুটি উদ্দশ্য ছিল—আত্মরক্ষা এবং প্রতি-আক্রমণ।

আলেকজান্ডারের হেলেনাইজেশন কর্মপন্থা, গ্রীককে বিশ্বের আন্তর্জাতিক ভাষায় পরিণত করেছিল। এমনকি রোমীয়রা যখন তার রাজ্যকে অধিকার করে নিয়েছিল তখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জাতির মধ্যে বাণিজ্য এবং যোগাযোগের ভাষা ছিল সাধারণ (অথবা কোয়িনি) গ্রীক। এটি অধ্যবসায়ী প্রচেষ্টা অথবা স্বাভাবিক অগ্রগতি যার ফলেই হোক না কেন, আগে যারা ঈশ্বর এবং যিহূদীদের আইন সম্বন্ধে জানতেন না এমন অনেক ন-যিহূদীরা খুব তাড়াতাড়ি ইব্রীয় শাস্ত্রের সেপটুয়াজিন্ট সংস্করণটি নিজেদের করে নিয়েছিলেন। আর এর ফলাফল ছিল চমকপ্রদ।

ধর্মান্তরিত এবং ঈশ্বর-ভয়শীল ব্যক্তিগণ

সা.কা. প্রথম শতাব্দীর মধ্যে, ফিলিও লিখতে পেরেছিলেন যে “আইনপ্রণয়নের ক্ষমতা সম্বন্ধে মোশির নিপুণতা ও মর্যাদা কেবল যিহূদীদের মধ্যেই নয় সেইসঙ্গে অন্য জাতির মধ্যেও সমাদৃত হয়েছিল।” প্রথম শতাব্দীতে প্যালেষ্টাইনের বাইরে বাসরত যিহূদীদের সম্পর্কে যিহূদী ইতিহাসবেত্তা যোসেফ ক্লৌসনার বলেন: “এটি বিশ্বাস করা কঠিন যে এই লক্ষ লক্ষ প্রবাসী যিহূদীরা কেবল ক্ষুদ্র প্যালেস্টাইন থেকে এসেছেন। আর যে কেউ স্বীকার করতে বাধ্য যে এই বহু সংখ্যক যিহূদীদের মধ্যে বৃহৎ সংখ্যক ধর্মান্তরিত পুরুষ ও নারীরা ছিলেন।”

কিন্তু এই প্রভাব-সৃষ্টিকারী বিষয়গুলি সম্পূর্ণ কাহিনী জানায় না। যিহূদী ইতিহাসের অধ্যাপক, গ্রন্থকার শা জে. ডি. কোহেন উল্লেখ করেন: “অনেক পরজাতি নারী ও পুরুষ সা.কা.পূ. শেষ শতাব্দী থেকে সা.কা. প্রথম দুই শতাব্দীর মধ্যে যিহূদী ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন। কিন্তু, আরও অসংখ্য পরজাতি ব্যক্তি ছিলেন যারা যিহূদী ধর্মের কিছু দিক গ্রহণ করেছিলেন কিন্তু ধর্মান্তরিত হননি।” ক্লৌসনার এবং কোহেন উভয়েই এই অধর্মান্তরিত ব্যক্তিদের ঈশ্বর-ভয়শীল বলে উল্লেখ করেন, যে অভিব্যক্তিটি সেই সময়ের গ্রীক সাহিত্যে প্রায়ই দেখা যেত।

ধর্মান্তরিত এবং একজন ঈশ্বর ভয়শীল ব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য কী? ধর্মান্তরিতেরা ছিলেন সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তিত ব্যক্তি যাদের সম্পূর্ণরূপে যিহূদী হিসাবে বিবেচনা করা হতো, কারণ তারা (অন্য দেবতাদের অস্বীকার করে) ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে গ্রহণ করেছিলেন, ত্বকচ্ছেদ করেছিলেন এবং ইস্রায়েল জাতিভুক্ত হয়েছিলেন। বিপরীতে, ঈশ্বর-ভয়শীল ব্যক্তিদের সম্বন্ধে কোহেন বলেন: “যদিও এই পরজাতিরা যিহূদীদের অনেক রীতিনীতি পালন করতেন এবং কোন না কোনভাবে যিহূদীদের ঈশ্বরকে শ্রদ্ধা করতেন, তবুও তারা নিজেদের যিহূদী বলে গণ্য করতেন না বা অন্যেরা তাদের যিহূদী হিসাবে দেখতেন না।” ক্লৌসনার তাদের “মাঝামাঝি অবস্থানে দাঁড়ানো,” বলে বর্ণনা করেন, কারণ তারা যিহূদী ধর্মকে গ্রহণ করেছিলেন এবং “এর কিছু কিছু প্রথা পালন করতেন কিন্তু . . . সম্পূর্ণরূপে যিহূদী হননি।”

মিশনারি কার্যে রত যিহূদীদের সঙ্গে আলোচনার ফলে অথবা তাদের আচরণ, প্রথা এবং ব্যবহারে ভিন্নতা দেখে হয়ত কেউ কেউ ঈশ্বরের প্রতি আগ্রহী হয়েছিলেন। কিন্তু, এই ঈশ্বর-ভয়শীল ব্যক্তিদের যিহোবা ঈশ্বরকে জানতে সাহায্য করার জন্য প্রধান মাধ্যম ছিল সেপটুয়াজিন্ট। যদিও প্রথম শতাব্দীর ঈশ্বর-ভয়শীল ব্যক্তিদের সঠিক সংখ্যা জানার কোন উপায় নেই, তবুও বলা যায় যে নিঃসন্দেহে সেপটুয়াজিন্ট সমগ্র রোমীয় সাম্রাজ্যে ঈশ্বর বিষয়ক জ্ঞান ছড়িয়ে দিয়েছিল। সেপটুয়াজিন্ট এর মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তিও স্থাপন করা হয়েছিল।

সেপটুয়াজিন্ট পথ প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছিল

খ্রীষ্টতত্ত্বের বার্তা প্রসারে সেপটুয়াজিন্ট সুস্পষ্টভাবে জড়িত ছিল। সা.কা. ৩৩ সালের পঞ্চাশত্তমীর দিনে খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীর প্রতিষ্ঠার সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক গ্রীক-ভাষী যিহূদী ছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে যারা খ্রীষ্টের শিষ্য হয়েছিলেন, তাদের মধ্যেও ধর্মান্তরিত ব্যক্তিগণ ছিলেন। (প্রেরিত ২:৫-১১; ৬:১-৬; ৮:২৬-৩৮) যেহেতু যীশুর প্রেরিত এবং অন্যান্য প্রাথমিক শিষ্যদের অনুপ্রাণিত রচনাগুলির উদ্দেশ্য ছিল যতজন পাঠকের কাছে সম্ভব পৌঁছে দেওয়া, তাই সেগুলি গ্রীক ভাষায় লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল।a তাই, খ্রীষ্টীয় গ্রীক শাস্ত্রে পাওয়া যায় ইব্রীয় শাস্ত্রের এমন অনেক উদ্ধৃতি সেপটুয়াজিন্ট এর উপর ভিত্তি করে ছিল।

সাধারণ যিহূদী ও ধর্মান্তরিত ব্যক্তিরা ছাড়াও অন্যান্য অনেকে রাজ্যের বার্তা গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। পরজাতীয় কর্ণীলিয় একজন “ভক্ত ছিলেন, এবং সমস্ত পরিবারের সহিত ঈশ্বরকে ভয় করিতেন, তিনি লোকদিগকে বিস্তর দান করিতেন, এবং সর্ব্বদা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করিতেন।” সা.কা. ৩৬ সালে, কর্ণীলিয়, তার পরিবার এবং অন্যান্য যারা তার গৃহে একত্রিত হয়েছিলেন তারাই ছিলেন প্রথম পরজাতীয়, যারা খ্রীষ্টের অনুসারী হিসাবে বাপ্তাইজিত হয়েছিলেন। (প্রেরিত ১০:১, ২, ২৪, ৪৪-৪৮. লূক ৭:২-১০ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) প্রেরিত পৌল যখন এশিয়া মাইনর এবং গ্রীসে যাত্রা করেছিলেন তখন তিনি অনেক পরজাতীয় ব্যক্তির কাছে প্রচার করেছিলেন যারা ইতিমধ্যেই ঈশ্বরকে ভয় করতেন এবং সেইসঙ্গে ‘ভক্ত গ্রীকেরাও’ ছিলেন। (প্রেরিত ১৩:১৬, ২৬; ১৭:৪) কর্ণীলিয় এবং সেই অন্যান্য পরজাতীয় ব্যক্তিরা সুসমাচার গ্রহণ করার জন্য কেন প্রস্তুত ছিলেন? সেপটুয়াজিন্ট সেই পথ প্রস্তুত করতে সাহায্য করেছিল। একজন পণ্ডিত ব্যক্তি অনুমান করেন যে সেপটুয়াজিন্ট “এত গুরুত্বপূর্ণ একটি বই যে এটি ছাড়া খ্রীষ্টীয়জগৎ ও পশ্চিমী সংস্কৃতি দুটিই অচিন্তনীয় বিষয়।”

সেপটুয়াজিন্ট এর “অনুপ্রেরণা” হারায়

সেপটুয়াজিন্ট এর ব্যাপক ব্যবহারের ফলে যিহূদীদের মধ্যে এক বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, খ্রীষ্টানদের সঙ্গে বিতর্কে যিহূদীরা দাবি করে যে সেপটুয়াজিন্ট ছিল একটি ভুল অনুবাদ। সা.কা. দ্বিতীয় শতাব্দীর মধ্যে, যিহূদী সম্প্রদায় সেই অনুবাদটিকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছিল, যেটি একসময় অনুপ্রাণিত বিবরণ হিসাবে প্রশংসিত হয়েছিল। রব্বিরা ৭২ জন অনুবাদকের কাহিনীকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন: “এটি তখন ঘটেছিল যখন পাঁচ জন প্রাচীন রাজা টলেমির জন্য তোরাহ্‌কে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন এবং সেই দিনটি ইস্রায়েলের জন্য সোনার গোবৎস নির্মাণের দিনের মত অশুভ ছিল, যেহেতু তোরাহ্‌কে যথার্থভাবে অনুবাদ করা যায়নি।” তাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রব্বিরা গ্রীক ভাষায় একটি নতুন অনুবাদের অনুমতি দিয়েছিলেন। এটি সা.কা. দ্বিতীয় শতাব্দীতে আক্কিলা নামের একজন যিহূদী ধর্মান্তরিত ব্যক্তির দ্বারা সম্পাদিত হয়েছিল, যিনি রব্বি আকিবার একজন শিষ্য ছিলেন।

যিহূদীদের দ্বারা সেপটুয়াজিন্ট এর ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু নবগঠিত ক্যাথলিক গির্জার কাছে এটি আদর্শ “পুরাতন নিয়ম” হিসাবে ছিল যতদিন পর্যন্ত না যেরমের ল্যাটিন ভালগেট এসে এর স্থান নেয়। একটি অনুবাদ যদিও কখনও মূল পুস্তকের স্থান নিতে পারে না কিন্তু যিহোবা ঈশ্বর এবং যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে তাঁর রাজ্য বিষয়ক জ্ঞান বিস্তারে সেপটুয়াজিন্ট এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। বাস্তবিকই, সেপটুয়াজিন্ট হল বাইবেলের এমন একটি অনুবাদ যা বিশ্বকে বদলে দিয়েছিল।

[পাদটীকাগুলো]

a মথির সুসমাচার প্রথমে হয়ত ইব্রীয় ভাষায় লেখা হয়েছিল, পরে এটিকে গ্রীক ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল।

[৩১ পৃষ্ঠার চিত্র]

পৌল যে লোকেদের কাছে প্রচার করেছিলেন তাদের অনেকে “সেপটুয়াজিন্ট” বুঝেছিলেন

[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Courtesy of Israel Antiquities Authority

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার