ওয়াচটাওয়ার অনলাইন লাইব্রেরি
ওয়াচটাওয়ার
অনলাইন লাইব্রেরি
বাংলা
  • বাইবেল
  • প্রকাশনাদি
  • সভা
  • w০০ ২/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭
  • বিপদজনক এলাকা থেকে সরে পড়ুন!

এই বাছাইয়ের সঙ্গে কোনো ভিডিও প্রাপ্তিসাধ্য নেই।

দুঃখিত, ভিডিওটা চালানো সম্বভব হচ্ছে না।

  • বিপদজনক এলাকা থেকে সরে পড়ুন!
  • ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • উপশিরোনাম
  • অনুরূপ বিষয়বস্ত‌ু
  • যিহোবার ভয়ানক দিন
  • এখনই আশ্রয় নিন
  • একবার যদি সরে আসেন, তাহলে সেখানে আর যাবেন না
  • সাবধানবাণীতে কান দিন!
    ২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • “সঙ্কটের কাল” থেকে কে রক্ষা পাবে?
    ১৯৯২ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • আপনি কি যিহোবার দিনের জন্য প্রস্তুত?
    ১৯৯৭ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
  • যিহোবার দিনের আকাঙ্ক্ষা করুন
    একমাত্র সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করুন
আরও দেখুন
২০০০ প্রহরীদুর্গ যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে
w০০ ২/১৫ পৃষ্ঠা ৪-৭

বিপদজনক এলাকা থেকে সরে পড়ুন!

আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞদের কাজ হল আগ্নেয়গিরির ওপর নজর রাখা ও অগ্ন্যুৎপাতের কোন লক্ষণ বা চিহ্ন দেখা দিলেই সে বিষয়ে লোকেদের আগে থেকে সাবধান করা। (ফুগেন পর্বতে অগ্ন্যুৎপাত হওয়ার সময় পুলিশের দায়িত্ব ছিল, তারা যেন লোকেদেরকে সেই বিপদজনক এলাকা থেকে সরিয়ে দেন।) একইভাবে, বাইবেল ছাত্ররাও “যুগান্তের [এই বিধিব্যবস্থার শেষের]” চিহ্ন দেখেছেন আর তাই তারা অন্যদেরকে এই বিপদ সম্বন্ধে সাবধান করেন।—মথি ২৪:৩.

বাইবেলে মথি পুস্তকের যে অধ্যায় সারা পৃথিবীতে আসতে চলা দুর্যোগ সম্বন্ধে সাবধান করে, সেই অধ্যায়েই আগে লেখা আছে যে কীভাবে এই দুর্যোগ শুরু হবে: “জাতির বিপক্ষে জাতি ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে, এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে। . . . আর অনেক ভাক্ত ভাববাদী উঠিয়া অনেককে ভুলাইবে। আর অধর্ম্মের বৃদ্ধি হওয়াতে অধিকাংশ লোকের প্রেম শীতল হইয়া যাইবে। . . . আর সর্ব্ব জাতির কাছে সাক্ষ্য দিবার নিমিত্ত রাজ্যের এই সুসমাচার সমুদয় জগতে প্রচার করা যাইবে; আর তখন শেষ উপস্থিত হইবে।”—মথি ২৪:৭-১৪.

এই ভবিষ্যদ্বাণী কীভাবে পূর্ণ হচ্ছে তা বোঝার জন্য আমাদের খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখার দরকার নেই। কারণ ১৯১৪ সাল থেকেই আমরা সেগুলোকে পূর্ণ হতে দেখে আসছি। এই শতাব্দীতে দুটো বিশ্বযুদ্ধ হওয়া ছাড়াও অনেক অনেক গৃহযুদ্ধ, ছোটখাটো যুদ্ধ এবং সেইসঙ্গে জাতি ও ধর্ম নিয়ে লড়াই লেগেই আছে। এই যুদ্ধগুলো আর সেইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে লোকেরা খাদ্যের অভাবে ভুগেছে। ভূমিকম্পে অনেক অনেক লোক মারা গেছে। এই শতাব্দীতেই এমন অনেক দল গড়ে উঠেছে যাদের গুরুরা প্রতারক কিন্তু তবুও হাজার হাজার লোকেরা অন্ধভাবে তাদের পিছনে ছুটছে। “অধর্ম্মের বৃদ্ধি হওয়াতে” লোকেরা ভালবাসা দেখাতে ভুলে গেছে আর ঘরে বাইরে কারোর প্রতি লোকেদের আর কোন ভালবাসা, মায়া, মমতা কিছুই নেই।

এছাড়া আরেকটা চিহ্নকেও আমরা পূর্ণ হতে দেখছি আর তা হল সারা পৃথিবীতে হয়ে চলা প্রচার কাজ। আপনি যদি এই পত্রিকার প্রচ্ছদ পৃষ্ঠায় যান, তাহলে সেখানে এই পত্রিকার নামের নিচে আপনি এই কথাগুলো দেখতে পাবেন, “যিহোবার রাজ্য ঘোষণা করে।” এই প্রহরীদুর্গ পত্রিকা ১৩২টা ভাষায় ছাপানো হয় এবং ২ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি পত্রিকা বিতরণ করা হয় আর যারা সারা পৃথিবীতে “রাজ্যের সুসমাচার” প্রচার করেন তাদের জন্য এটাই হল মূল হাতিয়ার। এই সুসমাচার হল এই যে পৃথিবীর সৃষ্টিকর্তা যিহোবা ঈশ্বর স্বর্গে তাঁর রাজ্য স্থাপন করেছেন আর এই রাজ্য খুব শীঘ্রিই এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে সারা পৃথিবীতে পরমদেশ নিয়ে আসবে। সত্যিই সেই চিহ্নগুলো এখন দেখা যাচ্ছে যা থেকে বোঝা যায় যে ঈশ্বর খুব শীঘ্রি দুষ্ট বিধিব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য কাজ করবেন। আর তা দেখায় যে এই বিধিব্যবস্থায় লোকেদের জীবন বিপদের মধ্যে রয়েছে।—২ তীমথিয় ৩:১-৫; ২ পিতর ৩:৩, ৪; প্রকাশিত বাক্য ৬:১-৮ পদগুলোর সঙ্গে তুলনা করুন।

যিহোবার ভয়ানক দিন

যিহোবার বিচারের দিন যখন চলে আসবে তখন কী হবে? এ বিষয়ে যিহোবার নিজের কথাই শুনুন যা একেবারে স্পষ্টভাবে জানায়: “আর আমি আকাশে ও পৃথিবীতে অদ্ভুত লক্ষণ দেখাইব,—রক্ত, অগ্নি ও ধূমস্তম্ভ দেখাইব। সদাপ্রভুর ঐ মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিনের আগমনের পূর্ব্বে সূর্য্য অন্ধকার ও চন্দ্র রক্ত হইয়া যাইবে।”—যোয়েল ২:৩০, ৩১.

হ্যাঁ, যিহোবার দিন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত অথবা ভূমিকম্পের চেয়ে আরও বেশি ভয়ানক এবং ধ্বংসাত্মক হবে। ভাববাদী সফনিয় বলেন: “সদাপ্রভুর মহাদিন নিকটবর্ত্তী, তাহা নিকটবর্ত্তী, অতি শীঘ্র আসিতেছে; . . . তাঁহার অন্তর্জ্বালার তাপে সমস্ত দেশ অগ্নি-ভক্ষিত হইবে, কেননা তিনি দেশ-নিবাসী সকলের বিনাশ, হাঁ, ভয়ানক সংহার করিবেন।” একথা সত্যি যে “সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তাহাদের রৌপ্য কি তাহাদের সুবর্ণ তাহাদিগকে উদ্ধার করিতে পারিবে না” কিন্তু তবুও সেই ভয়ানক দিন থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় আছে।—সফনিয় ১:১৪-১৮.

আর সেই উপায়ের কথা সফনিয় আমাদের বলেছেন: “সদাপ্রভুর ক্রোধাগ্নি তোমাদের উপরে আসিয়া পড়িল, সদাপ্রভুর ক্রোধের দিন তোমাদের উপরে আসিয়া পড়িল। হে দেশস্থ সমস্ত নম্র লোক, . . . তোমরা সদাপ্রভুর অন্বেষণ কর, ধর্ম্মের অনুশীলন কর, নম্রতার অনুশীলন কর; হয় ত সদাপ্রভুর ক্রোধের দিনে তোমরা গুপ্তস্থানে রক্ষা পাইবে।” (সফনিয় ২:২, ৩) ‘সদাপ্রভুর অন্বেষণ করে, ধর্ম্মের অনুশীলন করে এবং নম্রতার অনুশীলন করে’ আমরা হয়তো গুপ্তস্থানে রক্ষা পাব। আজকে কারা যিহোবার অন্বেষণ করছেন?

কোন সন্দেহ নেই যে “যিহোবা” নাম শুনলেই আপনার যিহোবার সাক্ষিদের কথা মনে আসে কারণ তারাই সব জায়গায় তাঁর নাম প্রচার করেন। তাদেরই কেউ হয়তো আপনাকে এই পত্রিকাটা দিয়েছেন। সবাই জানেন যে তারা নীতিবান লোক আর সেইজন্য তারা সৎভাবে জীবনযাপন করেন। তাদের “নূতন মনুষ্যকে” পরিধান করার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয় যা তাদের শেখায় যে কীভাবে নম্র হওয়া যায়। (কলসীয় ৩:৮-১০) আর তারা স্বীকার করেন যে এই ভাল গুণগুলো তারা দেখাতে পারেন কারণ তারা তা যিহোবার দৃশ্য সংগঠন, যিহোবার সাক্ষিদের মণ্ডলী থেকে শেখেন আর সারা পৃথিবীতে এই মণ্ডলী রয়েছে। হ্যাঁ, আপনিও যিহোবার সাক্ষিদের ‘ভ্রাতৃবর্গের’ সঙ্গে মণ্ডলীতে এসে আশ্রয় পেতে পারেন।—১ পিতর ৫:৯.

এখনই আশ্রয় নিন

যিহোবাকে অন্বেষণ করে আশ্রয় পেতে চাইলে আমাদেরকে তাঁর বন্ধু হতে হবে। আমরা কী করে তাঁর বন্ধু হতে পারি? বাইবেল উত্তর দেয়: “তোমরা কি জান না যে, জগতের মিত্রতা ঈশ্বরের সহিত শত্রুতা? সুতরাং যে কেহ জগতের মিত্র হইতে বাসনা করে, সে আপনাকে ঈশ্বরের শত্রু করিয়া তুলে।” (যাকোব ৪:৪) ঈশ্বরের বন্ধু হতে হলে আমাদেরকে এই দুষ্ট জগতের সঙ্গে মিলেমিশে থাকলে চলবে না, যার সঙ্গে ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই আর এমনকি যা ঈশ্বরের বিরোধিতাও করে।

বাইবেল আমাদেরকে পরামর্শ দেয়: “তোমরা জগৎকে প্রেম করিও না, জগতীস্থ বিষয় সকলও প্রেম করিও না। কেহ যদি জগৎকে প্রেম করে, তবে পিতার প্রেম তাহার অন্তরে নাই। কেননা জগতে যে কিছু আছে, মাংসের অভিলাষ, চক্ষুর অভিলাষ, ও জীবিকার দর্প, এ সকল পিতা হইতে নয়, কিন্তু জগৎ হইতে হইয়াছে। আর জগৎ ও তাহার অভিলাষ বহিয়া যাইতেছে; কিন্তু যে ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে অনন্তকালস্থায়ী।” (১ যোহন ২:১৫-১৭) বেশির ভাগ লোকই আজকে তাদের মাংসিক আকাঙ্ক্ষাকে বড় করে দেখে। যৌনতা তাদের জীবনে প্রধান জায়গা নেয়, টাকা-পয়সার প্রতি লোভ মাত্রা ছাড়িয়ে যায় এবং তারা অন্যায়ভাবে তাদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করে। কিন্তু যিহোবার পক্ষে থাকতে চাইলে আমাদের এই খারাপ ইচ্ছাগুলোকে দমন করতে হবে।—কলসীয় ৩:৫-৮.

আপনি হয়তো এই পত্রিকা এর আগেও বেশ কয়েকবার পড়েছেন আর আপনি হয়তো মেনেও নেন যে এতে বলা বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণীগুলো আজ আমাদের দিনে পূর্ণ হচ্ছে। তবুও, আপনি হয়তো যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে মেলামেশা করতে দ্বিধা বোধ করেন আর তাই কোন পদক্ষেপ আপনি নিতে পারছেন না। কিন্তু, বিপর্যয়ের চিহ্নগুলো দেখেও শুধু সাবধানবাণী শোনাই কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে? ফুগেন পর্বতের দুর্ঘটনা থেকে আমরা শিখেছি যে আমাদের শুধু সাবধানবাণী শুনলেই চলবে না কিন্তু তা শুনে আমাদের কাজ করাও দরকার। মনে করে দেখুন যে কম করে ১৫ জন সংবাদদাতা এবং আলোকচিত্রী নতুন কিছু ও তাজা খবর দেওয়ার জন্য সেখানে গিয়েছিলেন আর তাদের জীবন হারিয়েছিলেন। একজন আলোকচিত্রী যখন মারা যান তখন তার হাত ক্যামেরার বোতামে ছিল। একজন আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন “যখনই আমার মৃত্যু আসুক না কেন, আমি চাই যেন আমি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতেই মরি।” তিনি যেমন চেয়েছিলেন সেভাবেই মারা গিয়েছিলেন। তাহলে ভেবে দেখুন যে তারা সকলেই কীভাবে তাদের কাজে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছিলেন আর তাতেই লেগে ছিলেন। কিন্তু তবুও তাদেরকে জীবন হারাতে হয়েছিল কারণ তারা সাবধানবাণীকে অবহেলা করেছিলেন।

আজকে অনেক লোকেরা যখন শোনেন যে ঈশ্বর এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থা ধ্বংস করবেন বলে ঠিক করেছেন, তখন তারা ভালভাবেই এর গুরুত্বকে বুঝতে পারেন। তারা বলেন ‘একদিন না একদিন এটা অবশ্যই আসবে’ কিন্তু তারা যুক্তি দেখান যে ‘আমাদের দিনে নয়।’ তারা খুব সহজেই যিহোবার দিনকে সামনে থেকে ঠেলে সরিয়ে দেন যাতে তাদের সেই সমস্ত কাজকর্মে কোন বাধা না পড়ে যা এখন তাদের চোখে খুবই জরুরি।

বারুকও অনেকটা এইরকম মনে করেছিলেন। তিনি প্রাচীনকালের ভাববাদী যিরমিয়ের সচিব ছিলেন। বারুক সাহসের সঙ্গে যিরূশালেমের ওপর আসতে চলা ধ্বংস সম্বন্ধে ইস্রায়েলীয়দের সাবধান করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি অন্যরকম ভাবতে শুরু করেছিলেন, ঈশ্বরের কাজে তিনি ক্লান্ত হয়ে ধীর হয়ে পড়েছিলেন। সেই সময় যিহোবা তাকে শুধরে দিয়েছিলেন: “তুমি কি আপনার জন্য মহৎ মহৎ বিষয় চেষ্টা করিবে? সে চেষ্টা করিও না।” ধনসম্পদ, পদ অথবা বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, সেগুলো পেতে বারূকের ‘নিজের জন্য মহৎ মহৎ বিষয়ের চেষ্টা’ করা ঠিক ছিল না। শুধু একটা বিষয়েই তাকে মন দিতে হতো আর তা ছিল ঈশ্বরের ইচ্ছা মতো চলে ইস্রায়েলীয়দের তার পক্ষে থাকার জন্য তাদের সাহায্য করা। আর তাহলে বারূক ‘লুট দ্রব্যের ন্যায় তাহার প্রাণ’ পেতেন। (যিরমিয় ৪৫:১-৫) এইরকমই আজ আমাদের ‘নিজেদের জন্য মহৎ মহৎ বিষয়ের চেষ্টা’ করার বদলে যিহোবার অন্বেষণ করা উচিত যাতে করে আমরা আমাদের প্রাণ বাঁচাতে পারি।

ফুগেন পর্বতের লাভা যখন ১২ জনেরও বেশি পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবক দমকলকর্মীদের ওপর এসে পড়ে তখন তারা সেখানে কাজ করছিলেন। তারা বিপদে পড়া লোকেদের সাহায্য করতে ও তাদের বাঁচাতে চেষ্টা করছিলেন। তারা সেই সমস্ত পরোপকারী স্ত্রী-পুরুষদের মতো যারা আজকের এই জগতের ভাল করার জন্য নিজেদেরকে উজাড় করে দেন। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্য যত মহৎই হোক না কেন “যাহা বক্র, তাহা সোজা করা যায় না।” (উপদেশক ১:১৫) এই জগৎ এতটাই বেঁকে গিয়েছে যে তা সোজা করা আর সম্ভব নয়। তাই এটা কি ঠিক হবে যে আমরা এই জগতের বিধিব্যবস্থাকে বাঁচাতে চেষ্টা করার জন্য ‘এই জগতের মিত্র’ হব যেটাকে ধ্বংস করবেন বলে ঈশ্বর ঠিক করে রেখেছেন?

একবার যদি সরে আসেন, তাহলে সেখানে আর যাবেন না

বিপদজনক এলাকা থেকে সরে আসা এক কথা আর ‘ভ্রাতৃসমাজের’ সুরক্ষার মধ্যে থাকা আরেক কথা। (১ পিতর ২:১৭) সেই কৃষকদের কথা মনে করুন, যারা ফুগেন পর্বতের এলাকা ছেড়ে চলে এসেছিলেন কিন্তু পরে জমিজমা দেখার জন্য আবারও সেখানে গিয়েছিলেন। তারা হয়তো তাদের “স্বাভাবিক” জীবনে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন যে জীবনে তারা অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু আপনি বুঝেছেন যে তাদের ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত কত ভুল ছিল। যে দিন তারা মারা গিয়েছিলেন সেই দিনই যে তারা প্রথম সেই বিপদজনক এলাকায় গিয়েছিলেন তা হয়তো নাও হতে পারে। তারা হয়তো এর আগেও বেশ কয়েকবার বিপদ সীমা পার করে সেই এলাকায় গিয়েছিলেন। প্রথমবার যখন তারা গিয়েছিলেন তখন হয়তো তারা সেখানে অল্পকিছু সময় ছিলেন কিন্তু তাদের কিছু হয়নি। পরের বার তারা হয়তো সেখানে আরেকটু বেশি সময় কাটিয়েছিলেন কিন্তু তখনও কিছুই ঘটেনি। এইভাবে সেই বিপদজনক এলাকায় যাওয়াটা হয়তো তাদের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল আর তারা সেখানে নির্ভয়ে ঘোরাফেরা করতে শুরু করেছিলেন।

এই বিধিব্যবস্থার “যুগান্তের” সময়ও এইরকমই ঘটবে বলে যীশু খ্রীষ্ট বলেছিলেন: “জলপ্লাবনের সেই পূর্ব্ববর্ত্তী কালে, জাহাজে নোহের প্রবেশ দিন পর্য্যন্ত, লোকে যেমন ভোজন ও পান করিত, বিবাহ করিত ও বিবাহিতা হইত, এবং বুঝিতে পারিল না, যাবৎ না বন্যা আসিয়া সকলকে ভাসাইয়া লইয়া গেল; তদ্রূপ মনুষ্যপুত্ত্রের আগমন হইবে।”—মথি ২৪:৩, ৩৮, ৩৯.

লক্ষ্য করুন যে যীশু খাওয়া-দাওয়া ও বিয়ের কথা বলেছিলেন। এগুলোর কোনটাই যিহোবার চোখে ভুল নয়। তাহলে ভুলটা কী ছিল? নোহের দিনের লোকেরা কিছুই “বুঝিতে পারিল না,” যার মানে তারা একেবারেই খেয়াল রাখেনি, তারা তাদের রোজকার জীবন নিয়েই ব্যস্ত ছিল। কিন্তু যখন বিপদ দেখা দেয় তখন কেউই “স্বাভাবিক” জীবনযাপন করতে পারে না। একবার যদি আপনি এই দুষ্ট জগৎ থেকে বেরিয়ে আসেন অথবা নিজেকে সরিয়ে আনেন, তাহলে দ্বিতীয়বার আর সেখানে যাওয়ার কথা ভাববেন না। এমন কথা ভাববেন না যে এখন এই জগৎ থেকে যা পাওয়া যায় তা ভোগ করে নিই। আপনার এই ইচ্ছাকে বাধা দিন। (১ করিন্থীয় ৭:৩১) আধ্যাত্মিক আশ্রয় থেকে বেরিয়ে অল্প সময়ের জন্য বাইরে ঘুরে ফিরে এলেও কারোরই হয়তো তা নজরে পড়বে না। কিন্তু সেটা হয়তো আপনাকে সাহসী করে তুলবে আর আপনি আরও বেশি সময় বাইরে থাকতে পছন্দ করবেন এবং শেষে আপনি এই দুষ্ট জগতেই থেকে যাবেন যেখান থেকে আপনি বেরিয়ে এসেছিলেন। আর তখন আপনিও অন্যদের মতো বলতে পারেন “শেষ আসতে এখনও অনেক দেরি আছে।”

এখন সেই তিনজন গাড়ির চালকের কথা মনে করুন যারা সংবাদদাতাদের এবং আলোকচিত্রীদের জন্য নিচে অপেক্ষা করছিলেন। গরম লাভা তাদের ওপর স্রোতের মতো নেমে এসেছিল আর তারা মারা গিয়েছিলেন। সেইরকমই আজকেও হয়তো কিছুজন যারা জগতে ফিরে যাওয়ার সাহস দেখান তাদের সঙ্গে মেলামেশা করতে পারেন। মেলামেশা করার কারণ যাই হোক না কেন, এটা খুবই পরিষ্কার যে বিপদজনক এলাকায় ফিরে যাওয়ার মতো সাহস দেখানোর ঝুঁকি নেওয়া একেবারেই ঠিক নয়।

ফুগেন পর্বতের অগ্নুৎপাতে যারা মারা গিয়েছিল তারা সবাই বিপদসীমা পার হয়ে বিপদজনক এলাকায় ঢুকে পড়েছিল। তারা সবাই জানত যে একদিন না একদিন এই পর্বতে অগ্ন্যুৎপাত হবে কিন্তু তাদের কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি যে সেই দিনই তা ঘটবে। দুষ্ট বিধিব্যবস্থার শেষের চিহ্নগুলো দেখে অনেকে মনে করেন যে যিহোবার দিন অবশ্যই আসবে কিন্তু এত তাড়াতাড়ি নয়।। কেউ কেউ মনে করেন যে সেই দিন “আজকে” কখনোই আসবে না। কিন্তু এইরকম ভাবা খুবই বিপদজনক।

প্রেরিত পিতর সাবধান করেছিলেন যে “প্রভুর দিন চোরের ন্যায় আসিবে।” আমাদের ‘ঈশ্বরের সেই দিনের আগমনের অপেক্ষা ও আকাঙ্ক্ষা করার’ সময় সাবধান হওয়া দরকার ও ‘যত্ন করা দরকার যেন তাঁহার কাছে আমাদিগকে নিষ্কলঙ্ক ও নির্দ্দোষ অবস্থায় শান্তিতে দেখিতে পাওয়া যায়!’ (২ পিতর ৩:১০-১৪) আজকের এই দুষ্ট বিধিব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর ঈশ্বরের রাজ্যের অধীনে পৃথিবীতে পরমদেশ হবে। তাই আসুন আমরা যেন কখনও বিপদসীমা পার করার ইচ্ছা না করি তা সে আমাদের মন আমাদেরকে যা কিছুই বোঝাক না কেন। কারণ এমনও হতে পারে, যে দিন আমরা বিপদসীমা পার করব সেইদিনই যিহোবার বিচারের দিন এসে পড়বে।

যিহোবার লোকেদের সঙ্গে আশ্রয় নিন আর তাদের সঙ্গে সেখানেই থাকুন।

[৭ পৃষ্ঠার চিত্রগুলো]

যিহোবার লোকেদের সঙ্গে আশ্রয় নিন আর তাদের সঙ্গে সেখানেই থাকুন

[৪ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]

Iwasa/Sipa Press

    বাংলা প্রকাশনা (১৯৮৯-২০২৬)
    লগ আউট
    লগ ইন
    • বাংলা
    • শেয়ার
    • পছন্দসমূহ
    • Copyright © 2025 Watch Tower Bible and Tract Society of Pennsylvania
    • ব্যবহারের শর্ত
    • গোপনীয়তার নীতি
    • গোপনীয়তার সেটিং
    • JW.ORG
    • লগ ইন
    শেয়ার