ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w৯৯ ৯/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১১
  • কেন আপনার প্রতিজ্ঞা রাখবেন?

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • কেন আপনার প্রতিজ্ঞা রাখবেন?
  • ১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করেন
  • যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলো এবং আমাদের ভবিষ্যৎ
  • ঈশ্বরের কাছে করা আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলো রাখা
  • আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলো রাখা বিশ্বাস গড়ে তোলে
  • প্রতিজ্ঞা রাখার অন্যান্য দিকগুলো
  • ঈশ্বরের কাছ থেকে অনেক আশীর্বাদ
  • কার প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন?
    ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যে-প্রতিজ্ঞাগুলোর ওপর আপনি নির্ভর করতে পারেন
    ২০০৪ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি আপনার প্রতিজ্ঞাগুলো রাখেন?
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০১৭
  • যিহোবা সবসময় তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পূরণ করেন
    আমাদের খ্রিস্টীয় জীবন ও পরিচর্যা—সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা ২০২০
আরও দেখুন
১৯৯৯ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w৯৯ ৯/১৫ পৃষ্ঠা ৮-১১

কেন আপনার প্রতিজ্ঞা রাখবেন?

রাষ্ট্রপতির প্রয়াত উপদেষ্টা বার্নাড বারাক বলেছিলেন, “যিনি অল্প প্রতিজ্ঞা করেন তাকে ভোট দিন; তিনি আপনাকে কম হতাশ করবেন।” আজকের জগতে মনে হয় যেন প্রতিজ্ঞা শুধু না রাখার জন্যই করা হয়। আর এই প্রতিজ্ঞা বিবাহের অঙ্গীকারই হোক, ব্যাবসায়িক চুক্তিই হোক অথবা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানোর ব্যাপারই হোক না কেন। “প্রতিশ্রুতি রাখাই একজন ব্যক্তির পরিচয় দেয়” আজকে এই সাধারণ নীতিটার মানে কী তার প্রতি কারও কোন ভ্রূক্ষেপ নেই।

আর বেশির ভাগ লোকই তাদের প্রতিজ্ঞাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন না। কিছু লোকেরা প্রায়ই না ভেবেচিন্তে এমন প্রতিজ্ঞা করে বসেন যা রাখা তাদের পক্ষে কখনও সম্ভব নয় বা তারা তা রাখেন না কারণ তা রাখার চেয়ে বরং না রাখাটাই আরও বেশি সহজ।

এটা ঠিক যে হঠাৎ যদি কোন অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়, তাহলে প্রতিজ্ঞা রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু যাই হোক না কেন প্রতিজ্ঞা না রাখলে কী সত্যিই কোন বড় ক্ষতি হয়? আপনি কী আপনার প্রতিজ্ঞাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেন? এই বিষয়ে যদি আমরা যিহোবা ঈশ্বরের উদাহরণের দিকে একটু নজর দিই, তাহলে আমরা বুঝতে পারব যে কেন আমরা এই বিষয়টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেব।

যিহোবা তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করেন

আমরা এমন ঈশ্বরের উপাসনা করি যাঁর নামের অর্থই বলে দেয় যে তিনি তাঁর প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করেন। বাইবেলে বলা বেশির ভাগ ব্যক্তিদের নাম প্রায়ই তাদের সম্বন্ধে বর্ণনা করে। আর এই বিষয়টা যিহোবার নামের জন্যও সত্যি যার অর্থ “তিনি অস্তিত্বে আনেন।” এভাবেই ঈশ্বরের নাম এই ধারণা দেয় যে তিনি তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করবেন এবং তাঁর সমস্ত উদ্দেশ্য সম্পন্ন করবেন।

যিহোবা সব সময় তাঁর নামের সঙ্গে মিল রেখে কাজ করেছেন। প্রাচীন ইস্রায়েল জাতির কাছে তিনি যে প্রতিজ্ঞাগুলো করেছিলেন তার সমস্তই তিনি পূর্ণ করেছিলেন। এই প্রতিজ্ঞার বিষয়ে রাজা শলোমন বলেছিলেন, “ধন্য সদাপ্রভু, যিনি আপনার সকল প্রতিজ্ঞানুসারে আপন প্রজা ইস্রায়েলকে বিশ্রাম দিয়াছেন; তিনি আপন দাস মোশির দ্বারা যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলেন, সেই উত্তম প্রতিজ্ঞার একটী কথাও পতিত হয় নাই।”—১ রাজাবলি ৮:৫৬.

যিহোবা যে কতখানি নির্ভরযোগ্য তা বলতে গিয়ে প্রেরিত পৌল যুক্তি দেখিয়েছিলেন “ঈশ্বর যখন অব্রাহামের নিকটে প্রতিজ্ঞা করিলেন, তখন মহত্তর কোন ব্যক্তির নামে শপথ করিতে না পারাতে নিজের নামে শপথ করিলেন।” (ইব্রীয় ৬:১৩) হ্যাঁ, যিহোবার নাম এবং ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে জেনে আমরা এই নিশ্চয়তা পাই যে তিনি কখনও তার প্রতিজ্ঞা অপূর্ণ রাখবেন না, এমনকি এর জন্য যদি তাঁকে চরম মূল্যও দিতে হয়। (রোমীয় ৮:৩২) তাই যিহোবা যে তাঁর প্রতিজ্ঞা রাখেন তা আমাদের আশা দেয় যে তিনি আমাদের প্রাণের অথবা আমাদের জীবনের নঙ্গরস্বরূপ।—ইব্রীয় ৬:১৯.

যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলো এবং আমাদের ভবিষ্যৎ

আমাদের আশা, বিশ্বাস এবং আমাদের জীবন সমস্ত কিছুই পুরোপুরি যিহোবার প্রতিজ্ঞা রাখার ওপর নির্ভর করে। আমরা কোন্‌ আশা রাখতে পারি? “[ঈশ্বরের] প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমরা এমন নূতন আকাশমণ্ডলের ও নূতন পৃথিবীর অপেক্ষায় আছি, যাহার মধ্যে ধার্ম্মিকতা বসতি করে।” (২ পিতর ৩:১৩) এছাড়াও বাইবেল আমাদের বিশ্বাসের ভিত্তি জোগায় যে “ধার্ম্মিক অধার্ম্মিক উভয় প্রকার লোকের পুনরুত্থান হইবে।” (প্রেরিত ২৪:১৫) আর আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে সেই জগতে আমরা এখনকার চেয়ে আরও ভাল জীবন পাব। প্রেরিত যোহন বলেছিলেন যে যিহোবা আমাদের “অনন্ত জীবন” দেওয়ার “প্রতিজ্ঞা” করেছেন। (১ যোহন ২:২৫) কিন্তু বাইবেলে বলা যিহোবার প্রতিজ্ঞাগুলো যে শুধু ভবিষ্যতের জন্যই তা নয়। বরং এগুলো এখনই আমাদের প্রতিদিনের জীবনে অর্থ রাখে।

গীতরচক গেয়েছিলেন: ‘সদাপ্রভু সেই সকলেরই নিকটবর্ত্তী, যাহারা তাঁহাকে ডাকে, . . . আর তাহাদের আর্ত্তনাদ শুনিবেন।’ (গীতসংহিতা ১৪৫:১৮, ১৯) এছাড়াও যিহোবা নিজে আমাদের নিশ্চয়তা দেন যে “তিনি ক্লান্ত ব্যক্তিকে শক্তি দেন, ও শক্তিহীন লোকের বল বৃদ্ধি করেন।” (যিশাইয় ৪০:২৯) আর এটা জেনে আমরা কতই না সান্ত্বনা পাই যে ‘ঈশ্বর আমাদের প্রতি আমাদের শক্তির অতিরিক্ত পরীক্ষা ঘটিতে দিবেন না, বরং পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে রক্ষার পথও করিয়া দিবেন’! (১ করিন্থীয় ১০:১৩) আপনি নিজে যদি আপনার জীবনে কখনও এই প্রতিজ্ঞাগুলোর যে কোন একটাকে পূর্ণ হতে দেখেন, তাহলে আপনি জানেন যে যিহোবার ওপর কতখানি আস্থা রাখা যায়। এভাবে আমাদের মঙ্গলের জন্য ঈশ্বর যখন প্রতিজ্ঞাগুলো করেন এবং রাখেন তা মনে রেখে যিহোবার কাছে করা আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলোকে আমাদের কোন্‌ দৃষ্টিতে দেখা উচিত?

ঈশ্বরের কাছে করা আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলো রাখা

কোন সন্দেহ নেই যে যেদিন আমরা ঈশ্বরের কাছে নিজেদের উৎসর্গ করি সেইদিন আমরা আমাদের জীবনে সবচেয়ে বড় প্রতিজ্ঞা করি। এই পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে আমরা যিহোবাকে বলি যে আমরা সবসময় তাঁর সেবা করতে চাই। যদিও ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো দুর্বহ নয় কিন্তু এই দুষ্ট জগতের মধ্যে থেকে তাঁর ইচ্ছা পালন করা সবসময় খুব সহজও নয়। (২ তীমথিয় ৩:১২; ১ যোহন ৫:৩) কিন্তু একবার যদি আমরা ‘লাঙ্গলে আমাদের হাত’ দিই অর্থাৎ যিহোবার কাছে নিজেকে উৎসর্গ করে তাঁর পুত্র যীশু খ্রীষ্টের শিষ্য হই তখন আমাদের পিছন ফিরে ফেলে আসা জগতের দিকে আর তাকান উচিত নয়।—লূক ৯:৬২.

আমরা হয়তো যিহোবার কাছে প্রার্থনায় প্রতিজ্ঞা করেছি যে আমরা দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য লড়াই করব, খ্রীষ্টীয় গুণাবলি উৎপন্ন করব অথবা আমরা ঈশ্বরের সেবায় আরও উন্নতি করব। এই প্রতিজ্ঞাগুলো পূর্ণ করতে কোন্‌ বিষয়টা আমাদেরকে সাহায্য করবে?—উপদেশক ৫:২-৫ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।

যে প্রতিজ্ঞাগুলো অন্তর থেকে ও ভেবেচিন্তে করা হয় সেগুলোই সত্যিকারের প্রতিজ্ঞা। আমাদের প্রতিজ্ঞা যদি সত্যি হয়, তাহলে আমরা প্রার্থনায় যিহোবার কাছে হৃদয় থেকে মন খুলে আমাদের ভয়, ইচ্ছা এবং দুর্বলতাগুলো বলব। প্রতিজ্ঞার বিষয়ে প্রার্থনা করলে আমাদের প্রতিজ্ঞা রাখার ইচ্ছা আরও শক্তিশালী হবে। ঈশ্বরের কাছে যখন আমরা প্রতিজ্ঞা করি তখন সেটা এমন যেন আমরা যিহোবার কাছ থেকে ঋণ নিয়েছি। ঋণের পরিমাণ যখন বেড়ে যায় তখন তা অল্প অল্প করে শোধ করতে অনেক সময় লাগে। একইভাবে, যিহোবার কাছে আমরা যে অনেক প্রতিজ্ঞা করেছি তা পূর্ণ করার জন্য সময়ের প্রয়োজন। কিন্তু যখন আমরা আমাদের সাধ্যমত প্রতিজ্ঞা রাখার চেষ্টা করি তখন আমরা দেখাই যে আমরা অন্তর থেকে প্রতিজ্ঞা করেছি আর তিনিও আমাদেরকে প্রতিজ্ঞা রাখার জন্য আশীর্বাদ করেন।

সবসময় বা প্রতিদিন আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলোর জন্য প্রার্থনা করে আমরা দেখাই যে আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলোকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি। এটা করে আমরা আমাদের স্বর্গীয় পিতাকে দেখাই যে আমরা অন্তর থেকে প্রতিজ্ঞা করেছি। এছাড়াও প্রতিদিন প্রার্থনা করলে আমাদের মনে থাকবে যে আমাদের প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করা দরকার। এই বিষয়ে দায়ূদ আমাদের জন্য এক উত্তম উদাহরণ রেখেছেন। তার গানে তিনি যিহোবার কাছে অন্তর থেকে অনুরোধ করেছেন, “হে ঈশ্বর, আমার কাকূক্তি শ্রবণ কর, আমার প্রার্থনায় অবধান কর। . . . আমি চিরকাল তোমার নামের প্রশংসা গাহিব, দিন দিন আপন মানত পূর্ণ করিব।”—গীতসংহিতা ৬১:১, ৮.

আমাদের প্রতিজ্ঞাগুলো রাখা বিশ্বাস গড়ে তোলে

ঈশ্বরের কাছে করা প্রতিজ্ঞাকে যেমন আমরা হালকাভাবে নেব না তেমনই আমাদের খ্রীষ্টান ভাইবোনদের বেলায়ও করা উচিত। আমাদের যিহোবার সঙ্গে এক রকম এবং আমাদের ভাইয়েদের সঙ্গে আরেক রকম ব্যবহার করা উচিত নয়। (১ যোহন ৪:২০ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) পর্বতে দত্ত উপদেশে যীশু বলেছিলেন: “তোমাদের কথা হাঁ, হাঁ, না, না, হউক।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (মথি ৫:৩৭) আমাদের বলা হয়েছে যে, ‘যাহারা বিশ্বাস বাটির পরিজন, তাহাদের প্রতি সৎকর্ম্ম কর’ আর তা করার একটা উপায় হল, তাদের কাছে করা আমাদের প্রতিজ্ঞা রাখা। (গালাতীয় ৬:১০) আমরা যখন আমাদের প্রতিজ্ঞা রাখি তখন আমাদের ওপর তাদের বিশ্বাস গড়ে ওঠে।

প্রতিজ্ঞা না রাখা বিরাট ক্ষতি নিয়ে আসতে পারে বিশেষ করে যখন এর সঙ্গে টাকার বিষয় জড়িত থাকে। দেনা শোধ করাই হোক, মজুরি দেওয়ার ব্যাপারেই হোক অথবা ব্যাবসায়িক চুক্তির জন্যই হোক একজন খ্রীষ্টান যে প্রতিজ্ঞা করেন তা তার অবশ্যই রাখা উচিত। কারণ তা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে এবং ভাইবোনদের মধ্যে বিশ্বাস গড়ে তোলে যা “ভ্রাতারা একসঙ্গে ঐক্যে বাস” করার জন্য খুবই জরুরি।—গীতসংহিতা ১৩৩:১.

চুক্তি ভেঙে দেওয়া শুধু যে ভাই জড়িত আছেন তারই নয় কিন্তু পুরো মণ্ডলীর জন্য ক্ষতি নিয়ে আসে। একজন ভ্রমণ অধ্যক্ষ বলেন “ব্যাবসায়িক ঝগড়া বেশির ভাগ সময়ই পুরো মণ্ডলীতে ফাটল ধরায়। বিশেষ করে যদি একজন ভাই মনে করেন যে অন্য এক ভাই তাকে ধোঁকা দিচ্ছেন, সেই কথা সব ভাইবোনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ভাইয়েরা কোন একটা পক্ষ নিতে শুরু করেন এবং মণ্ডলীর অবস্থা তখন ভীষণ খারাপ হয়ে পড়ে। তাই এটা কতই না জরুরি যে আমরা যে কোন চুক্তি ভেবেচিন্তে করি এবং বিষয়টা লিখিত রাখি!a

যখন আমরা কোন দামি জিনিস বিক্রি করি অথবা কোন বিনিয়োগের জন্য পরামর্শ দিই তখন আমাদের সাবধান হওয়া দরকার, বিশেষ করে যদি এই লেনদেন থেকে আমাদের নিজেদের লাভ হয়ে থাকে। একইভাবে কোন জিনিস বা কোন বিনিয়োগ থেকে পাওয়া লাভের ব্যাপারে অতিরিক্ত রঙ চড়িয়ে বলা উচিত নয়। আমরা যদি আমাদের ভাইদের প্রেম করি, তাহলে আমরা তাদের লেনদেনে যে ঝুঁকিগুলো আছে সেগুলোও জানিয়ে দেব। (রোমীয় ১২:১০) যেহেতু অধিকাংশ ভাইদেরই ব্যাবসা সম্বন্ধে খুব কমই ধারণা রয়েছে তাই তারা পুরোপুরিভাবে আমাদের কথায় বিশ্বাস করেন কারণ আমরা সকলেই একই বিশ্বাসে বিশ্বাসী ভাই। সেইজন্য আমরা যদি তাদের বিশ্বাস ভেঙে দিই, তাহলে তা কতই না দুঃখজনক হবে!

যেহেতু আমরা খ্রীষ্টান তাই আমরা কখনই ব্যাবসায় অসৎ হব না অথবা অন্যদের লোকসান করে দেওয়ার চেষ্টা করব না। (ইফিষীয় ২:২, ৩; ইব্রীয় ১৩:১৮) যিহোবার ‘তাম্বুতে [অথিতি]’ হয়ে চিরকাল থাকতে চাইলে ও তাঁকে খুশি করতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে। ‘এমনকি দিব্য করিয়া আমাদের ক্ষতি হইলেও আমরা তাহা অন্যথা করিব না।’—গীতসংহিতা ১৫:১, ৪.

ইস্রায়েলের বিচারক যিপ্তহ অঙ্গীকার করেছিলেন যে অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে ঈশ্বর যদি তাকে জয়ী করেন, তাহলে যুদ্ধ থেকে ফিরে আসার পর যে তার সঙ্গে প্রথমে দেখা করতে আসবেন তাকে তিনি যিহোবার উদ্দেশে হোমবলিরূপে উৎসর্গ করবেন। আর যুদ্ধ থেকে ফিরে যিপ্তহ যাকে দেখেছিলেন সে ছিল তার একমাত্র মেয়ে কিন্তু যিপ্তহ তার কথার পরিবর্তন করেননি। তার মেয়েও তার প্রতিজ্ঞাকে রাখার জন্য তৈরি ছিল। তিনি তাকে ঈশ্বরের মন্দিরে চিরকাল সেবা করার জন্য উৎসর্গ করেন। আর এই ত্যাগ খুবই বেদনাদায়ক ছিল ও তাকে এর জন্য অনেকখানি মূল্য দিতে হয়েছিল।—বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ ১১:৩০-৪০.

বিশেষ করে মণ্ডলীর অধ্যক্ষদের কথা রাখার ব্যাপারে খুব দৃঢ় হওয়া দরকার। ১ তীমথিয় ৩:২ পদ অনুসারে একজন অধ্যক্ষের “অনিন্দনীয়” হওয়া উচিত। এটা যে গ্রিক শব্দ থেকে অনুবাদ করা হয়েছে তার অর্থ “তার বিরুদ্ধে কোন দোষ দেওয়া যাবে না, তার সুনাম থাকবে এবং তিনি সমস্ত সমালোচনার উর্ধে।” এটা “শুধু এমন নয় যে সেই ব্যক্তির সুখ্যাতি রয়েছে কিন্তু তিনি সত্যিই সুনামের যোগ্য।” (এ লিঙ্গুইস্‌টিক কী টু দ্যা গ্রিক নিউ টেস্টামেন্ট) তাই একজন অধ্যক্ষকে অনিন্দনীয় হওয়ার জন্য সবসময়ই তার প্রতিজ্ঞায় বিশ্বাসযোগ্য হতে হবে।

প্রতিজ্ঞা রাখার অন্যান্য দিকগুলো

বাইরের লোকেদের কাছে প্রতিজ্ঞা করলে সেটাকে আমরা কোন্‌ দৃষ্টিতে দেখব? যীশু বলেছিলেন, “তোমাদের দীপ্তি মনুষ্যদের সাক্ষাতে উজ্জ্বল হউক, যেন তাহারা তোমাদের সৎক্রিয়া দেখিয়া তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার গৌরব করে।” (মথি ৫:১৬) আমরা যে আমাদের কথা রাখি তার প্রমাণ পেয়ে অন্যেরা হয়তো আমাদের খ্রীষ্টীয় বার্তার প্রতি আগ্রহী হতে পারেন। আজকের পৃথিবীতে যদিও প্রতিজ্ঞা না রাখাটা খুবই সাধারণ ব্যাপার, তবুও লোকেরা এখনও সততাকে মূল্য দেন। আমরা আমাদের প্রতিজ্ঞা রেখে দেখাই যে ঈশ্বরকে ও আমাদের প্রতিবেশীদের আমরা প্রেম করি এবং এইভাবে আমরা আগ্রহী ব্যক্তিদেরকে সত্যের প্রতি আকৃষ্ট করতে পারি।—মথি ২২:৩৬; রোমীয় ১৫:২.

১৯৯৮ সালের পরিচর্যা বছরে যিহোবার সাক্ষিরা ঈশ্বরের রাজ্যের বার্তা জনসাধারণ্যে ঘোষণা করার জন্য ১০০ কোটিরও বেশি ঘন্টা ব্যয় করছে। (মথি ২৪:১৪) আমরা যদি ব্যাবসা অথবা অন্যান্য বিষয়ে কথা না রাখি, তাহলে হয়তো কেউ কেউ আমাদের এই প্রচারকে অগ্রাহ্য করতে পারেন। যেহেতু আমরা সত্য ঈশ্বরের সেবক তাই লোকেরা যে আমাদের কাছ থেকে সততা আশা করবে এটা একেবারেই অন্যায় নয়। বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সততা দেখিয়ে আমরা ‘আমাদের ত্রাণকর্ত্তা ঈশ্বরের শিক্ষা সর্ব্ববিষয়ে ভূষিত করি।’—তীত ২:১০.

আমাদের প্রচারে যখন কেউ রাজ্যের বার্তার প্রতি আগ্রহ দেখান তখন তাদের কাছে আবার ফিরে গিয়ে আমাদের কথা রাখার সুযোগ রয়েছে। আমরা যদি কথা দিই যে আমরা আবার ফিরে আসব, তাহলে আমাদের তা করা উচিত। ফিরে গিয়ে আমরা দেখাই যে আমরা ‘যাহাদের মঙ্গল করা উচিত, তাহাদের মঙ্গল করিতে অস্বীকার করি না।’ (হিতোপদেশ ৩:২৭) একজন বোন এভাবে বলেছিলেন যে “প্রচারে লোকেরা আমাকে অনেকবার বলেছে, সাক্ষিরা বলেন যে তারা আবার ফিরে আসবেন কিন্তু পরে আর আসেন না। আমি জানি যে হয়তো তারা পরে গিয়ে গৃহকর্তাকে ঘরে পাননি অথবা হয়তো এমন কোন পরিস্থিতি হয়েছিল যে কারণে তারা আর ফিরে যেতে পারেননি। কিন্তু আমি আমার সম্বন্ধে কাউকে এধরনের কথা বলতে দিতে চাই না তাই আমি যাকে কথা দিই তার সঙ্গে দেখা করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। আমার মনে হয় যে আমি যদি কাউকে নিরাশ করি, তাহলে তা যিহোবা এবং আমাদের ভাইবোনদের ওপর বদনাম নিয়ে আসবে।”

কখনও কখনও আমরা ফিরে যেতে চাই না কারণ আমরা হয়তো মনে করি যে সেই ব্যক্তি হয়তো আগ্রহী নয়। সেই বোন বলেছিলেন: “কার কতটুকু আগ্রহ আছে আমি তা দেখতে যাই না কারণ আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি যে প্রথম সাক্ষাতে আমরা লোকেদের সম্বন্ধে যে ধারণা করি তা প্রায়ই ঠিক হয় না। তাই আমি সবসময় এই আশা নিয়ে তাদের কাছে যাই যে একদিন তারা হয়তো আমার ভাই অথবা বোন হতে পারেন।”

খ্রীষ্টীয় পরিচর্যা এবং আরও অন্যান্য ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিজ্ঞা রাখা দরকার। এটা সত্যি যে কিছু কিছু বিষয় বলা খুবই সহজ কিন্তু করাটা কঠিন। জ্ঞানী ব্যক্তি বলেছিলেন: “অনেক লোক স্ব স্ব সাধুতার কীর্ত্তন করে, কিন্তু বিশ্বস্ত লোক কে খুঁজিয়া পাইতে পারে?” (হিতোপদেশ ২০:৬) কিন্তু আমাদের যদি দৃঢ় ইচ্ছা থাকে, তাহলে আমরা আমাদের কথা রাখতে পারব।

ঈশ্বরের কাছ থেকে অনেক আশীর্বাদ

ভেবে দেখুন যে মিথ্যা প্রতিজ্ঞা করা হল প্রতারণা করা। এটা এমন যেন ব্যাংকে আমাদের কোন টাকা নেই কিন্তু আমরা চেক লিখে দিচ্ছি। কিন্তু প্রতিজ্ঞা রাখলে কত পুরস্কার ও আশীর্বাদই না আমরা পাব! একটা বড় আশীর্বাদ হল আমাদের শুদ্ধ বিবেক থাকবে। (প্রেরিত ২৪:১৬ পদের সঙ্গে তুলনা করুন।) আমাদের বিবেকের দংশন ভোগ করতে হবে না বরং আমরা সন্তুষ্টি এবং শান্তি পাব। এছাড়াও আমাদের কথা রেখে আমরা একে অন্যের বিশ্বাস লাভ করব আর তার ফলে মণ্ডলীতে একতা বাড়বে। আমাদের ‘সত্যের বাক্য’ সত্য ঈশ্বরের সেবক হিসেবে আমাদের পরিচয় দেবে।—২ করিন্থীয় ৬:৩, ৪, ৭.

যিহোবা সবসময় তাঁর প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেন তাই তিনি “মিথ্যাবাদী জিহ্বা” ঘৃণা করেন। (হিতোপদেশ ৬:১৬, ১৭) আমরা যদি আমাদের স্বর্গীয় পিতার মতো আমাদের প্রতিজ্ঞা রাখি, তাহলে আমরা যিহোবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে উঠতে পারব। তাই আমাদের জন্য প্রতিজ্ঞা রাখা খুবই জরুরি।

[পাদটীকাগুলো]

a ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারি ৮, সচেতন থাক! (ইংরেজি) পত্রিকার ১৩-১৫ পৃষ্ঠার “লিখিত রাখুন” নামক প্রবন্ধ দেখুন।

[১০ পৃষ্ঠার চিত্র]

যিপ্তহ তার প্রতিজ্ঞা রেখেছিলেন, এমনকি যদিও তা করা খুবই বেদনাদায়ক ছিল

[১১ পৃষ্ঠার চিত্র]

আপনি যদি প্রচারে কারও কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য কথা দেন, তাহলে তা রাখার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করুন

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার